00 copy

সহস্রাব্দের নিষ্ঠুরতার মাঝেই ড. অর্নব ঢাকা থাকে কর্মসূত্রে অনেকদিন। মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের এ মানুষটি শাহবাগ গণজাগরণ মঞ্চের পর থেকেই নিয়মিত অফিস করতে পারেনা। কাজ ফেলে প্রায়ই শাহবাগে বসে যান প্রজন্ম চত্বরের তরুণদের সাথে অনুক্ষণ ক্ষত-বিক্ষত যন্ত্রণাকে ঢাকতে। মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম স্লোগান ‘জয়বাংলা’কে বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় স্লোগান ঘোষণার দাবিতে অর্নব রিট করেছিলো হাইকোর্টে, যা অদ্যাবধি শুনানি করতে পারেননি সপ্তপদি আমলাতান্ত্রিকতায়। চাকুরিসূত্রে ডেপুটেশনে রিয়াদ দূতাবাসে পোস্টিং থাকাকালে, শক্তিশালি জামাতি লবিং সৌদি সরকারের কাছে “নাস্তিক অর্নবকে” শিরোচ্ছেদের ব্যবস্থা করে। হয়তো শিরোচ্ছেদ হয়েই যেত, যদি না এক তরুণ সৌদি কবি “আল শায়েরের” সাথে গভীর বন্ধুত্ব না থাকতো অর্নবের। প্রকাশ্যে শিরোচ্ছেদের আদেশের কথা শুনে মানবতাবাদি এ কবি ও গায়ক ওপর মহলে তদবির করে অর্নবকে রক্ষা করে এই শর্তে যে, তাকে সরাসরি চলে যেতে হবে বাংলাদেশে। অবশেষে নিজের গাড়ি রাস্তায় পার্কিংয়ে রেখে, চাবিটি পকেটে ভরে এক কাপড়েই সৌদি জ্যাম্বো জেটে ঢাকা পৌঁছে তন্দ্রাচ্ছন্ন শ্রান্ত আঁখিসহ অভিশপ্ত জীবনকে পেছনে ফেলে।
বহুদিন লেখালেখি করলেও ফেসবুকে প্রথম প্রবেশ করে শাহবাগি জলজ জ্বলন্ত আত্মজ চেতনায়। নিয়মিত পোস্ট দেয়া শুরু করে মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধিনতা, ধর্ম, দর্শন আর জীবনবোধের কতকথা নিয়ে। ধর্মবিষয়ক যৌক্তিক পোস্ট নিয়ে মুক্তচিন্তার এ মানুষটির সাথে আত্মীয়, বন্ধু, সহযোগি আর কলিগদের যেমন দূরত্ব সৃষ্টি হয় ধর্ম বিশ্বাসের কারণে, তেমনি ব্লগ আর ফেসবুকে জুটে যায় অনেক শুভাকাংখি আর শুভার্থীদের। বাংলাদেশ আর পৃথিবীর বহু এলাকা থেকে বাঙালিরা তাকে নানাবিধ অভিনন্দন জানায় নানা প্রপঞ্চে। ধর্মান্ধরা তাকে বিনাশে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হয় ব্যাঙাচির জীবনচক্রের মত। চিন্তার শৃঙ্খলিত খাঁচায় বন্দি নির্লোভ আর সাহসি এ মানুষটি সব ভ্রুকুটি ঝেড়ে ফেলে তার কর্মটি করতেই থাকে, মেঘেদের নির্দিষ্ট জীবনময়তার মতই।

কর্মযজ্ঞের মাঝেও প্রত্যহ ১৬/১৭ ঘন্টা পড়ালেখা আর পোস্ট, ব্লগে নানাবিধ যৌক্তিক আর বিজ্ঞানমনস্ক পোস্ট অব্যাহত রাখে অর্নব। অনেক বন্ধুর মাঝে যুক্তরাষ্ট্রে পরিজায়ি বাঙালি অতন্দ্রিলার সাথে ফেসবুকে পরিচয় হয় অর্নবের। যে কর্মসূত্রে এখন বসবাস করে মায়ামি বিচে। পোম্টের যুক্তি প্রতিযুক্তিতে অর্নবের প্রতি বৃষ্টির মতো মুষলধারে ঝ’রে পরে অতন্দ্রিলা! বাইরের হাজারো ব্যস্ততার মাঝেও দিনে একবার অন্তত ইনবক্সে কথা না বলে থাকতে পারেনা তারা। প্রজ্ঞাময়ি এ মেয়েটির চেতনায় একসময় স্নাত হয় অর্নব। নানা ব্যস্ততা আর ক্লান্তির মাঝেও সে আতঙ্কের আঁচলে ইনবক্সে প্রত্যাশা করে অতন্দ্রিলাকে। দুজন স্বতত্র ধর্ম পরিবারে জন্ম নিলেও, শিক্ষায় তাদের ধর্মকে ঝেড়ে আধুনিক মানুষে পরিণত করে, তাই হয়তো বন্ধুত্ব প্রগাঢ়তর হয় তাদের মাঝে। মাঝে মাঝে খুনসুটি হলেও, দু’জনে আবার ইনবক্সে কথা বলে স্টেশনের ধুলোবতী পাগলের মাদকতায়।

এক সময় কথা হয় অর্নব ১-মাসের ছুটি নিয়ে মায়ামি যাবে অতন্দ্রিলার সাথে দেখা করতে। সরকারি দফতরের ছুটি, বিদেশে যাওয়ার অনুমোদন, ভিসা লাগানোসহ নানা ঝক্কির পর একদিন সত্যিই অর্নব উঠে বসে আমিরাতের ইকে এ-৩০০ বিমানের ইকো শ্রেণিতে। ঢাকা-দুবাই-মায়ামি ফ্লাইট প্রায় ২০-ঘন্টার জার্নি ট্রানজিটসহ। অতন্দ্রিলার জন্যে বাঙালি তাঁতের শাড়ি, যশোরের চিড়ুনি, হুমায়ুন আজাদের বই সমগ্র, পদ্মার ইলিশ ভাজা নেয় সাথে এক সময়ের গ্রামীণ অর্নব। জানেনা সে যুক্তরাষ্ট্রীয় বাঙালি অভিবাসিরা কি ভালবাসে এখন! তবুও মার কাছে এসব উপহারের কথা শুনেছিল সে, তাই মার পছন্দকেই অর্নব অগ্রাধিকার দেয় কালের শেষ খুঁটি হিসেবে!

প্রায় ৫-ঘন্টা দুবাই ট্রানজিস্ট ডেস্কে থেকেও ক্লান্তিরা ঘায়েল করতে পারে না অর্নবকে, কারণ নেট ছাড়া মাঝে দু’বার মোবাইলে কল দিয়ে খবর নিয়েছিল অতন্দ্রিলা এ নৈ:শব্দ দুবাই দুপুরে। বলেছে চিন্তা করোনা, ১৩-ঘন্টা পরই নামবে তুমি Miami International (EMIA-MIA) Airport-এ। বেড়িয়েই দেখবে আমায় দাঁড়ানো এক্সিট গেটের সামনেই। এক সময় মায়ায়ির জন্য নির্ধারিত ফ্লাইটে উঠে বসে বিকেলে পরিযায়ি রঙিন পাখির স্বপ্নে। খুব ভোরেই ল্যান্ড করবে এ ফ্লাইট মায়ামি বিচে উচ্ছ্বাসের নদীতীরে।

বিমানজার্নি সবচেয়ে বোরিং আর ক্লান্তিকর লাগে ড. অর্নবের কাছে। ট্রেন, বাস, স্টিমারে হাঁটাচলা যায় সুন্দর করে, দেখা যায় মানুষ আর প্রকৃতিকে মনভরে। কিন্তু বিমান জার্নিতে বেশি হাঁটাচলা ছাড়াও একঘেয়ে লাগে অর্নবের কাছে, বিমানের বিশাল ডানা ঝাপটানো, আর মেঘের সমুদ্র ছাড়া আর কিই বা দেখার থাকে তখন? আর ফ্রিকোয়েন্ট জার্নি করে বলে সস্তা ইকোনো ক্লাসে টিকেট করতে হয় তাকে, যাতে চাপাচাপি খুব। তার মাঝে এয়ারপকেটে পরে বাম্পিং শুরু হলেতো কথাই নেই, ঠিক যেন ঝড়ো হাওয়ায় মেঘনায় ছোট ডিঙি নৌকো।

মা অর্নবকে শিখিয়েছিল, বিমানে উঠেই একটি দোয়া পড়তে হয়, তাতে দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পায় বিমান। মা যখন হজ্জে গিয়েছিল অর্নবসহ, তখনো বারবার নিজে আর অর্নবকে দোয়া পড়িয়েছিলেন তিনি। অর্নব এখন যুক্তি আর প্রজ্ঞাকে তার গড মানে, তাই দোয়া পড়েনা সে বিরহি হৃদয়ের ক্লান্তির মাঝেও। কারণ দেখেছে, সিঙ্গাপুর-বৃটিশ এয়ারে কোনা দোয়া না পড়লেও, তা তাদের টাইম সিডিউল, যাত্রা নির্বিঘ্ন রাখে। আর বাংলাদেশ বিমানে সব সময় দোয়া পড়া হলেও, তাদের ফ্লাইট বিপর্যয় নিত্যদিনের ঘটনা। তার চেয়ে ক্যানভাসের পিছনে উঁকিমারা আকাশটা দেখতে চেষ্টা করে অর্নব।

মহাকালের পথচলায় এক সময় চিন্তায় পড়ে যায় কিভাবে চিনবে সে অতন্দ্রিলাকে? যার ছবিও দেখেনি সে মনের অতিন্দ্রিয় আলেয়ার আলোতে। অর্নবের আইকিউ যাচাইয়ের জন্যে অতন্দ্রিলা ছবি দেয়নি তাকে। বলেছিল, দেখি চিনতে পারো কিনা আমায় আমার লেখা আর ফোনের কণ্ঠ শুনে। চমকপ্রদ রেজাল্ট করা অথচ গ্রামীণ সাধারণ পরিবারে বড় হওয়া অর্নবের আইকিউ কি মায়ামি কন্যার কাছে মার খাবে? ত্রাস, হুমকি, অবসাদ, মৃত্যুচেতনা আর নিঃসঙ্গতা তাকে কি অর্থব মানবে পরিণত করেছে একটা? কাল-স্রোত-ইচ্ছা-স্বপ্নরা কি অর্নবকে জাগাবে না আর দ্রোহের আগুনে? জলছবিরা কি ম্রিয়মান থাকবে জীবন ছায়াতলে!
এসব বিনম্র চিন্তনে এক সময় ঘুমিয়ে পড়ে দক্ষিণের বিনম্র ঝাঁঝালো বাতাসের জালে। কতক্ষণ ঘুমিয়েছিল জানেনা সে, ঝিমিয়ে পড়া সময়টা বড্ড ক্লান্তিতে হামাগুড়ি দেয় তার সিটে। প্রবল ঝাকুনিয়ে ঘুম ভেঙে যায় তার বুকফাটা যন্ত্রণাকাতর অস্থিরতায়। ক্রুরা ত্রস্তে সিটবেল্ট বাঁধতে বলে সবাইকে। অন্ধকার কেটে কেটে দুবাই থেকে বিমান আফ্রিকা রুটে সরাসরি চলে এসেছে ক্যারিবিয়ান সাগরের আকাশে। আর মাত্র ঘন্টা খানেক পরেই মায়ামিতে ল্যান্ড করার কথা এ বিশাল আকাশ যানের। কিন্তু ক্যারিবিয় প্রবল সামুদ্রিক ঝড় আকস্মিক আঘাত হেনে বাম ডানাকে উল্টে দিয়েছে আধুনিক আমিরাত ভ্যাসেলকে। প্রবল ঘুর্ণিবার্তা, ঝড়ো বাতাস, অন্ধকার রাতের ত্রাসে সব যাত্রীরা দাঁড়িয়ে যায় সিট থেকে। মেঘনায় সাঁতার কাটা, জীবন যুদ্ধে সর্বত্র জিতে আসা অর্নব বুঝে উঠতে পারেনা কি করবে সে। অনেকবার অনেক দেশ ভ্রমণ করেছে সে কিন্তু এমন বিমুঢ়তায় সে আচ্ছন্ন হয়নি কখনো।

একবার নিউজিল্যান্ড থেকে ফেরার পথে তার পাশের সিটের শেতাঙ্গ ভদ্রলোক হার্ট এ্যাটাক করে তার বুকে লুটিয়ে পরে মারা যায় এক মিনিটেই। অপরিচিত এ অস্ট্রেলিয় নাগরিকের লাশ অনেকক্ষণ বুকে ধরে রাখে অর্নব। সে সাহসি অর্নব করণীয় নির্ধারণ করতে ব্যর্থ হয়ে লাইফ জ্যাকেট হাতে নিয়ে সমস্ত সৌরভ বিলিয়ে স্মৃতি হয়ে যাবে এখন? এক বালা এসে পরিয়ে দেয় তাকে জ্যাকেটটি। কিন্তু কি এক অভিমানে তার জ্যাকেট পড়তে ইচ্ছে হয়না, মগ্ন থাকতে ইচ্ছে করেনা জীবনের গল্পে। প্রবল ঝাকুনিতে কাত হয় যায় সকল যাত্রীরা, উপরে রাখা জিনিসপত্র পরতে থাকে নিচে। ধর্মজানা অর্নবের মুখে মার শেখানো বিমান রক্ষার ত্রাণ দোয়াটা চলে আসে, কিন্তু দোয়া পড়েনা না সে। কেন যেন ক্যারিবিয়ান সাগরে নিমজ্জিত হয়ে তার মরে যেতে ইচ্ছে করে শেষ রাতের নৈ:শব্দের নীল জলরাশিতে। অতন্দ্রিলা তার সাগর সমাধি চেয়েছিল, কেন নয় তা আজই এ কারিবিয় উত্তাল জলতলে? উদ্দেশ্যহীন বিষন্ন ছায়াতে কেন যেন হাঁটতে চাইছে না অর্নব! সকল যাত্রীর ইচ্ছের বিরুদ্ধে গিয়ে সে মুত্যুকে হাতছানি দিয়ে ডাকে।

বিষাদের এ নৃত্যনাট্য মাঝে হঠাৎ মোবাইল বেজে ওঠে অর্নবের হাতে। অপেক্ষারত সময়কে ভেঙে অতন্ত্রিলা কল দিয়েছে মায়ামি বিচ থেকে। কি বলবে অর্নব এখন অতন্ত্রলিকে মানুষ রূপী প্রেতাত্মা সে এখন মৃত্যু দুয়ারে? মেঘের উপর আঁকা নক্সা ছিঁড়ে এ জলসমুদ্রে মারা যাবে এখন তাই বলবে? অসংখ্য শৃঙ্খলা অথচ বিশৃঙ্খলায় ক্লেদাক্ত ট্রাজিক জীবন অতন্দ্রিলার। যাকে ভালবেসে ঢাকা থেকে নিয়েছিল ভিন্নধর্মী হয়েও, সে প্রতারণা করেছিল অতন্দ্রিলার সাথে। ভালবাসেনি একটুও তাকে। ঠোকর দিয়ে হৃদপিন্ড ছিঁড়েছিল অতন্দ্রিলার! ব্যবচ্ছেদ করেছিল তার হৃদমননের! কেবল যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসি হতেই অতন্দ্রিলার বাণিজ্যিক ফিয়ান্সে সেজেছিল এ ভন্ডপ্রেমিক । তাই অতন্দ্রিলার জন্যে মনের কোনে এক কষ্ট জমোট বেঁধেছিল অর্নবের। সে আর কোন নতুন কষ্টের ভাগি করতে চায়না অতন্দ্রিলাকে। অর্নবের এ বিপর্যের কথা শুনে কি করতে পারবে অতন্ত্রিলা কেবল নিজেকে দুখের বাতাসে ওড়ানো ছাড়া? তার চেয়ে অতন্দ্রিলা কোনদিন না জানুক অর্নবকে। বোবা আলো ভর করে ওর জীবন আর ক্লেদাক্ত না হোক। তাই এ সোমত্ত রাত্তিরে অকথ্য ক্লান্তিতে বিপরীত চিন্তা করে অর্নব, এ বিমানটি যেন সত্যি পড়ে যায় এ জলরাক্ষসের মাঝে তাই কামনা করতে থাকে।

সর্বনাশা মারিজুয়ানার নেশার মত প্রবল ঝড়ো বাতাসে বাম ডানাটি ছিঁড়ে নেয় বিমানের। মুহূর্তে মৃত্তিকা, জল, আকাশ, বজ্র, ঘুর্ণি একজোট হয়ে চোখের পলকে দ্বিখণ্ডিত করে বিমানটিকে। সব যাত্রীর আর্তনাদ আর শব্দসন্ত্রাস আকাশ বাতাস আর জলকল্লোলে একাকার করে ক্যারিবিয় সাগরের ধোয়াশাময় আকাশ। অর্নব নিঝুম সন্ধ্যায় শ্বাশত স্নিগ্ধতার মত মহাকাশে ঝাপ দেয়, দেয় নিচের মহাসমুদ্রে নিমজ্জিত হতে একটা তাঁত শাড়ি হাতে, যেখানে অতন্ত্রিলা তাকে নিজ হাতে জলতলে ভাসিয়ে দিতে চেয়েছিল একদিন। নির্লিপ্ত অর্নব ক্লেদাক্ত পাতাঝরা বৃক্ষের মত সাদা ফেনিল জলোচ্ছাসের দিকে এগুতে থাকে। প্রচণ্ড দমকা বাতাস আর জনকল্লোলে অর্নবের অবোধ দুঃখবোধগুলো লিন হতে থাকে ক্রমান্বয়ে। এক প্রশান্তির মৃত্যুর দিকে সে এগিয়েই যায় ক্রমান্বয়ে। তারপর এ সমুদ্র জলরাক্ষস, আর এ ঝড়ো বাতাস অনর্বকে ছুঁয়ে প্রচন্ড রোষে ছুটতেই থাকে মায়ামি বিচ বরাবর। প্রবাহমান বাতাস কি অর্নবের হাতে ধরা শাড়িটাও উড়িয়ে নিয়ে যায় সাথে করে? অতন্ত্রিলার মৃন্ময় শরীর কি ছুঁতে পারবে এ ঘুর্ণী বাতাস আর ঐ তাঁত শাড়ি? নষ্ট বীজের ভ্রুন থেকে জেগে ওঠা এ জলকেলি কি ভেঙে পরবে মায়ামি বিচে দ্রোহি ঢেউ হয়ে?