ধর্ম বিষয়ে বোকামেয়ের ৬০টি জিজ্ঞাসা
– বোকামেয়ে, ঢাকা

কোরআনের বাংলা অনুবাদ, হাদিস ও ইসলাম ধর্মবিষয়ক অনেক বই পড়তে গিয়ে বিভিন্ন জিজ্ঞাসা মাথায় আসে, যার জবাব পাচ্ছি না। এই জিজ্ঞাসাগুলো আমার এক সিনিয়র আপার মাধ্যমে দেশব্যাপী সুপরিচিত আলেমের নিকট পাঠিয়েছিলাম। তিনি আমাকে দেখা করতে বলেছিলেন। আমি লিখিত জিজ্ঞাসার লিখিত জবাব চেয়েছিলাম। আরেক আলেম বলেছিলেন এসব প্রশ্ন করা যাবে না? বিশ্বাস করতে হবে। কিন্তু এ যুগে জিজ্ঞসার জবাব না পেয়ে বিশ্বাস করা মুশকিল। তাই জানার আগ্রহ নিয়ে ষাটটি জিজ্ঞাসা নিম্নে প্রদান করলাম।

১। আল্লার ইচ্ছাতেই যদি সবকিছু হয় তবে মানুষের পাপপূণ্যও তার ইচ্ছাতেই হয়। আল্লার ইচ্ছাতেই যদি মানুষ পাপ-পূণ্য করে তবে মানুষের অপরাধ কোথায়? জন্মের আগেই ভাগ্য নির্ধারিত হলে মানুষের করণীয় কি?

২। আত্মা স্বাধীন নয়। সর্বশক্তিমান আল্লাহ তাকে নিয়ন্ত্রণ করে। তাহলে পরাধীন আত্মার পাপপূণ্যের বিচার কার বিরুদ্ধে হওয়া উচিৎ, নিয়ন্ত্রণকারীর না নিয়ন্ত্রিত ব্যক্তির বিরুদ্ধে?

৩। আল্লাহর ইচ্ছাতেই যদি সব কিছু হয় তবে ফেরেস্তার দরকার কি? আজরাইলের জান কবজ করতে আল্লাহর কাছ থেকে অনুমতি নিতে যে সময় ব্যয় হয়, সেই সময়ে আল্লাহ নিজেই কাজটি করতে পারেন কিনা?

৪। সূর্যোদয়, সূর্যাস্ত ও মধ্যাহ্ন সর্বত্র স্থির নয়। ঢাকাতে যখন ঠিক সূর্যোদয় তখন মক্কায় রাত্রি, কলকাতায় সূবহে সাদেক। অর্থাৎ এক স্থানের নামাজের জন্য নিষিদ্ধ সময়ে অন্য স্থানে নামাজ পড়া হচ্ছে। তাহলে নামাজের সময় নিষিদ্ধ থাকল কিভাবে?

৫। সূর্যকে ৭০ হাজার ফেরেস্তা পূর্ব থেকে পশ্চিম পর্যন্ত টেনে নিয়ে যায় সোনার নৌকায় করে। সূর্য রাত্রে আশের নিচে বসে জিকির করে, পূনরায় ভোরে পূর্বাকাশে দেখা দেয়। অথচ প্রকৃত সত্য যে, পৃথিবীর আহ্নিক গতির কারণেই দিবারাত্র হয় এবং সূর্যের বসে থাকা বলতে কিছু নেই। এ ভুল ব্যাখ্যার কারণ কি?

৬। সূর্যের সাত মুখ নাকি উল্টা দিকে। হাশরের ময়দানে সূর্যের সাত মুখ দেখা যাবে অথচ সূর্য আপন অক্ষের উপর ঘুরছে বলে সব পিঠই দেখা যায়। তাহলে ধর্মগ্রন্থের বর্ণিত সাতমুখ কোধায় গেল?

৭। হাওয়া গন্ধম খাওয়াতে গন্ধম গাছের অভিশাপে তার রজস্রাব ও সন্তান প্রসবের কষ্ট হয়। অন্য প্রাণীরা গন্ধম খায় নাই তাহলে একই কষ্ট তাদের কেন হয়? আদম যদি গন্ধম না খাইত তাহলে স্বর্গেই থেকে যেত। তাহলে আল্লাহ বেহেস্ত দোজখ কেন সৃষ্টি করেছিলেন? আদমের আগেই নাকি হযরত মুহম্মদকে সৃষ্টি করেছেন মানুষকে হেদায়েতের জন্য। আদম গন্ধম না খেলে মুহম্মদের সৃষ্টির প্রয়োজন কেন? তাহলে আদম কি আল্লহর ইচ্ছাতেই গন্ধম খেয়েছে? আদমকে সৃষ্টি করার উদ্দেশ্য পৃথিবীতে মানুষের পদচারণা ঘটানো, তাহলে তাকে স্বর্গে রাখল কেন?

৮। সমাজবিজ্ঞান মতে আদিম মানুষ কথা এবং ভাষা জানত না। কিন্তু ধর্ম মতে আদম কথা বলতে পারত। সমাজবিজ্ঞানের ধর্মবিরোধী প্রচারণা মেনে নিচ্ছেন কেন? প্রতিবাদ করলে তার যুক্তি কি?

৯। ছয় দিনে কিভাবে সবকিছু সৃষ্টি সম্ভব? সূর্য সৃষ্টির আগে কিভাবে দিন হত বা কাউন্ট হত? পৃথিবীর বাইরে সময় কি? এসব স্পষ্ট বুঝা না গেলে কোরানে লেখা হয়েছে কেন?

১০। চন্দ্রকে নূরের তৈরি এবং সূর্যকে প্রদীপ বা আগুণ বলা হয়েছে। চন্দ্র নূরের তৈরি নয় এবং সূর্যের পুরো অংশ আগুন নয়। তাহলে কোরানের একথা কিভাবে সত্য হল। [৭১:১৫-১৬; ২৫:৬১] আয়াতে বলা হয়েছে চন্দ্র আলো প্রদান কারী উৎস। বর্তমানে স্পষ্টতই দেখা গিয়েছে চন্দ্রের নিজস্ব আলো নেই। অর্থাৎ চন্দ্র আলোর উৎস নয়। এর ব্যাখ্যা কি?

১১। দিনকে মানুষ সাত ভাগে ভাগ করেছে। যদি ছয় বা আট ভাগে ভাগ করত তাহলে পরের শুক্রবার সাতদিন পর আসত না। তাহলে মানুষের ভাগ করা দিনের এত গুরুত্ব আল্লাহর কাছে কেন?

১২। সাত আসমানের বর্তমান ব্যাখ্যা কি হবে? [৭৮:১২-১৩] আসমানের তারাগুলোকে সৌন্দর্যতার জন্য সৃষ্টি করা হয়েছে। অথচ তারাগুলোর ব্যবধান কোটি কোটি মাইল এবং পৃথিবী ও সূর্যের চেয়ে লক্ষগুণ বড়ও আছে। শুধু সামান্য শোভাবৃদ্ধির জন্য এত বিশাল সৃষ্টি কে? [২৩:৮৬;২:২৯; ২৩:১৭; ৬৭:৩ ইত্যাদি]

১৩। আসমান ও জমিনের হিসাবটা কেমন? পৃথিবী গোল হলে এর চার দিকেই মহাবিশ্ব। এই ক্ষুদ্র পৃথিবীটাই কি জমিন? তাহলে আসমান ছাদ হয় কিভাবে?[৭৮ঃ১২-১৩] জমিন ও আসমানের মাঝখানে চন্দ্র, সূর্য, তারকা থাকলে আকাশ কি? আকাশ কি কঠিন পদার্থ? তা না হলে ধরে রাখার কি আছে? [৫০:৬; ৩১:১০; ১৩:২; ৫৫:৭; ২২:৬৫ ইত্যাদি]

১৪। পৃথিবী সূর্যের চারদিকে ঘোরে কোরানের ব্যাখ্যা এর বিপরীত কে? [২১:৩৩, ৩৬:৪, সুরা ইয়াসিন]

১৫। মক্কার ঠিক উপরে আরশ বা বায়তুল মোকাদ্দাছ। যেহেতু পৃথিবী ঘুর্ণায়মান ও সূয়ের চারিদিকে ঘুরে এবং সূর্যও তার গ্রহ-উপগ্রহদের নিয়ে দূর লক্ষ্যকে কেন্দ্র করে ঘুরছে তাহলে মক্কার ঠিক উপরে বায়তুল মোকাদ্দাস সব সময় কি করে ঠিক থাকবে? কোথায় থাকবে?

১৬। দশই রমজান শুক্রবার কেয়ামত। বাংলাদেশে যখন শুক্রবার তখন আরেকিায় শুক্রবার নয়: মক্কায় বাংলাদেশের একদিন বা দুইদিন আগেই দশই রমজান হয়ে থাকে। তাহলে কিয়ামত সর্বত্র কিভাবে দশই রমজান হবে?
১৭। সবেরবাত আরে ও বাংলাদেশে একদিনে হয় না। সবেবরাতের আগের দিন বাংলাদেশ থেকে দ্রুতগামী বিমানে সৌদি আরব গেলে দেখা যাবে সেখানে সবেবরাত একদিন আগেই হয়ে গেছে। তাহলে সে কিভাবে সবে বরাত পালন করবে? উল্টা ঘটলে দুবার সবেবরাত পাবে কে?

১৮। কিছু কিছু দিন বেহেস্তের দরজা খোলা থাকে। ঐ দিনটা সারা পৃথিবীতে একে স্থানে একেদিন হলে বেহেস্তেও দরজা কদিন খোলা থাকবে?

১৯। মেরুতে ছয়মাস দিন ও ছয় মাস রাত থাকে। সেখানে কিভাবে নামাজ রোজা পালন করবে?

২০। কেন বেহেস্থে যাব? আল্লাহর ইচ্ছায়, নবীর সুপারিশে, হোসেনের সুপারিশে নাকী পূণ্যের জোরে? সীমার কেন বেহেস্তে যাবে? বর্তমান রূপে নামাজ না পড়ে অন্য নবীরা কিভাবে বেহেস্থে যাবে?

২১। আল্লাহ যদি নবীর সুপারিশ গ্রহণ করেন তাহলে নিজের ইচ্ছা পূর্ণ করবেন কিভাবে? ব্যাখ্যা কি? তাহলে নির্বাহী প্রধান কে?

২২। যারা কোনদিন ইসলামের দাওয়াত পায়নি এবং কোন অপরাধ করেনি তারা কেন বেহেস্তে যাবে না? গোলাম আজম কোন দিন না কোনদিন বেহেস্তে প্রবেশ করবে মুসলিম বলে অথচ মাদার তেরেসা প্রবেশ করবেন না অমুসলিম বলে এটা কি ন্যায় বিচার?

২৩। বিধর্মী শিশুরা কেন মুসলমান শিশুদের মত বেহেস্ত পাবে না? শিশুরা নিষ্পাপ নয় কি?

২৪। পুরুষ বেহেস্তে কমপক্ষে ৭০টি হুরী ও তার স্ত্রীকে পাবে এবং নারী বেহেস্তে গোলেমান ও তার স্বামীকে পাবে। তাহলে পুণ্যবান পুরুষের পাপিষ্ঠা স্ত্রী এবং পূণ্যবতী নারীর পাপী স্বামীও কি বেহেস্তে যাবে?

২৫। সব ধর্মই বলে সেই ধর্মপন্থী ছাড়া অন্য কেউ বেহেস্তে যেতে পারবে না এবং সেই ধর্ম বিরোধী প্রশ্ন করা যাবে না। পৃথিবীতে সহস্রাধীক ধর্ম এখনো জীবিত আছে। ইসলামের অনেকগুলো ভাগ আছে। আবার উপভাগও আছে। যেমন আমরা সুন্নী ভাগের হানাফী উপভাগের। আমাদের মতে শুধু হানাফিরাই সঠিক পথে আছেন। এরকম প্রত্যেকের মনোভাব একই। তাহলে অন্য কোন ধর্মও সত্য হতে পারে অথবা মিথ্যা হতে পারে সবগুলোই।

২৬। মানুষের জান খতম করে আজরাইল। তাহলে একজনকে খুন করার অপরাধে কোন ব্যক্তি দায়ী হবে কেন? অথচ খুনের বদলে খুনের কথা কোন কোন নবীও বলেছেন। পাপের শাস্তি যদি পরকালেই হয় তাহলে ইহকালে শাস্তির বিধান কেন? এক অপরাধে শাস্তি দুবার হবে কেন?

২৭। আত্মা বা প্রাণ বা রুহু এবং মন আলাদা জিনিস। মানুষ যা কিছু করে তার জন্য দায়ী মন। তাহলে আত্মার শাস্তি কেন? তাহলে আত্মা ও মন কি এক জিনিস? অজ্ঞনাবস্থায় বা ঘুমন্ত অবস্থায় মনের অস্তিত্ব না থাকলেও প্রাণ থাকে। তাহলে দুটো আলাদা এর ব্যাখ্যা কি?
২৮। কৈ মাছ কাটলেও তার মধ্যে অনেকক্ষণ আত্মা বা প্রাণ থাকে। আবার টিকটিকির লেজ খসে পড়েও নড়াচড়া করে অর্থাৎ প্রাণ আছে। এ লেজে প্রাণ না থাকলে নড়ে কেন? কিছু কিছু গাছের ডাল কেটে বিভিন্ন স্থানে রোপন করলে প্রায় সবগুলোই স্বতন্ত্রভাবে বেঁচে যায়। ক্লোনিং করেও একটি কোষ থেকে প্রাণী সৃষ্টি করা হচ্ছে। তাহলে কি আত্মার বিভক্তি হল? নাকি নতুন আত্মা আসল? আত্মা বীজে না এসে ডালে আসল কেন? বা ক্লোনিং শেষে এক আত্মা দুই দেহে প্রবেশ করে কি করে?

২৯। পৃথিবীতে প্রায় ৬শ কোটি মানুষ। রহিমের একটি ভাল কাজের জন্য আল্লাহ খুশি হলেন, ঠিক একই সময়ে করিমের খারাপ কাজে তিনি ক্রুদ্ধ হলেন। একই সময়ে এ দুটো বিপরীতমুখী কাজ কিভাবে সম্ভব।

৩০। বলা হয় আল্লাহ ন্যায়বান ও দযালূ। বিচার ক্ষেত্রে ন্যায় ও দয়ার একত্র সমাবেশ অসম্ভব। তাহলে বিচার কার্যে তিনি একই সময়ে ন্যায়বান ও দয়ালু কিভাবে হবেন?

৩১। যেহেতু মানুষের পক্ষে চার স্ত্রীর দিকে সমান দৃষ্টি দেয়া সম্ভব নয়, তাহলে এরকম বিধান কেন?

৩২। মুহম্মদের ছয় বছরের শিশু এবং ধর্ম পুত্রবধুসহ এতগুলো (১২-১৪টি) বিবাহের ব্যাখ্যা কি কি? এবং কতটুকু যুক্তিসঙ্গত এবং প্রয়োজন কি ছিল? ইসলামী বিবাহ তালাক ও হিল্লার চেয়ে অনৈসলমিক সভ্য আইনগুলো ভাল নয়কি? কেন?

৩৩। ডাইনোসরসহ বিলুপ্ত প্রাণীদের সম্পর্কে কোরানে কোন তথ্য নেই। এছাড়া বিজ্ঞান আবিস্কৃত প্রাচীন সভ্যতার কথাও লেখা নেই। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ ও তাদের অবস্থান সম্পর্কেও কিছু বলা নেই। কোরানে সেসব কথাই রয়েছে যা তৎকালীন সময়ে আরবের মানুষ জানতো বা অনুমান করতে পারত। এর কারণ কি?

৩৪। হোসেনের পরজয়ের পর হোসেন ও তার বংশধরদের হত্যাকারীরা প্রায় ৬শ বছর রাজত্ব চালায়। এরাই প্রকৃতপক্ষে ইসলামের প্রসার ঘটায়। মুহম্মদের বংশধরদের রক্তে যাদের হাত রঞ্জিত তাদের হাতে যারা মুসলমান হয়েছে তারা কি প্রকৃত মুসলমান হবে?

৩৫। মুসলমানদের মধ্যে অনেকগুলো ভাগ ও উপভাগ রয়েছে। এদের মধ্যে কারা প্রকৃত মুসলমান এবং কেন? অন্যরা কি মুসলমান নয়?

৩৬। কোরান নাকি বিজ্ঞান গ্রন্থ। একে রিসার্চ করে ইসলামী বিজ্ঞানীরা কি কি আবিষ্কার করেছে? রাইট ভ্রাতৃদ্বয় কোরান না জেনেও উড়োজাহাজ কি করে আবিষ্কার করল?

৩৭। আধুনিক সভ্যতা সৃষ্টিতে মুসলমানদের অবদান খুবই নগণ্য কেন? এরা বিপথে থাকলে ইহুদী ও খ্রীষ্টানদের অবদান এত বেশ কেন? তারা কি বিপথগামী নয়? বর্তমান পৃথিবীতে মুসলামনদের সংখ্যা মাত্র ২১% খ্রীষ্টান ৩৪ %, নাস্তিক/ ধর্মহীন ২১% এর মত। পৃথিবীর বেশিরভাগ মুসলমান নয়। অমুসলিম মানুষগণ জ্ঞানবিজ্ঞানেও এগিয়ে আছে। এই সংখ্যা গরিষ্ঠ মানুষরাই ভুল পথে আছে তার প্রমাণ কি?

৩৮। কোরানে দাসীদের ভোগ করার অধিকার দেয়া হয়েছে। একাটি ধর্ষণ ও মানবতাবিরোধী নয়? এছাড়া হাদিসে স্ত্রীকে জোর করে সহবাস করার অধিকারের কথা বলা হয়েছে- এটা কি ধর্ষণ নয়? তাহলে নারীর অধিকার কি ক্ষুন্ন করা হয় নাই?

৩৯। ইসলাম নারীদের ক্ষমতা গ্রহণ মেনে নেয় না কেন? আপনারা নারীদের ভোট দিতে দিচ্ছেন কেন? মেনে নিচ্ছেন কেন? অথচ জননাঙ্গ ছাড়া নারী পুরুষে কোন পার্থক্য নেই একথা সত্য নয় কি?

৪০। উসমানের ইসলাম বিরোধী কাজের প্রতিবাদ করায় সাহাবা আবুজর গিফরীকে নির্বাসন দেয়া এবং তারা নিজের পছন্দসই কোরান বাদে বাকীগুলিকে পুরিয়ে ফেলার পরও সে কিভাবে আমাদের খলিফা? এছাড়া আলী বুদ্ধি, কৌশল এবং শেষে পেশিতে মোয়াবিয়ার কাছে পরাস্ত হলেন সে কিভাবে আল্লার তরবারী এবং খলিফা হওয়ার যোগ্যতা রাখেন? এছাড়া আবু বক্কর ও ওমরকে শ্বশুর এবং জামাতা অর্থাৎ আত্মীয়ার বন্ধনে আবদ্ধ করা কি ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার কৌশল নয়? চার খলিফাই একই বংশভূক্ত এবং কেউ জামাতা কেউ শ্বশুর এটা স্পষ্টতই পারিবারিককরণ নয় কি?

৪১। বিজ্ঞানীরা টেষ্ট টিউবে বিভিন্ন পদার্থের সংমিশ্রণ ঘটিয়ে ভাইরাস জাতীয় প্রাণী সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছেন। বিজ্ঞানীরা চলাচল সক্ষম ভাইরাস আত্মা ছাড়া কিভাবে বানালেন? সম্প্রতি কৃত্রিমভাবে তৈরি ডিএনএ মৃত ব্যাক্টিরিয়ার খোলসে প্রবেশ করিয়ে জীবিত করে তুলেছেন বিজ্ঞানীরা। এখানে আত্মা কে বানালো?

৪২। নূহের নৌকায় এত প্রকারের ডাইনোসর , হাতি, সিংহ, বাঘ, গণ্ডার ছাড়াও কোটি কোটি প্রাণী ও বীজ কি করে রাখলেন? না রাখলে এরা বাঁচলো কি করে? সারা পৃথিবী জুড়ে পাহাড়ের সমান উচ্চতার বন্যার পানিগুলো কোথায় গেল?

৪৩। স্ত্রী ছাড়া শয়তানের বংশবৃদ্ধি কিভাবে হচ্ছে? শয়তানের স্ত্রী নাই অথচ একসাথে ১০টি সন্তান হচেছ কিভাবে? অমুসলিম দেশে শয়তানের অস্তিত্ব নাই কেন?

৪৪। জ্বিন কোথায়? থাকে অমুসলিম দেশে এর আভাস নাই কেন?

৪৫। ইমাম মেহেদী এত অস্ত্রের মুখে কেন তরবারী দিয়ে যুদ্ধ করবে এবং ঘোড়ায় করে সংবাদ পাঠাবে।

৪৬। হাতের মুঠোয় পৃথিবী, অথচ সাদ্দাদেও বেহেস্ত পৃথিবীর কোথায় রয়েছে এবং ইমাম মেহেদীর পরবর্তী কালের দানবরা কোথায় লুকিয়ে আছে জানা যাচ্ছে না কেন?

৪৭। বর্তমানে কোন বুজুর্গ মাজেজা দেখাতে পারছে না কেন? সঠিক কোন মুসলামান নেই কি?

৪৮। মানুষ মাটি দিয়ে সৃষ্টি। অন্য প্রাণীরা মাটির সৃষ্টি নয়। অথচ মানুষের কোষের সাথে অন্য প্রাণীর কোষে প্রচুর মিল রয়েছে। এমনকি গঠন পরিপাক, জনন প্রনালী অনেকটাই এক রমক অর্থাৎ তারা একই ভাবে সৃষ্টি। এর কারণ কি?

৪৯। ঈমানদারদের চেয়ে বেঈমানদাররা বেশি সৎ কাজ করছেন কেন? আল্লাহর রহমত মুসলমানদের উপর কি করে গেছে? মুসলমানদের সাফল্য এত কম কেন? মুসলমানরা অনেক ক্ষেত্রেই বিধর্মীদের দয়ায় বেঁচে থাকে কেন? তাহলে বিধর্মীরা কি আল্লাহর বেশি প্রিয় হয়ে যাচ্ছে?

৫০। চোর ডাকাতদের রেজেক কে দেয়? যদি আল্লাহই চোর ডাকাতদের রেকেজ এভাবেই দেয় তবে তাদেও করার কি আছে? জারজ সন্তানদের রুহু যদি আল্লাহই সৃষ্টি করে থাকেন তাহলে শয়তান এখানে কি করেছে? মানুষের ভাগ্য ও হেদায়েত আল্লাহর হাতে থাকলে শয়তানের গুরুত্ব কি?

৫১। স্রষ্টা ছাড়া যদি কিছু সৃষ্টি না হয়। অর্থাৎ বলা হয় আল্লাহ না থাকলে এত সৃষ্টি হল কিভাবে এবং সুনিয়ন্ত্রিত হচ্ছে কিভবে? তাহলে স্রষ্টা ছাড়া আল্লাহর নিজের সৃষ্টি কিভবে হল?

৫২। ধর্ম মানুষকে বলে দিচ্ছে এটা ঠিক ওটা বেঠিক, অর্থাৎ মানুষের জীবন যাপনের পথ নির্দিষ্ট করে দিয়েছে। আইনতো বদলায় কিন্তু কোরআন তো কোনভাবেই বদলাবে না? তাহলে কি মানব জাতির বুদ্ধির বিকাশকে বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে না?

৫৩। মানুষকে লোভ দেখিয়ে কোন কাজ করানো বা ভয় দেখিয়ে কোন কাজ করানো অবশ্যই ঠিক নয়। তাহলে বেহেস্ত-দোজখের লোভ বা ভয় দেখিযে তাকে ধর্মের পথে আনানো কি সঠিক?

৫৪। ধর্মগ্রন্থে বলা হয়েছে পৃথিবীর চারদিকে রয়েছে কোহেক্বাফ নামক পর্বত। বর্তমানে পৃথিবীর কোথায় কি আছে সব কিছুই মানুষের জানা। দূর্ভেদ্য সেই কোহেক্বাফ পর্বত বর্তমান পৃথিবীতে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না কেন?

৫৫। মুসলমাদের জন্য কচ্ছপ ও শুকর খাওয়া নিষিদ্ধ । অথচ এদের মাংসের মধ্যে কোন কোন খারাপ উপাদান দেখা যাচ্ছে না বরং প্রায় অন্যান্য খাদ্যোপযোগী মাংসের মতোই। এদের খেতে না দেওয়ার প্রকৃত কারণ কি? তাহলে আল্লাহ এদের সৃষ্টিই করেছেন কেন?

৫৬। বৃষ্টিপাত নাকি মিকাইল ফেরেস্তা নিয়ন্ত্রন করেন। বৃষ্টিপাতের সিস্টেম আজ মানুষের জানা সেই সিস্টেমে মিকাইল ফেরেস্তার প্রয়োজন কোথায়? মানুষ বর্তমানে কৃত্রিম ভাবেও বৃষ্টি নামাচ্ছে। এটাকি মিকাইল ফেরেস্তার কাজে হস্তক্ষেপের সামিল নয়? তারপরেও তিনি নীরব কেন?

৫৭। মানুষের অনিষ্টকারী এবং অপ্রয়োজনীয় অনেক প্রাণী পৃথিবীতে আছে। যেমন মশা, মছি, বিভিন্ন প্রকার জীবানু ইত্যাদি। এদের সৃষ্টি করার কারণ কি?

৫৮। ধর্মগ্রন্থে বলা হয়েছে পৃথিবীতে আঠারো হাজার মাখলুকাত আল্লাহ তায়ালা সৃষ্টি করেছেন। ডাইনোসরসহ কিছু প্রাণী বিলুপ্ত হওয়াতে এদের সংখ্যা কমে যাওয়ার কথা। অথচ দেখা যাচ্ছে এক অর্থোপোডা গোত্রই এদের চেয়ে বেশি সংখ্যক মাখলুকাত রয়েছে। অর্থাৎ পৃথিবীতে আঠারো হাজারের অনেক বেশি মাখলোকাত রয়েছে। বাকীরা এল কোথা থেকে?

৫৯। প্রায় সমস্ত ধর্মেই দেখা যাচ্ছে একজন আদিম পিতা ও মাতা রয়েছে। বিভিন্ন
ধর্মগ্রন্থে এদের নাম বিভিন্ন। অন্য ধর্ম যদি মিথ্যা হয় তাহলে তারা ইসলাম ধর্মগ্রন্থ আবির্ভাবের পূর্বে আদি পিতামাতার কথা জানল কি করে? বিভিন্ন ধর্মগ্রন্থে স্রষ্টার নাম ভিন্ন কেন?

৬০। মুসা নবীর হাতের লঠির আঘাতে নীল নদের মধ্য দিয়ে পানি শুকিয়ে রাস্তা হয়ে গিয়েছিল। নদীর স্রোত থাকায় এঘটনার প্রভাব ব্যাপকভাবে পরার কথা? পানি উপচে বন্যা হওয়ার কথা। প্রভাব পড়েছিল কি? আবার হযরত মুহম্মদের মেরাজ নিয়ে দুটি মত রয়েছে? বেশি প্রচলিত মতটি মতে সে সশরীরে মেরাজে গিয়েছিল। এটা সত্যি হতে হলে সারাবিশ্বব্যাপী তাপ, আলো, শৈথ্য, আবহাওয়া আনবিক অবস্থা, বায়ু ইত্যাদির ব্যাপক পরিবর্তন প্রয়োজন যার প্রভাব পৃথিবীতে ব্যাপকভাবে পড়ার কথা অথচ তার যাত্রার কথা সে না বলা পর্যন্ত আর কেউ জানতেও পারে নি। মেরাজ স্বশরীরে কিভাবে সম্ভব?