ইসলাম ধর্ম নারীদেরকে সবচাইতে বেশী মান-সম্মান আর মর্যাদা দিয়েছে বলে দাবী করে। কোন ইসলামী তফসিরকার যদি নারীদের মান মর্যাদা নিয়ে কথা বলা শুরু করে তো প্রথমেই বলে- পৃথিবীতে ইসলামই একমাত্র ধর্ম যা নারীদেরকে পুর্নাঙ্গ মান মর্যাদা দিয়েছে। যখন তাদেরকে কোরান হাদিস ঘেটে দেখানো হয় যে ইসলাম নারীদেরকে উত্তরাধিকার সূত্রে কিছু সম্পত্তি দেয়া ছাড়া বস্তুতঃ আর কোন মান সম্মান দেয়া তো দুরের কথা, বার বার অপমান অপদস্ত করেছে, এমনকি তাদেরকে পূর্নাঙ্গ মানুষ হিসাবেই স্বীকার করেনি। তখন তারা প্রশ্ন করে অন্য ধর্মে তো নারীদের একেবারেই মান সম্মান দেয়নি, সে তুলনায় ইসলাম নারীদেরকে অনেক মান সম্মান দিয়েছে যদিও তা তারা কোরান হাদিস থেকে একবারও প্রমান করতে পারে না একমাত্র কিছু সম্পত্তি দেয়ার বিধান ছাড়া। প্রশ্নটা হলো- তারা দাবী করছে কোরান হলো আল্লার বানী, আল্লার কাছে তার সব বান্দাই সমান ও সেহেতু তারা সমান মর্যাদার অধিকারী সেখানে কোরান কেন বার বার নারীদেরকে অসম্মান করবে? তথা আল্লার বানীতে এমন কিছু থাকতে পারে না যা কিছু মানুষের জন্য সব সময় সুবিধাজনক ও কিছ মানুষের জন্য অপমানজনক। যদি তা হয়, তাহলে তা আল্লাহর বানী কিনা তাতে সন্দেহ দেখা দেয়া স্বাভাবিক। এমনকি হাদিস যা নাকি মহানবীর জীবনের নানারকম কার্যাবলীর বর্ননা আছে, আছে মানুষের জন্য চলার নানারকম দিক নির্দেশনা, সেখানেও নারীদেরকে স্রেফ ভোগ্য পন্য ছাড়া পরিপূর্ন মানুষ রূপে তিনি নারীদেরকে স্বীকার করেন নি বরং তার নারী সম্পর্কিত ব্যক্তিগত জীবন ছিল খুবই কদর্য ও প্রশ্ন বিদ্ধ। যেমন তিনি আল্লাহ প্রেরিত রসুল, কিন্তু তার সম্পূর্ন জীবন ছিল নারী কেলেংকারী ও যৌনাচারে ভরপূর। তিনি একাধারে ১৩ টির বেশী বিয়ে করেছিলেন, এ ছাড়াও তার ছিল অনেক দাসী বাদী যাদের সাথে তার অবৈধ যৌন সম্পর্ক ছিল আর তা জায়েজ করতে আল্লার বানীর নামে তিনি যুদ্ধ জয়ে বন্দীকৃত নারীদেরকে গনিমতের মাল হিসাবে বর্ননা করে তাদেরকে ধর্ষন করাকে জায়েজ করে দিয়ে যান, একসাথে অনেক স্ত্রী নিয়ে হারেম তৈরী করেছিলেন, ৫১ বছর বয়েসে মাত্র ৬ বছর বয়সের শিশু আয়েশাকে বিয়ে করেছিলেন যে নাকি ছিল তার ধর্ম সম্পর্কিত ভাতিজি, তিনি তার পালিত পূত্র জায়েদের স্ত্রী জয়নবের রূপ যৌবন দেখে রিপু তাড়িত হয়ে নানা ছলাকলা করে জায়েদ কর্তৃক জয়নবকে তালাক দিতে বাধ্য করেন ও পরে নিজেই তার সেই পূত্র বধূকে বিয়ে করেন, এ নিয়ে সমাজে কানাঘুষা শুরু হলে, আল্লাহ থেকে আয়াত নাজিলের নামে তা বন্দ করেন , অথচ পৃথিবীর সব সমাজেই পালিত পূত্রকে নিজের পূত্র হিসাবে জ্ঞান করা হয়ে থাকে, একমাত্র মোহাম্মদ তার বিকৃত যৌন কামনা চরিতার্থ করতে পবিত্র সম্পর্ক কলুষিত করেন ও যাকে ধর্মের নামে গোটা মুসলমানদের ওপর চাপিয়ে দেন ও আল্লাহর আয়াতের নাম দিয়ে বলেন- পালিত পুত্রের তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রীকেও বিয়ে করা যাবে এবং যার ফলে গোটা মুসলমানরা আজকে মানষিকভাবে বিকৃত। গনিমতের মাল হিসাবে বন্দী নারীদেরকে ভোগ করা যাবে এটা কোরান অনুমোদিত আর তাই ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় যে দুই লাখ মা বোন (যার প্রায় ৯৯% জনই মুসলমান) ধর্ষিতা হয়েছিলেন তৎকালীন জামাতে ইসলামী তাকে আল্লার বিধান হিসাবে বিধি সম্মত বলে রায় দিয়েছিল ও সেকারনে তারা আজও এ জঘন্য ঘটনার জন্য অনুতপ্ত নয়।এবার সরেজমিনে দেখা যাক, ঐশি কিতাব কোরানে আল্লাহ কতটুকু মর্যাদা নারী জাতিকে দিয়েছে।

তোমাদের স্ত্রীগণ তোমাদের শস্যক্ষেএ, সুতরাং তোমরা তোমাদের শস্যক্ষেত্রে যে প্রকারে ইচ্ছা অবতীর্ন হও। সূরা-২: বাক্কারাহ, আয়াত:২২৩

সোজা কথায় নারীদেরকে এখানে একটা ভোগ্য পন্যের উপাদানের চাইতে আর বেশী মর্যাদা দেয় নাই। পুরুষগন তাদের স্ত্রীদেরকে যেভাবে খুশী যখন ইচ্ছা খুশী ভোগ করবে- এখানে নারীর ইচ্ছা অনিচ্ছার কোন মূল্য নেই, যেন তারা শুধুমাত্র সেক্স ডল ও তাদের কাজ হলো রিপু তাড়িত স্বামী প্রবর যখনই যৌন তাড়িত হয়ে ছটফট করবে তখনই তাদেরকে দেহ দান করে তাদের যৌবন জ্বালা মেটাতে হবে, তা সে অসুস্থ থাকুক অথবা তার অন্য কোন শারিরীক বা মানসিক সমস্যা থাকুক তাতে কিছু যায় আসে না। আয়াতের প্রকাশ ভঙ্গী দেখা যাক, তোমাদের স্ত্রীগন তোমাদের শস্যত্রে, অর্থাৎ শস্যক্ষেত্রে যেমন ইচ্ছা খুশী চাষ বাস করা হয় ও নানাপ্রকার শস্য উৎপাদন করা হয় ইচ্ছা মত , নারীরা হলো ঠিক তেমনই এর বেশী কিছু নয়। এতটাই মর্যাদা নারীকে এ সূরার মাধ্যমে দেয়া হয়েছে।

—তোমাদের আপন পুরুষ লোকের মধ্য হইতে দুইজন সাী রাখ, যদি দুইজন পুরুষ না পাওয়া যায়, তাহা হইলে একজন পুরুষ ও দুইজন স্ত্রীলোক –। সূরা-২: বাক্কারাহ, আয়াত:২৮২

উপরের আয়াতে নারীদেরকে সোজাসুজি পুরুষের অর্ধেক মর্যাদা বা সম্মান প্রদান করা হয়েছে কারন সেখানে একজন পুরুষের সমান দুইজন নারীর সাী রাখার কথা বলা হয়েছে। যার আরও সোজা অর্থ হলো- একজন পুরুষ সমান দুইজন নারী, অর্থাৎ নারীরা পূর্নাঙ্গ মানুষ নয়, একজন পুরুষের অর্ধেক এর সমান হলো একজন নারী। যদি নারীর এ ধরনের মর্যাদা কোরান দিয়ে থাকে তাহলে কোন দেশে মুসলিম নারীরা ভোটাধিকার প্রাপ্ত হওয়ার কথা নয়, কারন যে পূর্নাঙ্গ মানুষ নয় তার তো ভোটাধিকার থাকা অসম্ভব। একই ভাবে যে পূর্নাঙ্গ মানুষ নয় সে দেশের প্রধানমন্ত্রী বা রাষ্ট্রপ্রধান হওয়া তো দুরের কথা কোন অফিসের বস হওয়ারও তার কোন অধিকার নেই। পরিবারে তার কোন বিষয়ে মতামত দেয়ারও অধিকার থাকতে পারে না। কোরান সোজাসুজি নারীকে কোন পূর্নাঙ্গ মানুষ হিসাবেই স্বীকার করে না- এতটাই বেশী মর্যাদা ইসলাম নারী জাতিকে দিয়েছে। এ ব্যপারে ইসলামী তফসিরকারদেরকে প্রশ্ন করা হলে তারা অদ্ভুত সব কথা বার্তা বলে। যেমন তারা বলে- নারীরা গর্ভবতী হয়, তারা মাসিক ্্্ঋতুস্রাবের কারনে অসুস্থ হতে পারে. উল্লেখ্য ঋতুস্রাবকে ইসলামে অসুস্থতা ও অপবিত্র হিসাবে গন্য করা হয়, তাদের মেধা ও বুদ্ধি পুরুষ মানুষের চাইতে কম( এ ব্যপারে অনেক হাদিস আছে), তারা কোন বিষয় ভালমতো মনে রাখতে পারে না, ইত্যাদি কারনে কোন সাক্ষ্য প্রদানকালে একজন নারী উপস্থিৎ হতে অপারগ হতে পারে, একারনেই এ সূরার আবির্ভাব ও যা যৌক্তিক। দেখুন কি অদ্ভুত ও উদ্ভট যুক্তি। এমনিতেই কোরান নারীকে পুর্নাঙ্গ মানুষ হিসাবে স্বীকার করছে না আবার তা যৌক্তিক করতে নারীকে আরও বেশী ছোট ও হীন করে দেখানো হচ্ছে। অসুস্থতা জনিত কারনে তো পুরুষরাও কোন স্যা প্রদানে হাজির হতে নাও পারে সে বিষয়টি তারা বেমালুম ভুলে যায়। মানুষ কত অন্ধ আর কুসংস্কারাচ্ছন্ন হলে এধরনের আজগুবি যুক্তি দেখাতে পারে। এবং এটাই কোরানের মতে একজন নারীর আসল মর্যাদা।

তোমাদের মধ্যে যে সকল নারী ব্যাভিচার করিবে, তোমরা তাহাদের বিরুদ্ধে তোমাদের মধ্যেকার চারিজনকে সাক্ষী রাখ, যদি তাহারা সাক্ষ্য দেয়, তবে তোমরা তাহাদিগকে সেই সময় পর্যন্ত গৃহে আবদ্ধ করিয়া রাখিবে যে পর্যন্ত না মৃত্যু তাহাদের সমাপ্তি ঘটায় কিম্বা আল্লাহ তাহাদের জন্য কোন পৃথক পথ বাহির করেন। এবং তোমাদের মধ্যেকার যে কোন দুইজন ব্যাভিচার করিবে, তোমরা সেই দুইজনকে শাস্তি দিও, অত:পর যদি তাহারা তওবা করে এবং সংশোধন করে তবে তাহাদের নিন্দাবাদ হইতে বিরত রাখ, নিশ্চয় আল্লাহ অতিশয় মাশীল দয়ালু। নিশ্চয়ই যারা অজ্ঞতাবশত: দোষের কাজ করিয়া বসে, তৎপর অল্পকাল মধ্যে তওবা করে, তাহাদের তওবা কবুল করা আল্লাহর দায়িত্ব, আল্লাহ তাহাদের প্রতি সু দৃষ্টি করিয়া থাকেন, আল্লাহ মহাজ্ঞানী ও মহাবিজ্ঞানী। সূরা-৪: নিসা, আয়াত:১৫-১৭
উপরোক্ত আয়াতের লাইনগুলো পড়লে মনে হবে কোরান সত্যিই নারীদেরকে মহা মর্যাদা বা সম্মান (?) প্রদর্শন করেছে। এখানে বলা হচ্ছে- যে সকল নারী ব্যাভিচার করবে তাদের শাস্তি হলো মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত আটকে রাখা, পান্তরে যখন কোন পুরুষ ব্যভিচার করবে তখন কিন্তু তাদের শাস্তি মৃত্যুদন্ড তো দুরের কথা, স্রেফ তওবা করলেই সে মাফ পেয়ে যাবে কারন কোরানের আল্লাহ পুরুষদের প্রতি সীমাহীন দয়ালু, কিন্তু নারীদের প্রতি কঠিন নির্দয়। আর পুরুষদেরকে এরকমভাবে আল্লাহ মাফ করে দেন বলেই তিনি মহাজ্ঞানী ও মহাবিজ্ঞানীও বটে! এভাবে নারীদের প্রতি এক তরফা কঠিন শাস্তির ব্যবস্থা করে তিনি বলা বাহুল্য নারীদেরকে মহাসম্মান প্রদর্শন করেছেন বৈকি!

হে মুসলমানগন, তোমাদের পে জায়েজ নহে যে, তোমরা নারীদিগের জোরপূর্বক মালিক হও এবং তাহাদিগকে আটক করিয়া রাখ,—কিন্তু তাহাদের দ্বারা সুস্পষ্ট কুকার্য প্রকাশ হওয়ার পর, এবং তাহাদের সহিত সদ্ব্যবহার সহকারে বসবাস কর, যদি উহাদিগকে না পছন্দ কর, তবে আশ্চর্য নয় যে, তোমরা যাহাকে না পছন্দ করিতেছ, বস্তুত: তাহারই মধ্যে আল্লাহ বহু কল্যাণ দিয়া রাখিয়াছেন। এবং যদি তোমরা এক স্ত্রী বদলাইয়া তৎস্থলে অন্য স্ত্রী গ্রহনের ইচ্ছা কর, এবং তাহাদের স্তূপিকৃত মালও দিয়া থাক, তবুও উহা হইতে কিছুই লইও না। তোমরা কি স্ত্রীর নামে কোন প্রকারের দুর্নাম রটাইয়া সুস্পষ্ট গোনাহ করিয়া উহা ফেরত লইতে চাও?সূরা-৪: নিসা, আয়াত:১৯-২১

উপরের সূরাটি নাজিল হয়েছিল বিধবা নারীদের প্রতি স্বামীর আত্মীয় স্বজনের ব্যবহার নিয়ে। এটা পড়লে আপাতঃ খুব সুন্দর মনে হতে পারে , কারন কোন নারীকে জোর করে অধিকার করতে নিষেধ করা হয়েছে। তারা বিধবা হওয়ার পর যদি কুকর্ম করে তাহলেও তাদের সাথে সদ্ব্যবহার সহকারে বাস করতে উপদেশ দেয়া হয়েছে। তারা বিধবা হলে তাদেরকে প্রদত্ত জিনিস পত্র যতই দামি হউক না কেন তা ফেরত নিতে নিষেধ করা হয়েছে। এসব বিষয় পড়লে মনে হবে কতই না সুন্দর সুন্দর কথা বলা হয়েছে। কোরানে এটাও কিন্তু একটা খুব ভাল কৌশল যা নবী মোহাম্মদ খুব ভালভাবে প্রয়োগ করেছিলেন আজকের ধান্ধাবাজ রাজনৈতিক নেতাদের মত যারা নাকি নির্বাচনের আগে খুব মিস্টি সুরে নানারকম মন ভোলানো কথার ফুলঝুরি ছোটায়।একটু গভীর ভাবে খেয়াল করলে আসল বিষয়টি ধরা পড়বে কোরান নারীকে কি হিসাবে বিবেচনা করেছে। সেটা হলো- এ আয়াত দ্বারা খুব স্পষ্টভাবে বোঝানো হচ্ছে যে, একমাত্র নারীরাই কুকর্ম করতে পারে বা তারাই একমাত্র কুকর্ম করার তালে থাকে, যেমন বলা হচ্ছে- কিন্তু তাহাদের দ্বারা সুস্পষ্ট কুকার্য প্রকাশ হওয়ার পর; যেখানে পুরুষরা একেবারে পুত পবিত্র । কারন এখানে নারীর কুকর্ম করার কথাই বলা হয়েছে , পুরুষের কুকর্ম করার কথাটি এখানে উহ্য রাখা হয়েছে । বলা বাহুল্য, একজন বিধবা নারীর সাথে অবৈধ সম্পর্ক সৃষ্টির চেষ্টা করে সর্বপ্রথম সেই পরিবারেরই প্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষ। এর পরে পাড়া প্রতিবেশীর নজর পড়তে পারে এবং এর প্রত্যেক ক্ষেত্রেই পুরুষ প্রবরটিই সর্বাগ্রে এগিয়ে আসে। অবৈধ সম্পর্ক গড়ার ক্ষেত্রে সর্বপ্রথম নারী এগিয়ে আসে এরকম নাজির খুবই কম। অথচ কোরানে কিন্তু নারীদেরকেই দোষ দিচ্ছে যে তারাই কুকামের প্রথম উদ্যোক্তা ও হোতা এবং পুরুষরা হলো নিষ্পাপ ও ফুলের মত পবিত্র।আর হবেও বা কি করে, কারন কোরানে তো নারীকে পূর্ন মানুষ হিসাবেই স্বীকার করা হয় নি, অথচ সূরার শেষ লাইন টি লক্ষ্য করলেই কিন্তু নাটের গুরু কে তা বোঝা যাবে। কোন প্রকারের দুর্নাম রটাইয়া স্ত্রীকে প্রদত্ত সম্পদ ফেরত নিতে নিষেধ করা হয়েছে, আর এ দুর্নাম রটনাকারীরা হলো বিধবা নারীর স্বামীর আত্মীয় স্বজন ও বলা বাহুল্য তারা সবাই পুরুষ। এবং মনে হচ্ছে আল্লাহ নারীদের প্রতি বোধ হয় সত্যিই খুব দয়ালূ । কিন্তু বিষয়টি তা নয়। আসল ঘটনা হলো- ১৪০০ বছর আগের সেই বর্বর আরব সমাজে পুরুষ মানুষ ইচ্ছে করে তাদের বিধবা স্ত্রীদের নামে কলংক রটাত এবং তাদেরকে কোন কিছু না দিয়ে বা তাদেরকে প্রদত্ত জিনিস পত্র কেড়ে নিয়ে তাড়িয়ে দিত। কারন তখন সমাজে বিধবা নারীর সংখ্যা ছিল বহু, প্রতিনিয়ত যুদ্ধে সাহাবীরা মারা যাচ্ছিল, ফলে প্রতি পরিবারে বিধবা নারীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছিল যাদেরকে বসিয়ে বসিয়ে খাওয়ানো ছাড়া আর উপায় ছিল না সেই পরিবারের পুরুষদের। এর পর বলছে- যদি তোমরা এক স্ত্রী বদলাইয়া অন্য স্ত্রী গ্রহনের ইচ্ছা কর আহ কি মহা সম্মান কোরান এইবার প্রদান করছে নারীদেরকে! নারী যেন কোন পরিধেয় পোষাক বা গৃহপালিত জন্তু তাকে যখন ইচ্ছা খুশি বদলানো যায় ও নতুন আর একটা গ্রহন করা যায়। এক্ষেত্রে শুধুমাত্র সামান্য একটু ত্যাগ স্বীকার করতে হবে আর তা হলো- তাদেরকে প্রদত্ত মাল ফেরত নেয়া যাবে না , কি অপূর্ব সম্মান নারীর প্রতি! একটা ধনী ও লম্পট পুরুষ যখন ইচ্ছা খুশি একটার পর একটা স্ত্রীকে তালাক দিয়ে দেবে কারন তার নিত্য নতুন মেয়ে মানুষ চাই যৌন জীবনে বৈচিত্র উপভোগ করতে, এ জন্য সে সামান্য ত্যাগ স্বীকার করবে মাত্র এবং তা হলো সে স্ত্রীকে প্রদত্ত মালের কিছু ফেরত নেবে না ও বিয়ের মোহরানা পরিশোধ করে দেবে, ব্যাস আর কিছু দরকার নেই। কারন তালাক দেয়ার মতা শুধু পুরুষের হাতে, পুরুষটি যদি পৌরষত্বহীন হয়, বা অন্য কোন কারনে অম হয় স্ত্রীর শারিরীক ও মানসিক চাহিদা মেটাতে, তা হলেও নারী তাকে তালাক দিতে পারবে না আল্লার বানী বা কোরানের মতে, আর তা করে কোরান নারী জাতিকে অভুতপূর্ব সম্মান প্রদর্শন করেছে নির্দ্বিধায়। বস্তুত এ ধরনের আয়াত দ্বারা পুরুষকে বহুগামী করার জন্য উৎসাহিত করা হচ্ছে যা প্রকারান্তরে একটা প্রেম ভালবাসা মায়া মমতাহীন সমাজ সৃষ্টির পথ দেখানো হচ্ছে যেখানে প্রতিটি পুরুষ হবে মোহাম্মদের দাস ও পুতুল স্বরূপ যারা ধর্মের নামে যাবতীয় অত্যাচার অবিচার খুন রাহাজানি গনহত্যা কোন কিছু করতেই পিছ পা হবে না তথা তারা সৃষ্টি করতে পারবে একটা বর্বর সমাজ। পুরুষ মানুষ যদি বহুগামী হয়, তাহলে তার পে প্রকৃত অর্থে একটা প্রেম ভালবাসাপূর্ন পরিবার গড়ে তোলা সম্ভব নয় সঙ্গত কারনেই। পুরুষকে বহুগামী হবার জন্য উৎসাহিত করে তাই বলা বাহুল্য একটি অশান্তিময় ও জঙ্গী সমাজ গঠনের জন্য প্রেরনা দেয়া হচ্ছে , অথচ আবার প্রচার করা হয়- ইসলাম নাকি শান্তির ধর্ম। ইসলাম যে পরিশেষে একটা জঙ্গী সমাজ গড়ে তোলে তা কিন্তু আমরা বর্তমানে মুসলিম বিশ্বের দেশে দেশেই দেখতে পাচ্ছি।

পুরুষগণ নারীদিগের উপর কর্তৃত্বশীল, এই কারনে যে, আল্লাহ উহাদের কাহাকেও কাহারও উপর মর্যাদা প্রদান করিয়াছেন, এবং পুরুষেরা স্বীয় মাল হইতে তাহাদের অর্থ ব্যয় করিয়াছে, ফলে পূন্যবান রমনীগন অনুগত থাকে, অজ্ঞাতেও তত্ত্বাবধান করে, আল্লাহর তত্ত্বাবধানের মধ্যে এবং যাহাদের অবাধ্যতার সম্ভাবনা দেখিতে পাও, তাহাদিগকে উপদেশ দাও, এবং তাহাদের সহিত শয্যা বন্ধ কর এবং তাহাদিগকে সংযতভাবে প্রহার কর, তারপর যদি তোমাদের নির্দেশ অনুযায়ী চলিতে থাকে, তাহা হইলে তাহাদের উপর নির্যাতনের পন্থা অবলম্বন করিও না, নিশ্চয়ই আল্লাহ সুউচ্চ মর্যাদাশীল মহান। সূরা-৪:নিসা, আয়াত:৩৪

এতন পর এই বার নারীর প্রতি কোরানের সম্মান একেবারে নগ্নভাবে প্রকাশ হয়ে পড়ল। এখানে সরাসরি বলে দেয়া হচ্ছে, নারীর ওপর পুরুষরা তথা স্বামীরা কর্তৃত্ব করবে যা আল্লাহর ইচ্ছা, নির্দেশ ও বিধান, তবে আল্লাহর নির্দেশ বা বিধান বলেও মনে হয় সেই বর্বর আরব সমাজে পার পাওয়া যাচ্ছিল না , তাই কারন হিসাবে বলা হলো- যেহেতু স্বামী স্ত্রীর ভরনপোষন করে সেহেতু সে তার স্ত্রীর ওপর আধিপত্য করবে। এবং এখানেও সেই এক তরফা নারীদেরকে দোষী বা কুকর্মের হোতা হিসাবে সাব্যাস্ত করা হয়েছে এই বলে যে- যাহাদের অবাধ্যতার সম্ভাবনা দেখিতে পাও-অর্থাৎ শুধু নারীরাই একমাত্র অবাধ্য হয় আর তা হলে তার ফুলের মত পবিত্র স্বামী কি কি করবে তারও একটা ফিরিস্তি এ সূরাতে সুন্দরভাবে দেয়া হয়েছে। প্রথমে উপদেশ দিবে, তারপর শয্যা বন্দ করবে, এরপর প্রহার মানে শারিরীকভাবে লাঞ্ছিত করবে- অর্থাৎ স্বামী প্রবরটি যা ইচ্ছা খুশী করবে কিন্তু স্বামী প্রবরটি দুনিয়ার আকাম কুকাম করে বেড়ালেও স্ত্রীকে চুপ করে বসে থাকতে হবে ঘরের চার দেয়ালের মাঝে। আর তা হলেই সে হবে পূন্যবতী , সতী , সাধ্বী নারী। নারীদেরকে কি বিপুল সম্মানই না প্রদান করা হয়েছে কোরান নামক আল্লাহ প্রেরিত পুস্তক খানিতে!

নিজেদের ইচ্ছা অনুযায়ী দুই-দুই, তিন-তিন ও চার-চার রমনীকে বিবাহ কর, কিন্তু তোমরা যদি আশংকা কর যে, সমতা রা করতে পারিবে না, তদবস্থায় একই স্ত্রী কিংবা তোমাদের অধীনস্ত দাসী; ইহা অবিচার না হওয়ারই অতি নিকটতর। সূরা-৪: নিসা, আয়াত:৩

নারীদেরকে যে শুধুমাত্র যৌন আনন্দের জন্য ভোগ্য পন্য ছাড়া আর কিছুই ভাবা হয়নি তার অকাট্য প্রমান উপরোক্ত আয়াতের বানী। একজন পুরুষ চারটি পর্যন্ত বিয়ে করতে পারবে, অর্থাৎ তার জন্যে যৌন আনন্দ লাভের জন্য বৈচিত্রের ব্যবস্থা করেছে কোরান বা ইসলাম। কারন সেই যুগে অসভ্য আরবদের জন্য জীবন উপভোগের সবচাইতে বড় উপায় ছিল যৌন কর্ম। সেসব আরবদেরকে ইসলাম ধর্মে আকৃষ্ট করতে হলে তাই বলা বাহুল্য যৌন আনন্দ লাভের একটা ব্যপক ব্যবস্থা থাকতে হবে।নইলে মানুষ ইসলাম কবুল করবে না। আর সেই সময়কার আরব সমাজে বিরাজ করছিল তার অনুকুল পরিবেশও । নিত্য নৈমিত্তিক যুদ্ধ বিগ্রহের ফলে পুরুষ মানুষের মৃত্যু হওয়ায় সমাজে পুরুষ মানুষদের ঘাটতি ছিল, সুতরাং নবী মোহাম্মদ কোরানের বানীর নামে উপরোক্ত আয়াত নাজিল করলেন অসভ্য আরবদেরকে ইসলামে আকৃষ্ট করতে। অসভ্য আরবরা আগে যেভাবে যথেচ্ছ যৌনাচার করে আনন্দ উপভোগ করত, ইসলাম ধর্মে দীক্ষা নেয়ার পরেও তার ব্যবস্থা সামান্য একটু ভিন্ন কায়দায় বহাল থাকল, ফলে ইসলাম ধর্ম গ্রহনে তার আর আপত্তি থাকার কথা না। উপরোক্ত আয়াত দ্বারা প্রকাশ করা হচ্ছে এক সাথে চারটি স্ত্রী রাখা যাবে, তবে কৌশল করে বলা হচ্ছে যদি স্ত্রীদের মধ্যে সমতা রা করতে না পারা যায় সেক্ষেত্রে দাসীদের সাথে যৌনাচার করা যাবে যত ইচ্ছা খুশী এবং বলা বাহুল্য বিয়ে না করেই।খোদ নবীরই দাসীর সংখ্যা ছিল বহু যাদের সাথে তার যৌন সমপক ছিল। অর্থাৎ বিয়ে বহির্ভুত যৌনাচারকে এখানে আল্লাহ বৈধ করে দিয়েছেন যেখানে অন্যত্র অবৈধ যৌন সম্পর্কের জন্য মৃত্যুদন্ডকে শাস্তি হিসাবে ঘোষনা করেছেন যা বলা বাহুল্য একটা মারাত্মক স্ববিরোধিতা। তো এত ভনিতার দরকার কি – সোজা সাপ্টা একটা বিয়ে করার কথা বললেই তো সব ল্যাঠা চুকে যেত। আসলে বিষয়টা অন্য। স্বয়ং আল্লাহর নবী নিজই বিয়ে করেছিলেন ১৩ টারও বেশী, তিনি কিভাবে তার উম্মতদেরকে মাত্র একটা বিয়ে করতে বলেন? আর তা বললেই কি তার উম্মতরা শুনত নাকি? বা তার উম্মত হতো নাকি? কথায় বলে না- আপনি আচরি ধর্ম পরেরে শিখাও।হাদিসে আছে কোন এক বালকের মিষ্টি খাওয়ার অভ্যাস ত্যাগ করাতে গিয়ে মোহাম্মদ নিজে প্রথমে মিষ্টি খাওয়া ত্যাগ করেছিলেন , তারপর বালকটিকে মিষ্টি খেতে উপদেশ দিয়েছিলেন। তো তিনি নিজে বৈধ বিয়ে করেছিলেন ১৩ টার বেশী, এছাড়া আরও দাসী ছিল কত যৌন আনন্দ উপভোগের জন্য, তো তিনি কিভাবে তার উম্মতদেরকে মাত্র একটা বিয়ে করতে বলবেন ? এখানে অবশ্য কায়দা করে বলা হচ্ছে -তোমরা যদি আশংকা কর যে, সমতা রা করতে পারিবে না, চার-চারটি বিয়ে করার কথা বলার পর এ কথার কিন্তু কোন মানে থাকে না, কারন যদি সমতা রা নাই করতে পারবে(স্বয়ং নবীও যা পারেন নাই, তার বেশী দুর্বলতা ছিল সুন্দরী বালিকা বধূ আয়েশার প্রতি), কোন মানুষের পে যা সম্ভবও নয়, তাহলে চার চার টি বিয়ে করার কথা কেন বলা হলো?

-তোমরা কখনো ভার্যাগনের মধ্যে সমতা রা করতে পারবে না যদিও লালায়িত হও, তবে সামগ্রিকভাবে ঝুকিয়া পড়িও না যে অপর স্ত্রীকে ঝুলানবৎ করিয়া রাখিবে এবং যদি সংশোধন কর এবং উভয়ে যদি পৃথক হইয়া যায়, তবে আল্লাহ অতিশয় মাকারী দয়ালু। এবং যদি উভয়ে পৃথক হইয়া যায় তবে আল্লাহ আপন উদারতায় প্রত্যেককে অমুখাপেী করিয়া দিবেন।-সূরা-৪:নিসা, আয়াত:১২৯-১৩০,

আল্লাহ বলছেন স্ত্রীদের মধ্যে সমতা রক্ষা করতে পারবে না , আবার সাথে সাথেই তিনি বলছেন তবে সামগ্রিকভাবে ঝুকিয়া পড়িও না তার মানে সমতা রক্ষ করতে না পারলেও বহু বিয়ে করা যাবে তবে কারও প্রতি খুব বেশী ঝুকে পড়তে নিষেধ করছেন, তার মানে আগের সূরাতে যে চারটি বিয়ের কথা বলা হয়েছে তা এ সূরা দিয়ে প্রতিষ্ঠিত করা হচ্ছে। ধূর্ত ইসলামী চিন্তাবিদরা কিন্তু এ বিষয়টি সব সময় এড়িয়ে যায়, তারা আগের সূরাটি উল্লেখ করে প্রচার করে থাকে যে- যেহেতু সমতা রা করা সম্ভব নয় , তাই যদিও চারটি বিয়ের কথা বলা হয়েছে তাই বাস্তবে তা সম্ভব নয় আর যার পরো অর্থ হলো – কোরান একটি মাত্র বিয়ের কথা বলেছে। কিন্তু সূরা নিসা-এর ১২৯-১৩০ আয়াত স্পষ্ট বলছে যে, সমতা রা না করতে পারলেও কোন সমস্যা নেই, সে ক্ষেত্রে কারও প্রতি বেশী ঝুকে পড়তে নিষেধ করা হচ্ছে তথা চারটি বিয়ে করাতে কোন সমস্যা নেই। তার পরেও যদি সমস্যা হয়, সে ক্ষেত্রে তালাকের ব্যবস্থা তো আছেই ও পরে আবারও বিয়ে করা যাবে। অর্থাৎ যার প্রতি অবজ্ঞা করা হচ্ছে মনে হবে তাকে তালাক দেয়ার জন্য পুরুষটিকে উৎসাহিত করা হচ্ছে। আর তা হলে এ হেন অন্যায় তালাকের জন্য পুরুষ লোকটির কোন সমস্যা হবে না কারন আল্লাহ অতিশয় দয়ালু। আল্লাহ শুধু দয়ালুই নন, পরন্তু তিনি এমন উদার যে সেেেত্র তিনি এমন ব্যবস্থা করে দেবেন যাতে সেই তালাক প্রাপ্তা নারী আর তার পূর্বের স্বামীর প্রতি কখনোই মুখাপেী হবে না। বোঝা যাচ্ছে বিয়ে করে একাধিক স্ত্রী অর্জন ও যৌনানন্দ উপভোগ করাই হলো ইসলাম ধর্ম মতে পুরুষ মানুষের জীবনের একমাত্র উদ্দেশ্য যাকে খুব কদর্যভাবে কোরানে বার বার উপস্থাপন করা হয়েছে। তৎকালীন অসভ্য আরবদেরকে প্রায় অবাধ যৌন আনন্দ উপভোগ করার ব্যবস্থা করে দেয়ার জন্য কোরান বা ইসলাম খুব কৌশলে বহু বিবাহকে উৎসাহিত করেছে যা কোরানের অনেক যায়গাতে খুব উৎকট ভাবে প্রকাশ পেয়েছে। কারন তা না করলে আরবরা মোহাম্মদের ইসলাম গ্রহন করত না।যা প্রকারান্তরে নারীদেরকে চুড়ান্ত অপমান ও অসম্মান করেছে। ইসলাম ধর্ম ইহ জগতে বহু বিবাহের মাধ্যমে বৈচিত্রপূর্ন যৌনাচার উপভোগ করার ব্যবস্থাই শুধু ইসলাম করে নাই বরং মৃত্যুর পরও যাতে অবাধ যৌনাচার উপভোগ করা যায় তারও বন্দোবস্ত রাখা হয়েছে বেহেস্তে প্রতিটি বেহেস্তবাসীর জন্য সত্তরটি চির যৌবনা হুর এর লোভ দেখানোর ব্যবস্থা করে। এ সব আয়োজন কিন্তু শুধু মাত্র পুরুষের জন্য, নারীদের ইহ জগতে যেমন কোন ব্যবস্থা নাই শুধুমাত্র পুরুষকে যখন তখন মনোরঞ্জন করা ও সন্তান উৎপাদন ছাড়া তেমনি বেহেস্তেও তাদের জন্য তেমন কোন বন্দোবস্ত নাই একমাত্র হুরদের সর্দারনী হওয়া ছাড়া। এখন প্রশ্ন হলো- হুররা তো চির যৌবনা যারা ব্যস্ত থাকবে তাদের জন্য নির্ধারিত বেহেস্তবাসীর(অবশ্যই পুরুষদের) মনোরঞ্জনে ( বলা বাহুল্য যৌনকর্মের মাধ্যমে), সর্দারনী হয়ে বেহেস্তবাসী নারী কি হুরদের মত পুরুষকে মনোরঞ্জনের সুযোগ পাবে কি না। একমাত্র ইসলাম ধর্ম ছাড়া দুনিয়াতে অন্য কোন ধর্মে এত নগ্ন ও কুৎসিত ভাবে যৌন আনন্দ উপভোগের লোভ দেখিয়ে মানুষকে ধর্মের দিকে আকৃষ্ট করার চেষ্টা করা হয়নি।ইসলামের এ বৈশিষ্ট্য দেখে মাঝে মাঝে প্রশ্ন জাগে- আল্লাহ কি দুনিয়া ও বেহেস্ত তৈরী করেছেন শুধু মাত্র আদম সন্তানদের জন্য যৌনানন্দ উপভোগ করার মূল উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে? তথাকথিত আল্লাহ প্রেরিত ঐশী কিতাব কোরানে এ ধরনের নগ্ন ও কুৎসিত বর্ননা ভুরি ভুরি। অথচ তথাকথিত ইসলামী চিন্তাবিদরা স্বাড়ম্বরে জাহির করে যে ইসলাম মূলতঃ একটি বিয়ে করার জন্য উৎসাহিত করেছে।তাহলে তো সোজা একটি বিয়ের কথা বলে দিলেই হতো। অযথা সমতা রা করার কথা বলার কোন অর্থ হয় না,এটা একটা বাক চাতুরী ছাড়া আর কিছুই নয়, এবং কিছুটা নারীদের মন জয় করার উদ্দেশ্য প্রনোদিতও বটে। প্রকৃত সত্য হলো- কোরান আসলেই বহু বিবাহকে উৎসাহিত করেছে কিন্তু বর্তমান আধুনিক সমাজের পরিবর্তিত প্রোপটে এটা নিয়ে যখন সমালোচনা হচ্ছে তখন তথাকথিত ইসলামী চিন্তাবিদরা উদ্ভ্রান্তের মত, পাগলের প্রলাপ বকছে। অবশ্য চার টি বিয়ে করার কথা বলার অন্য কতকগুলো কারনও আছে। তা হলো-প্রথমতঃ স্বয়ং আল্লাহর নবীরই ১৩টি (মতান্তরে আরও বেশী) স্ত্রী ছিল, সেখানে তিনি তার উম্মতদেরকে কিভাবে একটা মাত্র স্ত্রী রাখতে বলেন ? যদি তা বলেন তাহলে তার উম্মতরা তা শুনবে কেন? বলা বাহুল্য, তাহলে কেউ ইসলাম কবুল করবে না,ঠিক একারনেই নবীকে এভাবে চারটি বিয়ে করার ফতোয়া দেয়া ছাড়া কোন গতি ছিল না। দ্বিতীয়তঃ বিভিন্ন যুদ্ধ বিগ্রহে অনেক মুসলমান মারা যাচ্ছিল, সমাজে অনেক বিধবা নারীদের উদ্ভব ঘটছিল যাদের বেচে থাকার কোন অবলম্বন ছিল না,তাদের একটা অবলম্বনের প্রয়োজনীয়তা থেকেও চারটি বিয়ের ব্যবস্থা দরকার ছিল। তৃতীয়তঃ অতি দ্রুত মুসলমান জনসংখ্যা বৃদ্ধির দরকার ছিল, তাই এক সাথে একাধিক স্ত্রী থাকলে অধিকহারে জন্মদান করে মুসলমান জনসংখ্যা বৃদ্ধি করতে পারবে। মূলতঃ এগুলোই ছিল বাস্তব সম্মত কারন। আর এটা করতে গিয়ে নারীদেরকে করতে হয়েছে চুড়ান্ত অসম্মান ও অপমান, তাদেরকে পরিনত করা হয়েছে যৌন দাসী ও প্রজননের যন্ত্র, কাজের বেটি বা বড়জোর রতিা।

মহান আল্লাহ দাস প্রথার মত একটা চরম অমানবিক ব্যপারে আশ্চর্যরকম চুপ গোটা কোরান শরিফে, এ কেমন আল্লাহ যিনি পুরুষ মানুষ কয়টা বিয়ে করতে পারবে, ওজনে কম নাকি বেশী দিতে হবে, কাফেরদেরকে কেমনভাবে খুন করতে হবে, এমনকি নবী কাকে বিয়ে করবে আর কাকে করবে না তার মত তুচ্ছ ব্যপারে আয়াত নাজিল করতে পারে, অথচ মানবজাতির চরম অপমান দাসপ্রথা তা নিষেধ করার কথা বলতে পারল না? আল্লাহর দৃষ্টিতে সব মানুষ সমান হলে তিনি দাস প্রথা তুলে দেয়ার নির্দেশ কেন দেন নি কোরানে ? তবে মোহাম্মদ তার শেষ ভাষণে দাসদের প্রতি ভাল ব্যবহার করতে উপদেশ দিয়েছিলেন, নানা হাদিসেও দাসদের সাথে সদ্ব্যবহার করার কথা বলা হয়েছে, কিন্তু দাস প্রথা উচ্ছেদের ডাক কেন দিলেন না ? এর সোজা অর্থ তৎকালীন আর্থ-সামাজিক প্রোপটে দাসপ্রথা তুলে দেয়ার মত অবস্থা ছিল না যদিও সার্বিক বিচারে তা ছিল চরম একটা অমানবিক ব্যপার। মোহাম্মদ নিজে ব্যক্তিগত ভাবে দাসদের সাথে ভাল আচরন করেছেন বা দুই চারজন দাসকে তিনি মুক্তিও দিয়েছিলেন সত্য কিন্তু একটা অমানবিক প্রথা টিকিয়ে রেখে ব্যক্তিগত ভাবে এরকম আচরনের কোন সুদুর প্রসারী প্রভাব আছে? একেবারেই নেই, সে কারনেই কিন্তু নবীর আদর্শ অনুসরন করে ধাপে ধাপে কোন মুসলিম দেশ বা জাতিতে দাস প্রথা তুলে দেয়া হয়নি কখনো অর্থাৎ নবীর ব্যক্তিগত আচরনের দ্বারা অনুপ্রানিত হয়ে কোন মুসলিম দেশেই কিন্তু দাস প্রথার বিলুপ্তি ঘটে নি। দাস প্রথা সর্বপ্রথম বিলুপ্ত করে মুসলমানদের ভাষায় কাফির মুরতাদরা মানে অমুসলিমরা। আব্রাহাম লিংকনের আমলে সেই উনবিংশ শতাব্দির মাঝা মাঝি সময়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দাস প্রথার বিলোপের ঘটনা ও তার ফলে সৃষ্ট গৃহযুদ্ধের কথা আমরা অনেকেই জানি। কোরান আল্লাহর তরফ থেকে প্রেরিত হয়ে থাকলে অবশ্যই দাস প্রথার মত ঘৃন্য প্রথার বিলুপ্তির ঘোষনা তাতে থাকত। শুধু তাই নয়, আল্লাহ তার বানীর মাধ্যমে দাসীদের সাথে বিবাহ বহির্ভুত যৌনকর্মের অনুমতিও দিয়েছেন। মহান ও অসীম দয়ালু আল্লাহ কিভাবে এহেন অমানবিক বিষয়ের অনুমোদন দিতে পারেন ? সুতরাং খুব স্পষ্টতই বোঝা যায়, আল্লাহর বানী নয় এটা, এটা ছিল মোহাম্মদের নিজের মুখের বানী যা তিনি অসভ্য আরবদের মধ্যে আল্লাহর বানী হিসেবে চালিয়ে দিয়েছেন। আবারও স্ত্রীদের মর্যাদার বিষয়ে ফিরে আসা যাক।যদি তৃপ্তি না মেটে কোন কোন স্ত্রীকে তাদের মোহরানা মিটিয়ে দিয়ে তালাক দিয়ে নতুন নতুন বিয়ে করে নিলেই হলো। কারন একমাত্র স্বামীই পারে তার স্ত্রীকে তালাক দিতে, স্ত্রীর তালাক দেয়ার অধিকার নেই।তালাক দেয়ার জন্য আছিলা দরকার ,তারও বন্দোবস্ত করা আছে, বলে দিলেই হবে যে সে আর মনোরঞ্জন করতে পারছে না , ব্যাস তাহলেই হবে, এরপর তাকে তার মোহরানা দিয়ে তালাক দিয়ে দেও তাহলেই সাত খুন মাফ কারন এই মোহরানা পরিশোধের ব্যপারে কোরানে খুব বেশী জোর দেয়া হয়েছে, আবার বিয়ে করো, আর যত ইচ্ছা খুশী যৌন আনন্দ উপভোগ কর। কোনই সমস্যা নাই কারন তা আল্লাহ কর্তৃক প্রেরিত নিয়ম নীতি দ্বারা অনুমোদিত। অথচ স্বামী প্রবরটি যদি যৌন অম হয় বা রোগাক্রান্ত হয়ে অম হয়ে তার স্ত্রীকে সন্তুষ্ট করতে না পারে তা হলেও সে তার স্বামীকে তালাক দিতে পারবে না। কি অপূর্ব মর্যাদা দেয়া হয়েছে ইসলামে! বস্তুতঃ ইসলাম ছাড়া অন্য কোন ধর্মে আল্লাহর বানীর নামে নারীদেরকে ভোগ করার এমন অবাধ সুযোগ ও ব্যবস্থা আর নেই। যেখানে নারীরা শুধুমাত্র যৌন আনন্দের একটা উপকরন মাত্র, একই সাথে বংশ বিস্তারের জন্য একটা প্রজনন যন্ত্র ছাড়া আর কিছুই না। মোহরানা পরিশোধের বিষয়টির ব্যপারে কোরানে এত জোর দেয়ার কারন কিন্তু নারীদের প্রতি আল্লাহর অতিরিক্ত কোন দয়া বা ভালবাসা নয়। এর কারন হলো- পুরুষরা যেন অতি সহজে স্ত্রীদেরকে তালাক দিতে পারে ও নতুন স্ত্রী গ্রহন করতে পারে। কোন কিছু না দিয়ে আগের স্ত্রীকে বিদায় দিলে তা নিতান্ত অমানবিক দেখায়, তাই স্ত্রীকে যে কোন সময় ত্যাগ করার বিষয়টিকে একটু মানবিক রং দেয়ার উদ্দেশ্যেই মূলতঃ মোহরানা পরিশোধের বিষয়ে সবিশেষ জোর দেয়া হয়েছে। এই মোহরানা বিষয়টি কি? বিষয়টি হলো- বিয়ের কাবিন নামাতে স্বামী একটা নির্দিষ্ট পরিমান অর্থ বা সম্পদ দেয়ার অঙ্গিকার করে। স্বামী যখন স্ত্রীকে তালাক দেয়, তখন স্বামীকে কাবিন নামাতে লিখিত সেই নির্দিষ্ট পরিমান অর্থ বা সম্পদ পরিশোধ করে দিতে হয়। এখন একটি স্ত্রী তার স্বামীর ঘরে বেশ কিছু বছর বসবাস ক’রে সেখানে সে তার স্বামীর সংসারে নানাভাবে অবদান রাখে, তালাকের সময় সেই অবদানের কোন স্বীকৃতি দেয়ার কোন বিধান কিন্তু কোরানে নেই। স্বামীর সংসারে সে পারিবারিক কাজ কর্ম করে,পরিবারের দেখাশুনা বা রনাবেন করে, সন্তান সন্ততি লালন পালন করে, এর ফলে স্বামী নিরুদ্বিঘœ চিত্তে বাহিরে তার পেশাগত কাজে মনোনিবেশ করতে পারে ও সম্পদ অর্জন করে, বস্তুতঃ সেই সম্পদেও স্ত্রীর একটা হিস্যা বা দাবী প্রতিষ্ঠিত হয়ে যায়। কিন্তু কোরানে একমাত্র মোহরানা প্রদান ছাড়া অন্য সম্পদ দেয়ার কোন বিধান রাখে নি। অনেকটা রক্ষিতা রাখার মত ব্যপারটা। যেন একটা লোক একটা রক্ষিতা পুষল, কিছু বছর পর লোকটি রক্ষিতার প্রতি এক সময় আকর্ষণ হারিয়ে ফেলল এবং তখন সে মজুরি বাবদ কিছূ অর্থ প্রদান করে রক্ষিতা টিকে বিদায় দিয়ে দিল।

এবং তাহাদের স্তূপিকৃত মালও দিয়া থাক, তবুও উহা হইতে কিছুই লইও না। তোমরা কি স্ত্রীর নামে কোন প্রকারের দুর্নাম রটাইয়া সুস্পষ্ট গোনাহ করিয়া উহা ফেরত লইতে চাও?সূরা-৪: নিসা, আয়াত:১৯-২১

এ কথাগুলো দিয়ে কিন্তু নারীর প্রতি কোন সম্মান দেখানো হচ্ছে না। একটা পুরুষ যখন একটা নারীর সাথে বসবাস করে, ও নারীটি পুরুষটির মনোরঞ্জন করে, পুরুষটি অনেক সময় খুশী হয়ে কিছু গিফ্ট বা উপহার দেয় নারীটিকে , তো যখন পুরুষটি নারীটিকে ত্যাগ করবে তখন সেই উপহার সামগ্রী ফেরত নিতে নিষেধ করা হয়েছে। এ ক্ষেত্ত্রেও নারীটির সাথে অনেকটা রক্ষিতার মত ব্যবহার করা হচ্ছে। কোন পুরুষ মানুষ রক্ষিতা কে কিছু উপহার দিলে তা কখনো ফেরত নেয় তা শোনা যায় না, কিন্তু সেই আরবের মানুষগুলো এত অসভ্য ছিল যে , এ বিষয়টি স্রেফ একটি উপদেশের মত করে বললে তারা তা শুনত না, তাই নবী মোহাম্মদকে সেই উপদেশটাও আল্লাহর বানীর আকারে বলতে হয়েছিল। বিষয়টি আসলেই যে তাই তা কিন্তু পরের একই সূরার পরের বাক্যে নিশ্চিত করা হয়েছে-

উহা কি প্রকারে ফেরত নিবে, যেহেতু তোমরা একে অন্যের সহিত সহবাস করিয়াছ? সূরা-৪: নিসা, আয়াত: ২১।

অর্থাৎ সহবাস বা যৌন উপভোগের মজুরি স্বরূপ তা গন্য হবে, যা স্রেফ নারীটিকে একেবারে রক্ষিতার পর্যায়ে নামিয়ে ফেলেছে।যাই হোক , এখানেও কিন্তু কোরান স্বামীকে বলেনি যে স্ত্রীকে তালাক দেয়ার সময় স্ত্রীটি বছরের পর বছর ধরে সংসারে যে অবদান রেখেছে তার কোন স্বীকৃতি দিতে।মোহরানা পরিশোধ বা উপহার প্রদানের বিষয়ের সাথে পরিবারে যে অবদান রাখা হয়েছে তার কোন সম্পর্ক নেই। কোরান যদি বলত যে- স্বামীর অর্জিত সব সম্পদের ওপর স্ত্রীরও সমান অধিকার থাকবে যেহেতু স্ত্রী পরিবারের যাবতীয় সাংসারিক দায়িত্ব পালন করেছে, সন্তান সন্ততির লালন পালন করেছে, পরিবারের সুষ্ঠু রনাবেন করেছে সেহেতু স্বামী তার পেশাগত দায়িত্ব ঠিক মতো নির্বিঘœ চিত্তে পালন করতে পেরেছে ও সম্পদ অর্জন করতে পেরেছে- তাহলেই নারীদের প্রতি সত্যিকার সম্মান প্রদর্শন করা হতো। সুতরাং গভীর ভাবে চিন্তা করলে দেখা যায় যে – কোরান তথা ইসলাম একজন স্ত্রীকে তার স্বামীর একটা কাজের মেয়ে বা বড়জোর একটা রতিার মত মর্যাদা দিয়েছে। তবে সেই সম্পর্কটিকে একটা দলিলের(কাবিননামা) মাধ্যমে সম্পন্ন করার ব্যবস্থা করেছে যাকে ইসলামী চিন্তা বিদরা নারীদের জন্য একটা মহা মূল্যবান সম্মানের ব্যপার বলে অপপ্রচার চালাচ্ছে। খুব সূক্ষ্মভাবে বিচার করলে কোরান এর বর্ননা অনুযায়ী-

উহা কি প্রকারে ফেরত নিবে, যেহেতু তোমরা একে অন্যের সহিত সহবাস করিয়াছ? সূরা-৪: নিসা, আয়াত: ২১

তার মানে কাবিন নামা হলো একটা নারীর সাথে একটা পুরুষের যৌন কর্ম ও তার মজুরী ধার্যের একটা চুক্তিনামা যে কারনে পুরুষ মানুষটি যে কোন সময়ে চুক্তি মোতাবেক মজুরী পরিশোধ পূর্বক নারীটিকে বৈধভাবেই ত্যাগ (তালাক দেয়া) করতে পারবে, তাতে নারীটি কোন বাধা দিতে পারবে না।ঠিক একারনেই কোরানের বানী মোতাবেক মুসলমানদের মধ্যে তালাক প্রদান বিষয়টি সব চাইতে সহজ ও সরল এবং একারনেই মুসলমানদের মধ্যে নারীরা তালাক প্রাপ্ত হয় সব চেয়ে বেশী বঞ্চনার মধ্য দিয়ে। কোন রকম মানবিক দায় বদ্ধতা এখানে নেই।

খুব কৌতুহলোদ্দীপক বিষয় হলো- ইসলামী চিন্তাবিদরা কিন্তু প্রানান্তকর চেষ্টা করে যাচ্ছেন পুরুষ ও নারীদের সমান মর্যাদা প্রতিষ্ঠার ও সে অনুযায়ী তারা কোরানের বানী তল্লাশি চালিয়ে যাচ্ছেন প্রানপন। তা করে তারা বের করলেন এই সুরা –

তোমার বিবিগন তোমাদের আচ্ছাদন আর তোমরা তাদের আচ্ছাদন। সূরা-২: বাক্কারাহ, আয়াত:১৮৭

এর অর্থ নাকি নারী ও পুরুষের সমান অধিকার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত করেছে আল কোরান। এবার এ আয়াতটি পুরো বর্ননা করা যাক-

তোমাদের জন্য রমজানের রাত্রে তোমাদের বিবিগনের নিকট গমন করা জায়েজ করা হইয়াছে, তোমার বিবিগন তোমাদের আচ্ছাদন আর তোমরা তাদের আচ্ছাদন, আল্লাহ জানিতে পারিলেন যে তোমরা নিজেদের ক্ষতি করিতেছিলে, সুতরাং তিনি তোমাদের অপরাধ মার্জনা করিলেন এবং তোমাদের দোষ ছাড়িয়া দিলেন, সুতরাং এখন উহাদের সহিত সহবাস কর। সূরা-২: বাক্কারাহ, আয়াত:১৮৭ ,

রমজান মাসে স্বামী স্ত্রী যৌনমিলন করতে পারবে কিনা তার সমাধান করার উপলক্ষ্যে এ সূরাটি নাজিল হয়।এখন পাঠকগন নিজেরাই বুঝতে পারবেন কেন স্বামী ও স্ত্রীগনকে একে অন্যের আচ্ছাদন হিসাবে বর্ননা করা হয়েছে। এটা যে নারী ও পুরুষ সমান মর্যাদাবান অর্থে ব্যবহৃত হয়নি তা আশা করি ব্যাখ্যা করে বুঝানোর দরকার নেই। তারপরও বলতে হয়- বিষয়টা নিছক যৌন ক্রীড়ার সাথে সম্পর্কিত এবং সেটাই এখানে খুব পরিষ্কার ভাবে বলা হচ্ছে। অর্থাৎ যৌন ক্রীড়ার সময় স্বামী ও স্ত্রী একে অন্যের আচ্ছাদনের মত বা একে অন্যের সাথে পরিপূরক হিসাবে কাজ করে কারন তা না করলে যৌন ক্রীড়ার আসল আনন্দটাই পাওয়া যায় না এবং বলা বাহুল্য বিষয়টা যে কতটা সত্যি তা বিবাহিত পুরুষ ও নারী মাত্রেই জানেন। এ আচ্ছাদন বলতে স্ত্রী যে স্বামীর সমকক্ষ বা সমান অধিকার ধারন করে তা কি কেউ বলবে ? আর খেয়াল করুন আয়াতটিতে বলা হচ্ছে শুধু পুরুষ মানুষকে উদ্দেশ্য করে। কেন তা বলা হচ্ছে? কারন পবিত্র রমজান মাসে যেখানে ধৈর্য্য ধারন করার কথা, যৌন ক্রীড়ার মত বিষয় থেকে দুরে সরে থাকার কথা, অসভ্য আরব পুরুষগুলো তা করতে রাজী নয়, যৌন ক্রীড়াই হলো তাদের আনন্দ উপভোগের প্রধান মাধ্যম, তাই রমজানের পবিত্রতা রার নামে তারা সে কাজ থেকে বিরত থাকতে রাজী নয়।নবী মোহাম্মদ মৌখিক ভাবে তাদেরকে রমজান মাসে যৌন সম্ভোগ করতে নিষেধ করেছেন কিন্তু কেউ তার কথায় কর্নপাত করে নি, বিষয়টার গুরুত্ব বুঝতে ভীষণ বুদ্ধিমান মোহাম্মদের বিলম্ব হয় না।তাছাড়া তার নিজেরও অসংখ্য সুন্দরী ও আকর্ষনীয়া স্ত্রী আছে, তিনিও বা কি করে তাদের সাথে সহবাস না করে থাকবেন? তিনি খুব দ্রুত বুঝে ফেললেন আরবদের মাঝে ইসলাম প্রচার করতে হলে রমজান মাসের পবিত্রতার নামে যৌন ক্রীড়া বন্দ করার কথা বলা যাবে না, বললে ইসলাম প্রচার হবে না। ফলাফল- খুব দ্রুত আল্লাহর তরফ থেকে ওহী নাজেল হয়ে গেল এবং তাতে কি বলা হয়েছে তা তো উপরেই বর্ননা করা হয়েছে। আরবরা যে পবিত্রতা রার নামে রমজান মাসে যৌন ক্রীড়া থেকে বিরত থাকত না তার বর্ননা কিন্তু সূরাতেই আছে-আল্লাহ জানিতে পারিলেন যে তোমরা নিজেদের ক্ষতি করিতেছিলে, সুতরাং তিনি তোমাদের অপরাধ মার্জনা করিলেন এবং তোমাদের দোষ ছাড়িয়া দিলেন, আল্লাহ সত্যিই অশেষ দয়াবান ও ক্ষমাশীল, তিনি আরবদেরকে পূর্বকৃত অসংযমী যৌনাচারকে শুধু মাফই করেন নি বরং তাকে জায়েজ করে দিয়েছেন নিজ মহত্বতায়। কোরানে বার বার যেখানে বর্ননা করা হয়েছে- নারীদের ওপর পুরুষরা কর্তৃত্বশীল, নারীদের ওপর পুরুষদের বিশেষ মর্যাদা রয়েছে, স্ত্রী যদি অবাধ্য হয় তাকে শারিরীক ভাবে প্রহার করা যাবে, যে কোন সময় স্ত্রী বদলানোর জন্য তাকে তালাক দেয়া যাবে, এক সাথে চারটা পর্যন্ত স্ত্রী গ্রহন করা যাবে, তাতেও তৃপ্তি না হলে যত ইচ্ছা খুশি দাসীকে ভোগ করা যাবে এত কিছুর পরে কোথায় যৌন ক্রীড়ার সময়কার একটা বর্ননাতে বলা হলো পুরুষ ও নারী একে অন্যের আচ্ছাদন আর তাতেই নারী পুরুষের সমান মর্যাদা সম্পন্ন হয়ে গেল ? বড় আজব কথা বার্তা। ধুরন্ধর ইসলামী চিন্তাবিদরা কিন্তু আরও একটা সূরা হাজির করে এ বিষয়ে আর সেটা হলো-

পুরুষদের ওপর নারীদের হক আছে যেমন দস্তুর অনুযায়ী নারীদের ওপর পুরুষের হক আছে। সূরা-২: বাক্কারাহ, আয়াত:২২৮

লক্ষ্য করুন আয়াতটি পড়লে কিন্তু সত্যি সত্যি মনে হবে কোরান স্বামী ও স্ত্রীকে সমান মর্যাদা প্রদান করেছে। এবার পুরো আয়াতটি দেখা যাক সেখানে কি লেখা আছে-

পুরুষদের ওপর নারীদের হক আছে যেমন দস্তুর অনুযায়ী নারীদের ওপর পুরুষেরও হক আছে, অবশ্য নারীদের ওপর পুরুষদের বিশেষ মর্যাদা রহিয়াছে, এবং আল্লাহ শক্তিমান ও প্রজ্ঞাশীল। সূরা-২: বাক্কারাহ, আয়াত:২২৮

এবার পাঠক নিজেই ভানুমতির খেলটা ভালই ধরতে পারবেন আশা করি।সে খেলটা কি ? নারী ও পুরুষের একে অন্যের উপর হকের কথা বলে ঠিক পরেই বলছে-নারীদের ওপর পুরুষের বিশেষ মর্যাদা রয়েছে আর বলা বাহুল্য এর মানে হলো- পুরুষ নারীর ওপর সবসময় কর্তৃত্ব করবে কারন তারা সমান মর্যাদার অধিকারী নয়।ধুরন্ধর ইসলামী চিন্তাবিদরা যে কৌশলটির আশ্রয় নেন তা হলো- সূরাটাকে আংশিকভাবে উল্লেখ করেন। তা করে তারা নিরীহ জনগনকে ধাপ্পা দিতে চান।

একটা কাজ ইসলাম নারীদের জন্য করেছে তা হলো-পিতা-মাতা বা স্বামীর সম্পত্তিতে নারীর কিছুটা অধিকার দেয়া হয়েছে। গোটা কোরানে যদি নারীদের কিছুটা সম্মান দেয়া হয়ে থাকে তো তা এই এটুকুই। এ ছাড়া কোরানে আল্লার অমোঘ বানীর নামে নারীদেরকে ক্রমাগত অপমান আর অসম্মান ছাড়া আর কিছুই করেনি। আসলে এ সম্মান টুকুও বোধ হয় করা হতো না, করা হয়েছে বাস্তব কারনে। আর তা হলো- সেই চোদ্দ শ’ বছর আগে যখন নবী মোহাম্মদ আরব দেশে ইসলাম প্রচার করছিলেন তখন সেখানকার মানুষদের সাথে সব সময় প্রবল প্রতিরোধের সম্মুখীন হতে হচ্ছিল, প্রায়ই যুদ্ধ বিগ্রহ চলছিল, তাতে অনেক মুসলমান পুরুষ মারা পড়ছিল, বহু নারী বিধবা হচ্ছিল, সেই আরব সমাজে নারীদের জন্য বেচে থাকার কোন পেশা ছিল না, আবার তাদেরকে বিয়ে করার মত পর্যাপ্ত পুরুষ মানুষও সেই আরব দেশে ছিল না, তাই নিতান্তই বেচে থাকার প্রয়োজনে তাদের জন্য একটা ব্যবস্থা করতে হয়- সে তাগিদ থেকেই মূলতঃ নারীদেরকে তাদের পিতা মাতা বা স্বামীর সম্পত্তির কিছু অংশ প্রদানের ব্যবস্থা করা হয়। তা যদি না করা হতো তাহলে নারীরা ইসলাম ধর্ম গ্রহন করত না। সুতরাং এটা ছিল একটা রাজনৈতিক কৌশলের মত, কোন ক্রমেই আল্লাহ প্রেরিত নির্দেশের মত এটাকে শোনায় না। নারীরা মনে হয় কোরান কে কখনো ঠিকমতো পড়ে নাই। পড়ে থাকলে তাদের পে ইসলাম ধর্মে পড়ে থাকা খুব কঠিন হতো। ইসলামী পন্ডিতরা এ বিষয়ে অত্যন্ত সুকৌশলে বলে থাকে যে, অন্যান্য ধর্মে তো একেবারেই নারীদেরকে সম্মান দেখানো হয় নি। যেমন খৃষ্টান ধর্মে নারীদেরকে নরকের দ্বার, হিন্দু সনাতন ধর্মের মনু সংহিতায় প্রায় একই কথা বলা হয়েছে নারী সম্পর্কে। ইসলাম ধর্মে তো সেরকম কিছু করা হয়নি। কথাটা একশ ভাগ সত্যি। কিন্তু তারা একবারও ভাবে না যে, ওসব ধর্মের কিতাবে যদিও নারীদের সম্মান দেখানো হয়নি, তার পরেও ও সব ধর্মের অনুসারীরা কিন্তু বর্তমানে মনে করে বা বিশ্বাস করে যে, ঈশ্বর বা ভগবান নিশ্চয়ই কিতাবে ওসব কথা লেখেননি, লিখেছে কিছু মতলববাজ লোক নারীদেরকে দাবিয়ে রেখে শুধুমাত্র ভোগ্য পন্য করে রাখার আশায় এবং তা পরে ঐশি বানী হিসাবে চালিয়ে দিয়েছে। যে কারনে খৃষ্টান বা হিন্দু অধ্যূুষিত দেশে ধর্মের নামে নারীকে তার প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত না করে রাষ্ট্র বরং আইন জারি করে তাদেরকে পুরুষের সমান মর্যাদা ও অধিকার প্রদান করেছে কারন সেটা ছিল নারীদের বাস্তব সম্মত দাবী, আধুনিক ন্যায় বিচার সম্বলিত সমাজ গঠনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। ধর্ম সেখানে বাধা হয়ে দাড়ায়নি বা কেউ ঈশ্বরের বানী বা ভগবানের বানীর নামে আন্দোলন গড়ে তোলেনি। । কিন্তু মুসলিম দেশে হচ্ছে ঠিক তার উল্টোটা। উন্নত ও মুক্ত গনতান্ত্রিক দেশ সমূহের চাপে পড়ে মুসলিম দেশে নারীদের যেটুকু অধিকার প্রদান করা হয়েছে, যদিও তা কোরানের বানীকে উপো করেই, প্রতি নিয়ত সেখানে ইসলাম পন্থি রাজনৈতিক দল সমূহ কোরানের আইন কায়েমের ল্েয নারীদের সেটুকু অধিকারও খর্ব করার প্রানপন চেষ্টা চালিয়ে যাচেছ। আফঘানিস্তানে তালেবানরা কি শাসন কায়েম করেছিল তা সবাই জানে। যদি কোরানের নিরিখে তালেবানদের শাসনকে ধরা হয়, তাহলে তারা এক শ ভাগ কোরান বর্নিত ইসলামী শাসনই কায়েম করেছিল। কিন্তু তখন আবার দেখা গেল, মুক্ত গনতান্ত্রিক ও ধনী রাষ্ট্র সমূহ রুষ্ট হবে, এই ভয়ে অধিকাংশ মুসলিম দেশই কিন্তু তাদেরকে স্বীকৃতি দেয় নি। শুধু যে এটা রাষ্ট্রীয় ব্যপার ছিল তা না, মুসলিম দেশ সমূহের একটা বিরাট জনগোষ্ঠীও কিন্তু তালেবানদের শাসন সমর্থন করেনি। কিন্তু সাচ্চা মুসলিম মাত্রেই কিন্তু তালেবান দের সমর্থন করা নৈতিক দায়িত্ব ছিল।তা ছাড়া অন্য ধর্মে কি আছে তার তুলনা করাও তো এখানে অবান্তর। বলা হচ্ছে কোরান হচ্ছে স্বয়ং আল্লাহর বানী যা অতঃপর কেয়ামত পর্যন্ত চালু থাকবে কোন নড়চড় হবে না। সুতরাং আল্লাহর বানীতে তো কোন বৈষম্য থাকতে পারে না। অথচ কোরানে নারীদের প্রতি শুধু বৈষম্যই করা হয়নি বরং তাদেরকে বলা হয়েছে যাবতীয় আকাম কুকাম তথা ব্যভিচার , বিপথগামীতার মূল হোতা হিসাবে, তাদেরকে পুরুষ মানুষের অর্ধেক হিসাবে গন্য করা হয়েছে, অনেকটা গনিকা বা রতিার মর্যাদায় অভিষিক্ত করা হয়েছে, আর সেখানে পুরুষ প্রবরটি একেবারে দুধে ধোয়া তুলসীপাতা।

এখন কথা হলো- মুসলমানরা যদি স্বীকার করে যে, নারীদের পুরুষদের চেয়ে অর্ধেক মর্যাদা দেয়া হয়েছে ও তাদেরকে আংশিক বা অর্ধেক মানুষ হিসাবে মেনে নেয়া হয়েছে কারন তা আল্লার বানী, তাহলে কিন্তু কোন কথা নেই। কিন্তু কথা ওঠে তখনই যখন কিছু কিছু মতলব ও ধান্ধাবাজ তথাকথিত ইসলামি চিন্তাবিদ ও রাজনীতিবিদ তারস্বরে চিৎকার চেচামেচি করে বলে যে , ইসলাম নারীদেরকে বিপুল সম্মান ও অধিকার প্রদান করেছে । এখন মুসলিম নারীদেরকে ভাবতে হবে তারা এ ধরনের তথাকথিত আল্লার বানীর নামে তাদেরকে যে আংশিক মানুষ হিসাবে ধরা হয়েছে তা নিয়ে তারা সন্তুষ্ট থাকবে কি না।

আধুনিক যুগে উন্নত দেশ সমূহে নারীরা পুরুষের মত উচ্চ শিায় শিতি হয়ে পুরুষদের সাথে সমান তালে চলছে, চাকরী বাকরী এমনকি ব্যবসা বানিজ্য করে স্বাবলম্বী হচ্ছে, চোদ্দ শ’ বছর আগেকার বর্বর আরব সমাজের মেয়েদের মত তাদেরকে পুরুষের আয়ের ওপর নির্ভর করে বেচে থাকতে হয় না। যার প্রভাব অন্যান্য মুসলিম অমুসলিম সব দেশের মেয়েদের ওপর পড়েছে। শিতি স্বাবলম্বী মুসলিম মেয়েরা তাই তাদের স্বামীর অনৈতিক ও অযাচিত কর্তৃত্বকে চ্যালেঞ্জ করছে। কিন্তু বাস্তবতা হলো- কোরানে এমন কোন সত্যিকার আয়াত খুজে পাওয়া যাবে না যাতে পরিপূর্নভাবে বলা হয়েছে নারী ও পুরুষ সমান মর্যাদার অধিকারী। বরং বিপরীতটাই ঠিক। পিতা বা স্বামীর সম্পত্তিতে সামান্য একটু উত্তরাধিকার দেয়া ছাড়া বার বার কোরানে নারীকে অপদস্ত ও অমর্যাদা করা হয়েছে। পুরো কোরানে কোথাও নারীকে সম্বোধন করে কিছু বলা হয় নি , যা বলা হয়েছে সব পুরুষ জাতিকে সম্বোধন করে। ভাবটা যেন নারীরা তো পরিপূর্ন মানুষই না, তাদের সম্বোধন করে আবার কি বলতে হবে? আর বলা বাহুল্য তাতে পুরুষদেরই স্বার্থ আর অধিকারের কথাই বার বার বলা হয়েছে। বাস্তব এ পরিস্থিতিকে মুসলিম চিন্তাবিদরা হজমও করতে পারছে না আবার অবজ্ঞাও করতে পারছে না। তাই তারা হন্যে হয়ে কোরানের মধ্যে খুজে বেড়াচ্ছে কোথায় নারীদেরকে পুরুষদের সমান মর্যাদা দেয়া হয়েছে আর তা করতে গিয়েই তারা ভানুমতির খেলায় মেতেছে। কিন্তু মনে হয় এটা করতে গিয়ে তারা বরং কোরান ও ইসলামের অবমাননা করছে। কোরান কোনমতেই নারীকে পুরুষের সমান বা কাছাকাছি মর্যাদা দেয়নি, সোজা ও সরল ভাষায় নারীকে পুরুষের অধীন হিসাবে বর্ননা করেছে, শুধু তাই নয়, নারীকে সোজাসুজি একজন পুরুষের অর্ধেক যোগ্যতার ও মর্যাদার হিসাবে চিহ্নিত করেছে, নারীকে গৃহপালিত জন্তুর মত বা রতিার মত মর্যাদা দিয়েছে, নারীকে চি‎িহ্ণত করেছে স্রেফ যৌন ও প্রজনন যন্ত্র হিসাবে, সেখানে এসব তথাকথিত ইসলামী চিন্তাবিদরা বরং কোরানের সে বর্ননাতেই স্থির থেকে কোরানে বর্নিত নারীর মর্যাদার বিষয়টিকে যৌক্তিক বলে প্রমানের চেষ্টা করতে পারত , কিন্তু তা না করে তারা উল্টো রাস্তায় চলার চেষ্টা করছে, বৃথাই প্রমান করার চেষ্টা করছে নবী মোহাম্মদের কোরান নারীদেরকে সুমহান মর্যাদায় অধিষ্ঠিত করেছে, মাঝে মাঝে মর্যাদার মাত্রা এতই বেশী যে পুরুষরাও তার ধারে কাছে যেতে পারে না অথচ এর সমর্থনে একটা পরিপূর্ন সূরা কোরান ঘেটে হাজির করতে পারে না। এটা করে একদিকে যেমন তারা কোরানকে অবমাননা করছে অন্যদিকে নিজেদেরকে হাস্যকর অবস্থার মধ্যে ফেলে দিচ্ছে। নিজেদেরকে এক শ্রেনীর ভাড় হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করছে। তারা যত বেশী কোরান নিয়ে মাতামাতি করছে ততই কিন্তু কৌতুহলী মানুষ আরও বেশী করে জানার চেষ্টা করছে কোরানে আসলেই কি লেখা আছে। ইন্টারনেটের এ যুগে যে কোন কৌতুহলী মানুষই তা করতে পারে আর তার ফলে তার পে সম্ভব হয় আসল সত্য জানা। মিথ্যা আর মনগড়া কথাবার্তা বা ব্যাখ্যা বা তথ্য দিয়ে আজকের যুগের মানুষকে বেশীদিন অন্ধকারে রাখা যায় না, মাঝে মাঝে এ সত্যটা এসব তথাকথিত ইসলামী চিন্তাবিদ নামক ভাড়রা ভুলে যায়।তবে তাদের একটা প্লাস পয়েন্ট আছে আর তা হলো- অধিকাংশ মুসলিম তাদের মাতৃভাষায় কোরান পড়ে নি বা পড়ে না, তাই তারা জানে না যে তথাকথিত আসমানী কিতাবে আসলে কি লেখা আছে। অনারব মুসলমানরা আরবী ভাষার কোরান পড়লে তো কিছুই বুঝবে না তাতে কি লেখা আছে।ফলে এসব ধুরন্ধর ইসলামী চিন্তাবিদরা যে ভানুমতির খেলায় ব্যস্ত আছে তা তারা বুঝতে না পেরে বরং এসব ভাড় বা জোকার জাতীয় তথাকথিত ইসলামী চিন্তাবিদদের নিয়ে মাতামাতি করে যা থেকে এসব জোকাররা আর কিছু না হোক নিজেদের পকেটটাকে বেশ ভারী করতে পারে। আর ফাও হিসাবে নিজেরা অনেকটা সেলিব্রিটির মর্যাদায় চলাফেরা করে বেশ মজা উপভোগ করতে পারে। তবে চুড়ান্ত বিচারে ধারনা করা যায়, ন্যুনতম আত্মসম্মানবোধ যে সব শিতি মুসলিম নারীর আছে তারা যদি সত্যি সত্যি জানত তাদের আসমানী কিতাব কোরানে কি লেখা আছে নারীদের মর্যাদা ও অধিকার সম্পর্কে তাহলে নিশ্চিত একটা বিরাট সংখ্যক মুসলিম নারীই সাথে সাথে ইসলাম ধর্ম ত্যাগ করত। যে সব মুসলিম নারী তাদের দেহকে আপাদ মস্তক আবৃত করে , শুধুমাত্র ভুতের মত দুটি চোখ বার করে অদ্ভুতভাবে চলাফেরা করে ধারনা করা যায় যে, তারা কোনদিনই কোরান নিজের ভাষায় পড়েনি বা পড়লেও ঠিক মতো অর্থ বোঝার চেষ্টা করেনি।

এবার আমরা একটু হাদিসের দিকে তাকাই , দেখি আল্লাহর রসুল নারীদেরকে কি চোখে দেখেন। বলা বাহুল্য, আল্লাহর রসুল জীবনকালে যে সব কাজ করে গেছেন বা উপদেশ নির্দেশ আদেশ দিয়ে গেছেন তারই বর্ননা হলো হাদিস সংকলন।

আমি দোজখও দেখলাম আর এমন ভয়ংকর দৃশ্য আমি আর দেখি নি। আমি দেখলাম অধিকাংশ দোজখবাসী হলো নারী। লোকেরা জিজ্ঞেস করল, হুজুর , কেন তা ? উত্তরে আল্লাহর হাবিব বললেন- তাদের অকৃতজ্ঞতার জন্য। আবার নবীকে জিজ্ঞেস করা হলো- নারীরা কি আল্লাহর প্রতি অকৃতজ্ঞ কি না। উত্তরে তিনি বললেন- নারীরা হলো তাদের স্বামীর প্রতি অকৃতজ্ঞ। তোমরা তাদের প্রতি সারা জীবন প্রীতিপূর্ন হলেও যদি একবার কোন কাজ কর যা তোমাদের স্ত্রীদের আশানুরূপ নয়, তাহলে তারা বলবে সারা জীবনেও তোমাদের কাছ থেকে ভাল কিছু পায়নি।- বুখারী শরীফ, ভলুম -২, বই-১৮, হাদিস নং-১৬১

তো এবার জানা গেল কেন বেহেস্তে একজন পুরুষের জন্য ৭০ টা তরতাজা যৌনাবেদনময়ী হুর থাকবে কারন তাদের স্ত্রীরা তো সব দোজখে যাবে। তাহলে বিষয়টা কি দাড়াল? ইহ জগতে নারীর কাজ তার স্বামীর মনোরঞ্জন করা তাও আবার যখনই স্বামী প্রবরটি ডাক দেবে, আর পরজগতে দোজখ বাস। হা হতোস্মি, এত সম্মান দেখানোর পর নারীর ভাগ্যে ছিল এই ! একই সাথে জানা গেল আল্লাহর পেয়ারা নবী মোহাম্মদ কি হীন চোখে নারীদেরকে দেখতেন। এর কিন্তু কতকগুলো বাস্তব কারন আছে। প্রথমতঃ তিনি নিজে হতদরিদ্র থাকায় যৌবনকালে কোন সুন্দরী যুবতীকে বিয়ে করতে না পেরে অবশেষে পচিশ বছর বয়েসে চল্লিশ বছর বয়স্কা বিবি খাদিজাকে বিয়ে করেন নিতান্ত আর্থিক কারনে। তরতাজা যুবক মোহাম্মদের কাছে বিগত যৌবনা খাদিজা মোটেই আকর্ষনীয়া ছিলেন না। একারনেই তার মধ্যে নারী সম্পর্কিত একটা হীনমন্যতাবোধ কাজ করেছে তার বাকী জীবন। তাই আমরা দেখি যখন তিনি নবী হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেছেন- অসভ্য আরব বেদুইনরা তার কথায় ওঠে ও বসে, তখন সুন্দরী নারী ভোগ করার এক অবাধ সুযোগ এসে যায়। কিন্তু ততদিনে অনেক বয়স হয়ে গেছে তার, পঞ্চাশের ওপর।তারও যৌবন তখন প্রায় চলে গেছে। আর তখনই তিনি একের পর এক বিয়ে করেছেন সুন্দরী নারীদের যাদের অধিকাংশেরই বয়স বিশ এর কোঠায়। অথচ তখন তার বয়স পঞ্চাশের ওপর। আয়শাকে যখন বিয়ে করেন তখন তার বয়স ৫১ আর আয়শার ৬/৭ বছর, হযরত ওমর এর কন্যা হাফসাকে ১৮ , সাফিয়া কে ১৭, মারিয়াকে ১৭, জোয়াইরিয়াকে ২০, সালমাকে ২৬, জয়নাবকে ৩০ বছর বয়সে বিয়ে করেন। তাহলে দেখা যাচ্ছে তার মোট অর্ধেকের বেশী বিয়ে তিনি করেন খুব কম বয়সীদেরকে যাদের সাথে তার বয়সের পার্থক্য সামান্য কম/বেশী ৩০ এর মত। দ্বিতীয়তঃ প্রায় বৃদ্ধ বয়েসে তিনি খুব অল্প বয়স্কা অনেক যুবতী বিয়ে করে তাদের সাথে বাস করছিলেন। সঙ্গত কারনেই তার মনে হতো যে কোন স্ত্রীই হয়তো যে কোন সময় বিপথে গমন করতে পারে, এ হীনমন্যতা থেকে তিনি তার স্ত্রীদেরকে চাপে রাখার কারনেই নারী জাতি সম্পর্কে এরকম বাজে মন্তব্য করেছে।

এক বেদুইন আল্লাহর রসুলের কাছে এসে বলল- আমার পূত্র এক লোকের বাড়ীতে কাজ করত কিন্তু সে লোকটির স্ত্রীর সাথে অবৈধ দেহ মিলন করেছে। আমি পুত্রের জন্য জরিমানা স্বরুপ একশত ভেড়া ও একটা দাসী লোকটিকে দান করেছি। এটা কি যথার্থ হয়েছে? আল্লাহর নবী বললেন- আল্লাহর হাত স্বরূপ আমার হৃদয় আমি এর বিচার আল্লাহর আইন অনুযায়ী করব। তুমি তোমা ভেড়াগুলো আর দাসী ফিরিয়ে নাও। উনাইস( বেদুইনের নাম), তোমার পূত্রকে একশ দোররা মার, আর সেই লোকটির স্ত্রীর নিকট যাও যদি সে তার দোষ স্বীকার করে, মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত তার ওপর পাথর নিপে কর। বুখারী শরিফ, ভলিউম-৩, বই-৫০, হাদিস-৮৮৫

তাহলে মুসলমান মা বোনেরা , ল্য করুন আপনাদের জন্য আপনাদের আল্লাহর রসুল কি সুন্দর বিচারের ব্যবস্থা করে গেছেন। মনে হয়ে অবৈধ সম্পর্কের জন্য শুধুমাত্র নারীরাই দায়ী সেটাই মহানবীর দৃঢ় বিশ্বাস। এখানে কয়েকটি সম্ভাবনা- এক. পুরুষ মানুষটি জোর পূর্বক নারীটিকে ধর্ষন করতে পারে, এেেত্র শুধুমাত্র পুরুষটি দোষী।দুই. পুরুষ ও নারী দুই জনে সম্মতির ভিত্তিতে অবৈধ সম্পর্ক করতে পারে, উভয়েই সমভাবে দোষী। তিন. নারীটি পুরুষটিকে প্রলুব্ধ করতে পারে। তবে পুরুষটি সৎ হলে সে প্রলুব্ধ হবে না ও অবৈধ কর্মে লিপ্ত হবে না তাই কোন ঘটনাও ঘটবে না। তাহলে যেসব ক্ষেত্রে ঘটনা ঘটছে তার একটি ক্ষেত্রে পুরুষটিই একমাত্র দোষী, একটি ক্ষেত্রে পুরুষ ও নারী উভয়ে সমভাবে দোষী, একটি ক্ষেত্রে প্রাথমিক ভাবে নারীটি দোষী তবে পুরুষটি এগিয়ে না এলে ঘটনা ঘটা অসম্ভব তাই কেউ দোষী হবে না পরিশেষে কারন ঘটনাই ঘটবে না। তার মানে মাত্র তিনটি ক্ষেত্র বিবেচনা করে দেখা গেল পুরুষটির দোষই সার্বিক বিবেচনায় বেশী। অথচ মৃত্যু পর্যন্ত শাস্তি ভোগ করতে হবে কাকে ? হতভাগী নারীটিকে। কারন ইসলাম নারীর প্রতি অত্যাধিক শ্রদ্ধাশীল ও সম্মান প্রদর্শন করে। আর পুরুষটিকে কিছু দোররা মেরে মুক্তি দিতে হবে। মুসলমান মা বোনদের কি চোখ ও হৃদয় দুইই কি ভোতা হয়ে গেছে নাকি? তারা কি এর পরেও বোঝে না ইসলাম, কোরান আর আল্লাহর রসুল তাদেরকে কতটা অসম্মান আর অপমান করেছে? তবে গভীরভাবে বিচার করলে দেখা যাবে- বিষযটির মধ্যে অন্তত একটা যুক্তি আছে। সেই চোদ্দ শ’ বছর আগে যখন নবী ইসলাম প্রচার করছিলেন তার কাছে নারীদের চাইতে পুরুষের দরকার ও কদর বেশী ছিল। কারন তার একটা লুটেরা বাহিনী ছিল যাতে দরকার ছিল তাগড়া সব জোয়ান পুরুষের যারা যখন তখন ইসলামের নামে নিরীহ বানিজ্য কাফেলায় আক্রমন করতে পারে ,আক্রমন করতে পারে অপ্রস্তুত অমুসলিম জনপদ আতর্কিতে ও তাদের খুন করে তাদের মালামাল লুট তরাজ করতে। পান্তরে তখন ক্রমাগত যুদ্ধ বিগ্রহে মুসলমান যুবকরা মারা যাওয়াতে পুরুষের সংখ্যা কমে যাচ্ছিল ও বিধবার সংখ্যা বেড়ে গেছিল। এমত অবস্থায় একটা নারী কমে গেলে যেমন সমাজের একটা ঝামেলা কমে যায় তেমনি অন্য একটা নারীর বিয়ের ব্যবস্থাও করা যায়। আর পুরুষ মানুষটিকে একটু সাজা দিয়ে ছেড়ে দিলে সে লুটেরা বাহিনীতে যোগ দিয়ে শক্তি বৃদ্ধি করতে পারে। একেবারে কোরানের মতই সহজ ও সরল বিষয়টি।

আয়শা হ’তে বর্নিত- যে সব বস্তু নামাজকে নষ্ট করে তারা হলো- কুকুর, গাধা ও নারী। আমি বললাম- আপনি আমাদেরকে(নারী) কুকুর ও গাধাদের সাথে তুলনা করলেন, হায় আল্লাহ! নবী যখন নামাজ পড়তেন আমি তখন তার ও কিবলার মাঝ খানে শুয়ে থাকতাম, কিন্ত জেগে ওঠার পর কিছু দরকার হলে আমি পাশ কেটে তার পায়ের দিকে চলে যেতাম পাছে তার প্রার্থনার ব্যঘাত ঘটে। সহি বুখারি, ভলুম-১, বই- ৯, হাদিস-৪৯৩

মুসলিম মা বোনেরা এবার নিশ্চয়ই বুঝে ফেলেছেন ইসলাম ও আল্লাহর পেয়ারা নবী আপনাদের কত নীচু ও হীন দৃষ্টি দিয়ে দেখে। নাকি এখনো বলবেন ইসলাম আপনাদেরকে এত মর্যাদা দিয়েছে যার ভার আপনারা আর বহন করতে পারছেন না ? কেউ হয়ত বলতে পারে- এটা হল মতলবী ব্যাখ্যা। কিন্তু না , দেখেন হাদিসটিতে স্বয়ং নবীর সবচাইতে প্রিয়তমা স্ত্রী (বালিকা বধু) আয়শা পর্যন্ত তার মনের ক্ষোভ গোপন করতে পারেন নি। তাই তিনি মনের দুঃখে বলেই ফেলেছেন যে নবী নারীদেরকে কুকুর ও গাধার সাথে তুলনা করলেন ।

আল্লাহর নবী বললেন, কোন নারী তার স্বামীর অনুমতি ছাড়া রোজা রাখতে পারবে না যদি তার স্বামী বাড়ীতে উপস্থিত থাকে। সহি মুসলিম. বই-৫, হাদিস-২২৩৪

মুসলিম বা বোনেরা আশা করি বুঝে ফেলেছেন কেন আপনারা রোজা রাখতে পারবেন না যদি আপনার স্বামী বাড়ীতে হাজির নাজির থাকে। কারন যে কোন সময় আপনার স্বামীর গোপনাঙ্গ উত্তেজিত হয়ে উঠতে পারে তখন কে সেটাকে ঠান্ডা করবে? এখন আপনারাই বুঝে দেখুন ইসলাম আপনাদেরকে স্রেফ একটা সেক্স ডল ছাড়া আর কিছু ভাবে কি না। আসলে সেই চোদ্দ শ ’ বছর আগে মোহাম্মদ একটা বাহিনী গঠন করেছিল যার কাজ ছিল আতর্কিতে কোন অপ্রস্তুত জনপদ (মোহাম্মদের অধিকাংশ যুদ্ধই ছিল এরকম) আক্রমন করা, তাদের খুন করা, ধন সম্পদ লুঠ করা। তো এ কাজে তার বাহিনীর পুরুষ সদস্যদেরকে অনেক সময় বেশ কিছু কাল বা প্রায়ই বাইরে থাকতে হতো। তারা তখন নারী সঙ্গ বঞ্চিত থাকত। যদিও নারীদেরকে বন্দী করে গনীমতের মাল হিসাবে সদস্যদের মাঝে বিতরন করা হতো, তথাপি অধিকাংশ ক্ষেত্রে নারীর সংখ্যা হতো পুরুষের চেয়ে অনেক কম। তাই শুধুমাত্র নেতৃস্থানীয় সদস্যরাই যৌনানন্দ ভোগ করার জন্য বন্দী নারী ভাগে পেত। বলা বাহুল্য ,. সবচাইতে সুন্দরী ও যৌনাবেদনময়ী নারীটি যেত আল্লাহর নবীর ভাগে। যাহোক সাধারন সদস্যরা থাকত যৌনানন্দ থেকে বঞ্চিত। তাই বাড়ী ফেরা মাত্রই যেন তারা তাদের স্ত্রীদের নিয়ে যৌন ক্রীড়ায় বার বার ব্যস্ত হয়ে যেতে পারে তার উদ্দেশ্যেই মহানবীর এ বানী। রোজা রাখা অবস্থায় তো যৌনক্রীড়া নিষেধ। দেখুন কি অদ্ভুত বিচার। অন্য হাদিসে বলছে- নারীরা অধিকাংশ দোজখে যাবে, কিন্তু আবার দোজখ থেকে রা পেতে রোজাও রাখতে পারবে না নিজের ইচ্ছে মত। তাহলে নারীরা যাবে কোথায়? করবে টা কি ?? আল্লাহ (মোহাম্মদ) কি তাহলে নারীদের জোর করে দোজখ বাসী করতে চায়? আসলে দুনিয়াটাই তো তার কাছে একটা দোজখ খানার মত। কারন যখনই তার স্বামী প্রবরটি যৌনভাবে উত্তেজিত হয়ে পড়বে তখনই তাকে তার সাথে বিছানায় যেতে হবে তা যতই তার কোন শারিরীক বা মানসিক অসুবিধা থাকুক না কেন যা প্রকারান্তরে দোজখের সাজার মত। আবার মরে গেলেও দোজখে যেতে হবে। আহা , পরম করুনাময় আল্লাহ তায়ালা নারীদেরকে কতই না মর্যাদা আর সম্মান দিয়েছেন তাদের!

আর যারা বন্ধ্যা তারা যতই সুন্দরী আর ধনী হোক না কেন তাদের কোনই আশা নেই। তাদের ইহজীবনও বৃথা আর পরকালও বৃথা। কারন –

মাকিল ইবন্ ইয়াছির হতে বর্নিত- একজন মানুষ নবীর কাছে এসে বলল- আমি একজন উচ্চ বংশীয় সুন্দরী নারীর সন্ধান পেয়েছি কিন্তু সে সন্তান দিতে অপারগ, তাকে কি আমার বিয়ে করা উচিৎ ? নবী উত্তর দিলেন- না। লোকটি আবার নবীর কাছে একই বিষয়ে আবার জিজ্ঞেস করল এবং নবীর উত্তর হলো- না। সে তৃতীয়বারের মত আবার আসল । এবার পরম করুনার সাগর আল্লাহর পেয়ারা নবী বললেন- উর্বর গর্ভ বিশিষ্ট সুন্দরী নারী বিয়ে কর কারন আমি তোমাদের দ্বারা আমার অনুসারী বৃদ্ধি করব। আবু দাউদ, বই -১১, হাদিস-২০৪৫

এবার তাহলে ইসলামে বহু বিবাহের আসল রহস্য বোঝা গেল। এটাই যদি হয় আসল কারন তাহলে এত ধানাই পানাই এর দরকার কি ? আর বর্তমানে তথাকথিত ইসলামী পন্ডিতদের এত আবোল তাবোল বলারই বা দরকার কি ? প্রসঙ্গতঃ অনেক মুসলিম নারী তাদের আত্মমর্যাদা সম্পর্কে এতই অসচেতন আর ইসলাম সম্পর্কে এতই অবসেস্ড যে তারা শুধু এই একটি কারনে তাদের স্বামীকে বহু বিবাহ করার জন্য অনুপ্রেরনা দেয়। এসব নারীদের জীবন ও আত্মমর্যাদা সম্পর্কে কোনই চেতনা নেই বা তার সুযোগ তাদেরকে দেয়া হয়নি, তারা স্বামীর লাথি উষ্ঠা খেয়ে হলেও গৃহপালিত জন্তর মত সংসার ধর্ম করে যায়, কিন্ত কিসের আশায় ? ফলাফল তো শূন্য, কারন আগেই নবী বলে গেছেন- তিনি দোজখে গিয়ে দেখেছেন সেখানে অধিকাংশই নারী। তাহলে?

উমর বিন মুহাম্মদ জাইদ তার পিতার কাছ থেকে শুনেছেন যে ইবনে উমর বলেছেন- আমি আল্লাহর নবীকে বলতে শুনেছি যে ভাগ্য খারাপ যদি একটা বাস্তব ঘটনা হয় তো তা ঘটে ঘোড়া, স্ত্রীলোক আর ঘর থেকে। সহি মুসলিম. বই-২৬, হাদিস-৫৫২৬

ওয়াও! এত অপমান করার পরেও মহানবীর নারী জাতির বিরুদ্ধে কি মনের ক্ষোভ মিটছে না? আর কত অপমান , অমর্যাদা ও মানসিক নির্যাতন করলে তার আত্মা শান্তি পাবে? তিনি কি আশংকা করেছিলেন যে, ভবিষ্যতে একদিন নারীজাতি জেগে উঠবে আর জানতে পারবে কি অপরিসীম অপমান আর অমর্যাদা নারীজাতিকে তিনি করেছেন কোরান আর হাদিসের নামে আর সে কারনে সবাই তাকে ঘৃনা করবে ও অভিশাপ দেবে? আর সে কারনেই কি তিনি চালু করে গেছেন যে তার নাম উচ্চারন করার সাথে সাথে – তার উপর শান্তি বর্ষিত হোক – কথাগুলো বাধ্যতা মূলক বলতে হবে ? যাতে নারী জাতি বুঝে ওঠার আগে কমপে বিলিয়ন বিলিয়ন বিলিয়ন বার তার নামে এ ভাবে শান্তি বর্ষনের বানী বলতে হবে যাতে পরবর্তীতে তাকে যে অভিশাপ দেয়া হবে বিলিয়ন বিলিয়ন বিলিয়ন বার, তার সাথে শোধ বোধ হয়ে যায় ? অসম্ভব মনে হচ্ছে না। কারন যে মারাত্মক ধূর্ত ও চালাক ছিলেন তিনি তা তো বোঝা যায় তার একটা ভূয়া কেতাব এর কেরামতি দেখে। সেই চোদ্দ শ’ বছর আগে তার নবুয়ত দাবীর প্রাথমিক জীবনের কিছু খারাপ সময় ছাড়া বাকী সময়টা গোটা আরব জাতিকে সম্পূর্ন মানসিকভাবে অচেতন করে ফেলেছিলেন স্রেফ চালাকি আর সীমাহীন ধূর্ততা দিয়ে। যেরকমটা দিতে চেষ্টা করে এই আধুনিক কালের কিছু তথাকথিত ধর্ম গুরূ বা নবী। কিন্তু এখনকার মানুষ গুলো তো আর সেই অসভ্য আরবগুলোর মত না যে এত সহজে তারা পার পেয়ে যাবে। তার পরও কিন্তু কিছু মানুষ অন্ধভাবে তাদেরকে বিশ্বাস করে তার মধ্যে অশিক্ষিত যেমন আছে ,শিক্ষিত মানুষও আছে। যেমন- বর্তমানে অনেক মুসলমান আছে যারা কোরান হাদিস পড়ে মনের মধ্যে তাদের নানা রকম প্রশ্ন উদিত হয়, কিন্ত প্রকাশ করতে পারে না কারন এখনও যে রকমভাবে মোহাম্মদ অধিকাংশ মুসলমানদেরকে অবচেতন করে রেখেছে তাতে তারা ভয় পায় প্রশ্ন করতে, কারন তাদের তো মান সম্মান সর্বোপরি প্রানের মায়া তো আছে। আবার কিছু তথাকথিত শিক্ষিত মুসলমান আছে যারা অশিক্ষিত মুসলমানদের চাইতেও বেশী গোড়া। এসবের অনেক মনস্তাত্বিক কারন আছে যা মনো বিজ্ঞানের গবেষণার বিষয়। যাহোক , আশা করা যাচ্ছে যে, অন্তত মুসলিম নারী জাতি একটু চোখ তুলে তাকাবে , তারা জানতে চেষ্টা করবে আসলেই ইসলাম তাদেরকে কোন মর্যাদা দিয়েছে কিনা , নাকি স্রেফ কুকুর, বিড়াল জাতের একটা গৃহপালিত জন্তুর মত বা একটা প্রজনন যন্ত্রের মত মর্যাদা তাদের দেয়া হয়েছে। যত তাড়াতাড়ি তারা তা বুঝতে পারবে ততই মঙ্গল, নইলে বড় বেশী দেরী হয়ে যাবে যাতে হয়তো গোটা মুসলিম জাতির অস্তিত্ব নিয়ে ভবিষ্যতে টানা টানি পড়ে যাবে।

পরিশেষে, একটা অভিযোগ উঠতে পারে যে , কোরান ও হাদিসে নারীদের প্রতি যে সব অমর্যাদা আর অপমানের কথা লেখা আছে কেন শুধুমাত্র তা নিয়ে লেখা হলো। কিছু ভাল কথাও তো লেখা আছে তা নিয়ে কেন কিছু বলা হলো না।এর উত্তরে বিনয়ের সাথে বলতে বাধ্য হচ্ছি যে . কোরান কিন্ত কোন রহিম করিম রচিত কিতাব না, তা স্বয়ং আল্লাহ প্রেরিত কিতাব যাতে কোন ভুল বা অন্যায় কথা বার্তা থাকতে পারে না। আর হাদিস হলো আল্লাহ প্রেরিত মহানবীর জীবনের কার্য কলাপ , উপদেশ, দিক নির্দেশনার বিবরন যা নাকি আবার আল্লাহর সরাসরি নির্দেশে ঘটেছে। এটাই মুসলমানদের দৃঢ় বিশ্বাস।উদাহরনস্বরূপ বলতে হয়- নবী যখন তার পালিত পূত্র যায়েদের যৌনাবেদনময়ী স্ত্রী জয়নবের নগ্ন দেহ অসাবধানে দেখে ফেলায় তার মনে জয়নবের সাথে কাম কেলী করার খায়েশ জাগে , তখনই আল্লাহ তার মনোকষ্ট বুঝতে পারেন ও জায়েদকে বাধ্য করেন তার বিবিকে তালাক দিতে ও আল্লাহ অতঃপর ওহি নাজেল করেন নবীর উদ্দেশ্যে যে এখন তুমি জয়নবকে বিয়ে করতে পার এতে কোন দোষ নেই। তাহলে দেখেন আল্লাহ নবীর প্রতি কত করুনাময় আর কিভাবেই বা তিনি নবীকে পরিচালনা করেছেন প্রতি মুহুর্ত। তো বিষয় হলো- যখন আমরা আমাদের সাধারন বিচারে দেখছি যে, সেই কোরান বা হাদিসে এমন অনেক কথা বার্তা আছে যা কোন সভ্য মানুষ গ্রহন করতে পারে না তথা কোন সভ্য সমাজে তা চলতে পারে না। তা যে পারে না তা কিন্তু তথাকথিত ইসলামী চিন্তাবিদরাও স্বীকার করছেন পরোভাবে কারন তারা তাই কোরান ও হাদিসের নানা বর্ননার নিত্য নতুন ব্যাখ্যা দিয়ে আধুনিক যুগের সাথে তাল মিলাতে চাচ্ছেন। এর মাধ্যমে প্রমানিত হচ্ছে যে , কোরান হাদিসে সত্যি সত্যি অনেক অসঙ্গতি, স্ববিরোধিতা, সোজা কথায় উল্টা পাল্টা কথা বার্তা লেখা আছে যা অত্র নিবন্ধে রেফারেন্স সহ উল্লেখ করা হলো। আরও অনেক উদ্ধৃতি দেয়া যেত , বাহুল্য হবে বলে দেয়া হলো না। ধারনা করা যায় যে গুলো উল্লেখ করা হয়েছে একজন সাধারন মানুষের জন্য সেটাই যথেষ্ট। এত সব অসঙ্গতি আর স্ববিরোধিতা বা উল্টা পাল্টা কথা বার্তা না থাকলে আমরাও অকাতরে কোরান আল্লাহর কিতাব আর মোহাম্মদ আল্লাহর নবী বলে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করতাম। অন্য কথায় , সত্যকে অস্বীকার করতে পারে কোন মূর্খ? তাই আমাদের ধারনা ও দৃঢ় বিশ্বাস যে , নবী মোহাম্মদ আসলে কোন আল্লাহ প্রেরিত নবী ছিলেন না , তার কথিত কোরান কোন আল্লাহর বানী না, এমনকি কোরানে বর্নিত আল্লাহ আসলে স্বয়ং মোহাম্মদই ছিলেন আর সেকারনেই তিনি -লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ- বলার সাথে সব সময় মোহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ শব্দগুলি জুড়ে দিতে হবে বলে নির্দেশ দিয়ে গেছেন একটা মাত্র কারনেই যে , প্রত্যভাবে তো তিনি বলতে পারেননি যে তিনিই আল্লাহ। তার নাম জুড়ে দেয়ার মানে হচ্ছে যখনই আল্লাহর নাম নেয়া হবে তখনই মোহাম্মদের নাম নিতে হবে অর্থাৎ আল্লাহ ও মোহাম্মদ এক কাতারে উচ্চারিত হবে। সোজা কথায়, তখন আল্লাহ ও মোহাম্মদ একই ব্যাক্তি হয়ে যাবে। নইলে আল্লাহর নাম নিতে আবার অন্য একজনের নাম নিতে হবে কেন তা সে তিনি যত বড় নবীই হন না কেন। আর যে সব ভাল কথা বার্তা বলা আছে তা জানার জন্য আমাদের সাধারন বুদ্ধি বিবেকই যথেষ্ট এবং যা মানুষ মোহাম্মদের এ ধরা ধামে আসার আগেই জানত খুব ভালভাবে। এর জন্য তথাকথিত আল্লাহর কিতাবের দরকার নেই। আশা করি বিষয়টি খোলাসা হয়েছে।