কমিনিউজম নিয়ে কমিনিউস্ট এবং এন্টি-কমিনিউস্টদের ভুল ধারনা সর্ববিদিত। নানান ফোরামেই আমরা বাঙালী কমিনিউস্টদের দেখা পাব যাদের অধিকাংশের পড়াশোনা বেশ সীমিত। আবার যারা কমিনিউস্টদের গালাগাল দেন, তাদের লেখাপড়া আরো বেশী সীমাবদ্ধ। তাই বাঙালী কমিনিউস্ট এবং তার বিরোধিদের ভুল ধারনার একটা তথ্য তালিকা তৈরী করলাম। ভুল ধারনার জন্মসূত্র অবশ্যই কমিনিউজম নিয়ে বলশেভিকদের ভুল প্রচার। লেনিনিজম কত ভ্রান্ত, সেটা বুঝতে মার্ক্সের প্রতিটা লেখা বুঝতে হবে এবং তার সাথে ১৯০০-১৯৫০ সালের মধ্যে আমেরিকান এবং বৃটিশ বিশ্ববিদ্যালয় গুলিতে লেনিনবাদ বনাম মার্ক্সবাদ নিয়ে যে বিস্তর গবেশণা হয়েছে, সেগুলি দেখা দরকার। সোভিয়েতের পতনের সাথে সাথে, রাশিয়ান ঐতিহাসিকরা স্বাধীনতা পেয়েছেন এবং আরো অনেক নথিপত্র তাদের হাতে এসেছে-যার ভিত্তিতে বলশেভিক বিপ্লবের ইতিহাস ও রাশিয়াতে নতুন করে লিখতে হচ্ছে। ১৯৫০ সালের পর এবং অধুনা কম্প্যুটার সিম্যুলেশনের উন্নতিতে স্যোশাল ফিল্ড থিওরী, সোশাল থার্মোডাইনামিক্স, ইত্যাদি নব নব সমাজবিজ্ঞানের গবেষনায় এবং গবেষনায় নতুন নতুন পদ্ধতির আবিষ্কারে, সামাজিক বিবর্তন আরো ভাল ভাবে বোঝার চেষ্টা চলছে। পরিশেষে ডারুইনিয়ান ঐতিহাসিক বস্তুবাদ বলে সমাজ বিজ্ঞানে একটি নতুন শাখার জন্মে হয়েছে যা মার্ক্সীয় ঐতিহাসিক বস্তুবাদকে প্রতিস্থাপিত করতে উৎসাহী। এতকিছু লেখা একটা ব্লগে সম্ভব না। এই ব্লগ শুধু একটা সংক্ষিপ্ত সামারী।

(১) কমিনিউজম, মার্ক্সিজম, লেনিনিজম, সমাজতন্ত্র সব এক। বাস্তব হচ্ছে, এদের মধ্যে পার্থক্য- আপেল বলাম ওরেঞ্জ। কমিনিউজম বলতে আমরা মূলত লেনিনিস্ট কমিনিউজমকে বুঝি কিন্তু ধর্মীয় কমিনিউজমের অস্তিত্ব বিংশ শতকে বিস্তর ছিল। আমেরিকা আইন করে তাদের বন্ধ করে। নানান ধর্মীয় আন্দোলন মানুষকে কমিউন করে থাকতে উৎসাহিত করেছে। বাস্তবে এগুলি সবই ধণতন্ত্র যে ভাবে মানুষের মধ্যে ব্যাক্তিস্বাতন্ত্র্যবাদকে প্রশয় দিয়ে থাকে, তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদি আন্দোলন।

(২) বস্তুবাদি সমাজতন্ত্র বনাম আদর্শবাদি সমাজতন্ত্রঃ মার্ক্স যদিও এই ভাবেই ভাগ করতেন-আদতে মার্ক্সিস্ট সমাজতন্ত্রও সেই হিন্দু বা ইসলামিক সমাজতন্ত্রের মতনই গাড্ডায় আছে। দায়ী লেনিন। মোটামুটি ১৮৭০ সাল থেকেই মার্ক্সবাদ আস্তে আস্তে বৈজ্ঞানিক পথ ছেড়ে, আদর্শবাদি পথে সরে আসতে থাকে। সেই পতন তরান্বিত করেন লেনিন।

(৩) মার্ক্সিজম এবং সমাজতন্ত্র এক, মার্ক্সিজম মানেই কমিনিউজম ঃ বিজ্ঞানে নিউটনিস্ট বা আইনস্টানিস্ট হয় না। দুর্ভাগ্য বশত মার্ক্সিজমে হয়! মার্ক্সিজম আদৌ কোন আদর্শবাদকে নির্দেশ করে না। এটি আদি সমাজ বিজ্ঞানের পদ্ধতি-বা ঐতিহাসিক বিবর্তনকে বস্তুবাদ দিয়ে বোঝার চেষ্টা। কমিনিউজম সমাজের বিবর্তনের শেষ ধাপ। বস্তুত এটাই সত্য মার্ক্স কোন আদর্শবাদের নির্দেশ দিয়ে যান নি-দিয়ে গেছেন একটা পদ্ধতি। সেটাকেই ইসলাম বা খ্রীষ্টানদের মতন আদর্শবাদি তত্ত্বে পরিণত করেন লেনিন।

(৪) মার্ক্সিজমই একমাত্র বলে সমাজ বিবর্তনের শেষ ধাপ কমিনিউজম। ঠিক না। সমাজ বিজ্ঞানের যাবতীয় উল্লেখযোগ্য তত্ত্বই বলে সমাজ বিবর্তনের শেষ ধাপ কমিনিউজম। তবে লেনিনের মতন মারধোর চোট্টামি করে না। সোশ্যাল থার্মডাইনামিক্স বলে একটা সাবজেক্ট আছে। সেখানে যেখা যায়, সব সিস্টেম ক্যাওস কমিয়ে ক্রিষ্টালাইজ করতে থাকে-এবং মোটামুটি এটা নিশ্চিত কমিনিউজম মানব বিবর্তনের শেষ ধাপ। তবে এই সব কমিনিউস্টদের বিপ্লব করে কমিনিউজম আনার রোম্যান্টিসিজম বেঢপ ঢপবাজি। এগুলোর সাথে মোল্লাদের বিশুদ্ধ ইসলামিক রাষ্ট্রের ধারনার কোন পার্থক্য নেই। সমাজের যেভাবে বিবর্তন হচ্ছে, যেভাবে প্রযুক্তি এগোবে, তাতে স্যোশালিজম থেকে কমিনিউজম এমনিতেই আসবে।

বর্তমান পৃথিবীকে একটা আনস্টেবল স্টেট ধরা যেতে পারে-যখন জল থেকে বরফ হচ্ছে-কিছু কিছু বরফ খন্ড-তার মধ্যে মধ্যে জল। বরফ গুলোকে ধরা যেতে পারে স্টেট। তারপরে সেই স্টেট গুলো একসাথে জমাট বেঁধে সব বরফ হল-মানে রাষ্ট্রের পতন হল। পৃথিবীর যে সমস্যাগুলোর সমাধান না করলে, আমরা সবাই মারা যাব বা প্রযুক্তি লুপ্তহবে-তা একা কোন রাষ্ট্রের পক্ষে করা আর সম্ভব হচ্ছে না। রাষ্ট্রের অস্তিত্ব বেশ দ্রুত লুপ্ত হবে।

যেটা আমাদের কমি বন্ধুরা বুঝতে চাইছে না-একদেশে কমিনিউজম বা সমাজতন্ত্রও করা সম্ভব না। সামান্য তাত্ত্বিক জ্ঞান থাকলেই বোঝা যায়।
বিপ্লব করেও কমিনিউজম আসবে না। কমিনিউজম আসবে শুধু মাত্র উন্নত, আরো অনেক অনেক উন্নত উৎপাদন শীল সমাজের মধ্যে দিয়ে। এই ধরনের নিম্ন উৎপাদনশীল সমাজে কমিনিউস্ট বিপ্লব ঘটানোর চেষ্টা ব্যার্থ ত হবেই-শুধু শুধু অসংখ্য লোক মারা যাবে। অধিকতর উন্নত উৎপাদন শীলতার ডিমান্ডই উৎপাদনের ওপর শ্রমিকের মালিকানা প্রতিষ্ঠিত করবে-যা সফটঅয়ার বা অত্যাধুনিক টেলিকম বা বায়োটেক শিল্পে আস্তে আস্তে আসছে। এগুলো জ়োর করে লাঠি মেরে করতে গেলে, হিতে বিপরীত হবে। যা এদ্দিনে হয়েছে।

(৫) মার্ক্সই প্রথম শোষন এবং ধনের অসাম্যের বিরুদ্ধে সমাজতন্ত্রের কথা বলেন-ডাঁহা ভুল। সব ধর্মীয় আন্দোলনই ( ক্রীষ্ঠান, ইসলাম, বৈষ্ণব) একধরনের সমাজতান্ত্রিক আন্দোলন -শোষন এবং অসাম্যের বিরুদ্ধে। সেকালে বস্তুবাদ জানাছিল না। তাই ধনের অসাম্যের বিরুদ্ধে সব ধর্মীয় আন্দোলনই সোচ্চার হয়েছে। এই লেখাটা দেখা যেতে পারে।

(৬) মার্ক্সবাদ এবং লেনিনবাদ এক-লেনিনবাদ মার্ক্সবাদের এক্সটেনশনঃ এটাও মস্ত ভুল বহুদিন ধরে বলশেভিকরা রটিয়ে আসছে। বাস্তব হচ্ছে লেনিনই মার্ক্সবাদের সর্বাধিক ক্ষতি করেছেন। বুঝে এবং না বুঝে। এই নিয়ে অনেক লেখা আছে। লেনিনের কাছে মার্ক্সের মুস্টিমেয় লেখা ছিল।কারন সেযুগে মার্ক্সের লেখা সহজলভ্য ছিল না। লেনিনঞ্ছিলেন জার্মানীতে-সেখানেও মার্ক্সের সব লেখা পাওয়া যেত না।
দ্বান্দিক বস্তুবাদের টেকনিকগুলো একটু রপ্ত করলেই দেখা যাবে, মার্ক্সের লেখায় ডায়ালেক্টিক্স প্রচুর-লেনিনের লেখায় তা অনুপস্থিত। এই সব কারনে মার্ক্স কমিনিউজম এবং কমিনিউস্ট বলতে ঠিক যা যা বলতে চেয়েছিলেন-তার সবটাই লেনিন ভুল ব্যাখ্যা করেছেন।

লেনিনিজম মার্ক্সিজম থেকে সম্পূর্ন আলাদা। ইসলামি সমাজতন্ত্রের সাথে মার্ক্সিজমের যতটা যোগসুত্র-লেনিনিজমের সাথে মার্ক্সিজমের যোগ ঠিক ততটাই। প্রায় অনেক গুরুত্বপূর্ন বিষয়-আন্তর্জাতিকতা, জাতীয়তাবাদ, পুঁজির বিবর্তন-ইত্যাদি নিয়ে মার্ক্স এবং লেনিনের ধারনা ১৮০ ডিগ্রি বিরোধি।

(৬) ১৯১৭ সালে রাশিয়াতে অক্টবর বিপ্লব সাধিত হয়! সত্য আসলে এটাই, নির্বাচনে সমাজতন্ত্রীদের কাছে হেরে, লেনিনের দলবল রেড আর্মি দিয়ে বিরোধিদের মেরে ধরে কনস্টিটুয়েন্ট এসেম্বলী ভেঙে দেন এবং এক দলীয় শাসন চালু করেন। শুধ তাই নয় এটাও রটানো হয়, রাশিয়া ছিল সেই সময় অনুন্নত কৃষিপ্রধান দেশ। বাস্তবে শিপ্লু উৎপাদনে সেই সময় রাশিয়া ছিল পঞ্চম-এবং দ্রুতহারে বাকি ইউরোপের সাথে তাল মিলিয়ে সেখানে শিল্পোন্নয়ন হচ্ছিল। বলশেভিকদের বেসও ছিল শ্রমিকদের মধ্যে, কৃষকদের মধ্যে না। বেসিক্যালি ওটা ছিল গনতন্ত্র ধ্বংশ করার বিপ্লব।

(৭) কমিনিউজমে সবাই খেতে পাবে-লক্ক্যনীয়-এখানে কমিনিজম বলতে আমি জোর করে চাপানো লেনিনিজম বলছি-যা ফ্যাসিজমের আরেকটা ভ্যারিয়েশন। বাস্তব এটাই পৃথিবীর সব থেকে বড় দুর্ভিক্ষ গুলি, লেনিনিস্ট কমিনিউস্ট জমানাগুলোতেই হয়েছে।

(৮) কমিনিজম এলে সবাই শিক্ষা এবং স্বাস্থ্য সুরক্ষা পাবে। এটা ঠিক। কিন্ত সেই সুরক্ষা মুসলোলিনীর ইটালি বা হিটলার ও দিত। আরো ভাল ভাবেই দিত। যেকোন ফ্যাসিস্ট এবং আইডিওলজ্যিক্যাল অটোক্রাটিক শাসকরা ( আদর্শবাদি স্বৈরাচারিরা- সবার কথা-আদিল আমিন বা এরশাদের কথা বলছি না) শিক্ষা ক্ষেত্রে সব থেকে ভাল কাজ করে। যেমন এখন ইরান করেছে। এর সাথে কমিনিউজমের যোগ নেই-ন্যাশানাল সোশ্যালিস্টরা [ এবং তাদের ভ্যারিয়ান্টরা ] সবাই এই কাজে সফল হয়েছে। কিন্ত ব্যাক্তি স্বাধীনতা বর্জন করে-এই ধরনের উন্নতি কাম্য না। জাপান বা যেকোন স্ক্যন্ডেনেভিয়ান দেশই ১০০% সাক্ষর বা শিক্ষার মান ওখানেও অনেক উঁচু-তাদের এই ধরনের স্বৈরাচারের সাহায্য নিতে হয় নি কিন্ত।

(৯) কমিনিউজম মানে অগনতান্ত্রিক স্বৈরাচার।

সঠিক বাক্য হবে লেনিনিজম মানে অগণতান্ত্রিক স্বৈরাচার।

মার্ক্স কমিনিউজিম এর ব্যাখ্যায়, ডিক্টেটর অব প্রলেতারিয়েত মানে এক দলীয় শাসন হবে-গণতন্ত্র ধ্বংশ করতে হবে-বিরোধিদের শুলে চড়াতে হবে-এটা কোথাও বলেন নি।

ক্ষমতা দখলের জন্যে স্বৈরাচারী কমিনিউজমের সম্পূর্ন দায়ভার লেনিনের। গণতান্ত্রিক কেন্দ্রিকতার ঢপবাজিও আর এক দলীয় স্বৈরতন্ত্র ও তার নিজস্ব আবিস্কার। বস্তুত মার্ক্সবাদ নামক দুধে যত জল ঢালা আছে, তার সব জলই এই মহান তাত্ত্বিক ধাপ্পাবাজটির।

(১০) পুজিবাদের সর্বোচ্চ স্তর সাম্রাজ্যবাদ-এটি লেনিনিজম। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যকে মার্ক্স কখনো সাম্রাজ্যবাদ হিসাবে দেখেন নি-দেখেছেন সমাজ বিবর্তনের গুরুত্বপূর্ন ধাপ হিসাবে যাতে আন্তর্জাতিকতার শুরু হতে পারে। সাম্রাজ্যবাদ এই জন্যেই ধাপ্পাবাজি যে রাষ্ট্রের উৎপত্তির মধ্যেই এর বীজ রয়েছে-এবং আন্তর্জাতিকতা না এলে তা যাবে না-এবং সেই আন্তর্জাতিকতার আগমনের জন্যে আন্তর্জাতিক বানিজ্য হচ্ছে সর্বাধিক গুরত্বপূর্ন ক্যাটালিস্ট-যার মাধ্যমে পৃথিবীর সকল দেশের শ্রমজীবি মানুষ একত্রিত হওয়ার সুযোগ পাবে-কারন রাষ্ট্রের বাউন্ডারী শিথিল হবে।
সেখানে লেনিনের তত্ত্ব হচ্ছে আন্তর্জাতিক বানিজ্য হচ্ছে সাম্রাজ্যবাদ । আর আন্তর্জাতিকতা হচ্ছে- সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে পৃথিবীর সকল শ্রমজীবি মানুষ একত্রিত হও! এটা হচ্ছে লেনিনিস্ট আন্তর্জাতিকতা-যা ঘোড়ার গু এবং গরুর গবর ছাড়া কিছু না। কেন না, রাষ্ট্রের সীমানা শিথিল না হলে, সমস্ত দেশের শ্রমজীবি মানুষ একত্রিত হতে পারে না-এসব তাত্বিক কল্পনা প্রসূত শ্লোগান। আন্তর্জাতিকতা নিয়ে মার্ক্সীয় ভাবনায় জল কম-কারন তা আমদের চোখের সামনে দেখছি-একবিংশ শতাব্দিতে। কিন্ত লেনিনিস্ট আন্তর্জাতিকতা-“সাম্রাজ্যবাদ নিপাত যাক”- কোলকাতার লেনিন সরনির ব দ্ধ নর্দমার জল।

(১১) কমিনিউস্ট বিপ্লব এলেই নারী মুক্তি আসবে-নারী পুরুষ সমান হবেঃ

কমিনিউস্টরা দাবি করে, একমাত্র সমাজতন্ত্রের পথেই নারী মুক্তি সম্ভব-ধনতন্ত্রে তা সম্ভব না। বুর্জোয়া ফেমিনিজম শ্রেনী দ্বন্দের বিকৃত রূপ।

এবার আসুন আমরা আমাদের কমি বন্ধুদের ইতিহাস থেকে কিছু প্রশ্ন করিঃ

(১) কমিনিউজমের ইতিহাসে কোন দেশে-কোন কালে কোন মহিলা কি জেনারেল সেক্রেটারী হতে পেরেছেন?
(২) কমিনিউমের ইতিহাসে কোন গঠিত পলিটবুরোতে-কোন দিন কি পাঁচ জন মহিলা ( পলিটবুরোর ৩০%) থাকতে পেরেছেন ? ( ভারতের পলিটবুরোতে একমাত্র বৃন্দা কারাত আছেন। তাও তাকে রাখা হয়েছিল না। পলিটবুরোতে কেন মহিলা নেই, সেই নিয়ে তিনি কান্নাকাটি শুরু করলে তাকে শান্তনা পুরস্কার দেওয়া হয়)।
(৩) কমিনিউমের ইতিহাসে কোন সেন্ট্রাল কমিটিতে কোনদিন কি ২৫% এর বেশী মহিলা মেম্বার ছিল?

বন্ধুগন-সোভিয়েত, চিন, ভারত, ভিয়েতনাম, উত্তর কোরিয়া, কিউবা-সর্বত্র এই প্রশ্ন গুলি খুঁজতে থাকুন। দেখবেন-কমিনিউজম আসলেই পুরুষতন্ত্রের বস্তুবাদি রূপ। গোল্ডবার্গ তার বইতে ( Why Men Rule)যে লিখেছিলেন-যে রাজনৈতিক ক্ষমতা চিরকালই পুরুষের হাতে ছিল-কমিনিউজমে তার ব্যাতিক্রম হয় নি।

উপসংহারে কিছু বলা উচিত। কমিনিউস্ট এবং কমিনিউস্ট বিরোধিরা আসলেই না বুঝে একটা ভুল রাজ়নৈতিক দিশা দিচ্ছেন জনগনকে। জনগন বাঁচতে চাইছে-চাইছে তাদের সন্তান যেন থাকে দুধে ভাতে। সেটা বাজার অর্থনীতি বা কমিনিউস্ট বিপ্লব দিয়ে হবে না -তা আমরা অভিজ্ঞতা থেকে বুঝতে পারছি। বাজার অর্থনীতি যাও বা কিছুটা সফল-কমিনিউস্ট বিপ্লব সর্বত ভাবেই ব্যার্থ। দরকার নতুন রাজনৈতিক পথের। যা উৎপাদন ব্যাবস্থাকে আরো বেশী মজবুত করবে। এবং তা সম্ভব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ওপর রাষ্ট্রীয় এবং বেসরকারি বিনিয়োগ অনেক অনেক বেশী বৃদ্ধি করে।