বাঃ এখন তো বেশ লাগছে !
ভারহীন শরীর, মনটাও অনেক হালকা।
চারপাশে ঝুরঝুরে সোঁদা গন্ধ, পেটের জগদ্দল ক্ষিদেটাও গায়েব
উল্টে আমার নিমন্ত্রনে এসেছে একপাল উদ্গ্রীব কিলবিলে পোকা,
ক্ষুন্নিবৃত্তির অনাবিল আনন্দে তারা উদ্দাম।
ক্ষেতে পচছে আলু, আর গোরে আমি।
এই ভালো, চিন্তাহীন, মাটির বিছানায় শুয়ে আমি মাঝেমাঝে গানও গাই, যা কিনা আমি জীবনেও গাই নি।
তবে বউটা যেদিন মরলো খেতে না পেয়ে আর রোগে ভুগে,
সেদিন যে একটু গাইতে ইচ্ছে করছিলো না তা নয়, মিথ্যে বলবো না তোমাদের,
দায় কমলো, একজনকে তো আর খেতে দিতে হবে না।
তারপরে এলো আমার পালা, মরে বাঁচলাম।
তবে শুনতে পাই মাটির উপরে আমার খাওয়া না খাওয়া নিয়ে নাকি জোর তর্ক হয়,
তা হোক, তর্ক হজমে সাহায্য করে।
তারপর বছরখানেক কেটে গেছে, একদিন আধোঘুমে হয়তো কোনো সবুজ বিপ্লবের স্বপ্ন দেখছিলাম,
হঠাৎ ওপরে ঝুপঝাপ শব্দ, আঁধার সওয়া চোখ ঝলসে যায় তীব্র আলোতে,
কবরের নিস্তব্ধতা চিরে বেজে ওঠে অনেক মানুষের গলার আওয়াজ,
ওই তো, ওই তো সেই কঙ্কালগুলো!
আমাদের আন্দোলনের শহীদ ভাইরা তোমাদের ভুলছি না ভুলবো না
ঝনঝন করে ওঠে চারিদিক সমবেত শ্লোগানে।
আমাদের পেটহীন হাড়কখানা জড়ানো হলো দামী সিল্কের চাদরে,
হাড়েহাড়ে ঝরলো কতো গোলাপের পাপড়ি,
উঠলো বিশাল শহিদ মিনার, ক্ষিধের মতোই আর এক জগদ্দল,

আর আমি বুঝলাম, চাষারা কেনো আলু নয়?
আলু মরলে পচে মিষে যায়, আর, আর চাষারা মাঝেমাঝে শহিদও হয়।

-শান্তনু ওঝা