[ফুন্দুরী রাঙা ঝুরবো ফেগ, তম্মা মইলে মুই ইদো এজ/ রাঙা লেজের ক্লান্ত পাখি, তোমার মা মারা গেলে আমার কাছে এসো- চাকমা লোকছড়া]

কিছুদিন আগে বাংলাদেশের বিশিষ্ট আদিবাসী গবেষক, চাকমা রাজা দেবাশীষ রায়ের সঙ্গে আলাপ-চারিতা হচ্ছিল আদিবাসী শিশুর মাতৃভাষায় লেখাপড়ার বিষয়ে। তিনি জানালেন, পর্যালোচনায় দেখা গেছে, সমতলের চেয়ে পাহাড়ে প্রাথমিক শিক্ষায় ঝরে পড়ার হার অনেক বেশী। এর একটি প্রধান কারণ, শিশু শিক্ষায় ভাষাগত বাধা। তবে এ বিষয়ে সরকারি-বেসরকারি জরিপ চালানো হয়নি বলে সঠিক পরিসংখ্যান পাওয়া কঠিন।

রাজা দেবাশীষ রায় বলেন, আদিবাসী শিশু বাসায় যে ভাষায় কথা বলছে, স্কুলে সে ভাষায় লেখাপড়া করছে না। বাংলা বুঝতে না পারার কারণে শিশুমনে পাঠ্যবই কোনো দাগ কাটছে না, স্কুলের পাঠ গ্রহণ করাও তার জন্য কঠিন হয়ে পড়েছে।

তার ভাষায়, তাই আমরা অন্তত প্রাথমিক শিক্ষায় আদিবাসী শিশুর মাতৃভাষায় শিক্ষালাভের দাবি জানিয়ে আসছি। আমরা চাই, মাতৃভাষায় বর্ণপরিচয়, ছড়া, কবিতা, গল্প, ছোট-খাট অংক, নিজ জাতির ও বাংলাদেশের ইতিহাস শিক্ষার পাশাপাশি যেন আদিবাসী শিশু বাংলাতেও অন্যান্য পাঠগ্রহণ করতে পারে। এটি শিশুর মনোস্তাত্ত্বিক বিকাশের জন্যও জরুরি।

রাজা দেবাশীষ খানিকটা দুঃখ করেই বলেন, চার-পাঁচ দশক আগেও আদিবাসী ভাষা চর্চার এতোটা বেহাল দশা ছিলো না। আমি ছোট-বেলায় দেখেছি, পার্বত্য চট্টগ্রামে অনেক গুরুজনই চাকমা ভাষায় নিজেদের মধ্যে চিঠিপত্র লেখালেখি করতেন। মারমা ভাষাতেও সে সময় লিখিতভাবে ব্যক্তিগত ভাববিনিময় ও লেখালেখি চলতো। কিন্তু প্রতিযোগিতার যুগে ব্যবহারিক উপযোগিতা না থাকায় এখন ওই চর্চাটুকুর সবই হারিয়ে গেছে।

সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পাহাড় ও সমতলের ভাষাগত সংখ্যালঘু, তথা আদিবাসী অধ্যুষিত অঞ্চলে আদিবাসীর মাতৃভাষায় পাঠের ওই বেহাল চিত্র প্রায় একই। পার্বত্য চট্টগ্রাম, বৃহত্তর উত্তরবঙ্গে, কক্সবাজার ও পটুয়াখালিতে ব্যক্তি উদ্যোগে বেশ কয়েক বছর ধরে চলছে অল্প কয়েকটি চাকমা, মারমা, সাঁওতাল, রাখাইন ভাষায় প্রাক-প্রাথমিক এবং প্রাথমিক বিদ্যালয়। ব্রাকসহ কয়েকটি বেসরকারি সংস্থাও এগিয়ে এসেছে এ ক্ষেত্রে। অনেক দেরিতে হলেও ২০১৪ সালে প্রথম খোদ সরকারই এগিয়ে আসে এ উদ্যোগ বাস্তবায়নে। তবে আর সব সরকারি প্রকল্পের মত চার বছরে মুখ থুবড়ে পড়েছে এ উদ্যোগ।

বাংলাদেশের প্রায় ৭০টি আদিবাসী জনগোষ্ঠির ২৫ লাখের বেশী মানুষ হাজার বছর ধরে বংশপরম্পরায় ব্যবহার করছেন নিজস্ব মাতৃভাষা। পাশাপাশি বাঙালির সঙ্গে ভাব বিনিময়ে তারা ব্যবহার করেন বাংলা। প্রতিটি আদিবাসী জনগোষ্ঠির রয়েছে নিজস্ব প্রাচীন ভাষা, রীতিনীতি, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য। তবে কয়েকটি জনগোষ্ঠির ভাষার নিজস্ব বর্ণমালা নেই। এ জন্য তারা রোমান ও বাংলা হরফ ব্যবহার করেন।

এ অবস্থায় প্রধান কয়েকটি আদিবাসী জনগোষ্ঠির ভাষা ও সংস্কৃতি রক্ষায়, তাদের নিজস্ব ভাষায় পাঠদানের উদ্যোগ নেয় সরকারের প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। ভাষাগুলো হচ্ছে, চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, সাঁওতাল, গারো ও সাদ্রি। এর মধ্যে সাদ্রি ব্যবহার করেন উত্তরবঙ্গে বসবাসকারী ওঁরাও, মুণ্ডা, মালো, মাহাতো, রাজোয়ার, তেলি, বাগদি, লহরা, কর্মকারসহ ১৫টি আদিবাসী জনগোষ্ঠি।

এ জন্য আদিবাসী বুদ্ধিজীবীদের সহায়তায় ওই ছয়টি ভাষায় রংচঙে ছবিসহ লেখা হয় বেশ কিছু বর্ণমালার বই। পাহাড় ও সমতলে আদিবাসী অধ্যুষিত অঞ্চলে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সরবরাহ করা হয় বিনামূল্যে বেশ কিছু বই। কিন্তু এসব আদিবাসী ভাষায় লিখতে-পড়তে পারেন, এমন শিক্ষক পাওয়াই মুশকিল। তাই উপযুক্ত শিক্ষকের অভাবে সরকারি এই উদ্যোগ চার বছরেও সফলতার ধারেকাছেও যায়নি। আবার পর্যাপ্ত তহবিলের অভাবে আদিবাসী ভাষায় শিক্ষক প্রশিক্ষণেরও ব্যবস্থা করা যায়নি।

দৈনিক প্রথম আলোর বান্দরবান প্রতিনিধি বুদ্ধজ্যোতি চাকমা আলাপচারিতায় জানান, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান নিয়ে গড়ে ওঠা পার্বত্য চট্টগ্রামে অন্তত এক দশক আগে থেকে বেসরকারি উদ্যোগে সীমিত আকারে চলছে আদিবাসী বর্ণমালায় পাঠদান। এরমধ্যে চাকমা, মারমা ও ত্রিপুরা এই তিনটি প্রধান ভাষাতেই শুধু পাঠদান চলছে। অন্য ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠি রয়ে গেছে উপেক্ষিত।

এরপরেও সরকারি উদ্যোগ যেখানে ভেস্তে গেছে, সেখানে খুব অল্প হলেও এনজিওগুলো কিভাবে সফল হচেছ? এমন প্রশ্নের জবাবে বুদ্ধজ্যোতি বলেন, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র ও ব্রাক প্রতিষ্ঠিত নিজস্ব বেসরকারি বিদ্যালয়ের শিশু শ্রেণীতে যে আদিবাসী বর্ণমালার বই পড়ানো হয়, তা এনজিওগুলো নিজেরাই তৈরি করেছে। আর তারাই আদিবাসী ভাষা লিখতে-পড়তে সক্ষম এমন শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দিয়েছে। এ কারণে বিচ্ছিন্নভাবে তারা সফল হচ্ছে।

তিনি জানান, বান্দরবানে পাহাড়িদের মধ্যে মারমা ও ম্রো জনগোষ্ঠী প্রধান হলেও এই দুই ভাষা সরকারি-বেসরকারি সবক্ষেত্রে অবহেলিত। আর পুরো পার্বত্য চট্টগ্রামে সাধারণ শিক্ষায় চাকমা জাতিগোষ্ঠী এগিয়ে থাকলেও নিজস্ব ভাষায় পড়ালেখায় চাকমাদের আগ্রহ কম। বুদ্ধজ্যোতির মতে, এর কারণ হচ্ছে, চাকমা বর্ণমালার ব্যবহারিক উপযোগিতা নেই। এই বর্ণমালাটি জনপ্রিয়তা না পাওয়ায় এর বদলে বাংলা বা রোমান হরফে চাকমা লিখেই তরুণ প্রজন্ম ভাব বিনিময়ে আগ্রহী।

ম্রো জনগোষ্ঠীর নেতা রাংলাই ম্রো জানান, ১৯৮৬-৮৭ সালে মেনলে ম্রো তাদের প্রকৃতি পূজার বদলে ক্রামা নামক একেশ্বরবাদী ধর্মের প্রবর্তন করেন। একই সঙ্গে তিনি উদ্ভাবন করেন ম্রো জনগোষ্ঠীর বর্ণমালা। এক দশক আগে রাংলাইসহ আরো কয়েকজন উদ্যোগি হয়ে তৈরি করেন ম্রো বর্ণমালার ইউনিকোড। এই হরফ ব্যবহার করে ব্যক্তি উদ্যোগে ও গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র শিশু শ্রেণীর জন্য কিছু বইপত্র প্রকাশ করেছে। কিন্তু এখন আর সরকারি-বেসরকারি কোনো উদ্যোগ না থাকায় বান্দরবানের পাহাড়ে ম্রো বা মারমা কোনো ভাষাতেই শিশু শিক্ষাদান হচ্ছে না।

রাইলাই আরো জানান, সম্প্রতি ইয়াংঙান ম্রো নামে এক পাহাড়ি তরুণ ‍‘ম্রো রূপকথা‘ নামে একটি বই লিখেছেন। এটি ম্রো ভাষার প্রথম পূর্ণাঙ্গ গ্রন্থ। এর আগে ম্রো ভাষার বর্ণমালার বই ও অভিধান লেখা হলেও এমন গ্রন্থ এই প্রথম। দ্বিভাষীক বইটিতে ম্রো জনগোষ্ঠীর বিভিন্ন উপকথা ও লোককথা একই সঙ্গে ম্রো ভাষায় ও বাংলা হরফে বঙ্গানুবাদ আকারে স্থান পেয়েছে। তবে রাংলাইয়ের মতে, বইটির নাম ‘ম্রো উপকথা‌‘ বা ‘‌ম্রো লোককথা‘ হওয়াই যৌক্তিক ছিল।

রাঙামাটির আদিবাসী অধিকার কর্মী পল্লব চাকমা এই লেখককে বলেন, আদিবাসী শিশুর মাতৃভাষায় পড়ালেখা নিয়ে সরকারি প্রচার-প্রচারণার তুলনায় বাস্তবে এর তেমন অগ্রগতি নেই। সরকার যে কয়েকটি আদিবাসী ভাষায় প্রাক-প্রাথমিক বই প্রকাশ করেছে, সীমিত পরিসরে তা পড়ানো হচ্ছে, কিন্তু ব্যপকভাবে তা হচ্ছে না। এর প্রধান কারণ, আদিবাসী মাতৃভাষা পড়ানোর জন্য কোনো শিক্ষক নিয়োগ করা হয়নি। শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ তো দূরের কথা।

সমতলের আদিবাসীর মাতৃভাষায় পাঠদানের একই বেহাল দশার কথা জানালেন জাতীয় আদিবাসী পরিষদের সভাপতি রবীন্দ্রনাথ সরেন। তিনি বলেন, উত্তর বঙ্গের ১৬টি জেলায় বাংলাদেশের বৃহৎ আদিবাসী গোষ্ঠী সাঁওতালদের বাস। সাঁওতালি ভাষার নিজস্ব বর্ণমালা না থাকায় বাংলাদেশের সাঁওতাল জনগোষ্ঠী নিজস্ব ভাষায় লিখিত ভাববিনিময়ে বহু বছর ধরে বাংলা ও রোমান হরফ ব্যবহার করছে। এমনকি বাংলা হরফে সাঁওতালি ভাষায় বেশকিছু শিশু শিক্ষার বইও লেখা হয়েছে। বছর চারেক আগে সরকারি উদ্যোগে সাঁওতালি ভাষায় প্রাক-প্রাথমিক বই তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হলে বর্ণমালার প্রশ্নে এ নিয়ে বিতর্ক দেখা দেয়। মিশনারিরা রোমান হরফে সাঁওতালি ভাষায় বাইবেল ও বেশকিছু প্রার্থনা সংগীতের বই লেখায় তারা দাবি করেন, রোমান হরফেই যেন সাঁওতালি শিশুশিক্ষার বই লেখা হয়। আর জাতীয় আদিবাসী পরিষদের যুক্তি ছিল, ব্যক্তি উদ্যোগে বেশ কয়েক বছর আগে থেকেই যেহেতু বাংলা হরফে সাঁওতালি শিশু শিক্ষার বইপত্র লেখা হচ্ছে, তাই বাংলা হরফেই প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণীর বইপত্র লেখা যুক্তিযুক্ত। এই বিতর্কে শেষ পর্যন্ত সরকারি উদ্যোগে আর সাঁওতালি ভাষায় বইই লেখা হয়নি।

রবীন সরেন জানান, পরে জাতীয় আদিবাসী পরিষদ সরেজমিনে তদন্ত করে এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে যে, সাঁওতাল জনগোষ্টীর লিখিত বর্ণমালা হবে ‘অলচিকি‘। কারণ বিশ্বভারতীতে সাঁওতালি ভাষা অলচিকিতে পড়ানো হয়। সেখানে সাঁওতালিভাষা নিয়ে কেউ উচ্চতর পড়াশোনা করতে চাইলে তাকে অলচিকিতেই পাঠ নিতে হবে। সম্প্রতি সাঁওতালি ভাষায় যে ইউকিপিডিয়া লেখা হচ্ছে, তাও অলচিকিতেই লেখা হচ্ছে। ভারতের প্রায় এককোটি সাঁওতাল এখন অলচিকি বর্ণমালা গ্রহণ করেছেন। তাই বাংলাদেশের সাত-আট লাখ সাঁওতাল মানুষ যদি অলচিকির বদলে অন্যকোনো বর্ণমালা গ্রহণ করেন, তা হবে মূল জনস্রোত থেকে বিচ্ছিন্নতা। সে জন্য আদিবাসী পরিষদ এখন অলচিকি বর্ণমালাকে সমর্থন দিয়েছে। এই ভাষাতে বেশকিছু তরুণ লিখতে ও পড়তে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। এখন ব্যক্তি উদ্যোগে অলচিকিতে প্রাক-প্রাথমিকের বই লেখা হচ্ছে। চেষ্টা চলছে মিশনারীদেরও অলচিকির পক্ষে সমর্থন আদায়ের।

অন্যদিকে, দেশের মধুপুরের শালবন, শেরপুর, ময়নসিংহ ও নেত্রকোনার গারো পাহাড়ে গারো বা মান্দি আদিবাসীদের বাস। তাদের বেশীরভাগই এক থেকে দেড়শ বছর আগে ধর্মান্তরিত হয়ে খ্রিষ্টান হয়েছেন। তবে এখনো অল্প কয়েকটি পরিবার প্রাচীন প্রাকৃতিক ধর্ম ‘সাংসারেক‘ পালন করেন। মধুপরের গারো আদিবাসী সংগঠক ও সাংস্কৃতিক কর্মী আন্তনী রেমা জানান, গারোদের নিজস্ব ভাষার নাম ‘আচিক‘ । বর্ণমালা না থাকায় রোমান হরফে লেখাপড়ার কাজ চলে। সরকারি উদ্যোগে বিচ্ছিন্নভাবে কিছু প্রাক-প্রাথমিকের বই গারো ভাষায় বিতরণ করা হলেও উৎসাহের অভাবে এর প্রসার হয়নি। তাই তেমনভাবে কোথাও আর শিশু শিক্ষায় গারো ভাষা পড়ানো হয় না। এরপরেও ব্যক্তি উদ্যোগে বিচ্ছিন্নভাবে শিশু শ্রেণীতে গারো ভাষায় পাঠ দান করা হয়। আন্তনী জানান, নিজস্ব উদ্যোগে মধুপুরে সম্প্রতি এরকম একটি বিদ্যালয়। এর নাম ‘আন্নি আচিক স্কুল‘ (আমার গারো ভাষার স্কুল)। ভারত থেকে তারা বর্ণমালাসহ কিছু শিশু শ্রেণীর বই যোগাড় করেছেন।

কক্সবাজারের আদিবাসী ফোরামের নেতা মন থেন হ্লা জানান, রাখাইন স্টুডেন্ট কাউন্সিলের উদ্যোগে বছর দেড়েক আগে কক্মবাজারে রাখাইন ভাষা শিক্ষার স্কুল খোলা হয়েছিল। এই জন্য প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমার থেকে কিছু বইপত্রও আনা হয়েছিল। কিন্তু পরে স্বেচ্ছাশ্রমে উদ্যোগটি আর এগিয়ে নেওয়া যায়নি।

মানবাধিকার কর্মী মেন থিন প্রমিলা জানান, পটুয়াখালি অঞ্চলে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা কারিতাসের উদ্যোগে বেশ কয়েক বছর ধরে চলছে চারটি রাখাইন ভাষার স্কুল। শিশু শ্রেণী থেকে তৃতীয় শ্রেণী পর্যন্ত এসব স্কুলে রাখাইন ভাষা পড়ানো হয়। তিনি জানান, প্রথম দিকে মিয়ানমার থেকে বইপত্র সংগ্রহ করা হলেও এখন ফটোকপি করে চালানো হচ্ছে পাঠ্য বইয়ের কাজ।

ছবি : চাকমা আদিবাসী শিশু শিক্ষার্থী, খবংপুড়িয়া, খাগড়াছড়ি, লেখক