এক সময় মনে হ’তো; এখনও হয় মাঝে মাঝে, যদি সৌমিত্র চট্রোপাধ্যায় হ’তে পারতাম, তবে এ জীবনে আর কিছুই চাইতাম না। কিন্তু জানি কারও মতো হওয়া যায় না। তবুও ভালোলাগা মানুষটির মতো কে না হ’তে চায়? অনেক মানুষকে জানি উত্তম কুমারকে দেখে হিংসেয় জ্বলে যায়। সুচিত্রা সেন ছাড়া উত্তম কুমারকে আমার কোনোদিনই ভালো লাগেনি। কিন্তু সৌমিত্র?

সেই “অপুর সংসার” থেকে “চারুলতা” কিংবা “ফেলুদা”। এখনও অপলক বিস্ময়ে দেখি। দেখি শুধুমাত্র সৌমিত্রের জন্য। রবীন্দ্রনাথের “ শেষের কবিতা” শ্রুতি নাটক এখনও রাত জেগে শুনি। তার কারণও সেই সৌমিত্র-ই। মনে আছে, একবার দিল্লী থেকে কলকাতায় ফিরছিলাম রাজধানী এক্সপ্রেসে। ভোর রাতে এসি কামরায় লেপের নীচে শুয়ে শুয়ে ট্রেনের অডিওতে শুনছিলাম সৌমিত্রের কন্ঠে রবীন্দ্রনাথের কবিতা। সারা কামরা, সমস্ত ট্রেন তন্ময় হয়ে শুনছে কবিতা। জানি, সে তন্ময়তা শুধুই সৌমিত্রের কন্ঠ মাধুর্যের জন্য।

আমার সেই স্বপ্নের নায়ক, ভালোবাসার নায়ক সৌমিত্র চট্রোপাধ্যায়কে নিয়ে একটি ফেইসবুক পোস্ট অনলাইনে ঘুরে বেড়াচ্ছে “সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়কে প্রতাপ রায়ের খোলা চিঠি” । আরেক সৌমিত্র ভক্তের এক খোলা চিঠি। বিষয়- কলকাতার কয়েকটি টিভি চ্যানেলে সৌমিত্রের করা “ হনুমান চল্লিশা”-র এক বিজ্ঞাপন। কী আছে এ বিজ্ঞাপনে? কলকাতার প্রতাপ রায়ের চিঠি থেকেই উদ্ধৃতি দিইঃ

“ সৌমিত্র বাবু আপনি নিজেও জানেন, হনুমান চল্লিশা আর তার সাথে যে যন্ত্র আপনি কিনতে বলছেন, তা দিয়ে চাকরি হয় না। ব্যবসায় উন্নতি করা যায় না, দাম্পত্যে শান্তি ফিরে আসে না, বিবাহ বিচ্ছেদ রোধ করা যায় না, পরীক্ষায় ফল ভালো হয় না। তবুও বিজ্ঞাপন দিচ্ছেন সামান্য অর্থের লোভে? এত বছর একটানা চলচিত্র জগতে কাজ করে কি যথেষ্ট সঞ্চয় করতে পারেন নি, যে জীবনের এই গোধূলি লগ্নে এসেও অন্তরাত্মা বিক্রির ব্যবসায় নামতে হল?”

যাঁরা কলকাতার বাংলা টিভি চ্যানেলগুলো নিয়মিত দেখেন ,তাঁরা জানেন প্রায় সবগুলো চ্যানেলেই সকাল, বিকেল ও সন্ধ্যার কিছু সময় বাদ দিয়ে সারাদুপুর ও মধ্যরাতে সর্বরোগে ও সর্বসমস্যার নিরামকের তাবিজ-কবজ এবং অশ্লীল যৌণ উত্তেজক বিজ্ঞাপন প্রচারিত হয়। আর এ সকল বিজ্ঞাপনচরিত্রে থাকেন সৌমিত্র চট্রোপাধ্যায়ের মতো অনেক নামীদামী অভিনেতা, সংগীতশিল্পী, ক্রীড়াবিদ।

খোলা চিঠিতে সৌমিত্র চট্রোপাধ্যায়কে প্রতাপ রায় লিখেছেন,

“ভারতের স্বাধীনতার আটষট্টি বছরেও সবাই শিক্ষিত হতে পারেনি। নিজের বুদ্ধিকে সবাই কাজে লাগাতে পারে না। আপনি জানেন তো, যে ছেলেটি চাকরি না পেয়ে দিশাহারা সে যদি টিভিতে দেখে, আপনি বলছেন, হনুমান যন্তর নিলে চাকরি হয়ে যাবে, সেই যুবক বা কন্যাদায় আর অভাব অনটনে জর্জরিত পিতাটি কি একবারও চেষ্টা করবে না আপনাকে বিশ্বাস করতে? আপনার এই ঝাঁ চকচকে চেহারা, মুখে পরিচিত প্রেমিকের হাসি দেখে ওই হাড়গিলে চাকরিপ্রার্থীটি, ওই কালো মতো খালি পা ওয়ালা কন্যার পিতাটি, নিরুদ্দেশ হয়ে যাওয়া লুচ্ছার ঘরোয়া স্ত্রীটি আপনার কথা শুনে এতোগুলো টাকা দিয়ে ওই ‘হনুমান যন্তর’ কেনে। মহাজন থেকে সুদে টাকা নিয়ে, মাইক্রফিনান্স থেকে টাকা ধার করে আপনার কথায় ‘হনুমান যন্তর’ কেনে। ভাবে হনুমান এসে সব অভাব দূর করে দেবে, ধারের টাকা শুধতে অসুবিধা হবে না।“

বিজ্ঞাপন দাতারা তো এমনি এমনি সৌমিত্র চট্রোপাধ্যায়কে এতো টাকা দিয়ে বিজ্ঞাপন নির্মান করেননি? অবশ্যই সেখানে অর্থনীতির লাভ-ক্ষতি হিসেব করেই তা করা হয়েছে। ভারতের পশ্চিমবংগে এখনো হিন্দু সমাজের অধিকাংশের মধ্যে কুসংস্কার আর ধর্মীয় বিশ্বাসের অধিদৈবিক মোহ এমনভাবে আচ্ছন্ন যে ভাবতেও কষ্ট হয়। ভাবতে কষ্ট হয় যে, এ মানুষগুলো বাস করে একবিংশ শতাব্দীতে আর তথাকথিত “ আধুনিক ভারতে”।

এ প্রবাসেই এক ভদ্রলোককে জানি, তিনি সময় সুযোগ পেলেই প্রাচীন ভারতীয় হিন্দু শাস্ত্র ও দর্শণ নিয়ে কথা বলেন। একবার এক পারিবারিক আড্ডায়, যেখানে উপস্থিত প্রায় অধিকাংশই হিন্দু ধর্মবিশ্বাসী , সেই ভদ্রলোক হিন্দু দর্শণ ও তাঁর ভাষায় “আধুনিক ও সংস্কার-হওয়া” হিন্দু ধর্মের উচ্চকিত প্রশংসা করছিলেন। অনেকক্ষণ পরে আমি তাঁকে থামিয়ে দিয়ে বললাম যে,

“আপনি হিন্দু ধর্মের বাইরের মানুষ হয়ে ভিতরের অবস্থা বুঝতেই পারেননি। এতক্ষণ যা বললেন, আর প্রচলিত বা প্রাক্টিসিং যে হিন্দু ধর্ম তার মধ্যে ব্যবধান আকাশ আর পাতাল। এই ভারতীয় দর্শণ যাকে আপনি হিন্দু শ্রোতা পেয়ে হিন্দু দর্শণ হিসেবে চালিয়ে দিচ্ছেন, সেটা অনেক উচ্চমার্গের। সাধারণ মানুষেরা এতো সব দর্শণ শাস্ত্র বোঝে না। আর এ উচ্চমার্গের দর্শণ যে হিন্দু ধর্মবিশ্বাসীরা বোঝেন, তাদেরকে প্রচলিত হিন্দু ধর্মের রীতিনীতি পালন ও লালন করতে হয় না। তারা তখন প্রচলিত ধর্মবিশ্বাসের উর্ধ্বে উঠে মানবতাবাদী দার্শণিক হয়ে যান। কিন্তু প্র্যাক্টিসিং হিন্দু ধর্ম এখনো সেই তিমিরেই আছে।“

এই প্রবাসে এসেও উচ্চশিক্ষিত অনেক হিন্দু শনির পূজা, সত্যনারায়ণ পূজা, সাপের দেবী মনষার পূজা নিয়মিতভাবেই করে থাকেন। অথচ এসব পূজা অর্চণার পেছনে ধর্মীয় নির্দেশনা আছে ব’লেও তেমন জানা নেই; আছে শুধুই কুসংস্কার ও অন্ধবিশ্বাস ।

নিজের অভিজ্ঞতা থেকেই বলছি, প্রতি রোববার কলকাতার প্রায় সকল দৈনিক পত্রিকার ভেতরের আট পাতা জুড়ে থাকে অলৌকিক – অধিদৈবিক ও পাত্র-পাত্রী চাই বিজ্ঞাপন। আর পাত্র-পাত্রী চাই বিজ্ঞাপনের প্রায় অধিকাংশের চাহিদা ও ভাষা এমন যে, সহজেই অনুমান করা যায় এই একবিংশ শতকে এসেও বর্ণভেদ আর জাতীভেদ প্রথা এবং নারীর সম্মান কিভাবে ধুলায় মিশিয়ে দেয়া হচ্ছে , যা প্রবল ও প্রকট ভাবে লজ্জার ও ঘৃণার।

অনেকেই আমরা হিন্দু ধর্মের সংস্কারের কথা ব’লে বাহবা নিই। স্বামী বিবেকানন্দ –রামকৃষ্ণ পরমহংস- শ্রীচৈতন্যের মাহত্ব্য বর্ণনা ক’রে ক’রে গলা ফাটিয়ে ফেলি। হিন্দু দর্শণের তত্ত্ব-তথ্য নিয়ে বুদ্ধিজীবি হয়ে যাই। কিন্তু এ সবের প্রতিফলন শুধু পাঠ্যপুস্তক কিংবা জীবনীকারের কাহিনী বর্ণনা ছাড়া প্রতিদিনের হিন্দু সমাজের ব্যবহারিক জীবনে তেমন নেই।

অনেকে তর্কের খাতিরে বাংলাদেশের হিন্দুধর্ম বিশ্বাসীদের কথা উল্লেখ করবেন। হ্যা, আমি নিজেও স্বীকার করি বাংলাদেশে হিন্দুদের ধর্মীয় গোড়ামি পশ্চিমবংগের বাঙালি হিন্দু কিংবা ভারতীয় হিন্দুদের চেয়ে অনেক কম। বিশেষকরে বর্ণভেদ কিংবা জাতিভেদ প্রথার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের হিন্দুরা ভারতীয় হিন্দুদের চেয়ে অনেক অনেক এগিয়ে। এটা কিন্ত হিন্দু ধর্মের সংস্কার হয়েছে সে জন্য নয়। পৃথিবীর সব দেশেই ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা ধর্মের চেয়ে যে দেশে বাস করে সেখানকার প্রচলিত আইন-কানুনেই বেশী শ্রদ্ধাশীল হোন। সেটা নিজেদের দূর্বল অবস্থানজনিত কারণেও বটে। তাই পশ্চিমবংগ বা ভারতীয় মুসলিম জনগোষ্ঠীর মধ্যে অন্যান্য মুসলিম প্রধান দেশের মুসলিমদের চেয়ে ধর্মীয় মৌলবাদের দিকে ঝুঁকে পড়ার সম্ভাবনা কম। ঠিক একই কারণে বাংলাদেশের হিন্দুরাও মনে না-চাইলেও অনেক ক্ষেত্রেই ধর্মীয় বিশ্বাসের ক্ষেত্রে অনেকটাই আধুনিক।

খুবই প্রাসংগিক আরেকটা উদাহরণ দিই। বাংলাদেশের অনেক মুসলমান নিজ দেশে সাম্প্রদায়িক রাজনীতির সাথে জড়িত কিংবা সমর্থক ছিলেন অথচ এই কানাডাতে এসে তাদের অধিকাংশই এখানকার অতিবাম ( ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি বা এনডিপি) বা মধ্যবাম ( লিবারেল পার্টি) –র সমর্থক । এমনকি অনেকে আবার এসব পার্টির নেতাও। একজন কট্টর ধর্মীয় মৌলবাদী এতো সহজেই নীতি-আদর্শ বদলে ফেলে বাম ঘরানার সমর্থক হয়ে গেলেন? অথচ এনডিপি বা লিবারেল পার্টির অধিকাংশ নীতি-আদর্শই ইসলামী আদর্শের পরিপন্থী।

তবে কেনো এ লেবাস ধারণ? কারণ, মানুষ সহজাতভাবেই মুখোশ ধরতে খুব পছন্দ করে। এই মুখোশ ধারণ নিজের বা ধর্মীয় গোষ্ঠীর সাময়িক লাভে ও লোভে। অনেক ক্ষেত্রে আর্থিক ও সামাজিক মান-মর্যাদার জন্যেও। কিন্তু দিন শেষে ধর্মান্ধরা আবার সেই নিজের আলয়েই। এখানে নীতি আদর্শ পরিবর্তনের কোনো বিষয়ই নেই। বাংলাদেশে যে মৌলবাদী এখানে অর্থ্যাৎ কানাডাতে এসে সে এনডিপি বা লিবারেল পার্টির নেতা বা সমর্থক হ’লেও মন-মানসিকতাতে সেই মৌলবাদীই।

কিন্তু সময় বদলে যাচ্ছে। বদলে যাচ্ছে বিশ্ব। বিজ্ঞান ও প্রগতির অগ্রগতি বিস্ময়কর গতিতে ছুটে চলেছে। কিন্তু বাংলাদেশ –ভারতের মতো দেশে কিছু মানুষ পড়ে আছে সেই মধ্য বা প্রাচীন যুগের ধর্মীয় বিশ্বাসের অন্ধকূপেই। আর সাধারণ মানুষের এই সব ধর্মীয় বিশ্বাসকে পুজি করেই বেনিয়ারা ব্যবসা বানিজ্যে প্রসার করছে। আর সেই বানিজ্যে সহায়ক ভূমিকা পালন করছেন সৌমিত্র চট্রোপাধ্যায়ের মতো জনপ্রিয় ও সুপরিচিত নামীদামী মানুষেরা। এটি লজ্জার ও ঘৃণার। ছিঃ ছিঃ…

।অক্টোবর ৩১,২০১৮। হ্যামিল্টন, ওণ্টারিও, কানাডা ।

( প্রতাপ রায়ে লেখা চিঠিটি এখানে…

“সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়কে প্রতাপ রায়ের খোলা চিঠি..

মাননীয় সৌমিত্র বাবু,

আজ আপনাকে টিভিতে দেখলাম। প্রায়ই দেখি কখনও সিরিয়ালে, কখনও সিনেমায়, কখনও আবৃত্তি পাঠে, কখনও বিজ্ঞাপনে। একজন বর্ষীয়ান অভিনেতা আপনি। খুব ভালো অভিনয়ও করেন। এখনও অনেক সদ্যযৌবনার হার্টথ্রব আপনি। আপনি কবিতা লেখেন এবং আবৃত্তি করেন বলে আমি আপনাকে একটু বেশিই পছন্দ করি। কিন্তু আজকে আপনার অভিনয়টা এত ম্রিয়মান লাগল কেন সৌমিত্র বাবু? আপনার আওয়াজে মিথ্যে কথার মতো অপ্রস্তুত কম্পন কেন? আমি জানি। বলব?

কারণ আপনি নিজেও জানেন, হনুমান চল্লিশা আর তার সাথে যে যন্ত্র আপনি কিনতে বলছেন, তা দিয়ে চাকরি হয় না। ব্যবসায় উন্নতি করা যায় না, দাম্পত্যে শান্তি ফিরে আসে না, বিবাহ বিচ্ছেদ রোধ করা যায় না, পরীক্ষায় ফল ভালো হয় না। তবুও বিজ্ঞাপন দিচ্ছেন সামান্য অর্থের লোভে? এত বছর একটানা চলচিত্র জগতে কাজ করে কি যথেষ্ট সঞ্চয় করতে পারেন নি, যে জীবনের এই গোধূলি লগ্নে এসেও অন্তরাত্মা বিক্রির ব্যবসায় নামতে হল?

শুনেছি আপনার সন্তানরা বিদেশে লব্ধপ্রতিষ্ঠিত, তারাও কী আপনার এই অভাবের সুরাহা করতে পারছেন না?
আপনার হয়ত মনে নেই, কিন্তু আমার মনে আছে কিছুদিন আগে দক্ষিণ কলকাতার একটা নামী ক্লাবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে আপনার সাথে দেখা হয়েছিল। আপনি মস্ত গাড়ি থেকে নামলেন (ল্যান্ডরোভার না কি ছাই গালভরা নাম ছিল গাড়িটার)। কালো কাচ তার উপর আবার মিররপলিস। আপনাকে দেখে তখন তো হতদরিদ্র বা অর্থনৈতিক দায়গ্রস্থ মনে হল না। তাহলে জেনেশুনে এই মিথ্যা বিজ্ঞাপন কেন করেন সৌমিত্র বাবু?

আপনি কালো কাচ ঢাকা গাড়িতে চড়েন তাই বাইরের জগতটাকে ভালো দেখতে পান না। শুনুন আপনাকে বলছি, ভারতের স্বাধীনতার আটষট্টি বছরেও সবাই শিক্ষিত হতে পারেনি। নিজের বুদ্ধিকে সবাই কাজে লাগাতে পারে না। আপনি জানেন তো, যে ছেলেটি চাকরি না পেয়ে দিশাহারা সে যদি টিভিতে দেখে, আপনি বলছেন, হনুমান যন্তর নিলে চাকরি হয়ে যাবে, সেই যুবক বা কন্যাদায় আর অভাব অনটনে জর্জরিত পিতাটি কি একবারও চেষ্টা করবে না আপনাকে বিশ্বাস করতে? আপনার এই ঝাঁ চকচকে চেহারা, মুখে পরিচিত প্রেমিকের হাসি দেখে ওই হাড়গিলে চাকরিপ্রার্থীটি, ওই কালো মতো খালি পা ওয়ালা কন্যার পিতাটি, নিরুদ্দেশ হয়ে যাওয়া লুচ্ছার ঘরোয়া স্ত্রীটি আপনার কথা শুনে এতোগুলো টাকা দিয়ে ওই ‘হনুমান যন্তর’ কেনে। মহাজন থেকে সুদে টাকা নিয়ে, মাইক্রফিনান্স থেকে টাকা ধার করে আপনার কথায় ‘হনুমান যন্তর’ কেনে। ভাবে হনুমান এসে সব অভাব দূর করে দেবে, ধারের টাকা শুধতে অসুবিধা হবে না।

আজকের কিশোর, যুবকরা যেখানে অশিক্ষা আর অন্ধকারে আলো জ্বালার দায় নিচ্ছে, ধর্মান্ধ নরপশুদের চাপাতির ঘায়ে প্রাণ দিচ্ছে, সেখানে আপনি একজন সংস্কৃতিবান, বিদ্বজন হয়ে, ধর্মান্ধতা প্রচার করছেন? হনুমান যন্ত্রের বিজ্ঞাপন করছেন?

আজ এই পৃথিবীর প্রসব অঙ্গে এত যন্ত্রণা কেন জানেন, এই পৃথিবী আপনাদের মতো বুদ্ধিজীবীদের জন্ম দিয়েছে বলে। আপনার শরীরে যদি মানবআত্মা থেকে থাকে, আশাকরি আপনি প্রকাশ্যে এই ধরণের বিজ্ঞাপনের বিরোধিতা করবেন।
ইতি,
প্রতাপ রায়
** আমার বন্ধু তালিকায় অনেকেই আছেন যারা সৌমিত্রবাবুর অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ, ওনার বাড়িতেও তাঁদের নিত্য যাতায়াত আছে.. তাদেরকে বলছি নির্দ্বিধায় আমার পোষ্টটি ওনার কাছে পৌঁছে দিতে পারেন, … )