ফ্রান্সের প্যারিসে শার্লি হেবদো নামে একটি বিদ্রুপাত্মক পত্রিকা অফিসে বন্দুকধারীদের হামলা

সন্ত্রাসীদের কোন সামরিক শক্তি নেই বলেই তারা প্রচারণা পাওয়ার জন্য হত্যাযজ্ঞের প্রদর্শনী করে। সন্ত্রাসের জবাব রাষ্ট্র কিভাবে মোকাবেলা করে? স্যাপিয়েন্স গ্রন্থের লেখক ইউভাল হারিরি অতীতের আলোকে মানুষের সম্ভাব্য ভয়ানক ভবিষ্যতের ইঙ্গিত দিয়েছেন।

সন্ত্রাস শব্দের আক্ষরিক অর্থ হলো একধরণের সামরিক রণকৌশল যার কাজ হচ্ছে ত্রাস সৃষ্টির মাধ্যমে বস্তুগত সম্পদের ক্ষতিসাধন না করেই রাজনৈতিক মতাদর্শ পরিবর্তনের চেষ্টা করা। সাধারণত দুর্বল প্রতিপক্ষ যারা শত্রুশিবিরের সমূহ ক্ষতি করতে পারে না কিন্তু শুধু মানুষের মনে আতঙ্ক এবং বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার জন্যই সন্ত্রাসের পথ বেছে নেয়। অবশ্যই সব সামরিক কর্মকাণ্ডই জনমনে ভয় ছড়িয়ে দেয়। যুগপৎ যুদ্ধে সামরিক বাহিনীর হাতে সাধারণ মানুষ হতাহত হয় এবং সম্পদের ক্ষতির সাথে উপজাত যুক্ত হয় আতংক। সন্ত্রাসবাদের মূল লক্ষ্য জঙ্গি কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে ক্ষুদ্র শক্তি বিনিয়োগ করে যথাসম্ভব আতংক সৃষ্টি করা। কিন্তু সন্ত্রাসের মাধ্যমে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে কোন দেশের রাজনৈতিক অবস্থান পরিবর্তন করা মোটেও সহজ কাজ না। ১৯১৬ সালে ১লা জুলাই প্রথম বিশ্বযুদ্ধে জার্মানির বিরুদ্ধে ব্রিটিশ এবং ফ্রান্সের যৌথ বাহিনী ফ্রান্সের সোম নদীর কুলে যুদ্ধে লিপ্ত হয়। সোম যুদ্ধের প্রথম দিনে ১৯০০০ হাজার ব্রিটিশ সৈনিক নিহত হয় এবং ৪০,০০০ জন সৈনিক গুরুতর জখম হয়। নভেম্বর নাগাদ যুদ্ধ শেষ হলে দেখা যায় দুই পক্ষের আহত সৈনিকের সংখ্যা দাঁড়ায় প্রায় দশ লাখ এবং মৃত্যু ঘটে ৩০০০০০ সৈনিকের। কল্পনার অযোগ্য ইতিহাসের এমন খুন উৎসবের পরেও ইউরোপে ক্ষমতার ভারসাম্যে কোন পরিবর্তন আসেনি। ক্ষমতার কামড়াকামড়ি থেকে ক্ষমতা দখল করা পর্যন্ত দুই বছর সময় লাগে এবং এই সময়ে ইউরোপে অতিরিক্ত আরও দশ লাখ মানুষের প্রাণহানি ঘটে।

ন্যাক্কারজনক সোম যুদ্ধের তুলনায় সন্ত্রাসবাদ নিতান্ত চুনোপুঁটির মত ব্যাপার। বেশীরভাগ সন্ত্রাসী আক্রমণে সামান্য কিছু মানুষ নিহত হয়। ২০০২ সালে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে জঙ্গি হামলার স্বর্ণযুগে। প্রায় প্রতিদিনই যানবাহনে বা হোটেল রেস্তোরাঁতে জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটে। সে বছর ৪৫১ জন ইজরায়েলি নাগরিক নিহত হন। ঠিক একই বছরে ইজরায়েলে ৫৪২ জন নাগরিক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন। সাম্প্রতিক সময়ে সংঘটিত খুব কম সংখ্যক সন্ত্রাসী আক্রমণেই শতাধিক মানুষ মারা গেছে। তবে ১৯৮৮ সালে প্যান অ্যাম ফ্লাইট ১০৩ বিমান লকারবীতে সন্ত্রাসী হামলার শিকার হলে শতাধিক মানুষ নিহত হয়। ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বরে টুইন টাওয়ারে বিমান হামলার ঘটনায় মৃতের নতুন রেকর্ড ছুঁয়ে যায়। মর্মান্তিক এই সন্ত্রাসী হামলায় প্রায় ৩০০০ লোকের মৃত্যু হয়। তবুও যুগপৎ যুদ্ধের তুলনায় এই মৃতের সংখ্যা অতিকায় হস্তির কাছে ক্ষুদ্র পিঁপড়ের সমান। ১৯৪৫ সালের পর থেকে আজ পর্যন্ত ইউরোপে জাতীয়তাবাদ, ধর্মীয় উগ্রবাদ, বামপন্থী এবং ডানপন্থী সংঘর্ষ এবং সন্ত্রাসী আক্রমণে যত মানুষ মারা গেছে তার পরিমাণ প্রথম বিশ্বযুদ্ধের যেকোনো খণ্ডযুদ্ধে নিহত মানুষের তুলনায় নিতান্তই সামান্য। যেমন আইজনের তৃতীয় যুদ্ধে ২৫০০০০ এবং ইসোনজোর ১০ম যুদ্ধে ২২৫০০০ মানুষ মারা যায়।

২১ ডিসেম্বর ১৯৮৮ সালে প্যান অ্যাম বোয়িং ৭৪৭ বিমানে সন্ত্রাসী হামলায় বিস্ফোরিত ককপিটের ভাঙা টুকরো পড়ে আছে লকারবি গ্রামে।

তারপরেও সন্ত্রাসবাদী সংগঠনগুলো কিভাবে বড় ধরণের সাফল্য অর্জনের স্বপ্ন দেখে? সন্ত্রাসবাদী জঙ্গি সংগঠনগুলো সাধারণত নির্দিষ্ট মতাদর্শের কিছু সীমিত সংখ্যক যোদ্ধা, ট্যাংক বা যুদ্ধের যান, সরঞ্জাম ব্যবহার করে থাকে। এমনকি তাদের পর্যাপ্ত সামরিক প্রশিক্ষণ পর্যন্ত নেই। সন্ত্রাসী আক্রমণে আক্রান্ত দেশটির যোগাযোগ ব্যবস্থা, সড়ক এবং রেললাইন তেমন ক্ষতিগ্রস্ত হয় না। সন্ত্রাসীরা দেশটির শিল্প, কলকারখানা, বন্দর, বিমান ঘাঁটির নাগালও কোনদিন পায় না। সন্ত্রাসী গোষ্ঠীরা জানে তারা রাষ্ট্রের কাঠামো, শক্তির তেমন ক্ষতি করতে না পারলেও জনমনে আতংক এবং বিভ্রান্তিকর পরিবেশ তৈরি করতে পারবে। তখন দেশটি মশা মারতে কামান দাগানোর মত ভুলের ফাঁদে পা দেবে, শক্তির অপচয় করবে। এরকম কাপুরুষের মত অতর্কিত হামলা সন্ত্রাসী জঙ্গি সংগঠনের যুদ্ধের প্রধান কৌশল। তারা প্রতিপক্ষের শক্তি দিয়েই প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে চায়। যেমন ১৯৫০ সালে ফ্রান্স আলজেরিয়াতে ‘ন্যাশনাল লিবারেশন ফ্রন্ট’ (এনএলএফ) এর হাতে পরাজিত হয়নি বরং এনএলএফ’র সন্ত্রাসী কার্যক্রমের জবাবে ফ্রান্স বাহিনীর ভুল সিদ্ধান্তই দায়ী। ইরাক এবং আফগানিস্তানে আমেরিকার ভরাডুবির কারণ আমেরিকার অপরিসীম সামরিক শক্তি। আল-কায়েদার বনসাই আকৃতির সামরিক শক্তি আমেরিকার কাছে তুচ্ছাতিতুচ্ছ। সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেব করে দেখেছে, সন্ত্রাসী হামলার জবাবে যখন দেশটা ব্যাপক সামরিক শক্তি নিয়ে গোটাকয় জঙ্গির সাথে যুদ্ধে লিপ্ত হয় তখন সন্ত্রাসীরা জনসাধারণের মাঝে মিশে যায় দ্রুত। আক্রান্ত দেশটা যখন পালটা হামলা করে তখন মারা পড়ে সাধারণ মানুষ। বেঁচে থাকা সাধারণ মানুষটা হাতে তুলে নেয় অস্ত্র। জন্ম নেয় ভয়ংকর নতুন যোদ্ধা এবং রাজনৈতিক অস্থিরতা যা সন্ত্রাসী দলগুলো সর্ব শক্তি দিয়েও করতে পারত না। প্রতিটি সামরিক অভিযানেই অনেক অজানা, অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটতে থাকে। সেনাবাহিনী ভুল সিদ্ধান্ত নেয়, সেনাবাহিনীর মধ্যে উদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ চলে আসে। জনমতের পাল্লা দ্রুত সন্ত্রাসীদের পক্ষে চলে যায়, দখলদার বাহিনী প্রশ্নবিদ্ধ হয়, নিরপেক্ষরা সন্ত্রাসীদের পক্ষে রায় দিয়ে ফেলে, এর ফলেই ক্ষমতার পালাবদল বদল ঘটে। সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আগে থেকে বলতে পারে না ফলাফল কি হতে যাচ্ছে। যা হবে সবই তাদের জন্য মঙ্গল কারণ তাদের হারানোর কিছু নেই। তাদের সামনে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের অবারিত সুযোগ। রাজনৈতিক পরিবেশ শান্ত থাকলে ফায়দা লুটা যায় না।

নতুন সুযোগের অপেক্ষায়

সামরিক কৌশল হিসেবে জঙ্গিবাদ অপ্রতিরোধ্য নয়। কারণ গুরুত্বপূর্ণ সব সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা প্রতিপক্ষের হাতেই রয়ে যায়। যেহেতু সন্ত্রাসী হামলায় সাধারণত আক্রান্ত দেশটির বস্তুগত তেমন ক্ষতি হয় না এবং অনেক সংখ্যায় মানুষ মারা যায় না, সন্ত্রাসীদের নির্দিষ্ট ভূখণ্ড নেই সেহেতু আক্রান্ত দেশটি সরাসরি পালটা আক্রমণে চলে যেতে পারে না। আর্মি সাধারণত শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত যুদ্ধ এড়াতে চায়। যখন তারা আক্রমণে যায় তখন তারা চেষ্টা করে শত্রুপক্ষকে যথাসম্ভব উস্কে না দিতে। বরং চেষ্টা করে শত্রুর ক্ষমতা কিভাবে খর্ব করা যায় যাতে তারা প্রতিশোধ না নিতে পারে। প্রথমেই চেষ্টা করে শত্রুর শক্তিশালী ভয়ানক অস্ত্রগুলো অকার্যকর করে দিতে। উদাহরণ হিসেবে বলা যেতে পারে ১৯৪১ সালের ডিসেম্বরে জাপান যখন প্রশান্ত মহাসাগরের পার্ল হারবারে আমেরিকার নৌবহরে হামলা চালায় তখন তারা একটা বিষয়ে নিশ্চিন্ত ছিল যে অতিসত্বর আমেরিকা দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার জলসীমায় নৌবহর পাঠাতে পারবে না।

শত্রুর মারণাস্ত্র এবং অস্ত্রের সম্ভাব্য বিকল্প নিরস্ত্র না করেই শত্রুকে যুদ্ধে আহ্বান করা আত্মহত্যার শামিল। একান্ত নিরুপায় হয়েই আর্মি এমন আক্রমণে যায়। সম্পদ এবং জনজীবনে গুরুতর ক্ষতি সাধিত হলে কোন দেশই শুধুই একটা সন্ত্রাসী আক্রমণ বলে এড়িয়ে যেতে পারে না। ১৯৪১ সালের ডিসেম্বরে প্রশান্ত মহাসাগরের পার্ল হারবারে মোতায়েন করা আমেরিকার যুদ্ধ জাহাজকে অক্ষত রেখে জাপান যদি বিনা উস্কানিতে বেসামরিক যাত্রীবাহী জাহাজে হামলা চালাতো তাহলে সেটা হতো জাপানের জন্য নির্বোধ পাগলামি।

আক্রান্ত দেশের সাধারণ মানুষ সন্ত্রাসী জঙ্গি ধর্মীয় সংগঠনের সাথে অবধারিতভাবে জড়িয়ে পড়ে কারণ তারা যুদ্ধের খরচ বইতে পারে না। অতর্কিত হামলায় সমূহ ক্ষতি সাধন করে তারা একটা দৃশ্যমান হিংসাত্মক নাটকের মঞ্চায়ন করে ফেলে এবং চেষ্টা করে সংবাদের জন্ম দিতে। সন্ত্রাসীরা কখনো একজন আর্মি জেনারেলের মত চিন্তা করে না, তারা ত্রাসের নাটক প্রযোজনা করে। ১১ই সেপ্টেম্বরে টুইন টাওয়ারে হামলার ঘটনায় মানুষের স্মরণ সভা দেখে অন্তত তাই প্রমাণ হয়। যদি কেউকে প্রশ্ন করা হয় ২০০১ সালের ১১ই সেপ্টেম্বর কী ঘটেছিল, তারা সাধারণত বলে আল-কায়েদা ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের টুইন টাওয়ার ধ্বংস করেছে। যদিও টুইন টাওয়ারের সাথে পেন্টাগনে আরও দুইটা সফল হামলা চালানো হয়েছিল। সবসময় কেন শুধু সীমিত সংখ্যক মানুষই প্রকৃত ঘটনা দেখতে পায়? যদি ১১ই সেপ্টেম্বরের ঘটনা প্রচলিত যুদ্ধের হামলা হতো তাহলে পেন্টাগনে হামলার সংবাদ সেদিনের খবরের শিরোনাম হতো। এই হামলায় আল-কায়েদা আমেরিকার সদর দপ্তরের একাংশ ধ্বংস করে দিতে সক্ষম হয়, সিনিয়র কমান্ডার, বিশেষজ্ঞ, বিশারদগণ নিহত হন, কেউ কেউ গুরুতর জখম হয়েছেন। তবুও দুইটা বেসামরিক উঁচু ভবনের ধ্বংস আর কর্পোরেট শ্রমদাস, শেয়ার বাজারের ব্রোকার হিসাবরক্ষক হত্যার ঘটনা কেন জনতার আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু?

সন্ত্রাসীদের প্রকৃত শক্তি আর তারা যে পরিমাণ ত্রাসের জন্ম দিতে পারে তার মধ্যে রয়েছে বিস্ময়কর পার্থক্য।

কারণ পেন্টাগন একটা অপেক্ষাকৃত অনুচ্চ ভবন প্রায় সমতল এবং তেমন চোখেও পড়ে না, কিন্তু ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার ছিল বিশালাকার, প্রাচীন সমাজের উত্থিত পুরুষাঙ্গের প্রতীক ভেঙে পড়লে সুদূরপ্রসারী অডিও ভিজুয়াল প্রভাব থেকে যায়। যে একবার ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার ভেঙে পড়া দেখেছে সেই স্মৃতি সারাজীবন তার মনে দুঃস্বপ্নের মত লেগে থাকবে। আমরা মনে করি সন্ত্রাসবাদ একটা মঞ্চ নাটক, আর সন্ত্রাসের আঘাতে আমরা বস্তুগত ক্ষয়ক্ষতির বিচার না করে আবেগ দিয়ে দেখি। লাদেনের আল-কায়েদা সুরক্ষিত সুদর্শন পেন্টাগনে আরও বড় ধরণের হামলা চালাতে পারত, আমেরিকার গর্ব স্ট্যাচু অফ লিবার্টিতে হামলা করতে পারত। কিন্তু বাস্তবতা হলো সেক্ষেত্রে অল্প-কয়জন মানুষ মরত আর সামরিক দিক দিয়ে কোন ক্ষয়ক্ষতি হতো না। কিন্তু একবার চিন্তা করে দেখুন, স্ট্যাচু অফ লিবার্টিতে হামলা হলে কী সাড়া জাগানো নাটকের প্রদর্শনী হয়ে যেত।

সন্ত্রাসীদের মোকাবেলা করতে হলে সন্ত্রাসবাদ নাটকের প্রযোজক সন্ত্রাসীদের মত চিন্তা করতে হবে। সন্ত্রাসবাদের সাথে কার্যকর যুদ্ধ করতে হলে মনে রাখতে হবে সন্ত্রাসী একটা জঙ্গি সংগঠন, তারা রাষ্ট্রকে পরাজিত করতে পারবে না। একমাত্র রাষ্ট্রই রাষ্ট্রের পরাজয় ডেকে নিয়ে আসে যখন সন্ত্রাসী হামলার প্রতিশোধ নিতে গিয়ে ভুল পথে পরিচালিত হয়ে সর্বাত্মক যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে।

২০০১ সালের ১১ই সেপ্টেম্বরে নিউইয়র্কের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে হামলায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত টুইন টাওয়ার।

সন্ত্রাসীরা হলো ঢাল নাই তরোয়াল নাই, নিধিরাম সর্দার। এদের সামরিক সামর্থ্য নাই, কিন্তু রাজনৈতিক ক্ষমতার ভারসাম্য পরিবর্তন করার জন্য অবাস্তব কর্মসূচি গ্রহণ করে। তারা রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অসম যুদ্ধ ঘোষণা করে। রাষ্ট্রকেও প্রমাণ করতে হয় রাষ্ট্র সবসময় সর্বত্র রাজনৈতিক সংঘাত থেকে তার নাগরিকদের সুরক্ষা দিতে সক্ষম। সন্ত্রাসীদের পরিকল্পনায় আঁকা নীলনকশায় পা দেয় রাষ্ট্র, রাজনৈতিক জুয়া খেলার পাশা নতুন ছকে বদলে যায় আর তখনই সন্ত্রাসীদের হাতে চলে আসে অপ্রত্যাশিত সুযোগ।

এটা সত্যি যে, রাষ্ট্র যদি তার নাগরিকের রাজনৈতিক সুরক্ষা নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর হয় তবে সন্ত্রাসের মূলোৎপাটন করে ছাড়বে। বিগত কয়েক দশকে দেশে দেশে শত শত জঙ্গি সংগঠন ইতিহাসে বিলীন হয়ে গেছে। ২০০২-২০০৪ সালে ইজরায়েল প্রমাণ করে দেখিয়েছে পেশী শক্তির মাধ্যমে জঙ্গিবাদের কার্যক্রম নির্মূল করে দেয়া সম্ভব। সন্ত্রাসীরা ভালো করেই জানে সম্মুখ যুদ্ধে তারা নিতান্ত চুনোপুঁটি, সামরিক বাহিনী তাদেরকে ছারপোকার মত পিষে মেরে ফেলতে পারে। কিন্তু যেহেতু তারা শক্তিতে খুব দুর্বল, তাদের কোন সামরিক শক্তি নাই সেহেতু তাদের আসলে হারানোও কিছু নেই, সেহেতু এই যুদ্ধে যা আছে সব তাদের প্রাপ্তি। সন্ত্রাসী আক্রমণের পরে যখন পালটা আক্রমণ শুরু হয় দেশে দেখা দেয় রাজনৈতিক ঝড় এবং সন্ত্রাসীরা সুবিধা পেয়ে যায়। এটাই হলো সন্ত্রাসের নাটকীয় জুয়াখেলা। সন্ত্রাসীরা দক্ষ জুয়াড়ি, কালো হাতে খেলে যায়। তারা সব সময় চেষ্টা করে রাষ্ট্রের রাজনৈতিক পট পরিবর্তন করতে। কারণ সন্ত্রাসীদের হারানোর কিছুই নেই কিন্তু বিজয়ের আছে সবকিছু।

শূন্য কলসে আওয়াজ বেশি

দেশের সরকার কেন পাশার গুটি বদল করে? সন্ত্রাসী হামলায় বস্তুগত সম্পদ এবং প্রাণের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ যুদ্ধের তুলনায় নগণ্য হলেও রাষ্ট্র তাৎক্ষণিক প্রতীকারমূলক কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে না। বিচ্ছিন্ন কিন্তু নিয়মিত সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে রাষ্ট্র কী কার্যকর ব্যবস্থা নিচ্ছে সেটা কোনদিন ক্যামেরা, মাইক্রোফোনের সামনে আসে না, কারণ রাষ্ট্র তার পরিকল্পনা প্রকাশ করে না। কিন্তু মাঝে মাঝেই রাষ্ট্র হামলার জবাবে স্থির থাকতে পারে না এবং সন্ত্রাসীদের দেশে গিয়ে সর্বশক্তি দিয়ে পালটা সর্বসাধারণকে আক্রমণ করে। কিন্তু মনে রাখা দরকার সন্ত্রাসীদের কোন দেশ নেই। এভাবেই সন্ত্রাসী অর্থায়নে প্রযোজিত ‘সন্ত্রাস’ মঞ্চ নাটকে পাশার গুটি সন্ত্রাসীদের পক্ষে চলে যায়।

সন্ত্রাসের উস্কানিতে রাষ্ট্র এত স্পর্শকাতর কেন? এই প্রশ্নের উত্তর হলো, “আধুনিক রাষ্ট্র ব্যবস্থার আইনগত বৈধতা হচ্ছে, “রাষ্ট্র নির্দিষ্ট ভূখণ্ডের মানুষকে রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলা থেকে রক্ষা করার প্রতিশ্রুতি দেয়”। ভয়ানক প্রাকৃতিক দুর্যোগে দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হলেও সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারে। জনগণ এর জন্য সরকারকে দোষারোপ করে না। কারণ প্রাকৃতিক দুর্যোগ নিয়ন্ত্রণ করতে সরকারকে আইনত বাধ্য করা যায় না। কিন্তু রাষ্ট্রের আইনগত কোন বিষয়ে সামান্যতম বরখেলাপ হলেও সরকারের পতন অনিবার্য। ১৩৪৬ থেকে ১৩৫৩ মহামারী আকারে প্লেগ আক্রান্ত হয়ে ইউরোপে প্রায় ২ কোটি মানুষ মারা যায়। ইতিহাসে এই মৃত্যুর মহামারীকে ‘ব্ল্যাক ডেথ’ বলা হয়। মারা যায় ইউরোপের মোট জনসংখ্যার এক তৃতীয়াংশ মানুষ। তবুও কোন রাজাকে সিংহাসন ছাড়তে হয় নি। এমনকি কোন রাজা প্লেগ নিয়ন্ত্রণে কোন ব্যবস্থাও গ্রহণ করেন নি। কোন প্রজাও ভাবতে পারেন নি, প্লেগ নিয়ন্ত্রণ করতে সচেষ্ট হওয়া রাজার কাজের অংশ। অন্যদিকে রাজার অনুমতিতে নিজের দেশের ভূখণ্ডে বেড়ে ওঠা ধর্ম রাজার মুকুট হারানোর কারণ হতে পারে। এমনকি মুকুটের সাথে কাটা যেতে ঘাড়ের উপর মাথা।

বর্তমানে দেশের ক্রমাগত বেড়ে চলা নারীর প্রতি আঘাত এবং যৌন নির্যাতন দেখেও সরকার চোখ বুজে অন্ধ সেজে থাকতে পারে, কারণ তাতে রাষ্ট্র গঠনের শর্তভঙ্গ হয় না। উদাহরণ স্বরূপ বলা যায়, ফ্রান্সে প্রতি বছর ১০০০ ধর্ষণের অভিযোগ লিপিবদ্ধ হয়। এর বাইরে হাজারো যৌন নির্যাতনের ঘটনা অভিযোগ আকারে উত্থাপিত হয় না। ধর্ষক বা নারী নির্যাতনকারী স্বামী দুজনের কেউই রাষ্ট্রের জন্য কোন ঝুঁকি নয়। কারণ ঐতিহাসিকভাবে দেখা যায়, যৌন নিপীড়ন নির্মূল করে দেবে এমন কোন প্রতিশ্রুতির ভিত্তিতে রাষ্ট্র গঠিত হয় না। কিন্তু হঠাৎ করে ঘটা সন্ত্রাসী হামলা দেশের ভয়াবহ হুমকি। বিগত কয়েক শতকে আধুনিক পশ্চিমা দেশগুলো তাদের ভূখণ্ডে রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলা বিন্দুমাত্র সহ্য করবে না এমন সুসভ্য নিয়ম মেনে ধীরে ধীরে গড়ে উঠেছে একটা করে জাতিরাষ্ট্র।

মধ্যযুগের পুরো সময়টা জুড়ে শুধু রাজনৈতিক অস্থিরতা। প্রকৃতপক্ষে যুদ্ধ হলো রাজনৈতিক জুয়া খেলার এন্ট্রি টিকেট। যার ত্রাস সৃষ্টির ক্ষমতা নেই, তার কোন রাজনৈতিক বক্তব্য নেই। সেই কারণেই প্রভাবশালী পরিবারগুলো নিজেদের লাঠিয়াল বাহিনী পুষত। তেমনি শহর, নগর, গির্জা, মঠের প্রত্যেকের ছিল বিপুল অস্ত্র সম্ভার। কোন মঠের পুরোহিত মারা গেলে পরবর্তীতে কে ধর্মগুরু হবে তা নিয়ে শুরু হতো তুমুল দ্বন্দ্ব। পুরোহিত হওয়ার জন্য মঠের অধ্যক্ষরা দলবাজি করে, স্থানীয় প্রভাবশালী এবং সুবিধাভোগী প্রতিবেশীদের মধ্যে মাঝে মাঝেই অস্ত্রের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

পৃথিবীতে ধর্মীয় সন্ত্রাসবাদের কোন স্থান ছিল না। সন্ত্রাসীদের যদি সম্পদ এবং জানমালের ক্ষতি করার ক্ষমতা না থাকত তাহলে পালটা আক্রমণের দরকার হতো না। যদি ১১৫০ সালে কিছু কতিপয় মুসলিম মৌলবাদী জঙ্গি জেরুজালেমে কিছু নিরপরাধ বেসামরিক মানুষকে হত্যা করে হুমকি দেয় এটা তাদের পবিত্র ভূমি, নাগরিকদের জেরুজালেম ছেড়ে চলে যেতে হবে তাহলে সেটা সন্ত্রাস না হয়ে হাস্যকর দাবিতে পরিণত হতো। যদি সত্যিই রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণ করতে কেউ চায় তাহলে তাকে রাষ্ট্রের কিছু অংশ, সুরক্ষিত সেনানিবাস, দুর্গ দখল করতে হবে। সন্ত্রাসবাদ আমাদের পূর্ব পুরুষের কোন ক্ষতি করতে পারে নি, কারণ তাদেরকে অন্য অনেক বড় সমস্যা সমাধান করতে হতো।

আধুনিক যুগে কেন্দ্র শাসিত দেশগুলো ধীরে ধীরে নিজস্ব ভৌগলিক সীমারেখার মধ্যে রাজনৈতিক সন্ত্রাস কমিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে। গত কয়েক দশকে পশ্চিমা দেশগুলোতে রাজনৈতিক সন্ত্রাস নেই বললেই চলে। এই দেশগুলোর নাগরিকেরা কোনরকম নৃশংস আক্রমণ ছাড়াই শহর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, সংগঠন এমনকি সরকারকেও নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। গণতান্ত্রিক উপায়ে সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত রাজনৈতিক দল সরকার গঠন করছে। মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে হাজার হাজার বিলিয়ন ইউরো, লাখ লাখ প্রশিক্ষিত সৈন্য, শত শত যুদ্ধ জাহাজ, পারমানবিক বোমা বহনে সক্ষম বিমান, নিউক্লিয়ার মিশাইল এক রাজনৈতিক দল সরকারি দলের কাছে হস্তান্তর করে দিচ্ছে। সেখানে একটা বন্দুকের গুলিও খরচ হয় না। মানুষ দ্রুত এই সভ্যতায় মিশে যায় এবং নাগরিক মনে গণতন্ত্রের চর্চা করা তার অধিকার, বাক স্বাধীনতা তার অধিকার। পক্ষান্তরে ধর্মের মুখোশে রাজনৈতিক মতাদর্শের চোরাগোপ্তা সন্ত্রাসী হামলায় কিছু সংখ্যক মানুষ মারা গেলেও রাষ্ট্রের ভিত্তিমূলে আঘাত লাগে। এমতাবস্থায় রাষ্ট্রের পতন ঘটতে পারে। একটা খালি জারের মধ্যে ছোট একটা খুচরো পয়সা নিয়ে ঝাঁকি দিলে জোরালো উৎকট আওয়াজ হয়।

এভাবেই অল্প খরচে সন্ত্রাসবাদ একটা মঞ্চ নাটকের সফল মঞ্চায়ন সম্পন্ন করে। রাষ্ট্র সময়ের পরিক্রমায় রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব তৈরি করে, রাজনৈতিক শূন্যটা সৃষ্টি হয়। শূন্যস্থানে হাঙরের মত ছুটে আসে ক্ষমতা আর রক্তের স্বাদ পাওয়া সন্ত্রাসবাদ, এখানেই বেড়ে ওঠে এবং সন্ত্রাসবাদের সুদূরপ্রসারী প্রভাব বিস্তার করে। সন্ত্রাসবাদকে ফলাও করে প্রচার করে। রাজনৈতিকভাবে স্থিতিশীল দেশে হঠাৎ করে সন্ত্রাসী হামলা হলে জনগণের উপর বিশাল আঘাত। ইরাক বা নাইজেরিয়াতে একশত মানুষ মরার থেকে প্যারিসে যদি ১৭ জন মানুষের মরে যাওয়াটা অনেক বড় খবর। বিশ্ববাসীর দৃষ্টি আকর্ষণ করা যায়। সন্ত্রাসবাদ হলো শাঁখের করাত। সন্ত্রাসবাদ প্রতিরোধ করতে গিয়ে রাষ্ট্র নিজেই আক্রমণের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়। মধ্যযুগে সন্ত্রাসবাদ হয়ত রাজ্যের ভিতর অনেকসময় অপ্রকাশিত থেকে যেত। কিন্তু আধুনিকযুগে সন্ত্রাসবাদ বিষাক্ত সাপের ফনা তুলে দানবীয় শক্তিতে রাষ্ট্র-যন্ত্রের কেন্দ্রে আঘাত করতে পারে।

রাষ্ট্রকে এত বেশি চাপের মুখে থাকতে হয় যে রাষ্ট্রের অভ্যন্তরে রাজনৈতিক সন্ত্রাসবাদকে সহ্য করার মত অবস্থায় থাকে না। দেশের নাগরিকগণ শান্তিপূর্ণ জীবন যাপনে অভ্যস্ত হয়ে ওঠে। কিন্তু সন্ত্রাসের মঞ্চায়ন ঘর পোড়া গরুর অনুভূতি জনগণের মনে সঞ্চারিত করে দেয় এবং তারা সামাজিক বিশৃঙ্খলার আশংকায় জীবন কাটায়। জনগণের মনে হতে থাকে সামাজিক কাঠামো ভেঙে পড়বে। শত শত বছরের রক্তাক্ত লড়াই শেষ করে মানব জাতি কেবল হামাগুড়ি দিয়ে উঠে দাঁড়িয়েছে, পিছনে ফেলে এসেছে মহা বিস্ফোরণ। কিন্তু মানুষ এখনো ভোগ করছে অসীম কালো গহ্বরের শূন্যটা। ধীরে ধীরে গ্রাস করছে সভ্যতা। সন্ত্রাসী হামলা দেখে মনে হয় মানব জাতি আবার পতিত হচ্ছে অন্ধকার সুড়ঙ্গে।

জনগণের মনের আতংক কমাতে এবং সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য রাষ্ট্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করে। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সবথেকে জোরালো জবাব হলো গোয়েন্দা-বাহিনী দিয়ে সন্ত্রাসীদের গোপন কাজকর্মের নজরদারী করা এবং অর্থের যোগান বন্ধ কর দেয়া। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রের এইসব কাজ কখনো টিভির পর্দায় দেখা যায় না। জনগণ যখন ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার ভেঙে পড়া নাটকের মঞ্চায়ন দেখে রাষ্ট্র তখন সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে একইরকম নাটক প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করে। নাটকে দরকার আরও বেশি ধোঁয়া, আরও বেশি আগুন ও ধ্বংস। নীরবে দক্ষতার সাথে সন্ত্রাসবাদ দমন না করে রাষ্ট্র যখন সন্ত্রাসী ধরার জন্য দেশ বিদেশ তছনছ করে ফেলে তখনই সন্ত্রাসীদের মনের আশা পূরণ হয়।

পারমাণবিক শক্তির পথে সন্ত্রাসবাদ:

সন্ত্রাসবাদের কাছ থেকে পারমাণবিক শক্তি এবং জৈবরাসায়নিক অস্ত্রের দূরত্ব কতদূর? অনেকে তো ভবিষ্যতবাণী করেন তেমনটা কী আসলে হতে পারে? পৃথিবী ধ্বংসের ভবিষ্যৎ বাণী সত্যি হয় তাহলে সন্ত্রাসী জঙ্গি সংগঠনগুলো একদিন পারমাণবিক শক্তির সন্ধান পেয়ে যাবে এবং পৃথিবীব্যাপী ধ্বংস যজ্ঞের নাটক শুরু হয়ে যাবে। সন্ত্রাসীদের হাতে পারমাণবিক বোমা চলে আজকের সুসভ্য রাষ্ট্র ব্যবস্থা তখন পুরনো সেকেলে হয়ে যাবে। ধুলোয় মিশে যাবে প্রতিটি নগর, বন্দর, রাষ্ট্র এবং ভৌগলিক সীমারেখা। এই ধ্বংসের মহোৎসব থেকে সন্ত্রাসবাদ নিজেও রক্ষা পাবে না যেমন দেহের সাথে মৃত্যু ঘটে পরজীবীর।

যদি ক্ষুদ্র একটা সন্ত্রাসী জঙ্গি গোষ্ঠী সামান্য কিছু ধর্মোন্মাদকে দিয়ে আস্ত শহর এবং শহরবাসীদের হত্যা করতে পারে, তাহলে রাজনৈতিক সন্ত্রাসমুক্ত একটু মুক্ত বাতাস পৃথিবীতে নিষিদ্ধ হয়ে যাবে। অতিদ্রুত বদলে যাবে দেশের রাজনীতি, সমাজে উগ্রবাদের উত্থান ঘটবে। মানুষ এখনো জানে না ভবিষ্যতের পরিস্থিতি কিভাবে মোকাবেলা করবে। নিশ্চিতভাবেই আগামী দিনের রাষ্ট্র ব্যবস্থায় সন্ত্রাসবাদ দমনের পদ্ধতি ভিন্ন রকম হবে। যদি ২০৫০ সালের মধ্যে সন্ত্রাসী জঙ্গি সংগঠনের হাতে পারমাণবিক বোমা, জৈবরাসায়নিক বোমা চলে আসে তাহলে প্রথম ভুক্তভোগী হবে আজকের পশ্চিমা ভাবধারার অবিশ্বাসী আধুনিক মানুষ। এত সুরক্ষিত জীবন নিয়ে মানুষ কিভাবে এত হুমকি নিয়ে বেঁচে থাকে?

ইংরেজী প্রবন্ধের লিংক-Yuval Noah Harari: the theatre of terror