লিখেছেন: অন্নপূর্ণা দেবী

মোহাম্মদ গোলাম ১৮ ই সেপ্টেম্বরে যে পোষ্ট দিয়েছিলেন, সেখানে স্পষ্ট উল্লেখ ছিল ধর্ষণ করতে গিয়ে একজন ব্যক্তি ক্ষতবিক্ষত লিঙ্গ নিয়ে হাসপাতালে এসেছিলেন। ভিক্টিম মহিলাটি তার যৌনাঙ্গ পুরোপুরি কাটতে পারেনি, কিন্তু হাসপাতালে আসতে দেরী হওয়ায় অধ্যাপক ধর্ষকের লিঙ্গটি মেরামত করতে পারেননি। এখানে উল্লেখ্য যে ‘ধর্ষণ করতে গিয়ে ভিক্টিমের দ্বারা আক্রমণের শিকার পুরুষ’ এই শব্দ গুলোতে এটা স্পষ্ট যে– লোকটি ধর্ষণের সময় ভিক্টিম তথা ধর্ষণের শিকার মহিলাটি পুরুষটির লিঙ্গে আঘাত করে। পোষ্টে গোলাম সারওয়ার বলেছিলেন,

আমি আমার ডাক্তারি জীবনে একটি কেইস পেয়েছিলাম যিনি ধর্ষণ করতে গিয়ে তাঁর যৌনাঙ্গ ক্ষত বিক্ষত করে নিয়ে এসেছিলেন। না, তাঁর পুরুষ যৌনাঙ্গটি সম্পূর্ণ কর্তন করতে পারেননি সেই ভিক্টিম মহিলাটি, কিন্তু হাসপাতালে দেরী করে আসার কারণে আমাদের অধ্যাপক তাঁর অর্ধ-কর্তিত যৌনাঙ্গটি মেরামত করতে পারেননি। কেটে ফেলতে হয়েছিলো তাঁর পুরুষাঙ্গটির একটা উল্লেখযোগ্য অংশ। যারা ডাক্তার নন, তাঁদের জন্যে বলি, পুরুষাঙ্গ কেটে ফেলার চাইতে একজন মানুষের মৃত্যু হওয়াও ভালো। কেননা, এটা শুধুমাত্র পুরুষের যৌনতা হারানো নয়, এটা একটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ শারীরবৃত্তীয় কাজ মুত্র ত্যাগের এর সাথে জড়িত। স্বাভাবিক মুত্র ত্যাগের ব্যাঘাত ঘটলে একজন মানুষ মারাও যেতে পারেন। তাঁর চাইতেও বড় বিষয় হচ্ছে এই ধরনের রিপেয়ার বা মেরামতের পরে রোগীকে প্রায় প্রতিমাসেই হাসপাতালে হাজিরা দিতে হয় তাঁর মুত্রনালীকে সচল রাখার জন্য এবং এই কাজটি তাকে প্রায় সারাজীবন করতে হয়। এযেনো প্রতিমাসে আদালতে হাজিরা দেবার মতো অবস্থা। এর পেছনে টাকা খরচ আছে, শারীরিক ও মানসিক কষ্ট আছে। এটা অমানবিক। এটা ভীষণ অমানবিক। ধর্ষণ একটি ভয়াবহ অপরাধ। এর আইনী বিচার করতে হবে। এর বিরুদ্ধে সাংস্কৃতিক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। কিন্তু ধর্ষক কে এভাবে শাস্তি দেয়া যাবেনা।

এটুকু পড়ে যে কারোর বুঝতে পারার কথা যে, এখানে বলা হয়েছে– ধর্ষণের সময় নারীরা যেন ধর্ষকের লিঙ্গ না কাটে, কারণ লিঙ্গ শরীরের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটা অঙ্গ। এটা হারালে বিভিন্ন ভাবে একজন ব্যক্তিকে হয়রানী হতে হয় (সেটা তিনি পোস্টেই উল্লেখ করেছিলেন।) ওই পোষ্টে অনেকেই আপত্তি তুলেছিল এই বলে যে–ধর্ষণের উদ্দেশ্যে আক্রমণের শিকার নারীকে ধর্ষকের পুরুষাঙ্গ অক্ষত রাখার ব্যাপার যত্নবান হতে হবে–এটা কেমন উপদেশে? আপত্তি জায়গাটা স্রেফ এখানেই ছিল– ধর্ষণের সময় আত্ম রক্ষার্থে কোন নারী ধর্ষকের হাত কাটবে, নাক কাটবে, মাথা কাটবে, নাকি লিঙ্গ কাটবে; এটা ঠিক করে দেওয়ার মত দাবী কেউ রাখতে পারি না। পোষ্টের লিংক এখানে। পরবর্তীতে ১৯’শে সেপ্টেম্বর তিনি আরেকটি ফেইসবুক পোষ্টে বলেছেন– আগের পোষ্টে তিনি শব্দের খেলা খেলেছিলেন, যা বাঙ্গালী পাঠকেরা ধরতে পারেনি। ১৯ তারিখের পোষ্টে তিনি বলেন পূর্বের স্ট্যাটাস’টি তিনি দিয়েছিলেন তাদের জন্যে, যারা মনে করেন ধর্ষকের যৌনাঙ্গ কেটে দেয়াটাই তার কৃতকর্মের শাস্তি হওয়া উচিৎ। যদিও পূর্বের স্ট্যাটাসে একজন ধর্ষক এবং ধর্ষিতার ঘটনা উল্লেখের পর তিনি শাস্তির ব্যাপারটা টেনেছিলেন। উনার ওই পোষ্টের কেইস স্টাডি’টি ধর্ষণের পর জনতার আদালতে দাবী করা শাস্তি নিয়ে ছিল না, ছিল ধর্ষণের সময় আত্ম রক্ষার্থে ধর্ষকের প্রাপ্ত আঘাত নিয়ে। ধরে নিলাম আমাদের বোঝার ভুল। আমাদেরকে উনি হয়তো বোঝাতে পারেননি, অথবা আমরা বুঝতে পারিনি তার আগের পোষ্টে আসলে তিনি কি বলতে চেয়েছিলেন। ১৯ শে সেপ্টম্বরের দ্বিতীয় পোষ্টে মিনিমাম ২৫ জনের মত ব্যক্তি তাদের আপত্তির জায়গাটা কমেন্টে তাকে জানিয়েছিল। এর মধ্যে একজন তার আগের পোষ্টের স্ক্রিনশট দিয়ে বলেছিলেন:

সারওয়ার ভাইয়া এখানে ঠিক কোথায় ধর্ষণের রাষ্ট্রীয় শাস্তি হিশেবে লিঙ্গ কর্তনকে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে- সেই লাইনটা সকলের বুঝার স্বার্থে দাগিয়ে দিন। আমার এখনও দ্বিধা আছে আপনার গতকালের স্ট্যাটাসটির ব্যাপারে।

তিনি আপত্তিকারী কারোর কোন কমেন্টের রিপ্লাই-ই দেননি। যদিও রিপ্লাই করে নিজেকে ক্লিয়ার করা উনার উচিত ছিল বলে আমি মনে করি। অতঃপর ১৯ তারিখেই ওমর ফারুক লুক্স “ধর্ষকের লিঙ্গ কেটে কি ধর্ষণের হার কমানো যায়?” এমন শিরোনামে একটা পোষ্ট দেন। প্রসঙ্গের মোড় ওখান থেকেই ঘুরা শুরু। কারণ গোলাম সাবের পোষ্টে কেউই এমন দাবী তোলেননি–ধর্ষকের শাস্তি লিঙ্গ কর্তন চাই। কোন মেয়েই ব্লেড ছুরি কাঁচি নিয়ে ঘুমায় না অথবা চলাচল করে না, ধর্ষণে সময় আক্রান্ত নারী কিভাবে প্রতিরোধ করে সেটা আমি আপনি কেউ বলতে পারি না। কারণ ধর্ষণের সময় ধর্ষণের শিকার নারী নিজেকে রক্ষা করতে লিঙ্গ কর্তন অথবা খুন যে কোন কিছু করে ফেলতে পারে। তর্কের মূল পয়েন্ট এড়িয়ে গিয়ে ওমর ফারুক লুক্স উন্নত বিশ্বের আইন শিখিয়ে, মানবতা দেখিয়ে বোঝাতে চেয়েছিলেন লিঙ্গ কর্তন কি আদৌ সমাধান হতে পারে কিনা? যেহেতু গোলাম সারওয়ারের পোষ্টে “ধর্ষকের শাস্তি লিঙ্গ কর্তন চাই” এমন দাবী কেউ তোলেনি। আবেগী হয়ে তুললেও তা রাজাকারের শাস্তির মত আবেগী হয়েই তুলেছে, যা তোপের মুখে টিকেনি।

ওমর ফারুক লুক্স উক্ত পোষ্ট দিয়ে একটা কমেন্টে মন্তব্য করেন তা হলো …… গোলাম সারওয়ারের লেখা পড়ে বর্বরদের মন্তব্য দেখে তিনি এই পোষ্ট লিখেছেন। তার মতে যারা গোলাম সারওয়ারের পোষ্টের বিরোধিতা করেছেন অথবা আপত্তি জানিয়েছেন তারা বর্বর শ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত। উনি যদি এমন উদাহরণ দেখাতেন যে–গোলাম সাবের পোষ্ট পড়ে আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার জন্য লোকের পোষ্ট দিয়ে কমেন্ট দিয়ে মন্তব্য করেছে বলে তিনি উক্ত পোস্ট দিয়েছেন, তবে ভাল হতো; আলোচনা ওখানেই সমাপ্ত। পরবর্তীতে উনাকে আবার জিজ্ঞাস করায় বলেন, গোলাম সারওয়ার’কে জুতা মেরে অনেকেই পোস্ট দিচ্ছেন দেখে তিনি তাদেরকে বর্বর বলেছেন। উনার সাথে আমার দীর্ঘ আলোচনা ওই পোস্টেই হয়েছিল। উনার সাথে কথোপকথনের অংশ বিশেষঃ

Sajal Ananda: হেহেহে, আপ্নিও শেষ পর্যন্ত ধর্ষকদের প্রতি সহানুভূতিশীল হয়ে গেলেন।

Omar Farooq Lux: আমি কি ধর্ষককে ২১ বছরের জেল দিতে আপত্তি করেছি?।

Sajal Ananda: সরওয়ার ভাইও আপত্তি করে নি কিন্তু।

Omar Farooq Lux: ওনার লেখাটা পড়ে বর্বরদের প্রতিক্রিয়া দেখেইতো লিখলাম।

Annopurna Debi: আপনার কি মনে হয় উনার লেখায় যারা বিরোধিতা করেছেন তারা সবাই ধর্ষণের শাস্থি মৃত্যুদন্ড অথবা লিঙ্গ কেটে ফেলার পক্ষে? এজন্যই বিরোধীতা করেছে সবাই? অন্যদের বর্বর বলে নিজেরে সভ্য ভাবাটার মধ্যে এলিট এলিট ভাব আছে না কি?

Omar Farooq – Lux Annopurna Debi: সবাই না, অনেকে। কেউ কেউ সারওয়ার ভাইকে তার লেখার জবাবে ওনাকে জুতা মারতে চেয়ে স্ট্যাটাসও দিয়েছে। তারা বর্বর নয়তো কী? আর যারা লেখার জবাব যুক্তি দিয়ে দেয়, তারা এলিট নয়তো কী?

Annopurna – Annopurna Debi: কারা দিয়েছে জুতা মেরে স্ট্যাটাস? লিংকগুলা দেওয়া যাবে কি?

Omar Farooq Lux – Annopurna Debi: সারওয়ার ভাইর পোষ্টের শেয়ারগুলো ক্লিক করুন প্লিজ। আর না পেলে আমি আপনাকে খুঁজে দিচ্ছি।

Omar Farooq Lux – মুহাম্মদ গোলাম সারওয়ার: আমি তখন সার্জারিতে আমার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ট্রেইনিং করছি। বিশ্বাস করুন আর নাই করুন, আমি আমার ডাক্তারি জীবনে একটি কেইস পেয়েছিলাম যিনি ধর্ষণ করতে গিয়ে তাঁর যৌনাঙ্গ..(এখানে তিনি লিংক দেন)

Annopurna Debi: গোলাম সারওয়ারের পোস্টে যে দূর্বল যুক্তি বা উদাহরণ আছে সেটার বিষয়ে আপনার বক্তব্য কি?

Omar Farooq Lux: সেটা ওনার পোষ্টেই আলোচনা করা যৌক্তিক।

Annopurna Debi: কিন্তু আপনি তাকে ডিফেন্ড করছেন মূল তর্কটা এড়িয়ে গিয়ে, প্রতিবাদীদের বর্বর বলে গালি দিয়ে। কিন্তু তারা কেউ ধর্ষকের শাস্তি লিঙ্গ কর্তন চাই–এমন দাবী তুলে পোস্ট দেন নাই। উনি যে উদাহরণ দিয়েছেন, সেটার প্রেক্ষিতেই অনেকে ক্ষেপেছেন। এই ক্ষেপাটা যৌক্তিক কি না, আপনার কী বিবেচনা?

Omar Farooq Lux: আমি কাউকে ডিফেন্ড করিনি। আমি সভ্য গণতান্ত্রিক দেশগুলোর মানবাধিকার আইনকে ডিফেন্ড করেছি। আর যারা লিঙ্গ কর্তনকে সমর্থন করে- তারা বর্বরতাকেই সমর্থন করে।

Annopurna Debi: কিন্তু আপনি বলেছেন — // ওনার লেখাটা পড়ে বর্বরদের প্রতিক্রিয়া দেখেইতো লিখলাম।//

Omar Farooq Lux: ওনার লেখা পড়ে লিখা, আর ওনাকে ডিফেন্ড করা, – দুইটা কি এক কথা হলো?

Annopurna Debi: জুতা পেটা করতে চাওয়া আর ধর্ষকের লিঙ্গ কর্তন করতে চাওয়া কি এক কথা হলো?

Omar Farooq Lux: এক না, একটা বর্বরতা আরেকটা মেধাহীনতা।

Annopurna Debi: তারমানে যারা জুতাপেটা করতে চেয়েছে তারা বর্বর, আর যেসব ধর্ষিতারা ধর্ষণের সময় লিঙ্গ কর্তন করে দেয় তারা মেধাহীন। যেহেতু আমাদের হাতে লিঙ্গ কর্তনের উদাহরণ এই এক ক্ষেত্র ছাড়া অন্য কোথাও নেই! যাই হোক আপনি অন্য বিষয় নিয়ে লিখছেন যে বিষয়ের সাথে একমত। কিন্তু এখানে কেউ লিঙ্গ কাটার আইন চাইছে না, বরং ধর্ষণের সময় আক্রান্ত ব্যক্তি কীভাবে রিএক্ট করবে, সেটা আপনি আগে থেকে ঠিক করে দিতে পারেন কি না–এইটাই হচ্ছে তর্কের বিষয়। এই বিষয়ে আপনার কোনো মতামত পাওয়া যাচ্ছে না।

Omar Farooq Lux: যারা জুতা পেটা করতে চেয়েছে, তারা মেধাহীন। তাদের মাথায় যুক্তির চেয়ে জুতা বেশী।

Annopurna Debi: এইটা কে কইলো? //সবাই না, অনেকে। কেউ কেউ সারওয়ার ভাইকে তার লেখার জবাবে ওনাকে জুতা মারতে চেয়ে স্ট্যাটাসও দিয়েছে। তারা বর্বর নয়তো কী? আর যারা লেখার জবাব যুক্তি দিয়ে দেয়, তারা এলিট নয়তো কী?//

Omar Farooq Lux: এটাও সঠিক। কারন, তারা লিঙ্গ কর্তনকে যৌক্তিক বা বৈধ মনে করেই জুতা মেরেছে।

Annopurna Debi: কেউ যদি ধর্ষণের সময় ধর্ষককে আক্রমন করা ঠিক না, তাকে আঘাত করা ঠিক না, বাগে পেলে তার লিঙ্গ কেটে দেয়া ঠিক না বলে পোস্ট দেয়, তাহলে সেটা পড়ে আপনার প্রতিক্রিয়া’টা কী হবে যদি একটু বলতেন।

Omar Farooq Lux: আত্মরক্ষার জন্য আক্রমন বা আঘাত অবশ্যই করা যাবে। তবে লিঙ্গ কেটে ফেললে সেই নারী নিজে আদালতে ঝামেলায় পড়তে পারেন।

Annopurna Debi: কথা বলছি আপনার কথার সূত্র ধরেই– কারো লেখার প্রতিক্রিয়ায় কেউ জুতাপেটা করতে চাইলে সেইটা বর্বরতা বা মেধাহীনতা–যা’ই বলেন, মানছি। কিন্তু আপনি বলেন–কেউ যদি ধর্ষণের সময় ধর্ষককে আক্রমন করা ঠিক না, ওমনে তাকে আঘাত করা ঠিক না অথবা বাগে পেলে তার লিঙ্গ কেটে দেয়া ঠিক না বলে পোস্ট দেয়, তাহলে সেটা পড়ে আপনার প্রতিক্রিয়াটা কী হবে? আদালতে ঝামেলায় পড়লেও তখন আপনি কার পক্ষে থাকবেন?

Omar Farooq Lux: এখানেই ঝামেলা। আদালতে আমি নিরপেক্ষ থাকবো। আদালতের কাজ হচ্ছে অপরাধীকে তার অপরাধের মাত্রা অনুযায়ী শাস্তি দেয়া। তবে আমি চাইবো অপরাধী উপযুক্ত সাজা পাক। আর ধর্ষিতা ন্যায় বিচার পাক। আর এ বিষয়ে রাষ্ট্রের আইন অনুসরণ করা হোক। আপনার আমার অধিকার নাই কোনো বর্বর দেশের আইন এ ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা, বা প্রয়োগের দাবী তোলা।

Annopurna Debi: আত্মরক্ষার জন্য কোনো মেয়ে যদি কারো লিঙ্গ কেটে দেয় বা খুন করেও ফেলে, তাহলে আপনি কি সেটা সাপোর্ট করবেন, নাকি করবেন না? এবং কেন?

Omar Farooq Lux: এখানে ২ ধরণের ব্যাপার ঘটতে পারে। ১. ধর্ষণের আগেই একজন নারী সম্ভাব্য ধর্ষককে খুন করে ফেললে বা লিঙ্গ কেটে ফেললে তাকে আর ধর্ষক প্রমাণ করা নাও যেতে পারে। সেক্ষেত্রে ঐ নারী নিজেই হত্যা মামলা বা লিঙ্গ কর্তন মামলায় ফেঁসে যেতে পারেন, তার জেল হয়ে যেতে পারে। ২. ধর্ষণের পর ধর্ষককে খুন করা বা লিঙ্গ কর্তনও ঐ নারীর জন্য সাজাযোগ্য অপরাধ বলে বিবেচিত হতে পারে, কারণ মানবাধিকার আইনে ধর্ষনের সাজা আজীবন জেল হতে পারে, কিন্তু মৃত্যুদন্ড বা লিঙ্গ কর্তন নয়। দূর্ভাগ্যবশত এ বিষয়ে আইন নারীর পক্ষে নয়।

Annopurna Debi: সেই জন্যেই আগে জিজ্ঞেস করলাম যে– আপনি কার পক্ষে থাকবেন। আইন তো আয়াত না যে চেঞ্জ হবে না বা করা যাবে না। আইনে ভুল-ভ্রান্তি থাকলে আমরা সে আইনের বিপক্ষেও কথা বলি। যেমন ৫৭ ধারা আমরা মেনে নিই নাই। সে জন্যই এখানে আইনের বিষয়টা তুলি নাই। আইন বাদ দিয়ে আপনার বক্তব্য জানতে চাইছি।

Omar Farooq Lux: আমার পক্ষ নেয়ার সুযোগ নেই। আইন তার নিজের গতিতে চলে। আগেই বলেছি, আদালতে আমি নিরপেক্ষ থাকবো। আদালতের কাজ হচ্ছে অপরাধীকে তার অপরাধের মাত্রা অনুযায়ী শাস্তি দেয়া। তবে আমি চাইবো অপরাধী উপযুক্ত সাজা পাক। আর ধর্ষিতা ন্যায় বিচার পাক। আর এ বিষয়ে রাষ্ট্রের আইন অনুসরণ করা হোক। আপনার আমার অধিকার নাই কোনো বর্বর দেশের আইন এ ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা, বা প্রয়োগের দাবী তোলা। তবে রাষ্ট্রের আইন বাতিল, পরিবর্তন বা পরিমার্জনের জন্য জনগণ অবশ্যই গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে আন্দোলন করতে পারে।

Annopurna Debi: আইন নিজেই তো বর্বর হতে পারে, যেমন ৫৭ ধারা। আচ্ছা ধর্ষণের ক্ষেত্রে আপনি কি ধর্ষিতার পক্ষে থাকবেন? মানে ধর্ষিতা যদি নিজেকে বাঁচাতে কিছু করে ফেলে–

Omar Farooq Lux: আপনি একই প্রশ্ন বার বার করছেন। একজন নারী ধর্ষিতা হয়েছেন নাকি মিথ্যা ধর্ষণের অভিযোগ করছেন,- সেটা আদালতে প্রমাণ করতে হয়। আদালত আইন অনুযায়ী বিচার করে। অপরাধ প্রমাণিত হলে, বা তা দৃশ্যমান হলে আমি অবশ্যই নির্যাতিতের পক্ষে।

Annopurna Debi: কৌশলে প্রশ্ন এড়িয়ে গেলে একই প্রশ্ন বার বার না করে উপায় কী! তবে আপনার উত্তর দেখে মনে হচ্ছে আপনি বার বার এইটাই বলতে চাইছেন যে মেয়েদেরকে ধর্ষিত হয়ে প্রমাণ করতে হবে যে ধর্ষক ধর্ষণ করতে এসেছিল।কিন্তু আমাদের তর্কের শুরুতেই আমরা বলছি যে ধর্ষক ধর্ষণ করতে আসছে, এবং তার পরবর্তী প্রেক্ষাপট… সেখানে আপনি বার বার আইন আদালত দেখাচ্ছেন, বার বার প্রমাণ চাচ্ছেন–এটা কৌশলে প্রশ্নটা এড়িয়ে যাওয়া!

Omar Farooq Lux: এটা শুধু আমার কথা না। বিশ্বের সভ্য-অসভ্য প্রতিটি আদালতের কথা। আইন-আদালত-বিচার এসব কি প্রমাণ ছাড়া চলে নাকি? আদালত কারো মুখের কথায় চলে না। প্রমাণ ছাড়া আদালতে মুখের কথার কোনো দাম নাই। একজন নারী দাবী করলো- এই পুরুষ আমার ঘরে এসেছে আমাকে ধর্ষণ করার জন্য আর আমি ধরে তার লিঙ্গ কেটে দিয়েছি। আদালত প্রমাণ ছাড়া তা মেনে নেবে কেনো? ভালো থাকুন। কাজে যাচ্ছি।

Annopurna Debi: আপনিই কইলেন আইন নারীর পক্ষে না, সেটা দুর্ভাগ্যজনক। আর সেজন্যই আইন সাইডে রাখতে বললাম। আপনার ব্যক্তিগত মতামত জানতে চাইলাম। আর আমরা ধর্ষক শব্দটা ব্যবহার করি সেই সব ব্যক্তির ক্ষেত্রে যারা ধর্ষক, তাদের কথা কথা বিবেচনায় রেখেই কথা হচ্ছিল। আদালতের প্রমাণের অপেক্ষায় রইছে না। ওকে পরে কথা হবে। আলোচনার লিংক এখানে অতঃপর তার স্ট্যাটাসে আমি আইন দেখিয়ে তার মতামত চেয়ে এই কমেন্ট করেছিলাম। যেখানে স্পষ্ট উল্লেখ ছিল ধর্ষণের উদ্দেশ্যে আক্রমণ করলে ভিক্টিম যদি ধর্ষককে মেরেও ফেলে সেখানে ধর্ষিতা পূর্ণ সুরক্ষা পাবে।

পরদিন একই প্রসঙ্গে Md Sazzadul Haque এর দেওয়া পোষ্টে আমার সাথে তার কতোপকথন তিনি ডিলিট দিয়েছেন। যেখানে তিনি তার নিজের দেওয়া কমেন্টেই তার প্রশ্নের উত্তর মিলিয়ে দেই। তার প্রশ্ন ছিল: //একজন পুরুষের লিঙ্গ কাটার পর নারী আদালতে ধর্ষণের প্রমাণ দিতে না পারলে সেটা তখন কি?// যা তিনি তার পোষ্টেও উল্লেখ করেছেন। আমি তাঁকে উত্তর দিয়েছিলাম তার করা একটা কমেন্ট দিয়েই: //…. সেটা আদালতকে জিজ্ঞাস করতে হবে। কারণ আদালত প্রমাণ ছাড়া বিচার করে না। প্রমাণ না থাকলে খারিজ করে দেয়। এই নিয়ম পরিবর্তন করার ক্ষমতা আমার নাই।// সাথে সংযুক্ত করেছিলাম: //…আদালত যদি নারীটির অপরাধ প্রমাণ করে থাকে যে অন্যায়ভাবে পুরুষটির লিংক কর্তন করেছে, সেটার বিচার আদালত, জেল জরিমানা অথবা আদালত যা মনে করবে তাই করবে//।

যেহেতু আদালত সব অপরাধ প্রমাণ করার দায়িত্ব রাখে–যদি কোন মেয়ে অন্যায়ভাবে লিঙ্গ কাটে সেটা আদালতে বিচারের উপর ন্যায্য, এরপর আর কোন তর্ক থাকার কথা না। তবুও রয়ে যায়। যেহেতু আমরা তর্কে যুক্তিতে আস্তিক নাস্তিক যে-ই হই না কেন, হারতে রাজী না, তাই পাল্টা পোষ্ট দেওয়া চললো। এর এক পর্যায়ে লুক্স ভাই বলেন //– ধর্ষকের লিঙ্গ কোন ধর্ষিতা কাটতে পারেনি। কারণ, ধর্ষকের লিঙ্গ কাটা সম্ভব না। কারণ নাকি ধর্ষক ধর্ষণের সময় তার লিঙ্গ ধর্ষিতার হাতে তুলে দেয় না।//

উনার এই কমেন্ট গোলাম সারওয়ারের পোষ্টকে মিথ্যা প্রমাণ করে দেয়। কারণ গোলাম সাব লিখেছিলেন ধর্ষণ করতে গিয়ে ভিক্টিমের হাতে লিঙ্গ কর্তিত হয়েছিল। লুক্সের কমেন্ট অনুসারে ধরে নিচ্ছি গোলাম সারওয়ার একটা মিথ্যে উদাহরণ টেনেছেন। কারণ লুক্সের মতে ধর্ষকের লিঙ্গ কোন ধর্ষিতা কাটতে পারেনি। কারণ ধর্ষকের লিঙ্গ কাটা সম্ভব না। যার দরুন গোলাম সারওয়ারের প্রথম পোষ্ট সার্জারিতে পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ট্রেনিং করার সময়ের ঘটনাটা— একটা মিথ্যা ঘটনা বলে প্রতিপন্ন হয়ে যায়। এখানেই আলোচনা শেষ করে দেয়া যায়, এবং দেয়া উচিত ছিল। তবুও কিছু কথা থেকে যায়। পুরুষেরা তাদের স্বার্থ রক্ষার ক্ষেত্রে কালে কালে সবসময় একজোট। গোলাম সারওয়ারকে ডিফেন্ড করতে গিয়ে লুক্স এমন ভাবে গোলাম সারওয়ারকেই মিথ্যা প্রতিপন্ন করবেন, সেটা হয়তো তিনি ভাবতে পারেননি। তাই হয়তো কৌশলেই কমেন্ট গুলো মুছে দেন। নারী তার আত্ম-রক্ষার্থে পুরুষের ধড় ফেলে দিলেও ঠিক আছে, কিন্তু লিঙ্গে আঘাত করা যাবে না। এতে করে পুরুষের পৌরুষে আঘাত লাগে। এখন প্রশ্ন হলো–ধর্ষণ মূলত হয় নারীর যোনী অর্থাৎ লিঙ্গে আঘাত করে। নারীর লিঙ্গে আঘাত করে পুরুষ যখন ধর্ষণ করে, তখন কি নারীর নারীত্ব বাজারে সস্তা দরে বিক্রি হয়? একটা বিষয় আমাদের খেয়াল রাখা জরুরী পুরুষ লিঙ্গের জোর খাটায় নারীর লিঙ্গের উপর, সেখানে কোন নারী আর সকল আঘাতের পাশাপাশি লিঙ্গে আঘাতের অধিকার রাখে। ধর্ষণ একটা মামার বাড়ীর আবদার নয় যে পুরুষ যেভাবে চাইবে সেভাবেই করতে হবে, আত্মরক্ষাও ওইভাবেই করতে হবে। যেহেতু পুরুষের লিঙ্গটা পুরুষের জন্য এতোই গুরুত্বপূর্ণ, তাই আমিও নারীর লিঙ্গকে গুরুত্ব দিয়ে লুক্সের কমেন্টে কথাই নারীর ক্ষেত্রে ব্যবহার করে ট্রলের মত করে একটা পোস্ট বানিয়েছিলাম। তার বক্তব্য ছিল এরকম:

// নারীর মূল উদ্দেশ্য হওয়া উচিত ধর্ষকের হাত থেকে আত্মরক্ষা করা। তাতে ধর্ষকের যেকোনো অঙ্গ কাটা পড়ুক। কিন্তু নারীর মূল উদ্দেশ্য যদি হয় ধর্ষকের লিঙ্গকর্তন করা, তাহলে সেটা আক্রান্ত নারীর জন্য বিপদজনক হতে পারে।//

//নারীরা আত্মরক্ষার নামে ব্লেড দিয়ে পুরুষের লিঙ্গ কাটার সংস্কৃতি চালু হয়ে গেলে এর অপব্যবহার হবার সুযোগ আছে।//

আমি জাস্ট পুরুষের জায়গায় নারী বসিয়ে তার বক্তব্যের অনুরূপ কথাগুলো নারীর জন্য হয়ে প্রকাশ করেছিলাম। উনি কথাগুলা যদি মেয়েদের ক্ষেত্রে বলতো তবে এরকম শোনাতো। আমি শুধু এই বিষয়টাই চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়েছিলাম মাত্র। যা অনেকেই প্রথমবার বুঝতে পারেনি। না বুঝেই অনেকেই প্রতিবাদ ফেক স্ক্রিনশট বলে পোস্ট দিয়ে প্রতিবাদ করেছিল। পরবর্তীতে একই স্ক্রিনশট এডিট করে তার মুখের কথার সাথে মিলিয়ে স্ক্রিনশট পোস্ট দিলাম। প্রতিবাদকারী অনেক জনকেই রিকুয়েস্ট করেছিলাম দ্বিতীয় ফেক স্ক্রিনশট’টাও শেয়ার করার জন্য। কেউ করেনি। কারণ বন্ধু হয়ে বন্ধুর নেতিবাক্য নিজের চোখে এমন খোলাখুলি ভাবে দেখাটা কষ্টকর ছিল বলেই হয়তো দেয়নি।

বিষয়টা আপনাদের কাছে খুব হাস্যকর লাগছে? ফেইক লাগছে? আসলে লুক্সের কথা গুলো একজনের নারীর ক্ষেত্রে এপ্লাই করলে এরকমই শোনাতো। আমি তার কথা গুলো তার মুখেই নারীর জন্য বলালাম। ঠিক এই ভাবেই ধর্ষকের লিঙ্গ রক্ষার্থে লুক্সের বলা কথা গুলোও একজন নারীর কাছে এমনি নোংরা লাগে শুনতে। লিঙ্গ কাটার সংস্কৃতিতে ভয়ে অণ্ডকোষ কেঁপে উঠে, আর নারী লিঙ্গ কি নদীর জলে ভেসে আসে? ধর্ষণ ব্যাপারটা আমাদের সংস্কৃতি অংশ হয়ে গেছে, নারীর লিঙ্গে আঘাত আক্রমণ করার সংস্কৃতিটা এতোটাই সহজ হয়ে গেছে যে–কেউ যদি বলে ধর্ষণের সময় পুরুষাঙ্গে আঘাত অমানবিক– সেটা আমাদের কাছে অতি সহজ লাগে। আর কোন নারী যদি বলে ধর্ষণের সময় আর যাই করেন–নারীর যোনী স্পর্শ করতে পারবেন না। বিষয়টা খুব হাস্যকর খুব। কারণ ধর্ষক পুরুষেরা যুগে যুগে তাদের ধর্ষনাংগের মূল্য এভাবেই বাড়িয়ে রেখেছে যে–যে কোন সময় নারীর লিঙ্গেই যা ইচ্ছা তাই ভাবে আঘাত করে পার পেয়ে যাবে। বিপরীতে এক দুইজন নারী সেই পুরুষাঙ্গে আঘাত করলে লিঙ্গ বাঁচাও বলে রব উঠবে। সেই তবলায় তাল দিতে থাকে আর সব লিঙ্গ রক্ষাকারী পুরুষেরা। এতোদিনের ক্যাচালে এটাই প্রামানিত হলো। দিনশেষে আমার মত প্রতিবাদকারী নারীরা মুর্খ, জ্ঞানবুদ্ধীহীন হাসির পাত্র। কারণ এমনে নগ্নভাবে ট্রল করে নারীর লিঙ্গে আঘাতের প্রতিবাদ পাগল না হলে কেউ করে? আবারো গোলাম সারওয়ার প্রসঙ্গঃ গোলাম সারওয়ার ভাই পরবর্তীতে ২৩ শে সেপ্টেম্বর একটা পোস্ট দেন–

//শুনতে পেলাম, সমস্যাটি আমার “এই পোস্ট” নিয়ে নয়, বরং আপার জন্মদিনের পোস্টটি থেকেই শুরু। সেই পোষ্ট এ যথেষ্ট নতজানু শ্রদ্ধা জানাইনি। এটা অপরাধ বটে, কিন্তু কি করবো … এতোটা নতজানু হতে শিখিনি, দরকারও হয়নি কখনও। কিশোর বেলার পর থেকে ঈশ্বরের কাছেও নতজানু হইনি .//

পোষ্টের লিংক এখানে যেখানে তিনি বলেন তার পোস্টের বিপরীতে যারা প্রতিবাদ করেছিল তারা তসলিমা নাসরিনের অনুসারী। তসলিমা নাসরিন কে উদ্দেশ্য করে তিনি কবে কোন কস্মিনকালে পোস্ট দিয়েছিলেন, তার প্রতিশোধ হিসেবে নারীবাদীরা তার পেছনে লেগেছে। গোলাম সারওয়ারের ১৮ তারিখের পোষ্টে প্রতিবাদ করে কমেন্ট করেছে- ধরে নিচ্ছি অন্তত ৫০ জন লোক (যেহেতু আমি গুনি নাই)। আমার মত যারা যারা লিস্টে নাই তারা কমেন্ট করতে না পেরে আলাদা পোষ্টে প্রতিবাদ করেছে। তাদের সংখ্যাও ২০/৩০ জনের কম হবে না। উল্লেখ্য যে পোষ্টে তসলিমা নাসরিনের কোন প্রসঙ্গ যে ছিল না সেটা উনার পোষ্ট পড়ে আপনারা আগেই জেনেছেন। প্রতিবাদকারী’রাও তসলিমা পক্ষের একটিভ কোন সদস্য নন। যারা ঘোর তসলিমা নাসরিনের বিরোধী, তাদেরকেও গোলাম সাবের উক্ত পোষ্টের বিরুদ্ধে লিখতে দেখেছি। তবুও তিনি কোথা থেকে তসলিমা নাসরিনকে টেনে এনে বিষয়টাকে ঘোলাটে করতে চাইলেন, কেন চাইলেন, এসব আমার বোধগম্য নয়। তসলিমা নাসরিনের নাম নিলে হয়তো কিছু পাপ কাটা যায়, তা না হলে আসমান ফেড়ে তাকে উপর থেকে এই প্রসঙ্গে টেনে এনে, মূল বিতর্কে প্রসঙ্গ অন্য দিকে ঘুরানোর সুচতুর চেষ্টা করার আর কোন ভিন্ন কারণ দেখি না।

মুক্তমনা ব্লগে গোলাম সারওয়ারের মিথ্যা প্রসঙ্গ:

ব্যবচ্ছেদ করলে অনেক কিছুই করা যায়, গোলাম সারওয়ারের মুক্তমনা ব্লগে লেখা শিরোনাম থেকে শুরু করে লেখাটার শেষ অব্দি। এখানে আরেকজন ফেসবুকার Bitter Shush এর লেখা একটা পোষ্ট হুবহু তুলে ধরছি। কারণ আমি লিখলেও এই পয়েন্টগুলো আসতো। //#গোলাম সরওয়ারের মুক্তমনা ব্লগে লেখা ১০১১ টা মিথ্যা(১০ টা ১১ টা,১ হাজার ১১ টা না কিন্তু) এবং তার ভুল ধামাচাপা দেবার চেষ্টার কথাগুলো: একজন ফেইসবুক সেলিব্রেটির ভুল যেহেতু কখনও হতেই পারেনা সেহেতু ব্লগ লিখে নিজেকে সত্য কেন প্রমাণ করবোনা। গোলাম সারওয়ার তার ইগো জনিত সমস্যার সমাধান হিসেবে তখন মুক্তমনা ব্লগই একমাত্র পন্থা হিসেবে দেখলো। সবার আগে বলে রাখি তার লেখা স্ট্যাটাসগুলোর ছবি নিচে দিলাম। মুক্তমনা’য় ওর ব্লগটা প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত অনেকবার পড়ি এবং পড়ার পর খুবই অবাক হই। মানুষ যে এতোটা মিথ্যুক হতে পারে তা তার এই লেখাটা না পড়লে বিশ্বাস হবেনা। তার ব্লগে লেখা যেই মিথ্যাগুলো সেগুলো দেওয়া হলো:

১.”সাম্প্রতিক সময়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে, ব্লগে, ধর্ষকের শাস্তি কি হওয়া উচিৎ সে প্রসঙ্গ নিয়ে এক দীর্ঘ, অনাকাঙ্খিত বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে”-কিন্তু বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে নারীবাদীদের সাথে তার ধর্ষণের সময় আত্মরক্ষা হিসেবে ধর্ষকের লিঙ্গ কর্তন নিয়ে, ধর্ষকের শাস্তি নিয়ে কখনই না।

২.”সাম্প্রতিক সময়ে ধর্ষকের শাস্তি হিসাবে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে অপরাধীর “লিঙ্গ কর্তনের” ঘটনা ঘটেছে।এই লিঙ্গ কর্তনের ঘটনাগুলো কখনও ঘটেছে আক্রান্ত নারীর আত্মরক্ষার অংশ হিসাবে আবার উত্তেজিত জনতা “মব জাস্টিস” বা জনতার আদালত ধরনের উদ্যোগে ধর্ষণকারীকে আয়োজন করে প্রকাশ্যে হিংস্রভাবে তাঁর অঙ্গহানি ঘটিয়েছে। কখনও জনতা নিজেই তা করেছে আবার কখনোবা মাংসের দোকানের কসাইকে দিয়ে ধর্ষকের লিঙ্গ কর্তন করানো হয়েছে।”-প্রথম লাইনটা একটা ডাহা মিথ্যা কথা।বাংলাদেশে ধর্ষণের শাস্তি হিসেবে লিঙ্গ কর্তনের ঘটনা ঘটেছে??? আমি শুধু একটা অনলাইন পত্রিকাতেই এই ঘটনা দেখেছি যে আত্মরক্ষা হিসেবে একটা মেয়ে ধর্ষকের লিঙ্গ কর্তন করে।তাও সেটা অনলাইন পত্রিকায়।কোন খবরের কাগজে এখনও এমনকিছু দেখিনি।জনতার আদালতেও এই কাহিনী জীবনেও শুনিনি।সে বাংলাদেশে এই কাহিনীগুলো কোথায় পেলো তা আমারও জানতে ইচ্ছা হয়।মাংসের দোকানের কসাইয়ের যে কথাটা লিখেছেন সেটা ছিল ইন্ডিয়ার একটি ঘটনা,সেটা তিনি বাংরাদেশের কাহিনীর সাথে ছিপকাইয়া দিছেন।

৩.”অনেকেই দাবী করেছেন ধর্ষকের অপরাধের শাস্তি “লিঙ্গ কর্তন” হওয়া উচিৎ। যারা দাবী করেননি তাঁদের অনেকেই বাহবা দিয়েছে কিংবা নিদেনপক্ষে ধর্ষকের “লিঙ্গ” নিয়ে হাসি ঠাট্টায় মেতে উঠেছেন। “-তারযেই স্ট্যাটাস থেকে নারীবাদীদের সাথে তার বিতর্ক শুরু হয় সেসব নারীবাদীরা কেউই ধর্ষকের শাস্তি হিসেবে লিঙ্গ কর্তন চায়নি এমনকি বাহবাও দেয়নি।পুরোই একটা মিথ্যা কথা।

৪.”আমার মূল বক্তব্যটি ছিলো, ধর্ষকের অপরাধের শাস্তি হিসাবে “লিঙ্গ কর্তন” অমানবিক, মধ্যযুগীয় যা আমাদের আধুনিক সময়ের মানবাধিকারের মূল্যবোধের পরিপন্থী। ধর্ষণ একটি ভয়াবহ অপরাধ সেটা আমি উল্লেখ করেছি এবং উল্লেখ করেছি ধর্ষণের কঠোর শাস্তি হতে হবে প্রচলিত আইনের মাধ্যমে।”-এবার আসি তার পোষ্টটাতে।পোষ্টটাতে কোথাও সে ধর্ষণের শাস্তির কথা উল্লেখ করে নাই,বরং একজন ধর্ষক ধর্ষণ করতে গিয়ে লিঙ্গ ক্ষতবিক্ষত করে এনেছে ওই কথা বলে সে বলেছে ‘ এটা একটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ শারীরবৃত্তীয় কাজ মুত্র ত্যাগের এর সাথে জড়িত। স্বাভাবিক মুত্র ত্যাগের ব্যাঘাত ঘটলে একজন মানুষ মারাও যেতে পারেন। তাঁর চাইতেও বড় বিষয় হচ্ছে এই ধরনের রিপেয়ার বা মেরামতের পরে রোগীকে প্রায় প্রতিমাসেই হাসপাতালে হাজিরা দিতে হয় তাঁর মুত্রনালীকে সচল রাখার জন্য এবং এই কাজটি তাকে প্রায় সারাজীবন করতে হয়। এযেনো প্রতিমাসে আদালতে হাজিরা দেবার মতো অবস্থা। এর পেছনে টাকা খরচ আছে, শারীরিক ও মানসিক কষ্ট আছে। এটা অমানবিক। এটা ভীষণ অমানবিক। ধর্ষণ একটি ভয়াবহ অপরাধ। এর আইনী বিচার করতে হবে। এর বিরুদ্ধে সাংস্কৃতিক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। কিন্তু ধর্ষক কে এভাবে শাস্তি দেয়া যাবেনা।’এখানে সে ধর্ষণ করার সময় ধর্ষিতার লিঙ্গকর্তনের কাহিনী দিয়ে বলেছে ধর্ষকের শাস্তি এভাবে দেয়া যাবেনা।যেকোন সুস্থমস্তিষ্কের মানুষই তার এই লেখা দেখে এটা বুঝে ফেলবে।

৫.”আমার লেখাটিতে আক্রান্ত নারিটির আত্মরক্ষার অধিকার বিষয়ে কোনও মন্তব্য ছিলোনা।”-‘তাঁর পুরুষ যৌনাঙ্গটি সম্পূর্ণ কর্তন করতে পারেননি সেই ভিক্টিম মহিলাটি, কিন্তু হাসপাতালে দেরী করে আসার কারণে আমাদের অধ্যাপক তাঁর অর্ধকর্তিত যৌনাঙ্গটি মেরামত করতে পারেননি। কেটে ফেলতে হয়েছিলো তাঁর পুরুষাঙ্গটির একটা উল্লেখযোগ্য অংশ। স্বাভাবিক মুত্র ত্যাগের ব্যাঘাত ঘটলে একজন মানুষ মারাও যেতে পারেন। তাঁর চাইতেও বড় বিষয় হচ্ছে এই ধরনের রিপেয়ার বা মেরামতের পরে রোগীকে প্রায় প্রতিমাসেই হাসপাতালে হাজিরা দিতে হয় তাঁর মুত্রনালীকে সচল রাখার জন্য এবং এই কাজটি তাকে প্রায় সারাজীবন করতে হয়। এযেনো প্রতিমাসে আদালতে হাজিরা দেবার মতো অবস্থা। এর পেছনে টাকা খরচ আছে, শারীরিক ও মানসিক কষ্ট আছে। এটা অমানবিক।’-এই কথাগুলো কে কইছিলো ভাইজান????

৬.”আমি উল্লেখ করেছি, একজন আক্রান্ত নারী তার নিজেকে রক্ষা করার জন্যে যেকোনো কিছু করতে পারেন। এমন কি তিনি খুন ও করে ফেলতে পারেন। সেই অধিকার তার আছে, প্রতিটি মানুষের আছে। আমি দ্বিতীয় পোষ্টটিতে স্পষ্ট করে উল্লেখ করেছি, প্রসঙ্গটি হচ্ছে তাঁদের জন্যে যারা ধর্ষণের শাস্তি হিসাবে “লিঙ্গ কর্তন” দাবী করেন। “-হ্যা দ্বিতীয় পোষ্টটিতে সে এটা বলেছে,কিন্তু প্রথম পোষ্টযে ভুল ছিল সেটা বলে নয়।প্রথম পোষ্টটি যে আমরা ভুল বুঝেছি সেটা বলার জন্য।প্রথম পোষ্টটিতে যখন তাকে সবাই উত্তর দেয় তখন সে সেটা ধামাচাপা দেবার জন্য দ্বিতীয় পোষ্টটি দেয় এবং এখানে পাঠকদের বোঝার ভুল তুলে ধরেন।নিজের ভুল স্বীকার করতে তার ইগোতে বাধে তাই।

৭.”আমাদের নারীবাদী বন্ধুরা, আমার ব্যাখ্যাগুলোকে পড়া বা বোঝা তো দূরের কথা তাঁরা সম্ভবত সেসব চোখ দিয়েও উল্টে দেখেননি ।আমার লেখাগুলো পড়া ও আলোচনা বা বিতর্কে অংশ নেয়ার বদলে তাঁরা আমাকে এবং আরো বেশ কজন অনলাইন এক্টিভিস্ট, ব্লগারকে ব্যক্তিগতভাবে আক্রমণ করা শুরু করলেন। অশ্লীল ভাষায় আক্রমণ করা হয়েছে, ট্রল করা হয়েছে, নাম বিকৃত করে হাসি ঠাট্টা করা হয়েছে। “-আরেকটি বড় মিথ্যা।তার ওই পোষ্টের এবং দ্বিতীয় পোষ্টটিতে নারীবাদীরা সব তার অনেক পাঠক মন্তব্য করেছিল কিন্তু উত্তর দেওয়াতো দূরের কথা সে সম্পূরণ এড়িয়ে যায়।এখনও কেউ ওই পোষ্টে গিয়ে দেখতে পারেন কোন কমেন্টের রিপ্লাই ই সে দেয়নি।আর নিজের ভুল স্বীকার করার বদলে ছাগলামি করা যখন অতিরিক্ত পর্যায়ে চলে যায় তখন তা নিয়ে ট্রল আক্রমণ অবশ্যই চলবে।

৮.”হয়তো আমার লেখাটির গড়ন জটিল ছিলো, দুর্বোধ্য ছিলো। তাই সেই সকল পাঠকের জন্যে ছোটবেলায় পড়া সীতানাথ বসাকের আদর্শ লিপির চাইতেও সহজ ভাষায় লিখছি। অনেকটা আজকালকার কাস্টোমার সার্ভিস ওয়েবপেইজগুলোতে যেমন “ফ্রিকোয়েন্টলি আসকড কোয়েশ্চেন” বিভাগ থাকে, ঠিক সেই রকমের করে। “-এখানে আবারও আভাস পাওয়া ভুল পাঠকের ছিল ভুল তার না।

৯.”আত্মরক্ষার জন্যে একজন নারী/মানুষ যেকোনো কিছু করতে পারেন। তা মুন্ডু কর্তন বা লিঙ্গ কর্তন। এটাও বেশীর ভাগ দেশে আইনী অধিকারের মধ্যে পড়ে। আমার জানা নেই, এমনভাবে কোথাও লেখা আছে কিনা কি কর্তন করা যাবে আর কি কর্তন করা যাবেনা। ধর্ষণ কোনও সাধারণ শারীরিক আক্রমণ নয়, তাই এ থেকে আত্মরক্ষার জন্যে একজন নারী যেকোনো কিছুই করতে পারেন । সেখানে লিঙ্গ কর্তন বা মুন্ডু কর্তনের বিষয়টি অপ্রাসঙ্গিক।”-কোনও নারীবাদী এ কথা বলেনি যে লিঙ্গকর্তন করতেই হবে ধর্ষণের সময়।গোলাম সরওয়ার যে বলেছে লিঙ্গ কর্তন করা যাবেনা এটা অমানবিক সেটার ব্যাপারেই সবাই কথা বলেছে এবং প্রতিবাদ করেছে।আমাকে কেউ আক্রমণ করতে আসলে আমি অবশ্যই তার দুর্বল জায়গাটিতে আঘাত করার কথা চিন্তা করবো আর সেটা অবশ্যই পুরুষের লিঙ্গ।

১০.গোলাম সাহেব যখন তার প্রথম পোষ্টটির বিতর্ক সামলাতে না পারলো তখন দ্বিতীয় পোষ্টটিতে পাঠকের ভুল ধরে বললেন আমি ধর্ষকের শাস্তি হিসেবে লিঙ্ক কর্তনের বিরুদ্ধে বলেছি।এই কথাটা প্রমাণ করার জন্য সে ব্লগে দুটো ব্লগের লেখা দেখিয়েছে যেখানে একজন মেয়ে এবং একজন মাহাবুব নামের লোকের ব্লগের লেখা সে দেখিয়েছে।এই ব্লগ দুটো ছিল একটা দুইবছর আগের একটা একবছর আগেকার। তখন কিন্তু সে এগুলো নিয়ে কিছুই বলেনি।ঠিক দুইবছর পরেই তার ওই দুটো ব্লগ নিয়ে লিখতে ইচ্ছা করলো কিন্তু ব্লগ দুটোর উল্লেখ না করে।আসলে সে এই ব্লগ দুটো গুগলে সার্চ দিয়ে বের করেছেন তার এই কথাটা প্রমাণ করার জন্য। আপনারাও গুগলে সার্চ দিয়ে এই ব্লগ দুটো সবার আগে পাবেন। এই ব্লগ দুটোর পক্ষে কথা বলছি না,কিন্তু গোলাম সাহেব তার ভুল হয়নি এটা প্রমাণ করার জন্যই এই ব্লগ দুটো ব্যবহার করেছেন।এবার বলি ব্লগ দুটোর সম্পর্কে।নিউজ ২৪ এর যে ব্লগটি উনি দেখিয়েছেন সেই লেখক(মাহাবুব)কে আমার খুবই ফাল্তু মনে হয়। কারণ সে ওই ব্লগে কমেন্টে অনেকজনকে বলেছে’মেয়েদের পোশাকের পরিবর্তন আনাটা একটা সমাধান হতে পারে’।যাদের মুখ থেকে ধর্ষণ রোধের সমাধান মেয়েদের পোশাকের কথা বের হয় তেমন একজন মানুষের ব্লগ তুলে আনা কতটা হাস্যকর।আর দ্বিতীয় মহিলার ব্লগটা এমন ছিল”বর্তমানে মনে হয় নারী নির্যাতনের উৎসব চলছে দেশে। গত এক মাস ধরে এবং আজ সকাল পর্যন্ত ধর্ষণ সংক্রান্ত ঘটনা গুলো হিসেব করলে দেখা যায় খুব দ্রুত হারে বাড়ছে এই ক্রাইম। আজ সকালে দেখলাম রংপুরের নার্সিং এর দুই ছাত্রী পাশের ছাত্রাবাসে আরেক ছাত্রের কাছ থেকে নোট আনতে গিয়ে আরো তিন ছাত্র কর্তৃক ধর্ষণ এর শিকার হয়েছেন। আমি প্রচন্ড রাগ এবং ক্ষোভ নিয়ে বলছি ,সুস্থ মাথায় বলছি , খবরদার কেউ এটা বলবেন না যে মেয়ে গুলো কেন ছেলেদের হোস্টেলে গেল । আমি যখন ঢাকা ইউনিভার্সিটিতে পড়তাম সাল টা ছিল ১৯৯১ ।জিওগ্রাফির ফাইনাল তখন। আমাদের ফিল্ড ওয়ার্ক এর জন্য ডিপার্টমেন্ট থেকে চারটা ছেলে চারটা মেয়ে মিলিয়ে গ্রূপ বানিয়ে দিয়েছিল টিচাররা। ফিল্ড ওয়ার্ক শেষে সেই রিপোর্ট তৈরির জন্য আমরা মেয়েরা লাইব্রেরিতে জায়গা না পেয়ে সেই সহপাঠী ছেলেদের হল এ পুরো একটা সপ্তাহ সকাল দশটা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত ওদের রুমে pic বসে কাজ করেছি । যে সহপাঠীর রুমে আমরা কাজ করতাম আমার এখনো মনে আছে যে ওর অন্য রুম মেট বা পাশের রুমের ছেলে দের সহায়তার কথা। আপ্যায়নের কথা। কত মানবিক , বন্ধুসুলভ এবং সিকিউরড ছিল সে পরিবেশ। পাপ মানুষের মনে । পাপের শাস্তি তাই পাওয়া উচিত। প্রতিটি ধর্ষকের চরম শাস্তি তার লিঙ্গ কর্তনের মাধ্যমেই হওয়া উচিত । কারণ এই আলগা মাংস পিন্ডটা সে সামলাতে পারেনা । এটাই হবে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি ।একটা মেয়ে বাচ্চা হউক আর যে বয়সের হউক এই ধরণের নির্যাতনের শিকার হলে তার এবং তার পরিবারের মানসিক অবস্থা টা কি হয় একবার ভাবে দেখুন নিজেকে ওই জায়গাটায় প্রতিস্থাপন করে । মনে হয় আমরা করিনা । যদি করতাম , ভাবতাম তাহলে সে মেয়েটি এবং তার পরিবার ঘটনার পরবর্তী সময়ে লোকলজ্জার ভয়ে মুখ লুকিয়ে চলতেন না বা মানুষের ধিক্কার শুনতে হতো না । অথচ কোনো দোষ না করে ই তারা অন্যের দোষে এক অসহনীয় জিবমৃত দিনযাপন করেন । চলুন আমরা আমাদের খাসলত গুলা বদলাই সেই সাথে ওই হারাজাদাদের লিঙ্গ কর্তনের মাধ্যমে শাস্তি নিশ্চিত করি। আমরা যে মানুষ তার পরিচয় দেই।” লেখাটা কোন ব্লগ ছিলনা। এটা ফেইসবুকের একটা স্ট্যাটাস।মহিলাটির লেখা যেই ব্লগে দেওয়া হয় ব্লগটির একটি বিভাগের কাজই ফেইসবুকে মানুষদের স্ট্যাটাস নিয়ে প্রকাশ করা। “ফেইসবুক এর গরম আড্ডা চালাতে পারেন প্রাণের বাংলার পাতায়। আমারা তো চাই আপনারা সকাল সন্ধ্যা তুমুল তর্কে ভরিয়ে তুলুন আমাদের ফেইসবুক বিভাগ । আমারা এই বিভাগে ফেইসবুক এ প্রকাশিত বিভিন্ন আলোচিত পোস্ট শেয়ার করবো । প্রকাশ করতে পারেন আপনাদের তীব্র প্রতিক্রিয়া ।” > গোলাম সরওয়ারের প্রথম পোষ্টটি যখন সে দেয় তখন সবাই এটাই বানাতে চেয়েছিল যে ‘নারীবাদীরা নাকি ধর্ষণের শাস্তি লিঙ্গ কর্তন চায়’ এই কথা বলে পুরো টপিকটাই অন্যদিকে ঘোরানোর চেষ্টা করানো হয়েছে।আরও বলা হয়েছে নারীবাদীরা নাকি মানবাধিকার বলতে কিছু বোঝেনা।যেখানে তাদের বিতর্কের বিষয় ছিল পুরোই অন্য একটা টপিক।যখন গোলাম সরওয়ার কে বলা হলো যে কোন নারীবাদী ধর্ষকের শাস্তি হিসেবে লিঙ্গ কর্তন চেয়েছে দেখান,কবি তখন নীরব ছিল।আর আজ সে মুক্তমনা ব্লগে সবগুলো ঘটনা খাপ খাওয়ানোর জন্য এই দুটো ব্লগ ব্যবহার করেন।

১১.”ধর্ষকের শাস্তি “লিঙ্গ কর্তন” হতে পারে কিনা, এই প্রশ্নটিতে আমাদের বাংলাদেশি অনলাইন নারীবাদীরা কোনরকমের বুদ্ধিবৃত্তিক আলোচনায় অংশগ্রহণ না করে বরং এই প্রশ্ন উত্থাপন করার জন্যে আমাকে ও আমার মতো আরো কয়েকজন ব্লগারকে স্থুল আক্রমণ করার মধ্যে দিয়ে তাঁরা তাঁদের নিজেদের বুদ্ধিবৃত্তিকে উন্মুক্ত করেছেন। যা হাস্যকর এবং কৌতুকময়।”-তার পোষ্টে যত মন্তব্য করা হয়েছে তার উত্তর সে দেয়নি বুদ্ধিবৃত্তিক আলোচনা তো দূরের কথা।আর পুরুষে পুরুষে এমনই বন্ধন,কেউ নারীবাদীদের আসল কথা তো বুঝলোই না বরং সকল বুদ্ধিবৃত্তিক ব্লগাররা গোলাম সাহেবের সাথে তালে তাল মিলাতে থাকলো এবং নারীবাদীরা যে কিছু বোঝেনা,তাদের লেখা শিশুসুলভ,তারা আবর্জনা,তারা তসলিমার ভক্ত,তাদের মানবতা নেই, আসল নারীবাদ বুঝতে তাদের সাহিত্য রচনা করতে হবে এসব বোঝানোর জন্য কাধে কাধ পায়ে পা মিলিয়ে লেখা শুরু করলো।যা খুবই হাস্যকর এবং কৌতুকময়। সবার শেষে এটাই বলবো যে যেকোন মানুষই সে যদি নিরপেক্ষ হয়ে থাকে বুঝতে পারবে যে গোলাম সরওয়ারের প্রথম পোষ্টে তার বক্তব্য কি বোঝাতে চেয়েছে এবং পরের পোষ্টটা ছিল ধামাচাপা দেবার সরঞ্জাম হিসেবে। শেষকথা:গোলাম সরওয়ারকে নারীবিদ্বেষী অমানবিক কিছুই প্রমাণ করার জন্য এই পোষ্ট দেইনি।কিন্তু সে খুবই ইগোজনিত সমস্যায় আক্রান্ত।শুধু সেই ই নয় তারমত সকল ফেইসবুক সেলিব্রেটি লেখক,ব্লগার সবারই একই অবস্থা।তাদের ইগো প্রবলেম এতোবেশি যে তারা মনে করে তাদের ভুল হতেই পারেনা,ভুল স্বীকার করা তাদের ক্ষেত্রে লজ্জাকর বিষয়।আর দ্বিতীয় মতামত নেবার ক্ষমতা কতটুকু তা নাহয় বাদই দিলাম। গোলাম সরওয়ার কোন ভুল করেনি শুধুমাত্র এটা প্রমাণের জন্যই এতো কাহিনী। “The end.

আলোচনার এক পর্যায়ে ওমর ফারুক লুক্স সমাধিকারের প্রশ্নে করেছিলেন— //পুরুষ নারীকে ধর্ষণ করতে আসলে পুরুষের লিঙ্গ কেটে ফেলা উচিত। তাহলে নারী যদি পুরুষকে ধর্ষণ করতে আসে তাহলে নারীর কি কেটে ফেলা উচিত?//

উল্লেখ্য যে কেউ এমন আইন বাস্তবায়নের জন্য রাস্তায় নামেনি। তবুও তারা জোর করে এমন দাবীর দায় বার বার চাপাচ্ছিলেন। বিতর্ক হচ্ছিল আত্মরক্ষার্থে কোন নারী ধর্ষণের সময় ধর্ষক পুরুষের ধর্ষণাংগ কেটে ফেললে সেটাকে অন্যায় বলা ঠিক হবে কিনা? লুক্স সাব কি মনে করে নারীর লিঙ্গ নাই? নারীর লিঙ্গ কোথাও কাটা পরে না? সমানাধিকার সাম্যবাদের মত বিষয়কে এইসব ছাগু কমেন্ট দিয়ে এক্সপ্লেইন করার কারণ কি? ছাগুরা যেমন বলে–“পুরুষ দুই মণ বস্তা উঠাইতে পারি, কই মেয়েরা তো পারে না। এইজন্য পুরুষ নারীর থেকে শ্রেষ্ঠ; এখানে সমানাধিকার চেয়ে কোন লাভ নাই”। উনি তেমনই এক যুক্তি টেনেছেন।

২০১৭ এর সেপ্টেম্বর, এইতো গত মাসে বাংলাদেশে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে মোট ১৬৯টি। এরমধ্যে ধর্ষণের শিকার হয়েছে ১২৮ জন নারী, গণধর্ষণের শিকার হয়েছে ৩৬ জন নারী, ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে ০৫ জন নারীকে, এছাড়া ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে ১৫ জন নারীকে। এর মধ্যে কত জন পুরুষ ধর্ষিত হয়েছে? কতজন পুরুষ গণধর্ষিত হয়েছে? কতজন পুরুষকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে? কতজন পুরুষের লিঙ্গ কেটে নেওয়া হয়েছে? কেউ জানলে একটু জানাবেন প্লিজ। মোট কথা পুরুষের দ্বারা প্রতি একশো জন নারী ধর্ষিত হওয়ার বিপরীতে, নারীর দ্বারা একজন পুরুষও কি ধর্ষিত হচ্ছে? নারী এবং পুরুষের ধর্ষণের অনুপাত কত? নারীঃপুরুষ = ১০০:১ হবে কি? নাকি ১০০: ০০০১ অথবা তারও কম, বা বেশি?
ধর্ষকেরা নারীকে ধর্ষণ শেষে নারীর যৌনাঙ্গ কেটে ফেলে, যোনীতে রড-বাঁশ ঢুকিয়ে দেয়, কাঁচের বোতল ভেঙ্গে ঢুকায়, গরম ডিম ঢুকায়, স্তন কেটে নেয়, পুরো দেহ রক্তাক্ত করে, আস্ত শরীরটাকে কেটে শত টুকরো করে। নারীরা কিন্তু কোন পুরুষকে ধর্ষণ না করেও এমন শাস্তি পায়। আর ধর্ষণ করলে কি শাস্তি পেতো বলে আপনারা মনে করেন?

ফেসবুকে কমেন্ট বক্সে পুরুষেরা আমার যোনীতে মণের মণ গরম তেল ঢালতে চায়, গরু ছাগল হাতি দিয়ে আমাকে রেইপ করাতে চায়, আমার মত আরও হাজারো নারীর মা বোনসহ চৌদ্দ গুষ্টির নারীকে ছুদে সুয়েজ খাল বানাতে চায়। এরকম করে কি ভার্চুয়ালি কোন নারী ধর্ষণ করতে চেয়েছে কোন পুরুষকে? অথবা তার বাপ দাদা চৌদ্দ গুষ্টির পুরুষকে? ভার্চুয়ালি পুরুষের দ্বারা প্রতি একশো জন নারী ধর্ষিত হওয়ার বিপরীতে, নারীর দ্বারা একজন পুরুষও কি ধর্ষিত হচ্ছে? ভার্চুয়ালই নারী ও পুরুষের ধর্ষিত হওয়ার অনুপাত কত? নারীঃপুরুষ = ১০০:১ হবে কি? নাকি ১০০:০০০১ অথবা তারও কম, বা বেশি?

একাত্তরে তো ধর্ষণ শেষে নারীর দুই পা দুই দিকে টেনে শরীরকে দুইভাগ করে ফেলছে, খুঁটিতে যৌনাঙ্গে ঢুকিয়ে রাস্তার মোড়ে খাঁড়া পুঁতে রাখছে, বেয়োনেটে দিয়ে খুঁচিয়ে কাকের মত ঠুকরে দিয়েছে নারীর যৌনাঙ্গ সহ সারা শরীর। বর্তমানে রোহিংগা নারীরা যেনতেন ভাবে ধর্ষণের শিকার হচ্ছে। জাতীয় কোন ইস্যুতে পুরুষের দ্বারা প্রতি একশো জন নারী ধর্ষিত হওয়ার বিপরীতে, নারীর দ্বারা একজন পুরুষও কি ধর্ষিত হচ্ছে? রাষ্ট্রীয়, জাতীয় অথবা ধর্মীয় কোন ইস্যুতে নারী এবং পুরুষের ধর্ষিত হওয়ার অনুপাত কত? নারীঃপুরুষ = ১০০:১ হবে কি? নাকি ১০০:০০০১ অথবা তারও কম, বা বেশি?

লুক্স সাবকে কেউ দয়া করে জিজ্ঞাসা করবেন, এই পুরুষতান্ত্রিক সমাজে নারীরা যদি এগিয়ে গিয়ে জাতীয়, সামাজিক, রাজনৈতিক অথবা পারিবারিক, লৈঙ্গিক, শারীরিক জোড় , পোশাকি অজুহাত—-এই ধরণের ইস্যুতে পুরুষকে ধর্ষণ করে, তবে নারীদের কি কেটে নেওয়া উচিত অথবা কি কেটে নিলে সমানাধিকার স্থাপিত হবে বলে তিনি মনে করেন, সেটা যেন উনি এবং উনার মত মানবতাবাদী কর্মীরা ঠিক করে দেন। আজকাল ফেসবুকে মেয়েরা লেখালেখি করছে। পুরুষের দ্বারা ঘটিত অন্যায়ের বিপক্ষে কলম ধরেছে। স্বামী, ভাই বাবা বন্ধু প্রেমিকের দ্বারা নির্যানতের ইতিহাস তুলে ধরছে। ওই শ্রেণীর নারীকে বেশ্যা সহ যৌনতা বেচে খাওয়া বেশ্যা ট্যাগ দিয়েছে ফেসবুকবাসীরা। কোন মেয়ে পিরিয়ড নিয়ে পোস্ট দিলে তাকে সইতে হয়েছে লক্ষ কোটি তিরস্কার জনক মন্তব্য। বিষয়টা এমন যেন কোন ছেলের গোপন কোন পিরিয়ডের রক্তমাখা প্যাডের খবর মেয়েটা ফ্ল্যাশ করে দিচ্ছে। উইম্যান চেপ্টার জাগরনীয়ার মত অনলাইন পোর্টাল গজিয়েছে। মেয়েরা স্বেচ্ছায় লিখে যাচ্ছে। এর বেশিরভাগ লেখার পরতে পরতে থাকছে পুরুষের দ্বারা নারীর প্রতি ঘটা অন্যায়ের ইতিহাস। এটা নিঃসন্দেহে ভাল পুরুষদের জন্য লজ্জাজনক। এসব পত্রিকার বিরুদ্ধে এখনো পুরুষেরা থু থু দিচ্ছে। এরা খুব নিম্নমানের নাম লিখতে গিয়ে কলম ভেঙ্গে ফেলা মূর্খ পুরুষ নয়। শক্ত হাতে জ্ঞান বিজ্ঞান দর্শন নিয়ে লেখালেখি করা ব্লগাররাও নিয়মিত ঔষধ খাওয়ার মত নিয়ম করে এসব নারীবাদী পোর্টালের বিরুদ্ধে কুৎসা রটাচ্ছে। লেখিকাদের তাদের মন মত বিভিন্ন ভাষায় বিশ্রী ট্যাগ দিচ্ছে। তবুও মেয়েরা লিখে যাচ্ছে। ইদানীং দেখছি টিভিতে নারীবাদ নিয়ে টক শো হচ্ছে। পুরুষের পিলে চমকে উঠছে। আমি কোন মানুষের সাথে খারাপ করলে কতোটা খারাপ হতে পারি একথা আমার চেয়ে অন্য কেউ ভাল জানার কথা নয়। পুরুষেরা জানে তাদের ব্যক্তিগত ইতিহাস। তারা কতোটা খারাপ নারীর জন্য হতে পারে, সেটা তাদের চেয়ে ভাল কেউ জানে না। এজন্যই সেসব নারীর মুখ বন্ধ করানোর জন্য সতীত্ব হারানোর মত হাহাকার মাখানো বিভিন্ন রকমের কৌশলী পদক্ষেপ নিচ্ছে।। নারীবাদীদের মুখ বন্ধ করানোর জন্য অশিক্ষিত, মূর্খ, অসভ্য, বর্বর, নিচ, হীন সহ যত রকমের খাটো উপাধি দেয়া সম্ভব দিয়ে যাচ্ছে।

সবচেয়ে ভয়ংকর হলো, ধর্ষণের খবর ফ্ল্যাশ হয়ে যাচ্ছে, সাথে মাঝে সাঁঝে দুই একটা ধর্ষণের মূল অস্ত্র লিঙ্গও কাটা পরছে। এবার বুঝি থলের বেড়াল সব বের হওয়ার পালা। নইলে কোন প্রগতিশীল পুরুষ কবে কোথায় ধর্ষণ করতে গিয়ে লিঙ্গ হারায়, আর সেই খবর যদি অনলাইনে বের হয়ে যায়, তাহলে তো মহা বিপদ! বিভিন্নভাবে ইনিয়ে বিনিয়ে আগেভাগেই ধর্ষকের লিঙ্গ বাঁচানোর জন্য– আত্মরক্ষার্থে হলেও এহেন কাজটি খুব অমানবিক, অগ্রিম ধর্ষণের শিকার নারীদের– লিঙ্গ কর্তন ধর্ষণের চেয়েও খুব একটা খারাপ কাজ, এবং এতে মানবিকতা কি কি ভাবে লঙ্ঘিত হয়, উন্নত বিশ্বে কি কি উপায়ে ধর্ষকের লিঙ্গ সুরক্ষা পায় ইত্যাদি শেখাচ্ছে। তবুও এক শ্রেণীর মেয়ে হুঙ্কার দিয়ে উঠেছে। আত্মরক্ষার্থে একজন মানুষের কি কি করার অধিকার আছে চোখে আঙ্গুল দিয়ে আইন আদালত দেখাচ্ছে। এখন উপায়? উপায় আছে একটা। এদেরকে একঘরে করে দিয়ে, দেশের নারীদের উস্কে দেওয়ার মূল গুরু তসলিমা নাসরিনের নাম ধরিয়ে দিয়ে, তারাও তার মত অশ্লীল নোংরা, তারা নারীবাদের গুরুমাতার পদ লেহনকারী কুকুর শ্রেণীর প্রাণী উপাধি দিয়ে অবাঞ্ছিত শ্রেণীতে ফেলে দিলেই হয়। তাদেরকে আনফ্রেন্ড, ব্লক করে দিলে, ধর্ষণাংগ রক্ষকদের টাইমলাইনে গিয়ে উগ্র তির্যক বুক এফোঁড় ওফোঁড় করে দেওয়ার মত কথা বলার অধিকার হরণ করে দিলেই হয়। তাদের তখন প্রতিপক্ষ ছাড়া তখন ফাঁকা মাঠে গোলটা দিতে সহজ হয়। ওই বঞ্চিত ঘাড় ত্যাড়া নারী সমাজ তখন দুঃখে কান্নাকাটি করবে, হা হুতাশ করবে–এমন কুৎসিত নগ্ন ভাবে প্রকাশিত অশ্লীল বিজ্ঞদের তারা আর তাদের শানিত কথার ধারে বিদ্ধ করতে পারবে না বলে। বিজ্ঞেরা তখন দলবদ্ধভাবে মানবিক উপায়ে ধর্ষকদের লিঙ্গ বাঁচাবে। সাথে যোগ দিবে মস্তিষ্কে পুরুষের বিচি ধারণকারী আরেকশ্রেণীর দলদাসী। তারা তাদেরকে নিয়ে উল্লাস করবে। প্রতি পোষ্টে অশিক্ষিত জ্ঞানী গুনি ভাইয়েরা তাদেরকে ধর্ষণ করবে, আর তারা সেটাকে পীরের সন্তান জন্মদানের জন্য গর্ভবতী করে দেওয়ার দেওয়া বর মনে করে হাসিমুখে নীরবে সইবে। এরপর পরবর্তী স্টেজে প্রগতিশীল নামধারী নারীবিদ্বেষী পুরুষেরা নিজেদের জমজমের পানিতে পরিশুদ্ধ করার জন্য টানা কয়েকদিন নারী অধিকার নিয়ে লেখালেখি করবে। কারণ নারীকে সর্বোচ্চ সম্মান দিয়ে সবচেয়ে ভয়ঙ্কর নারীবিদ্বেষী পুরুষেরাও এক সময় মহামানব হয়েছে…ইতিহাস সাক্ষী।

ধর্ষকের লেজ নিয়ে জন্মানো মাননীয় পুরুষ মানুষ: তবুও কি এভাবে ধর্ষণের পর হত্যা করে ফেলা, ঘাড় মটকে দেওয়া, শরীর কেটে শত টুকরো করার মত বিভিন্ন আক্রমণে— প্রতিবাদী নারীদের মুখ বন্ধ করানো যাবে?

এতকাল পুরুষেরা নির্বিঘ্নে নারীর লিঙ্গ কেটে ছিঁড়ে ফেড়ে ধর্ষণ করছে, ব্যাপারগুলোতে আলাদা করে কাউকে নারীর লিঙ্গের প্রতি সহানুভূতিশীল হতে কখনো দেখা দেখা যায়নি। যেই না বিপরীত-ক্রমে পুরুষের লিঙ্গে পাল্টা আঘাত করতে শিখলো নারী–তখনই শুরু হয়ে গেল পুরুষের লিঙ্গ রক্ষার অধিকারের পক্ষে আন্দোলন।

ধর্ষণের অপরাধে পুরুষের লিঙ্গ কাটার সংস্কৃতি চালু হলে তার দায় সম্পূর্ণ পুরুষদের। আমি যেহেতু নারী তাই মাঝে মাঝে রাগে ক্ষোভে ধর্ষণের মহামারি দেখে আক্ষেপ করে একটা অনৈতিক কথা বলতে ইচ্ছে করে–পুরুষ নিজেরা লিঙ্গ দিয়ে নারীর লিঙ্গে আক্রমণ করছে হাজার হাজার বছর, এর খেসারত হিসেবে বছরে শ’খানেক ধর্ষণাংগ হারালেই বুঝবে– কারো লিঙ্গে আঘাত করাটা কতটা সুখকর!

ধর্ষণের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড কোন দেশে আছে বলে জানা নেই। আইন নিজের হাতে তুলে নিচ্ছে অহরহ মানুষ।সামান্য কিছু চুরির দায়ে বাচ্চা ছেলেদের নৃশংস ভাবে হত্যা করছে। সব অপরাধের জন্য আইন আছে। ধর্ষণের সময় আত্মরক্ষার্থে প্রতিবাদকে যারা আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার নাম দিয়ে মানবতাবাদ প্রচার করেন, তাদের মানবতা আসলে কেবল ধর্ষকের জন্যই বরাদ্দ বলেই ধরে নিতে হচ্ছে। সামগ্রিক আলোচনায় কোনটা আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া, আর কোনটা আত্মরক্ষার্থে আঘাত সেটা আমরা গুলিয়ে ফেলেছি। ফেলেছি বললে ভুল হবে, আলোচনার মোড় অন্য দিকে ঘুরানোর জন্য গুলিয়ে ফেলা হয়েছে। কলাবাগানে মোবাইল চুরির অপরাধে এক চোরকে মারতে মারতে উলঙ্গ করে লিঙ্গ থ্যাতলে বিচি ফাটিয়ে দিতে দেখেছিলাম। সেই চোরের লিঙ্গে আক্রমণটা ধর্ষণের শাস্তি হিসেবে ছিল না অথবা ধর্ষণের সময় কোন নারীর দ্বারা আত্মরক্ষার্থেও ছিল না। এটাকে হয়তো বলে আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া। সবশেষে আরেকটা প্রশ্ন রেখে শেষ করতে চাই– ধরে নিলাম নারীবাদীদের অনেক দোষ। তারা নারীর লিঙ্গে আক্রমণের প্রতিশোধ পুরুষের লিঙ্গে আক্রমণ করে করতে চায়। ভিক্টিম নারীর আক্রমণের কথা বাদ দিলাম। কোন পুরুষের সামনে তার প্রেমিকা, স্ত্রী অথবা মা-বোন ধর্ষণ হলে, পুরুষেরা কি বাধা দেবে? দিলে কীভাবে দেবে? তারা কি তখন ধর্ষকের মানবাধিকারের চিন্তা আগে করবে?…কোথায় আঘাত পেলে ধর্ষকের ক্ষতি হবে–এসব কি ভাববে? কোনো পুরুষের চোখের সামনে যদি অনাত্মীয় কোন নারী ধর্ষিত হতে থাকে, তাহলে পুরুষেরা কী করবে?