আর কত শোক নিতে পারব জানিনা। ভোর হতে জানালার পাশে শুয়ে আছি। অভিজিৎ দার কথা স্মরণ হচ্ছে খুব। কিছুক্ষণ পরপর মনে হয় অক্সিজেনের অভাব হচ্ছে, উঠে জানালা খুলে দেই, বিষন্ন হয়ে দূরে তাকিয়ে থাকি। এর মধ্যে খবর পেলাম আমাদের ওয়াহিদ রেজা আর নেই। তিনিও চলে যাওয়ার জন্য এই দিনটি বেছে নিলেন। বিপত্নীক এই মানুষটার জীবন ছিল বেশ বিড়ম্বিত। এক সময় ফেইস বুকে আসলেন, তবে অনলাইনের জগতে খুব একটা অভ্যস্ত হয়ে উঠেন নি কখনো।

মুক্তমনার সাথে ওয়াহিদ রেজার সম্পর্ক ছিল অনেক আগ থেকেই। তাঁর লেখার লিংক দিচ্ছি

https://gold.mukto-mona.com/Articles/wahid_reza/index.html

তাঁর মৃত্যু সংবাদ একটি পত্রিকা থেকে

নারায়ণগঞ্জের কবি ওয়াহিদ রেজা মারা গেছেন। রবিবার সকাল আটটা ২৭ মিনিটে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন প্রথাবিরোধী এই লেখক।

হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে বেশ কিছুদিন তিনি ঢাকার সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। দুইদিন আগে ব্রেইন স্ট্রোক করলে তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আনা হয়। এখানেই তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

২৫ অক্টোবর ১৯৫৬ সালে নগরীর আমলাপাড়ার মোল্লা বাড়িতে তার জন্ম। তার বাবা ডা. শাহাদাৎ হোসেন আওয়ামী লীগের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন। দুই ভাই তিন বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন সবার বড়। ওয়াহিদ রেজা মৃত্তিকা ও অর্ণব নামের দুই ছেলেমেয়ে রেখে গেছেন।

নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি কবি হালিম আজাদ জানান, নারায়ণগঞ্জ থেকে বের হওয়া উনচল্লিশ বছরের ছোট কাগজ ‘ড্যাফোডিল’ ১৯৮৮ সাল থেকে সম্পাদনা করেছেন ওয়াহিদ রেজা। আগের দশ বছর এটির সম্পাদক ছিলেন কবি হালিম আজাদ।

১৯৮৪ সালে ওয়াহিদ রেজার প্রথম গল্প গ্রন্থ’ ‘আসলে আমি-ই নায়ক’ বের হয়। তার উল্লেখযোগ্য বইয়ের মধ্যে রয়েছে, ‘কবি জন কিটস ও তার প্রেম’, ‘মহাকালের ইঙ্গিত,’ ‘ইতিহাসের আলোকে ধর্মপূজা, যৌন পূজা’, ‘আমি বাঁচতে চাই প্রধানমন্ত্রী’, ‘হাওয়ার ফ্রীডম’, ‘এখন পরপুরুষ’, ‘ধর্ম বিশ্বাসের প্রেম ইত্যাদি। অনূদিত গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে, মিলান কুন্দেরার ‘এবং ইশ্বর ও সোনার আপেল’, আলবারতো মোরাভিয়ার ‘দ্বিচারিনি’, ভলতেয়ার এর ‘ক্যান্ডিড’।

বিজ্ঞানমনস্ক এই লেখক ভারতের বিশিষ্ট যুক্তিবাদী লেখক প্রবীর ঘোষের সাথে যৌথভাবে বেশ ক’টি বই প্রকাশ করেন। এগুলির মধ্যে একটি হচ্ছে, ‘দুই বাংলার যুক্তিবাদিদের চোখে ধর্ম‘।