নোবেলবিজয়ী পদার্থবিজ্ঞানী ম্যাক্স বর্ন আরেক বিশ্ববিখ্যাত বিজ্ঞানী আর্নেস্ট রাদারফোর্ডকে এক চিঠিতে লিখেছিলেন, “Raman is a very able physicist, full of enthusiasm, as you say yourself. There is really no other Indian physicist who is of his rank… His European intensity alone would be enough to make Raman suspicious to the average Indian professor.” সত্যিই তাই, রামনের মতো এত উদ্যমী এবং সফল বিজ্ঞানী ভারতীয় উপমহাদেশে আর একজনও ছিলেন না, এখনো নেই।

ভারতীয় উপমহাদেশের শুধু নয়, সারা পৃথিবীর যে কোন বিশ্ব্ববিদ্যালয়ের স্নাতক পর্যায়ের পদার্থবিজ্ঞান-শিক্ষার্থী স্যার চন্দ্রশেখর ভেঙ্কট রামন বা সি ভি রামনের নাম শুনেছেন। তাঁর আবিষ্কৃত ‘রামন ইফেক্ট (Raman Effect)’ বা ‘রামন-প্রভাব’ পদার্থবিজ্ঞানের জগতে এক আশ্চর্য মাইলফলক হয়ে আছে ১৯২৮ সালের ২৮শে ফেব্রুয়ারি থেকে – যেদিন এই আবিষ্কারের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়া হয়েছিল।

রামন-ইফেক্ট আবিষ্কারের পর পর রামন পৃথিবীর সেরা বিজ্ঞানীদের সারিতে আসন পেয়ে যান। এই বিষয়ে কাজ শুরু করেছিলেন ১৯২২ সালে। তার দু’বছরের মধ্যেই ১৯২৪ সালে তিনি রয়েল সোসাইটির ফেলোশিপ পান। ১৯২৯ সালে রাজা পঞ্চম জর্জ তাঁকে নাইটহুড প্রদান করেন। তখন থেকে তাঁর নামের আগে ‘স্যার’ যুক্ত হয়। একই বছর তিনি রয়েল সোসাইটির হিউজ প্রাইজ পান।

রামন-প্রভাব আবিষ্কারের জন্য স্যার সি ভি রামন পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরষ্কার পেয়েছেন ১৯৩০ সালে। শুধু ভারতীয় উপমহাদেশ নয়, সমগ্র এশিয়ার মধ্যে তিনিই হলেন বিজ্ঞানে প্রথম নোবেল পুরষ্কার বিজয়ী। তাঁর নোবেল-বিজয়ী গবেষণার সবটুকুই সম্পন্ন হয়েছিল কলকাতার ‘ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশান ফর দি কাল্টিভেশান অব সায়েন্স’ (আই-এ-সি-এস) এর গবেষণাগারে।

এই গবেষণাগারের যন্ত্রপাতি সংযোজন, সংরক্ষণ ও পরীক্ষণের কাজে রামনকে যিনি সারাক্ষণ সহায়তা করেছিলেন তাঁর নাম আশুতোষ দে। আশুবাবু নামেই তিনি পরিচিত ছিলেন। আশ্চর্যের বিষয় হলো এই আশুবাবু জীবনে কোনদিন বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে পড়াশোনার সুযোগ পাননি।

গবেষণার ক্ষেত্রে কোন প্রাতিষ্ঠানিক ডিগ্রি ছিল না সি ভি রামনেরও। তাঁর কোন গবেষণা-শিক্ষকও ছিলেন না। গবেষণার ক্ষেত্রে নিজেকেই নিজের পথ খুঁজে নিতে হয়েছিল রামনকে। আর তাঁর এই পথ-খোঁজা শুরু হয়েছিল একেবারে ছোটবেলা থেকেই। বিজ্ঞানে নোবেল পুরষ্কার অর্জনকারীদের মধ্যে হাতেগোনা মাত্র কয়েকজন বিজ্ঞানী ছিলেন যাঁদের কোন নিয়মিত পিএইচডি ডিগ্রি ছিল না। রামন ছিলেন তাঁদেরই একজন। তবে নোবেল পুরষ্কার পাবার আগেই কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় রামনকে সম্মানসূচক ডক্টর অব সায়েন্স ডিগ্রি দিয়েছিল।

ব্রিটিশ-ভারতের বিজ্ঞানচর্চাকে অ্যাকাডেমিক পর্যায়ে উন্নীত করতে স্যার রামনের ভূমিকা অপরিসীম। তাঁর হাতেই সাফল্যের মুখ দেখেছে ব্রিটিশ-ভারতের প্রথম বৈজ্ঞানিক গবেষণার লক্ষ্যে স্থাপিত প্রতিষ্ঠান আই-এ-সি-এস। ডাক্তার মহেন্দ্রলাল সরকার যে উদ্দেশ্যে এই প্রতিষ্ঠানটি স্থাপন করেছিলেন সেই উদ্দেশ্য সফল করেছেন স্যার রামন। এই প্রতিষ্ঠান থেকেই ব্রিটিশ-ভারতের প্রথম গবেষণা-জার্নাল প্রকাশ করতে শুরু করেন তিনি।

১৯৩২ সাল পর্যন্ত আই-এ-সি-এস ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে কাটিয়ে ১৯৩৩ সালে রামন যোগ দেন ব্যাঙ্গালোরের ইন্ডিয়ান ইন্সটিটিউট অব সায়েন্সের ডিরেক্টর পদে। সেই থেকে জীবনের শেষ পর্যন্ত তিনি ব্যাঙ্গালোরেই কাটিয়েছেন। চাকরি থেকে অবসরের পর নিজের সঞ্চিত অর্থ ও জনগণের চাঁদায় তিনি স্থাপন করেছেন রামন রিসার্চ ইন্সটিটিউট।

স্যার রামন বিশ্বাস করতেন নিয়মিত সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেতে থাকলে কোন বৈজ্ঞানিক প্রতিষ্ঠানই নিজের পায়ে দাঁড়ানোর শক্তি অর্জন করতে পারে না। তাই তিনি কখনোই কোন সরকারি অনুদান গ্রহণ করেননি। স্বাধীনতার পর ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরু অনেক কষ্টে তাঁকে রাজি করিয়েছিলেন জাতীয় অধ্যাপক পদ গ্রহণ করার জন্য। ভারতের উপরাষ্ট্রপতির পদও উপেক্ষা করেছিলেন স্যার রামন। তাঁকে দেশের সবচেয়ে সম্মানজনক উপাধি ‘ভারতরত্ন’ প্রদান করে ভারত সরকার।

প্রকৃতির শব্দ-আলো-রঙের জটিল রহস্য নিয়ে মেতে থাকলেও শিশুর মতো সরল ছিলেন স্যার রামন। আনন্দে যেমন গলা ফাটিয়ে হাসতেন, তেমনি দুঃখে সবার সামনে কেঁদেও ফেলতেন। আর যখন রেগে যেতেন তখন রাগ লুকানোর কথা ভাবতেও পারতেন না। নোবেল পুরষ্কার গ্রহণ করার পর যখন দেখেছিলেন নিজের দেশের একটা স্বাধীন পতাকা পর্যন্ত নেই, দুঃখে তিনি কেঁদে ফেলেছিলেন স্টকহোমের নোবেল পুরষ্কারের অনুষ্ঠানে বসেই।

প্রচন্ড স্বাধীনচেতা ছিলেন স্যার রামন। তিনি বিশ্বাস করতেন একজন বিজ্ঞানীর গবেষণার পথে কোন ধরনের প্রশাসনিক বাধা থাকা উচিত নয়। নিজের বিবেচনাবোধের ওপর তাঁর এতটাই আস্থা ছিল যে তাঁর অনেক সিদ্ধান্তে অনেকে তাকে স্বেচ্ছাচারী বলে মনে করেছেন বিভিন্ন সময়।

তিনি বিভিন্ন সময়ে বলেছেন জীবনে বিজ্ঞান ছাড়া তিনি আর কিছুই করেননি। অথচ তিনি সেই সময়ের ক্লাসিক ইংরেজি সাহিত্যের প্রায় সবটুকুই পড়েছেন। তাঁর নিজস্ব লাইব্রেরিতে সেই সময়ের সব চিরায়ত ইংরেজি সাহিত্যের বই আছে যেগুলোর প্রতিটি লাইন তিনি পড়েছেন। তাঁর বাবা নিজে মাস্টার্স ডিগ্রি পরীক্ষা দেয়ার জন্য পদার্থবিজ্ঞানের যে বইগুলো নিয়ে এসেছিলেন – রামন সেই বইগুলো পড়ে ফেলেছিলেন স্কুলে থাকতে। শুধু পড়েছেন তাই নয়, সেগুলোতে বর্ণিত বিভিন্ন পরীক্ষণ নিজে করে দেখেছেন।

বিজ্ঞানের গবেষণা করার জন্য, বিরাট অংকের বেতন ও অন্যান্য সুযোগসুবিধাসহ সরকারি চাকরি ছেড়ে অর্ধেকেরও কম বেতনের বিশ্ববিদ্যালয়-শিক্ষক হয়েছেন। বিজ্ঞানের জটিল ব্যাপারগুলোকে এমন সরল করে বোঝাতে পারতেন যে ছাত্ররা বিজ্ঞানের প্রতি উৎসাহিত হয়ে পড়তো। দেখা গেছে দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে অনেক ছাত্র এসে জড়ো হয়েছেন রামনের গবেষণাগারে তাঁর সাথে কাজ করার সুযোগ লাভের জন্য।

স্যার জগদীশচন্দ্র বসু উপমহাদেশের প্রথম পরীক্ষণ-পদার্থবিজ্ঞানী ছিলেন। কিন্তু স্যার জগদীশচন্দ্র উল্লেখযোগ্য কোন ছাত্রগোষ্ঠী তৈরি করেননি। সত্যেন বসু বা মেঘনাদ সাহার ক্ষেত্রেও সেকথা বলা যায়। কিন্তু স্যার রামন তাঁর জীবনের বিশ বছর বয়স থেকে বিরাশি বছর বয়স পর্যন্ত ষাট বছরেরও বেশি কর্মজীবনে পাঁচ শতাধিক পদার্থবিজ্ঞানী তৈরি করে গেছেন। তাঁদের অনেকেই পরবর্তীতে বিজ্ঞানের গবেষণায় নিজেদের জায়গা করে নিয়েছেন। ছাত্রদের জন্য তিনি যে কতটা নিবেদিতপ্রাণ ছিলেন তার প্রমাণ পাওয়া যায় তাঁর বিভিন্ন কাজের মধ্যে। ১৯৫৪ সালে ভারতের সবচেয়ে সম্মানজনক রাষ্ট্রীয় পুরষ্কার ‘ভারত-রত্ন’ প্রবর্তিত হয় এবং প্রথমেই এই পুরষ্কার দেয়া হয় স্যার রামনকে। তাঁর সঙ্গে আরো দু’জন ভারতরত্ন পেয়েছিলেন। তারা হলেন ভারতের সর্বশেষ গভর্নর-জেনারেল সি রাজাগোপালাচারি এবং ভারতের প্রথম উপ-রাষ্ট্রপতি সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণান। রাষ্ট্রের এত বড় সম্মান দেয়া হয়েছিল যে রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে, রামন সেই অনুষ্ঠানে যাননি শুধুমাত্র তাঁর একজন পিএইচডি ছাত্রের থিসিস জমা দিতে দেরি হয়ে যাবে বলে।

স্যার রামন সাড়ে চারশোর বেশি গবেষণাপত্র প্রকাশ করেছেন। এর মধ্যে সাড়ে তিনশোর বেশি গবেষণার পুরোটাই নিজের হাতে করা। গবেষণাজগতের প্রচলিত নিয়ম হলো যে কোন গবেষণাপত্রেই সিনিয়র সুপারভাইজারের বা গবেষণা-পরামর্শকের নাম থাকে প্রবন্ধের সহ-লেখক হিসেবে। রামন তাঁর গবেষণা-ছাত্রদের নিজেদের কাজের ভিত্তিতে রচিত গবেষণাপত্রে কখনোই তাঁর নিজের নাম অন্তর্ভুক্ত করতে দেননি। তাঁর গবেষক ছাত্ররা দেড় হাজারেরও বেশি গবেষণাপত্র প্রকাশ করেছেন। অথচ সেই গবেষণাগুলোরও মূল ধারণা ছিল তাঁর, তত্ত্বাবধায়কও ছিলেন তিনি।

রামনের গবেষণাগারে ছাত্রীদের সংখ্যা ছিল সর্বমোট তিন জন। রামন নারীদের গবেষণার বিরোধী ছিলেন না সত্য, কিন্তু খুব একটা উৎসাহীও ছিলেন না। ছেলেমেয়েদের মধ্যে পারস্পরিক মেলামেশা তিনি মোটেও পছন্দ করতেন না।

ভারতীয় উপমহাদেশে বিজ্ঞানসংস্কৃতি গড়ে তোলার ক্ষেত্রে রামনের অবদান অপরিসীম। তিনি বিশ্বাস করতেন বিজ্ঞানের গবেষণার জন্য লক্ষ লক্ষ টাকার বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি না হলেও চলে। শুধু দরকার হয় অনুসন্ধিৎসু মন। তিনি স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের প্রশ্ন করতেন, “সাবানের ফেনায় ভেসে বেড়ানো রঙ দেখেছো? আকাশ কেন নীল জানো? হীরা কেন এত উজ্জ্বল? ফুলের পাপড়ির যে রঙ সেই রঙের রহস্য কী?” আমাদের চারপাশের প্রকৃতিতেই রয়েছে কত রহস্য। সঠিক প্রশ্ন করতে জানলে প্রকৃতি তার রহস্যের দরজা খুলে দেয়।

বিদেশ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকার বৈজ্ঞানিক সরঞ্জাম কেনার প্রচন্ড বিরোধী ছিলেন রামন। তিনি বলতেন, “আমরা আমাদের অজ্ঞতার দাম দিচ্ছি। আমাদের অজ্ঞতার দাম এই লাখ লাখ টাকা। আমরা নিজেরা যদি এই যন্ত্রপাতি বানাতে শিখতাম তাহলে আমাদের এই দাম দিতে হতো না।”

কলকাতায় অ্যাসোসিয়েশানে যেসব যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে রামন নোবেল পুরষ্কার নিয়ে এসেছিলেন সেগুলোর বেশিরভাগই ছিল তাঁর স্থাপিত ওয়ার্কশপে স্থানীয় কারিগরদের দ্বারা তৈরি। তিনি গর্ব করে বলতেন, “আমার নোবেল পুরষ্কারের জন্য ২০০ রুপির যন্ত্রপাতিও লাগেনি।”

ব্যাঙ্গালোরে ইন্ডিয়ান ইন্সটিটিউট অব সায়েন্সের ডিরেক্টর পদে থাকাকালীন গবেষক ছাত্রদের দিয়ে যন্ত্রপাতি বানানোর উদ্যোগ নিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সেখানে তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারীরা জাত-পাতের প্রশ্ন তুলে গন্ডগোল লাগায়। তারা বলে মিস্ত্রীর কাজ করা নিচু জাতির কাজ। গবেষক ছাত্র কেন মিস্ত্রীর কাজ করবে? কাজ করতে না জানার অহংকার আমাদের দেশে এখনো চরমভাবে আছে। আমাদের অজ্ঞতার দাম ক্রমশ বাড়ছে।

রামন-ইফেক্ট আবিষ্কৃত হয়েছে প্রায় একশো বছর হতে চললো। ১৯২৮ সালে যখন রামন-ইফেক্ট আবিষ্কৃত হলো, তার এক বছরের মধ্যে প্রায় ১৫০টি গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয় পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে রামনের আবিষ্কারের ভিত্তিতে। ১৯৭০ সালে রামনের মৃত্যুর আগপর্যন্ত প্রায় দশ হাজার গবেষণাপত্র রচিত হয়েছে রামন-ইফেক্টের ওপর। ১৯৬০ সালে লেসার আবিষ্কৃত হবার পর রামন-ইফেক্ট এক নতুন মাত্রা পায়। শুরু হয় রামন-স্পেক্ট্রোস্কোপির (Raman Spectroscopy) ব্যবহার। রামন তাঁর আবিষ্কারের কোনটারই কোন প্যাটেন্ট করাননি।

অথচ আজ প্রায় পাঁচ শতাধিক প্যাটেন্ট আছে বিভিন্ন যন্ত্রপাতির, যার সবগুলোই রামনের আবিষ্কারের ভিত্তিতে তৈরি হয়েছে। আজ গুগল সার্চ করলে প্রায় সাড়ে পাঁচ লাখ গবেষণা প্রবন্ধের খোঁজ পাওয়া যায় যেগুলো রামন-ইফেক্টের ভিত্তিতে গবেষণার ফল। যে অপটিক্যাল ফাইবার আজ টেলিকমিউনিকেশানের শক্তিশালী বাহক হয়ে উঠেছে সেই অপটিক্যাল ফাইবারের মূল ধারণা এসেছে রামনের আবিষ্কার থেকে।

১৯৮০ সালে গাণিতিক ফ্যুরিয়ার ট্রান্সফর্মেশান টেকনিক ব্যবহার করে উদ্ভাবন করা হয়েছে ফ্যুরিয়ার ট্রান্সফর্ম রামন স্পেক্টোমিটার যা কম্পিউটারের ডাটা ম্যানেজমেন্টে ব্যবহৃত হচ্ছে। কঠিন, তরল, বায়বীয় যে কোন ধরনের পদার্থের রাসায়নিক উপাদান পরীক্ষা করার জন্য রামন-ইফেক্টের ব্যাপক এবং কার্যকরী ব্যবহারের কারণে ১৯৯৮ সালে আমেরিকান কেমিক্যাল সোসাইটি রামন-ইফেক্টকে ন্যাশনাল হিস্টোরিক্যাল কেমিক্যাল ল্যান্ডমার্ক হিসেবে ঘোষণা করে।

রামন নিজে শুধু গবেষক ছিলেন না, ছিলেন গবেষক ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান তৈরির পরশ পাথর। স্যার কৃষ্ণান, হোমি ভাবা, বিক্রম সারাভাই প্রমুখ ছিলেন রামনের সরাসরি ছাত্র ও গবেষণা-সহযোগী। কলকাতার মহেন্দ্রলাল সরকারের হাতে গড়া সায়েন্স অ্যাসোসিয়েশান রামনের হাতে পুনর্জন্ম লাভ করে। অধ্যাপক মেঘনাদ সাহার নেতৃত্বে স্যার রামনকে ঐ প্রতিষ্ঠান থেকে বিতাড়িত করা হলেও পরে মেঘনাদ সাহার নেতৃত্বে সেই প্রতিষ্ঠানটি নতুন মাত্রা পায়, নতুন ক্যাম্পাস পায়। এখন সেটা উপমহাদেশের একটা প্রথম সারির গবেষণা প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে।

রামন ইন্ডিয়ান অ্যাকাডেমি অব সায়েন্স প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। সেই অ্যাকাডেমি এখন পূর্ণোদ্যমে কাজ চালাচ্ছে। রামনের নিজের হাতে গড়া প্রতিষ্ঠান রামন রিসার্চ ইন্সটিটিউট এখন একটি স্বায়ত্বশাসিত গবেষণাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে রামনের উত্তরাধিকার বহন করে চলেছে সগৌরবে।

** স্যার সি ভি রামনের জীবন ও বিজ্ঞানের পূর্ণাঙ্গ বিবরণ পাওয়া যাবে “চন্দ্রশেখর ভেঙ্কট রামন” বইতে।