লিখেছেনঃ দিদার

নৈবেদ্য-১
এখানে বসন্ত আসে ধীরে তবু দেয় না ধরা
নারী স্বয়ং বসন্ত হয়ে ওঠে নিবেদন ছাড়া।
আমি নৈবেদ্য হয়ে যাই।
বসন্তের আশায়।
এ খরার মৌসুমে ঠোঁট শুকিয়ে গেছে এ বৈরিতায়
প্রিয়, সিক্ত কর চুম্বনে।
শীতল কর প্রেমের মৌসুমে।

নৈবেদ্য-২
মন বিছানো এপথ দিয়ে যমুনাতে যাও
নগ্ন রেখো আলতারাঙা তোমার যুগল পাও।

নৈবেদ্য-৩
প্রেমিক দূরে আছে বলে-
প্রেমাস্পদের কষ্টের কথা ভেবে
প্রেমিক হয়রান;
হায়, প্রেমাস্পদের যদি সেদিকে খেয়াল থাকতো!

নৈবেদ্য-৪
কালো কোকিল!
সারা দিন আর্তনাদ করেই যাচ্ছে।
প্রিয় কোকিল! আমিও যদি তোর মতো
আর্তনাদ করতে পারতাম!
তার জন্য অন্তত একটা সুর থাকা চাই!

নৈবেদ্য-৫
সে ফুল তুমি চাও না,
যে ফুল তোমার পায়ে লুটায়;
চাইবে কেন শুষ্ক সে ফুল
কেবলই যে ফুল শুকিয়ে গেছে,
তোমার জিকিরে থেকে মশগুল।

নৈবেদ্য-৬
কেন জিজ্ঞেস করো কেমন আছি?
কেমন থাকে লটকে গেলে মন মানুষের মনে!

নৈবেদ্য-৭
এমনই কপাল
শুধু রাত জেগে যাই।
(কেবল তোমার ছবিই ভাসে)
শীতের শিশির
বিদায়ের আগে
(যেমন জড়িয়ে থাকে ঘাসে)

নৈবেদ্য-৮
আমাকে তোমার চোখে প্রশ্রয় দাও,
তোমাকে আমার সর্বত্র আশ্রয় দেব।
(এরচে’ আর কী-ই-বা ভালো ব্যবসা হতে পারে,
যদি বিনিময় চাও!)


নৈবেদ্য-৯
দেবী, কোনটা চাও তুমি
নৈবদ্য নাকি নিবেদক!
হোক, অপাঙ্গে তোমার চোখ
জেনো, আমিই নৈবেদ্য ও নিবেদক।

নৈবেদ্য-১০
চোখের পরিধি তার অনন্ত রহস্য যেন এক,
পরিধির চারি ধারে ভ্রমরের মতো শুধু উড়ি
নাটাই মানসীর হাতে আমি কক্ষপথে যেন ঘুড়ি
চোখে যে রহস্য থাকে ধনুকের মতো বাঁকে তার
রূপের সন্ধান মেলে মনের সন্ধান মেলা ভার
অপটু প্রেমিক আমি বুঝি না গহীন চোখের বাঁক।

তখনো উদাসী বনে ফাগুনের ঝরা পাতা হায়
পলকেরা ঝরে পড়ে হৃদয় বিছানো পথে তাই
লাজুক চাউনি তার অনুভূতির মাতাল ঢেউ
নিরন্তর জ্বেলে যায় পাঁজরের হাড় ভাঙা কেউ
আসবে পুবাল বাতাস অপেক্ষার দিন শেষ হলে
মধু জোৎস্ন্যা ডাকা রাত আসবে কুয়াশা ঢাকা বনেও।