FREE_SPEECH

আজ থেকে ঢাকায় একুশে বইমেলা শুরু হচ্ছে। গত বছর ২৬ ফেব্রুয়ারিতে এই বইমেলা থেকে ফেরার পথেই গুণী লেখক ড. অভিজিৎ রায়কে কুপিয়ে হত্যা করেছে ইসলামিস্ট খুনীরা। চরমভাবে আহত করেছে আরেক লেখক বন্যা আহমেদকেও, যিনি অভিজিৎ রায়ের স্ত্রী এবং সেসময় তাঁর সাথে ছিলেন। প্রায় এক বছরেও অভিজিতের খুনের বিচার হয় নি। বিচার দূরে থাক, খুনীদেরকেও ধরা হয় নি।

অভিজিৎ রায় বিজ্ঞানভিত্তিক বিষয় নিয়ে লেখালেখি করতেন। এর পাশাপাশি তিনি “মুক্তমনা” কমিউনিটি বাংলা ব্লগেরও প্রতিষ্ঠাতা। তাঁর “অবিশ্বাসের দর্শন” বইয়ের দুই প্রকাশককে মাত্র তিন মাস আগে ৩১ অক্টোবর হত্যার চেষ্টা করা হয়। শুদ্ধস্বরের প্রকাশক আহমেদুর রশীদ প্রাণে বেঁচে যান। তবে তিনিসহ দুইজন লেখক রণদীপম বসু ও তারেক রহিম সেই সময়ে শুদ্ধস্বরের অফিসের এই হত্যাচেষ্টায় মারাত্মকভাবে আহত হয়েছিলেন। জাগৃতি প্রকাশনের প্রকাশক ফয়সাল আরেফিন দীপন প্রাণে বাঁচতে পারেন নি। তাকে তার শাহবাগস্থ প্রকাশনা অফিসে ঢুকে খুন করেছে সেই একই দল! সে খুনেরও বিচার কী হবে জানি না!

ঢাকার শিক্ষিত সমাজের মধ্যে বর্তমানে ভয়-ভীতি ও নিস্পৃহতার সংস্কৃতি চলছে। আমাদের সামাজিক পরিমণ্ডলে এই বিষয়গুলো নিয়ে কেউ খোলাখুলি কথা বলেন না। বিভিন্ন আড্ডায় রাজনীতি উঠে আসে, সেলিব্রিটি উঠে আসে, ফেসবুকের ভাইরাল ভিডিও বা মিম (meme) উঠে আসে, অনন্ত জলিল অথবা “Be like Bill” উঠে আসে। কিন্তু লেখক-প্রকাশক খুনের বিষয়টি উল্লেখ করলেই সবাই কেমন যেন অস্বস্তিতে পড়ে যান। অনেকেই স্মার্টফোন খুলে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। যারা অতোটা অভদ্র হতে পারেন না, তারা তাড়াতাড়ি প্রসঙ্গ বদলানোর চেষ্টা করেন।

ধরে নিচ্ছি, এই আলাপ করতে অনেকেই ভয় পান। সবারই পরিবার-পরিজন আছে, চাকরি-বাকরি, বউ-বাচ্চা বা স্বামী-সন্তান আছে। পাছে তাদের মতামতের কারণে যদি আপনজনেরা আক্রান্ত বা ক্ষতিগ্রস্ত হন – তাই নীরবতাকেই হিরন্ময়-জ্ঞানে চুপ করে থাকেন। যে দলটি হত্যা হওয়া লেখকদের বিরুদ্ধে কথা বলে ওঠেন,তারা মনে মনে এই হত্যাগুলোকে “নুইসেন্স” বা ঝামেলা মনে করেন। তাদের চোখে অভিজিৎ রায়সহ যতোজন লেখক-ব্লগার ও প্রকাশককে হত্যা করা হয়েছে, তারা ইসলাম ধর্মকে অবমাননা করছিলেন। এদের একটি অংশ হত্যা চান নি, তবে মনে করেন যে উক্ত ব্লগার-লেখকরা অবশ্যই অমোচনীয় অপরাধ করেছিল বিধায় তাদের শাস্তি প্রাপ্য। আর অন্য অংশটি মনে করেন মেরে ফেলাই ঠিক হয়েছে।

এমন কিন্তু নয় যে, ভয় পেয়ে যাওয়া গ্রুপ এবং হত্যাকে “নুইসেন্স” মনে করা গ্রুপদুটো অশিক্ষিত, মূর্খ, বা ধর্মান্ধদের। এরা প্রায় ৯৯ ভাগই প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষায় উচ্চশিক্ষিত। বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রিধারী। মোটামুটি স্বচ্ছল পরিবার ও পরিবেশে বড় হয়েছেন, অর্থাৎ শিক্ষার পাশাপাশি গড়পড়তা নৈতিকতা ও সংস্কৃতির পরিমণ্ডলেই ছিলেন। তাহলে প্রশ্ন হলো, এমন সুযোগ-সুবিধা, শিক্ষা-দীক্ষা ও স্বচ্ছলতার মধ্যে বেড়ে উঠেও কেন তারা সকলেই হত্যাকাণ্ডগুলোতে এমন প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছেন? কেন তারা আক্রান্ত, আহত কিংবা মৃতদের পাশে দাঁড়াচ্ছেন না? এমন তো না যে তারা সকলেই নৈতিকতার দৈন্যদশায় ভুগছেন। দুর্ভাগ্যজনকভাবে জনসমক্ষে কুপিয়ে খুনের ঘটনা বাংলাদেশে মাঝে-মধ্যেই ঘটে। খুব সাম্প্রতিক অতীতেই ঘটেছে। তখন এই শিক্ষিত ও পরিশীলিত মানুষগুলোই কিন্তু উচ্চকিত প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। তাহলে শুধু ২০১৫ সালে এসেই কেন একের পর এক এমন হত্যাকাণ্ডে তারা নিশ্চুপ হয়ে গেলেন?

আরও আশ্চর্যজনক লাগে, যখন দেখি কেউ কেউ মৃতদেরকেই গালি দিচ্ছেন। অনেকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করেন কিংবা তাদের লেখাকে তুলে এনে এই হত্যা জাস্টিফাই(!) করার চেষ্টা করেন। তাদের এ কাজগুলোর যৌক্তিকতা খুঁজে পাই না। এমন তো না যে মৃতরা আপনার কথা পড়তে শুনতে পারছে, তারা দেখতে পারছে না আপনি কীভাবে অনবরত মুখ দিয়ে উগরে দিচ্ছেন মল ও মূত্র! এটা বরং জীবিতদের উদ্দেশ্যেই, যারা এখনও বেঁচে আছেন সহযাত্রীর খুনের দগদগে স্মৃতি নিয়ে, আপনি তাদেরকে নিজের ক্ষুদ্র মস্তিষ্কের কূপমণ্ডুকতা জোরেশোরে জানিয়ে দিতে চাচ্ছেন। আমার মতে, এটা অরণ্যে রোদন। আপনাদের এই প্রয়াসটুকু মাঠে মারা যাবে। কারণ যারা বিজ্ঞানমনস্ক, মুক্তমনা, মুক্তবুদ্ধির চর্চা করেন, তারা আপনার মতামতকে থোড়াই কেয়ার করেন! অমন অন্তঃসারশূন্য মতামত আগেও ছিল, এখনও আছে, ভবিষ্যতেও থাকবে। সেগুলো কানে তুলতে হয় না!

যারা মনে মনে এই লেখকদের লেখার বিষয়গুলোকে অপরাধের নামান্তর মনে করেন, এবং শাস্তি হিসেবে মৃত্যু থেকে শুরু করে অন্যান্য লঘুতর শাস্তিকে উপযুক্ত মনে করেন, তাদের মানসিক ডিগবাজিটুকু বিশ্লেষণ করলে চমৎকার কিছু ব্যাপার পাওয়া যায়। তারা যখন নিজেদের বক্তব্য উপস্থাপন করেন, তখন আশ্চর্যজনকভাবে তা একটি বহুল প্রচলিত টেমপ্লেটের সাথে মিলে যায়।
আমিও _____ চাই, কিন্তু _____ হতে হবে।

কী? টেমপ্লেটটি পরিচিত লাগছে কি? হ্যাঁ, ঠিকই ধরেছেন! এটি মুক্তিযুদ্ধের যুদ্ধাপরাধীদের সমর্থকদের টেমপ্লেট। মুক্তিযুদ্ধের যুদ্ধাপরাধী রাজনৈতিক দল জামাতে ইসলামী ও তাদের দোসর বিএনপি’র সমর্থকরা বিভিন্ন সময়ে-অসময়ে একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীদেরকে বাঁচাতে যে সব রচনা করেন, সেগুলোর সবই কম-বেশি এই টেমপ্লেটে গড়া।

২০১৫ সালে দেখলাম লেখক-ব্লগার-প্রকাশকের হত্যাকাণ্ডের পর খুনীর এপোলজিস্টরা আস্তে ডিগবাজি দিল। সে ডিগবাজির সময় তারা সেই একই টেমপ্লেট ব্যবহার করলেন। “আমিও এই খুনের বিচার চাই, কিন্তু ব্লগাররা নাস্তিকতা ও ধর্মকে অবমাননাকর লেখালেখি করে ঠিক করেন নি“, “এমন ন্যাক্কারজনক হত্যার নিন্দা করি, কিন্তু এমন উস্কানিমূলক লেখা লিখে তারা ঠিক করেন নি“, ইত্যাদি গৎবাঁধা কিছু ছাঁচের কথাই বলতে দেখেছি।

আপনি যদি এভাবে কিছু লিখে থাকেন,বলে থাকেন, কিংবা নিতান্তই মনে মনে চিন্তা করে থাকেন, তাহলে আপনার জন্য একটি খুব দুঃসংবাদ আছে। আপনি সজ্ঞানে বা নিজের অজান্তেই একজন প্রতিক্রিয়াশীল চিন্তাধারার মানুষ হয়ে উঠেছেন। প্রতিক্রিয়াশীলতাকে আমরা একেকজন একেকভাবে সংজ্ঞায়িত করি। তাই ভুল বুঝে ক্ষেপে যাবেন না, আগে আমার সংজ্ঞাটি শুনুন। আমার মতে প্রতিক্রিয়াশীল বা রিয়্যাকশনারি সেই ব্যক্তি যে সময়ের সাথে সাথে মানুষের সামগ্রিক সভ্যতার উন্নতিকে নিজের ভেতরে ধারণ করতে পারছেন না। আমরা বড় বড় হতে হতে নিজেদের পরিবেশ থেকে শিখতে শুরু করি। একটা নির্দিষ্ট বয়সের পর অনেকেই আর শিখতে চান না। ফুলস্টপ দিয়ে দিতে চান। তারপর থেকে তিনি গতকাল যা ভেবেছেন, সেটুকু নিয়েই আগামীকাল কাটিয়ে দিতে চান। এতে কোন সমস্যা নেই, কে কীভাবে জীবন-যাপন করবেন সেটা একান্তই তার নিজের ব্যাপার। আপনি যদি গতকালের চিন্তা নিয়ে বাকি জীবন কাটিয়ে দেন, তাতে সুখী হন, তবে বেশ তো!

সমস্যা সৃষ্টি হয় যখন আপনি একদিন টের পাবেন যে আপনার চারপাশের পৃথিবী আপনার চিন্তাধারার সাথে আর মিল খাচ্ছে না। তখন তাল মিলাতে গিয়ে দেখেন কিছুই আর আগের মতো নেই। আপনি যা ঠিক মনে করতেন, তার কিছু কিছু এখন ভুল বলে গণ্য হয়। আপনি যা ভুল ভাবতেন, তার কিছু কিছু সবাই সঠিক বলে মনে করছে। শুধু তাই না! সমাজও ধীরে ধীরে বদলে যাচ্ছে। এবং মনে মনে আপনি ক্ষেপে উঠতে থাকেন, “কেন এই হতচ্ছাড়া সমাজ বদলাচ্ছে!” আপনি চারপাশের সবকিছু নিয়ে তখন বিরক্ত ও ক্ষুব্ধ। এই রাগের একটি অংশ গিয়ে পড়ে তরুণ প্রজন্মের উপরে। আপনি বলেন, “এই হোপলেস অর্বাচীন তরুণরা কোন কাজের না, এমনকি একটা ঢেঁড়শের চাষও তাদের দিয়ে হয় না!” কিংবা আপনি রেগে ওঠেন পরিবর্তন ঘটানো নির্দিষ্ট কোন গ্রুপের ওপর। সেই গ্রুপকে টার্গেট করে তাদের ব্যাপারে কিছু নির্দিষ্ট স্টেরিওটাইপ বলে বলে সবাইকে রাগিয়ে তুলতে চান। যেমন আপনি হয়তো লিখে বসলেন “নাস্তিকের চরিত”, কারণ আপনি নাস্তিকতার উপরে রেগে আছেন। বিষয়টি আপনি হয়তো দশ বা বিশ বছর আগে বুঝতেন, তখনকার সমসাময়িক নাস্তিকতার স্বরূপ জানতেন। কিন্তু আজ দশ বা বিশ বছর পরে আপনি আর নতুন নাস্তিকতার সংজ্ঞার সাথে তাল মিলিয়ে চলতে পারছেন না। তাই তারা খারাপ!

আমার সংজ্ঞানুযায়ী এই মন-মানসিকতা ধারণ করলে আপনি একজন প্রতিক্রিয়াশীল। এখানে একটু বলে রাখি যে, প্রতিক্রিয়াশীল হওয়া কোন ফৌজদারি অপরাধ নয়। ঠিক একইভাবে প্রতিক্রিয়াশীলের বিপরীত মানুষ তথা প্রগতিশীল হওয়াও কোন পূণ্যের কাজ না। এইগুলো নিছকই মানুষের “ওয়ার্ল্ড ভিউ”। একজন মানুষ তার চারপাশের পরিবেশকে কীভাবে দেখে, কীভাবে সে নিজেকে সেখানে খাপ খাইয়ে নেয়, কিংবা কীভাবে সে পরিবেশকে নিজের প্রয়োজন অনুযায়ী বদলে ফেলতে চেষ্টা করে – তার মাপকাঠি মাত্র। প্রগতিশীল মানুষেরা মূলত নিজেদের চিন্তাধারাকে সমাজের বদলের সাথে আপডেট করে নিতে পারে। মানুষ যত সভ্য হয়ে উঠছে, ততই স্বাধীনতাকামী হয়ে উঠছে।

মাত্র একশ’ বছর আগেও অনেক দেশে অর্ধেকের বেশি মানুষের (নারী ও দাস) ভোটাধিকার ছিল না। গণতন্ত্র গুটিকয় দেশে সবে চালু হয়েছে। অনেক দেশে রাজা-রাজড়ার শাসন চলছিল। আর এখন? রাজারা অতীত, নামমাত্র অলঙ্কারিক দুয়েকটা রাণী ও রাজা টিঁকে আছে তেলাপোকার মতো অভিযোজিত হয়ে। বেশিরভাগ উন্নত ও সভ্য দেশেই গণতন্ত্র চালু হয়েছে (কিছু ব্যতিক্রম আছে যদিও), আর ভোটের অধিকার মৌলিক অধিকারের সমতুল্য হয়ে উঠেছে।

আপনি হয়তো টের পান নি, কিন্তু গত তিরিশ চল্লিশ বছরে মৌলিক অধিকারের মধ্যে বাক-স্বাধীনতাও যোগ হয়ে গেছে – অনেকটাই! মানুষের উন্নত ও সভ্য অংশটুকুর সকলেই মেনে নিয়েছেন যে সকলের চিন্তার ও সে চিন্তা প্রকাশের সমান অধিকার আছে। সে চিন্তাকে নীরিক্ষার ভেতর দিয়ে যেতে হবে, অন্যেরা সেটা যাচাই-বাছাই করবেন, কারো ভাল লাগলে প্রশংসা ও সমর্থন করবেন, কারো খারাপ লাগলে নিন্দা ও প্রতিবাদ করবেন। কিন্তু পুরো বিষয়টাই হবে সভ্য জগতে, বিনা রক্তপাতে। এভাবেই “ট্রায়াল ও এরর” পদ্ধতিতে আমরা খারাপ আইডিয়াগুলো বর্জন করবো এবং ভাল আইডিয়াগুলোকে প্রতিষ্ঠিত করবো।

পৃথিবীর অনেক অংশেই এই খবর পৌঁছায় নি। দুঃখের বিষয়, তার ভেতর বাংলাদেশও একটি। বাংলাদেশের অসংখ্য মানুষ এখনও জানেনই না যে কতটা বদলে গেছে বিশ্ব! এজন্যই বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক ড. শামসুজ্জামান খান গতকাল প্রকাশকদের বলেন উস্কানিমূলক বই প্রকাশ না করতে। এজন্যই পুলিশের আইজিপি শহীদুল হক গত আগস্টে নীলাদ্রি চট্টোপাধ্যায় নিলয় খুনের দুইদিন পরে ব্লগারদের বলেছেন সীমা লঙ্ঘন না করতে। এজন্যই মে মাসে অনন্ত বিজয় দাসের খুনের পর সজীব ওয়াজেদ জয় বলেছেন বিষয়টি স্পর্শকাতর, আওয়ামী লীগ কখনই ‘নাস্তিক’ হিসেবে পরিচিত হতে চায় না

এভাবে দায়িত্বশীল ও ক্ষমতাশীল ব্যক্তিবর্গ যখন আধুনিক বিশ্বের চোখে প্রাগৈতিহাসিক চিন্তাধারাকে ফুটিয়ে তুলতে থাকেন, তখন একজন বাংলাদেশি হিসেবে আমি লজ্জিত হই। আমরা এই তথ্য-প্রযুক্তির যুগেও কতো পিছিয়ে আছি, তাই না? এ যে গুগল ক্রোম আর মজিলা ফায়ারফক্সের যুগে কেউ নেটস্কেপ ন্যাভিগেটর ব্রাউজার ব্যবহার করার মতো ব্যাপার!

আমার আরও মনে হয়, যাদের বয়স তিরিশের বেশি, তাদের মাঝে খুব গুটিকয় প্রগতিশীল বিশ্বের বদলে যাবার ঘটনাটি ধরতে পেরেছেন। তারা নিজেদের আপডেট করে দিয়েছেন। গত এক বছরে এতগুলো হত্যাকাণ্ড নিয়ে হাসান আজিজুল হক, ড. আনিসুজ্জামান, ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল প্রমুখ কী কী লিখেছেন সেগুলো পড়লে মোটামুটি প্রগতিশীলদের চিন্তাভাবনার মূলসূত্রটি ধরতে পারবেন। আর পারবেন অজস্র ব্লগারদের অসংখ্য প্রতিবাদের মাঝে। ব্লগ ও ফেসবুকে তারা ক্রমাগত বলে গেছেন। অনেক সাধারণ মানুষও তাদের সাথে গলা মিলিয়েছেন (সত্যিই!)। তারা কেউ ব্লগার নন, নাস্তিক নন, ধর্মবিদ্বেষী নন, আঁতেল নন, সুশীল নন। তারা আপনার আমার মতোই নিতান্ত মামুলি জনসাধারণের অংশ। তবু তারা আধুনিক বিশ্বের রেললাইনে কান পেতে আগমনী ট্রেনের কম্পাঙ্ক অনুভব করতে পেরেছেন। সেই ট্রেন আসছে।

আজ যখন একজন শামসুজ্জামান, একজন শহীদুল হক, একজন সজীব ওয়াজেদকে দেখে কেবলই মনে হতে থাকে যে তারা সেই দুর্দান্ত গতিময় ট্রেনের ব্যাপারে ওয়াকিবহাল নন, প্রাণপণে চাইছেন – সে ট্রেনটিকে থামিয়ে দেয়ার সর্বোচ্চ চেষ্টা করছেন। পদার্থবিদ্যার ওপর আমার ভরসা আছে। সে সূত্রমতে, এই ভরবেগের একটি ট্রেন থামানোর শক্তি বা পন্থা তাদের কারোরই জানা নেই!

=0=
ছবি কৃতজ্ঞতাঃ আফরিন তানজিলা