ববি রে সিম্মনস। স্টেজ নেম “বব”। অ্যামেরিকান র‍্যাপার। এই মহান ব্যাক্তিকে শুধু র‍্যাপার হিসেবে পরিচয় করিয়ে দিলে ভুল হবে। কারন র‍্যাপ গানের পাশাপাশি তিনি এখন রীতিমত মহাবিশ্ব নিয়ে গবেষণা করেন। সম্প্রতি তিনি বেশ বড়সড় একটি গবেষণার ফল প্রকাশ করেছেন। তার গবেষণায় দেখা গেছে যে- পৃথিবী আসলে সমতল। ঐ, “পৃথিবী গোলাকার (বিজ্ঞানের মত), পৃথিবী দুম্বার ডিমের মত(ডাক্তার জাকির নায়েকের মত) ” এইসব কথা আর চলবে না। তিনি বিভিন্ন প্রকার ছবিজাত উপাত্তের সাহায্যে প্রমাণ করে দেখিয়েছেন যে, “পৃথিবী মূলত সমতল; বিজ্ঞানীরা এটা বুঝতে না পেরে গোলাকার বলে মেনে নিয়েছেন”। তবে বিজ্ঞানীদের এই অপপ্রচারের পেছনে কোন উদ্দেশ্য আছে কি’না তা নিয়ে তেমন কিছু বলেন নি ।

B.o.B_UIT_2013_(cropped)

ঘটনা এখানেই শেষ না। ঘটনাতো মাত্র শুরু। এই বিখ্যাত র‍্যাপার তার বিখ্যাত গবেষণার কথা নিউটনের মত লুকিয়ে রাখলেন না। সরাসরি টুইট করে দিতে থাকলেন । আর এখানেই বাঁধল সমস্যা। অ্যামেরিকার জ্যোতিঃপদার্থবিদ Neil deGrasse Tyson এসে তার টুইটে কমেন্ট করেলেন। প্রতিবাদ জানালেন। বোঝানোর চেষ্টা করেলেন যে তার এই ধারণা ভুল। কিন্তু র‍্যাপার মানুষ করছে গবেষণা; সেটাকে ডিফেন্ড করেলেই তো হবেনা। এইবার র‍্যাপার সাহেব, Neil deGrasse Tyson কে নিয়ে একটি র‍্যাপ গান তৈরি করেলন। সেটা আপলোডও করে দিলেন। সিএনএন এটা নিয়ে একটা নিউজও করল।

অনেকেই জানেন র‍্যাপারদের গানের লিরিকগুলো মূলত এক ধরনের ব্যাটল। দেশের অন্য যেসব র‍্যাপার থাকে তাদের পচানোটাই লিরিকের মূল উপাদান। তো র‍্যাপার সাহেব টাইসনকে নিয়ে তার স্বভাবমতোই একটি র‍্যাপ ব্যাটল শুরু করলেন। সে যাই হোক। র‍্যাপ ব্যাটলের জবাব বিজ্ঞানের যুক্তি দিয়ে দিলে কোন লাভ নাই। র‍্যাপের জবার র‍্যাপেই দিতে হবে। টাইসন নিজে র‍্যাপ না জানলে কি হবে, তার র‍্যাপ জানা ভক্তের অভাব নাই। ববের র‍্যাপের জবাবে তিনিও একটি র‍্যাপ আপলোড করে দিলেন।


এই ঘটনা কিন্তু খুব পুরনো না। ববের টুইটারে দেখতে পাবেন যে এটা ২৬ জানুয়ারির ঘটনা। আমার মনে আছে, বেশ কয়েক বছর আগে ইউটিউবে কি একটা ডকুমেন্টরি সার্চ করার সময় আমি একটা ভিডিও পেয়েছিলাম। সেখানে এক স্মার্ট গাই দেখাচ্ছেন, কেন পৃথিবী সমতল। আমি কিছুটা বলদ হয়ে গেলাম। এখনো এই’মাপের বদল কোন গোয়ালে থাকে !!! কিন্তু আমি ষাঁড় বনে গেলাম যখন দেখলাম- বেশ কয়েকটি সাইট আছে, এমনকি পৃথিবীতে বেশ কয়েকটি সোসাইটি আছে যারা পৃথিবী সমতল প্রমাণ করার জন্য মিলিয়ন ডলার খরচ করে কিসব উদ্ভট ভিডিও তৈরি করছে ।

অনেকেই ভাবতে পারেন আজকাল প্রযুক্তির এত রমরমা যুগে এসব পাগলামির সুযোগ কোথায়? পৃথিবীর একটি স্যাটেলাইট ইমেজ হাতে ধরিয়ে দিলেই তো হয়। কিন্তু না, আপনার ধারণা ভুল। এসবে কাজ হবে না। এই নতুন ধারার বিজ্ঞানীরা মনে করেন যে- পৃথিবীতে স্যাটেলাইট বলে কোন শব্দ নাই । বিজ্ঞানীরা মানুষকে ঘোল খাওয়ানোর জন্য অনেক উচ্চ প্রযুক্তির কিছু ড্রোনের সাহায্যে ছবি তুলে সেগুলোকে স্যাটেলাইট ইমেজ হিসেবে চালিয়ে দেন। আর ঐ ছবিগুলোকে পরবর্তীতে ফটোশপ বা কোন ইমেজ এডিটিং প্রোগ্রামের সাহায্যে গোলাকার দেখিয়ে প্রচার করেন। তাই আপনি এই মহান বিজ্ঞানীদের এত সহজে ঘায়েল করতে পারবেন না ।