একটি ছোট্ট মেয়ে শিশু পরিপূর্ণ নারী হয়ে উঠছে; মাতৃত্বই যে নারীর আদিমতম গন্তব্য সেই নারীত্বের সাধ পাওয়ার জন্য কত না কাঠ-খড় পোড়াতে হয়! তেমনি নারী হিসেবে পূর্ণতা প্রাপ্তির জন্যও একটি সহজ স্বাভাবিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হয় একটি কিশোরী মেয়েকে। যার নাম ঋতুস্রাব বা রজোঃস্রাব। প্রতিমাসে নিয়ম করে ঘটনাটি ঘটে বলেই ‘মাসিক’ নামে খুব সহজে একে প্রকাশ করা হয়ে থাকে । মেয়েদের ঋতুবতী হওয়ার সমসাময়িক আরও কয়েকটি ঘটনা হল স্তনের উদ্ভেদ, যৌনকেশ ও বগলের তলায় কেশের আগমন, এবং হঠাত উচ্চতা ও ওজন বৃদ্ধি।প্রতিটি মেয়ে শিশুর জীবনে এটি অত্যন্ত স্বাভাবিক এক জৈবিক প্রক্রিয়া, যা না ঘটলেই অস্বাভাবিক মনে করতে হবে।

সাধারনতঃ ১১-১৪ বছর বয়সে সব মেয়ে শিশুকেই এই মাসিকের ঘটনার মধ্য দিয়ে জীবনের এক সুদীর্ঘ পথ পাড়ি দেবার শুভারম্ভ(?) করতে হয়। এর গড় সময়কাল ১৩-৪৯ বছর বলেই ধরা হয়। তবে নয় থেকে আঠারো যে কোন বয়সেই এটি শুরু হওয়াটা অস্বাভাবিক নয়। ঋতুস্রাব শুরু হওয়ার বয়স অনেকগুলি কারণে ভিন্ন হতে পারে, যেমন; শরীরের স্নেহ বা ফ্যাটের পরিমান বেশি থাকা, বিভিন্ন আবহাওয়া ও সংস্কৃতির আবহে বেড়ে ওঠা মেয়েদের প্রথম ঋতুস্রাব শুরুর বয়সে ভিন্নতা হতে পারে। যেমন তাইওয়ানের মেয়েদের প্রথম ঋতুবতী হওয়ার গড় বয়স এবং আমেরিকার মেয়েদের প্রথম ঋতুবতী হওয়ার গড় বয়স আলাদা। আবার তাদের খাদ্যাভ্যাস, ওজন, জাতি, সাংস্কৃতিক আবহ, এবং পারিবারিক ইতিহাসের ভিন্নতার ভিত্তিতে একই দেশের মেয়েদের প্রথম ঋতুবতী হওয়ার গড় বয়স বিভিন্ন হতে পারে।আবার গ্রীষ্মপ্রধান দেশের মেয়েদের ঋতুবতী হবার বয়স শীত প্রধান দেশের তুলনায় এগিয়ে থাকে।

মানব দেহের প্রজনন প্রক্রিয়া হরমোন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। হরমোন হল রক্তধারায় এবং মস্তিষ্কে অবস্থিত এক প্রকার রাসায়নিক যা আমাদের শরীরের এক অংশ থেকে অপর অংশে সংকেত পৌঁছে দেয়। নারীদেহে যৌন হরমোন সাধারণতঃ দু’প্রকারঃ ইস্ট্রজেন এবং প্রোজেস্টেরোন। শরীরে যৌন হরমোনগুলির পরিমাণ শৈশবে কম থাকে, প্রজননক্ষম বয়সে ভীষণ বৃদ্ধি পায়। তারপর এগুলি ক্রমশঃ কমতে থাকে ও রজোঃনিবৃত্তির পরে এগুলির অনুপাত বদলে যায়। প্রথম ঋতুস্রাবের দিন থেকে রজোঃনিবৃত্তি পর্যন্ত জীবনে নারীরা যে সমস্ত পরিবর্তন অনুভব করে, সেগুলি এই হরমোনগুলির উপস্থিতির আনুপাতিক হার কমা-বাড়ার জন্যেই হয়।

এই হরমোনের প্রভাবেই প্রতি মাসে একটি পরিণত ডিম্বকোষ ওভারি থেকে বেরিয়ে পড়ে। এটি ঘটে ঋতুচক্রের ১০ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে। অতঃপর গর্ভনালী বেয়ে ডিম্বকোষটি চলে যায় জরায়ুতে। ডিম্বকোষটি বেরিয়ে যাওয়ায় ওভারিতে সৃষ্টি হয় একটি হলুদ রঙের তরল পদার্থ। এ থেকেই ‘প্রজেস্টেরোন’ নামে এক প্রকার হরমোন নিঃসৃত হয়ে জরায়ুর বৃদ্ধি ও নিয়মিত মাসিকের সূত্রপাত ঘটায়। অন্যভাবে বলা যায়, ঋতুস্রাব বলতে বোঝায় ডিম্বাশয় থেকে নির্গত একটি পরিনত ডিম্বাণু যা জরায়ুতে এসে পুরুষের শুক্রাণুর সাথে মিলিত হবার অপেক্ষায় উদগ্রীব হয়ে থাকে। মিলিত হতে সক্ষম হলে গর্ভধারণ হয়; আর মিলিত হতে না পারলে অভিমানে ফেটে বেরিয়ে আসে, সাথে নিয়ে জরায়ু গাত্রের শ্লেষ্মা, গলিত রক্ত আর টিস্যু। অনেকে একে ‘জরায়ুর কান্না’ নামেও অভিহিত করেছেন। সঙ্গীকে না পাওয়ার বেদনায় ভেঙ্গে পড়ে পরিণত ডিম্বানু; আর তাই কাঁদে জরায়ু। তবে এই কান্নাকাটিও কিছু নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে একটি চক্রে আবর্তিত হয়। ইসট্রোজেন ও প্রজেস্টেরোনের প্রভাবেই ২৮ দিন অন্তর চক্রাকারে পরিবর্তনের ফলে হয় নিয়মিত মাসিক ঋতুস্রাব। প্রতিমাসে সাধারনতঃ ৩-৭ দিন এই ঋতুস্রাব চলে। কারো কারো ক্ষেত্রে এর ব্যতিক্রম হতে পারে। এই চক্র ঋতুস্রাবের প্রথম দিন থেকে পরবর্তী মাসের শুরুর আগের দিন পর্যন্ত ২৮-৩৫ দিনের মধ্যেই নির্ধারিত থাকে।

ঋতুস্রাবের সময়ে স্বাভাবিক উপস্বর্গ হিসেবে অস্বাভাবিক পেটে ব্যথা, বমি বমি ভাব, ক্ষুধামন্দা, জ্বর জ্বর ভাব, শরীর ব্যাথা, কোমর ব্যথা, স্তনের নিপেলে ব্যথা সাধারণতঃ কয়েকদিন আগ থেকে শুরু হয়ে শেষ পর্যন্ত চলে। এসময়ে বেশকিছু মানসিক অবস্থার মধ্য দিয়েও যেতে হয় মেয়েদেরকে; সেটিও হরমোনের কারণেই ঘটে থাকে। যেমন; খিটখিটে মেজাজ, বিষণ্ণতা, নিসঃঙ্গতা, হতাশা কিম্বা অকারণ দুঃখবোধ । এ সময় প্রায় সব মেয়েরই খুব বেশি যৌনসঙ্গমের বাসনা হয়। যদিও এটি অস্বাস্থ্যকর নয়; তবুও সমাজে তথা প্রচলিত সকল ধর্মে এ বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা জারী আছে যা পৃথিবীর বয়সের মতোই পুরাতন । এ সময়ে আমিষ খাওয়া, রান্না করা-রান্নাঘরে যাওয়া, পুরুষদেরকে স্পর্শ করা, একই বিছানায় থাকা, ধর্মীয় উপসানলয় তথা সামাজিক আচার অনুষ্ঠানে উপস্থিতির ক্ষেত্রে পবিত্র-অপবিত্রতা বিষয়ে অযুত বছরের সংস্কার রয়েছে আমাদের দেশ সহ দক্ষিণ এশিয়া ও আফ্রিকার কিছু দারিদ্র্য পীড়িত দেশে যা ইউনিসেফ এবং ওয়াটার এইডের বিভিন্ন সমীক্ষায় উঠে এসেছে।

প্রথম ঋতুস্রাবের আগে শতকরা ৪১ ভাগ কিশোরীই জানে না এটি কী এবং কেন? শতকরা ৭৮ ভাগ জানে কীভাবে এ সময়ে সামাজিক ট্যাবুগুলো মেনে চলতে হয় এবং কীভাবে এটি জনসমক্ষে আলাপ না করে লুকিয়ে রাখতে হয়। শতকরা ৫৮ ভাগ মনে করে এগুলো দুষিত রক্ত; শরীর থেকে বেরিয়ে যাওয়াই ভাল, আর তাই এসময়ে মেয়েরা অপবিত্র থাকে। এ সময়ে মুক্ত উৎসের কোন পানি ব্যবহার করে নিজেদের পরিচ্ছন্নতা এবং ব্যবহৃত কাপড় পরিস্কার করায় কিম্বা পারিবারিক টয়লেট ব্যবহারেও প্রচলিত ট্যাবু রয়েছে অন্ধ্রপ্রদেশের গ্রামাঞ্চলে, নেপাল, শ্রীলঙ্কাসহ দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে ও আফ্রিকার কিছু দেশে(তথ্য সূত্রঃ মিনোস্ট্রুয়াল হাইজিন ইন সাউথ এশিয়া,ওয়াটার এইড; মিনোস্ট্রুয়াল হাইজিন ম্যানেজমেন্ট ইন স্কুল, ইউনিসেফ)।

এই পরিসংখ্যানে বাংলাদেশ খানিকটা এগিয়ে থাকলেও ‘ঋতুস্রাব’ সবসময়েই জনসমক্ষে আলোচিত বিষয়ের বাইরেই থেকেছে ।স্কুলে মেয়েদের আলাদা টয়লেট, পানি সরবরাহ এবং প্যাড পরিবর্তন তথা ডিসপোজালের জন্য যথেষ্ট ব্যাক্তিগত স্পেস ও ব্যবস্থাপনা না থাকায় কিশোরীদের শিক্ষা থেকে ঝরে পড়া, বাল্য বিবাহ ও মিনোস্ট্রুয়াল আনহাইজেনিক ইস্যুতে নানাবিধ স্বাস্থ্যগত সমস্যার মধ্যে পড়তে হয়। মিনোস্ট্রেসন যেহেতু সর্বদাই একটি অবহেলিত বিষয়; তাই সদা হাস্যোজ্জ্বল মেয়েটিকে রাতারাতি হতে হয় গৃহবন্দী।সবকিছু থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিতে হয়, নিজেকে অপবিত্র মনে করে আড়ালে লুকিয়ে রাখতে হয়। যার দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব পড়ে তার বেড়ে ওঠায়-ব্যক্তিত্বে; অন্তর্মূখিনতা বাসা বাধে চরিত্রে। ধর্মীয় গোঁড়ামি কিম্বা সামাজিক কুসংস্কারের শৃঙ্খলই যে কেবল এজন্য দায়ী, বিষয়টি এতটা সরল সমীকরণ নয়। এর অন্তর্নিহিত মূল প্রোত্থিত রয়েছে পুরুষতন্ত্রের শেকড়ের অনেক গভীরে ।

খুব সাদা চোখে দেখলেই গোচরীভূত হবে, একটি মেয়ের জীবনে প্রজননতন্ত্রের স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় যে শারীরবৃত্তীয় ও আবেগিক পরিবর্তনসমূহ ঘটে, একই বয়সের একটি ছেলের জীবনেও প্রজনন সক্রিয়তা প্রমাণে প্রায় কাছাকাছি ধরনের পরিবর্তন সাধিত হয়। কণ্ঠস্বরের পরিবর্তন, দাঁড়ি গোঁফ ওঠা, বগল ও জননাঙ্গে কেশের উপস্থিতি এবং বীর্যপাত। কিন্তু ছেলেদের এইসব পরিবর্তন নিয়ে সমাজের কোন উচ্চবাচ্য নেই, কোন অস্পৃশ্যতা, শুচিবায়ুতা, লোক-লজ্জা কিম্বা নেই কোন বিধিনিষেধের দেয়াল । বরং ছেলেদের দ্বারা এই সময়ে মেয়েদেরকে উত্যক্ত করার নানারূপ বখাটেপনা-দস্যিপনাকে সমাজ ‘দুষ্টু ছেলে’ বলে প্রাকারান্তরে গ্রহণই করেছে। কেবল নারীকে ছোট করে রাখা, দমিয়ে রাখা, নারীর যা কিছু ভালো যা কিছু গর্বের তাকে হেয় করে দেখার মানসেই এটি করা হয়ে থাকে। ঠিক একটি মেয়ে শিশুকে শৈশবেই তার হাতে খেলার পুতুল তুলে দিয়ে বোঝানো হয় তার পৃথিবীটা চার দেওয়ালে বন্দী; তেমনি হাজারো বিধিনিষেধের দেয়ালে তাকে শৃঙ্খলিত করলেই তার জগত আপনিই ছোট হয়ে যায়।

একথা বলাই বাহুল্য যে, এই সকল কুসংস্কার কিশোরী কিম্বা নারীদের সামগ্রিক জীবনযাপনে এক বিরাট অন্তরায়। যার প্রভাব পড়ছে পরিবার-কর্মক্ষেত্রে এবং গোটা সমাজজীবনের মানোন্নয়নে। যেমনঃ ১) শিক্ষার অধিকার থেকে বঞ্চিত; স্কুলে আলাদা টয়লেট ব্যবস্থাপনা না থাকায় ঋতুস্রাব চলাকালীন পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা বিঘ্নিত হয়; এবং কো-এডুকেশনে এই বিষয়গুলি অধিকতর বিব্রতকর পরিস্থিতির তৈরি করে, কিশোরীরা বাধ্য হয় স্কুল ত্যাগ করতে। ২) স্বাস্থ্যগত সমস্যাঃ সচেতনতা ও ফ্যসিলিটিজের অভাবে ব্যক্তিগত হাইজিন ব্যবস্থাপনা বিঘ্নিত হয়, যা কোনভাবেই স্বাস্থ্যসম্মত নয়, ফলে নানারকম ভ্যাজাইনাল ইনফেকশনে আক্রান্ত হয় অতি সহজে ।৩) মানবাধিকার লঙ্ঘণঃ প্রজনন স্বাস্থ্যতথ্য কিম্বা স্বাস্থ্যসেবা ইস্যুতে সঠিক তথ্যের অভাবে নিজেকে গুটিয়ে রাখে; যথাযথ পরামর্শ, অবকাঠামোগত সুযোগ ও স্বাস্থ্যসম্মত দ্রব্যাদি ব্যবহারের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হওয়া স্পষ্টতঃই নারীর মানবাধিকারের লঙ্ঘণ। এবং সর্বোপরি, ৪) আত্মমর্যাদা হানিঃ ঋতুস্রাবের সময়ে শারীরিক শুদ্ধতা-অশুদ্ধতা বিষয়টি সুস্পষ্টভাবেই ব্যক্তির আত্মসম্মানের সাথে সংযুক্ত ।সুতরাং, মিনোস্ট্রেসনের সামাজিক ট্যাবুসমূহ কেবল নারীর মানবাধিকারই লঙ্ঘন করছেনা, তার প্রজনন স্বাস্থ্যও হচ্ছে সঙ্কটাপন্ন । আর এই লোকসানের সিংহভাগ যাচ্ছে সমাজেরই ঘাড়ে। কারণ, একজন সুস্থ মা-ই কেবল সুস্থ সন্তান জন্ম দিতে পারে। আজকের কিশোরীই কালকের মা। অনাগত প্রজন্মের সুপুষ্ট বীজ লুকিয়ে আছে যার অভ্যন্তরে; তার স্বাস্থ্যশিক্ষা বিশেষতঃ প্রজনন স্বাস্থ্য শিক্ষা জাতীয় শিক্ষা কারিকুলামে অন্তর্ভূক্ত থাকা অবশ্যই বাঞ্ছনীয়। যাতে করে নারী নিজে তথা আগামী দিনের বাবা-ভাইদেরকেও আলাদা করে এই অতি প্রাকৃতিক শারীরিক বিষয়ের অজ্ঞানতা নিয়ে বিভ্রমে পড়তে না হয়। জ্ঞান-বিজ্ঞান আবিষ্কারের সর্বোচ্চ সীমায় পৌঁছেছে যখন মানুষ, তখন যুগ যুগ ধরে সমাজের অস্থি-মজ্জার সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে থাকা এই ট্যাবু ভাঙা আজ কেবল সময়ের দাবী।

এতসব কষ্টকথনের মধ্যেও অত্যন্ত আশার কথা এই যে, এ বছরই প্রথম বিশ্বব্যাপী ঋতুস্রাবের ট্যাবুসমূহ উৎপাটনে সচেতনতার লক্ষ্যে ‘মিনোস্ট্রুয়াল ডে’ অবজারভেশন শুরু হয়েছে। সরকারি-বেসরকারি ও প্রাইভেট কর্পোরেশনের উদ্যোগে নানাবিধ প্রোগ্রাম গৃহীত হয়েছে। সম্প্রতি বাংলাদেশে মিনোস্ট্রেসন হাইজিন ম্যানেজমেন্টকে ন্যাশনাল হাইজিন প্রোমোশন প্রোগ্রামের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এরই আওতায় সকল স্কুলে মেয়েদের জন্য আলাদা টয়লেট প্রতিস্থাপন ও পানি সরবরাহের তাগিদ দিয়ে বাংলাদেশ সরকার জরূরি ভিত্তিতে এক পরিপত্র জারী করেছেন। দাতাগোষ্ঠীর সহায়তার কিশোরীদের স্বাস্থ্যরক্ষায় দেশব্যাপী গৃহিত হয়েছে ‘স্বর্ণ কিশোরী’ প্রোগ্রাম।

দেরিতে হলেও শুরু হয়েছে “ব্রেকিং দ্য সাইলেন্স”- নীরবতা ভেঙ্গে বেরিয়ে এসেছে দিনের আলোতে। অন্ততঃ আজ ঋতুস্রাব নিয়ে সহজভাবে কথা বলার, আলোচনা করার, সমস্যা চিহ্নিত করার দিন এসেছে। আজ শুধু মরমে মরে যাবার, লজ্জায় মাথা নিচু করে স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার দিন নয়। আজ বুক ফুলিয়ে বলার দিন, আমি আগামী প্রজন্মের সুপুষ্ট বীজের ধারক-বাহক; আমাকে লালন কর তেলে-জলে । আদরে সোহাগে পরিচর্যা কর আমার প্রজনন স্বাস্থ্য।

আর অবহেলা নয়, আর নয় অচ্ছুৎ বলে দূরে ঠেলে দেওয়া; অনাগত আগামী প্রজন্মের জন্য চাই উত্তম ক্ষেত্র; চাই উত্তম বীজতলার জন্য সার-পানি আর উত্তম শুশ্রূষা, তবেই সম্ভব উত্তম ফললাভ!

বিঃদ্রঃ লেখাটই সিলেট টুডে প্রকাশ করেছে ডিসেম্বর ১৪, ২০১৫।