লেখক: Sahadat H Hridoy

ব্যাক্তিগত জীবন দিয়ে শুরু করা যাক।

আমি যখন ইঞ্জিনিয়ারিং ভর্তি পরীক্ষা ওয়েটিং লিস্টে টিকলাম। তখন সবাই বললো ‘তুই পড়ছ নাই তাই একটা সিট জুটে নাই কপালে’।
কয়েকদিন পর দেখা গেল আমি ওয়েট লিস্ট থেকে সিএসসি তে চান্স পেয়েছি। তখন সেই ধার্মিকেরা বললো “আল্লাহর রহমতে টিকসোছ , শুকরিয়া কর সেই দয়ালের”।

না টিকলে দোষ টা আমার, আর টিকলে ক্রেডিট টা আল্লার। নবম শ্রেণী থাকা কালে আকস্মিক লম্বা হয়ে শরীর টা রোগা হতে লাগলো দিন দিন। আম্মু আব্বু মহা ব্যস্ত কি জানি কি রোগ হয়েছে? এই বলে এই ডাক্তার সেই ডাক্তারের কাছে দৌড় ঝাপ। আজ যখন জানলো আমি আল্লাই বিশ্বাসী না। তখন বললো “নাস্তিকের উপর এইটা আল্লাহর গজব, দিন দিন শুকাই কাঙ্গাল হয় যাচ্ছে, যাবেই তো কাফিরের এমনি হয়”।
যদি আল্লাহ অবিশ্বাসী বলে আল্লা রোগা করি দিতেছে। তবে, যখন বিশ্বাসী ছিলাম তখন রোগা হয়ে যাচ্ছি কেন তার জন্য ডাক্তারের কাছে যেতে হয়েছিলো কেন? আল্লাহকে বললে হত, সুস্থ করে দিতো?

মাকে একদিন বললাম মা ফোন টা খারাপ। একটা নতুন ফোন কিনে দাও। মা বললো ‘আল্লাহ কে বল, আল্লা ব্যবস্থা করে দিবে’। তারপর ফোন টা ফেলে দিয়ে বললাম আল্লা ব্যবস্থা করে দিবে। কিন্তু বড় আব্বু মারা গেল আমি খবর পেলাম সাত দিনের দিন। কই আল্লা তো তখন আমাকে একবার বলে দিলো না যে তোর বড় আব্বু মারা গেছ?

যাক সেই ব্যক্তিত্বপণা, এবার সামাজিকতায় আসি।

ওরা বলে মুসলিম বাদে অন্য ধর্মিরা বিনা হিসাবে জাহান্নামে। আবার কোরানে বলে ‘ও রাসূল আপনি ওদের কে যে ভাবে বুঝান না কেন? ওরা সৎ পথ পাবে না, আমি ওদের অন্তরে চিল মেরে দিয়েছি। আল্লা ছাড়া অন্য কেঊ তাদেরকে হেদায়েত দিতে পারবে না’। তার মানে অন্যধর্মীদের আল্লা ইচ্ছে করলে হেদায়াত দিতে পারে, রাসূল নবী পাটানোর কি দরকার ছিলো? আবার হেদায়েত না দিয়ে ইচ্ছে করে ওদের জাহান্নামে পাঠাবে। আগুনে পুড়াবে। আল্লাহ তো অসীম পক্ষপাতদুষ্ট?

এই মূহুর্তে আমার এই লেখাটা পোষ্টেড হলো। ওদের কাছে আমাকে নাস্তিক আর কাফের মনে হল। কয়েকজন এসে আমাকে চাপাতী দিয়ে কুপিয়ে মারলো। এখন যারা বিনা কারণে আমাকে কুপিয়ে মারলো ওরা জান্নাতী, আল্লাহর মেহমান, গাজী। আর আমি……… জাহান্নামী! আবার হাদীস বলে ‘একরাত্রী জ্ঞান আহরণ করা, হাজার রাত্রী নফল নামাজ পড়ার চেয়ে উত্তম’ কিন্তু যারা সারা রাত চাপাতী দার দিলো ওরা জান্নাতী আর সারা রাত্রী জেগে জেগে জ্ঞান আহরণ করা আমি হয়ে গেলাম জাহান্নামী!

ওরা নারীদের বলে বোরকা পড়, কেউ যেন তোমাকে দেখতে না পারে। তোমাদের বক্কদেশ ঢেকে রাখো। তবুও কেউ একজন দেখলো খালাতো ভাই, মামাতো ভাই কেউ একজন। ছাত্র মানুষ, প্রেমে পড়ে গেল ছেলেটা। এসে বলেও ফেললো, মেয়েটা অনেক ধার্মিক। বললো ‘ না এইটা হারাম’। ছেলেটা হাত কাটলো, চাকু দিয়ে কেটে মেয়েটার নাম লিখলো, অনেক পিছু পিছু ঘুরলো। তবুও মেয়েটা একি কথাই বললো ‘না প্রেম করা ইসলামে হারাম, মুবিন আল্লাহকে ভয় কর’। কিছু দিন পড়ে একটা ডাক্তার আসলো মেয়েটার বিয়ে প্রস্তাব নিয়ে,প্রচুর টাকা খুড়ির মালিক। আধা ঘণ্টার কথা বার্তায় বিয়ে সম্পূর্ণ। মহরাণা ধার্য হলো ২ লক্ষ টাকা। দুই তিন মাস পরে বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে গেল। দুই লক্ষ টাকা মহরাণা দিয়ে ডাক্তার সাহেব একদম পূর্তপবিত্র হয়ে গেলেন। এখন নতুন আরেক টা বিয়ে করলেও কোন সমস্যা নেয়।

সারাজীবন বোরকা নিচে ঝাপায় রেখে নারী মূল্য দুই লক্ষ টাকা। আর যে ভালবাসলো তার কাছে যাওয়া টা হারাম!

যাক সব যুক্তি খালে,আজ থেকে মুসলিম হয়ে গেলাম। টুপি, পাঞ্জাবি পড়ে আল্লার খুজে মসজিদে গেলাম। নিরবতা পালন করুন, আল্লাহর ঘরে সৌন্দর্য রক্ষা করুণ। নীতিবাক্য পড়ে মনে হল এখানেই আল্লা থাকে। যাক পাওয়া গেল আল্লা কে। নামাজ পড়ে বের হয়ে দেখি নতুন জুতা জোড়া নাই।

যে কিনা একজোড়া জুতা দেখে রাখতে পারে না , সেই কিভাবে দুনিয়া চালন করতেছে?