আপুনি(ফারজানা কবির স্নিগ্ধা) খবরটা দেয়ার পর স্তদ্ধ হয়ে বসে ছিলাম,কোনোকিছু চিন্তা করতে পারছিলাম না। কোনোরকমে টেবিলে এসে ফেসবুক খুলে দেখি, রাস্তায় পরে আছে দাদার রক্তাক্ত দেহ আর রক্তস্নাত বন্যাদি সাহায্যের জন্য ঈসারা করছে লোকজনকে আর নপুংসকরা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে তামাশা দেখছে, অদূরে নির্লিপ্ত দাঁড়িয়ে আছেন আমাদের মহান পুলিশ ভাইয়েরা। এক দু মিনিটের জন্য মনে হোল আমার শ্বাসকষ্ট হচ্ছে, আজো মানতে কষ্ট হচ্ছে আমি দাদার স্বরনিকা লিখছি। এইতো সেদিন কথা হোল বললেন, লেখা ছাড়েন, আরও কিছু কথার পর বললাম , দাদা দেখা হবে একদিন আপনার সাথে, দাদা বললেন অবশ্যই হবে। কই দাদা হোল না তো? আপনি চলে যেতে বাধ্য হলেন দেখা না হওয়ার দেশে। ঠিকাছে দাদা, আপনি ঘুমন শান্তিতে, আমারা জেগে রইলাম আপনার আদর্শের অতন্ত্র প্রহরী হয়ে। কথা দিলাম দাদা আমরা লড়ে যাবো শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে,আপ্নি ঘুমন দাদা। ওরা জানেনা অভিজিৎ রায়কে শারীরিকভাবে হত্যা করা গেলেও তাঁর চেতনাকে হত্যা করা যায় না। তাঁর চেতনায় জন্ম নেবে লাখো অভিজিৎ। আজ আমরা সবাই অভিজিৎ। মুক্তমনা চলছে, চলবে তার আগের নিয়ময়েই, কেউ একে বন্ধ করতে পারবে না। একদল সুশীল বলে বেড়াচ্ছেন অভিজিৎ রায় নাকি ধর্মের সমালোচনা করে নি? আমরা বলি আপনাদের এই “মেলাবেন তিনি মেলাবেন“ তত্ত্ব আমাদের দরকার নেই। অভিজিৎ রায় মনে করতেন ধর্ম এবং বিজ্ঞান সাংঘরসিক, আমরাও তাই মনে করি। অভিজিৎ রায়ের চেতনাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে আপনাদের মতো লোকদের প্রয়োজন নেই। আজ ছদিন হয়ে গেলো আমাদের প্রধানমন্ত্রী এ ব্যাপারে তাঁর কোন বক্তব্য প্রকাশ করেনি, আমার কেন যেন মনে হচ্ছে সরকার খুনিদের মদদ দিচ্ছে। নইলে অভিজিৎ রায়ের লাশ শহীদ মিনারে নিয়ে যেতে দেওয়া হোল না কেন?তাঁর বাবা তো একজন মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। তিনিও অসংখ্য লেখা লিখেছেন মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে। থাবা বাবার মৃত্যুর পর তার পরিবারকে শান্তনা দিতে প্রধানমন্ত্রী গিয়েছিলেন কিন্তু অভিজিৎ রায়ের পরিবারকে একটি শান্তনা বানী তো তিনি শোনালেন না। তাহলে আমরা কি বুঝব থাবা বাবার জন্য মায়াকান্না শুধু কি ছিল আন্দোলনকে হাত করার জন্য?

পৃথিবীর ইতিহাস পাঠ করলেই জানা যায় যুগে যুগে ধর্ম সসময় বলি চড়িয়েছে প্রথাবিরোধীদের, জ্ঞানীদের, তার সময়ের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের কারণ জ্ঞানীর যুক্তি টলিয়ে দেয় ধর্মের ভিত, অসহায় বোধ করেন ধর্মগুরুরা। তাই তাদের বিশ্বাসের যূপকাষ্ঠে বলিহন, ব্রুনু,গ্যালেলিও, ডঃ আজাদ, এবং অভিজিৎ রায়রা। কিন্ত তাঁরা বেঁচে থাকেন মানুষের শ্রদ্ধায়, ভালোবাসায়। অভিজিৎ রায়দের চেতনার মৃত্যু নেই।