বার্ট্রান্ড রাসেল লিখলেন ‘আমি কেনো ধর্মবিশ্বাসী নই’, হুমায়ুন আজাদ লিখলেন ‘আমার অবিশ্বাস’, প্রবীর ঘোষ লিখলেন ‘আমি কেন ঈশ্বরে বিশ্বাস করি না’; আর এখন আমি লিখছি- আমি কিভাবে ঈশ্বরে অবিশ্বাসী হলাম।
আমার জন্ম মুসলিম পরিবারে। ছোটবেলা থেকেই অনেক অভিযোগ অনুযোগ করেছি ঈশ্বরের কাছে। শৈশব থেকে যখন আমার মৃত্যু চিন্তা মাথায় আসতো,- সান্ত্বনা পেতাম এটা ভেবে যে, আমি মরার পরেও মরবো না। আমি যখন কবরে যাব আমার ইন্দ্রিয়গুলো সচল থাকবে, আমার দৃষ্টি থাকবে, চেতনা থাকবে ত্বকের। ছোটবেলা থেকে আমি ভয় পেতাম আমার ঐ অনুভূতিহীনতাকেই। আমি একসময় মরে যাব, একটা গভীর ঘুম দিবো, পৃথিবীর গন্ধ নিব না, ফুল ছুঁয়ে দেখবো না, হাত প্রসারিত করে বাতাসের সামনে দাঁড়াবো না, এগুলো আমি কখনোই মেনে নিতে পারি নি শৈশব থেকে। মানুষ মরে পড়ে থাকে এটা ভেবেই আমি প্রথম কেঁপে উঠেছিলাম ক্লাস ওয়ানে। ছোটবেলা হতে এটা ভাবতে ভালো লাগতো যে, আমার মৃত্যুর পর যে পরকাল আছে সেখানে আমি বেঁচে থাকবো। সেখানেও আমার স্পর্শ থাকবে, দৃষ্টি থাকবে, আমার পার্থিব ভাল লাগা-খারাপ লাগা-যাতনা-সুখবোধ-দুখবোধ থাকবে। আমি ছোটবেলা হতেই নিশ্চিত ছিলাম আমি নরকে যাব। এটা আমার কখনো দুঃখের কারণ হয়নি কারণ নরকে তো আমার অনুভূতি থাকবে। আমি তো বেঁচে থাকবো অনেকগুলো মুহুর্ত ! আমি একসময় ভয় পেতাম ঘুমকেও। কারণ যা আমার অজানা সেখানেই ছিলো আমার ভয়।
আমি যখন আমার চেতনা প্রথম দিকে বুঝতে শুরু করলাম, খুণাক্ষরেও সন্দেহ হয় নি ঈশ্বরের অস্তিত্বে। ঈশ্বর আছেন, আছেন এবং আছেন। ক্লাস ফোরে একবার মনে ভেতর হুট করে প্রশ্ন এসেছিলোঃ যদি না থাকেন? ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। প্রশ্নটা লুকিয়ে রেখেছিলাম একটা কৌটায়। বেশ কয়েকবার তওবাও করেছিলাম। তবুও একসময় জিজ্ঞাসা করেছিলাম, ‘ঈশ্বর এলেন কোথা থেকে?’ ‘ঈশ্বরের সৃষ্টিকর্তা কে?’। এই প্রশ্নগুলো করা মানা ছিলো। এর উত্তর আল্লাহই ভালো জানেন। এসব প্রশ্ন করাও ঠিক না। আমি এধরণের উত্তরে সন্তুষ্ট হতে পারি নি। প্রত্যেক আস্তিকের মনেই এ ধরণের প্রশ্ন প্রথম প্রথম আসে। তারা বিভিন্ন যুক্তির মাধ্যমে এড়িয়ে যান, নিজেকে প্রবোধ দেন। নিজেকে এবং অন্যকে বুঝান যে, আমাদের ক্ষুদ্র জ্ঞানে এগুলো জানা সম্ভব হচ্ছে না। অথবা, একটা পিপড়ে কি মানুষের জন্ম রহস্য জানতে পারে? এ যুক্তিটি অনেককে থামিয়ে দেয়। তবুও কিছু কথা থেকে যায়। পিঁপড়ের যদি প্রশ্ন করা সম্ভব হয় তাহলে উত্তরটাও জানা সম্ভব হতে পারে। হয়তো পিঁপড়ে প্রশ্ন করে না; তবে মানুষ করে। উত্তর না পেলে মানুষের ভালো লাগে না। যারা জ্ঞানের প্রতি অসৎ, একটু ভীতু রুঢ়তার সামনে দাঁড়ানোর, তারা হয়তো পিছিয়ে যায়। আমি অসৎ নই, সম্ভবত ভীতুও নই। এটা নিয়ে গর্ব করার কিছু নেই; তবে উল্লেখ করা যেতে পারে। ক্লাস সিক্সে প্রথম ধারণা পেয়েছি নাস্তিক থাকতে পারে। তাদের জন্যে আমার করুণা হয়েছিলো। খুব অবাক হয়েছিলাম এটা ভেবে যে, মানুষ নাস্তিক হবার মত এতো বোকা কিভাবে হতে পারে ! আমি কখনো নাস্তিক হবো না। মরে গেলেও না। নিজের ভাগ্যকে অনেক ধন্যবাদ দিতাম কারণ আমি মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহন করেছি। আমি যদি মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ না করতাম তাহলে প্রকৃত সত্যটা এত সহজে জানতেই পারতাম না! করুণা হতো হিন্দুদের জন্যেও। তারা কখনো বেহেশতে যাবে না। ক্লাস থ্রিতে আমার এক শিক্ষক ছিলেন অনন্ত কুমার মণ্ডল নামে। উনি আমার অত্যন্ত প্রয় শিক্ষক ছিলেন। যখন জানতে পারলাম হিন্দুরা বেহেশতে যাবে না- খুব মন খারাপ হতো স্যারের জন্যে। আমার মেনে নিতে কষ্ট হচ্ছিলো স্যার বেহেশতে যাবেন না এর একমাত্র কারণ উনি হিন্দু। নামাজ পড়েও দোয়া করেছি উনি যাতে কোন একদিন মোসলমান হয়ে যান। শুধু হিন্দুদের জন্যেই না, পশু পাখির জন্যেও খারাপ লাগতো যখন শুনলাম মৃত্যুর পর এগুলোর কোন বিচার নেই। বেচারিগুলো একেবারের জন্যেই মরে যাবে ! আমার মনে পড়ে, আমি দু কারণে আমার জন্মভাগ্যকে অসংখ্য ধন্যবাদ দিয়েছি। এক, আমি মানুষ হয়ে জন্মেছি। দুই, আমি মুসলমান হয়ে জন্মেছি।
ক্লাস সেভেনেই কোন এক সকালে ঘুম থেকে উঠেই শুনেছিলাম আব্বু বলছে, মৃত্যুর পর কিছু নেই। সেদিন সকালে আমার গা ছমছম করে উঠেছিলো। ছোটবেলা হতে আব্বুকে প্রচুর শ্রদ্ধা করেছি, আব্বুর প্রত্যেকটা কথা বিনা বাক্যে মেনে নিয়েছি। মা যখন ভাত খাওয়াতো ভূতের গল্প বলে, উত্তরে ধনচে ক্ষেতে ডাকে ‘মাউক্কা’ নামের এক ভূত থাকে, এটি বলে ভয় দেখাতো,- তখন একটু একটু বিশ্বাস করেছিলাম ভূতে। এক রাতে (আমি সম্ভবত পড়েশুনা শুরু করি নি) আব্বুকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম, আব্বু ভূত আছে? আব্বু সাথে সাথে বলেছিলোঃ ভূত থাকলে ভূতের সাথে কুস্তি লাগতাম। বুঝে গিয়েছিলাম ভূত নেই। এর পর থেকে আমি আর ভূতে বিশ্বাস রাখি নি। দুনিয়ার সকল মানুষের কথা একদিকে আর আমার বাবার কথা একদিকে। আমার বাবা পৃথিবীর সবচেয়ে জ্ঞানী মানুষ। আমার বাবা ভুল বলেন না, এই বিশ্বাস আমার দীর্ঘদিন ছিলো। সেদিন সকালে যখন বাবার মুখে শুনেছিলাম কাদের যেনো বলছিলো, মৃত্যুর পর কিছু নেই। আরো অনেক কথাই সেদিন বলেছিলো, কিন্তু আজ এ বয়সে আমার কানে বাজছে সেই একটি লাইন, ‘মৃত্যুর পর কিছু নেই’। সারাদিন এই বাক্যটা নিয়ে ভেবেছি। আমার সন্দেহ হয়েছিলো, আব্বু কি কোন ভুল করছে ! আমি মেনে নিতে পারছিলাম না আব্বু কোন ভুল করতে পারে, এটাও গ্রহণ করি নি মৃত্যুর পর কিছু থাকবে না। আমি আজ একটা সত্যি কথা বলিঃ আমি ঈশ্বরকে কখনোই ভয় করি নি; ভয় করেছি মৃত্যুকে। যখন শুনেছিলাম মৃত্যুর চেয়ে বেশি ভয় করতে হয় ঈশ্বরকে আমার মন খারাপ হয়েছিলো এটা ভেবে যে, এই আদেশ আমি কখনোই পালন করতে পারব না। আবার বেশ কিছুক্ষণ মনে মনে হেসেছিলামও, ঈশ্বরকে ভয় পাওয়ার মত ঈশ্বর তখন এমন কিছু করেন নি।
আমার বাবা নাস্তিক নন। সুফিবাদী মানুষ। সেভেন থেকে এসএসসি পর্যন্ত আমাকে এই ভাববাদ শান্তি দিয়েছিলো। প্রথমদিকে এই দর্শন আমাকে খুবই আকর্ষন করতো। তন্ময় হয়ে শুনতাম বাবার কথাগুলো। এখানে আমার সবচেয়ে বেশি হাফ ছাড়ার জায়গা ছিলো এর ধর্ম নিরপেক্ষতা। এখানে মানুষকে মানুষ ভাবা যাচ্ছে এটিই আমার সবচেয়ে বড় সুখের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিলো। খুব ভালো লাগতো রুপকের চালে চালে তাদের বেহেশত দোযখের বর্ণণা, ঈশ্বর, আদম-হাওয়া, মানুষ, শয়তান, রাম, কৃষ্ণ। তাদের কথা ছিলো, মানুষই ঈশ্বর। কথাটা বেশ আকর্ষনীয় হলেও এ-কথাটার এখন আর মূল্য আমার কাছে নেই। তাঁরা ধর্মের বেশ গুঢ় অন্তর্নিহিত আলোচনা করেন, ভারী ভারী ব্যাখ্যা দেন, সমস্ত কিছুকে রুপক বলে চালিয়ে দেন। ইমান, হাশর, নরক, স্বর্গ, আদম, ইবলিশ, ফেরেশতা সবই তাদের কাছে রুপক। ঈশ্বর কোন কথা সরাসরি বলেন নি। তাঁরা দেন নামাজের অন্তর্নিহিত সংজ্ঞা, রোজার অন্তর্নিহিত সংজ্ঞা, পুজোর গুঢ় অর্থ, সত্যিকারের ওযু কাকে বলে। ইন্টারের শেষের দিকে যখন আমি মনে করলাম, এটিতে এখন সন্দেহ তৈরী করা যেতে পারে তখন হঠাত মনে হলো এগুলো তাদের বিভ্রান্তি ছাড়া কিছুই না। ওনারা শুধু শুধু ক্রমেই তাদের কথাগুলোকে জটিল করে তুলছেন, আসলে সমস্ত অন্তঃসারশূন্য। এখন মূলত তাঁরা মুমূর্ষূ ধর্মকে রুপকের স্যালাইনে বাচাচ্ছান। বিবর্তনবাদ বিশ্বাস করতাম ক্লাস নাইন থেকেই। যেদিনই প্রথম বায়োলজি ক্লাসে তুলি মেডাম প্রথম বলেছিলেন, আমাদের মেরুদণ্ডের নিচে এখনো বিলুপ্ত লেজের অংশটা আছে, সেদিন থেকেই বুঝে ফেলেছি এর চেয়ে চমৎকার তত্ত্ব হয় না। ইন্টারের দিকে যখন মনে হলো, সুফিবাদীরা চোখ বন্ধ করে সবকিছু দেখতে চাচ্ছে, তখন মনে হলো আমি অনেক অনেক আগে থেকে আসলে নাস্তিক হয়ে বসে আছি যা এতদিন টেরই পাই নি। একটা লাইনই আমাকে চূড়ান্তভাবে ঈশ্বর এবং ধর্ম থেকে চিরতরে সরিয়ে দিলো, “আজ থেকে দশ লক্ষ্য বছর আগে যখন মানুষ শিকার করে বেড়াতো তখন তাদের ঈশ্বরও ছিলো না, ধর্মও ছিলো না, এবং সেখানে ছিলো না কোন সুফিবাদী”। জীবনটা এরকমইঃ প্রান জন্মাচ্ছে, মরছে। কোথাও কোন ঐশ্বরিকতা নেই। রহস্যময়, অজানা, অচেনা অনেক কিছু থাকতে পারে; কিন্তু নেই কোন ঐশ্বরিকতা। আমার মনে নিভৃত আসনে অথবা আকাশের অনেক অনেক উপড়ে নেই কোন ছড়ি ঘোরানোর মত কেউ। একসময়ের আমাদের যেই শিকারী পূর্বপুরুষ যেভাবে খুব স্বাভাবিকভাবেই জন্মেছিলো এবং মরে গিয়েছে আরো স্বাভাবিকভাবে আমরাও তেমনই মরে যাবো। একসময়ের সক্রেটিস যিনি খুবই জীবন্তভাবে গালে হাত দিয়ে চিন্তা করেছিলেন জীবনের উনিও ক্ষয়ে গিয়েছিলেন সময়ের স্রোতে। এটাই প্রকৃতি। এই বাস্তবতা থেকে আমাকে প্ররোচনা দিয়ে বাচাতে পারবে না কোন ধর্ম; এমনকি কোন ভাববাদী দর্শন। আমি আর কোন কিছুতেই বিশ্বাস রাখার প্রয়োজন মনে করি নি।
আমি জানি প্রত্যেকটা ধার্মিক ঈশ্বরের থেকে বেশি ভয় পায় মৃত্যুকে। এর কারণ অতি সহজ, মৃত্যু ভয়ের পায়ের ছাপ অনুসরণ করেই এসেছে ঈশ্বর। তাই হয়তো নিয়ানডার্থাল প্রজাতিদের ধর্মে কোন ঈশ্বর ছিলো না; ছিলো পরকাল। আমি অনেকটা সময় ধর্মকে একমাত্র আকড়ে রেখেছি একটু বাঁচবো বলে। এখন পারয়ি ভাবি, যখন বিশ্বাস করতাম ঈশ্বরে কত প্রবলভাবেই না করতাম সে বিশ্বাসগুলো! কতো জান্তব ছিলো বিশ্বাসগুলো! আর কত প্রবল অস্তিত্বয়মান! আমার কাছে কত সত্য ছিলো ঈশ্বর আর পরকাল! আজ আমার কাছে এগুলো তারচেয়েও মিথ্যা। আমার অনেক আস্তিক শুভাকাংখী এবং শত্রুরাও বলেন যে আমাকে ধর্মটা একটু ভালো করে জানতে এবং তাদের পবিত্র গ্রন্থখানা ভালো মত পড়ে দেখতে। আমি মনে মনে বেশ কিছুক্ষণ হাসি। অনে ধার্মিকরা নাস্তিকদের কি মনে করে জানি না। মানুষ নিজের ধারণাকে নিজে নিজে অতিক্রম করার ক্ষমতা নিয়ে জন্মায় না। তাদেরওবা কিভাবে দোষারপ করা যাচ্ছে। তবে মুখে বলিঃ আমি আগ্রহী না।
মানুষ ধর্মকে যক্ষের ধন করে আগলে রাখে মৃত্যুভীতির কারণেই। আমি অনেক যুক্তিবাদী মানুষকে দেখেছি, সমস্ত প্রশ্নের মীমাংসা শেষে তাঁরা যখন দেখে ঈশ্বর ছাড়াও আমরা শ্বাস নিচ্ছি প্রানভরে, একটা কালো দেয়াল দেখিয়ে নিজেকে প্রবোধ দিয়ে বিশ্বাস রাখে ঈশ্বরের। আমার তখন খুব অসহায় লাগে তাকে। মানুষ যদি মৃত্যুকে ভয় না পেতো তাহলে কখনোই সে বিশ্বাস রাখতো না পরকালে এবং ঈশ্বরে। যারা এখন একটু ভয়ে ভয়ে বিশ্বাস করে ঈশ্বরের তাদের আর আমার কিছু বলার নেই। মানুষের অস্তিত্বটাই সব। সে যেভাবে ইচ্ছে সেভাবে নিজের অস্তিত্বকে অর্থবহ করতে পারে। মানুষ স্বাধীন। তবে আমি সেটা পারি নি। আমি আমার জ্ঞানকে শোষিত হতে দিবো না কখনোই। আমি জানি এই পৃথিবীর অনেক কিছুই আমার অধিকারে নেই। আমার সিথানের পাশের চিরচেনা ল্যাপটপটাওকে আমি পুরোপুরি অধিকার করতে পারি নি। একমাত্র আমি আমার অধিকারে রাখতে পারি আমার ‘চিন্তাভাবনা’কে। এটি আমি কারো উপড় ছেড়ে দিবো না। আমি হয়তো আমার জীবনের শেষ পর্যন্ত নিজের জ্ঞানকে শোষণের হাত থেকে রক্ষা করার চেষ্টা করবো। জীবনের প্রতিটা পদে পদে, মুখের হাসিতে হেরে যাচ্ছি সমাজ আর জীবনের কাছে। যা আমার অধিকারে তাকেও যদি আমি বুঝে না নিই তাহলে আমি ঠিক কি নিয়ে বাঁচবো। তাছাড়া আমার আর কিই-বা থাকে !
আমি অনেকগুলো কথা বলার জন্যে হাতে তুলে নিয়েছিলাম ল্যাপটপটা। জমে আছে অনেকগুলো কথা। মাইক্রোসোফট ওয়ার্ডের চার পেইজে এসেও দেখা গেলো বলা হলো না কিছু। অবিশ্বাসের কথা অনেক বলেছি। আজ বলতে চেয়েছিলাম দৃষ্টিভঙ্গির কথা। আমার ভেতর জমে জমে যাচ্ছে কথার পাহাড়। এদিকে মানুষ মরছে, ওদিকে ঘাস ফড়িং উড়ছে। এদিকে আগুন জ্বলছে, ওদিকে ফুল ফুটছে। যে যার মত যাকে গালি দিচ্ছে, মারছে, কাটছে, খোঁচাচ্ছে, কষ্ট দিচ্ছে। নিজের বিশ্বাস্বের লোকগুলো ছাড়া আর পৃথিবীর অন্য সকল অস্তিত্ব এখন হয়ে গেছে নিজের কাছে অর্থহীন। প্রত্যেকটা বিশ্বাসের পেছনেই এখন দানা বেঁধেছে মৌলবাদ। সত্যি বলতে কি, আমি এখন কারো প্রতিই সন্তুষ্ট নই। তাই একা একা জোনাকির পিছনে ছুটি। আর মাথার ভেতর উকি দেই সেই দার্শনিক উক্তি, ‘আমি আমার অস্তিত্বটাই প্রমাণ করতে পারি’। (চলবে…)
স্রষ্টার পরিচয় জানার জন্য নির্দিষ্ট একটি জ্ঞান অর্জন করতে হয়, সেটা আপনি অর্জন করেননি তাই আপনি নাস্তিক।
দৃষ্টি শক্তি, স্বাদ শক্তি, শ্রবন শক্তি, ঘ্রাণ শক্তি, ত্বক শক্তি, মেধা শক্তি দ্বারা সৃষ্টিকর্তার পরিচয় পাওয়া যায় না।
নাস্তিক ভাইরা আপনাদের নামগুলো দেখলে মনেই হইনা আপ্নারা নাস্তিক। আপনাদের নামগুলো যদি নাস্তিক টাইপের হুইত তাহলে আপনাদের কথা বিসসাস করা যাইত। আপনাদের তো দ্ররমের প্রতি কোনও বিসসাস নাই তাহলে আপনাদের নামটা দেখে কেনও মনে হবে আপ্নারাই এক এক জন অতি ধাম্রিক লোক। আপনারা কি এমন কোন নাম রাখতে পারেন না যা দেখলে মনে হবে আপ্নারাই একমাত্র মুক্তমনার অধিকারী।
গাজী ফাতিহুন নূর.
লেখাটা পরে খুব ভালো লাগলো. তবে একটা প্রশ্ন আছে যার জবাব কথাও পাচ্ছি না. বিপদের সময় যখন যুক্তি খাটে না, সামনে অন্ধকার দেখা যায় সেই সময় তুমি কিভাবে মনকে সান্তনা দাও? আস্তিকেরা তো ঈশ্বরে বিশ্বাস রেখে বেচে যায়, নাস্তিকেরা এই অবস্থায় কি ভাবে শান্তি পায়?
খানিকটা আমার মত কাহিনি।
পণ্ডশ্রম, পণ্ডশ্রম, পণ্ডশ্রম।[img]http://hqwallbase.com/43436-atheist-quote-wallpaper-1920×1429/[/img] বেনাবনে মুক্তো ছড়িয়ে কি লাভ?
@অজয় রাউত, http://hqwallbase.com/images/big/Atheist-Quote-Wallpaper-1920×1429.jpg
খটকা লাগার জন্য বিন্দুই যথেষ্ট। যাদের মনে “বিন্দু” খটকার জন্ম দিতে পারে না; নিশ্চিত থাকুন সমুদ্র সম খটকাও তাদের মনে খটকার সৃষ্টি করবে না।
মুক্তমনায় স্বাগতম 🙂
গাজী সাহেবের লেখাটি পড়ে খুব ভাল লাগলো। ধর্ম আবিষ্ট পরিবারে জন্মগ্রহন করে সেই আবেশের বেষ্টনী থেকে খুব কম লোকই মুক্ত হতে পারে। আমি বাল্যকালে আল্লাহর ঘরে আজান দিয়ে নামাজ পড়েছি। মসজিদ প্রাঙ্গনে আমগাছ লাগিয়েছি পুন্যির লোভে, যে গাছে এখনও আম ধরে। এতদিনে বুঝতে পেরেছি, যে মনে অবিরত প্রশ্ন জাগে; সকল ঘটনার কারণ জানতে চায় সে মনটাকে কোন বেষ্টনী দিয়ে আগলে রাখা যায় না।
গাজী সাহেবের পরবর্তী লেখাটা পড়বার জন্য অপেক্ষায় থাকলাম।
@বাকীদুল ইসলাম,
আমের ভাগ কি আপনি পাচ্ছেন আর আমের স্বাদ কেমন? পেলে বুঝব যে আপনার পুন্যের লোভের সুন্দর ফল পাচ্ছেন। পুন্য গাছে পুন্যফল, আমি সমস্যা দেখিনা। আমের ভাগ পেলে আমি মসজিদে একশটা গাছ লাগাতে পারব, তবে যত্ন মসজিদ কর্তৃপক্ষকেই নিতে হবে, আমি বড়জোর চারাগুলো কিনে দিতে পারি :))
@অর্ফিউস, না অােমর ভাগ পাবার সুেযাগ েনই , তেব আপিন চাইেল আম না হেলও েতঁতুল েদয়া েযেত পাের । মুসিল্লরা ইহকােলও খােব এবং পরকােলও খােব ৷ আেগ জানেল,শিফ হুযুর ওরেফ েতঁতুল-বাবার জন্য েতঁতুল গাছ লাগাতাম ৷
@ অর্ফিউস,
(টেকনিক্যাল কারণে লেখাটি অসপষ্ট হওয়ায় পুন:সংযোজন করলাম)
না, আমের ভাগ পাবার সুযোগ নেই। তবে আপনি চাইলে আম না হলেও তেঁতুল দেয়া যেতে পারে। মুসল্লিরা ইহকালেও খাবে এবং পরকালেও খাবে। আগে জানলে শফি হুজুর ওরফে তেঁতুল-বাবার জন্য তেুঁতুল গাছ লাগাতাম। ধন্যবাদান্তে -বাকীদুল।
আল্লাহর অনিচ্ছায় কোন ঘটনা ঘটে কি? বলা হয় যে, আল্লাহ্র অনিচ্ছায় কোন ঘটনা ঘটে না। এমনকি গাছের পাতাটিও নড়ে না। বিশেষত তাঁর অনিচ্ছায় যদি কোন ঘটনা ঘটতে পারে তাহা হইলে তাঁহার ‘সর্বশক্তিমান’ নামের সার্থকতা কোথায়? আর যদি আল্লাহর ইচ্ছায়ই সকল ঘটনা ঘটে তবে জীবের দোষ বা পাপ কি? -আরজ আলী মাতুব্বর
নিরাকারের সাথে নিরাকারের পার্থক্য কি? ‘আল্লাহ্’ নিরাকার এবং জীবের ‘প্রাণ’ও নিরাকার। যদি উভয়ই নিরাকার হয়, তবে ‘আল্লাহ’ এবং ‘প্রাণ’ — এই দুইটি নিরাকারের মধ্যে পার্থক্য কি? -আরজ আলী মাতুব্বর
নিরাকার পদার্থ দৃষ্টিগোচর হয় কিরূপে? ধর্মযাজকদের নিকট শোনা যায় যে, বেহেস্তে বিশ্বাসীগণকে আল্লাহ (নূর ও আলোরূপে) দর্শন দান করিবেন। যিনি চির অনন্ত, চির অসীম, তিনি কি চির-নিরাকার নহেন? বিজ্ঞানীদের মতে — স্থূল অথবা সূক্ষ্ম, যে রূপেই হউক না কেন, কোন রকম পদার্থ না হইলে তাহা দৃষ্টিগোচর হয় না। আলো একটি পদার্থ। উহার গতি আছে এবং ওজনও আছে। নিরাকার আল্লাহ যদি তাঁর ভক্তদের মনোরঞ্জেনের জন্য নূর বা আলো রূপ গ্রহণ করিতে পারেন, তা হলে হিন্দুদের ভগবানের ভিন্ন ভিন্ন রূপে আত্মপ্রকাশে অর্থাৎ অবতারে দোষ কি? -আরজ আলী মাতুব্বর
স্থান, কাল ও শক্তি — সৃষ্ট না অসৃষ্ট? এ কথা সত্য যে, ‘সৃষ্টিকর্তা’ বলিয়া যদি কেহ থাকেন, তবে তিনি হইবেন এক ও অদ্বিতীয়। কিন্তু ধর্মজগতে তাঁহাকে চিত্রিত করা হইয়াছে বিবিধ রূপে এবং তাঁহার সংজ্ঞা ও সংখ্যা সব ক্ষেত্রে এক রকম নহে। বিশেষত ধর্মরাজ্যে তাঁহার পরিচয় পাওয়া যায় অনেক ক্ষেত্রেই ‘ব্যক্তি’ রূপে। বলা হয় যে, ঈশ্বর অনাদি, অনন্ত, অসীম ও নিরাকার; অথচ প্রত্যক্ষে না হইলেও পরোক্ষে তাঁহার চোখ, মুখ ও কান আছে — তাহার আভাস পাওয়া যায় অনেক ক্ষেত্রে। এমন কি তাঁহার পুত্র-কন্যা-পরিবারেরও বর্ণনা পাওয়া যায় কোন কোন ক্ষেত্রে। সৃষ্টিকর্তা হইলেন — যিনি সৃষ্টি করেন বা করিয়াছেন। কোন সৃষ্ট পদার্থ স্রষ্টার চেয়ে বয়সে অধিক হইতে পারে না, এমন কি সমবয়সীও না। কোন কুমার একটি হাড়ি তৈয়ার করিল, এক্ষেত্রে হাড়ি কখনও কুমারের বয়োঃজ্যেষ্ঠ বা সমবয়সী হইতে পারে না। অর্থাৎ কর্তার আগে কর্ম অথবা কর্তা ও কর্ম একই মুহূর্তে জন্মিতে পারে না, ইহাই স্বতঃসিদ্ধ নিয়ম। -আরজ আলী মাতুব্বর
সৃষ্টি যুগের পূর্বে কোন যুগ? ধর্মীয় মতে, হঠাৎ পরমেশ্বরের খেয়াল হইল যে, তিনি সৃষ্টি করিবেন জীব ও জগত। তিনি আদেশ দিলেন ‘হইয়া যাও’ — অমনি হইয়া গেল জগত এবং পশু-পাখি, গাছপালা, কীট-পতঙ্গ ও মানুষ্যাদি সবই। বিশ্বচরাচরের যাবতীয় সৃষ্টিকার্য শেষ হইতে সময় লাগিল মাত্র ছয়দিন।১ কিন্তু অনাদিকাল নিষ্ক্রিয় থাকিয়া পরমেশ্বর হঠাৎ সক্রিয় হইলেন কেন, ধর্মযাজকগণ তাহা ব্যাখ্যা করেন না। -আরজ আলী মাতুব্বর
অজ্ঞতা, ভয় আর অমরত্ব লাভের বাসনাই ধর্মের স্রষ্টা। আর আমি ভীতু, অপরিসীম লোভী কিংবা জড়বুদ্ধিসম্পন্ন নই যে ধর্মে বিশ্বাস করবো। গাজী ফাতিহুন নূর, আপনার জন্য শুভেচ্ছা।
ও আলোর পথযাত্রী, এ যে রাত্রি, এখানে থেমোনা…।
@অর্বাচীন, ধন্যবাদ।
:clap সুবাহান আল্লাহ :guli: মারুন ধর্ম কে কিন্তু বিবেককে মাড়েন কেন ?
আপনার বিশ্বাস আপনার কাছে থাক তা নিয়ে মাথা ব্যথা করার আমি কেউ নয় । সব কিছুর বিচার করবেন আল্লাহ । বলুন – সুবাহান আল্লাহ :
কিছু জায়গায় ধর্মের উপর বিশ্বাস লক্ষ করলাম – আমার মতই আপনি ভাবেন- আমি ছোটবেলা হতেই নিশ্চিত ছিলাম আমি নরকে যাব।
কিন্তু আমি যদি বেহেশত না পাই তবে অভিনেতা ধার্মিকদের পাবার কথা নয় । কারন এই সমাজে যা পাপ গ্ন্য মানব সমাজে তা পাপ নয় । সরল অংক এককোটি ধর্ম বিশ্বাসীর সাইন বোর্ড ধারির মধ্যে গুটি কয়েক আসল বাকি সব ফেক । আপনি আপনার মনের ভাব প্রকাশ করেছেন তাই সমাজে নাস্তিক আবার যারা গোপনে ধর্ম ও সৃষ্টিকর্তার হুকুম কে ধর্ষণ করে রঙ মাখা শেয়ালের মত আস্তিক হয়ে থাকেন ।
একজন পতিতা যদি মসজিদে সব গোরস্থানে নিয়ে যাবার খাটলি কিনে দেয় তা নেয়া যাবেনা । অথচ এক জন সুদের ব্যবসিক পাঁচ অকাত্ত নামাজ পড়ে , সে যদি সুদের টাকায় খাটলি কিনে দেয় তা হালাল হয়ে যায় ।
বলুন সুবাহান আল্লাহ ।
লজ্জা করে নাকি জোরে বলুন সুবাহান আল্লাহ ।
সুবাহান আল্লাহ পাঠ্য করলে বেহেশতে একটি বৃক্ষ রোপণ হয় । তাই সর্বদা সুবাহান আল্লাহ পাঠ করবেন । দোযখে গেলেও হয়ত একদিন সে ছায়া তলে যাবার সুযোগ পাবেন ।
আমার মতে ধর্ম ও ঈশ্বর যদি থেকে থাকে হুমায়ুন আজাদকে যারা হত্যা করেছে । তাদের এক সেকেন্ড আগে হলেও যারা একটি দিনের জন্য মুখে নয় মন থেকে ঈমান এনেছে তারা বেহেশতে প্রবেশ করবে । ( যদি কোন কাবিরা গুনাহ না করে থাকে । বলুন – সুবাহান আল্লাহ ।
কারন আমরা ভালো মানুষ হতে পাড়লে ভালো ধার্মিক হতে পারবো । ত্রিশ বছর পথ চলে তিন চার জন মানুষ পেয়েছি তাদের একজন ভালো ধার্মিক কিন্তু সেও মাঝে মাঝে দুই এক অকাত্ত নামাজ ছেড়ে দেই ইহকালিন প্রয়োজনে । তবু আমি তাকে মুসলিম মনে করি । আমার দেখা অনেকে আছে পাঁচ অকাত্ত নামাজ পড়ে তবু তাদের মুসলিম তো দুরের কথা মানুষ ভাবতে পারিনা ।
আমি মসজিদ , মাজার , ভিক্ষুকদের রক্তপানি করে আয় করা হালাল টাকা দান করে আল্লহর কাছে প্রাথনা করেছি – বাংলাদেশের মানুষ গুলোকে মানুষ বানিয়ে দাও ?!
কিন্তু আমি তোতলা বলে আল্লাহ ভুল শুনেছে আমার কথা তিনি আমাদের দেশের অদিকাংশ মানুষ গুলোকে মাউস বানিয়ে দিয়েছেন ! ৯?
যারা শেখ হাসিনা , খালেদা জিয়া , অন্যান্য নেতাদের কথায় মানবতার মুখে চুন কালি মাক্ষাছে মহানন্দে । আমার মত নিরীহ দের হতে হয় তাদের গ্রাস ! আমার স্বাধীনতা ও রাষ্ট্রীয় অধিকারে হস্তক্ষেপ করে তারা প্রতিনিয়ত । তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর বাহুবল যখন না থাকে আল্লাহর কাছে বিচার করে অনেকে । (N) আল্লাহ তখন থুতু ছিটায় সেই অসহায় মানুষ টির মুখে !?সব দোষ শয়তানের কাঁধে ফেলে দেয়া হয় । বলুন – সুবাহান আল্লাহ
মানুষ যদি মৃত্যুকে ভয় না পেতো তাহলে কখনোই সে বিশ্বাস রাখতো না পরকালে এবং ঈশ্বরে। যারা এখন একটু ভয়ে ভয়ে বিশ্বাস করে ঈশ্বরের তাদের আর আমার কিছু বলার নেই। মানুষের অস্তিত্বটাই সব। সে যেভাবে ইচ্ছে সেভাবে নিজের অস্তিত্বকে অর্থবহ করতে পারে। মানুষ স্বাধীন। কিন্তু পরাধীন !!!! কারন মানুষ ক্ষমতাসীনদের দাস সৃষ্টিকর্তার কৃতদাস । – বলুন – ……… ! (N) (Y)
লেখাটি মনদিয়েই পড়লাম, খুবই আবেগ প্রবন লেখা সাধারণত এই এটাই হয় । লেখকের সাথে বিতর্ক করা আমার উদ্দেশ্য না, তবে গঠনমূলক আলোচনা হতে পারে মার্জিত ভাবে । আমি আল্লাহর অস্তিত্বের অনেক গুলো প্রমাণ ধারাবাহিক ভাবে লেখার চেষ্টা করছি আত ঠিক এমন সময়ে এই লেখাটি চোখে পড়ল । তাই ভাবলাম যতটুকু লিখেছি ততটুকুই পোস্ট করি গঠনমূলক আলোচনার জন্য ।
আল্লাহর অস্তিত্তের অখণ্ডিত কিছু বৈজ্ঞানিক এবং যৌক্তিক প্রমাণ ।
মানব জাতির ইতিহাস পর্যালোচনা করলে হয়ত দেখা যাবে যে আল্লাহর বা সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্বের প্রশ্নে যুগে যুগে ঐতিহাসিক, বিজ্ঞানী, দার্শনিকদের মনে প্রশ্নের কোন কমতি ছিল না । বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রার সাথে সাথে এই প্রশ্ন এখন অনেকটা মহামারির আকার ধারন করেছে । বর্তমানে পশ্চিমা বিশ্বের একদল বিজ্ঞানীরা রীতিমত ধর্মের তথা সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্তের বিরুদ্ধে একধরণের যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন । বই লেখা থেকে শুরু করে টেলিভিশন, রাস্তার বিলবোর্ড, বিভিন্ন ধরনের প্রচারাভিযান এবং কনফারেন্স ইত্যাদির মাধ্যমে তারা পুরো শক্তি নিয়ে মাঠে নেমেছেন । যার প্রভাব আমাদের দেশের একদল তরুণদের মাঝেও বিস্তর লাভ করতে সক্ষম হয়েছে । যারফলে বাংলাদেশে ইন্টারনেটের আবির্ভাবের সাথে সাথে কয়েকটা ব্লগেরও জন্ম হয় । বস্তুতঃ এটা এখন আরেকটি নতুন ধর্মের জন্ম দিয়েছে যার নাম হল নাস্তিক্যবাদ । অভিজ্ঞতার আলোকে দেখা যায়, যারা ধর্ম পালন করেন তাদের বেশীর ভাগই যেমন অনেকটা শুধু বিশ্বাসের অথবা জন্মগত সূত্রের উপর ভিত্তি করেই ধর্মকে পালন করেন তেমনি এই নতুন ধর্ম তথা নাসস্তিক্যবাদে যারা বিশ্বাস করেন তারাও আবেগ এবং বিশ্বাসের উপর ভিত্তি করেই করে থাকেন । যাইহোক, আমি কয়েকটি স্তরে ধারাবাহিকভাবে আল্লাহ বা সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্ব প্রমাণ করার চেষ্টা করব ইনশাআল্লাহ্ ।
নাস্তিকদের একটা সাধারণ যুক্তি হল “যা দেখা যায়না তার অস্তিত্ব নেই” । এটাকে অভিজ্ঞতা বাদও বলা হয়ে থাকে । অভিজ্ঞতাই যাবতীয় জ্ঞানের উত্স এই মত অর্থাৎ আমাদের পঞ্চইন্দ্রিয় তথা দেখা, শোনা, স্পর্শ, স্বাদ এবং গন্ধ এর বাইরে জ্ঞানের কোন উত্স নেই । এবং বিজ্ঞানের মূল মন্ত্র হল এই অভিজ্ঞতাবাদ (Empiricism) অর্থাৎ সবকিছু হাতে কলমে প্রদর্শনের যে প্রক্রিয়া তাই বিজ্ঞান । কিন্তু আমাদের জীবনে অনেক কিছু আছে যা বিজ্ঞান দ্বারা প্রমাণ করা সম্ভব নয় । অর্থাৎ বিজ্ঞান সকল ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়, এটার সীমাবদ্ধতা আছে এবং কোন কিছুর সত্যতা যাচাই করার জন্য বিজ্ঞানী একমাত্র জ্ঞান না । উদাহরণ স্বরূপ আপনি যে আপনার স্ত্রীকে বা কাউকে ভালবাসেন সেটা বিজ্ঞান দ্বারা প্রমাণ করা সম্ভব না । এমনিভাবে রাগ, অনুরাগ এবং যেকোনো নান্দনিকতা ইত্যাদি বিজ্ঞান দ্বারা প্রমাণ করা সম্ভব না । এবার আসুন একটা উদাহরণ দিয়ে “যা দেখা যায়না তার অস্তিত্ব নেই” তত্ত্বটি বুঝার চেষ্টা করা যাক । ধরুন আজ আপনি বাসা থেকে বের হয়ে যাওয়ার আগে তাড়াহুড়োর কারনে সবকিছু এলোমেলো ভাবে রেখে গেছেন, কোন কিছু গুছিয়ে রেখে যাতে পারেননি । কিন্তু আপনি দিন শেষে ঘরে ফিরে অবাক হয়ে দেখতে পেলেন আপনার ঘর খুব সুন্দর করে সাজানো গোছানো!!! কেউ এসে যে আপনার ঘরকে সাজিয়েছেন সেটা বিশ্বাস করার জন্য কি যে আপনার ঘরকে সাজিয়েছেন তাকে দেখাটা জরুরি? অবশ্যই না? অর্থাৎ না দেখেই সাজানো গোছানো ঘর থেকে আমরা যে ঘরকে সাজিয়াছেন তার অস্তিত্বের প্রমাণ পাই । সুতরাং “যা দেখা যায়না তার অস্তিত্ব নেই” কথাটা যুক্তি সংগত নয় । এ থেকে আমরা আরও বুঝতে পারি যে কোন এলোমেলো জিনিস আপনা আপনি নিজে নিজে সাজানো গুছানো হয়ে যায়না, কাউকে না কাউকে সাজাতে হয় । অর্থাৎ আমরা বিশৃংখলা থেকে আপনা আপনি সুশৃঙ্খলতা দেখতে পাই না । যেমনঃ একটা কাচের গ্লাসকে উপর থেকে ফেলে দিলে আমরা আরও কয়েকটা সুন্দর গ্লাসের স্বতঃস্ফূর্ত উদ্ভব হতে দেখতে পাইনা বরং গ্লাসটি টুকরো টুকরো হয়ে ভেংগে যেতে দেখি । এটাই স্বাভাবিক এবং এটা একটা সার্বজনীন বিধান যেটা বুঝার জন্য কাউকে পি এইচ ডি করার দরকার হয়না ।
১। মহাবিশ্বের সুশৃঙ্খলতাঃ
আমরা যদি আমাদের চারপাশে প্রকৃতির দিকে তাকাই তাহলে দেখতে পাই সবকিছু একটা সুশৃঙ্খল বিধানের মধ্যে আবর্তিত । মহাবিশ্ব তথা সৌরজগৎ, মহাকাশ, চাঁদ, সূর্য, পৃথিবী, গাছপালা ইত্যাদি প্রত্যেকটা জিনিষ একটা সুশৃঙ্খল বিধান দ্বারা পরিচালিত । পৃথিবী থেকে সূর্যের দূরত্ব যদি এক ইঞ্চিও বেশী বা কম হত তাহলে এই পৃথিবী বসবাসের উপযোগী হত না । বাতাসে অক্সিজেনের পরিমাণ যদি একটু কম বা বেশী হত তাহেলও মানুষের অস্তিত্ব টিকে থাকতে পারতনা । অর্থাৎ প্রকৃতির এ সবকিছুই একটা সু নির্দিষ্ট বিধানের মধ্যে আবর্তিত । যেহেতু মহাবিশ্বের সবকিছুর মধ্যে আমরা শৃঙ্খলা দেখতে পাই সেহেতু আমাদের মনে এ প্রশ্ন জাগতে পারে যে এই শৃঙ্খলা এল কিভাবে? এই প্রশ্নের উত্তরের জন্য আমাদেরকে একটু যুক্তি এবং বিচারবুদ্ধি প্রয়োগ করতে হবে । আসুন আরেকটা উদাহরণের মাধ্যমে বিষয়টাকে খোলাসা করা যাক । আপনার হাতের মোবাইল ফোনটাকেই ধরুন । এটা কাচ , পাস্টিক এবং metal বা ধাতু দ্বারা তৈরি । আমরা জানি কাঁচ বালু থেকে আসে, পাস্টিক আসে তেল থেকে আর ধাতু আসে ভূতল থেকে । এখন কল্পনা করুন আপনি কোন এক মরুভূমির পাশ দিয়ে হাঁটছেন যেখানে অনেক তেল, বালি এবং ধাতু পড়ে আছে এবং হঠাৎ আপনি দেখতে পেলেন যে খুব সুন্দর একটা মোবাইল ফোন পরে আছে । আপনি কি ধরেই নিবেন যে মোবাইল ফোনটা নিজে নিজেই তৈরি হয়েছে? অর্থাৎ সূর্যের উত্তাপে বজ্রপাত আর বাতেসের বেগে তেলগুলো বুদবুদ করে উপরে চলে এসে বালি আর ধাতুর সাথে সংমিশ্রিতি হয়ে লক্ষ কোটি বছর পরে এই মোবাইল ফোনটির আবির্ভাব হল!!! কেউ এই ধরনের ব্যাখ্যায় বিশ্বাস করবে না । মোবাইল ফোন এমন একটা জিনিষ যেটাকে স্পষ্টতই কেউ না কেউ পরিকল্পিত চিন্তার দ্বারা ডিজাইন করে একে নির্মিত করেছেন । সুতরাং এটার একজন নির্মাতাও আছে । ঠিক একইভাবে আমরা মহাবিশ্বে যখন শৃঙ্খলা দেখি তখন এর পেছনে একজন শৃঙ্খলা কারী আছে এটা ভাবাইকি যুক্তিসঙ্গত নয়?
২। মহাবিশ্বের সূত্রপাত
বিংশ শতাব্দীর শুরুতে কিছু বিজ্ঞানী মনে করেছিলেন আমাদের এই মহাবিশ্ব সর্বদা বিদ্যমান ছিল সুতরাং এর কোন স্রষ্টার প্রয়োজন নেই যেহেতু কোন কিছু যদি সর্বদা বিদ্যমান থাকে তাহলে সেই জিনিষের কোন স্রষ্টা লাগে না । কিন্তু পরবর্তীতে (cosmologists ) মহাবিশ্বতত্ত্ববিদরা আবিষ্কার করল যে আমাদের এই মহাবিশ্বের একটা শুরু হয়েছিল, এর সূত্রপাত হয়েছিল প্রায় ১৪ বিলিয়ন বছর আগে একটা বিশেষ মহাজাগতিক ঘটনার মাধ্যমে যেটাকে মহা বিস্ফোরণ (big-bang) বলা হয় । এবং বিজ্ঞানীদের কাছে এই theory বা তত্ত্বটা সর্বাধিক গৃহীত হয়েছে যেহেতু এই তত্ত্বটা পর্যবেক্ষণযোগ্য । যাইহোক, এখন আসাযাক মূল বিষয়ে । ভেবে দেখুনতো, আপনি আপনার ড্রয়িংরুমে বসে আছেন আর হঠাৎ করে পাশের ঘর থেকে একটা বিকট আওয়াজ শুনতে পেলেন । হৎচকিয়ে আপনি পাশে বসে থাকা আপনার ছোট ভাইকে বললেন “কি হয়েছে দেখত” । সে পাশের ঘর থেকে ঘুরে এসে বলল “কিছুই হয়নি, ওঘরে কেউ নেই এমনি এমনি কোন কারন ছাড়াই একটা বিকট শব্দ হয়েছে” শুধু তাইনা সে আরও বলল যে “বিকট আওয়াজের পর ঘরের যাকিছু ছিল সবকিছু সাজানো গুছানো এবং নতুন হয়ে গেছে” । আপনি আপনার ভাইকে কি বলবেন বা করবেন সেটা আপনার উপরই ছেড়ে দিলাম । কিন্তু আপনি অবশ্যই তার কথা কক্ষনোই বিশ্বাস করবেন না । কারন আপনি জানেন যে কোন কারণ ছাড়া এমনি এমনি কোন কিছু ঘটেনা । আপনি নিজেকে প্রশ্ন করবেন কে বা কিসে এই বিকট শব্দটি ঘটাল? এর পিছনে উদ্দেশ্যটা কি? আরও নানা রকম প্রশ্নের উদ্রেক হওয়াটাই খুবই স্বাভাবিক । ঠিক এই একই যুক্তিতে আমরা বলতে পারি মহা বিস্ফোরণ (big-bang) এরও অবশ্যই একটা কারন তথা কেউ না কেউ এটাকে ঘটিয়েছে, এটা এমনি এমনি ঘটেনি । আপনার ছোট ঘরের মধ্যে যদি এমনি এমনি কিছু ঘটতে না পারে তাহলে মহাবিশ্বের মহাবিস্ফোরণ এমনি এমনি ঘটারতো কোন কারন থাকার কথা না । এবং যে ঘটিয়েছে তাকে অবশ্যই খুবই প্রজ্ঞাময়ি এবং বিচক্ষন হতে হবে । কারন কোন সৃষ্টি যত জটিল এর সৃষ্টি কর্তাও তত বেশী বিচক্ষন হয় । মহাবিশ্বের চেয়ে জটিল সৃষ্টি আর কি হতে পারে? সুতরাং এর সৃষ্টি কর্তাকেও মহা প্রজ্ঞাময় হতে হবে, বরং তার প্রজ্ঞা আমাদের ধারনার সীমানার বাইরে ।
সৃষ্টিকর্তার সৃষ্টিকর্তা?
আমার অভিজ্ঞতায় দেখেছি নাস্তিকরা উপরোল্লিখিত এই যুক্তিটা খণ্ডন করতে পারে না কিন্তু এই যুক্তির উপর ভিত্তি করে পাল্টা আরেকটা যুক্তি পেশ করে । তারা জিজ্ঞাসা করে যে ঠিক আছে যদি সবকিছুরই সৃষ্টি কর্তা থাকে তাহলে সৃষ্টি কর্তাকে কে সৃষ্টি করেছে? হুম, আমি তাদেরকে প্রশ্ন করি একটু ভেবে বলুনতো আমি কোথায় বলেছি যে “সবকিছুরই একটা সৃষ্টিকর্তা আছে”? আমি কখনোই বলি না যে “সবকিছুরই একটা সৃষ্টিকর্তা আছে” বরং সবকিছুই যেটার অস্তিত্বের শুরু আছে সেটারই একটা সৃষ্টিকর্তা আছে । শুরিতেই বলেছিলাম “মহাবিশ্বের একটা শুরু হয়েছিল” সুতরাং এটারও একটা সৃষ্টিকর্তা আছে । যাইহোক, কিন্তু নাস্তিকের মাথা থেকে এটা কোন ভাবেই যাচ্ছে না যে সৃষ্টকর্তা কিভাবে এল, তার অস্তিত্বের শুরু কিভাবে হল? আমি বলি সৃষ্টিকর্তার কোন সৃষ্টিকর্তা থাকতে পারে না আর সৃষ্টিকর্তার কোন শুরুও থাকা সম্ভব না । কারন তাহলে একটা যৌক্তিক অসম্ভাবনার সৃষ্টি হবে । আসুন একাটা উদাহরণের মাধ্যমে বিষয়টা বুঝার চেষ্টা করা যাক । ধরুন আপনি র্যািবের একজন চৌকস সৈনিক এবং খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা অপারেশনে একজন কুখ্যাত সন্ত্রাসীকে ধরার জন্য বেড়িয়েছেন । অপারেশনের কোন এক পর্যায়ে আপনারা যাকে খুঁজছেন তাকে আপনি বন্দুক হাতে যেতে দেখলেন । এখন আপনার হাতেও এ কে ৪৭ প্রস্তুত কিন্তু গুলি চালাবার আগে আপনাকে আপনার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার নিকট হতে অনুমতি নিতে হবে । সংগে সংগে আপনি আপনার পেছনে দাড়িয়ে থাকা আপনার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার নিকট অনুমতির জন্য জিজ্ঞাসা করলেন “স্যার, দেই গুলি করে, ক্রস ফায়ার বলে চালিয়ে দেব”? । কিন্তু আপনার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা আপনাকে বললেন যে “অপেক্ষা কর আমি আমার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার নিকট থেকে অনুমতি নিয়ে আসি” । তিনি তার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার নিকট অনুমতি চাওয়ার পর সেই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা একই কথা বললেন “অপেক্ষা কর আমি আমার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার নিকট থেকে অনুমতি নিয়ে আসি” । এখন এই পরিস্থিতি যদি অসীমভাবে চলতে থাকে তাহলে আপনি কি আদোও আপনার ওই টার্গেটকে গুলি করতে পারবেন? কখনোই না । আপনি আপনার টার্গেটকে তখনই গুলি করতে পারবেন কেবলমাত্র কেউ যদি আপনার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মধ্য থেকে এমন থাকে যার আর কারো কাছ থেকে অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন নাই । অর্থাৎ আমরা যদি বলি যে সৃষ্টিকর্তাকে সৃষ্টি করেছেন আরেক সৃষ্টিকর্তা এবং তাকে সৃষ্টি করেছেন আরেক সৃষ্টিকর্তা এবং এভাবে যদি অনন্তকাল যেতে থাকি তাহলে সৃষ্টিকার্যই শুরু হবে না ঠিক র্যা বের সেই সৈনিকের মত । (এটাকে গণিতবিদরা বলে (infinite regress) “অসীম পশ্চাদগমন” যেটা একটা যৌক্তিক অসম্ভাবনার জন্ম দেয় । আর বিজ্ঞানীদের নিকট “অসীম রাশি” বলতে কিছু নেই কারন এটা পর্যবেক্ষণ যোগ্য নয় এটা একটা কাল্পনিক রাশি । যেমন; অসীম রাশি থেকে কিছু যোগ বা বিয়োগ করলে অসীম রাশিই থাকে এর কোন পরিবর্তন হয়না )। সুতরাং সৃষ্টি জগত থেকে এটা স্পষ্টত প্রমানিত যে সৃষ্টিকর্তা একজনই এবং সৃষ্টিকর্তার কোন সৃষ্টিকর্তা থাকা সম্ভব নয় । আর এই সৃষ্টিকর্তা চিরন্তন, অনন্ত, কালাতীত এবং মহাজগতের বাইরে তথা সৃষ্টির বাইরে যেহেতু এসবই তার সৃষ্টি ।
চলবে ইনশাআল্লাহ্………
@মুহাম্মদ হাসান,
সম্পূর্ণটার উত্তর দেয়ার সময় নেই। এসব বিষয় নিয়ে ছোটবেলায় খুব আগ্রহী ছিলাম এবং বিতর্ক করতাম।
এখানে দেখেন ‘আল্লাহর বা সৃষ্টিকর্তার’ বলেছেন। দুটো কিন্তু এক না। এমনকি কেউ যদি মহাবিশ্বের স্রষ্টা হত তাহলেও কিন্তু তা ‘আল্লাহ’ বা কোনো উপাস্য ইশ্বর তা প্রমাণ হয় না। আর ‘স্রষ্টা’ বলে প্রথমেই বুঝিয়ে দেয়া হয় যেন কেউ তা সৃষ্টি করেছে, এটা ফ্যালাসি।
মুমিন বাহিনী যে তরবারি নিয়ে খাড়া হইছেন সেটা খেয়াল করবেন না। মসজিদে-মাদ্রাসায় হুজুরদের ওয়াজের ঠেলায় তো টিকাই মুশকিল।
এই যুক্তিটি কোন নাস্তিক দিয়েছেন? আপনার মধ্যে সততা থাকলে উত্তর দিবেন।
মুক্তমনায় এসব বিষয় নিয়ে অসংখ্য লেখা আছে। আপনার আগ্রহ থাকলে পড়ে দেখেন। আমারও লেখা আছে
আরণ্যিক নির্বোধের ভ্রান্ত দুঃস্বপন
স্রষ্টা ও ধর্ম
আপাতত এগুলো দেখেন ও ঠাণ্ডা মাথায় ভাবেন।
@সৈকত চৌধুরী,
আমার হাতেও খুব সময় থাকে না তার পরেও যতটুকু পারি লেখার চেষ্টা করছি । আমি আগেই বলেছি বিতর্ক আমার উদ্ধেশ্য নয়, আসলে বিতর্ক করার মত সময় বা ইচ্ছা কোনটাই আমার নেই কারণ বিতর্কের মধ্যে একজন আরেকজনকে পরাজিত করার চেষ্টা করে কিন্তু তাদের নিজের ভুল কখনোই স্বীকার করে না বরং ভুলটাকে ন্যায্য এবং সত্য হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা করে এবং সেটার উপরই অটল থাকে । আপনার যদি ইচ্ছা হয় তাহলে আমার পোস্টের মধ্যে যে যুক্তি গুলো তুলে ধরেছি সেগুলোকে যুক্তি এবং প্রমাণ দ্বারা আলোচনা করুন আবেগ বা সমাজের কুসংস্কার দিয়ে নয় । আমার যুক্তির মধ্যে ভুল থাকতেও পারে এটা খুবই স্বাভাবিক ।
পার্থক্যটা কি বললে বুঝতে সহজ হত । আল্লাহ হল নাম আর সৃষ্টিকর্তা হল তার বিভিন্ন গুনের মধ্যে একটা । যাইহোক, ‘আল্লাহ বা সৃষ্টিকর্তা’ দুটো একই কিনা এটা আমার লেখার মূল আলোচ্য বিষয় না । আমার লেখার মূল বিষয় হল একজন স্রষ্টার অস্তিত্বের প্রমাণ করা এবং এটা আমি কুরআন, হাদিস বা বিশ্বাসের উপর ভিত্তি করে করিনি ।
গঠনমূলক আলোচনা/ওয়াজের কোন দোষ ত আমি দেখছি না সেটা মসজিদেই হোক বা যেখানেই হোক । কোন হুজুর কি বলল সেটা আমার দায়িক্ত না, যেমনটি সব নাস্তিকের দায়িক্ত আপনার না । আমি আপনি শুধু আমাদের নিজেরদের কথার বা কাজের দায়িক্ত নিতে পারি ।
ভাল লাগল যে আপনি নাস্তিক্তের এই দলের অন্তর্ভুক্ত নন! যাইহোক, আপনার প্রশ্নের উত্তরটা কিন্তু আমার এই কথার পরেই দেওয়া আছে, শুধু এই অংশটুকু পড়লে আমার কছেও অদ্ভুদ লাগে! “এটাকে অভিজ্ঞতা বাদও বলা হয়ে থাকে । অভিজ্ঞতাই যাবতীয় জ্ঞানের উত্স এই মত অর্থাৎ আমাদের পঞ্চইন্দ্রিয় তথা দেখা, শোনা, স্পর্শ, স্বাদ এবং গন্ধ এর বাইরে জ্ঞানের কোন উত্স নেই । এবং বিজ্ঞানের মূল মন্ত্র হল এই অভিজ্ঞতাবাদ (Empiricism) অর্থাৎ সবকিছু হাতে কলমে প্রদর্শনের যে প্রক্রিয়া তাই বিজ্ঞান” অর্থাৎ যা কিছু এই জ্ঞানের মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ করা যায় না সেটার সত্যতা বা অস্তিত্ব অর্থহীন । আমি এই তত্ত্বের পুরোপুরি বিরোধিতা করিনা কারন প্রত্যেক জিনিসেরি একটা উপযুক্ত ক্ষেত্র আছে আর সেটাকে সঠিকভাবে কাজে লাগালে সঠিক ফলাফল পাওয়া যায় আর যদি বেঠিকভাবে কাজে লাগানোর চেষ্টা করা হয় তখনি সমস্যার দেখা দেয় । সাইন্সের জন্য এই তত্ত্বটা হয়ত খুব ঠিক আছে তার মানে এইনা যে এটাই সত্যের মাপকাঠি । এখানে এই তত্ত্ব নিয়ে আলোচনা বা সমালোচনা করে শুধু কথাই বাড়বে । আমি এটাকে উল্লেখ করেছি কারণ অনেক উচ্চ শিক্ষিত এবং বিজ্ঞানীরা এই তত্ত্বকে ধর্মের মত বিশ্বাস করে । নাস্তিক বিজ্ঞানীদের সাথে আমার অভিজ্ঞতাও এরকমই । আপনি হয়ত “অভিজ্ঞতাবাদী” না তাই আপনার কাছে এটা ঠিক মনে হয়নি ।
দুঃখিত সময় হবে না তার পরেও চেস্ষ্টা করব ইনশাআল্লাহ্ । যদি পারেন তাহলে আমার মূল লেখার জবাব দিবেন । ভাল থাকবেন ।
@মুহাম্মদ হাসান,
আপনার আল্লাকে যেন কে বানিয়েছে ভাইজান?
@তামান্না ঝুমু,
দয়াকরে আমার লেখাটি পড়ুন ওখানে আপনার প্রশ্নের জবাব দেওয়া হয়েছে ।
@তামান্না ঝুমু,
যে আমার আল্লাহকে বানিয়েছে সে আমার “আল্লাহ” না , আমার আল্লাহ সেই যাকে কেউ বানাইনি যিনি চিরন্তন, অনন্ত, কালাতীত এবং মহাজগতের বাইরে তথা সৃষ্টির বাইরে । “সৃষ্টিকর্তার সৃষ্টিকর্তা?” অংশটুকু ভাল করে পড়ুন । কোন প্রশ্ন থাকলে করবেন উত্তর দেয়ার চেষ্টা করব ইনশাআল্লাহ্ ।
@মুহাম্মদ হাসান,
তার মানে আপনি নিজেই স্বীকার করলেন যে, আপনার আল্যাকেও কেউ বানিয়েছে। আপনার আল্যাকে যে বানিয়েছে সে আপনার আল্যা হবে কেন? সে তো আপনার আল্যার আল্যা। আচ্ছা, আপনার আল্যার আল্যার আল্যা কে?
আরেকটি কথা, আপনার আল্যা কি মুছলমান? সে কি নামাজ পড়ে? রোজা রাখে? যাকাত দেয়? হজ্ব করেছে? ঈমান আছে তার? এগুলো না করলে যে মুছলমান হওয়া যায় না!
@তামান্না ঝুমু, আমার আল্লাহে যে বানিয়েছে সে আমার আল্লাহ না তার মানে যে আমার আল্লাকেও কেউ বানিয়েছে জানা ছিল নলা। এটা কোন যুক্তির মধ্যে পড়ে তাই বোধগম্য নয় । আপনি কি আমার লেখাটি না পড়েই সেটার উপর মন্তব্য করছেন? ভেবেছিলাম নাস্তিকরা নিজেদের খুব যুক্তিবাদি এবং honest মনে করে কিন্তু আপনার লেখার পরে সেটা এখন সন্দেহের কারন হতে গেল ।
@তামান্না ঝুমু,
দেখেন আমার মনে হয় এইসব বানান বিকৃতি কোন ভাল ফলাফল বয়ে আনবে না, খালি কিছু মানুষকে আহত করা ছাড়া আপনার সমপর্কে একটা ভুল মেসেজ দেয়া ছাড়া।
আমি বিশ্বাস করি আপনি এই জিনিসটা বোঝেন, কাজেই এ নিয়ে আরেকটু সচেতন থাকার অনুরোধ জানাচ্ছি( বন্ধু হিসাবেই)। আশা রাখি বিবেচনা করবেন অনুরোধটা।
@অর্ফিউস,
বুঝতে পারছি আপনার কথা। কিন্তু মজা লাগে যে মাঝেমাঝে কিছুই না কে নিয়ে একটু মশকরা করতে।
@সৈকত ভাই,
(Y) এইসব উনারা খেয়াল করবেন কেন? কি কারন? নিজের ঘোল টক লাগে না জানেন না? :hahahee:
@অর্ফিউস,
আপনি কি নাস্তিকদের ইতিহাস পড়েছেন? একজন নাস্তিকই যথেষ্ট সব মোল্লাদের মুখে চুনকালি লেপার জন্য । এসব বলে শুধু অযথা কাদা ছুড়াছুড়ি হবে । কোন মোল্লা ভাল বা খারাপ আর কোন নাস্তিক ভাল বা খারাপ সেটার উপর ভিত্তি করে কাউকে বিচার করা সচেতন মানুষের কাজ না ।
@সৈকত চৌধুরী,
আপনার “আরণ্যিক নির্বোধের ভ্রান্ত দুঃস্বপন” লেখাটি পড়লাম । ভাল লিখেছেন লেখার ভঙ্গির বিবেচনার দিক থেকে তবে পুরো লেখাটাই সমাজের ধর্মীয় কু বা অপসংস্কৃতির উপর ভিত্তি করে লেখা । এটাই স্বাভাবিক যেহেতু সমাজই আমাদের চিন্তা চেতনার বিকাশের মূল এবং প্রধান ভিত্তি । আপনার লেখার মধ্যে কোথাও কিন্তু সৃষ্টিকর্তার যে অস্তিত্ব নেই সেটা প্রমাণ করেননি?
@মুহাম্মদ হাসান,
এসব বিষয় নিয়ে অনেক অনেক আলোচনা মুক্তমনায় হয়েছে। আপনি একটু খুঁজে পড়ে নেন সময় করে। এই বইগুলোও দেখতে পারেন।
আবার আপনাকে আমার কিছু লেখার কপি-পেস্ট করে দেই।
ঈশ্বরবাদিরা যেহেতু ঈশ্বরের অস্তিত্ব দাবি করেন তাই তা প্রমাণের দায়িত্ব তাদেরই। তাছাড়া এ প্রসঙ্গ যেহেতু তারাই প্রথম উপস্থাপন করেন তাই ‘ঈশ্বর’ ব্যাপারটা তাদেরকে আগেবাগে পরিষ্কার করতে হবে, দিতে হবে এর বোধগম্য ও গ্রহণযোগ্য সংজ্ঞা। ব্যাপারটা এরকম যেন আমি আমার মনের মাধুরী মিশিয়ে এক ধরণের ঈশ্বরের ধারণা দিলাম তারপর এর আর কোনো ত্রুটিমুক্ত প্রমাণ দিলাম না আর পরে কেউ তাতে সংশয় করলে বললাম, তাহলে আপনার কাছে এই ধরণের ঈশ্বর নেই বলে কোনো প্রমাণ আছে কিনা!
কোনো কিছুর অস্তিত্ব যিনি দাবি করেছেন তাকেই তার প্রমাণ দিতে হয়। আমি দাবি করলাম ‘পৃথিবীতে অংবং নামক এক ধরণের অদৃশ্য প্রাণী বসবাস করে’ অথবা ‘আমার অদৃশ্য হবার ক্ষমতা আছে’ কিন্তু এর কোনো প্রমাণ দিলাম না। এতে কি আমার দাবি গ্রহণযোগ্য হবে অথবা কাউকে এ ধরণের প্রাণী নেই বা আমার এ ক্ষমতা নেই বলে প্রমাণ করার চ্যলেঞ্জ দিতে পারব? ঈশ্বরের বেলায়ও একই কথা। যারা দাবি করেন ঈশ্বর নামক কেউ আছে তাদেরকেই এর অস্তিত্ব প্রমাণ করতে হবে। তারা যদি তা প্রমাণ করতে না পারেন তবে তো এখানেই খেল খতম। একে আর আলাদাভাবে অপ্রমাণ করার কোনো প্রয়োজন আছে কি? এভাবেও বলা যায়, যার অস্তিত্বের স্বপক্ষে কোনো গ্রহণযোগ্য প্রমাণ আমি দিতে পারলাম না তাকে অপ্রমাণের আহবান আমি কাউকে করতে পারি না কারণ সেটা তখনো বিবেচনার যোগ্য হয়ে উঠতে পারে নি। আর কোনো কিছুর অস্তিত্ব আসলেই আছে কিনা সেটা নিয়ে দুশ্চিন্তা না করে আমাদের দেখা উচিত এর অস্তিত্বের পেছনে যেসব প্রমাণ উপস্থাপন করা হয় সেগুলো ঠিক কিনা।
ঈশ্বর বিষয়টি নিয়ে ভাবার সুবিধার্তে ইসলামের আল্লাহর ধারণাকে বিবেচনায় আনি। আল্লাহ নিরাকার, আবার তিনি সর্বত্র বিরাজমান, অসীম ক্ষমতার অধিকারী, অসীম দয়ালু, সর্ব জ্ঞানী, তার একদল ফেরেশতা নামক পাইক-পেয়াদা রয়েছে, রয়েছে সিংহাসন(আরশ) যা বহন করছেন আটজন ফেরেশতা। একটু খেয়াল করলেই দেখবেন, অসীম ক্ষমতার অধিকারী, অসীম দয়ালু, সর্ব জ্ঞানী এগুলো মানবীয় চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যকে ঐশ্বরিক সত্ত্বায় আপতন ছাড়া আর কিছুই নয়। আল্লার বৈশিষ্ট্যগুলো মানুষের মধ্যে সীমিত পরিসরে বিদ্যমান তাই মানুষের পক্ষে এগুলোর কল্পনা খুবই সম্ভব। আল্লা এতই হিংসা পরায়ণ যে কেউ তার সাথে কাউকে শরিক করলে বা কাউকে তার সমান মনে করলে সে অপরাধ কখনো ক্ষমা করবেন না। কোরানে আছে-
“নিশ্চয় আল্লাহ্ তাকে ক্ষমা করেন না, যে তাঁর সাথে কাউকে শরীক করে। এছাড়া যাকে ইচ্ছা, ক্ষমা করেন।”( সুরা নিছা, ৪:১১৬)
“নিশ্চয় যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে অংশীদার স্থির করে, আল্লাহ্ তার জন্যে জান্নাত হারাম করে দেন। এবং তার বাসস্থান হয় জাহান্নাম। অত্যাচারীদের কোন সাহায্যকারী নেই।”(সুরা মায়িদাহ, ৫:৭২)
“নিঃসন্দেহে আল্লাহ্ তাকে ক্ষমা করেন না, যে লোক তাঁর সাথে শরীক করে। তিনি ক্ষমা করেন এর নিম্ন পর্যায়ের পাপ, যার জন্য তিনি ইচ্ছা করেন।” ( সুরা নিছা,৪:৪৮)
আবার দেখুন-
যদি নভোমণ্ডল ও ভূমণ্ডলে আল্লাহ ব্যতীত অন্যান্য উপাস্য থাকত তবে উভয়ই ধ্বংস হয়ে যেত। (সূরা আম্বিয়া, ২১:22)
আল্লাহ প্রতিশোধগ্রহণ কারী!! দেখুন-
“নিঃসন্দেহে যারা আল্লাহর আয়াতসমূহ অস্বীকার করে, তাদের জন্যে রয়েছে কঠিন আযাব। আর আল্লাহ হচ্ছেন পরাক্রমশীল, প্রতিশোধ গ্রহণকারী”। ( সূরা আলে ইমরান, ৩ : ৪)
“নিশ্চয় আল্লাহ পরাক্রমশালী, প্রতিশোধ গ্রহণকারী”। (সূরা ইব্রাহীম, ১৪ : ৪৭)
“ আল্লাহ কি পরাক্রমশালী, প্রতিশোধ গ্রহণকারী নন?” (সূরা আল-যুমার, ৩৯ : ৩৭)
ঈশ্বরের নিরাকারত্ব, ফটকা দয়ালুতা, করুণাময়তা, জ্ঞানময়তাসহ সকল বৈশিষ্ট্যকে সামনে আনলে এটাই প্রতীয়মান হয় যে ঈশ্বরই মানুষের কল্পনাসাধ্য সবচেয়ে বড় অশ্বডিম্ব বৈ কিছু নয়।
ধন্যবাদ।
@সৈকত চৌধুরী,
প্রথমে বললেন আপনার লেখা পড়তে, সেটা পড়লাম এখন দিচ্ছেন পুরা লাইব্রেরী!!! মনে হচ্ছে আপনাদের কারো কাছেই কোন সদুত্তর নাই । যেহেতু এখন পর্যন্ত কেউ আমার একটা যুক্তিও খণ্ডন করার চেষ্টা করেননি ।
জি, অবশ্যই এবং আমার লেখাতে সেটা প্রমাণ করে দেখিয়েছি । পারলে যুক্তি দিয়ে খণ্ডন করুন । দয়া করে কোন বই পড়তে বলবেন না । কিছু পড়াশুনা করেই এখানে এসেছি ।
আল্লাহ নিরাকার এবং সর্বত্র বিরাজমান এটা দয়াকরে কুরআন থেকে উদ্ধৃত দিলে খুশি হব ।
ইসলাম সম্পর্কে আপনার যেকোনো অভিযোগের জবাব আমি পড়ে দেব ইনশাআল্লাহ্ । যেহেতু আপনার প্রধান সমস্যা হল সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্ব সুতরাং এটার সুরাহা আগে করা যাক তারপর ছোট সমস্যা গুলো দেখা যাবে ।
@মুহাম্মদ হাসান,
আপনাকে পড়তে বলছি এজন্য যে নাস্তিকতার জগত সম্পর্কে আপনি ভাল জানেন বলে মনে হয় নি। মনে হয় না নাস্তিকতার উপর ভাল কোনো বই পড়েছেন। অবশ্য এটা কোনো সমস্যা না, পড়েন নাই পড়বেন। যেসব প্রশ্ন করেছেন সেগুলো নিয়ে এত বেশি আলোচনা ইতোমধ্যে মুক্তমনায় হয়ে গেছে যে তা বিরক্তির উদ্রেক করে। এখন আপনি জানতে চাচ্ছেন, তার জন্য তো আপনাকে পড়তে হবে, খুঁজতে হবে, সময় দিতে হবে। তাই না? তা না করে চট করে প্রশ্ন করলে তার উত্তর দিতে তো কেউ বসে নেই। যা বুঝাতে চেয়েছিলাম সেটা কি বুঝেছেন? আপনি কি বুঝেছেন যে নাস্তিকদের ঈশ্বরের অনস্তিত্ব প্রমাণ করার জন্য বলা যায় না বরং ঈশ্বরের অস্তিত্ব প্রমাণ করা ঈশ্বরবাদিদের দায়িত্ব?
এবার আসেন
ধরে নিন, আমি একটি মোবাইল বা চেয়ার দেখলাম অথবা সাজানো-গোছানো একটি বাগান দেখলাম। তাহলে আমি সহজেই ধরে নেব এর পেছনে কোনো মানুষের হাত আছে। কারণ আমার অভিজ্ঞতাই আমাকে বলছে এগুলোতে মানুষের হাত আছে। কিন্তু একটি প্রাকৃতিক বন, নদী বা সাগর দেখলে কী বলব? রংধনু বা বৃষ্টি দেখলে কী বলব? আমরা সেগুলোকে ব্যাখ্যা করব ভিন্ন ভাবে। কারণ আমাদের বাস্তব ও পার্থিব অভিজ্ঞতা থেকে দেখি নাই বা জানি নাই যে এর পেছনে কোনো ঈশ্বর আছে। কোনো ঈশ্বরের দ্বারা কোনো কর্ম ঘটতেছে – এরকম পার্থিব অভিজ্ঞতা আমাদের নেই। মোটকথা, মানুষ নির্মিত শৃঙ্খলা অথবা বিশৃঙ্খলা বা অন্য কোনো ঘটনা অবলোকন করলেই আমরা বুঝতে পারি এর পেছনে মানুষের হাত আছে কারণ আমাদের সে ব্যাপারে অভিজ্ঞতা আছে। অন্যদিকে আমরা বলতে পারিনা মহাবিশ্ব বা সৌরজগৎ এগুলো ঈশ্বর সৃষ্টি করেছেন কারণ ঈশ্বর এবং সৃষ্টি প্রক্রিয়া কোনোটাই আমাদের অভিজ্ঞতায় নেই। কেউ যদি বলতে চায় সেটা ঈশ্বরের আদেশে হচ্ছে আরেকজন বলতে পারে ‘না সেটা শয়তানের আদেশে হচ্ছে’ আবার আরেকজন ভিন্ন ধরণের হাইপোথেসিস দাড় করাতে পারেন। আবার এগুলো ঘটাতে একদম সর্বশক্তিমান হতেই হয় কোনো স্বত্বাকে বা তথাকথিত ঈশ্বরীয় গুণাবলি তার থাকতে হবে এ ধারণার কোনো মানেই নেই।
এছাড়া মহাবিশ্বে বিশৃঙ্খলা ঘটছে খুব বেশি। এখানে এমনকি গ্যালাক্সির সাথে গ্যালাক্সিরও সংঘর্ষ ঘটছে। এই সৌরজগতও এক সময় ধ্বংস হয়ে যাবে, এর উৎপত্তিও কোনো মহান মসৃণ প্রক্রিয়ায় ঘটে নি। মহাবিশ্বের অন্য গ্রহগুলোর অবস্থা দেখেন সেগুলো মোটেও পৃথিবীর মত আমাদের অনুকূল নয়। পৃথিবী মানুষের বসবাসের উপযোগী এবং অন্যান্য সকল শর্ত পূরণ করায় এখানে মানুষের উদ্ভব ঘটেছে বিবর্তন প্রক্রিয়ায়, এটা মহাবিশ্বের জন্য কোনো বড় ঘটনা নয়। মানুষ শুধু আমাদের কাছেই গুরুত্বপূর্ণ অন্য কারো কাছেই নয়। আর পৃথিবীতে কী ঘটছে? ভূমিকম্প, জলোচ্ছাস, ঘূর্ণিঝড়, সুনামি, খরা, বন্যা, পানির অভাব, অতি উষ্ণতা, অতি শীতলতা ওসব ব্যাপার তো আছেই। মানুষ ও প্রাণীদের মধ্যে অগণিত প্রাণী জন্মগত ত্রুটি নিয়ে জন্মাচ্ছে।
মহাবিশ্বের কোনো এক শৃঙ্খলা যদি ঈশ্বরের প্রমাণ হতে পারে তবে বিশৃঙ্খলা কিসের প্রমাণ হবে?
তাহলে আমাদের অভিজ্ঞতার বাইরে কি কোনো ঈশ্বর থাকতে পারে না?
হ্যা, আমাদের অভিজ্ঞতার বাইরে অনেক কিছু থাকতে পারে। কিন্তু সেটার অস্তিত্ব আছে বলব তখনই যখন তার অস্তিত্বের স্বপক্ষে উপযুক্ত প্রমাণ পাব। নাস্তিকদের বক্তব্যটা খেয়াল করেন, ‘ঈশ্বরের অস্তিত্বের স্বপক্ষে উপযুক্ত/ত্রুটিমুক্ত কোনো প্রমাণ নেই, তাই আমরা ঈশ্বরে বিশ্বাস করতে পারি না’। নাস্তিকদের কিছু অংশ ঈশ্বরের অস্তিত্ব নেই বা অসম্ভব বলে মনে করে তার
জন্য ভিন্ন ব্যাখ্যা আছে এবং তা নিয়ে অনেক কিছু আলোচনার আছে। আমিও ব্যক্তিগতভাবে ঈশ্বরের অস্তিত্ব নেই বলে মনে করি, তবে সেটা ভিন্ন আলোচনা। নাস্তিক হতে হলে ঈশ্বরের অস্তিত্বে বিশ্বাসহীন হলেই চলে, বলতে হয় না, ঈশ্বর বলতে কেউ নেই। ব্যাপারটি কি পরিষ্কার?
মহাবিশ্বের শুরু আছে। এ থেকে ঈশ্বরের অস্তিত্ব কিভবে প্রমাণিত হয়? ঈশ্বর এর একটা সংজ্ঞা ও বিবরণ দেন, আলোচনায় সুবিধা হবে। আর কোনো ঈশ্বর থাকার মানেই আপনার ধর্মের ঈশ্বর সেটার কী প্রমাণ আছে? ধন্যবাদ।
@সৈকত চৌধুরী,
কুরআন থেকে এই তত্ত্বের একটা রেফারেন্স চেয়েছিলাম আগের পোস্টে । মনে হয় ভুলেগিয়েছিলেন । এই বার জবাব দেওয়ার সময় দয়াকরে মনেকরে রেফারেন্সটা দিয়েন, একটু নিজের চোখ দিয়ে দেখতাম আরকি, কখনও চোখে পড়েনিত তাই ।
জী, হবে হয়ত ।
হ্যাঁ, পড়ার চেষ্টা করছি কিন্তু আপনাদের সবার লেখাই একরকম মনে হয় । শক্ত কোন যুক্তি খুঁজে পাচ্ছিনা, সবই পুরনো । পড়তে পড়তে হয়ত পাব আসা করি ।
বিরক্ত হবেন না, ধৈর্য ধরুন এটা নাকি একটা মহৎ গুন ।
ভেবেছিলাম এখানে আপনারা সবাই নাস্তিক আর যারা নাস্তিক তারা ত জেনে বুঝেই নাস্তিক হয়েছেন, বিশেষ করে আস্তিকরা কি ধরনের প্রশ্ন করতেপারে সে বিষয়ে আপনারা দক্ষ সে ধারনা থেকেই মনে হয়েছিল আমার প্রশ্নের রেডিমেড উত্তর পাব । যাইহোক, দেরিতে হলেও সমস্যা নেই ।
জী, মনে হয় বুঝেছিলাম তবে না বুঝলে বা ভুল বুঝলে ধরিয়ে দেবেন শুধরে নেব ইনশাআল্লাহ্ । ভুল করা মানুষেরই স্বভাব ।
ঠিক ।
আপনি নিজের যুক্তির সাথে নিজেই contradict করছেন! ঈশ্বর যদি নিজে এসে বনের গাছগুলো লাগিয়ে যেত তাহলে আপনার উপরের যুক্তিরত কোন তাৎপর্য দেখছিনা । একটা ঘর “সাজানো গোছানো” এটা দেখে আপনি ধরে নেন যে কেউ এসে সাজিয়ে গেছেন, তাকে দেখার দরকার পড়েনা এবং এটা পার্থিব অভিজ্ঞতা হয়ে যায় কিন্তু চাঁদ, সূর্য তথা মহাবিশ্ব দেখে আপনার মনে হচ্ছেনা যে এটার পেছনে কেউ আছে! আমরা অহরহ একটা জিনিষের অস্তিত্বের মাধ্যমে আরেকটা জিনিষের অস্তিত্বের প্রমাণ করি যদিও সেটাকে আমরা স্বচক্ষে দেখতে পারিনা । প্রাকৃতিক বন, নদী বা সাগর দেখলেও কি এটাই ভাবা যুক্তিসঙ্গত না যে এর পেছনেও একজনের হাত আছে? আপনার যুক্তিটা এখানে এসে কেন যেন ডিগবাজি খাচ্ছে ।
তাহলে মহাজগতটা এল কেত্থেকে? কে এটার শুরু করল? আপনি পার্থিব অভজ্ঞতা বলতে কি বুঝাতে চাচ্ছেন সেটা আমার কাছে খুব পরিষ্কার না । যদি এর দ্বারা আপনি এটা বুঝান যে ঈশ্বর এসে কিছু করে দেখাক তাহলে আপনি নিজেই নিজের যুক্তির বেড়াজালে পড়বেন ঠিক এই পোস্টের মত ।
কেউ বললেই যে সেটা সত্য হয়ে যাবে তারও কোন মানে নেই কিন্তু । আমাদেরকে দেখতে হবে প্রমাণ । প্রমাণ যেদিকে যাবে আমরাও সেদিকে যাব ।
এর দ্বারা কোন ঈশ্বর নেই সেটা কিভাবে প্রমানিত হয়?
বিশৃঙ্খলাও ঈশ্বরের অস্তিত্বেরই প্রমাণ করে! শৃঙ্খলা বা বিশৃঙ্খলা কোন কিছুই এমনি এমনি স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে সংগঠিত হয়না । কোথাও কি দেখেছেন এমনি এমনি বিশৃঙ্খলা ঘটতে?
এখানে একটা যুক্তির মডেল তুলে ধরলামঃ
১) সবকিছু যেটার অস্তিত্বের একটি শুরু আছে সেটার শুরুর পেছনে একটি কারণ/উৎস(cause) আছে। –
২) মহাবিশ্বের একটি শুরু আছে। সুতরাং:
৩) মহাবিশ্বের একটি কারণ/উৎস (cause) আছে।
এই কারণ/উৎস (cause) হচ্ছে সৃষ্টিকর্তা কারণ সঙ্গত কারনেই জড় বা বুদ্ধিহীন কোন কিছু এই মহাবিশ্বের সৃষ্টির কারণ হতে পারে না । এই মডেলটি ভুল প্রমাণ করতে হলে আপনাকে ১) এবং ২) কে ভুল প্রমাণ করতে হবে ।
ঈশ্বরের অস্তিত্বের বিশ্বাস না করে তার সংজ্ঞা চাওয়াটা বুঝতে পারলাম না । আমার লেখাতে একটু দিয়েছিলাম মনে হয় ঠিকমত পড়েননি “সৃষ্টিকর্তা চিরন্তন, অনন্ত, কালাতীত এবং মহাজগতের বাইরে তথা সৃষ্টির বাইরে যেহেতু এসবই তার সৃষ্টি” ।
জী, প্রমাণ আছে । তবে আলোচনার সুবিধার্থে একটা বিষয় নিয়ে এগুলে আলোচনা প্রাণবন্ত হয় তানাহলে জগাখিচুড়ি হয়ে যায় ।
ভাল থাকবেন ।
@মুহাম্মদ হাসান,
কোরানে কোথাও এটা পড়েছি বলে মনে পড়ছে না। এটা বলেন ধর্মতাত্ত্বিকরা যখন আল্লাহ নিয়ে কথা বলতে যান।
একটা ঘর সাজানো-গোছানো দেখে আপনি ধরে নিচ্ছেন সেটার পেছনে কোনো একজন মানুষ আছে। আপনি কিন্তু ধরে নিচ্ছেন না সেটা কোনো ফেরেসতা বা জ্বীনের কাজ। কিন্তু কেন, কারণ হচ্ছে আপনার পূর্ব-অভিজ্ঞতা থেকে এটা জানেন যে এ কাজটা একজন মানুষই করে। আর মানুষ ব্যাপারটি আপনার কাছে পুরোপুরি বোধগম্য।
এখন নদী-পাহাড়-পর্বত দেখে ঠিক কেন এর পেছনে ‘ঈশ্বর’ নামক কিছু একটা ভেবে নেবেন?
একটু ভেবে বলেন তো। আর আপনি এই ‘ঈশ্বর’ দ্বারা কি বোঝালেন? এটা কিভাবে আপনার কাছে বোধগম্য হল? ‘ঈশ্বর’ দিয়ে কোনো কিছু ব্যাখ্যা করলে সেটা কি আসলে অর্থবোধক কোনো ব্যাখ্যা হয়? ‘ঈশ্বর’ নদী-পাহাড় এগুলো তৈরী করেছেন – এ ধরণের কথার মানে কী?
এটা তো আমার-আপনার বিষয় না। এটা নিয়ে গবেষণা করবেন বিজ্ঞানীরা। কোথাও কোনো বৈজ্ঞানিক গবেষণায় কি প্রমাণিত হয়েছে যে ঈশ্বর এটা করেছে? আর মহাবিশ্বের শুরু ‘ঈশ্বর’ থেকে সেটা ধরে নিলে কী সমস্যা হয় তা জানার জন্য ২য় লিংকটা দিয়েছিলাম, পড়ে বলেন, ছোট্ট একটা লেখা।
এটাই। কিন্তু কেউ যদি ‘ঈশ্বর’ বা এরকম কিছু একটায় প্রবল বিশ্বাসী হয় তবে সমস্যা অনেক। বেশির ভাগ মানুষকে তার আশৈশব লালিত বিশ্বাসের অমূলকতা এমনকি চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিলেও বুঝতে চায় না, এর প্রতিকার কী হতে পারে?
শৃঙ্খলা যদি ঈশ্বরের প্রমাণ হতে পারে তাহলে বিশৃঙ্খলায় বিপরীতটা, তাই তো? এটা আপনার দেয়া ‘যুক্তি’ র প্রেক্ষিতে বলা। আর ঈশ্বর নেই সেটা আমি প্রমাণ করতে যাচ্ছি না।
হাহ হা। মানে মহাবিশ্বে যা কিছু হয় তার সাথেই একটা ‘ঈশ্বর’ লাগিয়ে দিতে হবে। আপনার ‘যুক্তি’ কোথায় তালগোল পাকাচ্ছে তা কি ধরতে পারছেন?
১ নম্বর অর্থাৎ যুক্তির ভিত্তিতে গণ্ডগোল আছে। সম্পূর্ণ মহাবিশ্ব এক জিনিস এর মধ্যকার কোনো একটি বস্তু অন্য জিনিস। মহাবিশ্বের অন্তর্নিহিত বস্তুগুলোর ক্ষেত্রে যেসব নিয়ম খাটে সেটা যে সম্পূর্ণ মহাবিশ্বের ক্ষেত্রে খাটবে এ ধারণায় সমস্যা আছে। মহাবিশ্বের অন্তর্নিহিত সবকিছু দেখে আমরা সম্পূর্ণ মহাবিশ্ব সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নিতে পারি না। এছাড়া মহাবিশ্বের খুব সামান্য অংশই আমরা পর্যবেক্ষণ করতে পেরেছি। এখনো এর অন্তর্নিহিত বস্তু সম্পর্কিত অগণিত অমীমাংসিত সমস্যা আছে। আর মহাবিশ্বে এমন কিছু ঘটনা সনাক্ত করা হয়েছে যেগুলোর পেছনে ‘কারণ’ পাওয়া যায় নি। অর্থাৎ সবকিছুর পেছনে কারণ আছে এটা প্রমাণিত নয়।
২ নম্বরে মহাবিশ্বের একটা শুরু আছে বিষয়টা বিজ্ঞানীদের কাছ থেকে বুঝে নেয়া উচিত যে সে শুরু বলতে কী বুঝাচ্ছে। নিশ্চয় তাতে ঈশ্বর বলতে কিছু একটা চলে আসে না নাহলে বিজ্ঞানীরা তা বলতেন। মহাবিশ্বের উৎপত্তি একটা বিশাল গবেষণার বিষয়, সেটা নিয়ে বিজ্ঞানীরা গবেষণা করছেন ও করবেন। এবং তারা কি বলেন সেটা শুনি। ‘ঈশ্বর’ কে নিয়ে এসে ঘোড়া ডিঙ্গিয়ে ঘাস খাওয়ার অর্থটা কী?
৩ হচ্ছে সিদ্ধান্ত। ভিত্তিতে সমস্যা আছে, তাই এ সিদ্ধান্তে যেতে পারেন না।
‘সৃষ্টি’ জিনিসটা কী? ভাবুন একটু। আর ‘বুদ্ধিমান’ বলতে আমরা কী বুঝি? সে বুদ্ধিকে ধারণ করার জন্য একটা ব্রেন দরকার। কিন্তু ঈশ্বরের কী এরকম কিছু আছে? না থাকলে তা আছে বলে ভাবব কেন? এটাও আবার উদ্ভট কল্পনা হয়ে যায় না যে ব্রেন নেই কিন্তু বুদ্ধি আছে। হ্যা, আমাদের বোধগম্য জগতের বাইরে আমরা যেতে পারি না, এর ভেতরে থেকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আর ‘ঈশ্বর’ এর কাজকর্মের যেসব বিবরণ আমরা পাই তা থেকে তাকে বরং মারাত্মক নির্বোধ বলে মনে হতে পারে। অথচ সংজ্ঞামতে ঈশ্বর নির্বোধ হতে পারে না।
এগুলো নিশ্চিত হতে কোন যুক্তির আশ্রয় নিয়েছেন?
@সৈকত চৌধুরী,
আমিও তাই জানতাম যে কুরআনে এরকম কোন তত্ত্ব নেই । জনাব আরজ আলী মতব্বরও এই মিথ্যা তত্ত্বের ভিত্তিতে উনার যুক্তি তুলে ধরেছেন । ভাবেছিলাম আপনারা ভালকরে যাচাইবাছাই করে প্রমাণাদি দেখে তারপর কোন কিছুতে বিশ্বাস করেন । আপনি নিশ্চয় যে কোন নামধারি “বিজ্ঞানীর” কথায় বিশ্বাস করেননা, একটু যাচাইবাছাই অবশ্যই করেন । কিন্তু আমার ধারনা আসলে ভুল, আপনারা ধর্মের ব্যাপারে বিশেষ করে ইসলামের ব্যাপারে যা শোনেন তাই ইসলাম বলে ধরে নেন, ঠিক না বেঠিক তার তুয়াক্কা করেননা । এটা সৎ মানুসিকতার পরিচায়ক না ।
ঘটনাটা কে বা কিসে ঘটাল সেটা আমার মূল বক্তব্য নয় বরং এখানে মূল বিষয় হল “এটাকে ঘটানো হয়েছে”, ঘটনাটা এমনি এমনি ঘটেনি । এখন কে বা কিসে ঘটিয়েছে সেটা নির্ভর করবে ঘটনাটির ধরণের উপর । ধরুন একটা গাছ বাতাসের ঝাপটায় মাটিতে পড়ে গেল এক্ষেত্রে কারনটা হল বাতাস । আবার গাছতাকে যদি কেতে ফেলা হয় সে ক্ষেত্রে কারনটা হবে মানুষ । So, এখানে মুখ্য বিষয় হল “কারন”, “কে” না । ব্যাপারটা আসা করি বুঝে আসছে ।
জী, আমার পূর্ব অভিজ্ঞতা বলে দিচ্ছে যে ঘর সাজানোর কাজটা মানুষের কারন আমি তা মানুষকেই করতে দেখেছি কিন্তু আপনি কি কখনও আপনার অভিজ্ঞতায় দেখেছেন কোন মানুষকে একটা নক্ষত্র বা একটা গাছ বা একটা মাছি বানাতে? সুস্থ মস্তিস্ক থাকলে অবশ্যই বলবেন না । কিন্তু এসব(নক্ষত্র বা একটা গাছ বা একটা মাছি) বানানোর ঘটনাটাত ঘটেছে । তাহলে আমাদের অভিজ্ঞতার আলোকে আমরা কমপক্ষে এতটুকু বলতে পারি যে ঘটনাটিকে ঘটান হয়েছে এটা এমনি এমনি ঘটেনি । এখন ঘটনার প্রকৃতির উপর নির্ভর করবে কে বা কিসে ঘটনাটি ঘটাতে পারে । আমরা মহাবিশ্ব সম্পর্কে যতটুকু জানি তাতে এটা পরিষ্কার যে এটা কোন মানুষের পক্ষে বানানো সম্ভব না । আর এটাও পরিষ্কার যে এটা অতন্ত্য জটিল বা sophisticated। এটা জড় বুদ্ধিহীন কোন জিনিষের কাজ হতে পারে না । সুতরাং যুক্তিসঙ্গত কারনেই এগুলোকে যে ঘটিয়েছে সেই সত্ত্বাও অবশ্যই অসীম জ্ঞানের অধিকারী এবং সেই সত্ত্বার ইচ্ছা শক্তিও থাকতে হবে কারন ইচ্ছা শক্তি আছে বলেই তিনি এগুলো ঘটিয়েছেন । আর এই সত্ত্বাকেই আমরা “ঈশ্বর” বলে থাকি । আসা করি এখন বুঝতে পারছেন “ঈশ্বর” কিভাবে বোধগম্য হল, “ঈশ্বর” দ্বারা কি বুঝাচ্ছি এবং “ঈশ্বর” দ্বারা ব্যাখ্যা না করলে আর কোন অর্থবোধক হতে পারে না । অবশ্য আপনি যদি অন্ধ্যভাবে কিছু বিশ্বাস করতে চান সেটা আপনার একান্তই ব্যাক্তিগত ব্যাপার ।
সৃষ্টিকর্তাই যদি না থাকে তাহলে সেক্ষেত্রে আমার, আপনার বা বিজ্ঞানীর মধ্যে তফাতটা কি? In absence of a creator we are all just an accidental by-products of the nature. আর আপনার কথায় মনে হচ্ছে বিজ্ঞানীরা যা বলবেন আপনিও তাই মেনে নেবেন । ব্যাপার ঠিক ধর্মান্ধতার মত হয়ে গেল না? যাইহোক, এখন প্রশ্ন হল আপনি কোনদল বিজ্ঞানীদের কথায় বিশ্বাস করবেন? একদল আছে যারা সৃষ্টিকর্তায় বিশ্বাস করেন আরেকদল আছে যারা সৃষ্টিকর্তায় বিশ্বাস করেন না । আরও জটিলতা আছে, সব বিজ্ঞানীরাই সব বিষয়ে একমত না, সেক্ষেত্রে আপনি কি করবেন?
Francis Bacon(১৫৬১) একজন ব্রিটিশ দার্শনিক ও বিজ্ঞানী নাস্তিক্যবাদ সম্পর্কে বলেছেন “Little knowledge of science makes man an atheist, but in-depth study of science makes him a believer in God”
বিজ্ঞান কি এটাও প্রমাণ করেছে যে সৃষ্টিকর্তা বলতে কিছু নেই? বিজ্ঞান কি সব সত্যের মানদণ্ড? আপনি মনে হয় আমার পোস্টগুলি ভাল করে পড়েননি । আমার প্রত্যেকটা লেখাতেই বিজ্ঞান ভিত্তিক যুক্তি পেশ করেছি । আমার সর্বপ্রথম পোস্টটি ভাল করে আরেকবার পড়ে দেখুন দয়াকরে । বিজ্ঞানের প্রায় সব আবিষ্কারই একজন সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্বের প্রমানের অকাট্য দলিল । মহাবিশ্বের সুচনা বিন্দু(big bang) থেকে শুরু করে মহাবিশ্বের প্রসারণ তত্ত্ব (expanding universe), মহাবিশ্বের শৃঙ্খলা(fine tuning), তাপবলবিদ্যার (Thermodynamics) দ্বিতীয় সুত্র ইত্যাদি আরও অনেক আবিষ্কার দ্বারা সৃষ্টিকর্তার সুস্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায় । এবং যেসব বিজ্ঞানীরা সৃষ্টিকর্তার উপর বিশ্বাস করেন তারা এসব আবিস্কারের ভিত্তিতেই করেন । বিংশ শতাব্দীর সম্ভবত সবচেয়ে বিখ্যাত বিজ্ঞানী আইনস্টাইন, তিনিও সৃষ্টি কর্তার উপর বিশ্বাস করতেন । তিনি বলেছেন “I’m not an atheist and I don’t think I can call myself a pantheist. We are in the position of a little child entering a huge library filled with books in many different languages.…The child dimly suspects a mysterious order in the arrangement of the books but doesn’t know what it is. That, it seems to me, is the attitude of even the most intelligent human being toward God” (The Encyclopedia Britannica) কেন জানি লিঙ্কটা পোস্ট করতে পারলাম না । যেভাবে বলা আছে সেভাবে চেষ্টা করেছি কিন্তু হচ্ছেনা ।
আপনি আসলেই আমার প্রথম পোস্টটি পড়েননি!!! তাহলে আমাকে এই বই পড়তে বলতেননা । আপনার পুরো লেখাটাই একটা ভুল যুক্তির উপর ভিত্তি করে লেখা । যেমন আপনি বলেছেন
এই যুক্তিটাই ভুল, আমার প্রথম পোস্টে আমি এটা বিশদভাবে আলোচনা করেছি “সৃষ্টিকর্তার সৃষ্টিকর্তা?” অংশটুকু পড়ে দেখুন ভালকরে । infinite regress দ্বারা আমি প্রমাণ করেছি যে সৃষ্টি কর্তার কোন কারন থাকা অসম্ভবব । আমি জানি এই ধারনাটি মেনে নিতে খুব কষ্ট লাগে কারন তাতে সৃষ্টি কর্তাকে মেনে না নেওয়া ছাড়া আর কোন উপায় থাকে না ।
কিছু মনে করবেন না, আপনার বই পড়তে গিয়ে দেখলাম আপনি ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয়য়ের বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদি কাউন্সিলের সদস্য কিন্তু আপনার understanding আর যুক্তির ধরন দেখে ঠিক মেলাতে পারছিনা । জবাব দেওয়ার আগে একটু ভেবে দেখবেন দয়াকরে । আপনার understanding অনুযায়ী যখন কোন কিছু সাজানো গোছানো দেখবেন ধরে নেবেন এটা কোন মানুষের কাজ যেহেতু অভিজ্ঞতা তাই বলে আর যখন এলোমেলো কিছু দেখবেন তখন এর পেছনে কারন নেই, এটা এমনি এমনি হয়েছে, তখন হঠাৎ করে অভিজ্ঞতা আর কাজ করেনা, । ভালই যুক্তি শেখালেন ।
আমি তালগোল খেলে আপনি প্রমাণ করে দেখাচ্ছেননা কেন যে বিশৃংখলা এমনি এমনি ঘটে?
এটা কোন যুক্তির আলোকে বললেন? বুঝতে পারলাম না । ১ নম্বর ভিত্তিকে খণ্ডন করতে হলে আপনাকে উদাহরণ দ্বারা প্রমাণ করতে হবে যে কোন কোন জিনিষের অস্তিত্বের শুরু কোন কারন ছাড়াই হয়ে থাকে অর্থাৎ এমনি এমনি স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে হয়ে থাকে । যেমন ধরেন আপনি রাস্তা দিয়ে হাঁটছেন আর হঠাৎ করে একটা মুরগির ডিম অথবা একটা গাড়ি বা এরকম যে কোন কিছু আপনার সামনে এসে হাজির হল!!! দেখুন, আমরা কেবল আমাদের অভিজ্ঞতার আলোকেই আমাদের যুক্তি পেশ করতে পারব অভিজ্ঞতার(সেটা বাস্তব বা তত্ত্বগত হতে পারে) বাইরে মানুষের পক্ষে কোন কিছু সম্ভব না । আমাদের অভিজ্ঞতা বলে যে, যে জিনিষের অস্তিত্বের শুরু আছে সেই জিনিষের অস্তিত্বের পেছনে একটা কারন আছে । এখন আপনি যদি বলেন যে সম্পূর্ণ মহাবিশ্বের অস্তিত্বের শুরু আছে কিন্তু সেটা আমাদের অভিজ্ঞতার আলোকে বলতে পারব না যে এটার শুরুর পেছনে একটা কারন থাবতে হবে সেক্ষেত্রে আপনাকে যুক্তি দিয়ে বুঝিয়ে দিতে হবে কেন তা করা যাবে না । শুধু মুখে বললেত হবে না ।
এর দ্বারা আমার যুক্তি কিভাবে প্রভাবিত হয়? মহাবিশ্বের অমীমাংসিত সমস্যা বা কারন এগুলোর কোন কিছুর সাথে আমার যুক্তির প্রথম ভিত্তির দূরতম সম্পর্ক নেই । আমার যুক্তির প্রথম ভিত্তি হল “সবকিছু যেটার অস্তিত্বের একটি শুরু আছে সেটার শুরুর পেছনে একটি কারণ/উৎস(cause) আছে” এখানে অমীমাংসিত সমস্যা কোথা থেকে এল?
সবকিছুর পেছনে কারন আছে সেটা আমি কখন কোথায় বললাম? আপনিত আমার যুক্তিই এখন পর্যন্ত বুঝেননি!!! আমি আবার বলছি “সবকিছু যেটার অস্তিত্বের একটি শুরু আছে সেটার শুরুর পেছনে একটি কারণ/উৎস(cause) আছে” । আমি এটা বলছিনা যে “সব কিছুর পেছনে একটা কারন আছে” ।
আপনি একটু বুঝিয়ে দেননা বিজ্ঞানীরা কি বুঝাতে চাচ্ছেন? বিজ্ঞানীদের একটা বড় অংশ আছে যারা এর দ্বারা সৃষ্টিকর্তাকে বুঝেন এবং তারা বিশ্বাসও করেন ।
আপনিত এখানে বিজ্ঞানিদেরকেই ঈশ্বর বানিয়ে দিলেন দেখছি!!! আমি বিজ্ঞানের ভিত্তিতে যে অকাট্য যুক্তি তুলে ধরেছি তার দ্বারা সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্ব সন্দেহাতীত ভাবে প্রমানিত । আপনি মানতে চাচ্ছেননা সেটা অন্য কথা । কিন্তু “ঘোড়া ডিঙ্গিয়ে ঘাস খাওয়া” এসব যুক্তির কথা না । এগুলো সত্যকে উপেক্ষা করার বিভিন্ন তাল বাহানা ।
কোন যুক্তিতে আপনি ভিত্তিকে দুর্বল করলেন? আমার ভিত্তিতেও কোন সমস্যা নেই সিদ্ধান্তেও কোন সমস্যা নেই । সমস্যা হল আপনি মানতে চাচ্ছেন না । আর সেটা আমার মাথা ব্যথা না । আমার কষ্ট হল যে আপনারা নিজেদেরকে খুব বিজ্ঞান ভিত্তিক এবং যুক্তিবাদী মনে করেন কিন্তু বাস্তবে তা মানেননা ।
অনেকবারত বললাম, বুঝেননি? আবার বলছি সৃষ্টি হল যার অস্তিত্বের শুরু আছে ।
যিনি মহাবিশ্বকে সৃষ্টি করেছেন তাকে অবশ্যই খুবই প্রজ্ঞাময়ি এবং বিচক্ষন হতে হবে । কারন কোন সৃষ্টি যত জটিল এর সৃষ্টি কর্তাও তত বেশী বিচক্ষন হয় । এটা অতিসাধারন একটা যুক্তি । এখন এই সৃষ্টিকর্তার প্রজ্ঞা, জ্ঞান বা বিচক্ষনতা অবশ্যই মানুষের ব্রেইনের বা বুদ্ধির মত হবে না কারন আমরা হলাম সৃষ্ট আর তিনি হলেন সৃষ্টিকারী । যিনি কম্পিউটার তৈরি করেছেন তার জ্ঞান বুদ্ধি আর কম্পিউটারের বুদ্ধি কি এক? সুতরাং কম্পিউটারের বুদ্ধির সাথে কম্পিউটারের সৃষ্টি কর্তার বুদ্ধির তুলনা যেমন হাস্যকর ঠিক তেমনি মানুষের ব্রেইন বা বুদ্ধির সাথে তার সৃষ্টি কর্তার জ্ঞান বুদ্ধির তুলনা করা এর চেয়েও বেশী হাস্যকর নয় কি?
জী, একদম খাটি কথা ।
বিবরণ গুলি কি কখনও যাচাইবাছাই করে দেখেছেন?
অবশ্যই, কিন্তু আপনি সেগুলো পড়ছেন না । “সৃষ্টিকর্তা চিরন্তন, অনন্ত, কালাতীত এবং মহাজগতের বাইরে তথা সৃষ্টির বাইরে যেহেতু এসবই তার সৃষ্টি” এগুলো সবই infinite regress দ্বারা প্রমানিত । আমার লেখার র্যাবের উদাহরণটি আরেকবার ভাল করে বুঝার চেষ্টা করুন তাহলে বিষয়টা পরিষ্কার হবে ।
আশাকরি এই পোস্টে আর কোন বইয়ের লিঙ্ক দেবেননা । ভাল করে আমার যুক্তিগুলো বুঝার চেষ্টা করুন তারপর সময় নিয়ে গভীরভাবে ভাবুন । সৃষ্টিকর্তার পক্ষের যুক্তি অনেক কিন্তু বিপক্ষে কোন শক্ত যুক্তি আজ পর্যন্ত চোখে পড়েনি । যুক্তির খাতিরে না হয় ধরেই নিলাম যে দুই পক্ষেই সমান সমান যুক্তি আছে তার পরেও কি সৃষ্টিকর্তার উপর বিশ্বাস করাই যুক্তিবাদির বিচক্ষন্তার লক্ষন নয়? শতকরা ১ ভাগ সম্ভাবনা যদি সৃষ্টি কর্তার অস্তিত্বের পক্ষে থাকে তাও যুক্তি অনুযায়ী সৃষ্টিকর্তাকে মেনে নেওয়া উচিৎ কারন যদি সৃষ্টি কর্তা থেকে থাকে তাহলে সমস্যা কিন্তু নাস্তিকদেরই হবে । ভেবে দেখুন । ক্ষমা করবেন যদি আমার কোন কথায় আঘাত পেয়ে থাকেন ।
ভাল থাকবেন ।
@মুহাম্মদ হাসান,
যে জিনিসের শুরুই হয় না, তার অস্তিত্ব কিভাবে থাকতে পারে, বুঝিয়ে বলুন
@অর্ফিউস,
আমি আমার লেখাতে এই বিসয়টা একটা উদাহরণ দিয়ে বুঝানোর চেস্টা করেছি । যদি বুঝাতে সমস্যা হয় আবারো চেস্টা করব কিন্তু আগে ওটা পড়ে দেখুন দয়াকরে ।
@মুহাম্মদ হাসান, ভাই শুনেন, আপনার বিরাট মন্তব্য পুরোটাই পড়লাম। কিন্তু আপনি যেসব কথাবার্তা বলেছেন সেটা সৃষ্টি কর্তার শুরুই হতে পারে না কিন্তু তার অস্তিত্ব থাকতে পারে, এমন কিছু ব্যখ্যা করা নেই।
আমার প্রশ্নের জবাব টা আমি কিন্তু পেলাম না। আচ্ছা আপনার মত করে আমিও একটা উদাহরন দেই। ধরেন যে দুই দলের ক্রিকেট খেলা হবে। শুরুও হল, কিন্তু বৃষ্টি এসে এটাকে শেষ করে দিল। আপনি বলতে পারবেন যে খেলাটা শুরু হয়েছিল, এটা পরিত্যক্ত হয়েছে, টেস্ট হলে আপনি বলবেন ড্র হয়েছে শুরু হবার পরে।
কিন্তু যদি খেলাটা আদৌ শুরুই না হত, তাহলে কি আপনি বলতে পারতেন যে খেলাটা পরিত্যক্ত হলেও এর অস্তিত্ব আছে? এখানে পরিতক্ত্য শব্দটা আসে কিভাবে যেখানে শুরুই হয় নি? শব্দটা তখন আসতে পারে যদি জিনিসটা আদৌ শুরু হয়ে থাকে।
@অর্ফিউস,
জী, আপনি ঠিকই বলেছেন । খেলাটা শুরু হলে আমরা বলতে পারতাম যে কেউ না কেউ খেলাটাকে শুরু করেছে এটা এমনি এমনি শুরু হয়নি, ঠিক কিনা ভাই?
আমার “সৃষ্টিকর্তার সৃষ্টিকর্তা?” র উদাহরণটি আরেকটু ভাল করে পড়ুন, কয়েকবার পড়ুন দরকার হলে । এটাকে গণিতবিদরা বলে (infinite regress) “অসীম পশ্চাদগমন” যেটা একটা যৌক্তিক অসম্ভাবনার জন্ম দেয় । আর বিজ্ঞানীদের নিকট “অসীম রাশি” বলতে কিছু নেই কারন এটা পর্যবেক্ষণ যোগ্য নয় এটা একটা কাল্পনিক রাশি । যেমন; অসীম রাশি থেকে কিছু যোগ বা বিয়োগ করলে অসীম রাশিই থাকে এর কোন পরিবর্তন হয়না । আসা করি infinite regress বিষয়টা বুঝেন । না বুঝলেও সমস্যা হওয়ার কথানা আমার উদাহরণ পড়ার পর । এখানে গুরুত্বপূর্ণ একটা বুঝার বিষয় হল যে, যেই জিনিষের অস্তিত্বের শুরু আছে সেই জিনিসের স্রষ্টা আছে, সৃষ্টি কর্তার যদি শুরু থাকে তাহলে তারও একজন সৃষ্টিকর্তা থাকতে হবে কারণ এমনি এমনি কোন কিছুর শুরু হতে পারেনা এবং এমনিভাবে আবার প্রশ্ন করা যেতে পারে যে সেই সৃষ্টি কর্তাকে কে সৃষ্টি করল এবং এভাবে যদি অনাদিকাল ধরে যদি আপনি যেতে থাকেন তাহলে সৃষ্টিরই শুরু হবে না আর আমরাও আজ এখানে বসে এ বিষয়ে আলোচনা করতে পারতাম না! কিন্তু সৃষ্ট বস্তু তথা আমরা এবং মহাবিশ্ব ইত্যাদির অস্তিত্ব প্রমাণ করছে যে সৃষ্টি কর্তার কোন শুরু থাকা সম্ভব নয় । শুরু শুধু সৃষ্ট জিনিষের থাকতে পারে সৃষ্টিকর্তারনা । উদাহরণটা এখানে আবার পেস্ট করছিঃ ধরুন আপনি র্যাবের একজন চৌকস সৈনিক এবং খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা অপারেশনে একজন কুখ্যাত সন্ত্রাসীকে ধরার জন্য বেড়িয়েছেন । অপারেশনের কোন এক পর্যায়ে আপনারা যাকে খুঁজছেন তাকে আপনি বন্দুক হাতে যেতে দেখলেন । এখন আপনার হাতেও এ কে ৪৭ প্রস্তুত কিন্তু গুলি চালাবার আগে আপনাকে আপনার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার নিকট হতে অনুমতি নিতে হবে । সংগে সংগে আপনি আপনার পেছনে দাড়িয়ে থাকা আপনার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার নিকট অনুমতির জন্য জিজ্ঞাসা করলেন “স্যার, দেই গুলি করে, ক্রস ফায়ার বলে চালিয়ে দেব”? । কিন্তু আপনার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা আপনাকে বললেন যে “অপেক্ষা কর আমি আমার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার নিকট থেকে অনুমতি নিয়ে আসি” । তিনি তার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার নিকট অনুমতি চাওয়ার পর সেই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা একই কথা বললেন “অপেক্ষা কর আমি আমার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার নিকট থেকে অনুমতি নিয়ে আসি” । এখন এই পরিস্থিতি যদি অসীমভাবে চলতে থাকে তাহলে আপনি কি আদোও আপনার ওই টার্গেটকে গুলি করতে পারবেন? কখনোই না । আপনি আপনার টার্গেটকে তখনই গুলি করতে পারবেন কেবলমাত্র কেউ যদি আপনার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মধ্য থেকে এমন থাকে যার আর কারো কাছ থেকে অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন নাই । অর্থাৎ আমরা যদি বলি যে সৃষ্টিকর্তাকে সৃষ্টি করেছেন আরেক সৃষ্টিকর্তা এবং তাকে সৃষ্টি করেছেন আরেক সৃষ্টিকর্তা এবং এভাবে যদি অনন্তকাল যেতে থাকি তাহলে সৃষ্টিকার্যই শুরু হবে না ঠিক র্যাবের সেই সৈনিকের মত কিন্তু সৃষ্টিজগত বিদ্যমান! সুতরাং সৃষ্টি জগত থেকে এটা স্পষ্টত প্রমানিত যে সৃষ্টিকর্তা একজনই এবং সৃষ্টিকর্তার কোন সৃষ্টিকর্তা থাকা সম্ভব নয় । আর এই সৃষ্টিকর্তা চিরন্তন, অনন্ত, কালাতীত এবং মহাজগতের বাইরে তথা সৃষ্টির বাইরে যেহেতু এসবই তার সৃষ্টি ।
ভাল থাকবেন ।
লেখাটি বেশ ভাল লাগলো সকল দ্বন্ধ সংঘাতের মাঝে নিজের অস্তিত্ব সেই আমি যা আমার সব। চালিয়ে যাও। পরের পর্বের অপেক্ষায় আছি।
ঈশ্বরের অস্তিত্ব থাকাটা উচিত ছিলো। নরকের আগুনে পুড়লেও অন্তত একটা অস্তিত্বতো থাকতো 🙁
যে দিন এই দুনিআর ৫০ % মানুষ ধর্মবিশ্বাসী হবেন না সেই দিন এই দুনিআ হবে মহা শান্তির।
লেখাটা ভাল লেগেছে। তবে সামান্য আরেকটু বড় হলে আবেদনটা আরো বেশি হত। মানে রহস্যটা আরেকটু ধরে রাখলে পরের পর্বের জন্য অপেক্ষাটা আরো বেশি উপভোগ্য হত। যাইহোক লেখার জন্য শুভেচ্ছা (F)
@অর্ফিউস, ধন্যবাদ আপনাকে। আমি এর পরের পর্বে আমার দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরবো। কোন যুক্তি খণ্ডন বা উপস্থাপনা করব না। এখন আর কোন যুক্তি দিতে ভালো লাগে না কেনো যেনো। ক্লান্ত হয়ে গেছি :p
ধরে নিলাম আমরা সৃষ্টিকর্তা ছাড়াই সৃষ্টি হয়ে গিয়েছি।
আমরা যদি সৃষ্টিকর্তা ছাড়া আপনা আপনিই সৃষ্টি হয়ে যেতে পারি,তা হলে সৃষ্টিকর্তার,সৃষ্টিকর্তা ছাড়া সৃষ্টিহয়ে যেতে এতটা অসুবিধা ও বাধা কোথায়?
আমাদেরকে একটু ব্যাখা করুন?
আমার জীবনটাও তেমনই তবে সামান্যতম ব্যতিক্রম বিদ্যমান। পরের লেখার অপেক্ষায় থাকলাম।
(Y)
আমার নিজের ধারণাকে অতিক্রম করেছি, অন্য ভাবে। আফসোশ!!! সেটা আপনার মত সুন্দর নয়, আবার আপনার মত গুছিয়ে লেখাও আমার পক্ষে সম্ভব নয়। একজন সাধারন পাঠক হিসাবে আমার ভীষণ ভাল লেগেছে। শুধু সেটাই জানালাম।
@রুদ্র ফীরাখ, ধন্যবাদ আপনাকে 🙂
“ছোটবেলা থেকেই অনেক অভিযোগ অনুযোগ করেছি ঈশ্বরের কাছে ” কথাটা ভাল লাগছে আমিও করেছি কিন্তূ কোন উত্তর পাই নাই। আব্বা আম্মা কে জিজ্ঞাসা করলে বলেছেন, সবর কর সবরে মেওয়া ফলে..আব্বা আম্মা বড় ভাই সবাইকেই অনেক ভালবাসি কিন্তূ কাওকেই প্রাথনা করে বাঁচিয়ে রাখতে পারিনি … অনেক অন্যায় অবিচার বিপক্কে অভিযোগ করেছি কিন্তূ ফল পাই নাই … কারণ উনি যে চরম স্বার্থপর নিজেরটা ছাড়া কিছুই বোঝেন না… তাই আজ আমি মুক্ত কারণ আমি ঈশ্বর নামক ছেলেখেলায় আর বিশ্বাস করি না… ধন্যবাদ লেখক কে ..
(Y)
লেখাটি ভাল লাগলো। অনেকটা অপ্রাপ্তি রয়ে গেল। পরবর্তী পর্বের জন্য অপেক্ষা করছি।
(Y) (F)
মেশিন থুক্কু লেখা চলবেই
স্যার, খুউব ভাল্লাগলো। পরবর্তী অংশের অপেক্ষায় রইলাম।
@souvik, ধন্যবাদ 🙂
পরের পর্বের জন্যে অপেক্ষা করছি. ‘ঈশ্বর’ না বলে ‘আল্লাহ’ বললে ভালো হত মনে হয়. কারণ এটি একটি সামাজিক ‘ইস্যু’!
অসাধারন লেগেছে কথাটি।
মুক্তমনায় প্রথম লেখাতেই কাঁপিয়ে দিলেন ।
স্বাগতম মুক্তমনায়।
ভালো থাকুন। 🙂
@বাউন্ডুলে বাতাস, আপনাকেও ধন্যবাদ। আপইও ভালো থাকুন। 🙂
মুক্তমনায় স্বাগতম। আপনার ফেসবুক স্ট্যাটাসের মনোযোগী পাঠক আমি। মুক্তমনায় দেখে খুব ভাল লাগল
@অভিজিৎ দা, ধন্যবাদ আপনাকে।
চলতে থাকলে নিশ্চয়ই পরেরগুলো পড়বো। জীবন বদলের কাহিনী পড়তে আমার ভালই লাগে।
মুক্তমনায় স্বাগতম। আপনার বিশ্বাসী অবস্থার চিন্তাচেতনার অনেকাংশই আমার বিশ্বাসী অবস্থার চিন্তার সাথে মিলে যায়।
চলবে, চলুক, পরের পর্ব পরার অপেক্ষা থাকলাম। আমার বাবা শুধু না আমার পুরো পরিবার সূফীবাদীতে বিশ্বাস করে, আমার এই সূফীবাদ ধ্যান ধারনা থেকে বের হতে অনেক সময় লেগেছে। 🙂 (Y) কারন আমি সায়েন্সের স্টুডেন্ট ছিলাম না 🙁
@ফারজানা কবীর খান স্নিগ্ধা,
সায়েন্সের স্টুডেন্ট আমিও ছিলাম বা স্নিগ্ধা। তবে আমার পরিচিত সায়েন্সের অনেক ভালো ভালো স্টুডেন্টকে দেখেছি শিবিরের নেতা হতে, তাবলিগের চিল্লায় গিয়ে চিল্লাতে।
স্নিগ্ধা আপু, আসলেই এটা থেকে অনেকে বেড়িয়ে আসতে পারে না। অনেকটা আফিমের মত।
@গাজী ফাতিহুন নূর,
আমিও এই ইসলাম ধর্ম টা মানতে চাইনা…কিন্তু আল্লার ভয়ে ধর্ম মানি তাও নয়…শুধু ইসলামের চেয়ে ভালো কোন বিধান আমি খুজে পাইনা। আমি এই ধর্ম ছেড়ে ঠিক কোন মতবাদের অনুসরন করব ,তাই বুঝিনা। একটু হেল্প করেন তো …দেখি…আপনার ঝুলি তে কি আছে?
@মরুঝড়, মেলাদিন পরে দেখলাম আপনাকে, ভাল আছেন আশা করি।
যাই হোক এখানে আমি একটা উত্তর দিচ্ছি লেখকের আগেই।
এটা আপনার ব্যর্থতা। ইসলামের চেয়ে অপেক্ষাকৃত ভাল বিধা আছে নতুন বাইবেলের নিয়মে, আর সম্ভবত বৌদ্ধ ধর্মে ( এই ধর্মের সম্পর্কে খুবই কম জানি যদিও)।পুরা খ্রিষ্টান ধর্ম টেনে আনলাম না, কারন নতুন নিয়মে ইসলামের চেয়ে অপেক্ষাকৃত ভাল বিধান থাকার ফলে যে ধর্মীয় খামতি তৈরি হয়েছে, সেটা দারুন ভাবেই পুরন করে দিয়েছে পুরাতন নিয়ম আরো বেশি মারাত্বক আর হিংসাত্বক বিধান দিয়ে। আর যেহেতু পুরাতন নিয়ম ছাড়া খ্রিষ্ট ধর্মই বাতিল হয়ে যায়, সেখানে এই ধর্মে গড়পড়তায় বেশি ভাল খুজে পাই না। তবে এরা বদলেছে, ইসলাম বদলাবে এমন চান্স কম, কাজেই মানবতার খাতিরে ইসলামের চেয়ে অন্য যেকোন ধর্ম বর্তমানে এগিয়ে আছে।
কোন ছকে বাঁধা মতবাদ অনুসরন করতেই হবে এর কোন মানে নেই। ভাল থাকুন, ভাল কাজ করুন, কারো ক্ষতি করবেন না, মানুষ্কে ঘৃণা করবেন না, কারো সাথে মতের মিল না হলে এবং এটা যদি দুই মেরুর ফারাক হয়, তবে পরিবার পরিজন, আত্মীয় স্বজন, বন্ধুবান্ধব নিয়ে তার বা তাদের কাছ থেকে হাজার হাত দূরে থাকুন, তবে দয়া করে তাকে ( আপনার সাথে যার মতের বিরোধ) খুন করা, করতে উৎসাহ দেয়া বা প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ ভাবে সেটা বৈধতা দেয়া, অথবা শারীরিক ভাবে মারধোর করা, মানসিক ভাবে অত্যাচার করা আর তাকে সামাজিক ভাবে বয়কট করা থেকে বিরত থাকুন।
মিথ্যা কথা বলবেন না খুব দরকার না হলে( মানে সিরিয়ার বা প্রতারনামুলক মিথ্যা কখনই বলবেন না),চুরি করবেন না, ছিন্তাই করবেন না, মেয়েদের সম্মান দিবেন, অহেতুক কাপড়চোপড় নিয়ে নুন্যতম উস্কানী মুলক কথাবার্তা থেকে বিরত থাকুন, এবং অন্যকেও সেই উপদেশ দিন ( ভাল না লাগলে এড়িয়ে চলুন। কিন্তু প্লিজ উতক্ত্য কেউ করতে চাইলে মানবতার খাতিরে বাধা দিন),এমন ওয়াদা করবেন না যা রাখতে পারবেন না।……
এইরকম হাজারটা রাস্তা আছে ভাল থাকার।
দয়া করে বলবেন না যে এইগুলার বেশিরভাগ কথা ইসলামেও আছে। কারন এই জিনিস অন্য ধর্মগুলোর খেত্রেও প্রযোজ্য, কাজেই এখানে ইসলাম কে বিশেষায়িত করার তেমন কোন বিশেষ কারন নেই। ধন্যবাদ।
পড়ুন, ইসলামের চেয়ে ভাল বিধান আছে বাইবেলের নতুন নিয়মে 🙂
@অর্ফিউস,
আমি কোন ধর্মে বিশ্বাস করিনা। তবুও আপ্নাকে বলবো যদি কোন ধর্মে বিশ্বাস করতে চান তো বউদ্ধ ধর্মে বিশ্বাস করতে পারেন। এর থেকে ভাল ধর্ম আর নাই।
@সেন্টু টিকাদার,
:-O
বৌদ্ধ ধর্মের প্রতি এত আবেগ কিল্লাই ??? :-s
আমি কোন ধর্মে বিশ্বাসী না| তারপরেও কোন ধর্মে বিশ্বাস করতে চাইলে মসজিদে মাথা ঠুকতে পারেন| 😉
@সেন্টু টিকাদার,
ধন্যবাদ পরামর্শের জন্য। না আমার আসলে কোন ধর্ম মানতে তেমনটা ইচ্ছা কোনদিন হয়নি। তাছাড়া বৌদ্ধ ধর্মেও ঝামেলা আছে কিছু। জীব হত্যা মহাপাপ এখানে কিন্তু অন্যের জবাই করা জীবের মাংস বৌদ্ধরা খাচ্ছেন না? এইগুলা আমার কাছে নীতিহীনতা মনে হয়। বৌদ্ধ ধর্মকে আমি কিছুটা ভাল বলতে চেয়েছি এর প্রধান কারন হল আমি এই ধর্ম সম্পর্কে কিছুই জানি না বললেই চলে। জানার পর সেই ধারনাটা পাল্টেও যেতে পারে।
তবে জানার ইচ্ছাও আমার নেই আর,কারন ধর্ম সম্পর্কে জানার চেষ্টা করা মানেই এইগুলা সম্পর্কে পড়াশোনা করা যেটা আমার কাছে সময় নষ্ট বলে মনে হয়। দুনিয়াতে ধর্ম বিষয়ক পড়াশোনা করার চেয়ে অনেক ভাল কাজ আছে করার মত।
তবে বৌদ্ধ ধর্মের নামেও সহিংসতা হতে পারে। এখানে দেখেন। আর যেকোন ধর্মের নামে যে সব সহিংসতা হয় তার জন্যে আমি ধর্মগুলিকেই দায়ী করে থাকি, কাজেই এর আওতায় বৌদ্ধ ধর্মও পড়ে। ধন্যবাদ।
@অর্ফিউস,
ভাই অর্ফিউস ,ভালো আছি। আশা করি আপনিও ভাল।
অনেকেই মুখে বলেন -সব ধর্মই এক। কথাটা ভুল। আর সব ধর্মের মত ইসলাম নয়। আপনি উপরে যা বলেছেন-তা আমার ব্যাক্তিক সমাধান হতে পারে যা যে কোন ধর্ম তার অনুসারিকে দেয়। আপনিও সেরকম ই কিছু দিলেন…কিন্তু আমার অর্থনৈতিক বিধান,প্রশাসনিক,বিচার,রাষ্টীয় বিধান কোথায়? কে দেবে ? আর কোন ধর্মের কোন শক্তি নেই -এসব বিধান দেয়। এখন বাকি অন্য মতবাদ-সমাজতন্র-এই তন্র,সেই তন্র–…তন্র…এসব যে ফেল মেরেছে তাকি আর বলতে হবে আপনাকে। আমেরিকার অর্থনৈতিক বিধান দেখুন-মহামন্দা। আর এর জের টানতে হয় বাকি বিশ্বকে। চড়া সুদের ঘানি টানতে টানতে কত দেশের যে কি অবস্থা …সবি জানেন নিশ্চয়। তবে মানুষ কোথায় যাবে…কোথায় সমাধান? অনেক কিছু বলার ছিল ভাই-কিন্তু যা দিঙ্কাল…আমি ভাই আর না লিখি…বাকি টুকু বুঝবেন নিশ্চয়। কথা হবে…ভালো থাকবেন।
@মরুঝড়, ধন্যবাদ ভাই, এই আছি কোন রকম। আসলে সব ধর্ম ইসলামের মত নয় বলতে আপনি হয়ত জাকাত দেয়ার নিয়মের কথা বুঝিয়েছেন? অথবা জীবন বিধান? এইগুলা ইসলামে যা দেয়া আছে তা হয়ত সেই সময়ের পরিস্থিতিতে ভাল ছিল, কিন্তু এখন সেগুলোর অনেক কিছুই মেনে চলা সম্ভব না।
যেমন দেখেন যে নারীর পক্ষে পরপুরুষের সাথে দেখা করাও নাকি হারাম, আর পরপুরুষ বলতে কিন্তু বিবাহ করা যায় এমন সবাই কে বুঝানো হয়েছে। এমনকি এতে 1st Cousin এর সন্তানও পড়ে। যেমন ফাতিমা আর আলীর বিয়ের কথা।
এখন আপনার আপন চাচাতো বোনের মেয়েকে আপনি নিশ্চয়ই নিজের মেয়ের মতই মনে করেন আর তার সম্পর্কে আপনার কোন কু ধারনা থাকা সম্ভব না তাই না? কিন্তু ইসলামী বিধানমতে কিন্তু তার সাথে আপনার বিয়ে জায়েজ। এইটা কি বাস্তব সম্মত নিয়ম হল?
টাকা ধার নিলে তো সুদ দিতেই হবে। ধরি আজ আপনি ১০০০ টাকা নিলেন যা দিয়ে আপনি ৪ কেজি গরুর মাংস কিনতে পারবেন, ১০ বছর আগে কিনতে পারতেন ১২ কেজি গরুর মাংস। ১০ বছর পরে মনে হয় এক কেজির কিছু বেশি কিনতে পারবেন। সেখানে সুদ না নেয়ার চিন্তাটা কি বাস্তব সম্মত? ১২ কেজি, ৪ কেজি, আর ১ কেজির কিছু বেশি গরুর মাংস কিন্তু এক হতে পারে না। এইবার আপনি চিন্তা করেন যে ১০০০ টাকা ১২% সুদে ( যে রেট আপনি ফিক্সড ডিপোজিট থেকে পান) ১০ বছরে হবে ১২০০ টাকা। এতেও কিন্তু আপনার সমান মাংস মুল্য আসছে না। আরো ন্যায়বিচার হত আপনাকে আরো বেশি সুদ দিলে।
আপনি যখন ঋণ নিচ্ছেন ব্যঙ্ক থেকে তখন তারা ১৫-১৮% হারে সুদ নিচ্ছেন। এখানে একটা ফাকি আছে, তবে বিনিময়ে আপনাকে কিছু বেশি সুদ দিলেই ফাঁকিটা থাকে না আর আপনি লাভবান হন। তবে ব্যাপার কিন্তু প্রায় একই, গরুর মাংসের দাম দিয়ে হিসাব করেন। আপনার কিন্তু বেশি লস হচ্ছে না। নবীজীর সময়ে নাকি উটের মুল্য হিসাবে মুল্য নির্ধারন করা হত, বাংলাদেশে তো উট নেই, তাই আমি সবচেয়ে জনপ্রিয় খাবার গরুর মাংস দিয়ে মুল্য নির্ধারন করলাম। কিন্তু এতেও কিন্তু কিছুই হল না। আসলেই অর্থনীতি এতটাই জটিল জিনিস, যে এর জন্য অনেক অনেক গবেষণা দরকার হয়, খালি ১৪০০ বছরের পুরানো কিছু নিয়ম কিন্তু পরবর্তীতে ভাল কাজ করতে পারে না।
গনতন্ত্রের ব্যর্থতা আছে অনেক। আমাদের দেশ এর বড় প্রমান। সংখ্যাগুরুর ম্যান্ডেট নিয়ে ভোটে জয়ী হয়ে সংখ্যা লঘুদের উপর নির্যাতন ছাড়াও যা করা হয় তাতে প্রমান হয় যে এই দেশ প্রকৃত গনতন্ত্র ধারন করতে এখনো প্রস্তুত নয়।
কিন্তু আপনার শরিয়ার ব্যর্থতা নেই সেটা কিভাবে বলবেন? ব্যভিচারির ক্ষেত্রে পাথর মারা, চুরি করলে হাত কেটে দেয়া কোন মানবিক নিয়ম হতে পারে না। শরিয়ার সব নিয়ম আশা করি লেখার দরকার নেই, এই দুটাই যথেষ্ট
আর দিনকাল যাই হোক লিখতে থাকেন। মতামতের অধিকার সবার থাকা উচিত বলেই আমি মনে করি। এখানে অনেক দুর্মুখ হয়ত শুধুই ইসলাম আর মুসলিমদের পশ্চাৎদেশে অঙ্গুলি করতে ভালবাসে, সোজা কথায় জাতি বিদ্বেষ আরকি, কিন্তু আপনি ভালকরে লক্ষ করলে দেখবেন যে এরা কিন্তু সংখ্যায় কম, এবং আস্তে আস্তে অনেক কমে যাচ্ছে। ব্যক্তি বা জাতিবিদ্বেষ পরিহার করে সুস্থ আলোচনা এবং পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ সবসময় কিছু না কিছু ভাল ফলাফল বয়ে আনতে বাধ্য বলেই আমি বিশ্বাস করি।
🙂 ধন্যবাদ ভাল থাকুন আর লিখুন নিয়মিত এই অনুরোধ রইল মুক্তমনার একজন পাঠক আর শুভাকাঙ্খী হিসাবে।
@অর্ফিউস,
ভাই, কোনটা ভাল আর কোনটা খারাপ সেটা নির্ধারণ করবে কে? ভাল মন্দের সংজ্ঞাই বা কি? আপনার মতে হয়ত উপরোল্লিখিত বিষয়গুলি ভাল কাজ এবং এর দ্বারা আপনার মানসিক শান্তি উপলব্ধি হয় । কিন্তু আরেকজনের কাছে হয়ত ঠিক এর বিপরীত তথা আপনার দৃষ্টিতে যেগুলো খারাপ কাজ সেগুলো করে শান্তি পায় । আপনি তাকে মন্দ ব্যাক্তিও বলতে পারবেন না যেহেতু সৃষ্টিকর্তার অনুপস্থিতিতে আমরা কারো অধিনে না, আমরা সবাই একেকটা স্বাধীন জীব, আমরা যেভাবে খুশি সেভাবে চলতে পারি । আপনিও তাই বলেছেন “কোন ছকে বাঁধা মতবাদ অনুসরন করতেই হবে এর কোন মানে নেই” ।
@মুহাম্মদ হাসান,
এভাবে দেখলে তো মুশকিল। আচ্ছা আপনিই বলেনতো ভাই যে কোন কাজটা ভাল আর কোন কাজটা খারাপ? আমি যেসব ভাল কাজের চার্ট দিলাম ? তা আপনার পছন্দ না হলে আপনি বলেন যে কোনগুলি আপনার কাছে খারাপ লেগেছে। চুরি করা খারাপ এইটা তো নিশ্চয়ই সবাই এক বাক্যেই শিকার করবে তাই না? ইভটিজিং কে ভাল বলবে সভ্য সমাজে এর নজীর কি আছে?
সে যদি সেগুলোই করতে চায় যা আমার দৃষ্টিতে খারাপ, সে করতে পারে, এতে আমার সমস্যা কিসের? আমার শুধু এক্টাই কথা আর তা হল যে তার কাজ যেন আমার ক্ষতি না করে। আমার ক্ষতি না করে কেউ যদি আমার দৃষ্টিতে খারাপ কাজ করতে থাকে তো এতে আমার কি বলার থাকতে পারে বলেন? 🙂
সেতো বটেই। স্বাধীনভাবেই কাজ করুক সমস্যা কি? আমার বা আমার পরিবারের কোন ক্ষতি না হলে আমার কোন মাথা ব্যথা নেই তাতে 🙂
@অর্ফিউস,
আমার বলার উদ্দেশ্য হল যে কারো কাছে যদি চূড়ান্ত জবাবদিহিতা করতে না হয় তাহলে সে ক্ষেত্রে আমি বা আপনি কেউই ভাল মন্দের সংজ্ঞা নিরুপন করতে পারবনা । অর্থাৎ করো কাছে জবাবদিহিতা না থাকলে আমরা সার্বজনীন বস্তুগত ভাল বা মন্দ (absolute good বা bad) অথবা সার্বজনীন বস্তুগত সত্য বা মিথ্যা (absolute/objective truth বা false) কি তা কখনোই নির্ধারণ করতে পারব না এবং যার ফলাফল হত ভয়াবহ । কিন্তু আমরা জানি যে সার্বজনীন বস্তুগত নৈতিক মুল্যবোধ (absolute good বা bad) অথবা সার্বজনীন বস্তুগত সত্য বা মিথ্যা (absolute/objective truth বা false) র অস্তিত্ব আছে । যেমন ধরুন ধর্ষণ করা যে মন্দ কাজ এটা সার্বজনীন এমনকি ধর্ষণকারীর কাছেও এটা খারাপ কাজ কারন সেও কখনও তার নিজের মা বা বোনকে কেউ ধর্ষণ করুক এটা কখনই চাইবে না । কিন্তু এই চূড়ান্ত জবাবদিহিতা করবেন কার কাছে? এই চূড়ান্ত জবাবদিহিতা হতে হবে সৃষ্টিকর্তার কাছে । কেন? কারন সৃষ্টি কর্তা ছাড়া জবাবদিহিতার প্রশ্নই আসেনা । কারন তখন আমি ধরে নেব যে আমার জীবনের কোন উদ্দেশ্য নেই কোন মানে নেই, আমি একটি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে আকস্মিকভাবে সৃষ্ট অন্যান্য প্রাণীর ন্যায় একটা জীব যেটা এমনি এমনি ঘঠেছে এবং মৃত্যর মধ্য দিয়ে আমি একদিন এই প্রক্রিয়ার মাঝে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাব । সুতরাং যতদিন বেচে থাকব ততদিন আমি শুধু আমার আরাম আয়েস, সুযোগ সুবিধা ইত্যাদি নিয়েই মশগুল থাকব যেহেতু মৃত্যর পর আর কিছু নেই। অন্যের কি হল বা না হল সেটা আমার কাছে কোন বিষয় না । আমার কাছে চুরি, ডাকাতি, খুন, ধর্ষণ, লুন্ঠন কোন খারাপ কাজ না । এবং বর্তমান সময়ের অক্সফোর্ডের একজন বড় মাপের নাস্ত্যিক যার নাম জে এল ম্যাকি তার দি মিরাকল অফ থিয়িজম (The Miracle of Theism) নামক বইয়ের ১১৫-১১৬ পৃষ্ঠায় তিনি বলেছেনঃ “If, then, there are such intrinsically prescriptive objective values, they make the existence of a god more probable than it would have been without them. Thus we have, after all, a defensible inductive argument from morality to the existence of a god” আমার রাফ অনুবাদ “যদি এরকম প্রকৃত প্রচলিত বস্তুগত নৈতিক মুল্যবোধ থেকে থাকে তাহলে সেটা সৃষ্টি কর্তার অস্তিত্বের সম্ভাবনাকে আরও বাড়িয়ে দেয় । সুতরাং, অবশেষে আমরা বস্তুগত নৈতিক মুল্যবোধের দ্বারা সৃষ্টি কর্তার অস্তিত্বের একটা inductive যুক্তি পেলাম”
এর দ্বারা আমরা এই যুক্তিতে উপনিত হতে পারি ।
১। যদি সৃষ্টি কর্তার অস্তিত্ব না থাকত, তাহলে বস্তুগত নৈতিক মুল্যবোধের অস্তিত্ব থাকত না
২। বস্তুগত নৈতিক মুল্যবোধের অস্তিত্ব আছে
৩। সুতরাং, সৃষ্টি কর্তার অস্তিত্বও আছে ।
এখানে খেয়াল করার বিষয় হল যে আমি এটা বলছিনা যে নৈতিক জীবন যাপনের জন্য আমাদেরকে অবশ্যই সৃষ্টিকর্তার উপর বিশ্বাস করতে হবে । আমি এটাও বলছিনা যে সৃষ্টিকর্তার উপর বিশ্বাস না করলে আমরা বস্তুগত নৈতিক মুল্যবোধ কি তা সনাক্ত করতে পারবনা । আমার প্রশ্ন হল সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্ব ব্যাতিত বস্তুগত নৈতিক মুল্যবোধের অস্তিত্ব কি থাকতে পারে?
জী হাঁ, আমার দৃষ্টিতেও এগুলো খারাপ কাজ এতে কোন সন্দেহ নাই । তবে আমি এগুলোকে মানি কারন আমি জানি আমাকে সৃষ্টিকর্তার সামনে চুড়ান্ত জবাবদিহিতার সন্মুখিন হতে হবে এবং এটা শুধুই নিছক বিশ্বাস উপর ভিত্তি করে না বরং যুক্তির কষ্টি পাথরেও পরীক্ষিত ।
@মরুঝড় বদ্দা, একটা ধর্ম ছাইড়া আরেকটা ধর্ম ধরতে হইব ক্যান?
ধর্ম ছাড়া কি বাঁচা যায় না? :-s
@হয়রান,
কিন্তু ক্যামতে আছেন ,এটাই তো হুনবার চাই ভাই?
@মরুঝড়, আমি ব্যাক্তিগত জায়গা থেকে যদি বলতে যাই তাহলে বলব, কোন ধর্ম পালনই দরকার নেই। আমার কাছে কোন ধর্মই আবেদনময় মনে হয় না সেটা ইসলাম, হিন্দু, খৃস্টান, বৌদ্ধ, শিখ যা-ই হোক না কেনো।
@গাজী ফাতিহুন নূর,
আর দেখি এসব নিয়ে কথা বলতে ভাল লাগেনা। আমি ভাই বিদায় নিলাম। সবার জীবন সুন্দর হোক, এই কামনায় … (F) (W) ধন্যবাদ সবাইকে।
@গাজী ফাতিহুন নূর,
কিছু মনে করবেননা but আপনার লেখা থেকে বুঝা যায় যে আপনি ইসলাম সম্পরকে খুব একটা লেখাপড়া করেননি,যতটুকু জানেন সেটাও মানুসের মুখ থেকে শোনা তাও বেশিরভাগই ভুল । সুতরাং ধর্ম আপনার কাছে আবেদনময় হবেনা এটাই স্বাভাবিক ।
(Y)
অনেক ধন্যবাদ।
@সৈকত চৌধুরী, আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ।
@গাজী ফাতিহুন নূর, অনেক ভালো লিখেছেন ভাই, আপনাকে অনেক ধন্যবাদ, ভালো লাগল আপনার লিখাটি পড়ে।
গাজী ফাতিহুন নূর আরো ভাল লেখে। আমার কাছে মনে হল আরো কিছু কথা গুছিয়ে বলা বাকি। সত্যি মনে হলো- “…অনেকগুলো কথা বলার জন্যে হাতে তুলে নিয়েছিলাম ল্যাপটপটা। জমে আছে অনেকগুলো কথা। মাইক্রোসোফট ওয়ার্ডের চার পেইজে এসেও দেখা গেলো বলা হলো না কিছু…”
সব শেষে দেখলাম ” (চলবে…) ”
বেশতো, চলুক তবে। আমার মন্তব্যটাও নাহয় তার পরেই করবো…
আপাতত প্রিয় লেখক ড. মুহাম্মদ জাফর ইকবাল-এর কাছ থেকে ধার করা একটা কথাই বলছি- “ঈশ্বর হল একটা আশ্রয়…!”
@সফিক এহসান, “ইশ্বর হলো একটা আশ্রয়” যেমন মাদকদ্রব্য হচ্ছে নেশাবাজদের আশ্রয়। ইশ্বর আশ্রয় দেন ভীতু, মূর্খ, এবং দুর্বৃত্যদেরকে।
@তানভির জহির, উত্তম কথা, আশ্রয়টা কাল্পনিক নেশা। আমাদের নেশামুক্ত হওয়া উচিত।
ভাই ইসলাম অবসসই সত্য, যদি আপনাদের কথা অনুযায়ী সত্য না হয় তবে ত বেচে গেলেন, কিন্তু যদি সত্য হয়!!! তবে কি আবস্তা হবে? ভাই মানলে তো ক্ষতি নাই! ইসলাম মানতে থাকেন, পরেরটা পরে দেখা যাবে,