তুমিই আমাকে প্রথম পায়েখড়ি দিয়েছো তা কি তোমার মনে আছে? পা নিয়ে আমার যত পাগলামি সব তো তোমার কাছ থেকেই শিখেছি। সারা রাত আমি পড়াশুনা করে সকাল বেলা ঘুমাতে যেতাম আর তুমি তখন ঘুম থেকে উঠে আমাকে জ্বালাতে। সকাল বেলা তোমার একটা বদ অভ্যাস ছিল হাঁটতে বের হওয়া, আর আমার মতো ছিপছিপে বডিকেও সকাল বেলার হাঁটাহাঁটি করানোর বৃথা চেষ্টা করতে তুমি। একদিন ঘুম না আসায় আর তোমার পীড়াপীড়িতে বাধ্য হয়েই বের হলাম তোমার সাথে হাঁটবো বলে। কিন্তু সকালের পরিবেশ ও হাঁটাহাঁটি তোমার কাছে যতটা মনোমুগ্ধকর ছিল আমার ঘুম ঘুম চোখে তা ছিল বিরক্তি উদ্রেককারী।

তাছাড়া তোমার পাগলামি ছিল অনেক বেশী, অপ্রয়োজনে এই শীতের মধ্যে পায়ের জুতা খোলার আবদার তো আরও মেজাজ খারাপ করে দিয়েছিলো আমার। এতো মানুষ মর্নিং ওয়াক করে তারা কি জুতা খুলে এই ধরণের উদাহরণ দেখানোর পরও তোমাকে নিবৃত করতে পারলাম না। তুমি এখন খালি পায়ে শিশির ভেজা ঘাসের উপরে আমাকে নিয়ে মর্নিং ওয়াক করবা, এই শীতে খালি পায়ে ঘাসের উপরে হাঁটার কথা শুনে মেজাজ আমার চরমে। তুমিও নাছোড়বান্দা, জুতা খুলিয়ে হাত ধরে সন্তর্পণে হাঁটলে ঘাসের উপরে, আর যারা মর্নিং ওয়াকে এসেছে তারা আমাদের নিয়ে পর্যালোচনা করতে থাকলো আমরা প্রেম করতে এসেছি না হাঁটতে, যা ছিল আমার কাছে বেশ বিব্রতকর।

সত্যি কথা বলতে, শিশির ভেজা ঠাণ্ডা ঘাসের উপর হাঁটতে আমার খারাপ লাগছিলো না তুমি পাশে ছিলে বলে আর মাঝের মধ্যে তোমার সিক্ত পা দিয়ে আমার পায়ের উপর মৃদু আঘাত কেন যেন আরও মধুর লাগছিলো। অনেক সময় হেঁটে ক্লান্ত হয়ে যখন মুখোমুখি বসলাম তখন দেখলাম তোমার পদযুগল খানি ভিজে কুঁচকে গেছে। আমি অপলক দৃষ্টিতে ওই সুন্দর পায়ের দিকে তাকিয়ে ছিলাম, খুব ইচ্ছা করছিলো তোমার পায়ে চুমু দেই। জানো প্রগতিশীলরা আজকাল প্রকাশ্যে চুমু খাবার অধিকার চায়, তবে ঐসব প্রগতিশীলদের প্রগতি বেগতিতে পড়বে যদি আমি তাদের কাছে প্রকাশ্যে পায়ে চুমু খাবার অধিকার চাই। প্রগতিশীলদের কাছে আমার পায়ে চুমু খাওয়া যেমন দৃষ্টিকটু ঠিক তেমনি একজন প্রতিক্রিয়াশীলের কাছে প্রকাশ্যে চুমু খাওয়াও দৃষ্টিকটু।

তাছাড়া তখন খুব ইচ্ছা করছিলো তোমার পা চুষে আরও কুঁচকে দেই, কিন্তু সমাজের চক্ষু কুঁচকানোর ভয়ে আর কুঁচকাতে পারলাম না। ইস, তখন যদি একটা ছবি তুলে রাখতাম আমি, কিন্তু সেই উপায়ও তো আমার ছিল না। আমার মেয়েলী পায়ের উপরও তোমার ছিল মারাত্মক আগ্রহ। পায়ের উপর পা রেখে জড়িয়ে ধরে চোখ বুঝে চুমু খাওয়া আর একপা দুপা করে পায়ে পা রেখে হাঁটা তা তো তুমিই প্রথম আমাকে শিখিয়েছো। কতোই না পা নিয়ে পাগলামি করেছি আমরা। তোমার জন্য ওয়াটার কালার নেইলপোলিশ পরতাম পায়ে তুমি কি ভুলে গেছো তা? ছেলে হয়েও পায়ে নেইলপোলিশ পড়ার ট্যাবু সেই তখন থেকেই ভেঙ্গে ফেলেছিলাম।

মনে আছে তোমার রেইল লাইনের সমান্তরাল রেখার উপর দিয়ে খালি পায়ে হাঁটার কথা? পিচ্ছিল রেইল লাইনের এক রেখায় তুমি আরেকটায় আমি হাতে হাতে ধরে ব্যাল্যান্স রেখে সামনে এগিয়ে চলতাম। তুমি বলেছিলে এই মুহূর্তে যদি ট্রেইন আসে তাহলে কি হবে? আমি বলেছি দুজনে দুদিকে বিচ্ছন্ন হয়ে যাবো আর কি হবে? সত্যিই আজ দুজনে দুদিকে বিচ্ছিন্ন, কেন এতো দিন পরে আবার জ্বালাও তুমি?

জানি তুমি অনেক বড়লোক, উন্নত দেশের উন্নত প্রযুক্তির বাসায় থাকো তুমি। আচ্ছা তোমাদের বাসার ড্রয়িংরুমে কি ঘাসের গালিচা আছে? ঐ গালিচাতে প্রতিদিন কেমিক্যাল স্প্রে করে তুমি কি তার উপর দিয়ে হাঁটো? প্রাকৃতিক ঘাসে তোমার সুন্দর পা যেমন কুঁচকায় ঐ ঘাসেও কি তেমন কুঁচকায়? আমার খুব জানতে ইচ্ছা করে জানো, আমার মতো নির্বোধের তো এই সব প্রযুক্তি সম্পর্কে কোন ধারণাই নেই। তুমি তো সব সময়ই গাড়িতে চলাফেরা করো, আচ্ছা শেষ কবে তুমি মাটিতে খালি পা রেখেছিলে বলতে পারো?

তোমার তো অনেক টাঁকাপয়সা আছে তাহলে সুখ নাই বলে কাঁদো কেন? শুনেছি টাঁকা পয়সা থাকলেই নাকি সুখ হয় তাহলে তোমার কেন হয়না? কেন তুমি আমার দুয়ারে আবার কড়া নেড়ে আমাকে আবার আন্দোলিত করো, তুমি কি জানো না যে দাম দিয়ে তুমি একটি জুতা কেন সেই টাঁকা দিয়ে আমি সারা মাস চলতে পারি? তুমি আমাকে যে দামী উপহার দিতে চাও আমি তা কখনোই নিতে পারবো না কিন্তু আমি যে উপহারটা তোমার কাছে চাইলাম তা তুমি হেঁসে উড়িয়ে দিলে কেন?

তুমি জানো পা নিয়ে আমার পাগলামি আছে, ইংরেজিতে যাকে বলে ফুট ফেটিসিজম। আমি কি খুব বেশী কিছু চেয়েছি তোমার কাছে? শুধু আমার মেইলে তোমার কিছু কুঁচকানো পায়ের ছবি চেয়েছিলাম যা দেখে আজীবন আন্দোলিত হবো আমি। আরে পানিতে পা ৫ মিনিট ডুবিয়ে রাখলেও তো কুঁচকে যায়, কতো পেডিকিউর জিনিসপত্র আছে যা দিলে নাকি পা কুঁচকে যায় কিছু সময়ের জন্য। তখন তোমার পায়ের ছবি তুলে ই-মেইল করাটা কি খুব কষ্টের ছিল?