প্রেমের মরা সেও তো জলে ডোবে না,
পানির গভীর নীলে ঠিকানা হারিয়ে বিলীন হয়ে যায় না-
জলে ভেসে ভেসে প্রেমিকার দরদী-শত্রুতার প্রতিবাদ করে।
সুশিল সূর্য্য কিরণের নিরব ঘায়ে অমেরুদন্ডী আইভি লতারা
আপন শরীরে বিষ জমিয়ে নির্বোধ তৃণভোজীদের প্রতিরোধ করে।
বামন ধুতুরার দলও তাই করে- বেঁচে থাকার পথ করে নেয়।
গ্রীস্মের ভর দুপুরে ঝিমিয়ে পড়া কৃষক পল্লীতে
বিরতীহীন গম্ভীরা গেয়ে চলে কাজল ভোমরা-
তাপদাহের বিরক্তি তার সুরে সুরে ঝরে।
অসহ্যকে সহ্য করে না কেউ। কবি তোমাকে বলি কি,
অত শ্রমসাধ্য কবিতা প্রবাহের আর দরকার নেই।
তার থেকে গোটা চারেক শব্দের তদারকী কর।
ভালো করে চোখ মেলে দেখ- ন্যায়, বিবেক, নীতি, শ্রদ্ধা, আইন,
এই শব্দগুলোর ভিতরে পোকায় বাসা বেধেছে কেমন করে।
সাত স্তর ধুলো জমেছে শব্দগুলোর শরীরে।
কুকুরদের বিষ্ঠায় জন্ম নেয়া পোকারা
শব্দগুলোর কলিজা, হৃদপিন্ডেও বাসা বেধেছে কেমন।
তুমি কবি মানুষ, তোমার ঘেণ্ণা-পিত্তি টনটনে।
দরকার পড়লে ঋষি পল্লীর নিবারন ধাঙড়কে সাথে নিও তুমি।
ও সব ধুয়ে মুছে সাফ করে দেবে-
আমার কথা বললে এক পয়সাও নেবে না।
তোমরা নিরীহ ভাল মানুষেরা এই অধমের কথা শুনলে পস্তাবে না।
তোমরা বরং ধুতুরা, আইভি লতা হয়ে যাও।
আরে বাবা, শরীর থেকে যে প্রাণহীন বিবমিষা বেরিয়ে আসে
সেও তো বিরক্তি আর ঘৃণা ছড়ায়- সচকিত করে ফেলে নিরীহ চরাচর।
এক কাজ করো, গোড়া থেকে শুরু কর কাজ-
নিজের নামটার একটু মেরামতি কর। কানের ভাজে পেচসিল গোঁজা
বৃদ্ধ সুতারের মত হাতুড়ী ছেনী হাতে নিয়ে ‘নীরব’এর ‘নী’টাকে
খুচিয়ে খুচিয়ে সরিয়ে ওখানে ‘স’ বসিয়ে
নিজের নামটাকে শুদ্ধ কর- হয়ে যাও সরব সংখ্যাগুরু।
তারপর দেখবে নামের যাদু, ধুতুরা ফুলের জাদু।
যে তিন’শ পয়ষট্টি সূর্য্য মাথার উপর দিয়ে চলে গেছে,
তারা যাক- আফসোস করো না।
সামনে আরো তিন’শ পয়াষট্টি বার জন্ম নিও
সূর্য্যের হাত ধরে। শব্দে, আলোয়, স্বাদে, গন্ধে, স্পর্শে
মানব অস্তিত্বটাকে ছড়িয়ে দিও দশ দিকে,
কারণ সময়ের তুলাদন্ডে এটা দুই হাজার চৌদ্দ।
অপরাজেয় অনন্য দুই হাজার চৌদ্দই।