যে তিনটি দল, তিনটি পক্ষ এই দেশের তাবেদারি নিয়েছে তারা এবং তাদেরই তদারকি আমলে ঠিক কতজন গার্মেন্ট শ্রমিক মারা গেছে? ঠিক কত জন আগুন আতঙ্কে পায়ের তলে পিষ্ট হয়ে মারা গেছে? কতজন ছাঁটাইয়ের পর রোগ-শোক এ ভুগে মারা গেছে? এর কোন পরিসংখ্যানই গত মহামহিম সরকারগুলোর কাছে ছিল না, এখনকার ‘নতুন সরকারেরও’ কাছেও নেই। ‘দোজখের’ আগুনে অগুনতি গার্মেন্ট শ্রমিকের পুড়ে মরা। এটাকে ঠিক পুড়ে মরা বলা যাবে না। এটা স্রেফ হত্যাকাণ্ড। বাংলাদেশে যতো পোশাক কারখানা আছে তার প্রায় সবই একধরনের দোজখ বিশেষ। আগুন লাগার পর শ্রমিকরা বেরোতে না পেরে জ্যান্ত পুড়ছে। জ্যান্ত মানুষ ধীরে ধীরে আগুনে পুড়ে কয়লা হওয়া বীভৎস। সাভার ইপিজেডে, আশলিয়ায় আগুনে পুড়ে, তাড়া খেয়ে, মালিক পক্ষের লেলিয়ে দেওয়া ভাড়াটে গুন্ডাদের হাতে এ যাবত কত জন মরেছে তার কোন সঠিক হিসেব নেই। থাকে না। এটাই নিয়ম। কেননা,গার্মেন্ট মালিক, সুশীল নাগরিক নামের সমাজের সুবিধাভোগী অংশ, সরকার, সরকারের বিভিন্ন পেটোয়া বাহিনী সবাই এক হয়ে যে ভাবনা-চিন্তাপ্রসূত সিদ্ধান্তে আসেন তা হলো,গার্মেন্ট শ্রমিকরা হয় হাফ মানুষ, নয়ত সিকি মানুষ!
মৃত্যু এমনিতেই বীভৎস, কদাকার। মৃত্যুর কোনো সৌন্দর্য নেই, আগুনে পুড়ে মরাটা বীভৎসতম। এমন অভিযোগ প্রায়শঃই উঠেছে ওইসব কারখানাগুলোতে মাসের পর মাস ধরে শ্রমিকদের বেতন দেওয়া হয় না। ব্যাংকের দেনা শোধ হয় না। ব্যাক ক্রোক করে নিতে পারে মনে করে মালিক গং নিজেরাই আগুন ধরিয়েছে । এরকম নিজেরা আগুন ধরিয়ে দেওয়ার চল এই দেশে যে দিন থেকে এই গার্মেন্ট নামক দর্জিদোকানে গড়ে উঠেছে, সেদিন থেকেই এস্তেমাল হয়ে গেছে। ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের সময় কয়েক কোটি লিখিয়ে নেওয়া গেলে ইন্স্যুরেন্স ক্লেইম ইত্যাদি করে একটা মোটা অঙ্ক রেয়াত পাওয়ার চিন্তা থেকে এ কাজ হচ্ছে তাতে এখন আর রাখ ঢাক নেই।
গার্মেন্ট শ্রমিক নামক ওইসব হতভাগা শ্রমিকদের জন্য, তাদের ছেলে-মেয়ে গুলোর জন্য মিনিমাম দরদটুকুও আসেনা ওপর তলায় বসবাসকারী নৃপতিদের। ওই কারখানাগুলোর না-খাওয়া শ্রমিক এবং তাদের সন্তান-সন্ততিরা যখন কাফনের কাপড় গায়ে চড়িয়ে রাজপথে নামে তখনো এই সব প্যারাসাইট মধ্যবিত্ত থেকে উচ্চ বিত্তে লংজাম্প দিতে চাওয়া সেলিব্রেটিদের সামান্যতম অনুকম্পা হয়না। হয়নি। হওয়ার কথাও নয়। সারাজীবন সমাজের ওপরতলায় বিলাসব্যাসনে কাল কাটানো এই সব কর্পোরেট টাকাঅলা ভিখিরীদের অন্তরের শানেনাজুল আমাদের খুব ভাল ভাবেই জানা আছে। আমরা আধুনিক নগর সভ্যতার মানুষেরা পরে আর খোঁজ নেওয়ারও সময় পাইনা যে সেই হতভাগারা মরে গেছে, না এখনো বেঁচে আছে শেয়াল-কুকুরের মত তাদের মেয়েগুলো এখনো পেটের দায়ে দেহ বিক্রি করে, না সিফিলিস হয়ে তিলে তিলে মৃত্যুমুখে পতিত?
আমরা লেখকরা এ ধরনের হত্যাকাণ্ডকে যতই ধিক্কার দিই না কেন, পাঠক, দয়া করে বিক্ষুব্ধ হবেন না, দ্রোহি হবেন না। প্রকৃতিতে ‘ন্যাচারাল সিলেকশন’ বলে একটা কথা আছে। ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য নাকি জন্মহারের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে মৃত্যু ঘটিত হতে হয়! এই পোড়া দেশটা মনুষ্য জন্মহারে খুবই উর্বর। ঝাঁকে ঝাঁকে, গণ্ডায় গণ্ডায় এখানে মনুষ্য পয়দা হয়। এটা ভেবেই আমরা এক ধরণের ‘রিলিফ’ পেতে পারি। পাইও।
‘র্যাব’, ‘চিতা’, ‘কোবরা’র ‘ক্রসফায়ারে’ আঁকাবাঁকা, ভেঙেচুড়ে, দুমড়েমুচড়ে মানুষ মরে, আর তা দেখে হাজার হাজার মানুষ আনন্দ মিছিল (!) করে, মিষ্টি বিলোয়! কামেলরা বলেন, হারামির বাচ্চাগুলো এমন সন্ত্রাস করেছিল যে তাদের মৃত্যুতে মানুষ হাফ ছেড়ে বেঁচেছে, তাই আনন্দ মিছিল! মারহাবা! ইনশাল্লাহ আমাদিগের আনন্দ মিছিল করণেঅলাদের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাবে, কেননা সন্ত্রাসীও কমবে না, ‘ক্রসফায়ার’ও কমবে না। এটা সূত্রের কথা। ‘ক্রসফায়ারে’ সন্ত্রাস নির্মূল করতে হলে আড়াই থেকে তিন কোটি আদম সন্তানকে ‘ক্রসফায়ারে’ কতল করতে হবে। ‘ক্রসফায়ারে’ মরতে পারি, চিন্তাটা খালি পেটের মানুষের মাথায় থিতু হয় না। এটাই নিয়ম। তো যদি ধরেই নিই স্থায়ীভাবে সন্ত্রাস মুক্ত করার জন্য আড়াই কোটি মানুষ মেরে ফেলার সেমিনারজাত সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো এবং ‘প্রকল্প বাস্তবায়ন’ বিপুল বিক্রমে এগিয়ে চললো, তার কাছে গার্মেন্টস কারখানায় শত শত বা হাজার হাজার শ্রমিকের না খেয়ে,আত্মহত্যা করে বা পুড়ে মরা কী খুব বড়ো কিছু?
গত দুআড়াই দশকে এই ফ্যাক্টরিগুলোতে কতো মানুষ পুড়ে মরেছে তার পরিসংখ্যান এ মুহূর্তে দিতে পারছি না। অনুমান করা যায় পাঁচ থেকে ছয় হাজার মানুষ বিভিন্নভাবে মরেছে। ভুল বললাম, মেরে ফেলা হয়েছে। অপ্রশস্ত সিঁড়ি, প্রধান গেটে তিন-চার ধাপে তালাবন্ধ, শেকল দিয়ে সেই তালাকে আরো নিরাপত্তা দেওয়া। অধিকাংশ কারখানায় ফায়ার স্কেপ সিঁড়ি নেই, অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা নেই। কোথাও নামকাওয়াস্তে দুএকটা ফায়ার এস্টিংগুইশার থাকলেও তা অচল। পানি নেই। আগুন নেভানোর অন্য কোনো ব্যবস্থাও নেই। শুধু যদি গেটের তালাটা খোলা থাকে, অথবা গেটে তালা না দেওয়া থাকে তাহলে এই হতভাগাদের মৃত্যুটা এড়ানো যায়। কেন তা হয় না? কেন ব্যাংকে ভল্টের মতো নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তা দরকার? না, ভয় আছে। পাছে শ্রমিকরা সুতো-বোতাম, টুকরো টাকরা কাপড় নিয়ে যায়! এই সকল অব্যবস্থা নিয়ে কম লেখালেখি হয়নি। এক একটা অগ্নিকাণ্ডের পর এক-দেড়শ মানুষ মরার পর, এক একটা সন্ত্রাসী হামলার পর শত সহস্র মৃত্যু আর হাজার হাজার এর নামে মিথ্যা মামলা নিয়ে বিস্তর লেখালেখি, আলোচনা, সেমিনার হযেছে। রেজাল্ট শূন্য।
এবং তার নিশ্চিত বলি সাধারণ শ্রমিক। বিশেষ করে নারী এবং শিশু শ্রমিক। কেন একজন মালিক মরবে না? আজ পর্যন্ত কী কোনো একজন এমডি, ডিরেক্টর, পিএস, কমার্শিয়াল অফিসার মরেছে? না। কেন তারা মরবে না? দুর্ঘটনা তো জাতপাত বিচার করে আসে না, গরিব-ধনী দেখে না, তাহলে আজ অবধি কেন কোনো মালিক মরলো না আগুনে পুড়ে? সহজ উত্তর মালিকরা পুড়ে মরার মতো জায়গায় থাকে না। তাদের শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘরে আগুন প্রবেশ করে না। কেবল অশিক্ষিত-অর্ধশিক্ষিত হাভাতে শ্রমিকরাই (নারী এবং শিশু) আগুনে পুড়ে মরার জায়গাতে কাজ করে। তাদের পুড়ে মরাটাই যেন নিয়তি।
গার্মেন্টস নামক এই দর্জির কারখানাগুলো কোনো শিল্প নয় তাই এর নিট ফলাফল ক্যাশ কারেন্সি। হয়তো এর সহায়ক হিসেবে অন্যান্য অনেক কারখানা গড়ে উঠেছে। কিন্তু সবই ভাড়াবাড়ির মতো। দুমাসের নোটিশে ভাড়াটের মতো বাড়ি ছেড়ে যেতে পারে এই বিনিয়োগ। এই সেক্টর দেশের অর্থনীতিতে কী পরিমাণে সত্যিকার অবদান রেখেছে তা পরিসংখ্যান সাপেক্ষ। কিন্তু এই সেক্টরের কারণে এ দেশে একটা নব্য এলিট শ্রেনী পয়দা হয়েছে, এবং তারা প্রয়োজনে বেশ্যার দালালের মতো উভয়পক্ষের মুনাফা লুটতে কুণ্ঠা বোধ করে না, এটা পরিসংখ্যান ছাড়াই বলে দেওয়া যায়। এই শ্রেণীর কোনো কোনো বুজুর্গ মন্তব্য করেছেন গার্মেন্টস উঠে গেলে নাকি হাজার হাজার নারী শ্রমিক বেকার হয়ে বেশ্যাবৃত্তি করবে! এই সেক্টরে এক একটা দুর্ঘটনা ঘটে আর স্টুপিডবাক্সে ভেড়ুয়া দালালরা কাছা মেরে বসে পড়েন বক্তিমা ফলাতে।
গত কয়েকদিনে আশুলিয়ায় পুলিশ এবং মালিক আর তাদের দালালেরা যে বর্বরতা দেখিয়েছে সেসব জাস্টিফাই করতেই এইসব ভাড়াখাটা বুদ্ধিবেশ্যরা কণ্ঠনালী দিয়ে বিষ উগরে দিচ্ছে। বাংলাদেশে বুদ্ধিবেশ্যাবৃত্তিরও ভালো বাজার তৈরি হয়েছে সেটা জানা কথা, কিন্তু বেশ্যাদেরও তো একটা নীতি থাকে। এদের তাও নেই। যে শ্রমিকদের রক্ত ঘামের বিনিময়ে এইসব হারামির বাচ্চারা ফুটানি মারাচ্ছে সেই শ্রমিকদের ন্যায়সঙ্গত প্রতিবাদের পুলিশ লেলিয়ে দিয়ে পরিকল্পিত খুন করাচ্ছে। খুন হতে পারে যে কেউ, এটা তথাকথিত মর্ডানাইজেশনের ব্যাকফায়ার। কিন্তু সেই খুনকে জাস্টিফাই করে যারা তারা কি মানুষ? না মানুষের চামড়া গায়ে লোলচর্ম সর্বস্ব হায়েনা?
পুড়ে মরা, পুড়িয়ে মারা, আগুনের ভয়ে পায়ের নিচে পড়ে মরা, তিন-চার তলা থেকে প্রাণভয়ে ঝাঁপ দিয়ে মরা, সর্ট সার্কিটে মরা, বাড়িঅলার টাকা শোধ দিতে না পেরে তার জোয়ান ছেলেদের যৌন লালসা মেটাতে গিয়ে ধর্ষিতা হয়ে মরা, সামান্য বেতন পেয়ে বাসের বদলে খোলা ট্রাকে বাড়ি ফেরার সময় ট্রাক উল্টে মরা, রোজ কিয়ামতের ইহকালের মহড়ায় ভবন ধসে মরা, বাসস্থলে আগুন লাগিয়ে জমি দখলের সময় মরাসহ নিত্য নতুন মরার এবং মারার কায়দা-কানুন তৈরি হয়েছে এই শ্রমিকদের হত্যা করার জন্য। তার পরও এই হতচ্ছাড়াগুলো পতঙ্গের মত আগুনে ঝাঁপ দিতে আসে! পুড়ে মরেই যেন ‘আজন্ম পাপ’ মোচন করতে চায়! পেটের জ্বালা এতটাই জ্বলে যে সেই জ্বলুনির কাছে ভবন ধসে বা আগুনে পুড়ে হাজার হাজার সাথীর মৃত্যুও তুচ্ছ মনে হয়! তাই যদি না হবে তাহলে কেন এই আত্মহণন? কেন এই মৃত্যুউৎসব? এই ‘কেন’র উত্তর জানে এই দেশের বাই ডিফল্ট ক্রিমিনাল মধ্যবিত্ত আর তাদের আপগ্রেডেশন ভার্সন ধনী ভিখিরীগুলো এবং তাদের ভাড়াখাটা বুদ্ধিবেশ্যারা। সে কারণেই তারা নিশ্চিন্ত। তারা নিশ্চিন্ত যে হাজার হাজার মরার পরও গ্রাম থেকে পঙ্গপালের মত ঝাঁকে ঝাঁকে শ্রমিকরা আসবে। ভাত ছিটালে ‘কাকের’ অভাব এদেশে কখনো হয়নি, হবেও না।
ইনিয়ে বিনিয়ে মাখো মাখো স্বরে, মিহি সুরে এবং তথাকথিত সহমর্মী সাজার ছেনালি ঢঙে বহুত বাতচিত হল, অঢেল বাকোয়াজ হল। এবার থামতে হবে। বাঁচতে চাইলে লড়তে হবে। লড়তে হলে জোটবদ্ধ হতে হবে। এই দেশে শ্রমিকের হয়ে কেউ লড়ে দেবে না। শ্রমিকের হয়ে কেউ মারা যাবে না। বড় জোর নিপূণ কায়দায় অভিনয় করে কাঁদো কাঁদো ভাব নেবে সুশীলগণ। তাই যারা লড়ছে, মরছে, নিঃশ্চিহ্ন হচ্ছে, উচ্চেদ হচ্ছে, ধর্ষিতা হচ্ছে তাদেরই রুখে দাঁড়াতে হবে। কোনো বুদ্ধিবেশ্যা তাদের পাশে দাঁড়াবে না। বিদেশি প্রভুরা ধমক দিলে কাপড় চোপড় নষ্ট করে ফেলা সমাজপতিরা এই বেলা সেই প্রভুদের কথাও শুনতে নারাজ, কারণ প্রভুরা না জানলেও তারা জানে যত মরবে তত আসবে। ফার্টাইল ল্যাণ্ড মেকস মোর ফার্টিলাইজার। স্টুপিড বাক্সে খোমা দেখিয়ে বুদ্ধিবেশ্যারা সাফাই গাইছে ‘শ্রমিকের কাজের পরিবেশ উন্নত করতে হবে’! শ্রমিকরা কি তাদের কাজের পরিবেশের নিকুচি করে, নাকি আগামীদিন কাজ করার জন্য আজকে বাঁচতে চায়? এক লাইনের এই অমোঘ সত্যটি খুব দ্রুত শ্রমিকদের বুঝে নিতে হবে। আর সেটাও কোনো মৌসুমী রাজনীতিকের বুলি শুনে নয়, নিজের অস্তিত্ব দিয়েই বুঝতে হবে, কেননা এই বেজন্মা জনপদে রাজনীতিক, সুশীল, উকিল-মোক্তার, ছাত্র-শিক্ষক, সাংবাদিক-কলামিস্ট, বুদ্ধিজীবি-সংবেদজীবি, ধর্মবেত্তা-অবতার কেউ গার্মেন্ট শ্রমিকের সহমর্মী নয়। কেউ তাদের পক্ষে নেই। এমন বৈরী সময়ে বাঁচার একটি মাত্র উপায় প্রতিটি আঘাত, প্রতিটি আক্রমন প্রতিহত করা, রুখে দেয়া। আজ না হোক কাল তারা এটা পারবে। পারবেই।
২১ নভেম্বর ২০১৩
লেখকঃ মনজুরুল হক।
প্রকাশিত উল্লেখযোগ্য গ্রন্থঃ আ লিটল ফাইটার স্লিপিং উইথ আর্মস, শকুমেন্টারি শকোথেরাপি, কর্পোরেট ডেমোক্রেসি, অসমাপ্ত বিপ্লব-অমর বিপ্লবী কমরেড চারু মজুমদার ইত্যাদি।
বাংলাদেশের গার্মেন্টস শিল্প সম্বন্ধে যথেষ্ট অজ্ঞতা রয়েছে আমার | তা সত্ত্বেও কিছু প্রশ্ন আছে মনে | যাঁদের এই বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা আছে, তাঁরা উত্তর দিলে কিছু বিষয়ে জানতে পারব|
ক) যে সমস্ত কারখানায় কুড়ির অধিক শ্রমিক কাজ করেন, সেই কারখানার মালিককে কি শ্রমিকদের জন্যে ন্যুনতম বিমা এবং পেনশন বা প্রভিডেন্ট ফান্ড-এর ব্যবস্থা কি বর্তমানে আছে? না থাকলে আইন পাশ করে সরকার কি তা করতে পারে?
খ)এই সমস্ত কারখানা কি নথিভুক্ত? এখানে শ্রমিকদের অবস্থার উপরে কোনো সরকারী পরিদর্শনের ব্যবস্থা আছে?
গ)শ্রমিকদের কোনো সংগঠন আছে কি যারা সমস্ত বস্ত্রশিল্পের সাথে যুক্ত শ্রমিকদের হয়ে মিলিতভাবে ন্যুনতম দাবীদাওয়া নিয়ে দর কষাকষি করতে পারে? না থাকলে কেন নেই? বহু মানুষ তো এই শিল্পের সাথে যুক্ত| তাদের সুরাহা করতে পারলে ভোট বাক্সে তো রাজনৈতিক দলগুলির লাভ!
ঘ)বস্ত্রশিল্পের বিকাশের জন্যে এবং শ্রমিক এবং মালিক উভয়ের স্বার্থের জন্যে বাংলাদেশ সরকার কি বিশেষ অর্থনৈতিক এবং শিল্পাঞ্চল গঠন করতে পারেনা?
ঙ)যদ্দুর মনে হয় এই কাজের সাথে যাঁরা যুক্ত তাঁদের বেশিরভাগ কেই উচ্চদক্ষতা সম্পন্ন শ্রমিক বলা চলেনা| যা কাজ হয় তার বেশিটাই মধ্যম দক্ষতা বা নিম্ন দক্ষতা দিয়ে করা সম্ভব | যেমন ধরুন যাঁদের লেদ মেশিনে কাজ করতে হয়, ওয়েল্ডিং করতে হয় বা গাড়ি মেরামতির কাজ করতে হয়, তাঁদের অনেক বেশি দক্ষতা প্রয়োজন| বস্ত্রশিল্পে কি বেশিরভাগ শ্রমিকের সমমানের দক্ষতা প্রয়োজন? তা যদি না হয়, তাহলে সরকার সহজ ঋণ এবং অন্যান্য সুবিধা ও প্রশিক্ষণ দিয়ে সমবায় গঠনে জোর দিচ্ছে না কেন?
সাধারণ বুদ্ধি বলে উপরের প্রশ্নগুলোর সদর্থক উত্তর শ্রেণী সংগ্রামের হওয়া বা না হওয়ার অপেক্ষায় না থেকেই শ্রমিকদের অনেকটা সুরাহা দিতে পারবে| এই ধরনের সদর্থক বাংলাদেশের সরকার নিচ্ছেনা কেন? না নিলে, বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো, নাগরিক সমাজ, বুদ্ধিজীবী মহল এবং সংবাদপত্র এই নিয়ে সরকারকে চাপ দিচ্ছেনা কেন?
কথাগুলো মিথ্যে নয়, বরং নির্জলা সত্য; কিন্তু এগুলো তো অনেক বলা হয়েছে। সুনির্দিষ্ট বা প্রাসঙ্গিক সমাধানসূত্র থাকলে আরো উপযোগী হত মনে হয়।
এক্সটিংগুইসার হবে।
দারুণ বলেছেন। (Y)
এখন পর্যন্ত লেখকের কোন উপস্থিতি নেই মন্তব্যের মাঠে। বিষয়টি হতাশাজনক। ব্লগ সাধারণত মত বিনিময়ের জায়গা। যদি একটা লেখা প্রকাশ করেই দায়িত্ব সম্পূর্ণ হয়েছে মনে করা হয়, সেক্ষেত্রে পত্রিকা বেটার অপশন হতে পারে।
@কাজি মামুন,
(Y) (Y) (Y) (Y) (Y) (Y) (Y) (Y) (Y) (Y)
হ্যাঁ শ্রমিক রাই বেশী পুড়ে মরে। কিন্তু কে বলছে যে মালিকরা মরে না?? ১০ মে ২০১৩ এর দৈনিক সংবাদ পত্রিকার একটা নিউজ দিলাম সাথে লিঙ্ক দেখুন এখানে
” মিরপুর টেকনিক্যাল মোড়ে ১১তলা ভবনের দ্বিতীয় তলায় ‘তুং হাই সোয়েটার’ ফ্যাক্টরিতে অগ্নিকা- ঘটে। অগ্নিকান্ডে পুলিশ সদরদফতরের অতিরিক্ত উপ-মহাপরিদর্শক (পরিবহন) জেড এম মঞ্জুর মোর্শেদ, সোয়েটার ফ্যাক্টরির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স এন্ড এক্সপোর্টার্স এসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) পরিচালক মাহবুবুর রহমান নিহত হন।”
সাম্রাজ্যবাদী শক্তি এক দিকে মানবধিকারের কথা বলছে এবং অপর দিকে এ দেশের মালিকপক্ষকে এমন সব শর্ত দিচ্ছে যা রক্ষা করতে গেলে শ্রমিকদেরকে সকল মানবিক অধিকার থেকে বঞ্ছিত করতে হয়।আমাদের দেশের পুঁজিপতিরা সাম্রাজ্যবাদীদের দালালি করার পথটিকেই বেছে নিয়েছে।এ দেশের মধ্যবিত্ত শ্রেনী ভোগবাদি মোহে আচ্ছন্ন।অপর দিকে শ্রমিকশ্রেনী সঠিক দিকনির্দেশনা এবং নেতৃত্বের অভাবে সংগঠিত হতে পারছে না।শুধুমাত্র আবেগ দিয়ে সামাজিক পরিবর্তন হয় না।নতুন ভাবে যৌক্তিক বিশ্লেষনের সময় এসেছে।
পুরানো কথাবার্তা। মেলা শুনেছি। একটু নতুন কিছু শুনান না ভাই, কারন এভাবে কান্নাকাটি করে ব্লগে ঝড় তুলে কোনই লাভ হবে না। আর তাছাড়া এই লেখাটাতে চিন্তারও কোন খোরাক নেই, শুধু কান্না করলে কি চলে?
লেখককে বরং এই লেখাটা পড়ার পরামর্শ দিচ্ছি।
আমাদের দেশে কেন কম্যুনিস্ট আন্দোলন সফল হয়নি এর অনেক গুলি কারনের মধ্য কয়েকটি কারণ এই নোট/আর্টিকেল টি পড়লে সহজে বোঝা যাবে। মূল ব্যাপার হচ্ছে, সেই মানের নেতা আসলে ভারতীয় উপমহাদেশ বিশেষত বাংলায় তৈরি হয়নি। এনাদের জন্ম চীন কিংবা রাশিয়ায় হলে ন্যাশনাল অনেক দূর – সাব-ন্যাশনাল নেতৃত্ব পর্যন্ত যেতে পারতেন কিনা সন্দেহ!!! কারণ এনারা নেতা নন – সব একেকটা পৈতা। সেই ৭০ এর দশকে আমাদের দেশে কম্যুনিস্ট পার্টি ৩০ টারও অধিক হয়ে গিয়েছিল!!!!!!
ঠাণ্ডা মাথায় চিন্তা, কারণ এবং সমাধান বের না এসব পৈতাগণ প্রথমেই ডাক দিবেন বিপ্লবের এর পর শ্রেণী সংগ্রাম – আগপাছ চিন্তা না করেই… আমাদের এই অঞ্চলের আর্থ সামাজিক ইতিহাস এবং প্রেক্ষাপট সম্পর্কেই অনেকের ধারনা নাই!!!!!!
আমাদের দেশের গার্মেন্ট শ্রমিকদের বিরুদ্ধে যে অন্যায় হচ্ছে ওটা একটা রাজনৈতিক এবং সামাজিক সমস্যা এবং খুবই কমপ্লেক্স।
আরেকটি ব্যাপার – লেখক এখানে দাবী করেছেন দূর্ঘটনায় শুধু শ্রমিক নিহত হন। এটা কি ওনার ইগ্নোরেন্স নাকি অন্য কিছু!!! প্রতিটি দূর্ঘটনায় শ্রমিকের সাথে তাদের কর্মকর্তারা (এক্সিকিউটিভ/অফিসার) নিহত হয়েছেন – এমনকি রানা প্লাজাতেও। এমনকি কয়েকটি দূর্ঘটনায় কারখানার মালিকও মৃত্যুবরণ করেছেন।
এখানে শ্রমিকদের অধিকার যেমন লঙ্ঘিত হচ্ছে – আমাদের এটাও হিসেব রাখতে হবে কয়জন উদ্যোক্তা পথে বসছেন দেওলিয়া হয়ে।
পলিটিক্যাল নেতা এবং সরকারী কর্মকর্তাদের কারখানার মালিকদের থেকে অবৈধ অর্থ নেওয়া, কতিপয় আসাধু শ্রমিক নেতাদের (যারা গোপনে মালিকের পক্ষ হয়ে কাজ করা কিংবা অন্যকারো পক্ষে স্যাবোটাজে ইন্ধন যোগায়) হিপোক্রেসি বন্ধ করা এবং সর্বোপরি আসাধু অর্থলোভি কারখানা মালিকদের চিহ্নিত করে বিচারের কাঠগড়ায় দার করালে বেআইনি কর্মকান্ডের প্রবনতা কমে আসবে।
আন্তর্জাতিক বাজার খুবই প্রতিযোগিতা মূলক – এই শিল্প হারালে আমাদের দেশেরই ক্ষতি হবে।
@সংবাদিকা,
কয়েকটি প্রশ্নঃ
এখানে যে “অন্যায়” শব্দটি আপনি ব্যাবহার করেছেন ওটার মানে কী? আমি বলতে চাচ্ছি শ্রমিকদের বিরুদ্ধে আপনার মতে “অন্যায়” করা হচ্ছে। এই অন্যায়কে আপনি সংজ্ঞায়িত করছেন কোন স্ট্যান্ডার্ডের ভিত্তিতে? চুরি করাতো “চুরি”র জন্য অন্যায় নয়। একজনের ক্ষতি করে তার জিনিস নিয়ে নেয়া হয়েছে এজন্য অন্যায় বা আইনি অর্থে “ক্রাইম”। এখানে আপনার ব্যাবহার করা অন্যায় কোন বোঝাবুঝির জায়গা থেকে এসেছে? শুধু শুধু নিশ্চই বলেন নি। সেজন্যই জানতে চাওয়া।
আপনার এই বাক্যের উপরেই আরেকটা প্রশ্ন। শ্রমিকদের বিরুদ্ধে “অন্যায়” যে হচ্ছে সেটা একটা
এই কথাটার একটার একটা ব্যাখ্যা আমি জানতে চাচ্ছি। মনে করে “রাজনৈতিক” এবং “সামাজিক সমস্যা” কথাদুটোর মানে/সংজ্ঞা উল্লেখ করে উত্তরটা দিয়েন। তাতে করে আমরা সাধারনরা সহজে বুঝতে পারব।
ধন্যবাদ।
@সাইফুল ইসলাম,
দুঃখিত আরেকটা প্রশ্ন ভুলে করা হয় নি।
এক লাইনটা বলার কারন আমার কাছে পরিষ্কার না। আপনার কাছে কি মনে হয়েছে লেখক এই শিল্প উচ্ছেদের কথা বলছেন? কেন মনে হল আপনার?
@সাইফুল ইসলাম,
আমিতো বলিনি লেখক এটা বলেছেন!! কিন্তু যে পরিস্থিতি চলছে – ওটা সমাধান না হলে যা হতে পারে ওটাই বলা হয়েছে।
@সাইফুল ইসলাম,
শ্রমিকদের উপযুক্ত মজুরী দেওয়া থেকে বেশীরভাগ কোম্পানি বিরত রয়েছে.
অনেক কোম্পানি সরকারি আইনের (শিল্প, কারখানা এবং পরিবেশ) তোয়াক্কা না করে কারখানা চালু রেখেছে .
রিভার্স প্লে না করে সরাসরি জিজ্ঞাসা করলেই পারতেন “রাজনৈতিক” এবং “সামাজিক সমস্যা” এই দুটো ব্যাপার আমি বুঝি কিনা –
আমি যেটা বুঝি –
সম্পদের অপ্রতুলতা, দারিদ্র, দুর্নীতি, প্রশাসনিক জটিলতা, অস্বচ্ছতা, নীতির বাস্তবায়নহীনতা, সরকারী নীতির নীতিহিনতা, আইনের শাসনের অভাব, রাজনৈতিক খাই খাই (আবুল, তারেক, সালমান, ওবায়দুল, ইত্যাদি), রাজনৈতিক অস্থিরতা, ব্যবসায় বিনিয়োগের অতিখরচ, বিনিয়োগ বান্ধব পরিবেশের অভাব, অসচ্ছ ব্যাংকিং খাত, মালিকদের অতি মুনাফার মানসিকতা, কর্মকর্তাদের সামান্য টাকার জন্য পলটি মারার মানসিকতা, কিছু কিছু শ্রমিকরেও কাজ শিখে চলে যাওয়ার মানসিকতা, নিরাপত্তা আইন, পরিবেশ আইন ইত্যাদি ধার না ধেরে কোন মতে উৎপাদন করার মানসিকতা, পর্যাপ্ত মানব সম্পদের সুযোগে বিনিয়োগ কারীর সুযোগ নেওয়া, বিদেশী ক্রেতার ব্ল্যাকমেইলিং, স্যাবোট্যাজ, সর্বোপরি রাজনৈতিক নেতা-কারখানা মালিক- শ্রমিক নেতার এক কমপ্লেক্স সম্পর্ক – এসবের খিচুরির কারনেই কমপ্লেক্স।
আর, আমার মনে হয় সাধারনেরা এটা উচ্চমাধ্যমিক পর্যায় পার করার আগেই বুঝেছে। আর মুক্তমনার বেশীরভাগ পাঠক মনে হয় টারশিয়ারি কিংবা তার উপরের।
আপনি যদি আরো ভালোভাবে বুঝে থাকেন তাহলে অনুগ্রহ পূর্বক জানাবেন।
@সংবাদিকা,
হয় আপনি বোঝেননি অথবা আমি বোঝাতে পারি নি। আমার কথাটা ছিল শ্রমিকদের বিরুদ্ধে যে “অন্যায়” হচ্ছে সেটা আপনি বলেছেন “রাজনৈতিক এবং সামাজিক সমস্যা”। সমস্যাটা কি কমপ্লেক্স নাকি হরলিক্সের মতন দুধে মিশিয়ে খাওয়ার মতন সহজ সেটা নিয়ে আমি চিন্তিত নই। মালিকরা যে শ্রমিককে আপনার মতে “উপযুক্ত” মজুরী দিচ্ছে না সেটার সাথে রাজনৈতিক এবং সামাজিক সমস্যা কীভাবে জড়িত বা এটা কীভাবে “রাজনৈতিক এবং সামাজিক সমস্যা” হয় সেটা নিয়েই আপাতত ভাবতে চাইছি। কমপ্লেক্স কেন ভাবছেন সেটা যখন বলেই ফেলেছন, এখন একটু বলুন “রাজনৈতিক এবং সামাজিক সমস্যা” কীভাবে। আপনার মুনাফা হবার পরেও আপনি বেতন দিচ্ছেন না, এটার সাথে অর্থনীতি বাদে কীভাবে রাজনীতি এবং সামাজিক সমস্যা যুক্ত হল সেই রকেট বিজ্ঞানটা বুঝতে চাচ্ছি মূলত। আমি জানি আপনি পারবেন। আপনি জ্ঞ্যানী মানুষ। কমিউনিস্ট আন্দোলন কেন ব্যার্থ হল বাঙলার মাটিতে সেটা যখন ঠিক দু লাইনে বলতে পারার ক্ষমতা রাখেন, আমি জানি এটাও পারবেন।
আর মাত্র কয়েক হাজার শ্রমিকদের বিপরীতে “কয়েকজন!!” মালিকদের মারা যাওয়ার প্রেক্ষিতে আপনি যে মনোবেদনা পেয়েছেন, আপনার মনোবেদনায় আমিও একজন সমব্যাথী। তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি। আর যারা দেউলিয়া হয়েছেন (যেহেতু আপনি জানেন যে তাদের কোন বীমা করানো থাকে না) তাদের জন্যও এই সুযোগে আল্লার দরবারে আবারও কয়েকটা দর্জিখানা গায়েবি ভাবে তুলে দেওয়ার জন্য কেঁদে কেঁদে আর্জি করে দেব। আল্লা দেশে যেন “কয়েকজন” মালিকদের এভাবে আগুনে পুরে কিংবা বিল্ডিং ধ্বসে মরে যাওয়া আর না হওয়ান। আর যেন কোন কোটিপতিকে দেউলিয়া না বানান। আমিন। আপনি বলুন ছুম্মা আমিন।
@সাইফুল ইসলাম,
না আমি হয়ত অত জ্ঞানী নই। আর অর্থনীতি মনে হয় সামাজিক বিজ্ঞানেরই একটা অংশ…… হয়ত আমি মন্তব্য সমস্ত সামাজিক বিজ্ঞান জ্ঞানের জগতের সবগুলো বিভাগের কথা উল্লেখ করিনি – ধরে নেন সবগুলো বিভাগের সমন্বয়ে এটা কমপ্লেক্স সিচুএশন। শুধুই অর্থনীতি নিয়ে ঐ পথে এগোলে একটা কোর্সের নোট লেখা যেতে পারে।
মালিকদের মৃত্যুর খবর – এটা ফ্যাক্ট এবং উদাহরণ হিসেবে দেওয়া হয়েছে। লেখকের কেন একজন মালিক মরবে না? আজ পর্যন্ত কী কোনো একজন এমডি, ডিরেক্টর, পিএস, কমার্শিয়াল অফিসার মরেছে? না। কেন তারা মরবে না? মন্তব্যর প্রেক্ষিতে। আর আপনিও কারখানার মধ্যবিত্ত বিভিন্ন অফিসারদের কথা বেমালুম চেপে গেলেন – টিপিক্যাল স্টালিনবাদিরা এবং মাওবাদিরা যেমন চেপে যায় স্টালিন-মাও এর হত্যাকাণ্ডের সাথে হিটলারের হত্যাকাণ্ডের তুলনা।
পাইকারি চিন্তা করার কারনেই এই অবস্থা – কম্পার্টমেন্টালাইজেশন করে – গ্রুপিং করে – কারখানা হিসেবে ভাগ করে – এসব স্টাডি করা উচিত। বেশীরভাগ ভালো এবং লাভজনক কারখানাতেই কমপ্লায়েন্স ইস্যু অনেক কম। সমস্যা হল – সাবকন্ট্র্যাক্ট কারখানাগুলোতে বেশি।
শ্রেণী সংগ্রামের ডাক দিলে বেশীরভাগ শ্রমিকই এর বিরোধিতা করবে। সবার অবগতির জন্য জানানো হচ্ছে – এমন অনেকেই ছোটখাটো কারখানার এখন মালিক যারা একসময় নিজেরা কারখানায় শ্রমিক হিসেবে কাজ করছে।
এই ক্ষেত্রে সবার আগে সরকার পক্ষের তদারকি সৎ এবং সঠিক ভাবে হতে হবে। এটা ঠিক ভাবে হলে মালিকরা আর টাকা দিয়ে কিছু ম্যানেজ করার সাহস করবেনা।
একদিকে শ্রেণী সংগ্রামের ডাক অপরদিকে বিদেশী মদ গিলে এবং গোপনে বিদেশী চর হিসেবে টুপাইস কামানো ওয়ালাদের এদেশের মানুষ ভালোই চিনে। বাংলাদেশের দুর্ভাগ্য – অন্তত পশ্চিম বঙের স্ট্যান্ডার্ডের কমিউনিস্ট নেতাও পাইনি আমরা – সবগুলো নিজ নিজ জায়গায় ডেমাগোগ এবং পৈতা – সব ওয়ান ম্যান শোতে বিশ্বাসী।
@সংবাদিকা,
কারখানায় শ্রমিক তথা কোন মানুষের জীবনের ঝুঁকির সাথে কোন আপোষ করা চলবেনা। আমাদের দূর্ভাগ্য আজ পর্যন্ত কোন দোষী মালিকদের কোনই শাস্তি পেতে হয়নি। সবাই অসৎ সরকার এবং প্রশাসনকে টাকা দিয়ে ম্যানেজ করে ফেলে। দোষীদের উপযুক্ত শাস্তি হলে অবস্থার উন্নতি অনেক আগেই হত।
@সংবাদিকা,
জনাব মার্ক্স “উৎপাদন সম্পর্ক” বলে একটি টার্ম ব্যবহার করেছিলেন। এটা তাঁর মৌলিক চিন্তার ফসল। কথাটা এজন্য বলছি যে স্বাভাবিকভাবে “উৎপাদন” বলতে আমরা যা বুঝি সেই ধারনার সাথে মার্ক্সের “উৎপাদন” কথাটার মধ্যে বিস্তর একটা মৌলিক ফারাক আছে। এর মানে কী? মার্ক্স মহাশয়ের এই “উৎপাদন সম্পর্ক” কথাটার মানে ব্যাপক। এর আগে আপনি যেহেতু “সামাজিক বিজ্ঞান” কথাটা ব্যাবহার করেছেন আমার বোঝাবুঝির জায়গা থেকে একটু পরিষ্কার করে নিই আসে “সমাজ” কী। কারন সমাজ না থাকলে সামাজিক বিজ্ঞান কথাটার কোন মূল্য থাকে না।
একটা নির্দিষ্ট জনপদে কিংবা আরো স্পেসিফিকভাবে বললে একটা নির্দিষ্ট জায়গায় মানুষের মধ্যে যখন “বিনিময়” নামক বস্তুটির, (ঘটনা কিংবা এলিমেন্ট যাই বলি না কেন) প্রচলন থাকে তখনই আমরা সেই জায়গাটাকে কিংবা জনপদটাকে সমাজ বলতে পারি।( এখানে আমি যে শুধু “জায়গা”টাকেই সমাজ বলছি না এতা তো বলা বাহুল্য।) যেখানে “বিনিময়” নাই, সেখানে সমাজ নাই। একটা জঙ্গলে হাজার মানুষ বিনিময় ব্যাতিরেকে যদি বেঁচে থাকে তাকে আমরা সমাজ বলব না(বেঁচে থাকতে পারবে কী না সেটা আলাদা তর্ক)। লক্ষ করবেন আমি “বিনিময়” কথাটাকে বাক্যের মধ্যে আলাদাভাবে চেনাতে চাইছি। চাইছি এই কারনে যে যদি “উৎপাদন” না থাকে তাহলে কোন কিছুর বিনিময় সম্ভব নয়। উৎপাদনটা কীসের? বেঁচে থাকার জন্য মানুষ যা যা উৎপাদন করে তাই তো। নয় কী? এখানে আরেকটা কথা বলে রাখা ভালো হবে বোধ করি, মার্ক্সের কাছে এই “উৎপাদন” মানে সম্পত্তি-সম্পদের পাশাপাশি মানুষের উৎপাদন যেটাকে আমরা বংশ পরম্পরা বুঝিয়ে থাকি, সামাজিক ভাবে প্রজাতির উৎপাদন ইত্যাদি সমস্ত কিছুই “উৎপাদন কাঠামো”র মধ্যে অন্তর্ভুক্ত। অর্থাৎ মার্ক্সের কাছে “উৎপাদন” মানেই সামাজিক “উৎপাদন”। তাহলে যখন মার্ক্স “উৎপাদন সম্পর্ক” কথাটি ব্যাবহার করছে তখন সেটার মানে দাঁড়াচ্ছে, মানুষে মানুষে ও মানুষে-প্রকৃতিতে উৎপাদন বিনিময় সম্পর্ক, আর এর ভিতর দিয়ে বদল ঘটা সম্পত্তির রূপ-সম্পর্ক। মার্ক্স এই “উৎপাদন সম্পর্ক” ধারনার মাধ্যমে দেখিয়েছেন, আজ পর্যন্ত দুনিয়ার দেখা সমাজে সবসময় মানুষ একরকম ছিল না। আমার আজ মানুষ বলতে যাকে সামনে দেখছি সে সবসময় এরকম নয় বা ছিল না। মানুষ ব্যক্তি হয়েছে তাঁর ইতিহাসের একটা পর্যায়ে। একই রকম চিন্তা করা এমনকি নিজের সম্পর্কে চিন্তা করা, বেঁচে থাকার উপায় সংগ্রহ, জীবনযাপন পদ্ধতি, অন্য মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক স্হাপন, প্রকৃতির সাথে সম্পর্ক, উৎপাদন, শ্রমে নিয়োজিত হবার ধরন, হাতিয়ার প্রয়োগের ধরন – এরকম সবকিছুতে মানুষ একরকম ছিল না। তাহলে মানুষ সম্পর্কে একটা স্পষ্ট ধারণা করতে গেলে ওটা মানুষের বেড়ে উঠার ইতিহাসের বিভিন্ন পর্যায়ের মধ্যেই অনুসন্ধান করে এক একটা করে পেতে হবে। এটা সবচেয়ে ভালো ভাবে ধরা যাবে ওর “উৎপাদন সম্পর্ক”র মধ্যে। ওটা বাকি সব কিছুর নির্ধারক।
তারমানে, “উৎপাদন সম্পর্ক”র বাইরে কিছু থাকতে পারে না। কোন সমাজ যখন আমরা বিশ্লেষন করতে যাবো তখন অবধারিতভাবেই সেই সমাজের “উৎপাদন সম্পর্ক” কেমন আছে সেটার একটা ব্যাবচ্ছেদ আমাদের করতে হবে। এখানে সমাজ আমি জেনেরিক টার্ম হিসাবে ব্যাবহার করছি। কোন নির্দিষ্ট সমাজের কথা বলছি না। তাহলে এই জগতের যে কোন সমস্যাই সামাজিক সমস্যা। আপনার সাথে এখানে আমার কোন দ্বিমত নাই। তাহলে প্রশ্ন হল এতক্ষন প্যাচাল পারলাম কেন?
আপনি যেহেতু পরে বলেছেন অর্থনীতি সামাজিক বিজ্ঞানের অংশ বলে আলাদা ভাবে উল্লেখ করেন নি, সে জন্য। বর্তমান কন্টেক্সটে “সামাজিক সমস্যা” বলতে অর্থনৈতিক সমস্যা বোঝায় না। বর্তমান সমাজে সামাজিক সমস্যা বলতে বোঝায় “অশ্লীলতা”। বর্তমান সময়ে সামাজিক সমস্যা বলতে বোঝায় ছেলেপানদের বড়দের দেখলে সালাম না দেওয়া। বর্তমান সময়ে সামাজিক সমস্যা বলতে বোঝায় সিগারেট ফুকা। বর্তমান সময়ে গার্মেন্টস মালিকদের এই দেশের জ্ঞ্যানীগুনি আলেম সমাজ “মানবতা” শেখায়। বলে মানবিক বিবেচনায় বেতন দিতে। মালিকদের এই মানবতাবাদী না হওয়াকে বর্তমান সময়ে সামাজিক সমস্যা বলে। ঠিক এই জায়গায় দাঁড়িয়ে আপনি শ্রমিকদের মালিকপক্ষ থেকে ন্যায্য মজুরী না দেয়াকে যখন সামাজিক সমস্যা বলে অভিহিত করেন তখন দুটো সম্ভাবনা মনে উকি দেয়। এক, আপনি সচেতনভাবে বলেন নি যা বলেছেন, দুই আপনি মানবতার বাণী শোনানো মানবতাবাদী।
আপনি অর্থনীতি সামাজিক বিজ্ঞানের অংশ বলে আলাদাভাবে উল্লেখ করেন নি, তাহলে “রাজনীতি” কথাটাকে আলাদাভাবে উল্লেখ করার প্রয়োজনীয়তা কেন দেখলেন? রাজনীতি কি সামাজিক বিজ্ঞানের বাইরের কিছু বলে মনে করেন আপনি? মনে করে থাকলে-কেন? আর না করে থাকলে শুধুই সামাজিক বিজ্ঞানের উল্লেখ না করে আলাদাভাবে কেন রাজনীতি কথাটা আসলো? 🙂
চেপে গিয়েছি কারন এদের উল্লেখ করাটা আমি প্রয়োজন মনে করি না। আপনার ভাষায় এই “মধ্যবিত্ত বিভিন্ন অফিসার”রাই কারখানায় আগুন লাগলে গেটের তালা লাগিয়ে দিতে বলে, না দিলে নিজেই লাগয়ে দেয়। এই “মধ্যবিত্ত বিভিন্ন অফিসার”রাই নির্মন শোষনের যাতাকাঠি হিসাবে কাজ করে। এই “মধ্যবিত্ত বিভিন্ন অফিসার”রাই অমানুষিক পরিশ্রম করা শ্রমিকদের অকথ্য ভাষায় গালাগালি, নির্যাতন করে। সেই কারনে আমি এদের কথা উল্লেখ করাটা ততটা প্রয়োজনীয় মনে করি না যতটা বোধ করি শ্রমিকদের কথা বলতে।
তাছারা এদের কথা বলার জন্য আপনারা মানবতাবাদীরা আছেন। যার যার লক্ষ উদ্দেশ্য দরদের জায়গা নিয়ে সে সে বলবে। এটাই তো স্বাভাবিক, কী বলেন?
আপনার কথায় এটা মনে হওয়া স্বাভাবিক যে সমস্যাটার সাথে আসলেই কোন অর্থনৈতিক সম্পর্ক নেই। সমস্যাটা ম্যানেজমেন্টের। পুঁজিবাদী অর্থনীতির মূল কথাই হল, মুনফা। মুনাফা নাই তো পুঁজিবাদ নাই। আলটিমেটলি গার্মেন্টসের সমস্যাও নাই। ম্যানেজম্যান্ট নামে শাখার জন্মই হয়েছে পুঁজির অবাধ চলে সাহায্য করার জন্য। এই কথা বলার সাথে সাথে আমি এটাও অস্বীকার করছি না যে এই ম্যানেজমেন্টের সাহায্যে পুঁজিবাদী অর্থনীতির কাঠামোর মধ্যে থেকেই শোষনের মাত্রা অনেক কমিয়ে আনা সম্ভব। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কারনটা যে অর্থনীতিরই সেটা কিন্তু আপনি নিজের অজান্তেই বলে ফেলেছেনঃ
মালিকরা যদি টাকা দিয়েই শোষন বজায় রাখে তাহলে সমস্যাটা যে অর্থনৈতিক সেটা বুঝতে আমাদের কারোরই সমস্যা হয় না। সমস্যা হয় আপনার। স্বীকার করতে।
কে বিরোধীতা করবে কে করবে না সেটা বহু বহু এবং বহু ফ্যাক্টরের উপরে নির্ভর করে। আপনি বলেছেন বলেই করবে না ব্যাপারটা এতো সরল নয় বলে আমি উদ্বেলিত হচ্ছি না আপাতত। আর কারখানার শ্রমিক থেকে মালিক হয়েছে এর সাথে আপনি শ্রেনি সংগ্রামের দ্বন্দ্ব কোথায় দেখলেন সেটা আমার কাছে বোধগম্য নয়। একসময় ভাড়া বাড়িতে থাকা কেউ যখন বাড়ির মালিক হয় তখন কি তাকে ভাড়াটে হিসাবে গণ্য করবেন আপনি?
কিংবা চোর থেকে কেউ পুলিশ হলে তাকে কি আগের পরিচয়ে পরিচিত করবেন? আমি বুঝতে অক্ষম!
আর একটা ব্যাপার লক্ষ করলাম, আপনার কাছে করা দুটো প্রসংগের বাইরে আপনি বেশ কিছু কথা বলেছেন যেটা প্রাসংগিক নয়। আপনি কি বিপন্ন বোধ করছেন কোন কারনে? নইলে আমি কোন পন্থী, কে বিপ্লবের কথা বলে অন্য দেশের চর হিসাবে কাজ করে, এমন কি মদ টদও খায় সেই দেশের, সে ব্যাপারে কথা কেন আসছে? আপনি কি ব্যাক্তিগত লেভেলে নিতে চান আলোচনা? সেই ক্ষেত্রে বলে করে শুরু করেন। আমার আপত্তি নাই। কিন্তু ভাব বাচ্যে কথা বলে আপনার অবদমিত কামনা বাসনার পোটলা এনে আমার উপরে ফেলবেন আর সেটা মেনে নেব এমন মানুষ আমি না। ফাইট হলে ফেয়ার ফাইট হবে। হ্যাংকি প্যাংকি করবেন না দয়া করে। মুক্তমনায় অনেক দিন আছেন। আমাকে না চেনার কথা না।
ধন্যবাদ। 🙂
@সাইফুল ইসলাম,
আপনি কি ঢালাও ভাবে সব মধ্যবিত্ত বা মধ্যবিত্ত অফিসারদের মিন করেছেন?( করে না থাকলে এ বিষয়ে আর কথা বাড়াবার দরকার নেই ) । তবে যদি আমার অনুমান সঠিক হয় তবে আমার কিছু কথা ছিল কারন আমিও এই দলেই ( মধ্যবিত্ত অফিসার বা মধ্য বিত্ত) পড়ি ।
আপনার এই দাবীগুলির স্বপক্ষে শক্ত কোন প্রমান হাজির করেন, না হলে পুরো দাবীটাই খেলো হয়ে যাবে। আপনি নি প্রতিটি মধ্যবিত্ত অফিসার বা মধ্যবিত্ত মানুষকে পর্যবেক্ষন করেছেন বা ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন?
আপনার এই মধ্যবিত্ত বিদ্বেষ আমাকে খাঁটি মার্ক্সবাদীদের কথা মনে করিয়ে দেয়। আপনি কি জানেন না যে একজন মধ্যবিত্ত কি পরিমান সমস্যার মধ্যে জীবন যাপন করে? তাদের মিশতে হয় তাদের সমান ভা উচ্চত্তর লেভেলে, কিন্তু উচ্চতর লেভেলে সম্মান বজায় রেখে চলাটা তাদের জন্য কত কষ্টকর জানেন কি?
আপনি কি মধ্যবিত্ত নাকি উচ্চবিত্ত সৌখিন মানবতাবাদী, যে কিনা কোন প্রকার কাজকারবার না করে , বাবার অন্ন ধ্বংস করে , বাবার টাকায় বিদেশী মদ গিলে, রাতের বেলা ব্লগে জনদরদ দেখাতে আসে? আমার প্রশ্নটি এড়িয়ে যাবেন না ( আমি দেখেছি যে ওটা করতে আপনি খুবই পারদর্শী), এড়িয়ে গেলে নিজের পরিচয়টা কিন্তু নিজেই প্রকাশ করে ফেলবেন।
তবে আবার বলছি, যদি ঢালাও ভাবে সব মধ্যবিত্তকে আপনার এই বিদ্বেষের আওতায় না আনেন তবে এ নিয়ে কথা বাড়াবার দরকার নেই, জাস্ট ইগ্নোর করে যান! ধন্যবাদ।
@সাইফুল ইসলাম,
আপনি যেটাকে অর্থনীতি হিসেবে বলছেন কিংবা চালিয়ে দিতে চাচ্ছেন ওটা বর্তমানে বিজনেস নামে যে নতুন একডেমিক জ্ঞানের জগত তৈরি হয়েছে ওটার অংশ। আধুনিক অর্থনীতি অনেক ব্যাপক – “উৎপাদন” এখন খুবই ক্ষুদ্র একটি অংশ দখল করে আছে অর্থনীতির।
আর “সামাজিক বিজ্ঞান” এবং “সামাজিক সমস্যা” এক নয় যেমন যেমন এক নয় ইঞ্জিনিয়ারিং এবং কোরনা এফেক্ট। লে-পারসন দের পপুলার ধারণা কিংবা কথাবার্তা দিয়ে তো আর প্রফেশনাল কর্মকাণ্ড হয়না।
“ম্যানেজমেন্ট” ব্যাপারটি প্রথম দিকে তুলে দিতে চাওয়া হয়েছিল ত্রিশ এর দশকে তথাকথিত স্টালিনিয় কমিউনিস্ট তৎকালীন সোভিয়েত রাশিয়ায় – সম্ভব হয়নি। ইউটপিয়ান চিন্তা করলে – ইউটোপিয়ান সমাজে আসলে রাষ্ট্রের অনেক আবশ্যক স্তম্ভের দরকার থাকেনা – যেমন পুলিশ কিংবা সশস্ত্র বাহিনী এমনকি বিচার বিভাগেরও প্রয়োজন আছে কিনা সন্দেহ।
আর পুঁজিবাদ মানেই অনিয়ন্ত্রিত মুনাফা না যেমন গণতন্ত্র মানে অনিয়ন্ত্রিত স্বাধীনতা নয়। আর এখানে কেউ “মানবতার” কথা বলেনি। আইন অনুযায়ী প্রাপ্য অধিকারের কথা বলা হয়েছে। ব্যপারটি বর্তমানে যদি শুধু এবং শুধুই যদি কারখানার মালিক-শ্রমিক ইস্যু হত তাহলে ভালোই হত।
আপনি অর্থনীতি নিয়েই আছেন। এখন আপনার চিন্তার জগতে যদি সবকিছু এই অর্থনীতিরই মধ্য নিহিত থাকে তাহলে আপনি সঠিক। তবে যদি এই একবিংশ শতাব্দীর এপিস্টমলজি অনুযায়ী চিন্তা করা হয় – আপনি ভুল। নবায়ন অযগ্যো এক মুখী চিন্তা এবং বহুমুখী চিন্তার সমন্বয়ের অভাবের কারণেই বোধয় এর থেকে উৎসাহ নিয়ে ইতিহাসের সবচাইতে অত্যাচারী একনায়কদের সৃষ্টি হয়েছে। সবচাইতে মজার ব্যাপার – এখনকার কমিউনিস্ট রথী মহারথীরাও ঐ উনবিংশ শতাব্দীর “ইন্ডাস্ট্রিয়ালাইজেশন” কল্পনা করেই তত্ত্ব দেন।
এটাই – শুধুই উদ্যোক্তাদের দোষ দিয়ে লাভ নেই।
এখানেই আসল কথা নিহিত – আমি মনে করি ফেয়ার গণতন্ত্র এবং ফেয়ার পুঁজিবাদীটা একই জিনিষ। সোশ্যালিজম এর সাথে পুঁজিবাদীতার কোনই বিরোধ নেই পুঁজিবাদের বিরোধ তথাকথিত ইউটোপয়ান কম্যুনিজম এর। আমার দেখার ইচ্ছে যদি উনবিংশ শতাব্দীর কম্যুনিজমের তাত্ত্বিক-গন যদি এখন থাকতেন তাহলে বর্তমান “উৎপাদন ব্যবস্থাকে” কিভাবে ব্যাখ্যা করতেন । এবং এই ক্ষুদ্র একটি অংশ “উৎপাদন ব্যবস্থা” কে সামগ্রিক অর্থনীতির সঙ্গে কিভাবে সমন্বয় করতেন।
আপনি নিজের দিকে এসব টেনে এনে কি বোঝাতে চেয়েছেন বুঝলামনা। ব্যক্তিগত আক্রমণ – তাও আবার ছদ্মনামে লেখে আরেকজনকে – এটা করার কোন ইচ্ছাই আমার নেই। আমি এসব হিপোক্রেট এবং তথাকথিত বাংলাদেশী কম্যুনিস্ট নেতাদের বলেছি – সর্বশেষ সংযোজন –
“ব্রডকাস্ট ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ লিমিটেডের চ্যানেল টোয়েন্টি ওয়ান, এর সঙ্গে তথ্যমন্ত্রীর রাজনৈতিক দল জাসদের লোকজন জড়িত।”
@সংবাদিকা,
আপনি আমার কথার এত বেশি ভুল এবং উলটো মানে করে প্রতিউত্তর দিয়েছেন যে কীভাবে আপনার কথাগুলোর উত্তর দেবো ঐটা বুঝতেই আমার সমস্যা হচ্ছে। সাজাতে পারছি না। হতাশার সাথে লক্ষ করলাম আমার সাথে কথা বলতে এসে আপনি কথা বলছেন সোভিয়েত ইউনিয়নের স্ট্যালিনের সাথে, আমার সাথে কথা বলতে এসে আপনি টেনে আনছেন মাও কে। আমার স্মরনে আসে না, আমি কি আপনার সাথে কথা বলতে যেয়ে সারা দুনিয়ায় আম্রিকা সহ পুঁজিবাদী দেশগুলোর করা অরাজকতার উদাহরন এনেছি? এখানে আলোচনাটা কি পুঁজিবাদী দুনিয়া বনাম সমাজতান্ত্রিক দুনিয়ার? আপনি ইউটোপিয়ান রাষ্ট্রের কথা নিয়ে এসেছেন। যদিও আমার কথায় আপনার কেন মনে হল আমি পলিটিক্যাল ইউটোপিয়ার মতন একটা হাস্যকর চিন্তার সমর্থক সেটা বুঝতে পারছি না। বুঝতে চেষ্টা করছি তারপরেও। আপনি হাওয়ার সাথে তর্ক করছেন বস্তুত। সাইফুল ইসলাম নামের আড়ালে আপনি একজন কমিউনিস্টকে দাঁড় করিয়ে, এই মতাদর্শ এবং এই মতাদর্শের অনুসারী বা পছন্দকারী যারাই আছে তাদের প্রতি আপনার যে ঘৃনা বা বিদ্বেষ অথবা বিরক্তি আছে সেটা প্রকাশ করছেন। আপনাকে জানানোর জন্য বলি, এভাবে সুস্থ তর্ক হয় না। এটা অত্যন্ত অকার্যকর পন্থা।
আপনি আমার কথাগুলোর লেজেগোবরে মানে করে তার উত্তর দিয়েছেন। আমি চেষ্টা করব আপনার কথার সেই পরিণতি না করতে।
আপনি মাঝখান থেকে কথা খাবলে নিয়ে এখানে জুড়ে দিয়েছেন। এভাবে দেখলে আমার আসল কথাটা বোঝা যাবে না। ধারাবাহিকভাবে না দেখলে সমস্যা হয়ে যায়। কথাটার শুরু হয়েছিল এভাবে, আপনি বলেছিলেন,
গার্মেন্টসের শ্রমিকদের বিরুদ্ধে যে অন্যায় হচ্ছে সেটা আসলে “সামাজিক এবং রাজনৈতিক সমস্যা”। পরে আমি এটাকে অর্থনৈতিক ব্যাপার বলে অভিহিত করার পরে আপনি বলছিলেন যে অর্থনীতি সামাজিক বিজ্ঞানের অংশ যার জন্য আপনি আলাদাভাবে উল্লেখ করেন নি।
পরে আমি আপনাকে মার্ক্সের একটা ধারনার উদাহরন দিয়ে বলতে চেয়েছিলাম যে আপনি যখন সামাজিক সমস্যা বলছেন সেই সামাজিক সমস্যা বোঝার আগে আমাদের জানা জরূরী আমরা সমাজ কাকে বলছি, নইলে সামাজিক সমস্যা বা সমাজবিজ্ঞান নিয়ে আলোচনা করা বৃথা। মার্ক্সের বরাতে আমি বলতে চেয়েছিলাম, একটা জনপদ বা জায়গাকে তখনই সমাজ নামে সংজ্ঞায়িত করা যায় যখন সেখানে উৎপাদন এবং বিনিময় নামের এই দুটো ধারনা উপস্থিত থাকে। যেখানে উৎপাদন এবং বিনিময় নেই সেখানে সমাজ’এর ধারনা বা সংজ্ঞায়ন অসম্ভব। এবং মার্ক্স দেখিয়েছেন যে, মানব সমাজে “মানুষ” এর যে ধারনা সেটাকে, সর্বোপরি মানব সমাজের আজকের এবং ইতিহাসের সমস্ত মানব সমাজের পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, “সমাজ”এর বৈশিষ্ট, মানুষের বৈশিষ্ট নীতি নৈতিকতা সমস্ত কিছুই একটা জিনিসের উপরে নির্ভর করে পরিবর্তিত হয়, সেটা হল “উৎপাদন সম্পর্ক”। মানে হল, আজকের সমাজ ব্যাবস্থার সাথে হাজার বছর আগের সমাজ ব্যাবস্থার যে পার্থক্য সেটা হয়েছে “উৎপাদন সম্পর্ক” এর পরিবর্তনকে ঘিরে। এই “উৎপাদন সম্পর্ক” জিনিসটা মার্ক্স কীভাবে ব্যাখ্যা করেছেন সেটা তো সংক্ষেপে আগেই বলেছি।
একটা উদাহরন টানি। রেনেসাঁর ইতিহাস পড়লে দেখবেন, চার্চের সাথে বিরোধের মূল কারনটাই ছিল বস্তুগত। ঐ সময়ে চার্চের হাতে ক্ষমতার যে পুঞ্জিভুত অবস্থা, চার্চের হাতে যে পরিমান জমি, যে রাজনৈতিক ক্ষমতা ছিল সেটা পুঁজিবাদের উত্থানে সবচেয়ে বড় বাধা। কারন উৎপাদনের জন্য স্বাধীন জমি, রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতা প্রয়োজন। সুতরাং স্বাভাবিকভাবেই চার্চের ক্ষমতায় ভাঙন ধরাতে না পারলে পুঁজির বিকাশ রুদ্ধ হয়ে যাবে যেটা সম্ভব নয়। চার্চের সাথে স্টেটের বিভাজন এখানে প্রয়োজনীয় হয়ে পড়ে। প্রয়োজনটা প্রতিষ্ঠিত করা গিয়েছিল। পুঁজিবাদের জন্য হয়েছিল। আমরা এই বিভাজনটাকে এখন ধর্মনিরপেক্ষতা নামে চিনি।
যা বলছিলাম, সমাজের সংজ্ঞা পাওয়ার পরে আমি বলেছি, তাহলে এই যদি সমাজের সংজ্ঞা হয় তাহলে জগতের যে কোন সমস্যাই আসলে সামাজিক সমস্যা। কারন মানুষ আর প্রকৃতি এবং তাদের মধ্যাকার সমস্ত কিছু নিয়েই তো সমাজ। চামেলির সাথে চঞ্চল প্রেম করতে পারল না সেটা যেমন সামাজিক সমস্যা, আবার এই চঞ্চলের অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো না থাকার কারনে যে চামেলি চঞ্চলকে জীবনসঙ্গী করল না এটাও সামাজিক সমস্যা। কিন্তু আমরা প্রেম করতে না পারার কারনটাকে সামাজিক বললেও চঞ্চলের অর্থ না থাকার কারনটাকে কি সামাজিক সমস্যা বলি? ঠিক এই জায়গাটাতেই আমি আপনাকে প্রশ্ন করেছিলাম, শ্রমিকদের যে বেতন দেয়া হচ্ছে না সেটা সামাজিক সমস্যা তো বটেই, কিন্তু শুধু সামাজিক সমস্যা বললে আমরা কি সমস্যাটাকে এড্রেস করতে পারব সঠিকভাবে, ফলপ্রসুভাবে? একথা বলার আগেই আপনি অভিযোগ তুলেছেন আমি নাকি সমস্ত কিছুই অর্থনীতির সাহায্যে ব্যাখ্যা করতে চাচ্ছি, সাথে সাথে বর্তমানে উনিশতকের কমিউনিস্ট রথী মহারথীরা থাকলে আপনি তাদের কী জিজ্ঞেস করতেন সেটাও আমাকে জানালেন। বস্তুত সেটা নিস্প্রয়োজন।
আশা করি আপনারঃ
নামক বায়বীয় অভিযোগটি যে আমার উপরে চাপিয়ে দিচ্ছেন সেটার ব্যাখ্যার আর প্রয়োজন হবে না। একটা প্রশ্ন অবশ্য করা যায় আমার কোন কথায় মনে হয়েছে আমি এই দুটোকে গুলিয়ে ফেলেছি? যোগ আরেকটা প্রশ্ন, এখানে “লে-পারসন” কারা? অথবা, কে?
এ ব্যাপারে প্রথমেই বলেছি। অর্থহীন এবং ফলপ্রসু নয়। কারন আমি এখানে সোভিয়েত ইউনিয়নকে ডিফেন্ড করতে আসি নি। ইউটোপিয়ান সমাজ ব্যাবস্থার পক্ষে কথা বলতেও না। কিন্তু ম্যানেজমেন্ট সম্পর্কে আমি যে রিমার্ক করেছি সেই ব্যাপার কি আপনার কোন আপত্তি বা অন্য তথ্য আছে?
আমি সে কথা বলিও নি। আমার কথার সম্পূর্ন ভুল মানে করে হাওয়ার সাথে তর্ক জুড়েছেন এই কথাটা এর একটা উদাহরন। আমি বলেছি পুঁজিবাদ দাঁড়িয়েই আছে “মুনাফা”র উপরে। মুনাফা নাই তো পুঁজিবাদ নাই। আপনি আপনার সুবিধার জন্য সেখানে “অনিয়ন্ত্রিত” শব্দটা বসিয়ে নিয়েছেন। মুনাফা কি নিয়ন্ত্রিত হবে নাকি অনিয়ন্ত্রিত হবে সেটা আপনি কিংবা আমি ঠিক করে দেব না। ঠিক করবে যেখানে বসে ব্যাবসা চলছে, উৎপাদন হচ্ছে, সেই দেশের আর্থো-সামাজিক কাঠামো, যে মুনাফা করছে সে, সেই দেশের আইন ইত্যাদি বিভিন্ন ফ্যাক্টরের উপরে।
আমি চাচ্ছি না আসলে আইন সৃষ্টির সামাজিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, আন্তর্জাতিক এবং ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটের ইতিহাস টেনে নিয়ে আসতে। নইলে জিজ্ঞেস করতাম “আইন” তৈরীর প্রেক্ষাপট বা আরো স্পেসিফিকভাবে বললে “কারন” হিসাবে কী কাজ করে? এবং তারও আগে জিজ্ঞেস করতাম “রাষ্ট্র” গঠনের ইতিহাস, প্রেক্ষাপট নিয়ে। কিন্তু সেই আলোচনা এখানে অপ্রয়োজনীয় বিধায় তুলে রাখলাম, পরে কোথাও কথা হতে পারে প্রাসঙ্গিক কোন পোস্টে।
এখানে আমি আপনার সাথে একমত। এটা “বর্তমান”-এ শুধুই শ্রমিক মালিক ইস্যু নয়। রাজনৈতিক ব্যাপারটা আলোচনার বাইরে আমি রাখছিও না। কিন্তু তাই বলে “বেতন” না দেয়ার সাথে আমি ঐ আলোচনাকে যোগ করতেও রাজি নই। কারন সমস্যাটা শুধু “বর্তমান”এর নয়, অতীতেরও। আপনি যে ইঙ্গিত দিয়েছেন সেটা আমি যদি সঠিকভাবে বুঝতে পারি তাহলে সেটার সাথে শুধু গার্মেন্টস নয়, সামগ্রিকভাবে দক্ষিন এশিয়ার ভূ-রাজনৈতিক অবস্থা জড়িত। কিন্তু আমার আলোচনা শুধু বেতন, অন্যায়ভাবে বেতন না দেয়ার মধ্যেই সীমিত। অথবা এভাবে বললে ভালো হয়, আপনার “সামাজিক সমস্যা” কথাটার মধ্যেই আবদ্ধ।
এটা আমি উপরে টাচ করে এসেছি।
আমি দোষ দিচ্ছিও না। কারন উদ্যোগ কি ভালো না মন্দ সেই আলোচনা আমরা করছি না এখানে। আমার মুখে আপনার এই নিজস্ব ভাবনা জুড়ে দেয়ার কারন হল আপনি আমাকে কমিউনিস্টদের সম্পর্কে যে সমস্ত অপরিপক্ক, মিথ্যা, বিপদজনক প্রপাগান্ডা চলে তেমন একজন কমিউনিস্ট ধরে কথা বলে যাচ্ছেন। যেটা অসত্য, ভুল। আর আমি কমিউনিস্ট কী না সেই আলোচনা তো বহুদূর!
আপনি শুধু এটাই নয়, ফেন্সিডাইল এবং মুগেরডাইলকেও এক মনে করতে পারেন। কোন কিছু মনে করা আপনার ব্যাক্তিগত ব্যাপার। সাথে সাথে অধিকারও বটে। একটা ব্যাপারে আমি আপনার সাথে একমত এই কথায়, গনতন্ত্র বলতে বর্তমানে যা চলছে সেটা পুঁজিবাদের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ন। বা আপনার ভাষ্যমতে “একই”। আমি একমত।
বুঝতে পারছেন না কারন অপ্রয়োজনীয়ভাবে আমার সাথে কথা বলার সময় আপনি অন্যদের সম্পর্কে আপনার বিরক্তি প্রকাশ করেছেন। এখন বুঝতে পারছেন কেন এতক্ষন যাবত আপনার এই কথাগুলোকে ফলপ্রসু নয় বলেছি?
এটা ভেবে ভালো লাগল আপনি কমিউনিস্ট বলতে “অভন্ড” এবং “আসল” কমিউনিস্টদেরই বোঝেন।
যাই হোক, এগুলো আমাকে না বললে তো হয়েই গ্যালো, তা হলে এগুলো বাদ। ধন্যবাদ।
@সাইফুল ইসলাম,
আমি তো প্রথমেই বলেছি আপনি রিভার্স প্লে করছেন। নিজেই কিছু একটা জিজ্ঞেস করলেন আবার নিজেই মার্ক্সীয় দর্শনে মানব সমাজের ব্যাখা দিলেন যার ধারের কাছেও আমি যাইনি। অনেকগুলো সংজ্ঞার মাঝেও ওটাও একটা। আবার ওটাতেও কিছু কিছু সমস্যা আছে। পরিশেষে আপনি আপনার মূল আর্গুমেন্টের কথাও বললেন – যা বলার আগে এত কিছুরো প্রয়োজন ছিলনা। আর আমি আপনাকে মোটেও কম্যুনিস্ট মনে করিনি। আপনাকে কম্যুনিস্ট মনে করলে আমার বক্তব্যর ধরনটি এখনকার চেয়ে ভিন্নরকমই হত।
কেউ যদি রেনেসাঁ, সেপারেসন অফ চার্চ কিংবা ইউরোপিয়ান এনলাইটনমেন্ট এর ইতিহাস পড়ে এবং ঘাঁটাঘাঁটি করে, তাহলে আপনি যেভাবে বলেছেন, কেউ মোটেও ওভাবে পাবেনা। ধর্মের সাথে রাষ্ট্রের বিরোধ কিংবা পুঁজিবাদের ইতিহাস এত নতুন নয়। আপনার বক্তব্য কিঞ্চিত অ্যানাক্রনিজমও ফুটে উঠছে। দ্বিতীয়ত – শুধু যদি ইউরোপিয়ান মধ্যযুগ এবং আধুনিক যুগের কথা ধরা হয় তাহলেও এটা এত সরল নয় – পরাজাগতিক বিষয়াবলী নিয়ে কারও নিজেস্ব চিন্তা, জ্ঞানের জগতে বিচরণকারী অনেক ভাবনা এমনকি বিয়ে কিংবা যৌন কারণ সহ আরও অনেক কারণ আছে। আপনি যেভাবে এই ব্যাপার সরলীকরণ করছেন যেভাবে সরলীকরণ করা হয় ইতিহাসের অনেক কালকে “বর্বর” এবং “অন্ধকার যুগ” শব্দগুলোর মাধ্যমে। এটা নিয়ে কিছু বলার নেই কেননা এটা এখানকার স্কোপের অনেক বাহিরে।
আর বাকি বিষয়গুলো মনে হয় আমি আগেই পরিষ্কার ভাবেই বলেছি।
ধন্যবাদ।
@সাইফুল ইসলাম,
আপনাকে ধন্যবাদ 🙂
@সাইফুল ইসলাম,
এটা মনে হয় বাংলার মাটিতে নয়, সারা দুনিয়াতেই ব্যর্থ হয়েছে, কি বলেন আপনি? যেখানে সোভিয়েট নেই হয়ে গেছে, আর চীন ধরেছে পুঁজিবাদের রাস্তা, সেখানে সাম্যবাদী আন্দোলনের যৌক্তিকতা নিয়ে অনেকের প্রশ্ন থাকতেই পারে। সেক্ষেত্রে সাম্যবাদী দের উচিত সাম্যবাদের ব্যর্থতার কারন গুলো জনসাধারন কে ধরিয়ে দেয়া।
বিশেষণে ভূষিত করার মাধ্যমে আসলে কোন অনুপ্রেরনা হওয়া যায় না।
আচ্ছা আপনি কি এমন সব সাম্যবাদীর কথা জানেন যে, যখন তাঁদের নিজেদের চাকরি থাকে না ( বা ছাত্রাবস্থায়) তখন তাঁরা কম্যুনিস্ট হয়ে গলা ফাটান, আর মাল্টি ন্যাশনাল কোম্পানীতে বড় চাকরি পাবার পর ( চাকরি নিজের যোগ্যতায় আসল, নাকি বাবার যোগ্যতায়, অথবা মামা, চাচা খালুর দেয়া, সেটা ব্যাপার না), অথবা কেউ ধরেন ডাক্তারি পড়ে পাস করে ভাল করতে শুরু করল,) পুরা ঘুরে গিয়ে সাম্যবাদের অসারতার পক্ষে কঠিন যুক্তি দিয়ে বেড়ান?
বিষয়টা এমন হয়ে গেল না যে,
এক বন্ধু আরেক বন্ধুকে সগর্বে বলছে যে,দোস্ত আমি আগামী মাস থেকে যৌতুক বিরোধী আন্দোলনে নামব! বন্ধুটি বলল যে এটা তো খুবই ভাল কথা, তবে আগামী মাস থেকে কেন, এ মাস থেকেই নয় কেন? এইবার প্রথম বন্ধুটি উত্তর দিল, ” কারন এই মাসে আমার বিয়ে, আর আগামী মাসে আমার বোনের বিয়ে” ।
এমন লোক এইদেশে ( হয়ত সারাদুনিয়াতেও) মেলা আছে, আপনার ( আমার) পরিচিত দের মধ্যেও থাকতে পারে, তাই না?
অতিরিক্ত আবেগপ্রবন লেখা ! 🙁
শ্রমিকদের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে দেশের যত কল-কারখানায় আছে সবগুলোতে ভাংচুর করে বন্ধ করে দিতে হবে, কারন শ্রমিকের জন্য কেউ চিন্তা করে না ! 😉
@ঝন্টু,
শ্রমিকদের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে দেশের যত কল-কারখানায় আছে সবগুলোতে ভাংচুর করে বন্ধ করে দিতে হবে, কারন শ্রমিকের জন্য কেউ চিন্তা করে না ! 😉
শ্রমিকদের আন্দোলন করতেই হবে , যার কোন বিকল্প নেই । তবে আপনি চরম রাগ বশত সব কিছু ভাংচুর করার কথা বলেছেন , যা ঠিক নয় । শ্রমিকরা ভাংচুর করলেই মালিক পক্ষ ও পেটোয়া সংবাদ মাধ্যম সাধারণ মানুসের মগজ ধোলাই করে পুলিশ খাতে সরকারের বাজেট বারিয়ে নেওয়ার সুযোগ পাবে । শ্রমিকদের সামনে সঠিক রাজনৈতিক লাইন তুলে ধরে , তাঁদের মুল শত্রু কে ? খুজে বার করে তাঁর বিরুদ্ধে দীর্ঘস্থায়ী লড়াই করার শিক্ষা দিতে হবে । যা সমাজ পরিবর্তন করার পথে একধাপ এগিয়ে দেবে ।
@সামসুদ্দিন,
এটা আমি ব্যঙ্গ করে বলেছিলাম।
একমত।
ঐ আন্দোলন যে নেত্রীত্ব দিবে সে যদি কোন দলের পাচাটা দালাল হয় তাহলেই সমস্যা। আর এটাও মনে রাখতে হবে আমাদের দেশের শ্রমিকেরা এখন দুই দলে বিভক্ত, তাদের ঐক্যবদ্ধ করা অনেক সময়ের ব্যাপার।
@ঝন্টু,
খুবই সঠিক কথা। লোভ লালসা আমাদের মধ্যে খুবই বেশি, আর আমরা এমন এক জাতি যারা কিনা ব্যক্তি স্বার্থে নিজেদের বেচে দিতে পারি। কাজেই এমনও হতে পারে যে, যে নেতৃত্ব দিল, তাকেই বিরাট অংকের টাকা দিয়ে কিনে নেয়া হল।
আসলে কথা হল নৈতিকতা, নিজের বিবেকের কাছে স্বচ্ছ থাকা।এমন কেউ হতে পারলে মনে হয় শুধু শ্রমিক রা না, পুরা দেশের নেতৃত্বেই পরিবর্তন আসতে পারে, দেশে দুর্নিতি কমাতে যেটার জুড়ি নেই। কিন্তু সবশেষে একটা প্রশ্নই থেকে যায় যে কাজ টা কে বা কারা করবে, আমরা তাদের কতটা বিশ্বাস করতে পারব, অথবা সে বা তারা আসলেই কতখানি বিশ্বাস যোগ্য।
আসলে আমাদের এই সিস্টেম টাই এত নষ্ট হয়ে গেছে যে এইসব চিন্তা ভাবনা অসম্ভব বলেই মনে হয়। তবে সিস্টেম মনে হয় একেবারে পচে যায় নি, তবে দিন দিন আরো নষ্টই হচ্ছে। কারনটা সম্ভবত এই যে আমরা কাজে মন না দিয়ে কথা বলি বেশি, বেশি খাই আর ঘুমাই বেশি, কোন সমস্যা হলে পত্রিকায় লেখালেখির ঝড় চলতে থাকে, চায়ের টেবিলেও, ব্লগ ফোরাম গুলোও বাদ যায় না। কিন্তু বাস্তব সমাধান খুজে বের করতে কেউ পারি না। কেউ কেউ যদি ভাল কিছু চিন্তাও করেন, তার যে বাস্তবায়ন এই দেশে হবে এমন আশাও দেখি না, যেহেতু সেটা করতে গেলে কারো না কারো বিরুদ্ধে যেতেই হবে, ফলে জুটবে ষড়যন্ত্রকারীর ( দেশ, জাতি ও জনতার বিরুদ্ধে, বিদেশী শক্তির তাঁবেদার) খেতাব ।