বর্ণনা–১

শীতের পড়ন্ত বিকেল।
বুদ্ধমন্দির ছাড়িয়ে,
শহরের দক্ষিন কোণে চুঁইয়ে পড়েছে
এক টুকরো সবুজ।
হাওয়াতে যখন ধীরে ধীরে বাড়ছে
কার্বনডাইঅক্সাইড-এর পরিমাণ,
তখন সিমেন্টের বেঞ্চিতে অলস আড্ডা জমিয়েছে-
প্রবীন নাগরিকবৃন্দ।
স্রোতের শব্দের সাথে মিশে যাচ্ছে পাখির ডাক।
জলের মধ্যে শ্যাওলা খুঁটে খাচ্ছে নাম না জানা এক পাখি।
পাড়ের কাছে বেঞ্চিগুলো দখল করে নিয়ে,
প্রেমিকপ্রেমিকারা ভাগ করে নিচ্ছে পরস্পরের আঙ্গুলের উষ্ণতা।
খানিকটা এগোতেই দেখা হয়ে গেল এক চেনা প্রেমিক যুগলের সাথে-
“কিরে! হঠাত এখানে?”
“এমনি বেড়াতে।”
“যা:, সামনে নিশ্চই অপেক্ষা করছে।”
“না রে, পরীক্ষা চলছে ওর।”

সূর্য ডুবে আসে,
শেষ হয়ে যাওয়া বিকেলের সাথে,
শেষ হয়ে আসে সিগারেট।
সান্ধ্য জলসা থেকে ভেসে আসা রবীন্দ্রসঙ্গীতের মাঝে,
ধোঁয়ারা ফিরে পায় শুন্যতা।

    বর্ণনা–২

অলস সন্ধ্যায় ধূমপান।
পড়ন্ত বিকেলে নদীবক্ষে জলযান।
পাখিরা ধীরে হয়ে আসে চুপ-
আলো ঝলমলে শহর জেগে ওঠে,
নিয়ে ক্লেদাক্ত স্বরূপ।
চার চাকা বেড়ে চলে,
ধোঁয়ায় ঢাকে আকাশ,
ক্রমে শেষ হওয়া দিনে,
মিশে যায় অসংখ্য দীর্ঘশ্বাস।
রাত নাম নিশ্চুপে,
ক্ষয়িষ্ণু চেতনা করে ভর,
যাদের অনেক আছে, অথবা কিছুই নেই–
ফেরে ঘর।

কবিতারা দানা বাঁধে,
গানেরা নেই রূপ,
ঘড়ির কাঁটার মাঝে বিমূর্ত সময়,
হাতের মুদ্রায় নর্তকীর বিস্ময়-
এর মাঝে খেলা করে শিশুদের আধো আধো বোল।
শহরের গাছে আসে বসন্তের হিল্লোল।
নগরবাসী শোনে নাম না জানা পাখির ডাক।
বৃদ্ধ ভিখিরী মরে পড়ে থাকে-
কুকুরেরা শুঁকে যায় লাশ,
পথচারী কাটিয়ে যায় পাশ।
সুস্থ রুচি নিয়ে বহুতল বাসীদের চোখ-
মুগ্ধ হয়ে দেখে,
শহরের গাছে আশা বসন্তের হিল্লোল।