(বিশ্বাসীরা নিজ দায়িত্বে কর্ণগুহরে সীসা ঢালুন)

তারপরও অনেকে বলবে, সরকারই নাকি পারবে শ্রমিকদের বাঁচাতে। প্রতিটা কেইসে চোখ বুলিয়ে দেখুন, সরকারই মালিকদের সাহায্য করে শ্রমিকদের মরতে দিতে। কোন রাজনৈতিক দল সরকারে, তাতে কিছু ম্যাটার করে না। একদম না। কোনো দেবতার দল পৃথিবীতে নেই, কখনো ছিলো না, যে সাধু বনে যাবে। আপনাকে যে মারে, মারের হাত থেকে বাঁচতে তার কাছেই হাত পাততে যাবেন? কাজ হবে না।

সরকারবিহীন একটি মুক্ত সমাজে শ্রমিকদের সকল সুযোগ আছে তার নিজেকে রক্ষার জন্যে নিজস্ব নিরাপত্তা রক্ষী বাহিনী গঠনের। কুরোসাওয়ার ‘সেভেন সামুরাই’তে যেমন দরিদ্র গ্রামবাসীরা সামুরাই ভাড়া করেছিলো দস্যু ঠেকাতে। আমাদের জন্যে ব্যাপারটা আরও সহজ। আমাদের আছে লাখ লাখ শ্রমিক। প্রত্যেকে সামান্য অর্থ দিয়ে একটা শক্তিশালী নিরাপত্তা বাহিনী তারা নিজেরাই গঠন করতে পারে কোনো প্রকার সরকারের সাহায্য ছাড়াই। খরচ মেস ভাড়ার চেয়েও অনেক কম হবে। সেই বাহিনী শ্রমিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার চেষ্টা চালাবে। দুর্ঘটনা ঘটলে মালিকদের ধরে ঠ্যাঙানি দিবে। জরিমানা আদায় করবে পাই পাই। মালিকেরা সত্বরই বুঝে যাবে, এই শ্রমিকেরা অসহায় নয়। তারা এও বুঝবে যে শ্রমিকের রক্ষকেরা মালিকদের কোনো দোসর নয়, সরকারি পুলিশেরা যেমন।

শ্রমিকদের রক্ষাকারী পুলিশ বাহিনী থাকতে পারে একাধিক। তাদের নিজেদের প্রতিযোগিতায় শ্রমিকদের খরচ আরো অনেকখানিই কমে আসবে। শ্রমিকদেরও সুযোগ থাকবে এক বাহিনীর সেবা পছন্দ না হলে আরেক বাহিনীর দ্বারস্থ হবার। এমন কি সমাজের মধ্যবিত্ত বা অবস্থাপন্ন অনেকেই সেই বাহিনীগুলোতে ডোনেশান দিবে তাদের শ্রমিক ভাইদের রক্ষা করার জন্যে। এখনের কথাই চিন্তা করুন। বাংলাদেশের মধ্যবিত্ত সমাজ এই অন্যায়গুলোর কারণে এখন যে পরিমাণ ফুঁসে আছে, এই মুহূর্তে এরকম একটি বাহিনী গঠন করা সম্ভব হলে তাতে ডোনোশান দেওয়ার লোকের কোনো অভাব পড়তো কি?

এখন কেনো সেটা সম্ভব হয় না? কারণ সরকার ব্যবস্থা অন্য কাউকে নিরাপত্তা বাহিনী গঠন করতে বাঁধা দেয়। সরকার নিজে নিরাপত্তা ব্যবস্থার একচেটিয়া ব্যবসা করে। একটা মাত্র বাহিনী থাকলে সে বাহিনী কেবল মালিকপক্ষ আর তার রাজনৈতিক দোসরদের রক্ষা করতে বাধ্য।

বানরের কাছে হাত পাততে গেলে সে বরাবরের মতোই ইঁদুরের পিঠাখানি আরেকটু খেয়ে দিবে। এটাই আমাদের সংগ্রামের ইতিহাস।