দিনক্ষণ হিসেবের জটিল গাণিতিক নিয়ম মেনে ২০১২ বিলীন হল মহাকালের চোরাবালিতে। বছরটির ৩৬৫ টা দিন ক্ষয়ে ক্ষয়ে বিদেয় নেয়ার ফাঁকে উত্তরসুরি হিসাবে আরো একটি নতুন বছর ২০১৩ প্রসব করে দিয়ে গেল মানব জাতির কল্যাণে। সৌভাগ্য আমাদের, এখনো আছি বহাল তবিয়তে অথচ আজ থেকে কয়েক হাজার বছর পূর্বে পৃথিবী ধ্বংসের কী এক সাংঘাতিক ঘোষণা দিয়ে দেহমনে কাঁপন তুলেছিল প্রাচীণ মায়ান সভ্যতা!

যদি কিছু একটা সত্যি ঘটত তাহলে কী যে হত সে ভাবনায় টেকো মাথা থেকে আরো কয়েক গাছি চুল যে চিরতরে হারিয়ে যেত তা হলপ করে বলতে পারি।

যাকগে, প্রাণ ও চুল দু’টোয় আছে আপাতত। আরো কিছুদিন না হয় সবুজ গ্রহটা জুড়ে অবোধ প্রাণীকুল ভক্ষণ, আলো বাতাস শোষন, বর্জ্য বর্জনের সুযোগ পেলাম তাতেই বরং আহ্লাদিত চিত্তে উপভোগ করে যাই জীবনের আরো কটা দিন!

প্রশান্তির বিন্দুতে দুঃখের শিখাও আছে বৈকি, নিজেরা বাঁচলেও নিস্তার পাননি দুই বাংলা সাহিত্যের প্রতিযশা দিকপাল হুমায়ুন আহমেদ, সুনীল গঙ্গোপধ্যায়, বাংলাদেশকে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নেয়া প্রায় ১১১ জন শ্রমিকসহ আরো নাম জানা অনেকে। তাঁদের মৃত্যু দিবস স্মরণে বা সাহিত্য সমালোচনার ভীড়ে ২০১২ সাল স্মৃতিকাতর হয়ে আরো কিছুকাল অমলিন হয়ে ধরা দেবে পরবর্তী বছর গুলোতে। এছাড়া ব্যক্তিগত অর্জনের ভারী পাতা উল্টিয়ে ২০১২কে বিশেষ ভাবে স্মরণ করবে লন্ডনে বর্ণাট্য অলিম্পিকের নানান ইভেন্টে অংশ গ্রহণকারী ছেলে মেয়েরা।

বর্ষ বিদায়ে এইসব নানান অর্জন ব্যর্থতা, খেয়াল বেখেয়াল, ইচ্ছা অনিচ্ছার পালা বদলের ঠুকাঠুকিতে মস্তিষ্কের পেলব স্তরে জমে থাকা প্রাপ্তি শূণ্যতা, হাসি কান্না, আনন্দ বেদনা, কটাক্ষ উৎসাহর স্মৃতি ভষ্মে শুরু হয়েছে ডাক গুড়গুড় খেলা।

অজানা দিগন্ত সূচনার আহ্বান আর বেদনামাখা হারানো দিনের সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আসুন আমরা কৃতজ্ঞতা ভরে স্মরণ করি ‘মুক্তমনার’ ২০১২ গতিশীলতাকে এগিয়ে নিতে অবদান রাখা সেই সব ব্লগ দাপিয়ে বেড়ানো স্বেচ্ছাসেবী লেখক, সমালোচক ও মন্তব্যকারীদের।

স্মর্তব্য নগণ্য ব্লগার হিসাবে স্মরণ শক্তির ঘাটতি আমার বরাবরি, সাথে যুক্ত ভুলো মনের স্বভাব। দুয়ে মিলে না-জায়েজ দৈন্য ভাষায় আমার ক্ষমা প্রার্থনা মঞ্জুর হবে- কৌতুহলী চিত্তে সে বিষয়ে খচখচানি থেকেই যায়। অগত্য রবি ঠাকুরের ভাষা আত্মসাৎ করে ক্ষমা প্রার্থনা করছি বাদ পড়ে যাওয়া সেইসব লেখক মন্তব্যকারীদের কাছে, যদি ক্ষমা পাই-

ভ্রান্তি আমার ক্ষমা করো সবাই,
ভুল যদি করে ফেলি কভু॥
এই-যে হিয়া থরোথরো কাঁপে আজি এমনতরো
এই ব্যর্থতা ক্ষমা করো, ক্ষমা করো, ক্ষমা করো সবাই ॥
এই দীনতা ক্ষমা করো সবাই,
পিছন-পানে তাকিয়ে ভুল যদি করি তবু।

ব্যর্থতার দায়ভার নিয়ে অলক্ষ্যে তালিকায় বাদ পড়া ব্লগ বন্ধুদের যথাযত সন্মান ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করে নিন্মলিখিত লেখক, সমালোচক ও মন্তব্যকারীদের নিয়ে আলোচনার দ্বার উন্মুক্ত করা হল।।

অভিজিৎ রায়ঃ বরাবরের মত অপ্রতিদ্বন্দ্বী। ব্লগ জগতের পাশাপাশি বিজ্ঞান লেখক হিসাবে অভিজিৎ বেশ আলোচিত নাম। জটিল সব বিষয় তাঁর লেখনিতে হয়ে উঠে- ‘জলবত তরলং’, লেখার রস ও প্রাণ সৃষ্টিতে তাঁর আছে অনন্য দক্ষতা। ব্লগ ও পুস্তক জগৎ দু’টুতেই ঈর্ষনীয় বিচরণ। পোষ্ট করেছেন প্রায় ১৬টি। মুন্সিয়ানার ছাপ রেখেছেন ব্লগ পরিচালনায়। খেলে চলেছেন একটার পর একটা ক্যাপ্টেনসি নক ইনিংস। ফলাফল গোল্ডেন প্লাস।

ফরিদ আহমেদঃ বঙ্গ জুড়ে ছড়িয়ে আছে সমৃদ্ধ ইতিহাসের ফুলঝুড়ি। সেখান থেকে সুরভিত কিছু ফুল কখনো চন্দ্রাবতী কখনো অলিভিয়ার খোপায় গুঁজে বিশেষ নেকি হাসিল করেছেন ফরিদ ভাই। তিনি রসিক মানুষ শুধু ঐতিহাসিক ফুলের অর্ঘ সাজিয়ে তৃপ্ত হননি, সুযোগ পেলেই গল্প জুড়েছেন বেশ কিছু। যথাযত শব্দ ও ভাষা প্রয়োগে তাঁর সুখ্যাতি সর্বজন বিদিত। পোষ্ট সংখ্যা নেহায়েত মন্দ নয়, গুনে গুনে প্রায় এক ডজন। এই বছর অবসরে গেছেন মুক্তমনা এডমিন প্যানেল থেকে।

আদিল মাহমুদঃ অনুসৃত চিরান্ধ ধর্মীয় অনুশাসন জাতির উত্থানে কতটুকু ভুমিকা রাখে জানতে পড়ুন- ‘ধর্মশিক্ষার মাধ্যমে সাম্প্রদায়িকতার সরল পাঠ’ নামে তাঁর অনুসন্ধিৎসু চলমান পর্ব গুলি। বিষয় ভিত্তিক বিশ্লেষণ মূলক লেখা আর যুক্তিপূর্ণ রসালো বিশাল বিশাল মন্তব্যের চথুর্মুখী আভায় আদিল ভাই অপ্রতিদ্বন্দ্বী। উপহার দিয়েছেন মূল্যবান ৮টি পোষ্ট।

আকাশ মালিকঃ ব্লগ লেখায় ২০১২ মালিক ভাইয়ের বৃহষ্পতি তুঙ্গে ছিল নির্দ্বিধায় বলা চলে। লিখেছেন ১৮ বার, সেইসাথে অন্যের লেখায় মন্তব্য করে লেখকদের উৎসাহ জুগিয়েছেন দু’হাত ভরে। ইসলামের অন্ধকার বিশ্বাসে উন্নাসিকতা থাকায় ইসলাম বিদ্বেষী খেতাব জুটেছে ললাটে।

সংশপ্তকঃ গুরুগম্ভির ব্যক্তিত্ব। লেখা ও মন্তব্যের ঘরে অনান্য বছরের তুলনায় ২০১২তে সক্রিয় উপস্থিতি লক্ষ্য করার মত। আঙ্গুল চালিয়েছেন ১৫টি লেখাতে। রিমান্ড, ডিটেনশন, মাসুদ রানা গোয়েন্দা চরিত্রের মত রোমাঞ্চকর কাহিনি গুলোর গুমোর চি চিং ফাঁক করতে গিয়ে সর্ন্তপণে নিজেই হয়ে উঠেন অপ্রতিরোধ্য গোয়েন্দা। ভয়ে আছি, গোয়েন্দা পরিচয় ফাঁসের অপরাধে দেশ বিরোধী এজেন্ট সাব্যস্ত করে আমাকে না পেদিয়ে মারেন আবার!

কাজী রহমানঃ স্বভাব কবি। ইচ্ছা হলেই তথাস্থ বলে মনের সূক্ষ্ম ভাবনা, কল্পনা, অনুভূতিগুলো যথাযত শব্দপ্রয়োগে সৃষ্টি করতে পারেন কবিতার খেলা। সাহিত্যের প্রাচীণতম এই শাখাটিতে শব্দের ছন্দ ও শৈল্পিক ভাব প্রকাশে তাঁর রয়েছে নিরেট দখল। কলম চালিয়েছেন ২৩বার! মন্তব্যের ঘরে উপস্থিতি ছিল সন্তোষ জনক। কবিতার আড়ালে ধর্ম-মুক্তি নিয়েও লেখেন। বছর শুরুর পোস্টে সেরকম একটি লেখা- ‘কোথা থেকে এল আজকের কোরান’ পাঠ সংখ্যা ছিল ছ’হাজারের বেশি। লেখা ও মন্তব্যের মাধ্যমে নতুন প্রজন্মকে ধর্মীয় স্বাধীনতার চেতনা জাগ্রত করতে তার প্রচেষ্টা লক্ষনীয়।

মীজান রহমানঃ উচ্চমার্গের লেখক। লিখেছেন প্রচুর মূল্যবান বই। অভিজিৎ তাঁর ‘শূন্য’ বইয়ের দারুণ এক পুনঃরালোচনা করেছেন মুক্তমনায়। মাঝে মাঝে চমৎকার কিছু প্রবন্ধ লিখে জানান দিয়ে যান তিনি মুক্তমনার আশেপাশে আছেন সবসময়।

ভবঘুরেঃ বিশ্বাসে অবিশ্বাস নিয়ে কারবার। বিজ্ঞান যেখানে সন্ধিহান বিশ্বাস সেখানে অন্ধ। বিজ্ঞান প্রমাণ সাপেক্ষ জ্ঞান, সত্য তাই সর্বসন্মত কিন্তু বিশ্বাস ব্যক্তিগত এর কোন সর্বসম্মত সংজ্ঞা নেই। তাই বিশ্বাস শাশ্বত নয়। অনেক অবিশ্বাসের মত ১৪০০ বছরের লালিত বিশ্বাসের দূর্ঘ ভাঙতে ভবঘুরের কলম চলেছে ১৮বার। চারিদিকে সেই বিশ্বাসের ডামাডোলে হয়তো বা তিনি বেশ হতাশ, হয়তো বা ক্রুদ্ধ। তাঁর লেখনিতে ঝড়ে পড়া সে অস্থিরতা চাপা থাকেনি। বিশ্বাসের সার্বজনীনতা যেহেতু প্রশ্নবিদ্ধ সেই সুবাদে কিছু লোকের বিশ্বাস তিনি একটি নির্দিষ্ট ধর্মবিদ্বেষী আবার কিছু লোকের বিশ্বাস তিনি নির্দিষ্ট নয় বরং সব ধর্ম বিশ্বাসে রয়েছে তাঁর প্রচন্ড অনাস্থা।

গীতা দাসঃ মার্জিত লেখক ও মন্তব্যকারী। সাহিত্য নিয়ে ঘাটাঘাটি করেন প্রচুর। বই কিনতে ক্লান্তি নেই। বর্তমানে ঘুরে বেড়াচ্ছেন পাহাড় পর্বতের গা বেয়ে সঙ্গী বিদেশ ভ্রমণের অভিজ্ঞতার ঝুলি। গত বই মেলায় ভালো একটি বই বের করেছেন তিনি। এরই ফাঁকে আমাদেরকে জন্য লিখেছেন ১১ বার। মন্তব্যের ঘরে নিরেপেক্ষ অবস্থান তাঁর অন্যতম বিশেষত্ব।

রূপম(ধ্রুব)ঃ সৃজনশীল লেখক। তাঁর প্রতিটি লেখায় থাকে অগাধ দায়িত্বশীলতার ছাপ। মন্তব্য করেন পরিশীতল ভাষায়। মুক্তমনার সাথে অন্যান্য ব্লগে মূল্যবান সময় ভাগ করতে হয় বিধায় আমরা তাকে একটু কম পাই মুক্তমনায়। ফাঁকে ঝোকে ৮বার তিনি আমাদের সঙ্গ দিয়েছেন।

বিপ্লব রহমানঃ বাঙালী জাতিগোষ্ঠী ছাড়াও আমাদের দেশে আছে সাঁওতাল, ওঁরাও, পাহাড়িয়া, মুন্ডা, রাজবংশী, কোঁচ, খাসিয়া, মনিপুরী, টিপরা, প্যাংখো, গারো, হাজং, মার্মা, চাকমা, তংচঙ্গা, চাক, সেন্দুজ, ম্রো, খিয়াং, বোম, খামি, লুসাই (খুমি) সহ বেশ কিছু আদিবাসির বাস। এরা মিশে আছে পাবর্ত্য চট্রগ্রাম এবং ময়মনসিংহ, সিলেট ও রাজশাহী অঞ্চলের পাহাড় পর্বতে খাঁজে খাঁজে। ব্যতিক্রমি এই সব পাহাড়ী জনগোষ্ঠী সম্পর্কে আমাদের জানা নিতান্তই সীমিত। বিল্পব রহমান দায়িত্বের সাথে পাহাড়ের গায়ে বাস করা এইসব লোকগুলোর হাসি কান্নার কথা আমাদের জানিয়ে যান নিয়মিত। ২০১২তে তাঁর অবদান ১৪টি পোষ্ট।

বিপ্লব পালঃ ৯টার মত লেখা বেড়িয়েছে বিপ্লবদার কৃপণ হাত থেকে। মন্তব্যের ঘরে ছিলেন আরো কড়া হাড় কিপটে।

মইনুল রাজুঃ রঙ্গ ভরা অঙ্গনে মোর- মইনুল রাজুর জনপ্রিয় রসালো সিরিজ। ভ্রমণ কাহিনি নিয়ে লিখেন নিয়মিত। লেখার ঢং দারুণ প্রশংসনীয়। বির্তকের ঊর্ধে থাকতে পছন্দ করেন সব সময়। বোধহয় সেই উছিলায় অন্যের লেখায় মন্তব্যের ঘরে পা দেন কদাচিৎ। মুক্তমনার পর্দা সচল রাখতে ১৮ বার আবদান রেখেছেন তিনি।

রায়হান আবীরঃ পাকা হাতের লেখনি। অভিজিৎ ও আবীর দুজনে মিলে গত বইমেলায় একটি বই বের করেছেন। তরুণ প্রজন্মের সম্ভাবনাময় একজন লেখক। গত বই মেলায় তাঁকে অটোগ্রাফ শিকারী সুন্দরী তরুণীদের ভীড়ে যথেষ্ট সময় ব্যয়ে বাধ্য হতে দেখেছেন কেউ কেউ। তাঁর হাতগলে ২০১২তে মুক্তমনা পেয়েছে মাত্র অর্ধডজন সাবলীল পোষ্ট তবে মন্তব্য প্রকাশে দেখা দেয় যথারীতি কার্পণ্যতা।

কাজি মামুনঃ মুক্তমনায় উদারহস্তে মন্তব্যে করায় ম্যান অব দ্যা সিরিজ দেয়ার যদি কোন সুযোগ থাকত সেটির অন্যতম প্রধান দারিদার হত মামুন। ২০১২ শুরুটা গল্প দিয়ে হলেও শেষ পর্যন্ত মুক্তমনায় আদিয়ান্ত কলম চালিয়ে গেছেন আর্ন্তজাতিক, অর্থনৈতিকসহ বিভিন্ন বিষয়ে। বিশ্বাস হচ্ছে না! দেখুন পরিসংখ্যান, তার কলম নিসৃত পোষ্টের সংখ্যা ছিল ১৫ আর মন্তব্যের সংখ্যা অগণিত!

তামান্না ঝুমুঃ বছরের শেষ দিকে এসে কিছুটা তন্দ্রাছন্ন দোষে আক্রান্ত হলেও তামান্না লিখেছেন ২৭ টা পোষ্ট! এক কথায় অবিশ্বাষ্য।

শাখা নির্ভানাঃ নীরব নিভৃতে গল্পে গল্পে পোষ্টের সংখ্যা উন্নিত করেছেন মাত্র ২৬ টিতে! গড়ে প্রতি মাসে ২টির বেশী লেখা! অনুপ্রেরণার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। পরিসংখ্যানের বিচারে মুক্তমনার ২০১২ এর অধিক লেখিয়েদের একজন।

শফিউল জয়ঃ ভাষার দক্ষতা, শব্দ প্রয়োগ ও বাক্য বিন্যাসের সৃষ্টিশীলতায় সফিউল জয় সত্যি অসাধারণ। এত অল্প বয়সে সাহিত্যে আলোচনা, গবেষণা, মূল্যায়ন ও ব্যখ্যায় জয়ের পরিমিতি বোধ নিঃসন্দেহে প্রসংশার দাবিদার। পুস্তক সমালোচনা, সাহিত্য, দর্শনসহ বিবিদ বিষয় নিয়ে চথুর্মাত্রিক আলোচনায় ১৩ বার সমৃদ্ধ করেছেন মুক্তমনা অঙ্গনকে।

নিলীম আহসানঃ একাধারে চিত্রশিল্পী ও ব্লগ লেখক। আমাদের জন্য লিখেছেন ১১ বার। লেখার পাশাপাশি তুলি তরঙ্গের সহায়তায় মুক্তমনার জন্য প্রশংসনীয় সব ব্যানার তৈরী করে নিজ যোগ্যতার স্বাক্ষর রাখেন নিয়মিত।

সাইফুল ইসলামঃ চিন্তাশীলতা আর মেজাজী আমেজের যৌথ মিশেল। লেখায় প্রগতিশীলতার ছাপ স্পষ্ট তবে মন্তব্য প্রতিমন্তব্যে ভাষাগত মান নিয়ন্ত্রণের অভাব দোষে নিজেকে বিতর্কিত করতে স্বিদ্ধহস্ত। পোষ্ট সংখ্যা ছিল ৮টি।

সৈকত চৌধুরীঃ এ্যডমিনের দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে লিখতে পারেন না নিয়মিত। মন্তব্য করেন পরিমার্জিত।

শাফায়েতঃ মুক্তমনার টেকিসাইট উদ্ভূত সমস্যা নিরসনের পাশাপাশি কম্পু প্রোগ্রাম নিয়ে লিখেছেন চমৎকার বেশ কিছু পোষ্ট।

অতিথি লেখকঃ মুক্তমনায় ২০১২তে সর্বাধিক পোস্ট লেখক। ধর্ম, মানবতা, নারী, রাজনীতি ইত্যাদি নানান স্বাধের ভিন্নতা নিয়ে পোষ্ট করেছেন মাত্র ৪১টি! গড়ে প্রতিমাসে ৩.৫ এর বেশী লেখা। এককথায় অপরিসীম অনুপ্রাণন যোগ্য।

ব্লাডি সিভিলিয়ানঃ লেখার সংখ্যাগত দিক অনুল্লেখযোগ্য। তবে ভাষাগত মান, লেখার অনুসিদ্ধান্ত বিচারে ছিল যথেষ্ট মান সম্পন্ন, রুচিশীল, শিক্ষা ও উদ্দীপনার স্ফুলিঙ্গের বহ্নি।

মোজাফফর হোসেনঃ মুক্তমনায় উচ্চমানের গল্প লেখিয়েদের অন্যতম। তাঁর হাত থেকে আমরা পেয়েছি ১৩টি সুন্দর গল্প। বেশ কয়েকটি বই বের করেছেন তিনি।

আদনান আদনানঃ ২০০৯ সালে সদস্যপদ প্রাপ্তির পর লিখিছেন ১৫ বার। তাদের মধ্যে ১৩টি ২০১২ সালে।

সেপ্টেম্বর অন যশোর রোডঃ নবীনদের মধ্যে উদ্যমী ব্লগাদের একজন। নিজের প্রতিষ্ঠা স্থাপত্যে যথেষ্ট স্বোচ্চার। লেখার সংখ্যা উল্লেখযোগ্য, ১৮টি পোষ্ট দিয়েছেন তিনি।

লেখার স্বল্পতা দোষে দুষ্ট হলেও হোরাস, মাহমুদ ইমরান, পৃথ্বী, প্রতিফলন, তানভীরুল ইসলাম, লীনা রহমান, কেশব অধিকারী, সাদা চোখ, নাস্তিক সৈকত, কফিল কাঙ্গাল, নূরুল হকের অবদানের কথা কৃতজ্ঞতা ভরে স্মরণ করতে হয়।

মেধা, শ্রম ও সময় ত্রিমাত্রার সমন্বয়ে লেখার নৈস্বর্গীক ভাবাবেগ তৈরী করেন লেখক, কিন্তু প্রাণ? প্রাণ দানের যষ্টি কাঠি লুকায়িত আছে পাঠকদের বজ্রমুষ্ঠ হাতে। লেখার গ্রহণ যোগ্যতা, মূল্যবোধ তাদের একান্ত নিজস্ব। হালকা চালের লেখাকে যেমন তারা পাশ কাটাতে পারেন, প্রয়োজনে সমালোচনা করেন, তেমনি ভাল লেখা হৃদয়ে ধারণ করে লেখককে উদ্দীপ্ত ও প্রেরণা যোগান। উৎসাহিত করেন লেখককে। এই গুরু দায়িত্ব যারা উচ্চশিরে সম্পন্ন করেছেন তাদের মধ্যে আল্লাচালাইনা, স্বপন মাঝি, মনজুর মুরশেদ, সফিক, নিবেদিতা, গোলাপ, অর্ফিউস, আলোকের অভিযাত্রী, নির্জলা নির্জলা, সাংবাদিকা, আঃ হাকিম চাকলাদার, ছন্ন ছাড়ার নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।