ফেসবুকে লোকজন খুব ব্যস্ত। অল্প বয়সী একটা মেয়ের সাথে দেলওয়ার হোসেন সাঈদীর ফোন সেক্সের স্ক্যান্ডেল বেড়িয়েছে। জানিনা সেটা সত্য কিনা। অনেকেই মজা করে তার সেই সব যৌনালাপ নিয়ে স্ট্যাটাস দিচ্ছেন। দিন, আমার কোন সমস্যা নেই। তবে হাতে যদি সময় থাকে, তবে নিচের কাজগুলো একটু করে দেখুন প্লিজ।

১. গুগোলের সার্চ বক্সে লিখুন Delwar Hossain Sayeedi

২. এবার সার্চ দিন। অনেকগুলো সার্চ রেজাল্ট দেখতে পাবেন। নিচের ছবিটা দেখুন।

গুগোল যেভাবে সাঈদিকে জগৎবাসীর কাছে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছে।

সার্চ রেজাল্টের ডান পাশে সাঈদী সম্পর্কে সংক্ষেপে কয়েকটা লাইন লেখা আছে। যা লেখা আছে, তা হল-

“Delwar Hossain Sayeedi

Delwar Hossain Sayeedi, is a Bangladeshi Islamic orator and politician. He was a former Member of Parliament in the National Assembly of Bangladesh from 1996 to 2008, and is one of the most prominent leaders of the Bangladesh Jamaat-e-Islami party.

বঙ্গানুবাদ

দেলওয়ার হোসেন সাঈদীর

দেলওয়ার হোসেন সাঈদী হলেন একজন বাংলাদেশী ইসলামী লেখক এবং রাজনীতিবিদ। তিনি ১৯৯৬ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত একজন সংসদ সদস্য ছিলেন। তিনি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর একজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা।

সে যে একজন যুদ্ধাপরাধী, তা কি এই লেখা দেখে বোঝা যাচ্ছে? একজন বিদেশী যদি পত্রপত্রিকায় বাংলাদেশের যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বিষয়ে জানতে গুগোলে Delwar Hossain Sayeedi লিখে সার্চ দেয়, তবে এই কথাগুলোই প্রথমে দেখতে পাবে। আর কিছু বলার কি প্রয়োজন আছে? সেই বিদেশী এখন ধরেই নেবে বাংলাদেশ সরকার সাঈদীর মত নিষ্পাপ মানুষটাকে অযথা নির্যাতন করছে!

আপনার মনে হতে পারে গুগোল এই সব অসম্পূর্ণ তথ্য কোথায় পেলো?
গুগোল এসব তথ্য যোগাড় করেছে মুক্ত বিশ্বকোষ উইকিপিডিয়া থেকে। আপনি এখন এই লিংকে গেলে হুবহূ একই লেখা দেখতে পাবেন। আপনি আবার প্রশ্ন করতে পারেন উইকিপিডিয়াতে এই সব তথ্য কে লিখল? আসুন, উইকিপিডিয়া বিষয়ে আরএকটু জানি।

উইকিপিডিয়ার মজার বিষয় হল এখানে সব কিছুই উন্মুক্ত। এখানে যে কেউ ইচ্ছে হলে লিখতে পারে। কিন্তু শর্ত মেনে তা করতে হয়। প্রথম শর্ত হল- নিরপেক্ষ দৃষ্টিতে লিখতে হবে, দ্বিতীয় শর্ত হল, আপনি যা লিখলেন, তার কোন উৎস থেকে নিয়েছেন, তা জানাতে হবে (মানে আপনি কোন পত্রিকা, বই, ওয়েব সাইট থেকে তথ্যগুলো নিয়েছেন, তা জানিয়ে দিতে হবে)।

এই সুযোগে জামায়তে ইসলামের কিছু প্রশিক্ষিত লোকজন পয়সার বিনিময়ে সাঈদিকে ভালো মানুষ বানিয়ে এই তথ্যগুলো দিয়ে রেখেছে। সেসব যে নিরপেক্ষ তথ্য নয়, তা যাচাই করার মত কেউ ছিলো না। তাই তাদের মিথ্যা কথাই সেখানে থেকে গিয়েছে। গুগোলও তার ব্যবহারকারীদের সুবিধার্থে সেটা তাদের সার্চ রেজাল্টে দেখাচ্ছে।

বিশ্বাস করুন আপনি আমি বাংলায় ব্লগ আর ফেসবুকে লিখে ভরিয়ে ফেললে জগৎবাসীর কিছুই যাবে আসবে না। সূত্রহীন ফোনসেক্স স্ক্যান্ডালও তারা খাবে না। তারা যুদ্ধাপরাধীদের কুকর্ম বিষয়ে কিছুই জানবে না। তারা দেখতে পাবে পেইড ছাগুদের বানানো উইকির তথ্যগুলো। উইকির তথ্য বিশ্বজোড়া মানুষ নির্ভরযোগ্য সূত্র হিসেবে বিবেচনা করে (আসলেই কি নির্ভরযোগ্য?)। ফলাফলে যা হবে তা হল, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার থামানোর জন্য বিশ্বজোড়া মাতবরদের হুমকি ধামকি আর অসন্তোস এর কথা শুনতে হবে। সেটাই এখন আমাদের শুনতে হচ্ছে। আপনি আমি কি অযাচিত ভাবে কাউকে নির্যাতন করছি? তবে কেন নিজের স্বজন হত্যার বিচারের ন্যায্য দাবির জন্য আমাদের দূর্নাম হবে? আসুন না এই সব পিশাচদের পরিচয় করিয়ে দিই বিশ্ববাসীর কাছে। দিনে ১৫টা মিনিট ব্যায় করি উইকিপিডিয়াতে। এই দেশের স্বাধীনতার জন্য আমাদের পূর্বপুরুষরা বুকের রক্ত দিয়েছেন, আর আমরা ১৫ টা মিনিট ব্যায় করতে পারবো না?

জামাতি ছাগুদের হাতে ধর্ষিত আরো কিছু উইকি আর্টিকেল

International Crimes Tribunal (Bangladesh)

Ghulam Azam

Motiur Rahman Nizami

Ali Ahsan Mujahid

The Daily Sangram

(এই লেখা পড়ে দয়া করে জিহাদী জোশে এই আর্টিকেলগুলো এডিট করতে যাবেন না। নিয়ম না জানার কারনে আপনার দেয়া গাদাগাদা তথ্য মডারেটরেরা মুছে দিবে। সেটা হিতে বিপরীত হবে। নিয়মকানুন জেনে তারপর এডিট করুন। সাহায্যের প্রয়োজন হলে মন্তব্যে জানাতে পারেন। যতটুকু পারি সাহায্যের চেষ্টা করবো। )