বুবুজানের চিঠি

(মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সমীপে)

আকাশ মালিক

শ্রদ্ধেয় বুবুজান, আমার সহস্র কোটি সালাম ও কদমবুছি গ্রহণ করিবেন। আশা করি অসীম দয়াময় করুণাময় আল্লাহ মাবুদের দয়া ও কৃপায় সরা-শরিয়ত মোতাবেক পর্দা পুষিদা বজায় রাখিয়া দিন যাপন করিতেছেন। আমি সকাল বিকাল আয়াতুল কুরসি পড়িয়া আপনার জন্যে দোয়া করিতেছি, দ্বীন-দুনিয়ার মালিক রাব্বুল আলামিন যেন আপনাকে ১৫ কোটি তাওহিদী জনতার দেশ তাহাদের সেন্টিমেন্ট বুঝিয়া চালাইবার তৌফিক দান করেন। বুবুজান, আপনার উপর আমার কনফিডেন্স আছে বলিয়াই আমি এই ফোরামে বহু দিন পূর্বেই প্রেডিকশন করিয়াছিলাম যে, আমার বুবুজানের হাত ধরিয়াই সোনার বাংলাদেশে শরিয়া আইন কায়েম হইবে। সেই ভবিষ্যত বাণী সত্যে পরিণত হইতেছে দেখিয়া আমি যারপর নাই খুশী হইয়া দেশে আমার ভাইয়ের মারফত শাহজালালের মাজারে দুইটা মোমবাতি দিয়াছি। এর আগেও আপনি যখন নাফরমানি ‘ফেইস বুক’ ব্লক করিয়াছিলেন, আমি আপনার নামে একটা বখরি মানত করিয়াছিলাম। সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম আর বিসমিল্লাহ রাখার বরকতে ইতোমধ্যে হাবিয়া দোজখ আপনার জন্যে হারাম হইয়া গিয়াছে। এইবারে ইউ টিউব বন্ধ করায়, যে সকল পাপিষ্ঠ নরাধম প্রতিবাদ মিছিল করিয়াছে তাহাদের কথায় আপনি মোটেই কর্ণপাত করিবেন না। নিশ্চিত জানিবেন আখেরাতে এর বড় ফজিলত আপনি পাইবেন।

বুবুজান শুনিতেছি আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে আপনার ‘যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বিষয়ে কিসাসের’ উপর মন্তব্যকে কেন্দ্র করিয়া চতুর্দিক হইতে হইহই রইরই রব উঠিয়াছে। এই সমস্ত শয়তানি সুরগোল শুনিয়া আপনি কিঞ্চিত নার্ভাস হইবেন না। সংসদে হাতের ধারে একখানা কোরান শরীফ সব সময় রাখিবেন। কেউ বেশী বাড়াবাড়ি করিলে পবিত্র কোরান শরীফের সুরা বাকারার ১৭৮ নং আয়াত দেখাইয়া দিবেন-
أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُواْ كُتِبَ عَلَيْكُمُ الْقِصَاصُ فِي الْقَتْلَى يَا
َ الْحُرُّ بِالْحُرِّ وَالْعَبْدُ بِالْعَبْدِ وَالأُنثَى بِالأُنثَى فَمَنْ عُفِي
لَهُ مِنْ أَخِيهِ شَيْءٌ فَاتِّبَاعٌ بِالْمَعْرُوفِ وَأَدَاء إِلَيْهِ
بِإِحْسَانٍ ذَلِكَ تَخْفِيفٌ مِّن رَّبِّكُمْ وَرَحْمَةٌ فَمَنِ اعْتَدَى بَعْدَ
ذَلِكَ فَلَهُ عَذَابٌ أَلِيمٌ

‘হে ঈমানদারগন! তোমাদের প্রতি নিহতদের ব্যাপারে কেসাস গ্রহণ করা বিধিবদ্ধ করা হইয়াছে। স্বাধীন ব্যক্তি স্বাধীন ব্যক্তির বদলায়, দাস দাসের বদলায় এবং নারী নারীর বদলায়। অতঃপর তার ভাইয়ের তরফ হইতে যদি কাউকে কিছুটা মাফ করিয়া দেওয়া হয়, তবে প্রচলিত নিয়মের অনুসরণ করিবে এবং ভালভাবে তাকে তা প্রদান করিতে হইবে। ইহা তোমাদের পালনকর্তার তরফ হইতে সহজ এবং বিশেষ অনুগ্রহ। এরপরও যে ব্যক্তি বাড়াবাড়ি করিবে, তার জন্য রহিয়াছে বেদনাদায়ক আযাব’।
‘O you who believe! Al-Qisâs (the Law of Equality in punishment) is prescribed for you in case of murder: the free for the free, the slave for the slave, and the female for the female. But if the killer is forgiven by the brother (or the relatives, etc.) of the killed against blood money, then adhering to it with fairness and payment of the blood money, to the heir should be made in fairness. This is an alleviation and a mercy from your Lord. So after this whoever transgresses the limits (i.e. kills the killer after taking the blood money), he shall have a painful torment’.

এর পরেও যদি কেউ বুঝিতে চায়না, সৌদি আরবে দশ বাঙ্গালীর কল্লা কাটার কথা স্বরণ করাইয়া দিবেন। জামাতে ইসলামীদের হাতে প্রচুর টাকা পয়সা আছে। ইয়াদ রাখিবেন, যুদ্ধাপরাধীদেরকে নিহতের আত্মীয়রা ব্লাড ম্যানি নিয়া মাফ করিয়া আবার কেউ যেন তাহাদের গায়ে হাত তুলেনা, ইহা মাবুদের নির্দেশ। আর শরিয়তের আইনে চোখের বদলে চোখ, নাকের বদলে নাক হইলে, ধর্ষণের বদলে ধর্ষণ করা যাইবে কি না তাহা জানিবার জন্যে আলু-মতি ভাইকে একবার বায়তুল মোকাররামে পাঠাইয়া দিবেন। আমি দেখিতেছি কেউ কেউ চরম হতাশ হইয়া বলিতেছেন-

একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র হিসেবে বর্তমান বিচার ব্যবস্থায় শরীয়া আইনের কোন অস্তিত্ব নেই, কেবলমাত্র পারিবারিক আইন ছাড়া, যেখানে প্রচলিত আইনের সাথে শরীয়া বিরোধপূর্ণ ও সাংঘর্ষিক। এ যেন মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় অনাহুত আত্মঘাতি এক আঘাত এবং ফলশ্রুতিতে কোটি মানুষের হৃদয়ে প্রচন্ড রক্তক্ষরণ’।

আচ্ছা বুবুজান, ৪২ বছর পরেও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বলিতে কী আর অবশিষ্ট আছে? রক্ত থাকিলে তো ক্ষরণ হইবে? তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলের সাবেক উপদেষ্টা আইন ও সালিশ কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক সুলতানা কামাল ধমকের সুরে বলিয়াছেন- ‘

কোন্ অধিকারে তিনি যুদ্ধাপরাধীদের শরিয়া আইনে বিচারের কথা বলেন। এ আইনে বিচারের কথা বলার আগে সংসদে বিল আনতে হবে। সংসদে আলোচনা করে সে আইন পাস করতে হবে। তার পরেই বলা যেতে পারে যে, এই আইনে বিচার হবে। — ১৫ কোটি মানুষের দেশে হয়তো ১ কোটি লোক দুর্বৃত্ত, দুর্নীতিবাজ বা খারাপ প্রকৃতির হবে। কিন্তু এদের বিরুদ্ধে যদি ১৪ কোটি লোক উঠে দাঁড়ায় তবে এরা টিকবে না। দেশে দুর্নীতি হবে না। এখন সময় হয়েছে, এই দুর্বৃত্ত আর দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে উঠে দাঁড়ানোর’। (সূত্রঃ মানবজমিন, ১৮ নভেম্বর)

দেখেন বুবুজান, এই মানুষটা কোন্ আসমানে যে বাস করেন আল্লাহ মাবুদই জানেন। সংসদে বিল আনা কি এতোই কঠিন? সংখ্যা গরিষ্ঠ সাংসদ নিয়ে গঠিত কেবিনেটে একটা বিল পাশ করাইতে ১৫ কোটি মানুষেরে জিগাইতে হয় না কি? ১৪ কোটি লোক দাঁড়াইবে ১ কোটির বিরুদ্ধে, কি অবাস্তব হাস্যকর কথা? জানেন বুবু, দেশের আলেম সমাজ বিগত সাধারণ নির্বাচনে খেলাফতে মজলিসের সাথে আপনার মহব্বতের প্রতিদান স্মরণ করিয়া সন্দেহের দোলায় দুলা‌য়িত হইয়াও বড় আশায় বুক বাঁধিয়াছেন যে, আপনি তাহাদিগকেই একদিন ফতোয়াবাজী করিবার পারমিশন দিয়া সংসদে স্থান করিয়া দিবেন। আপনার মুখে ইসলামের পথে মানুষকে ডাকিয়া আনিবার আহবান শুনিয়া বিজ্ঞ মুফতিগণ এই আশ্বাস আগেই ব্যক্ত করিয়াছেন। শরীয়া আইন বিশেষজ্ঞরা জানাইয়াছেন, কিসাস বাস্তবায়ন করিতে হইলে ইসলামী আদালত প্রতিষ্ঠা করিতে হইবে। একই সঙ্গে শরীয়া আইনও রাষ্ট্রীয়ভাবে অনুমোদন করিতে হইবে। তাহফিজে হারামাইন পরিষদ বাংলাদেশের সভাপতি মাওলানা সাদেক আহমদ সিদ্দিকী বলিয়াছেন, শরীয়া আইন সকলের জন্য প্রযোজ্য। এই ব্যাপারে বসুন্ধরা ইসলামিক সেন্টারের মুফতি আবদুর রহমান বলিয়াছেন, ‘শরীয়া আইনে কোন বিচার প্রক্রিয়া হলে এ বিষয়ে দেশের আলেম সমাজ অবশ্যই মতামত দেবেন। কোন অপরাধের বিচার কিসাসে হবে কিনা সেই বিষয়ে মুফতি ও আলেম সমাজের কাছ থেকেই পরামর্শ আসতে হবে। এ বিষয়ে সরকার কিছু করতে চাইলে আমরাও বক্তব্য তুলে ধরবো’। জামেয়া নূরীয়া ইসলামিয়া মাদ্রাসার মুহাদ্দিস মাওলানা জাফরুল্লাহ খান এই বিষয়ে নসিহত করিয়াছেন যে, ‘দেশে তো শরীয়া আইন সরকারিভাবে স্বীকৃত না। কিসাসের মাধ্যমে সরকার যদি কোন বিচার করতে চায় তাহলে অবশ্যই সরকার শরীয়া আইন সংসদে অনুমোদন করে তারপর এই আইনের অধীনে ব্যবস্থা নেবে। সরকার যদি শরীয়া আইন পাস করে তাহলে আমরা প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাবো’। আলেম সমাজের ধন্যবাদ পাওয়া আল্লাহর বড় নিয়ামত। তাহাদের ধন্যবাদ পাইবার জন্যে যাহা কিছু করিবার আপনি করিবেন।

খবরের কাগজে পড়িলাম, আইন বিশেষজ্ঞ ড. শাহদীন মালিক বলিয়াছেন-‘বিবাহ বিচ্ছেদ এবং এ সংক্রান্ত পারিবারিক আইন ছাড়া আমাদের আইন ও বিচার ব্যবস্থায় শরীয়া আইনের কোন স্থান নাই’। তিনি আপনার মন্তব্যকে ‘মধ্যরাতের সিঁদেল চোর’, ‘মুই কার খালুরে’ ধরনের হালকা মনে করিয়াছেন। এই দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল মন্তব্য করিয়াছেন যে, আপনি নাকি শরীয়া আইনে বিচারের কথা প্রতীকী অর্থে বলিয়াছেন। কোন অপরাধের বিচার না কি একবার শুরু হইয়া গেলে তা অন্য আইনে করা যায় না। বুবজান, এই সব চিন্তা করিয়া আপনি মনে কোন প্রকারের দুঃখ নিবেন না।

সবে মাত্র আমেরিকার ইলেকশন শেষ হইলো। বাহিরে যখন জিরো ডিগ্রি হিম শীতল বাতাস বহিতেছে, বারাক সাহেবকে নিয়া আমাদের ফোরামে তখন ৯০ডিগ্রি তাপমাত্রায় বায়ূ প্রবাহ বহিতেছে। ইলেকশনের কিছু দিন পূর্বে আমার ইউথ ক্লাবে ১০ হইতে ২০ বছরের বালক বালিকাদের উপর একটি সমীক্ষা চালাইয়া দেখিলাম, ১০০% কিশোর কিশোরী ওবামাকে সমর্থন করে। তখনই বুঝিয়া ছিলাম ওবামার পালে বাতাসের জোর আছে। ১০ নভেম্বর শনিবার বার্মিংহামে আমার ক্লাবের বেশ কয়েকজন বালিকা মালালা দিবস পালন করিল। তাহাদের সকলের হাতে বুকের উপর ধারন করা প্ল্যাকার্ডে ইংরেজিতে লেখা দেখিলাম’ আই এম মালালা’। তাহাদেরকে দেখিয়া আমার বহুদিনের পুরনো একটি গানের সুর মনে পড়িয়া গেল- শোন একটি মালালার কণ্ঠে লক্ষ মালালার কণ্ঠ-স্বরের ধ্বনি, প্রতিধ্বনি আকাশে বাতাসে উঠে——-

ইলেকশনে পাশ করিয়াই বারাক ওবামা, রহমতের ঝুলি নিয়া বাহির হইয়া পড়িয়াছেন চারিদিকে। ওদিকে মিডিলিষ্টে কিয়ামতের আলামত দেখা দিয়াছে। এই মতো অবস্থায় বারাক সাহেব আমাদেরকে উষ্টাইয়া আমাদের মাথার উপর দিয়া উড়িয়া বার্মায় কেন তসরিফ নিলেন ইহা ভাবিয়া আমি যারপর নাই চিন্তিত হইয়াছিলাম। শেষে মুখছেড়া কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরীর একটি মন্তব্যে ও বামপন্থী ভাইদের আমেরিকার উপর রাগ গোসা দেখিয়া আমার সকল চিন্তা দূর হইয়া পরাণটা শীতল হইয়া গিয়াছে। মতিয়া চৌধুরী জামায়াতের সঙ্গে সংলাপে বসিবার আহ্বান জানাইয়া বাংলাদেশে নিয়োজিত মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান মজীনার দেয়া বিবৃতির তীব্র সমালোচনা করিয়াছেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি কড়া হুশিয়ারি উচ্চারণ করিয়া জাতীয় সংসদে তিনি বলিয়াছেন, ‘

যারা ন্যায় ও অন্যায়ের মাঝখানে নিশ্চুপ থাকে, তারা যে অপরাধীদের পক্ষে, তা একটি শক্তিধর দেশের আচরণে প্রতীয়মান হয়েছে। শক্তি থাকলেই যাকে যা খুশি ঘাড় ধরে করানো যায় না। এটা ’৭১ সালে তারা (যুক্তরাষ্ট্র) দেখেছে, এখনও তারা দেখবে’।

অগ্নিকন্যা মতিয়া আরো বলিয়াছেন – ‘তার (মার্কিন রাষ্ট্রদূত) দেশের পুলিশের ওপর যদি হামলা করতো, তাহলে কি তারা তাদের সঙ্গে আলোচনা করতো? তারা কি প্রেমালাপে বসতো’? জানেন বুবু, যদিও এই মতিয়ারা অরিজিনেল আওয়ামী লীগার নয়, তারা আর্য হইতে অনার্য হইয়াছেন, কিন্তু আমেরিকার সাথে আমাদের বহু দিনের দুষমনি সম্পর্কের কথা বিবেচনা করিলে তাহাদের কথাগুলো আপনি কোনভাবেই ডাস্টবিনে ফেলিয়া দিতে পারেন না। ওবামা শুধু বার্মা নয় এই সফরে ভিয়েতনাম, কাম্বোডিয়া, আর থাইল্যান্ডও ঘুরিয়া যাইবেন। আপনি কি ট্যারা চোখে খেয়াল করিয়াছেন যে, ওবামার হাতে রহমতের ঝুলি নয়, ওগুলো ব্যবসায়ীক কাগজ পত্র, মালের বস্তা। সুসির সাথে বারাক মিয়ার এতো লেপ্টা লেপ্টি কেন জানেন? আমেরিকার যে মাল চীনে তৈরী হয়, ওগুলো এখন বার্মায়ও আসিবে। আর চীন হইতে বার্মায় আসিয়া আমেরিকার ব্যবসায়ীরা বাজার খুলিয়া বসিবে। দোকানে দোকানে আল্লাহর দুনিয়া ভরিয়া যাইতেছে বুজান। যেখানেই সস্তা মালে সস্তা শ্রমে লাভ বেশী সেখানেই বাজার আর দোকান। আমি তো অঙ্ক করিয়া হিসাব মিলাইতে পারিনা, ভিয়েতনাম আর কাম্বোডিয়া ব্যবসাপ্রেমে পড়লো কী ভাবে? তাও আমেরিকার সাথে। ভিয়েতনাম যুদ্ধের কারণে সারা দুনিয়া আমেরিকার মুখে থু থু দিল, আর আজ কিনা তারা—–ছিঃ,ছিঃ,ছিঃ। কাম্বোডিয়ায় আমেরিকার কার্পেট বোম্বিং এর কথা তারা ভুলিয়া গেল? জাত-পাত, মান-ইজ্জতের চাইতে ব্যবসা বড় হইয়া গেল? আমরা ভুলি নাই, ভুলিতে পারিনা একাত্তর, পঁচাত্তরের কথা। গ্রামীন ব্যাংক, পদ্মা সেতু, ইউনুস মিয়া, নাফিস আর কী চায় তারা? আমেরিকার সহিত আমাদের ব্যবসায়ীক কোন সম্পর্কের জরুরত নাই। নিন্দুকেরা কানাকানি করিতেছেন যে,

আমরা না কি দিনে দিনে বন্ধুহারা হইয়া যাইতেছি। এই বিশ্বায়ণের যুগে আন্তর্জাতিক বলয়ে একদিন না কি আমরা একঘরে এতিম হইয়া যাইবো। আমাদের এক সময়ের বন্ধু ভারতও আমেরিকার সাথে দিন দিন সম্পর্কের উন্নতি করিতেছে, ব্যবসার খাতিরে তারাও নাকি আমাদিগকে ভুলিয়া যাইবে।

বুবুজান, এই সমস্ত অর্থহীন আজেবাজে চিন্তা করিয়া আপনি মন খারাপ করিবেন না। আর কিছু না থাকুক, আমাদের একখানা গৌ্রবোজ্জল ইতিহাস তো আছে।

যাহাই হউক, মাদ্রাসার সাথে দিনে দিনে আপনি যে সুমধুর সম্পর্ক গড়িয়া তুলিয়াছেন তাহা অবলোকন করিয়া মাবুদ আল্লাহ প্রসন্ন হইয়াছেন। এই মুহুর্তে আপনার কাহারো বেডরুম পাহারা দেয়ার দরকার নাই, পাহাড়ের অবাঙ্গালীদের, সাতক্ষীরার হিন্দুদের আর রামুর বৌদ্ধদের সমর্থনেরও প্রয়োজন নাই। আর আমেরিকার প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাকে আমাদের দেশে আনিবার কোনই দরকার নাই, আমাদের দরকার বেলারুশের প্রধানমন্ত্রী মিখাইল মিয়াসনিকোভিচ।

পরিশেষে আশা করি সব সময় ভোটের পাল্লায় ওজন দিয়া কথাবার্তা বলিবেন। দেশের সংখ্যাগরিষ্ট মানুষের সেন্টিমেন্ট ধরিয়া দেশ চালাইবেন। বাংলাদেশের ১৫কোটি মানুষের কাছে শ্রেণীমত আমার সালাম ও দোয়া জানাইবেন।

ইতি-
আপনার ছোট ভাই
আকাশ।