সহ-ব্লগার রাগিব হাসান সর্ম্পকে নতুন করে তেমন কিছু বলার নেই। বাংলাদেশের গৌরব ড. রাগিব হাসান পেশায় একজন কম্পিউটার বিজ্ঞানী। তিনি ইউনিভার্সিটি অব আলাবামা অ্যাট বার্মিংহামের কম্পিউটার বিজ্ঞান বিভাগে সহকারী অধ্যাপক পদে কর্মরত। তাঁর গবেষণার বিষয় কম্পিউটার নিরাপত্তা ও ক্লাউড কম্পিউটিং। ২০০৬ সাল থেকে তিনি বাংলা উইকিপিডিয়াতে কাজ করছেন।
সম্প্রতি তারই উদ্যোগে আন্তর্জালে ছড়িয়ে পড়েছে বাংলা ভাষায় জ্ঞান-বিজ্ঞানের আলো। বিজ্ঞানের শিক্ষার্থী মাত্রই জানেন, উচ্চতর জ্ঞান-বিজ্ঞানের নানা শাখায় বাংলা ভাষায় বইপত্রের বেশ অভাব, কিছু ক্ষেত্রে প্রায়ই তা ইংরেজি বইয়ের হুবহু অনুবাদ। খটমটে অনুবাদের এসব বই শিক্ষার্থীর জ্ঞানতৃষ্ণা মেটানোর বদলে অনেক সময়ই বিজ্ঞানকে করে তোলো আরো ভীতিকর। আবার আন্তর্জালে প্রকাশিত বিজ্ঞানের নানা তথ্য ও জার্নাল অধিকাংশই বিদেশি ভাষায়। বিভিন্ন কঠিন অভিধা এবং জটিল তথ্য-উপাত্তে সেসব প্রায়শই শিক্ষার্থী-গবেষকদের কাছে দুর্বোধ্য ঠেকে। অনেক ক্ষেত্রে নথিপত্র, তথ্য-উপাত্ত আন্তর্জাল থেকে সংগ্রহ করতে আগ্রহীদের ক্রেডিট কার্ডে গুনতে হয় মোটা অঙ্কের অর্থ।
শিক্ষার এই বিপত্তি এড়াতে সম্প্রতি রাগিব হাসানের নেতৃত্বে সম্পূর্ণ স্বেচ্ছাশ্রমে এগিয়ে এসেছেন একঝাঁক পেশাদার শিক্ষক ও গবেষক। তাঁরা শিক্ষক ডটকম নামে একটি ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আন্তর্জালে চালু করেছেন জ্ঞান-বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় নানা প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ। আলোর এই ইস্কুলে এসব প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে পুরোপুরি বিনা মূল্যে এবং বাংলা ভাষায়। এতে জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে পড়ছে বিশ্বের নানা প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা বাংলা ভাষাভাষীদের মধ্যে। একই সঙ্গে বাড়ছে অমর একুশের গৌরবময় মাতৃভাষা বাংলা ভাষার প্রসারও।
শিক্ষক ডটকম বাংলা ভাষায় মুক্ত জ্ঞানের প্রকাশ ও বিকাশের জন্য এমনই একটি অভিনব আন্তর্জালভিত্তিক মুক্তমঞ্চ। এ ধরনের উদ্যোগ বাংলা ভাষায় এটিই প্রথম। গত আগস্টেই ওয়েবসাইটটি চালু হওয়ার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক, টুইটার ও বিভিন্ন ব্লগ সাইটে এ নিয়ে বেশ সাড়া লক্ষ্য করা যায়। গণমাধ্যমে এ নিয়ে প্রকাশিত হয়েছে বিশেষ প্রতিবেদন।
শিক্ষক ডটকম ঘুরে দেখা যাবে, বিজ্ঞানের প্রতিটি বিষয়ে দেওয়া কোর্সের লেকচারের নিচেই আগ্রহীদের প্রশ্ন ও মন্তব্য করার সুয়োগ রয়েছে। এ ছাড়া সংশ্লিষ্ট বিষয়ের অভিজ্ঞ গবেষক ও শিক্ষকরা ভিডিও ক্লিপিংয়ের মাধ্যমে সহজবোধ্যভাবে বাংলায় দিচ্ছেন ক্লাস লেকচার। স্বয়ংক্রিয়ভাবে ই-মেইলেও লেকচার পাওয়ার সুযোগ রয়েছে। সে জন্য আগ্রহীদের সংশ্লিষ্ট লেকচার নোট পেতে সাইটটিতে গিয়ে নিবন্ধিত হতে হবে। জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে দেওয়ার ব্রত নিয়ে বিভিন্ন বিষয়ে ডজনখানেক শিক্ষক ও গবেষক স্বেচ্ছাশ্রমে এই মহান উদ্যোগের সঙ্গে সার্বক্ষণিকভাবে যুক্ত হয়েছেন।
তারা বাংলাদেশ, যুক্তরাষ্ট্র, নেদারল্যান্ডস, জার্মানি ও কানাডায় সংশ্লিষ্ট বিষয়ে খ্যাতনামা বিশ্ববিদ্যালয় বা গবেষণা সংস্থায় নিজ নিজ মেধার স্বাক্ষর রেখে চলেছেন। সাইটটিতে প্রতিটি কোর্সের সঙ্গে রয়েছে কোর্সটির শিক্ষক পরিচিতি, তাঁর নিজস্ব ওয়েবসাইট বা ব্লগ ঠিকানা। একেকটি কোর্স থেকে শিক্ষার্থীরা যাতে আন্তর্জাতিক মানের প্রশিক্ষণ পান, প্রতিটি কোর্সেই যাতে জ্ঞান-বিজ্ঞানের হালনাগাদ তথ্য থাকে এবং কোর্স শেষে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা যাতে প্রত্যেকেই হয়ে ওঠেন সমৃদ্ধ, এ জন্য প্রশিক্ষকরা সচেষ্ট।
রাগিব হাসান তার প্রতিষ্ঠিত শিক্ষক ডটকম প্রসঙ্গে এই লেখককে বলেন, এটি বাংলা ভাষায় জ্ঞান-বিজ্ঞানের আলো সর্বত্র ছড়িয়ে দেওয়ার একটি অবাণিজ্যিক উদ্যোগ। এই সাইটে বাংলা ভাষায় নানা বিষয়ে অনলাইন কোর্স দেওয়া হচ্ছে, যা সবার জন্য উন্মুক্ত। যে কেউ সম্পূর্ণ বিনা মূল্যে সহজেই এখানে নানা বিষয় জানতে পারবেন। তিনি জানান, সাইটটিতে কেউ কোনো কোর্স পড়াতে চাইলে নির্দিষ্ট তথ্যগুলো [[email protected]] ঠিকানায় ই-মেইল করতে পারেন।
প্রসঙ্গত, বাংলা ভাষায় জ্ঞানের বিকাশের জন্য রাগিব হাসান কিছুদিন আগে কম্পিউটার বিজ্ঞান শেখানোর জন্য আরেকটি ওয়েবসাইট যন্ত্রগণক ডটকম [http://jontrogonok.com/] প্রতিষ্ঠা করেন। এরই যোগসূত্রে শিক্ষক ডটকম [http://www.shikkhok.com/] এর অভিযাত্রা।
এই সময়ে মুক্তজ্ঞানের এই বিদ্যালয়ে যে সব বিষয়ে কোর্স দেওয়া হচ্ছে, তা হলো: জ্যোতির্বিজ্ঞান ১০১ [খান মুহাম্মদ], কেমিকৌশল পরিচিতি [ফারুক হাসান], ক্লাউড কম্পিউটিং [রাগিব হাসান], তড়িৎকৌশল পরিচিতি [ডেভিড বিশ্বাস], ফাইন্যান্স ১০১ – অর্থবিজ্ঞান পরিচিতি [আলী হায়দার খান], জিওগ্রাফিক ইনফর্মেশন সিস্টেম পরিচিতি [বায়েস আহমেদ], পরিবেশ এবং পরিবেশ ব্যবস্থাপনা পরিচিতি [ইখতেখারুল ইসলাম], বায়োইনফরমেটিক্স পরিচিতি – বায়ো-বায়ো-১ রিসার্চ ফাউন্ডেশন
ক্যালকুলাসের অ-আ-ক-খ [চমক হাসান], সি প্রোগ্রামিং [মারুফ মনিরুজ্জামান], সি++ প্রোগ্রামিং [ইশতিয়াক রউফ], পরিবেশ বিজ্ঞান পরিচিতি [মোস্তফা কামাল পলাশ], নিউরোসায়েন্স পরিচিতি [মামুন রশিদ], আইপি টেলিফোনী [মশিউর রহমান]…
শিক্ষক ডটকম এর এসব উদ্যোগ বিশ্বের নানা প্রান্তে নানা গুনিজনের কাছে কদর পাচ্ছে, এটি বলা খুব বেশী বাহুল্য নয়। ভারতের আসামের বিশিষ্ট গবেষক ও লেখক সুশান্ত করের একটি ফেবু মন্তব্য এ প্রসঙ্গে উদ্ধৃত করা যাক। তিনি বলছেন:
ভালো মানে, অত্যন্ত ভালো সাইট। আর সবেতেই বাংলাদেশের বন্ধুরা আমাদের থেকে এগিয়ে আছেন। আপাতত দেখছি বিজ্ঞানের চর্চাই বেশি। তাই বা মন্দ কী? বাংলা ভাষাতে বিজ্ঞান চর্চা হয় না বলে যে কুসংস্কার একেই তাঁরা সবার আগে ধাক্কা দিয়েছেন। আমারতো ভবিষ্যত নিয়ে ভরসা বেড়ে গেল। আমরা পূর্বোত্তর ভারতের লোকেরা কবে কী করছি? এখনো তো সাহিত্যই ভালো করে নেটে করে উঠতে পারলাম না। শিখতে আমাদের প্রবল অনীহা!
তবে সম্প্রতি ধর্মীয় উন্মাদনা সৃষ্টিকারী একটি চলচ্চিত্র প্রদর্শনে বাংলাদেশেও মৌলবাদী সহিংসতা ছড়িয়ে পড়তে পারে, এমন অজুহাতে এদেশে ইউটিউবসহ গুগলের নানা সার্ভিস ব্লক করা হয়েছে। গুগল বাংলাদেশ সরকারের কাছে নতি স্বীকার না করা পর্যন্ত এসব বন্ধ করে রাখা হবে বলে খবরে প্রকাশ। এতে এদেশের শিক্ষার্থীরা শিক্ষক ডটকম এর ওয়েব সাইট থেকে ভিডিও ক্লিপিং থেকে লেকচার-নোট নিতে পারছেন না। এ নিয়ে ফেবুতে অনেক সরাসরি খেদ ঝেড়েছেন; অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। মুক্তজ্ঞান ও বিনোদনের এই আন্তর্জালের প্রতিবন্ধকতা যত দ্রুত সরকার দূর করবেন, ততোই তা কল্যাণ বয়ে নিয়ে আসবে বলে বোধ হচ্ছে। …
রাগিব
বাংলা ভাষায় এ বড় শুভ উদ্যোগ। স্যোশাল মিডিয়ার পরে এ হচ্ছে স্যোশাল টিচিং। শুধু শিক্ষক কেন ছাত্ররাও পড়াক। কোর্স মেটেরিয়াল আস্তে আস্তে নিশ্চয় আরো ভাল হবে।
বাংলা ভাষাতে জ্ঞান এবং প্রযুক্তির আলো ছড়াতে এই উদ্যোগ আরো সফল হোক। আমার হাতে সময় থাকলে কিছু ভীষন ইমার্জিং এলাকা যেমন বিগ ডেটাতে প্রেডিক্টিভ এন্যালাইটিক বা এল টি ই প্রযুক্তি নিয়ে কোর্স ওয়ার্ক দেওয়ার ইচ্ছা রইল। আমি চাই আপকামিং এলাকাতে বাঙালী শিক্ষিত হোক-কারন বাঙালীর ঘরে কোন পুজি নেই-মেধা পুঁজিই বাঙালীর একমাত্র সম্বল।
@বিপ্লব পাল,
ছাত্ররাই মূলত পড়াচ্ছেন যতদূর জানি, অন্তত দু’জন আন্ডারগ্র্যাড তো আছেনই।
আলোর স্কুলের আলো ছড়িয়ে পড়ুক বাংলাদেশের সব জায়গায়।
বেশ অনেকেই বলছেন তারা এই প্রথম শুনছেন সাইটটির কথা। আসলে আগস্টে এই সাইট চালুর পর থেকে মূলত সোশাল মিডিয়ার মাধ্যমেই এর প্রচারণা হয়েছে। প্রথাগত মিডিয়া যেমন পত্রিকা বা অনলাইন এড দেয়ার মতো আর্থিক সামর্থ নাই। আমার এই সাইটের বাজেট কত তা বললে হাসতে হাসতে সবাই চেয়ার থেকে পড়ে যেতে পারেন। তাই সোশাল মিডিয়া যেমন ফেইসবুকই ভরসা।
আপনারা খুব সহজে একটা কাজ করতে পারেন। শিক্ষক.কম বা এর যেকোনো লেকচারের পাতাটি শেয়ার দিন ফেইসবুকে, পরিচিতরা সবাই এর ব্যাপারে তাহলে জানতে পারবে।
আর উপরের এক কমেন্টেই বলেছি, সমাজবিজ্ঞান, কলা, এইসব বিষয়ের কোর্স নাই তার একমাত্র কারণ হলো আগ্রহী শিক্ষক পাইনি (অথবা আমার নিজের পরিচিতের গণ্ডিতে এরকম বিষয়ের লোক কম)। তাই এই সব বিষয়ে কোর্স দিতে পারেন এমন সবাই দয়া করে দয়া করে প্লিজ আমার সাথে যোগাযোগ করুন, আর কোর্সের একটা আউটলাইন বা প্ল্যান দিন। (আমার সাথে যোগাযোগের ঠিকানা ragibhasan অ্যাট জিমেইল ডট কম, বা ফেইসবুকে ইউজার আইডি ragibhasan )।
দারুন কাজ হয়েছে। বিপ্লব ভাই আপনার মাধ্যমে প্রথম জানতে পারলাম এজন্য ধন্যবাদ।
রাগিব হাসান আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ ।বিপ্লব ভাই আপনাকেও ধন্যবাদ বিষয়টি অবগত করার জন্য । (F)
খুব ভালো প্রয়াস। বিশ্বজোড়া এই পাঠশালার ছাত্র হতে পারব জেনে নিজেরই খুব ভালোলাগছে। ধন্যবাদ বিপ্লবকেও এমন একটা খবর দেওয়ার জন্য।
আমি আশেপাশে কথা বলে খেয়াল করেছি খান একাডেমী, কোর্সেরা, ইউডাসিটি বা এডেক্সএর নাম অনেক মানুষ জানে কিন্তু বাংলা ভাষায় করা শিক্ষক ডট কমের মত উদ্যোগ অনেক মানুষেরই অজানা। লেখককে ধন্যবাদ লেখাটির জন্য। এখন মানুষকে বিষয়টা জানানোর জন্য এই লিঙ্কটা দিলেই চলবে। (Y)
@লীনা রহমান, অবশ্যই, প্লিজ প্লিজ শিক্ষক.কম অথবা এর কোর্সের যেকোনো লেকচারের লিংক পরিচিতদেরকে দিন।
@রাগিব হাসান, অবশ্যই!
এভাবেই বাংলা ভাষায় রিসোর্সের অভাব একসময় মিটে যাবে। যাদের লেখালেখি বা ভিডিও টিউটোরিয়াল তৈরির ইচ্ছা আছে কিন্তু শুরু করা হয়ে উঠেনি,আজই শুরু করে দিন,আমরা যে যতটুকু জানি সেটা সহজ ভাষায় সবাইকে জানালে শিক্ষা ব্যবস্থার চেহারাই পাল্টে যাবে। চাইলে মুক্তমনাতেই লিখতে পারেন,বা প্রিয় কোনো ব্লগে বা ব্যক্তিগত ব্লগে লিখতে পারেন,ভিডিও তৈরি করতে পারেন,স্লাইড বানাতে পারেন। সবাইকে অনুরোধ করবো প্রতি মাসে কিছু সময় বাচিয়ে মানুষকে শেখানোর জন্য কাজ করতে, বিনিময়ে পাবেন অসংখ্য মানুষের শ্রদ্ধা,ভালোবাসা। আমি নিজে ব্যক্তিগত ব্লগে নিয়মিত নিজের প্রিয় বিষয় অ্যালগোরিদম নিয়ে লিখি, আপনিও আপনার প্রিয় বিষয় নিয়ে লিখুন।
@রামগড়ুড়ের ছানা, আমি কিন্তু আপনার এলগরিদম কোর্সের অপেক্ষায় আছি। 🙂
রাগিব হাসানকে ধন্যবাদ এই উদ্যোগের জন্য। সাথে ধন্যবাদ প্রাপ্য শিক্ষক.কম এর সকল শিক্ষককে যারা কোনো স্বার্থ ছাড়াই আলো ছড়ানোর কাজ করে চলেছেন,রাগিব হাসানের পাশাপাশি তাদের ধন্যবাদ না দিলে বিশাল অন্যায় হয়ে যাবে।
প্রসংশনীয় উদ্যোগটির কথা একেবারেই জানা ছিল না। সময় করে সাইট দেখব।
অন্যদের মন্তব্য শুনে মনে হচ্ছে যে এখনো কোর্স ম্যাটেরিয়াল মূলতঃ ভৌত বিজ্ঞান বা টেকনোলজি ভিত্তিক। খুবই সাধারন কথা, তবুও মনে করিয়ে দিতে চাই যে বিজ্ঞানের প্রকৃত সুফল পেতে হলে সমাজবিজ্ঞান বা কলা বিষয়ক কোর্সগুলিও হেলাফেলা করলে একেবারেই চলবে না। শুধু শতভাগ হার্ডকোর বিজ্ঞান শিক্ষায় হয়ত পিএইচডির সংখ্যা বাড়বে, কিন্তু ইনোভেশন সংস্কৃতি গড়ে উঠবে না। আশা করি এ বিষয়টির গুরুত্ব যথাসময়ে দেওয়া হবে। বিশাল জ্ঞান অর্জন করার পর যদি মেধা ও সময় ব্যায় করা হয় ধর্মগ্রন্থে বিজ্ঞান আবিষ্কারে, কিংবা জ্বীন পরী ধরে বিদ্যুৎ উতপাদনের কৌশল উদ্ভাবনে তবে সে বিদ্যা দিয়ে জীবিকার্জন ছাড়া আর কিছুই হবে না।
আমাদের অঞ্চলে এ ধারনাটি একেবারেই অনুপস্থিত। আমাদের দেশের আন্ডারগ্র্যাড যারা আমেরিকায় ইঞ্জিনিয়ারিং এ প্রফেশনাল লাইসেন্স নিতে যান তারা নিশ্চয়ই এই যন্ত্রনা হাড়ে হাড়ে টের পান। ন্যূনতম সংখ্যক সমাজবিজ্ঞান সম্পর্কিত বিষয় আমাদের আন্ডারগ্র্যাড কারিকুলামে না থাকার কারনে পিএইচডি করেও লোককে কমিউনিটি কলেজে সমাজবিজ্ঞান কলা বিভাগের কোর্স নিতে হয়। ব্যাপারটি বিরক্তিকর হলেও গুরুত্বপূর্ন। দেশের আমলাতান্ত্রিক জাল সহসা ভেদ করার আশা নেই, এভাবে যদি কিছুটা গনসচেতনতা বাড়ানো যায়, নিজ গরজেই হয়ত লোকে শিখবে।
বিপ্লবকে ধন্যবাদ সংক্ষিপ্ত পরিসরে বর্ননা দেবার জন্য, রাগিবকে ধন্যবাদ দিয়ে খাটো করতে চাই না।
@আদিল মাহমুদ, সম্পূর্ণ একমত আপনার মন্তব্যের সাথে। উপরের একটা কমেন্টে সেটা লিখেছি, এখনো মডারেশনে আছে। আসল সমস্যা হলো এসব বিষয়ে শিক্ষক হতে কে এগিয়ে আসবে, সেইটা।
দরজা খুলে বসে আছি …
@রাগিব হাসান,
বিজ্ঞান শিক্ষায় আগ্রহী অনেকে এগিয়ে আসলে কলা, সমাজবিজ্ঞানের লোকজন আগ্রহী হবেন না কেন? দেশে বিদেশে এসব বিষয়েও বেশ কিছু নামকরা বাংলাভাষী শিক্ষকতা পেশায় নিযুক্ত আছেন। তাদের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করা যায়। মুক্তমনাতেও কয়েকজন আছেন বলে জানি, স্নিগ্ধা সম্ভবত সমাজ বিজ্ঞানে গবেষনা করেন।
আমার এক বোনও কানাডার এক বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজবিজ্ঞান/নৃতত্ত্ব পড়ায়, তাকেও বলে দেখতে পারি।
আগ্রহী পাঠক পাওয়া গেলে আমি নিশ্চিত যে ভলান্টিয়ার শিক্ষকের অভাব হবে না। বিজ্ঞানের শিক্ষার্থীদের সমাজবিজ্ঞান/কলা এসব ব্যাপারে বেশ একটি অনাগ্রহের ভাব থাকে। এটা দূর করার জন্য আগে বিজ্ঞান শিক্ষায় সমাজবিজ্ঞানের গুরুত্ব নিয়ে লেখালেখি করা উচিত।
@আদিল মাহমুদ, পাঠকের অভাব হবে না। আমি অধিকাংশ কোর্সে আগ্রহীদের জন্য নিবন্ধনের ব্যবস্থা রেখেছি। সব শিক্ষার্থী নিবন্ধন করছে এমন কথা নাই, তবে প্রচুর শিক্ষার্থী প্রতি কোর্সে যোগ দিচ্ছে। আমার কম্পিউটার সিকিউরিটি কোর্সে মোট রেজিস্ট্রেশন করেছিলো ১২০০ জন।
আমি মূলত এখন থালা হাতে ভার্চুয়ালি দ্বারে দ্বারে ঘুরে শিক্ষক জোগাড়ের কাজটা করছি। পরিচিত কাউকে সম্ভাব্য মনে হলেই কলাটা মূলাটার লোভ দেখিয়ে শিক্ষক বানানোর ফিকির করি। কেউ সাড়া দেন, কেউ কাজের কারণে পারেন না। তবে সামাজিক বিজ্ঞান কিংবা কলা বিষয়ে আমার পরিচিত লোকজন কম। মিস্তিরি হওয়ার এইটা একটা বড় সীমাবদ্ধতা 🙁 ।
আগ্রহীদেরকে এই লিংকের তথ্য্গুলা পাঠাতে বলেন, আমি কোর্স চালু করে দিবো।
@রাগিব হাসান,
লেগে থাকলে আপনাদের প্রচেষ্টা অবশ্যই দীর্ঘমেয়াদে সুফল বয়ে আনবে।
দেখি আর্টস লাইনের দুয়েকজন যাদের চিনি তাদের একটু গুতো মেরে।
@রাগিব হাসান,
শাবাশ রাগিব ভাই! চলুক। (Y)
@রাগিব হাসান,
শিক্ষক দরকার এই কথাটা প্রচারে যথেষ্ট জোর দেয়া যা কি? ভালো কাজে ভালো মানুষ পাওয়া যাবে না এটা মেনে নিতে কষ্ট হচ্ছে।
সার্বিক সাফল্য হোক।
শুভেচ্ছা।
@কাজী রহমান, শিক্ষক আসলেই খুব দরকার। মোটামুটি ৬/৭ সপ্তাহের ৬-৮টি লেকচার দিতে পারবেন এমন কমিটমেন্ট দেয়ার মতো মানুষ পাওয়াটা একটু কষ্টকর। আমি ফেইসবুকে আহবান জানিয়েছি। আপনারা দয়া করে এই লিংকটি পরিচিতদের কাছে শেয়ার করুন।
http://wp.me/P2CM2f-4R
শিক্ষক.কম প্রজেক্ট নিয়ে লেখার জন্য বিপ্লব ভাইকে অনেক ধন্যবাদ।
আমার সাথে খুব নিবেদিতপ্রাণ কিছু শিক্ষক আছেন বলেই এই সাইটটি এভাবে কোর্স অফার করতে পারছে। ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়াবার মতো লোক এখনো দুনিয়াতে আছে 🙂 । তাই ধন্যবাদটা আসলে এই শিক্ষকদের সবার প্রাপ্য।
শিক্ষক.কম সাইটে বিজ্ঞানের কোর্স বেশি কারণটা কেবলই শিক্ষকের অভাব। কলা, সমাজবিজ্ঞান, বাণিজ্য, সব বিষয়ের উপরেই কোর্স অফার করতে পারেন কেউ, এমনকি স্কুলের বাচ্চাদের জন্য কিংবা যেকোনো বিষয়ে (যেমন রান্না) কোর্স দেয়া যাবে। কোর্স দিতে আগ্রহী হলে আমাকে কিছু তথ্য পাঠান, শিক্ষক.কম সাইটের “শিক্ষক হতে চান?” পাতায় তথ্যের তালিকাটি আছে।
ছড়িয়ে দুনিয়ার সব জ্ঞান-বিজ্ঞান আমাদের বাংলায়, আমাদের এই বাংলা ভাষায় …
রাগিব হাসান ভাই, পরিসংখ্যান শেখানোর কোনো ব্লগ পেলাম না। একজন পরিসংখ্যান শিক্ষক কি রাখা যায়?
অত্যন্ত চমৎকার উদ্যোগ। এক কথায় অসাধারণ। যন্ত্রগণক রাগীবকে অভিনন্দন। সাইটটা একটু ঘুরে আসলাম। যা বুঝতে পারলাম সব না হলেও বেশিরভাগ লেকচারই ইউটিউবে। বাংলাদেশে ইউটিঊব বন্ধ থাকায় বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের জন্য অসুবিধা হবে। ভবিষ্যতে খুলে দিলেও আবার বন্ধ হয়ে যেতে পারে। বলা তো যায় না কখন কি হয়। রাগীবকে বলব এই ব্যাপারটা মাথায় রাখতে, বিকল্প ভেবে রাখা ভাল।
@হোরাস, ধন্যবাদ। ইউটিউব ব্যানের আগের সব লেকচারগুলা ওখানেই রাখা হয়েছিলো। পরের লেকচারগুলা নানা জায়গায় (যেমন ড্রপবক্স) রাখা হচ্ছে ইউটিউবের পাশাপাশি।
শিক্ষক ডটকম নামে একটি ওয়েবসাইটের মাধ্যমে রাগিব হাসান যেভাবে বিনামূল্যে জ্ঞান বিতরন করে যাচ্ছেন, তা এককথায় প্রশংসনীয়। স্যালুট রাগিব ভাইকে। (F)
ধন্যবাদ বিপ্লব ভাই, প্রিয় রাগিব হাসান ভাইকে নিয়ে একটি চমৎকার ফিচার লিখার জন্যে। (Y)
@সঞ্জয়,
সঙ্গে থাকার জন্য ধন্যবাদ।
প্রিয় রাগিব হাসানের প্রতি শ্রদ্ধা জানাচ্ছি। তার অক্লান্ত পরিশ্রম আমাদের অনেক এগিয়ে দিয়েছে।
@সৈকত চৌধুরী,
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। (Y)
@বিপ্লব রহমান,
রাগিব হাসানের প্রতি শ্রদ্ধা :guru: আর বিপ্লব দাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। (Y)
@আকাশ মালিক,
আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ। (Y)
বাঙলাদেশের আরেক সালমান খান হইতে যাইতেছেন উনি। উনারে স্যালুট।
@সাইফুল ইসলাম,
(Y) (Y)
চমৎকার উদ্যোগ। বাংলাভাষীদের মধ্যে বিজ্ঞানের আলো ছড়িয়ে দেওয়ার একটি অসাধারণ প্রচেষ্টা। আন্তরিক শ্রদ্ধা জানাচ্ছি ড. রাগিব হাসানকে।
(F) (F) (F) (Y)
@ভক্ত,
শাবাশ! (Y)
দারুন…. এই ধরনের মানুষরা আছেন বলেই আমরা যারা নিম্নমধ্যবিত্তরা আছি যারা চাইলেও ভাল কোন দেশে গিয়ে উচ্চশিক্ষার ইচ্ছাকে অনেক আগেই মাটি চাপা দিয়েছি তাদের জন্য এই ধরনের মানুষরাই ত বিশ্বকে হাতে এনে দেন. ধন্যবাদ বিপ্লব রহমানকে, রাগিব হাসান এর দারুন এক উদ্যোগের এর সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়ার জন্য. রাগিব হাসানকে ও ধন্যবাদ এত দারুন এক উদ্যোগে গ্রহনের জন্য.
@HuminityLover,
আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ।
বিজ্ঞানের আলো ছাড়া অন্ধকার দূরিভুত হবে না। দারুণ উদ্যোগ নিয়েছেন রাগিব সাহেব। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ এই বিষয়ে লেখার জন্য। (Y)
@তামান্না ঝুমু,
আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ। চলুক।
রাগিবের উদ্যোগের সাফল্য কামনা করছি। দেশকে এগিয়ে নিতে হলে ধরণের উদ্যোগের খুবই প্রয়োজন।
@অভি দা,
খুবই যৌক্তিক বলেছেন। আপনার মাধ্যমে, এই নোটের মাধ্যমে মুক্তমনার সহ ব্লগারদের আহ্বান জানাই, আগ্রহীরা যেনো রাগিব ভাইয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করে শিক্ষক ডটকম – এর সঙ্গে [প্রশিক্ষণ নেওয়া বা দেওয়ায় ] যুক্ত হন। মুক্তমনাতে বিজ্ঞানের নানা শাখায় লেখক নেহাত কম নেই। (F)
চমৎকার রিভিউ।
শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দেয়ার এসব উদ্যোগ অব্যহত থাকুক।
@সবুজ পাহাড়ের রাজা,
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
অসাধারন একটা উদ্যেগ রাগিব ভাই আর তার সমমনাদের।আমি কয়েকদিন আগে সাইটটি ঘুরে দেখেছি,বেশ গুছানো।
যারা সাইটটির সাথে জড়িত তাদেরকে স্যালুট জানাই,এত কিছুর মাঝেও মাঝে মধ্যে এইরকম কিছু প্রচেষ্টা দেখে আশাবাদী হই।
@নিয়নের আলো,
সঙ্গে থাকার জন্য অনেক ধন্যবাদ। (Y)