রাঙামাটি সহিংসতার জের মিটতে না মিটতেই কক্সবাজারের রামুতে বৌদ্ধ ধর্মালম্বী অধ‌্যুষিত অঞ্চলে মৌলবাদী সন্ত্রাসীরা তাণ্ডবলীলা চালিয়ে ধ্বংস করেছে অন্তত সাতটি বৌদ্ধ মন্দির, প্রায় ৩০টি বাড়ি ও দোকানে। হামলা, ভাংচুর ও লুটপাট চালানো হয়েছে আরো শতাধিক বাড়ি ও দোকান-পাটে। হিংসার অনলে পুড়ে ছাই হয়েছে অহিংস বাণীর প্রচারক সাধু গৌতম বুদ্ধের বিহার। ভীত, সন্ত্রস্ত এখন রাখাইন জনপদ।

ফেইসবুকে কোরআন অবমাননার অভিযোগে কক্সবাজারের রামুতে বৌদ্ধবসতিতে হামলা চালিয়ে রাতভর তাণ্ডব চালিয়েছে র্ধর্মীয় উগ্রপন্থীরা।

শনিবার রাত সাড়ে ১১টা থেকে ভোর ৪টা পর্যন্ত চলা এই হামলায় রামু উপজেলার ৭টি বৌদ্ধ মন্দির, প্রায় ৩০টি বাড়ি ও দোকান পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। হামলা, ভাংচুর ও লুটপাট চালানো হয়েছে আরো শতাধিক বাড়ি ও দোকানে।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) জসীম উদ্দিন জানিয়েছেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রোববার সকাল থেকে রামুতে অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। এলাকায় বিপুল সংখ্যক পুলিশ, বিজিবি, র‍্যাব মোতায়েন করা হয়েছে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহিউদ্দিন খান আলমগীর ও শিল্পী মন্ত্রী দীলিপ বড়–য়া রোববার ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসছেন বলে স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা জানান।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে কোরআন শরিফ অবমাননা করে ছবি সংযুক্ত করার অভিযোগ এনে একটি ইসলামী দলের কয়েকজন নেতার নেতৃত্বে একটি মিছিল বের করা হয় শনিবার রাত ১০টার দিকে।

মিছিল শেষে সমাবেশে বক্তারা দাবি করেন, রামু উপজেলার বৌদ্ধ পাড়ার উত্তম বড়ুয়া নামের এক যুবকের ফেইসবুক একাউন্টে কোরআন অবমাননাকর ছবিটি পোস্ট করা হয়েছে। ওই যুবককে আটকেরও দাবি জানান বক্তারা।

সমাবেশ শেষে কিছুক্ষণ পর আবারো একটি মিছিল বের হয়। মিছিলটি রাত সাড়ে ১১টার দিকে রামুর বড়ুয়া পাড়ায় পৌঁছানোর পর কয়েকজন যুবক স্থানীয় বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের কয়েকটি বাড়িতে আগুন দেয়।

এরপর ওই এলাকার অন্তত ১৫টি বাড়ি, তিনটি বৌদ্ধ মন্দিরে অগ্নিসংযোগ করা হয়। ভাঙচুর হয় শতাধিক বাড়ি।

[লিংক]

ঘটনাস্থল থেকে রাত দেড়টার দিকে কক্সবাজারের রাখাইন এক তরুণ বন্ধু টেলিফোনে এই লেখককে বলেন, দাদা, পুরো বৌদ্ধ পাড়া এখন আগুনে জ্বলছে। হামলার খবর পেয়ে আমরা কয়েক বন্ধু মোটরসাইকেলে ঘটনাস্থলে এসেছি। চারিদিকে শুধু আগুন, ধোঁয়া আর চিৎকার। …এই মাত্র চোখের সামনে রামু বৌদ্ধ মন্দিরে আগুন দেওয়া হলো।…

জবাবে রাখাইন বন্ধুটিকে সাবধানে ঘটনা পর্যবেক্ষণ করা ছাড়া আর তেমন কিছুই বলা যায়নি। পরে এই বন্ধুটিই আগুন নিভে আসলে ধ্বংসযজ্ঞের কিছু ছবি ইমেইল করেন। মনে পড়ে যায়, এ বছর জানুয়ারিতেই টেকনাফের প্রায় ২০০ বছরের প্রাচীন হ্নীলা বৌদ্ধবিহার (সেনপ্রু ক্যাং) দখলের বিষয়ে সংবাদপত্রে একটি সরেজমিন অনুসন্ধানী প্রতিবেদন করা হয়েছিলো। সে সময়ও রাখাইন বন্ধুরা তথ্যদিয়ে যথেষ্ট সহায়তা করেছিলেন। …

[দ্র. টেকনাফের প্রাচীন বৌদ্ধবিহার নিশ্চিহ্ন হওয়ার পথে]


সকাল হতে না হতেই টিভি, অনলাইন, ফেবু ছেয়ে যায় রামু’র সংবাদে। রাখাইন বন্ধুরা ইমেইল করে পাঠান ঘটনাস্থলের কিছু তাজা ছবি। একটি ছবিতে দেখা যায়, পাথুরে ধ্যানী বুদ্ধ সৌম্য চেহারায় অবিচল। তাকে ঘিরে রেখেছিলো যে, টিনের মন্দির, সেটি অবশ্য আগুনে পুড়ে ছাই। এখনো পোড়া খুঁটি, দুমরে যাওয়া টিনের বান্ডিল থেকে ধোঁয়া উঠছে। …

খবরে প্রকাশ রামুর ঘটনার সূত্র ধরেই হামলা হয়, চট্টগ্রামের পটিয়াতেও। সে বিষয়ে খবরে বলা হয়:

রামুর পর এবার পটিয়ায় হিন্দু ও বৌদ্ধ মন্দিরে হামলা চালিয়েছে ধর্মীয় উগ্রপন্থীরা।

পটিয়া থানার ওসি আমিনুর রশিদ জানান, রোববার বেলা ১২ টা থেকে দেড়টার মধ্যে এই হামলায় দুটি হিন্দু মন্দির ও দুটি বৌদ্ধ মন্দির ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

স্থানীয় সাংবাদিকরা জানান, বেলা ১২টার দিকে কয়েকশ লোক মিছিল করে লাখাড়া অভয় বৌদ্ধ বিহারে হামলা চালায় এবং আগুন দেয়।

এরপর কোলাগাঁও রতœাঙ্কুর বৌদ্ধ বিহার, কোলাগাঁও নবারুণ সংঘ দুর্গা মন্দির ও জেলে পাড়া মাতৃ মন্দিরেও হামলা হয়।

অভয় বৌদ্ধ বিহারের প্রাচীন বুদ্ধ মূর্তি ভাংচুর এবং নবারুণ সংঘ দুর্গা মন্দিরে দুর্গা প্রতিমাতেও আগুন দেয় হামলাকারীরা।

ওসি বলেন, “মহানবী হযরত মুহাম্মদকে (স.) অবমাননার অজুহাতে উগ্রপন্থীরা এ হামলা চালিয়েছে।

ঘটনাস্থলে পুলিশ ও র‌্যাব মোতায়েন করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

[লিংক]

টেকনাফ থেকে রাখাইন বন্ধুরা টেলিফোনে জানান, সেখানের রাখাইনপল্লী এলাকাতেও রবিবার রাতে হামলা চালানো হয়। বৌদ্ধ মন্দিরগুলোই সন্ত্রাসী হামলার প্রধান শিকার। …সবশেষ খবরে সাম্প্রদায়ীক সন্ত্রাসের রাজনৈতিক যোগসূত্রটি স্পষ্ট ধরা পড়ে। এতে বলা হয়:

কক্সবাজারের রামুতে বৌদ্ধ বসতিতে সংঘটিত সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসে একটি ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলের ইন্ধন এবং রোহিঙ্গাদের অংশগ্রহণ ছিল বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

তারা বলছেন, পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করতে মিয়ানমারের সাম্প্রতিক জাতিগত সংঘর্ষের ঘটনায় রোহিঙ্গাদের ক্ষোভকে কাজে লগিয়েছে একটি মহল। যারা হামলা চালিয়েছে, তাদের কণ্ঠে শোনা গেছে ‘নারায়ে তকবির’ শ্লোগান।

[লিংক]

দৃশ্যত:ই রাঙামাটির সঙ্গে রামু’র সহিংসতার প্রেক্ষাপট ও ধরণ ভিন্ন। আবার দর্শনগত দিক তলিয়ে দেখলে এর মূল ইন্ধনদাতা রাজনৈতিক শক্তি/আস্কারাটি রসুনের গোঁড়ায় অভিন্ন। মোটাদাগে, পাহাড় ও সমতলে ভাষাগত/ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর প্রশাসনিক আস্কারায় সেনা-সেটেলার-মোল্লারা এ ধরণের সহিংস আক্রমণের সাহস পাচ্ছে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হচ্ছে, ধর্মাশ্রয়ী রাজনীতির বিচার নেই, ভোটের মোকাম ঝলমলে রাখতেই একে জিইয়ে রাখা হয়েছে, বিএনপি/আওয়ামী লীগ/জামাত যুথবন্দী এ প্রশ্নে [“লা ইলাহা ইল্লা, নৌকার মালিক তুই আল্লাহ”]। এই আগ্রাসী জাতীয়তবাদা/মৌলবাদ আস্কারার ভিঁতটি অনেক গভীরে।

১৯৭২ এ সংবিধান রচনার কালে ঐতিহাসিক মুজিবীয় [“তোরা সব বাঙালি হইয়া যা”] উক্তিটি স্মরণ করা যাক। এটি উগ্র জাতীয়তাবাদী দর্শনকে ধারণ করে, যার শেকড় ফ্যাসিবাদ তথা মৌলবাদে গাঁথা [মুক্তি যুদ্ধোত্তর বাংলাদেশে মুজিবের দুঃশাসন এবং পরবর্তী শাসকগোষ্ঠিগুলো এখনো এই দর্শনটিকেই ধারণ করে]। এর নীট ফলাফলে পাহাড় ও সমতলে ভাষাগত/ধর্মীয় সংখ্যালঘু অধ্যুষিত অঞ্চলে গত চার দশক ধরে রক্ত ঝরছেই, আগুন জ্বলছেই।…

মুজিবীয় উক্তিটি একই সঙ্গে অস্বীকার করে ১৯৭১ এর অসাম্প্রদায়ীক- বৈষম্যহীন দেশগড়ার মুক্তিযুদ্ধের চেতনা; যে চেতনায় ভাষাগত/ধর্মীয় সংখ্যালঘু – সংখ্যাগুরু, আদিবাসী ও বাঙালি স্বাধীকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম, বাংলা নামক ভূখন্ডের সবচেয়ে গৌরব গাঁথা মুক্তিযুদ্ধটিকেই। একারণে সে সময়ই কিংবদন্তী পাহাড়ি নেতা এমএ নলারমা বাংলাদেশের খসড়া সংবিধান রচনার কালে সেখান থেকে আদিবাসী/উপজাতিদের বাদ দিয়ে শুধু “বাঙালি” জাতীয়তাবাদী ঝান্ডা ওড়ানোর প্রতিবাদ করেন। [গেরিলা নেতা এমএন লারমা  লেখা থেকে কিছু প্রাসঙ্গিক অংশ তুলে দিলে বিষয়টি বরং আরো খানিকটা পরিস্কার হয়:

বাংলাদেশে ১৯৭২ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবের কাছে ‘পাহাড়ে আঞ্চলিক স্বায়ত্ত্বশাসনের’ চার দফা দাবি তুলে ধরেন। সে সময় শেখ মুজিব ঘৃণাভরে এই দাবি উপেক্ষা করেন। একই বছর ৩১ অক্টোবর বাংলাদেশের সংবিধানে পার্বত্য চট্টগ্রামের ভাষাগত সংখ্যালঘু পাহাড়িদের ‘বাঙালি’ বাঙালি হিসেবে আখ্যায়িত করার প্রতিবাদে তিনি গণপরিষদ অধিবেশন বর্জন করেন। এ সময় এমএন লারমা তার ভাষণে বলেছিলেন:

বাংলাদেশের কোটি কোটি জনগণের সঙ্গে আমরা জড়িত। সবদিক দিয়েই আমরা একসঙ্গে বাস করছি। কিন্তু আমি একজন চাকমা। আমার বাপ, দাদা, চৌদ্দ পুরুষ, কেউ বলেন নাই, আমি বাঙালি!…

বাংলাদেশ নামক বাংলা ভাষাভাষীর রাষ্ট্রর জন্মলগ্নেই এমএন লারমা বুঝেছিলেন, আঞ্চলিক স্বায়ত্বশাসন ছাড়া ভাষাগত সংখ্যালঘু পাহাড়ি আদিবাসীর মুক্তি নেই। তাই তিনি সেই ’৭৩ সালেই স্বতন্ত্র সাংসদ ও জনসংহতি সমিতির আহ্বায়ক হিসেবে সংসদ অধিবেশনে তুলে ধরেছিলেন পাঁচ দফা দাবি নামা। এগুলো হচ্ছে:

… ক. আমরা গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা সমেত পৃথক অঞ্চল হিসেবে পার্বত্য চট্টগ্রামকে পেতে চাই। খ. আমরা পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণের অধিকার থাকবে, এ রকম শাসন ব্যবস্থার প্রবর্তন চাই। গ. আমাদের জাতীয় অস্তিত্ব সংরক্ষিত হবে, এমন শাসন ব্যবস্থা আমরা পেতে চাই। ঘ. আমাদের জমি স্বত্ব জুম চাষের জমি ও কর্ষণ যোগ্য সমতল জমির স্বত্ব সংরক্ষিত হয়, এমন শাস ব্যবস্থা আমরা পেতে চাই। ঙ. বাংলাদেশের অন্যান্য অঞ্চল হতে এসে পার্বত্য চট্টগ্রামে এসে যেনো কেহ বসতি স্থাপন করতে না পারে, তজ্জন্য শাসনতান্ত্রিক বিধিব্যবস্থার প্রবর্তন চাই।…

এ সব দাবিনামার স্বপক্ষে এমএন লারমা সংসদের তার ভাষণে বলেছিলেন:

…আমাদের দাবি ন্যায় সঙ্গত দাবি। বছরকে বছরকে ধরে ইহা একটি অবহেলিত শাসিত অঞ্চল ছিলো। এখন আমরা পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণ পার্বত্য চট্টগ্রামকে পৃথক শাসিত অঞ্চল, অর্থাৎ আঞ্চলিক স্বায়ত্ব শাসিত অঞ্চলে বাস্তবে পেতে চাই।…

কিন্তু ইতিহাস সাক্ষী, এমএন লারমার দাবি সে সময় চরম অবজ্ঞা করে শেখ মুজিব সরকার।

 

আগেই যেমন বলা হয়েছে, মুজিবীয় [“তোরা সব বাঙালি হইয়া যা”] উক্তিটি উগ্র জাতীয়তাবাদী দর্শনটিকে ধারণ করে, যার শেকড় ফ্যাসিবাদ তথা মৌলবাদে গাঁথা [মুক্তি যুদ্ধোত্তর বাংলাদেশে মুজিবের দুঃশাসন এবং পরবর্তী শাসকগোষ্ঠিগুলো এখনো এই দর্শনটিকেই ধারণ করে]।

এরই জের ধরে অতি অবশ্যই মুক্তিযুদ্ধটিকে বাঙালি-আদিবাসীর যৌথ মুক্তি সংগ্রামকে অস্বীকার এবং ১৯৭২ এর সংবিধানে আদিবাসী/উপজাতিকে উপেক্ষা করে; পরবর্তী সবগুলো সরকার এরই যোগসূত্রে পাহাড়ে সেনা-সেটেলার সমাবেশ ঘটায়, শান্তিবাহিনী-সেনা বাহিনী দুই দশকের বেশী সময় ধরে রক্তক্ষয়ী বন্দুক যুদ্ধ অব্যহত রাখে, পাহাড়ে অসংখ্য গণহত্যা, গণধর্ষণ, জ্বালাও-পোড়াও-লুন্ঠন সংগঠিত হয়, প্রায় ৬০ হাজার পাহাড়ি শরণার্থী হিসেবে ত্রিপুরায় আশ্রয় নিতে বাধ্য হয় [দ্র. কল্পনা চাকমা : পাপ মোচনের দায় ], শান্তিচুক্তির মৌলিক শর্তসমূহ [যেমন, ভূমি সমস্যার সমাধান] বাস্তবায়িত না হওয়ায় চুক্তির পরে পার্বত্য সমস্যা আরো জটিল থেকে জটিলতর হতে থাকে, পাহাড়ি-বাঙালি অবিশ্বাসজনিত সংঘাত চলতে থাকে [প্রধানত ভূমিকে কেন্দ্র করেই, দ্র. পাহাড়ে কেন এত সহিংসতা?  ]। …

অন্যদিকে, জমিজমা-ব্যবসা-বাণিজ্য হারিয়ে এক সময়ের সমৃদ্ধশালী রাখাইনরা হতে থাকেন দেশান্তরী। [দ্র. রাখাইনরা কেন দেশ ছেড়ে যান? ] উত্তর বঙ্গে সাঁওতাল আদিবাসী পল্লীর মানুষজন দখলদারদের থাবায় নিঃস্ব থেকে নিঃস্বতর হন। শুধু দিনাজপুরেই প্রায় পাঁচ লাখ আদিবাসী সাঁওতাল বহু বছর ধরে এমনিভাবে জমিজমা হারিয়ে নিঃস্ব হতে বসেছে। সবখানেই যেন চলছে আদিবাসীদের জমি কেড়ে নেওয়ার মহোৎসব! এমনকি জমির বিরোধকে কেন্দ্র করে গত কয়েক বছরে সেখানে খুন, গণধর্ষণ ও সাঁওতাল নারীকে বিবস্ত্র করার একাধিক ঘটনাও ঘটেছে। আদিবাসী নেতারা এসব ঘটনার প্রতিকার দাবি করে বিভিন্ন সময় সভা-সমাবেশ, মানববন্ধন, ঘেরাও কর্মসূচিও পালন করেছেন। কিন্তু কোনো প্রতিকার পাননি। কেউ এসে দাঁড়ায়নি অসহায় মানুষগুলোর পক্ষে। [দ্র. দখলদারদের থাবায় আদিবাসীদের জমি ] অন্যদিকে, শ্রীমঙ্গলের খাসিয়া পাহাড়ে বন উজাড় করে চলে আদিবাসী উচ্ছেদ প্রক্রিয়া। …

বটম লাইনে: আদিবাসী-বাঙালি বিষয়ক সাম্প্রতিক সাংবিধানিক বিতর্কে শাসকগোষ্ঠির কাছে আপাত আদিবাসী সংগঠনগুলোর হার হওয়ায় এবং “এ দেশে কোনো আদিবাসী নেই, বাঙালিরাই আদিবাসী, উপজাতি/ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠির মানুষেরা বহিরাগত” — হীরকরাণী ও ফুপুমনির এমন বেসামাল সরকারি কথাবার্তায়/প্রসাশানিক আস্কারায় বাঙালিদের বিপক্ষ শক্তি হিসেবে আদিবাসীদের দাঁড় করানো হয়েছে। এ কারণে এখন আদিবাসীদের কাছে যে সামান্য সম্পদ, যেমন জমি, জলা, বন বা পাহাড় আছে, সেটুকুও কেড়ে নেওয়া হচ্ছে এবং আরো হবে।…