ঈমানদার ভাই বোনদেরকে কোরানের কোন আয়াত পড়ে তার অর্থ জিজ্ঞেস করলে তারা সাথে সাথেই বলবে আগে জানতে হবে উক্ত আয়াত কোন কনটেক্সটে নাজিল হয়েছিল। সাধারণ মানুষরা বলাবাহুল্য কনটেক্সট জানা তো দুরের কথা কোরান হাদিসই পড়ে না। কনটেক্সট বলার পরও যদি দেখা যায় আয়াতের অর্থ পরিবর্তন করা যাচ্ছে না তখন বলবে এর ভিন্ন কোন গূঢ় অর্থ আছে যা একমাত্র ইলমধারী মানুষ ছাড়া বুঝতে পারবে না। তখন যদি প্রশ্ন করা হয়- আল্লাহ তো বলেছে- আমি কোরান কে সহজ ভাবে নাজিল করেছি যাতে তোমরা বুঝতে পার। তখন উত্তর হবে – কোরানকে বুঝতে হলে আরবী জানতে হবে। এর পরে যদি বলা হয়-তাহলে তো একমাত্র আরবরাই ভাল কোরান বুঝে মুসলমান হতে পারবে, অনারবরা নয়। তখন বলবে- এটা নিয়ে আর তর্ক করতে চাই না। ইসলামে তর্ক করতে নিষেধ করা হয়েছে। ব্যস, এর পর মুখে কুলুপ। বলা বাহুল্য, ইসলাম ছাড়া অন্য কোন ধর্মের কিতাব পড়ে বুঝতে ভাষা বা কনটেক্সট কোন সমস্যা হয় না। দরকার পড়ে না কোন ইতিহাস জানার। হিন্দুদের গীতা, খৃষ্টানদের গসপেল, ইহুদিদের তৌরাত বা বৌদ্ধদের ত্রিপিটক যে ভাষায়ই অনুবাদ আকারে পাওয়া যাক না কেন তা বুঝতে ও জানতে কনটেক্সট বা ভাষা কোন সমস্যা হয় না কখনো। অন্তত: অনুবাদ ভাল হলে এ ধরনের সমস্যা একেবারেই হয় না। যেমন – গীতার কয়েকটি শ্লোক এরকম:

তস্মাৎসর্বেষু কালেষু মামনস্মর যুধ্য চ।
ময্যর্পিতমনোবুদ্ধির্মামেবৈষ্যস্যশংশয়ম্ ।। অধ্যায়-৮, শ্লোক-৭

অর্থ: সেইজন্য অর্জুন ! তুমি সর্বদা আমাকে স্মরণ কর এবং যুদ্ধ কর। আমাতে মন ও বুদ্ধি সমর্পণ করলে তুমি নি:সন্দেহে আমাকেই লাভ করবে।

অনন্যচেতা: সতং যো মাং স্মরতি নিত্যশ:।
তস্যাহং সুলভ: পার্থ নিত্যযুক্তস্য যোগিন: ।। অধ্যায়-৮, শ্লোক-১৪

অর্থ: যিনি অনন্ত চিত্তে আমাকে স্মরণ করেন , সেই নিত্য আমাতে যুক্ত যোগীর কাছে, হে পার্থ, আমি সহজলভ্য।

মামুপেত্য পূনর্জন্ম দু:খালয়মশাশ্বতম।
নাপ্নুবন্তি মহাত্মান: সংসিদ্ধিং পরমাং গতা:।। অধ্যায়-৮, শ্লোক-১৫

অর্থ: আমাকে লাভ করলে তাদের দু:খের স্থানস্বরূপ ক্ষনভঙ্গুর পূনর্জন্ম আর হয় না, বরং পরম সিদ্ধি লাভ হয় অর্থাৎ আমাকে লাভ করা যায়।

কি বলিষ্ঠ ভাবে শ্রীকৃষ্ণ তার বক্তব্য সোজাসুজি প্রদান করছে তার শিষ্য অর্জুনের কাছে। কোন প্রেক্ষাপট বা কনটেক্সটের দরকার নেই, দরকার নেই কোন ইতিহাস জানার। গীতার কোন অধ্যায়ের কোন শ্লোক পড়তে গিয়ে এধরনের কনটেক্সট জনিত সমস্যায় পড়তে হয় না, দরকার নেই ইতিহাস জানার বা সংস্কৃত ভাষা জানার। প্রতিটি শ্লোকের বক্তব্য অত্যন্ত বলিষ্ঠ ও স্বাধীন, যদিও এ থেকে মনে করার কোন কারন নেই যে এটা স্বয়ং ঈশ্বরই এটা রচনা করেছে। এর কারন হলো গীতার রচয়িতারা ছিল উচ্চ শিক্ষিত, ব্যকরণে পারদর্শী ও গভীর দার্শনিক দৃষ্টি ভঙ্গি সম্পন্ন। আগ্রহী পাঠকরা এখান থেকে বাংলা গীতা(http://download.yatharthgeeta.com/pdf/bengali_geeta/index.htm) পড়ে দেখতে পারেন।

এবারে গসপেলের কিছু বাক্য উদ্ধৃত করা যেতে পারে,

তোমরা পৃথিবীতে আপনাদের জন্য ধন সঞ্চয় করিও না; এখানে ত কীটে ও মরিচায় ক্ষয় করে, এবং এখানে চোরে সিধ কাটিয়া চুরি করে। কিন্তু স্বর্গে আপনাদের জন্য ধন সঞ্চয় কর; সেখানে কীটে ও মরিচায় ক্ষয় করে না, সেখানে চোরেরাও সিধ কাটিয়া চুরি করে না। কারন যেখানে তোমার ধন সেখানেই তোমার মন থাকিবে। চক্ষুই শরীরের প্রদীপ; অতএব তোমার চক্ষু যদি সরল হয়, তবে তোমার সমস্ত শরীর দিপ্তীময় হইবে। কিন্তু তোমার চক্ষু যদি মন্দ হয় তবে তোমার সমস্ত শরীর অন্ধকার ময় হইবে। মথি, অধ্যায়-৬, বাক্য-১৯-২৩

যীশু আবার লোকদের কাছে কথা কহিলেন, তিনি বলিলেন, আমি জগতের জ্যোতি; যে আমার পশ্চাৎ আইসে, সে কোনমতে অন্ধকারে চলিবে না, কিন্তু জীবনের দিপ্তী পাইবে। যোহন, অধ্যায়- ৮, বাক্য: ১২

তুমি যদি খ্রীষ্ট হও তবে আমাদেরকে স্পষ্ট করে বল। যীশু উত্তর করিলেন, আমি তোমাদিগকে বলিয়াছি আর তোমরা বিশ্বাস কর না, আমি যে সমস্ত কার্য্য পিতার নামে করিয়াছি সে সকল আমার পক্ষে সাক্ষ্য দিতেছে। কিন্তু তোমরা বিশ্বাস কর না কারন তোমরা আমার মেষদের অন্তর্গত নও। আমার মেষরা আমার রব শুনে আর আমি তাহাদিগকে জানি এবং তাহারা আমার পশ্চাদগমন করে; আর আমি তাহাদিগকে অনন্ত জীবন দান করি। তাহারা কখনই বিনষ্ট হইবে না এবং কেহই তাহাদিগকে আমার হস্ত হইতে কাড়িয়া লইতে পারিবে না। যোহন, অধ্যায়-১০, বাক্য:২৫-২৮

কি সুন্দর ভাবে যীশু উপদেশ দিচ্ছেন কোন প্রেক্ষাপট দরকার পড়ছে না , বোঝার জন্য দরকার নেই কোন ইতিহাস জানার। অথবা দরকার নেই যীশুর আরামাইক ভাষা জানার। এমন কি তার রূপক কথাগুলো বুঝতেও কোন সমস্যা নেই। যে কেউ গসপেল পড়লেই সেটা বুঝতে পারার কথা, এখানে আছে বাংলা গসপেল(http://www.asram.org/texts/bengalibible.html)। এভাবেই গীতা বা বাইবেল/গসপেলের কোন উপদেশ বা আদেশ নির্দেশ জানতে প্রেক্ষাপট জানার দরকার নেই যে কেউ উক্ত লিংক থেকে সেগুলো ডাউনলোড করে পড়ে দেখতে পারেন। এর কারন হলো- তাদের রচয়িতা হলো তৎকালের উচ্চ শিক্ষিত লোক, তারা বুঝত সৃষ্টিকর্তার বিধান বা আইন হবে শাশ্বত , সার্বজনীন, তাই সেসব কোন ইতিহাস বা প্রেক্ষাপটের উপর নির্ভর করে না, বুঝতেও সেসবের দরকার পড়ে না, আর সেটা বুঝেই তারা তাদের কিতাবগুলোর বাণীকে এভাবে রচনা করেছে। ব্যতিক্রম হলো কোরান। এর কারন হলো- মোহাম্মদ ছিলেন অশিক্ষিত, তার ফলে তিনি আল্লাহর নামে এখন যেটা বলতেন , কিছুকাল পরে অন্য কথা বলতেন, যে কারনে কোরানের আয়াত বুঝতে লাগে প্রেক্ষাপট জানার। তিনি আল্লাহর স্বরূপ সম্পর্কে সম্যক অবগত ছিলেন না , তার ধারনা ছিল না যে আল্লাহ যদি সর্বশক্তিমান, সর্বজ্ঞানী কেউ হন তার বানী সমূহ সময়ের প্রেক্ষিতে পাল্টে যায় না, বরং তার বানী হবে শাশ্বত, সকল সময়ের জন্য প্রযোজ্য। কিন্তু দেখা যায়, মোহাম্মদের আল্লাহ খুব অস্থিরমতি, চঞ্চলমতি স্বভাবের একজন মানুষের মত- এখন একটা কথা বলে তো পরক্ষনে অন্য কথা বলে। আল্লাহর চরিত্র এরকম হওয়া তখনই সম্ভব যদি কেউ আল্লাহর নামে প্রক্সি দিতে থাকে, যেটা দিয়েছেন মোহাম্মদ নিজে।

যাহোক, মহা সমস্যা হলো তথাকথিত শ্রেষ্ট নবী মোহাম্মদের কথা বার্তা বা তাঁর কোরান বুঝতে আমাদের দরকার প্রেক্ষাপট জানার , ইতিহাস জানার, অধিকন্তু আরবী ভাষা জানার, না হলে তার অর্থ পরিস্কার বোঝা যাচ্ছে না, যদিও কোরানের আল্লাহ দাবী করছে-

আমি আপনার প্রতি গ্রন্থ নাযিল করেছি যেটি এমন যে তা প্রত্যেক বস্তুর সুস্পষ্ট বর্ণনা, হেদায়েত, রহমত এবং মুসলমানদের জন্যে সুসংবাদ। সূরা নাহল, ১৬:৮৯

আমি কোরআনকে সহজ করে দিয়েছি বোঝার জন্যে। অতএব, কোন চিন্তাশীল আছে কি? সূরা কামার, ৫৪: ১৭
আমি কোরআনকে বোঝার জন্যে সহজ করে দিয়েছি। অতএব, কোন চিন্তাশীল আছে কি? সূরা কামার, ৫৪: ২২
আমি কোরআনকে বোঝার জন্যে সহজ করে দিয়েছি। অতএব, কোন চিন্তাশীল আছে কি? সূরা কামার, ৫৪: ৩২
আমি কোরআনকে বোঝার জন্যে সহজ করে দিয়েছি। অতএব, কোন চিন্তাশীল আছে কি? সূরা কামার, ৫৪: ৪০

বলা বাহুল্য, উক্ত আয়াত সঠিকভাবে অনুবাদ করা হয় নি বলে যে কোন বান্দাই দাবী করে বসতে পারে কারন বিষয়টা কোরান বোঝার বিষয়ে সাংঘর্ষিক। সেকারনে প্রখ্যাত অনুবাদক ইউসুফ আলীর অনুবাদও দেয়া হলো-

Yusuf Ali: And We have indeed made the Qur’an easy to understand and remember: then is there any that will receive admonition? সূরা কামার, ৫৪:১৭,২২,৩২,৪০

অথচ মোহাম্মদ বা তার সাগরেদরা কিন্তু কেউ সেই কালের ইতিহাস, প্রেক্ষাপট লিখে রেখে যায় নি। বরং তারা তাদের আগের কালের সব ইতিহাস ও সংস্কৃতিকে সমূলে ধ্বংস করে দিয়ে গেছে। যে ইতিহাস ও হাদিস আমরা আজকে পাই তা মোহাম্মদ মারা যাওয়ার ১৫০ থেকে ২০০ পর লিখিত ও সংকলিত। তাহলে কোরান পড়ে বোঝার উপায় টা কি ? কোরান পড়ে বুঝতে গিয়ে হাদিস বা তাফসিরের সাহায্য নিলে যদি কোন স্ববিরোধী বা উদ্ভট তথ্য বেরিয়ে আসে সাথে সাথে বর্তমানে কিছু আল্লাহর বান্দা আছে চিৎকার করে জানান দেয় সেগুলো নাকি সহি হাদিস না। তাদের যুক্তি মোহাম্মদ মারা যাওয়ার দু’শ বছর পর যে হাদিস রচিত হয়েছে তার সত্যতার কোন গ্যারান্টি নেই। যদি সে বক্তব্য সত্য হয় তাহলে কোরানের আয়াতের প্রেক্ষাপট বোঝার রাস্তাটা কি ? সে ব্যপারে তারা একেবারে চুপ। অথচ ইসলামের পন্ডিতবর্গ একমত হয়ে রায় দিয়েছে সহি সিত্তা হলো – বুখারী, মুসলিম, ইবনে মাজা, আবু দাউদ, তিরমিজি ও নাসাই। এদের মধ্যে বুখারী ও মুসলিমের স্থান সর্বোচ্চ। এসব থেকেও যদি কোন উদাহরণ দেয়া হয় তাহলেও বলবে- সেটা সহি নয় বা সঠিকভাবে অনুবাদ করা হয় নি। যেন কোনটা সহি আর কোনটা সহি না তা বিচারের দায়িত্ব তার ও প্রখ্যাত অনুবাদকারীদের চেয়ে বেশী আরবী সে বোঝে। অত:পর যখন তাদেরকে জিজ্ঞেস করা হয়- কোরান কিভাবে কিতাব আকারে পাওয়া গেল, মোহাম্মদ তো আর তার আয়াতগুলোকে সংকলন করে কিতাব বানিয়ে যান নি? তখন তারা একেবারে নিশ্চুপ। মিন মিন করে বলতে থাকে তখন বহু সংখ্যক কোরানে হাফিজ ছিল যাদের পুরো কোরান মুখস্থ ছিল, যদিও বাস্তব কারনে সেটা একেবারেই অসম্ভব কারন তখন পূর্ণ কোন কিতাব ছিল না যা দৈনিক পাঠ করে মুখস্ত করা যেত। এসব প্রশ্নের কোন সদুত্তর তাদের কাছ থেকে পাওয়া যায় না।

যাহোক এবার কোরানের কিছু আয়াতের শানে নুযুল বা প্রেক্ষাপট বা কনটেক্সট সহ আলোচনা করা হবে। দেখা যাক তাতে আয়াতের প্রকৃত কি অর্থ বেরিয়ে আসে। প্রথমেই নিচের আয়াতগুলো নির্বাচন করা যাক-

হে ঈমানদারগণ! মুশরিকরা তো অপবিত্র। সুতরাং এ বছরের পর তারা যেন মসজিদুল-হারামের নিকট না আসে। আর যদি তোমরা দারিদ্রেøর আশংকা কর, তবে আল্লাহ চাইলে নিজ করুনায় ভবিষ্যতে তোমাদের অভাবমুক্ত করে দেবেন। নিঃসন্দেহে আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।৯:২৮

তোমরা যুদ্ধ কর আহলে-কিতাবের ঐ লোকদের সাথে, যারা আল্লাহ ও রোজ হাশরে ঈমান রাখে না, আল্লাহ ও তাঁর রসূল যা হারাম করে দিয়েছেন তা হারাম করে না এবং গ্রহণ করে না সত্য ধর্ম, যতক্ষণ না করজোড়ে তারা জিযিয়া প্রদান করে।৯:২৯

উক্ত দুটি আয়াতের প্রেক্ষাপট বিবেচনায় ইবনে কাথিরের বর্ণনাটা একটু দেখা যাক। –

হাসান বলেন যে , যে ব্যক্তি মুশরিকদের সাথে মুসাফাহা করবে সে যেন তার হাতটি ধুয়ে নেয়, কারন ২৮ নং আয়াত বলছে মুশরিকরা হলো অপবিত্র। এ হুকুম হলে মুসলমানদের কেউ কেউ বলল- তাহলে আমাদের বাজার মন্দা হয়ে যাবে, ব্যবসায়ে অনেক ক্ষতি হয়ে যাবে, আমাদের জাকজমক নষ্ট হয়ে যাবে।( ইবনে কাথিরের তাফসির, খন্ড-৮ম,৯ম,১০ম,১১শ পৃষ্ঠা নং-৬৭৪)

উক্ত ২৮ নং আয়াত থেকে সেটা পরিস্কার বোঝাও যায়। সেখানে বলা হচ্ছে যে- সে বছরের পর থেকে কোন মুশরিক আর কাবা ঘরের আশ পাশে আসতে পারবে না। বলা বাহুল্য, ইসলাম পূর্ব যুগেও কিন্তু কাবা ঘরের উদ্দেশ্যে মানুষ হজ্জ করতে আসত, সেখানে মক্কার আশ পাশের বহু মুশরিক জমায়েত হতো, ফলে সেখানে বেশ ভাল ব্যবসা বানিজ্য হতো। এটা কোন ইসলামিক হজ্জ ছিল না, কাবা ঘরটা তো ছিল আসলে একটা মন্দির যার মধ্যে ৩৬০ টা দেব-দেবতা ছিল যাদেরকে ইসলামি পরিভাষায় বলা হয় পুতুল। বছরের নির্দিষ্ট কয়টা দিনে কাবা ঘরের সামনে বিভিন্ন যায়গা থেকে মানুষ এসে জমায়েত হতো, মেলা বসত, সেসব মেলায় পানি সরবরাহ, খাদ্য সরবরাহ, নানাবিধ দ্রব্য কেনার ব্যবসা বানিজ্য থেকে মক্কাবাসীদের ভাল লাভ হতো ও তারা স্বচ্ছলে দিন কাটাত। এখন আল্লাহ বলছে অত:পর সেখানে যেন কোন আর মুশরিক আসতে না পারে। এর ফলে সঙ্গত কারনেই ব্যবসা বানিজ্যে ভাটা পড়বে। একারনেই ২৮ নং আয়াতে বলা হচ্ছে- আর যদি তোমরা দারিদ্রেøর আশংকা কর, তবে আল্লাহ চাইলে নিজ করুনায় ভবিষ্যতে তোমাদের অভাবমুক্ত করে দেবেন– তো এবার দেখা যাক কিভাবে আল্লাহ দারিদ্র মুক্ত করবেন। সেটাও পরিস্কার ২৯ নং আয়াতে। বলা হচ্ছে- আহলে কিতাবের লোক তথা ইহুদি ও খৃষ্টানদের কাছ থেকে জিজিয়া কর আদায় করে দারিদ্র দুর করা হবে। পরম করুনাময় আল্লাহর কি সুন্দর সমাধান। আহা আল্লাহ বড়ই মেহেরবান! অন্যের কাছ থেকে সম্পদ জোর করে আদায় করে সে মুসলমানদেরকে ধনবান করতে চায়। এ সম্পর্কে ইবনে কাথিরের তাফসির দেখা যাক-

তাদের কথার জবাবে আল্লাহ বলেন- “তোমরা এ ব্যপারে কোনই ভয় করো না , আল্লাহ তোমাদের আরও বহু পন্থায় দান করবেন। আহলে কিতাবের থেকে তোমাদের জন্য জিজিয়া কর আদায় করে দেবেন ও তোমাদেরকে সম্পদশালী করবেন। তোমাদের জন্য কোনটা বেশী কল্যাণকর তা আল্লাহই ভাল জানেন। তার নির্দেশ ও নিষেধাজ্ঞা সবটাই নিপুণতাপূণ। এ ব্যবসা তোমাদের জন্য যতটা না লাভজনক, তার চেয়ে অনেকবেশী লাভজনক ঐ আহলে কিতাবীদের কাছ থেকে জিজিয়া আদায় করা যারা আল্লাহ ও তার রাসুলকে অস্বীকারকারী”। প্রকৃতপক্ষে তারা যখন মোহাম্মদের ওপর ঈমান আনল না তখন তারা তাদের নবীদের ওপরও ঈমান আনল না। তারা নিজেদের প্রবৃত্তি ও বড়দের অন্ধ বিশ্বাসের ওপর পড়ে রয়েছে। যদি তারা নিজেদের নবী ও তাদের শরিয়তের ওপর বিশ্বাস রাখত তাহলে তারা আমাদের নবীর ওপরই বিশ্বাস আনত। তার শুভাগমনের খবর তো সব নবী দিয়ে গেছেন আর তার ওপর ঈমান আনার কথাও বলে গেছেন। এতদ্সত্ত্বেও তারা শ্রেষ্ট রসূলকে অস্বীকার করছে। সুতরাং পূর্ববর্তী নবীদের শরিয়তের সাথেও তাদের কোন সম্পর্ক নেই। এ কারনেই তাদের মুখে ঐসব নবীদের কথা স্বীকার করার কোন মানে নাই। কেননা মোহাম্মদই হলেন সব নবীর নেতা, সর্বশ্রেষ্ট নবী ও রাসুলদের পূর্ণকারী। অথচ তারা তাকেই অস্বীকার করছে , সুতরাং তাদের বিরুদ্ধেও জিহাদ করতে হবে। (ইবনে কাথিরের তাফসির, খন্ড-৮ম,৯ম,১০ম,১১শ পৃষ্ঠা- ৬৭৪)

তাহলে দেখা যাচ্ছে, কোরানের আল্লাহ শুধুমাত্র মোহাম্মদকে বিশ্বাস না করার কারনে অমুসলিমদের বিরুদ্ধে জেহাদের বিধি জারী করছে। এখানে নেই অন্য কোন কারন, যেমন চুক্তি ভঙ্গ বা অন্য কিছু, বা কোন ইহুদি ও খৃষ্টান মুসলমানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধও ঘোষণা করে নি। তাদের একমাত্র অপরাধ- ইহুদি ও খৃষ্টানরা মোহাম্মদ কে শেষ নবী স্বীকার করছে না , শুধুমাত্র একারনেই তাদের বিরুদ্ধে জিহাদ বা যুদ্ধ ঘোষণা করতে হবে, তাদেরকে আতর্কিতে আক্রমন করে, খুন জখম হত্যা করে ত্রাস সৃষ্টি করতে হবে ও তাদেরকে বাধ্য করতে হবে ইসলাম গ্রহণে, যদি তারা অস্বীকার করে তাহলে তাদের কাছ থেকে জিজিয়া কর আদায় করতে হবে আর সেটা তারা প্রদান করবে করজোড়ে আর এ জিজিয়া করের সম্পদ মুসলমানদেরকে স্বচ্ছল করে তুলবে। বিষয়টিকে আরও বর্ধিত করা যেতে পারে। যেহেতু মোহাম্মদের কালে আরবে ছিল পৌত্তলিক, ইহুদি ও খৃষ্টান তাই কোরানে বার বার তাদেরই কথা বলা হয়েছে। কিন্তু সেই তখনও দুনিয়াতে ভিন্ন ভিন্ন দেশে ভিন্ন ভিন্ন ধর্ম বিদ্যমান ছিল-যেমন- ভারতে হিন্দু ও বৌদ্ধ। আশ্চর্যজনকভাবে কোরানের আল্লাহর এসব ধর্মের বিষয়ে কোন সুনির্দিষ্ট বক্তব্য পাওয়া যায় না যদিও মোহাম্মদ এক পর্যায়ে দাবী করছেন যে তিনি সারা দুনিয়ার জন্য আবির্ভূত হয়েছেন। তাহলে তার কোরানে হিন্দু ও বৌদ্ধদের ব্যপারে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু উল্লেখ নেই কেন ? তবে সে যাহোক, তর্কের খাতিরে ধরে নেয়া যেতে পারে যে পৌত্তলিক বলতে হিন্দু ও বৌদ্ধ উভয়কেও বুঝায়। তার অর্থ – অত:পর উক্ত ২৯ নং আয়াত অনুযায়ী হিন্দু ও বৌদ্ধ অধ্যুষিত অঞ্চলে কোন রকম ঘোষণা ছাড়াই জিহাদের ডাক দিয়ে আক্রমন করতে পারে মুসলমানরা আর তাদেরকে মেরে কেটে সাফ করে অত:পর তাদের নারীগুলোকে গণিমতের মাল হিসাবে ভাগ করে পুরুষগুলোকে দাস হিসাবে বিক্রি করতে পারে কারন , গণিমতের মাল ভাগাভাগি করা বা দাস প্রথা রদ করার কোন বিধান কিন্তু কোরানে নেই। অন্য কথায় বলা যায়, আল্লাহ এ সম্পর্কিত বিধান জারি করতে বোধ হয় ভুলে গেছিল বা সময় পায় নি। আর যদি তারা অশেষ দয়া বশত: তা না করে তাহলে তাদেরকে বাধ্য করতে পারে করজোড়ে জিজিয়া কর প্রদান করতে।

আর বলা বাহুল্য এসব জিহাদী আক্রমন কিন্তু আত্মরক্ষামূলক যুদ্ধ। কারন ইসলামে আত্মরক্ষামূলক যুদ্ধের সংজ্ঞা ভিন্ন। এখানে এর সংজ্ঞা হলো- লুট-পাট , গণিমতের মাল বা জিজিয়া কর আদায়ের উদ্দেশ্যে বিনা নোটিশে যে কোন জনপদ বা রাজ্যকে আক্রমন করাকেই আত্মরক্ষা মূলক যুদ্ধ বলে

ইসলামী পন্ডিতরা দাবী করে, প্রতিটি মুসলমানদেরকে যাকাত দিতে হয়, যা বায়তুল মালে জমা হয়, ইসলামী খলিফা তা থেকে তার খিলাফত তথা রাজ্য বা রাষ্ট্র চালাবে। সে ক্ষেত্রে অমুসলিমদের কাছ থেকেও তো এ ধরনের একটা কর আদায় দরকার যেহেতু তারা রাজ্যে সুবিধা সুযোগ ভোগ করে। যারা কোরান হাদিস পড়ে নি , জানে না কি লেখা, জানে না মোহাম্মদের সমকালীন ইতিহাস সম্পর্কে তারা কিন্তু এ ব্যখ্যাতে দারুন খুশী হয়ে যায়। কিন্তু জিজিয়া কর মোটেও যাকাতের মত একটা সাধারণ কর নয়। তা কিন্তু উক্ত ২৯ নং আয়াতের ভাষা থেকেই বোঝা যায় যা হলো – যতক্ষণ না করজোড়ে তারা জিযিয়া প্রদান করে। এ ব্যপারে ইবনে কাথিরের তাফসির কি বলে দেখা যাক-

যে পর্যন্ত না তার অধীনতা স্বীকার করে প্রজা রূপে জিজিয়া কর দিতে স্বীকৃত না হয়, তাদেরকে ছেড়ে দিও না। সুতরাং মুসলিমদের ওপর জিম্মীদের মর্যাদা দেয়া বৈধ নয়। সহী মুসলিমে আবু হোরায়রা হতে বর্ণিত আছে যে – নবী বলেছেন, তোমরা ইহুদি ও নাসারা(খৃষ্টান)দেরকে আগে সালাম দিবে না এবং যদি পথে দেখা হয়ে যায় , তাদেরকে সংকীর্ণ পথে যেতে বাধ্য কর। ( ইবনে কাথিরের তাফসির , খন্ড-৮ম,৯ম,১০ম,১১শ পৃষ্ঠা নং- ৬৭৫)

তার অর্থ জিজিয়া কর প্রদান করার পর তাদেরকে জিম্মী হিসাবে গণ্য করা হবে। এ জিম্মিরা হলো অতি নীচু শ্রেনীর মানুষ যাদের কোন রকম স্বাধীনতা বা মর্যাদা নেই, আর তারা বেঁচে থাকবে সম্পূর্নতই মুসলমানদের করুণার ওপর ভিত্তি করে। এই জিম্মী জিনিসটা কি জিনিস তার বর্ণনা আছে ইবনে কাথিরের ২৯ ও ৩০ নং আয়াতের তাফসিরে:

আব্দুর রহমান ইবনে গানাম আসআরী বলেন , আমি নিজের হাতে চুক্তি লিখে খলিফা ওমর ( রা:) এর নিকটে পাঠিয়েছিলাম যে সিরিয়াবাসী অমুক অমুক শহরে বসবাসকারী খৃষ্টানদের পক্ষ হতে আল্লাহর বান্দা আমিরুল মুমেনিন হযরত ওমরের নিকট। চুক্তি পত্রের বিষয় হলো এরকম- যখন আপনারা আমাদের ওপরে এসে পড়লেন, আমরা আপনাদের নিকট হতে আমাদের জান মাল সন্তান সন্ততির জন্য নিরাপত্তার প্রার্থনা জানাচ্ছি। আমরা এ নিরাপত্তা চাচ্ছি এ শর্তাবলীর পরিপ্রেক্ষিতে যে, আমরা এ শহর গুলোতে ও আশে পাশের শহরগুলোতে কোন নতুন মন্দির গির্জা বা খানকা নির্মান করব না। এসব ঘরে যদি কোন মুসলিম মুসাফির অবস্থানের ইচ্ছা করেন তবে আমরা তাদেরকে বাধা দেব না। তারা রাত্রে অবস্থান করুক বা দিনে অবস্থান করুক। আমরা পথিক ও মুসাফিরদের জন্য ওগুলোর দরজা সব সময় খোলা রাখব। যে সব মুসলিম আগমন করবেন তাদেরকে আমরা তিন দিন পর্যন্ত মেহমানদারি করব। আমরা ঐ সব ঘরে বা বাসভূমি প্রভৃতিতে কোন গুপ্তচর লুকিয়ে রাখব না। মুসলিমদের সাথে কোন প্রতারণা করব না। নিজেদের সন্তানদের কুরান শিক্ষা দেব না। নিজেরা শিরক করব না বা অন্য কাউকে শিরক করতে দেব না। আমাদের মধ্যে কেউ যদি ইসলাম ধর্ম গ্রহন করতে চায় আমরা তাকে বাধা দেব না। মুসলিমদেরকে আমরা সম্মান করব। যদি তারা আমাদের কাছে বসার ইচ্ছা করেন তবে আমরা তাদেরকে জায়গা ছেড়ে দেব। কোন কিছুতেই আমরা নিজেদেরকে মুসলমানদের সমান মনে করব না। পোশাক পরিচ্ছদেও না, তাদের ওপর কোন কথা বলব না। আমরা তাদের পিতৃপদবী যুক্ত নামে ডাকব না। জিন বিশিষ্ট ঘোড়ার পিঠে সওয়ার হবো না। আমরা তরবারি লটকাবো না ও আমাদের সাথে তরবারি রাখব না। অঙ্গুরির ওপর আরবী নকশা অংকন করব না ও মাথার অগ্রভাগের চুল কাটব না। আমরা যেখানেই থাকি না কেন পৈতা অবশ্যই ফেলে রাখব।আমাদের গির্জার ওপর হতে ক্রুশ রাখব না, আমাদের ধর্মীয় গ্রন্থগুলো মুসলিমদের যাতায়াত স্থানে ও বাজারে প্রকাশিত হতে দেব না, গির্জায় উচ্চৈস্বরে শাখ বাজাবো না , মুসলিমদের উপস্থিতিতে আমরা আমাদের ধর্মীয় পুস্তকগুলো উচ্চৈস্বরে পাঠ করব না, নিজেদের রীতি নীতি ও চাল চলন প্রকাশ করব না। নিজেদের মৃতদের জন্য হায় হায় করব না , মুসলিমদের চলার পথে মৃতের সাথে আগুন নিয়ে যাব না। যেসব গোলাম মুসলিমদের ভাগে পড়বে তা আমরা গ্রহন করব না। আমরা অবশ্যই মুসলিমদের শুভাকাংখী হয়ে থাকব ও মুসলমানদের ঘরে উকি মারব না। যখন এ চুক্তি ওমরের হাতে দেয়া হলো তখন তিনি তাতে আরও একটি শর্ত বাড়িয়ে দিলেন তা হলো- আমরা কখনো কোন মুসলিমকে প্রহার করব না। অত:পর তারা বলল- আমরা এসব শর্ত মেনে নিলাম ( না মেনে তো উপায় নেই)। আমাদের ধর্মাবলম্বী সকল লোক এসব শর্তের মাধ্যমে নিরাপত্তা লাভ করল। এগুলোর কোন একটি যদি আমরা ভঙ্গ করি তাহলে আমাদেরকে নিরাপত্তা দানের ব্যপারে আপনাদের কোন দায়িত্ব থাকবে না এবং আপনি আপনাদের শত্রুদের ব্যপারে যে আচরণ করেন আমাদের সাথেও সেই আচরণের উপযুক্ত হয়ে যাব। ( ইবনে কাথিরের তাফসির , খন্ড-৮ম,৯ম,১০ম,১১শ পৃষ্ঠা নং-৬৭৫-৬৭৬)

উপরের তাফসিরে জিম্মীদের উপর কি শর্তসমূহ চাপান হচ্ছে তা পড়ার পর নিশ্চয়ই আর বিশ্লেষণের কিছু নেই। বলাবাহুল্য, জিজিয়া কর প্রদানের পরেই এ সমস্ত শর্ত। জিজিয়া কর প্রদানের পরও তাদেরকে যত রকম ভাবে পারা যায় অপমান ও অমর্যাদা করার সকল শর্ত উক্ত বর্ণনাতে। এ থেকে যে কেউ বুঝতে পারে মুসলিমদের অধীনে জিম্মী কি জিনিস আর এটা বাস্তবায়ন করছে কে ? মোহাম্মদের সবচাইতে বিশ্বস্থ ও নির্ভরযোগ্য সাগরেদ আমিরুল মুমিনীন হযরত ওমর যে নাকি জীবিত অবস্থায় বেহেস্তে যাওয়ার খবর পেয়েছে এবং যার অনুরোধে বেশ কিছু আয়াত আল্লাহ নাজিল করেছে। সুতরাং বিষয়টাকে হালকা করে দেখার কোন সুযোগ এখানে নেই। এটা বলে পার পাওয়ার কোন উপায় নেই যে এসব ছিল ওমরের একান্ত ব্যক্তিগত ব্যপার। ওমর যা যা করেছে , তা করেছে কোরান ও সূন্নাহ এর ভিত্তিতে, নিজ থেকে বানিয়ে কিছু করে নি। এই একই ওমর একটা হাদিসে বলছে-

জুরাইয়া বিন কাদামা আত তামিমি বর্ণিত, হে বিশ্বাসীদের নেতা! আমাদেরকে উপদেশ দান করুন। তখন ওমর বললেন-“ জিম্মীদের সাথে আমাদের ব্যবস্থা পূর্ণ কর কারন এ ব্যবস্থা তোমাদের রসুলের পক্ষ থেকে আর এ ব্যবস্থা হলো তোমাদের ওপর নির্ভরশীলদের জন্য জীবিকার উপায় (জিম্মীদের কাছ থেকে জিজিয়া আদায়) । সহি বুখারী, ভলুম-৪, বই-৫৩, হাদিস-৩৮৮

তার মানে জিজিয়া কর হলো মুসলমানদের আয় উপার্জনের ব্যবস্থা যা তাদের জীবিকা, এটা মুসলমানদের প্রদত্ত যাকাতের মত কোন ট্যাক্স নয়। এ জিজিয়া করের অর্থ বা সম্পদ পাওয়ার জন্য মুসলমানরা কি পরিমান লালায়িত থাকত তার পরিচয় মিলবে নিচের হাদিসে-

আমর বিন আওফ আনসারি বর্ণিত-আল্লাহর রসুল আবু উবাইদা বিন আল জাহেরাকে বাহরাইনে পাঠালেন জিজিয়া সংগ্রহ করার উদ্দেশ্যে, আর রসুল বাহরাইনের লোকদের সাথে একটা চুক্তি সম্পাদন করেছিলেন ও আল আলা বিন আল হাদরামি কে তাদের শাসক নিয়োগ করেছিলেন। যখন ফজরের নামাজের সময় আনসার লোকজন নবীর সাথে ছিল ঠিক সে সময়ে আবু উবাইদা বাহরাইন থেকে জিজিয়া কর নিয়ে সেখানে ফিরে আসল। নবীর সাথে নামাজ আদায় করার পরেই তারা সবাই নবীর নিকট জড় হলো , নবী তাদের দিকে হাসি মুখে তাকিয়ে বললেন – আমি অনুভব করছি উবাইদা কিছু এনেছে আর তার গন্ধ তোমরা পেয়েছ। সবাই সমস্বরে বলে উঠল- হ্যা, রাসুলুল্লাহ। তিনি বললেন- আনন্দ কর আর আশা কর যা তোমাদেরকে সন্তুষ্ট করবে। আল্লাহর শপথ, আমি তোমাদের দারিদ্র নিয়ে ভীত নই,কিন্তু আমি ভীত এই ভেবে এক সময় জাক জমক তোমাদেরকে আকৃষ্ট করবে যেমন করেছিল পূর্ববর্তী জাতিগুলোকে, এ নিয়ে তোমরা একে অপরের সাথে প্রতিযোগীতা করবে যেমন তারা করত ও নিজেদেরকে ধ্বংস করবে যেমন তারা নিজেদেরকে করেছিল। বুখারী, ভলুম-৪, বই-৫৩, হাদিস-৩৮৫

মহানবী নিজেই তার অনুসারীদেরকে গণিমতের মাল ও জিজিয়া করের মাধ্যমে জীবিকা অর্জনের ব্যবস্থা করে আবার নিজেই সে বিষয়ে সতর্ক করছেন। কি আচানক কারবার! কোন ওস্তাদ যদি তার অনুসারীদেরকে অন্যের কাছ থেকে জোর করে বা লুঠ করে আনা মালামালের ওপর নির্ভর করে বাঁচার রাস্তা বাতলায়, তখন তারা কি আর কাজ কর্ম করে জীবন কাটাতে চাইবে ? তারা তো তখন অন্যের ধন সম্পদ লুট পাট করাকেই মূল পেশা হিসাবে বেছে নেবে ও এভাবে ধন উপার্জন সহজ বিধায় যে যেভাবে পারে সেভাবেই আরও বেশী ধন উপার্জনের ধান্ধাতেই ব্যস্ত থাকবে সারক্ষন। এটাই তো মানব চরিত্র। কোন ওস্তাদ যদি তার সাগরেদদেরকে চুরি ,ডাকাতি , লুট পাটের নেশা ধরিয়ে দিয়ে পরে এসব নেশার খারাপ দিকগুলো চিহ্নিত করে ও এ বিষয়ে সতর্ক করে , এ ধরনের ওস্তাদকে কি বলা যায় ? কিন্তু কেন এ ধরনের বাজে নেশা ধরানোর চেষ্টা করল ওস্তাদ? বলাবাহুল্য, অতি সহজেই নিজের দলকে ভারী করার জন্য, কারন দুনিয়াতে এটাই সবচাইতে স্বল্প আয়াসে উপার্জনের উপায়, আর কোন দলকে যদি একাজে লিপ্ত করা যায়, তা দেখে বাকি লোকগুলোও এদের দলে ভিড়বে স্বল্প আয়াসে আরাম আয়েশের জীবন যাপনের জন্য। ঠিক একারনেই দেখা যায়- মোহাম্মদ মদিনায় গিয়ে যখন তার ঠেঙ্গাড়ে ও ডাকাত দল গঠন করে মদিনার পাশ দিয়ে যাওয়া মক্কার বানিজ্য কাফেলা আক্রমন ও লুট করে সেসব মালামালকে গণিমতের মাল হিসাবে ভাগাভাগি করে নিচ্ছিলেন, কিছুটা দ্বিধা দ্বন্দ্বের পর মদিনার লোকজনও পরে লোভে পড়ে তার দলে যোগ দেয়। এভাবে তাঁর দল যখন সংখ্যায় ভারী হলো , তখন শুরু হলো মদিনার আশ পাশের গোষ্ঠি গুলোর প্রতি আক্রমন ও তাদের সম্পদ লুট পাট। বলাবাহুল্য, মক্কার লোকজন এসব কাজে ছিল আগে থেকেই পটু। ঠিক সেকারনেই দেখা যায় একটা পর্যায়ে যখন মোহাম্মদের দলের এ ধরনের লুট পাটের সাফল্য হয়ে উঠেছিল আকাশ চুম্বি তখন মক্কা থেকে কিছু কিছু লোকজন গণিমতের মালের লোভে ও স্বল্প আয়াশে জীবন যাপনের আশায় পালিয়ে গিয়ে মদিনায় চলে যেত আর মোহাম্মদের দলে যোগ দিত। মদিনার পাশ দিয়ে চলে যাওয়া পথে বানিজ্য করতে না পেরে মক্কার লোকজন ধীরে ধীরে শক্তিহীন হয়ে পড়ছিল, তাতে কিছু কিছু লোকজনের জীবন ধারন বেশ কঠিন হয়ে পড়ছিল, তাই তাদের মধ্যে কেউ কেউ মক্কা থেকে পালিয়ে চলে যাচ্ছিল মদিনায় ও মোহাম্মদের দলে যোগ দিচ্ছিল, ও বলা বাহুল্য তারা একাজ করছিল শুধুমাত্র লুট পাট করে জীবন ধারনের আশায়, ইসলামের মোহে আকৃষ্ট হয়ে নয়। এ ধরনের একটা উজ্জ্বল উদাহরন আছে নিচের হাদিসে-

……………………….ইসলাম গ্রহনের পূর্বে মুগিরা একটা দলের লোক ছিল। সে তাদেরকে হত্যা করে তাদের মালামাল লুটে নিয়ে মদিনায় এসে ইসলাম গ্রহন করল।মোহাম্মদ তাকে বলল- তোমার ইসলাম গ্রহন করা হলো কিন্তু তোমার মালামাল গ্রহন করা হবে না।…………………………..
………………..…..যখন নবী মদিনাতে ফিরলেন তখন কুরাইশদের একজন আবু বশির যে ইসলাম গ্রহন করে পালিয়ে মদিনায় চলে আসল। কুরাইশরা তাকে ফেরত নেয়ার জন্য দুজন লোককে মদিনায় পাঠাল ও তারা মোহাম্মদকে বলল- যে প্রতিজ্ঞা তুমি করেছ তা তুমি রক্ষা কর। নবী তখব আবু বশিরকে তাদের হাতে তুলে দিলেন। তারা তাকে নগরীর বাইরে নিয়ে গেল ও দুল-হুলাইফা নামক একটা যায়গায় বিশ্রাম করতে লাগল ও খেজুর খেতে লাগল। আবু বশির একজনকে বলল, আল্লাহর কসম, তোমার তরবারি টা ভীষণ সুন্দর। এতে লোকটি তার তরবারি খুলে ফেলল ও বলল, আল্লাহর কসম, এটা আসলেই ভীষণ সুন্দর ও আমি এটা বহুবার ব্যবহার করেছি। আবু বশির বলল- আমাকে একটু ওটা দেখতে দেবে ? যখন সে ওটা তার হাতে দিল বশির সাথে সাথে তাকে তরবারি দ্বারা আঘাত করল ও সে মারা গেল, অন্য সাথী দৌড়াতে দৌড়াতে মদিনায় গিয়ে মসজিদে আশ্রয় নিল।মোহাম্মদ তাকে দেখলেন ও বললেন- এ লোকটি ভয় পেয়েছে।যখন সে নবীর কাছে গেল তখন বলল- আমার সাথীকে খুন করা হয়েছে ও আমিও খুন হয়ে যেতে পারতাম। এসময়ে বশির এসে বলল- হে নবী আপনি আমাকে তাদের কাছে ফেরত দিয়ে আপনার প্রতিজ্ঞা পূরন করেছেন কিন্তু আল্লাহ আমাকে মুক্তি দিয়েছে। এটা শুনে নবী বলে উঠলেন- এখন তো যুদ্ধের আগুন জ্বলে উঠবে। এটা শুনে বশির বুঝতে পারল মোহাম্মদ তাকে আবার মক্কাতে ফেরত পাঠাতে চান, তাই সে সাগরপারের দিকে চলে গেল।আবু জান্দাল কুরাইশদের হাত থেকে পালিয়ে গিয়ে বশিরের সাথে যোগ দেয়।এভাবে বেশ কিছু লোক মক্কা থেকে পালিয়ে এসে বশিরের দলে যোগ দেয়।এর পর তারা কুরাইশদের সিরিয়ার দিকে বা দিক থেকে আসা বানিজ্য কাফেলার ওপর আক্রমন করে তাদেরকে হত্যা করে তাদের মালামাল লুটপাট করে নিতে থাকে। এটা দেখে মক্কাবাসীরা প্রমাদ গুনে তারা একজন দুত মোহাম্মদের কাছে পাঠায় ও প্রস্তাব দেয় যে এর পর যদি কেউ মক্কা থেকে মদিনায় মোহাম্মদের কাছে আসে তাকে আর ফেরত দিতে হবে না এবং তিনি যেন বশির ও তার দলবলকে লুট তরাজ থেকে বিরত রাখেন। বুখারী, ভলুম-৩, বই-৫০, হাদিস-৮৯১

উক্ত হাদিসে মুগীরা ও বশীর নামের লোক দুটি কেমন চরিত্রের লোক ছিল তা আশা করি ব্যখ্যা করার দরকার নেই আর কেনই বা তারা মদিনায় আগমন করেছিল তাও ব্যখ্যা করার দরকার নেই। পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে, মুগীরা ও বশীর ছিল নিম্ন শ্রেনীর লোক যার পেশাই ছিল ডাকাতি, লুটপাট। আর এ লোক দুটি ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে যে মদিনায় মোহাম্মদের কাছে এসেছিল তা কিন্তু প্রমান করে না এ হাদিস। বরং এসেছিল এ আশায় যে মোহাম্মদের দলে যোগ দিলে ডাকাতি ও লুটতরাজে তাদের সুবিধা হবে। ইসলাম গ্রহণ ছিল তাদের কাছে একটা লেবাস। ইসলাম গ্রহণ করার পরেও তাই চুরি ডাকাতি লুট তরাজ তাদের পেশা রয়ে যায়, আর মোহাম্মদ তাদেরকে তা থেকে নিবৃত্তও করছেন না, বরং তাদেরকে দলে নিয়ে আশ্রয় প্রশ্রয় দিচ্ছেন। কারন তিনি নিজেই তো তাদের নেতা আর তারও পেশা ঐ একই- চুরি ডাকাতি, লুট তরাজ আর এসব কাজের বৈধতা দেয়ার জন্য আল্লাহ তো জিব্রাইলকে সর্বদা প্রস্তুত করে রেখেছে। উক্ত হাদিসে একটা ব্যপার খুবই গুরুত্বপূর্ণ তা হলো – মোহাম্মদ মুগিরাকে বলছেন- তোমার ইসলাম গ্রহন করা হলো কিন্তু তোমার মালামাল গ্রহন করা হবে না। কেন মালামাল গ্রহণ করা হবে না ? কারন সেগুলো সে ইসলাম গ্রহনের পূর্বে লুট করেছে। অত:পর ইসলাম গ্রহনের পর থেকে সে যত ডাকাতি, লুট পাট করেছে তার সবই গ্রহণ করা হয়েছে, বৈধ বলা হয়েছে। কারন মোহাম্মদের আল্লাহ খোদ মোহাম্মদকেই তো সেটা করতে বলেছে আর তার নাম দিয়েছে গণিমতের মাল ও জিজিয়া। অর্থাৎ ইসলাম গ্রহণ করলে চুরি ডাকাতি লুট পাট খুন খারাবি সব কিছুই মাফ ও বৈধ, শুধু সেগুলো করার সময় মনে মনে বলতে হবে এগুলো করা হচ্ছে ইসলামের স্বার্থে, আল্লাহর রাস্তায়। আর ইসলামের স্বার্থ টা কিভাবে দেখাতে হবে ? উক্ত মাল থেকে কিছু যাকাত দিতে হবে , ছদকা দিতে হবে, কিছু মসজিদে দান করতে হবে, কোরবানি করতে হবে ব্যস আর কিছুর দরকার নেই। কেন মুসলিম দেশের লোকগুলো এত দুর্নীতিবাজ ও নৈতিকভাবে স্খলিত চরিত্রের অধিকারী তার মূল কিন্তু এটাই। তারা সব রকম দুর্নীতি ও খারাপ কাজ করে আল্লাহর নামে, অত:পর অর্জিত অর্থ থেকে তারা যাকাত দেয়, ছদকা দেয়, মসজিদ মাদ্রাসায় দান করে, কোরবানি দেয়, হজ্জ করে, ফকির মিশকিনদেরকে কিছু দান খয়রাতও করে- আর বলা বাহুল্য এভাবেই তাদের সব রকম অপকর্ম বৈধ হয়ে যায়। যে কারনে তারা যখন দুর্নীতি বা অপকর্ম করে অর্থ উপার্জন করে, তা তাদের কাছে দুর্নীতি বা অপকর্ম মনে হয় না।

ইসলামের পতাকাতলে আসলে মোহাম্মদ আরবদেরকে কি উপহার দিয়েছে কেন তারা এক পর্যায়ে মোহাম্মদের কথায় জিহাদী জোশে নিরীহ জনসাধারনের উপর ঝাপিয়ে পড়ত, তার কিছু নমুনা পাওয়া যেতে পারে নিচের হাদিসে-

যুবাইর বিন হাইয়া বর্ণিত-ওমর পৌত্তলিকদের সাথে যুদ্ধ করার জন্য বড় দেশগুলোতে মুসলিম বাহিনী পাঠান।…………..যখন আমরা শত্রুর দেশে পৌছলাম, পারস্য সাম্র্রাজ্যের একজন সেনাধ্যক্ষের নেতৃত্বে চল্লিশ হাজার সৈন্য তাদের মোকাবেলায় অগ্রসর হলো, তার একজন ভাষার অনুবাদক উঠে দাড়াল ও বলল- কেউ একজন আমার সাথে কথা বলুক। আল মুগিরা উত্তর দিল- তোমার যা ইচ্ছা জিজ্ঞেস কর। সে জিজ্ঞেস করল- তোমরা কারা? মুগিরা উত্তর দিল- আমরা আরব দেশের লোকজন, আমরা একটা খুব কঠিন, দুর্বিষহ ও দুর্যোগময় জীবন যাপন করতাম, শুকনা খেজুর খেয়ে আমরা ক্ষুধা নিবারন করতাম, উট ও ছাগলের লোমের তৈরী কাপড় দিয়ে বস্ত্র বানাতাম, ও গাছ ও পাথরের পুজা করতাম। এরকম অবস্থার মধ্যে যখন আমরা ছিলাম, আসমান ও জমীনের প্রভু আমাদের মধ্যে একজন নবী পাঠালেন যার পিতা মাতাকে আমরা চিনতাম। আমাদের নবী আমাদেরকে হুকুম দিয়েছেন তোমাদের সাথে ততক্ষন পর্যন্ত যুদ্ধ করতে যতক্ষন পর্যন্ত না তোমরা এক আল্লাহর উপাসনা করবে অথবা জিজিয়া কর প্রদান করবে। আমাদের নবী অবগত করেছেন যে, আমাদের প্রভু বলেছেন- যেই যুদ্ধে আমাদের মধ্যে মারা যাবে সে বেহেস্তে প্রবেশ করবে ও জাকজমক পূর্ণ জীবন যাপন করবে যা সে কখনো দেখেনি, আর যে বেঁচে থাকবে সে তোমাদের প্রভু হবে। বুখারি, ভলুম-৪, বই-৫৩, হাদিস-৩৮৬

উপরের আয়াতে দেখা যাচ্ছে- কেন মোহাম্মদের অনুসারীরা জীবন পন করে অন্যদেরকে আক্রমন করত। যারা অনেকটা আদিম জীবন যাপন করত, খেয়ে না খেয়ে দিন কাটাত, তাদেরকে যদি লুট তরাজের মালামালের স্বাদ দেয়া হয়, ভাল খাবার ও পোশাকের জোগান দেয়া যায়, তারা কি আর চুপ করে বসে থাকতে পারে? একই সাথে উক্ত হাদিস এটাও বলছে যে- মুসলমানরা সর্বদাই অমুসলিমদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে যতক্ষন না তারা ইসলাম কবুল করে বা জিজিয়া কর প্রদান করে, যা বলাবাহুল্য মোহাম্মদ ও তাঁর আল্লাহর নির্দেশ। উক্ত হাদিস হলো সূরা আত তাওবা এর ২৮ ও ৩০ নং আয়াতের বাস্তবায়ন।

এখানে আত্মরক্ষার কোন ব্যপার স্যপার নেই। অর্থাৎ অমুসলিমদের ওপর মুসলমানরা সর্বদাই আক্রমনাত্মক অবস্থায় থাকবে, এর জন্য একটা কারনই যথেষ্ট আর তা হলো তারা ইসলামকে গ্রহণ করে নি। সুতরাং মুসলিম পন্ডিতরা যে মোহাম্মদের আত্মরক্ষামূলক যুদ্ধের কথা বার্তা বলে, তার কোন ভিত্তি এখানে দেখা যায় না। বরং দেখা যাচ্ছে – মুসলমানরা যে কোন সময় যে কোন অমুসলিম গো্ত্র বা জাতি বা দেশকে আক্রমন করতে পারে, কোন রকম আগাম নোটিশ ছাড়াই আর এটা তাদের আল্লাহর নির্দেশ। যে বরং এটা মানবে না সে খাটি মুসলমান নয়। অথচ মোহাম্মদ নিজে স্বয়ং এ ধরনের আতর্কিতে যত আক্রমন করেছেন সব নাকি আত্মরক্ষামূলক। এভাবে তারা যে মিথ্যাচার করে চলেছে শত শত বছর ধরে তার তুলনা মেলা ভার।

এ ধরনের বাস্তবায়নের আরও উদাহরন –

আবু হুরাইরা বর্ণিত- একদা আমরা মসজিদের মধ্যে ছিলাম, তখন নবী আসলেন আর বললেন- চল আমরা ইহুদিদের বস্তিতে যাই। আমরা তখন বাইতুল মিডরাস পৌছলাম। নবী সেখানকার ইহুদিদেরকে বললেন- যদি তোমরা ইসলাম গ্রহণ কর তাহলে তোমরা নিরাপদ। তোমাদের জানা উচিত দুনিয়াটা আল্লাহ ও তার রসুলের। আমি তোমাদেরকে এ ভূমি থেকে উৎখাত করতে চাই। এখন যদি তোমাদের কোন সম্পদ থাকে তাহলে তা বিক্রি করে দাও, অন্যথায় জেনে রাখ এ দুনিয়া আল্লাহ ও তার রসুলের। বুখারি, ভলুম-৪, হাদিস-৩৯২

শুধু মাত্র ইসলাম গ্রহন করে নি বলেই মোহাম্মদ ইহুদিদেরকে তাদের বংশ পরম্পরায় বাস করে আসা মাতৃভূমি থেকে বহিস্কার করে দিচ্ছেন। আদিখ্যেতা করে মোহাম্মদ বলছেন- তোমাদের কোন সম্পদ থাকলে তা বিক্রি করে দাও। কিন্তু তখন ক্রেতা কারা ? অবশ্যই মুসলমানরা। অত:পর মোহাম্মদ তাদের সম্পদের যা দাম ধরে দিয়েছিলেন তাই নিয়েই ইহুদিদেরকে পাততাড়ি গুটাতে হয়েছে বলাবাহুল্য। খেয়াল করতে হবে এখানে ইহুদিরা মুসলমানদেরকে আক্রমন করার কোন তালে ছিল না। তাদের একটাই অপরাধ তারা ইহুদি, অন্য কিছু নয়, আর তারা ইসলাম গ্রহণ করতে রাজি হয় নি। নিচের আয়াতটি দেখা যাক-

আর এ কথাও জেনে রাখ যে, কোন বস্তু-সামগ্রীর মধ্য থেকে যা কিছু তোমরা গনীমত হিসাবে পাবে, তার এক পঞ্চমাংশ হল আল্লাহর জন্য, রসূলের জন্য, তাঁর নিকটাত্নীয়-স্বজনের জন্য এবং এতীম-অসহায় ও মুসাফিরদের জন্য; যদি তোমাদের বিশ্বাস থাকে আল্লাহর উপর এবং সে বিষয়ের উপর যা আমি আমার বান্দার প্রতি অবতীর্ণ করেছি ফয়সালার দিনে, যেদিন সম্মুখীন হয়ে যায় উভয় সেনাদল। আর আল্লাহ সব কিছুর উপরই ক্ষমতাশীল।সূরা আনফাল, ০৮:৪১ মদিনায় অবতীর্ণ

উক্ত আয়াত বলছে গণিমতের এক পঞ্চমাংশ হলো আল্লাহর জন্য, রসুলের জন্য, তাঁর নিকটাত্মীয়-স্বজনদের জন্য এবং এতীম- অসহায় ও মুসাফিরদের জন্য। বাকী চার পঞ্চমাংশ হলো যারা লুটপাট করেছে তাদের। এ পরিমান মালামাল তো কম নয়। ঠিক মতো একটা ধনী গোত্র বা বানিজ্য কাফেলা আক্রমন করতে পারলে অনেক মালামাল পাওয়া যায়, তার চার পঞ্চমাংশ অংশ বেশ বেশী হবে, অতএব পরে আর কোন কাজ কর্ম যেমন- কৃষিকাজ, পশুপালন বা ব্যবসা বানিজ্য করার দরকার নাই। আর বলা বাহুল্য এটাই ছিল মোহাম্মদ ও তার দলের আয় উপার্জন ও জীবিকার প্রধান উপায়। মালামালের পরিমান যদি বেশী হয় এক পঞ্চমাংশ মালও যথেষ্ট হওয়াই স্বাভাবিক। আর মোহাম্মদ সেই সম্পদ থেকে নিজের বিরাট পরিবার ( দুই হালির বেশী স্ত্রী সমন্বিত) প্রতিপালন তো করতেনই তারপর বাকি অংশ ফকির মিশকিনদেরকে দান খয়রাত করতেন। যে ধন উপার্জন করতে নিজের পরিশ্রম করা লাগে না , তা থেকে দান খয়রাত করা খুব সোজা। এ ধরনের দান খয়রাত করে মোহাম্মদ নিজেকে সেসময়ের সবচেয়ে বড় দানবীর হিসাবে আখ্যায়িত হন। মারহাবা , আল্লাহর কি মহিমা! তার নবীকে দানবীর বানাতে অন্যের ধন সম্পদ লুট পাট করতে হয়। অনেকটা রবিন হুডের মত। এখন কিভাবে মোহাম্মদ সম্পদ অর্জন করতেন তার নমূনা কোরানেও বিদ্যমান, যেমন-

কিতাবীদের মধ্যে যারা কাফেরদের পৃষ্টপোষকতা করেছিল, তাদেরকে তিনি তাদের দূর্গ থেকে নামিয়ে দিলেন এবং তাদের অন্তরে ভীতি নিক্ষেপ করলেন। ফলে তোমরা একদলকে হত্যা করছ এবং একদলকে বন্দী করছ।সুরা আহযাব, ৩৩:২৬

তিনি তোমাদেরকে তাদের ভূমির, ঘর-বাড়ীর, ধন-সম্পদের এবং এমন এক ভূ-খন্ডের মালিক করে দিয়েছেন, যেখানে তোমরা অভিযান করনি। আল্লাহ সর্ববিষয়োপরি সর্বশক্তিমান। সূরা আহযাব, ৩৩:২৭

উক্ত আয়াতে বলছে যারা কাফেরদেরকে পৃষ্ঠপোষকতা করেছিল, অর্থাৎ মোহাম্মদ যাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করত তাদেরকে সাহায্য করেছিল। সুতরাং বলাবাহুল্য এটা ছিল মারাত্মক অপরাধ। এ অপরাধের কারনে মোহাম্মদ তাদের বিরুদ্ধেও যুদ্ধ করতে পারেন সঙ্গত কারনে। কিন্তু দেখা যাক উক্ত আয়াতের কনটেক্সট তথা প্রেক্ষাপট কি। ইবনে কাথিরের তাফসিরে উক্ত আয়াতের বিষয়ে যা বলা আছে তা হলো-

যখন মুশরিক ও ইযাহুদিদের দল মদিনায় এসে অবরোধ সৃষ্টি করল, তখন মদিনার বনু কুরাইযা গোষ্ঠির ইহুদিরা যারা মদিনায় বসবাস করত ও যারা নবীর সাথে চুক্তিবদ্ধ ছিল তারা বিশ্বাসঘাতকতা করল ও চুক্তি ভেঙ্গে দিল। তারা চোখ রাঙাতে লাগল। তাদের সরদার কা’ব ইবনে আসাদ আলাপ আলোচনার জন্য আসল। ম্লেচ্ছ হুয়াই ইবনে আখতাব ঐ সরদারকে সন্ধি ভঙ্গ করতে উদ্বুদ্ধ করল। প্রথমে সে সন্ধি ভঙ্গ করতে সম্মত হলো না। সে এ সন্ধির উপর দৃঢ় থাকতে চাইল। হুয়াই বললো- এটা কেমন কথা হলো? আমি তোমাকে সম্মানের উচ্চাসনে বসিয়ে তোমার মস্তকে রাজ মুকুট পরাতে চাচ্ছি ,অথচ তুমি মানছ না? কুরাশেরা ও তাদের অন্যান্য সঙ্গীসহ আমরা সবাই এক সাথে আছি । আমরা শপথ করেছি যে, যে পর্যন্ত না আমরা এক একজ মুসলমানের মাংস ছেদন করব সে পর্যন্ত এখান থেকে সরব না। কাবের দুনিয়ার অভিজ্ঞতা ভাল ছিল বলে সে উত্তর দিল-“এটা ভুল কথা, এটা তোমাদের ক্ষমতার বাইরে। তোমরা আমাকে লাঞ্ছনার বেড়ী পরাতে এসেছো। তুমি একটা কুলক্ষনে লোক। সুতরাং তুমি আমার নিকট থেকে সরে যাও। আমাকে তোমার ধোকাবাজির শিকারে পরিনত করো না”। হুয়াই কিন্তু তখনো তার পিছু ছাড়ল না। সে তাকে বার বার বুঝাতে থাকল। অবশেষে সে বলল-“ মনে কর যে কুরায়েশ ও গাতফান গোত্র পালিয়ে গেল, তাহলে আমরা দলবল সহ তোমার গর্তে গিয়ে পড়ব। তোমার ও তোমার গোত্রের যে দশা হবে, আমার ও আমার গোত্রেরও সেই একই দশা হবে”।

অবশেষে কা’বের উপর হুয়াই এর যাদু ক্রিয়াশীল হলো। বানু কুরাইযা সন্ধি ভঙ্গ করল। এতে রাসুলূল্লাহ ও সাহাবীগণ অত্যন্ত দু:খিত হলেন এবং এটা তাদের কাছে খুবই কঠিন ঠেকল। আল্লাহ তা’য়ালা স্বীয় বান্দাদের সাহায্য করলেন এবং রাসূলুল্লাহ সাহাবীগন সমভিব্যহারে বিজয়ীর বেশে মদীনায় প্রত্যাবর্তন করলেন। সাহাবীগন অস্ত্র শস্ত্র খুলে ফেললেন এবং রাসুলুল্লাহও অস্ত্র শস্ত্র খুলে ফেলে হযরত উম্মে সালমা এর গৃহে ধুলো ধুসরিত অবস্থায় হাজির হলেন এবং পাক সাফ হওয়ার জন্য গোসল করতে যাচ্ছিলেন। এমতাবস্থায় হযরত জিব্রাইল আবির্ভূত হন। তার মস্তকোপরি রেশমি পাগড়ি ছিল। তিনি খচ্চরের উপর উপবিষ্ট ছিলেন। ওর পিঠে রেশমি গদি ছিল। তিনি বলতে লাগলেন: “ হে আল্লাহর রাসুল ! আপনি কি অস্ত্র শস্ত্র খুলে ফেলেছেন? তিনি উত্তরে বললেন: হ্যা । হযরত জিব্রাইল বললেন: ফেরেস্তারা কিন্তু এখনো অস্ত্র শস্ত্র হতে পৃথক হয়নি। আমি কাফিরদের পশ্চদ্ধাবন হতে এই মাত্র ফিরে এলাম। জেনে রাখুন। আল্লাহর নির্দেশ, বানু কুরাইযার দিকে চলুন। তাদেরকে উপযুক্ত শিক্ষা দান করুন। আমার প্রতিও মহান আল্লাহর এ নির্দেশ রয়েছে যে আমি যেন তাদেরকে প্রকম্পিত করি। রাসুলুল্লাহ তৎক্ষনাৎ উঠে দাড়িয়ে যান। নিজে প্রস্তুতি গ্রহণ করে সাহাবীদেরকেও প্রস্তুত হওয়ার নির্দেশ দেন। তিনি তাদেরকে বললেন: তোমরা সবাই বানু কুরাইযার ওখানেই আসরের নামাজ আদায় করবে। যুহরের নামাজের পর এ হুকুম দেয়া হলো। বানু কুরাইযার দুর্গ মদীনা হতে কয়েক মাইল দুরে অবস্থিত ছিল। পথেই নামাজের সময় হয়ে গেল। তাদের কেউ কেউ নামায আদয় করে নিলেন। তারা বললেন: রাসুলুল্লাহ এ কথা বলার উদ্দেশ্য ছিল যে, তারা যেন খুব তাড়াতাড়ি চলে আসেন। আবার কেউ কেউ বললেন: আমরা সেখানে না পৌছে নামায পড়ব না। রাসুলুল্লাহ এর এ খবর জানতে পেরে দুদলের কাউকেই তিনি কিছু বললেন না। তিনি ইবনে উম্মে মাখতুম কে মদিনার খলিফা নিযুক্ত করলেন। সেনাবাহিনীর পতাকা হযরত আলী এর হাতে প্রদান করলেন। তিনি নিজেও সৈন্যদের পিছনে পিছনে চলতে লাগলেন। সেখানে গিয়েই তিনি তাদের দুর্গ অবরোধ করে ফেললেন। পঁচিশ দিন পর্যন্ত অবরোধ স্থায়ী হলো। যখন ইহুদীদের দম নাকে এসে গেল তখন তাদের অবস্থা সঙ্গীন হয়ে উঠল তখন তারা হযরত সা’দ ইবনে মুয়াজ কে নিজেদের সালিশ বা মীমাংসাকারী নির্ধারন করল। কারন তিনি আউস গোত্রের সরদার ছিলেন। বানু কুরাইযা ও আউস গোত্রের মধ্যে যুগ যুগ ধরে বন্ধুত্ব ও মিত্রতা চলে আসছিল। তারা একে অপরের সাহায্য করত। …………………………………….
হযরত সা’দ কে গাধার উপর সওয়ার করিয়ে নিয়ে আসা হলো। আউস গোত্রের সমস্ত লোক তাকে জড়িয়ে ধরে বলল: দেখুন, বানু কুরাইযা গোত্র আপনারই লোক। তারা আপনার উপর ভরসা করেছে। তারা আপনার কওমের সুখ-দু:খের সঙ্গী। সুতরাং আপনি তাদের উপর দয়া করুন এবং তাদের সাথে নম্র ব্যবহার করুন। হযরত সা’দ নীরব ছিলেন। তাদের কথার কোন জবাব তিনি দিচ্ছিলেন না। তারা তাকে উত্তর দেয়ার জন্য পীড়াপীড়ি করতে লাগল এবং তার পিছন ছাড়লো না। অবশেষে তিনি বললেন: ঐ সময় এসে গেছে হযরত সা’দ এটা প্রমান করতে চান যে, আল্লার পথে কোন তিরস্কারকারীর তিরস্কারের তিনি কোন পরওয়া করবেন না। – তার এ কথা শোনা মাত্রই ঐ লোকগুলো হতাশ হয়ে পড়ল যে, বানু কুরাইযা গোত্রের কোন রেহাই নেই। যখন হযরত সা’দ এর সওয়ারী রাসুলুল্লাহ এর তাবুর নিকট আসল তখন রাসুলুল্লাহ বললেন: তোমরা তোমাদের সরদারের অভ্যর্থনার জন্যে দাড়িয়ে যাও। তখন মুসলমানরা সবাই দাড়িয়ে গেলেন। অত্যন্ত সম্মানের সাথে তাঁকে সওয়ারী হতে নামানো হল। এরূপ করার কারন ছিল এই যে, ঐ সময় তিনি ফয়সালাকারীর মর্যাদা লাভ করেছিলেন। ঐ সময় তার ফয়সালাই চুড়ান্ত বলে গৃহীত হবে। তিনি উপবেশন করা মাত্রই রাসুলুল্লাহ তাকে বললেন: বানু কুরাইযা গোত্র তোমার ফয়সালা মেনে নিতে সম্মত হয়েছে এবং দুর্গ আমাদের হাতে সমর্পন করেছে। সুতরাং তুমি এখন তাদের ব্যপারে ফয়সালা দিয়ে দাও। হযরত সা’দ বললেন: তাদের ব্যপারে আমি যা ফয়সালা করব তাই কি পূর্ণ করা হবে ? উত্তরে রাসুলুল্লাহ বললেন: অবশ্যই। তিনি পূনরায় প্রশ্ন করলেন: এই তাবু বাসীদের জন্যেও কি আমার ফয়সালা মেনে নেয়া জরুরী হবে ? জবাবে রাসুলুল্লাহ বললেন: হ্যা, অবশ্যই। আবার তিনি প্রশ্ন করলেন: এই দিকের লোকদের জন্যেও কি ? ঐ সময় তিনি ঐদিকে ইঙ্গিত করেছিলেন যেই দিকে স্বয়ং রাসুলুল্লাহ ছিলেন। কিন্তু রাসুলুল্লাহ এর ইজ্জত ও বুযর্গীয় খাতিরে তিনি তাঁর দিকে তাকালেন না। রাসুলুল্লাহ জবাবে বললেন: হ্যাঁ, এই দিকের লোকদের জন্যেও এটা মেনে নেয়া জরুরী হবে। তখন সা’দ বললেন: “তাহলে এখন আমার ফয়সালা শুনুন! বানু কুরাইযার মধ্যে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করার মত যত লোক আছে তাদের সবাইকেই হত্যা করে দেয়া হবে। তাদের শিশু সন্তানদেরকে বন্দী করা হবে এবং তাদের ধন- সম্পদ মুসলমানদের অধিকারভূক্ত হবে”। তার এই ফয়সালা শুনে রাসুলুল্লাহ বললেন: হে সা’দ! তুমি এ ব্যপারে ঐ ফয়সালাই করেছো যা আল্লাহ তা’য়ালা সপ্তম আকশের উপর ফয়সালা করেছেন। অন্য একটি রিওয়াতে আছে যে, রাসুলুল্লাহ বললেন: হে সা’দ ! প্রকৃত মালিক মহান আল্লাহর যে ফয়সালা সেই ফয়সালাই তুমি শুনিয়েছো। অত:পর রাসুলুল্লাহ এর নির্দেশ ক্রমে গর্ত খনন করা হয় এবং বানু কুরাইযা গোত্রের লোকদেরকে শৃংখলিত অবস্থায় হত্যা করে তাতে নিক্ষেপ করা হয়। তাদের সংখ্যা ছিল সাতশ বা আটশ। তাদের নারীদেরকে ও অপ্রাপ্ত বয়স্ক সন্তানদেরকে এবং তাদের সমস্ত মালধন হস্তগত করা হয়। ( ইবনে কাথিরের তাফসির, ১৫শ খন্ড, পৃষ্ঠা নং- ৭৬৯-৬৭১)

উক্ত তাফসিরে পরিস্কার বোঝা যাচ্ছে, বানু কুরাইযার সাথে মোহাম্মদের যে চুক্তি ছিল তা তাদের নেতা কা’ব ইবনে আসাদ সে চুক্তি মোটেও ভঙ্গ করে নি। তাকে অন্য এক গোত্র সরদার হুয়াই ইবনে আখতাব নানাভাবে সে চুক্তি ভঙ্গ করার জন্য প্ররোচিত করছিল কিন্তু তারপরেও সে চুক্তি ভঙ্গ করেনি। অত:পর বলা হলো-কা’বের ওপর হুয়াইয়ের যাদু ক্রিয়াশীল হলো। অর্থাৎ একটা খোড়া যুক্তি দেখিয়ে প্রমান করতে চেষ্টা করা হচ্ছে যে বানু কুরাইযা গোষ্ঠি চুক্তি ভঙ্গ করেছে। না হলে মোহাম্মদের দল বলের আক্রমনকে যৌক্তিক করা যায় না। বানু কুরাইযার লোক জন চুক্তি ভঙ্গ করে যে মোহাম্মদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছে বা মোহাম্মদের বিরুদ্ধ শক্তিকে সাহায্য করেছে তার কোন প্রমান কিন্তু উক্ত কনটেক্সটে নেই। সে রকম কিছু থাকলে উক্ত তাফসির বা হাদিসে সে সম্পর্কে বহু জায়গাতে উল্লেখ থাকত। দু:খজনকভাবে না হাদিস না তাফসির কোথাও বনু কুরাইযারা মোহাম্মদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছিল বা বিরুদ্ধাচরন করেছিল, আর কিভাবেই বা সেটা তারা করেছিল তার কোন উল্লেখ কোথাও নেই। সেকারনেই উক্ত খোড়া যুক্তির অবতারণা করে বলা হচ্ছে- কা’বের ওপর হুয়াইয়ের যাদু ক্রিয়াশীল হলো। অথচ কোন ইসলামি পন্ডিতকে জিজ্ঞেস করলেই সে কিন্তু চোখ বুজে বলে দেবে- বানু কুরাইযা গোষ্ঠী মোহাম্মদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছিল বা মোহাম্মদের বিরুদ্ধ শক্তিতে সাহায্য করেছিল আর তাই মোহাম্মদ তাদেরকে অবরোধ করে নির্মমভাবে শৃংখলাবদ্ধ অবস্থায় হত্যা করেছে তথা গণ হত্যা চালিয়েছে ও অত:পর তাদের সন্তানদেরকে বন্দী করে করে পরে বিক্রি করেছে, নারীগুলোকে গণিমতের মাল হিসাবে ভাগ করে নিয়ে ধর্ষণ করেছে, তাদের সম্পদ লুট করেছে। অথচ এর স্বপক্ষে তারা কোন প্রমান বা দলিল দাখিল করতে পারবে না। যে প্রমান বা দলিল আছে সেগুলোকে বিচার বিশ্লেষণ করেই ইবনে কাথির কোরানের তাফসির করেছেন। বিষয়টা ছিল এরকম, গণহত্যার ঘটনাটি ঘটেছে খন্দকের যুদ্ধের ঠিক পর পরই। কুরাইশ ও তাদের সহযোগীরা মদিনা আক্রমন করতে এসে পরাজিত হয়ে ব্যর্থ হয়ে ফিরে যায়। মোহাম্মদ নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন আরবের অপরাজেয় শক্তি হিসাবে। এসময়ে মদিনার ভিতর বা আশ পাশের কোন গোত্র মোহাম্মদের সাথে সন্ধি চুক্তি ভঙ্গ করতে সাহস পাবে যদি তার জীবনের মায়া থাকে ?

এমতাবস্থায় খোদ মদিনাতে বসবাসকারী বনু কুরাইযা গোত্র কিভাবে শক্তিশালী ও অপরাজেয় মোহম্মদের সাথে চুক্তি ভঙ্গ করতে পারে ? প্রানের মায়া থাকলে কেউ সেটা করবে ? সুতরাং কনটেক্সট বিবেচনা করলে এটা যে একটা মিথ্যা কথা সহজেই সেটা বোঝা যায়।

তাছাড়া খেয়াল করতে হবে , খন্দকের যুদ্ধ থেকে বাসায় ফেরা মাত্রই জিব্রাইল এসে মোহাম্মদকে বনু কুরাইজা গোত্রকে আক্রমন করতে বলছে। অথচ বনু কুরাইযা গোত্র খন্দকের যুদ্ধের সময় কোন মোহাম্মদ বা কুরাইশ কোন পক্ষকেই সমর্থন করেনি। কোন পক্ষকেই যে সমর্থন করে নি তা কিন্তু ঘটনা প্রবাহ থেকে বোঝা যাচ্ছে। কুরাইশদেরকে সমর্থন করলে তো আর জিব্রাইলকে এসে চুপে চুপে বলা লাগত না – হে মোহাম্মদ, বনু কুরাইজা কে আক্রমন কর ও তাদেরকে ধ্বংস করে দাও। তখন জিব্রাইলের উপদেশ ছাড়াই মোহাম্মদ তাদেরকে বিশ্বাসঘাতকতার জন্য আক্রমন করতে পারতেন আর তা অনৈতিকও হতো না। দেখা যাচ্ছে , বনু কুরাইজাকে আক্রমন করার জন্য তার জিব্রাইলের উপদেশ দরকার পড়ছে। কেন ? সোজা উত্তর। বনু কুরাইযার সাথে মোহাম্মদ চুক্তিবদ্ধ, এমতাবস্থায় তাদেরকে আক্রমন করা বাহ্যত অন্যায়, সে অন্যয়কে ঢাকা দিতেই তার জিব্রাইলের আগমন দরকার। বনু কুরাইজা বিশ্বাসঘাতকতা করলে বা মোহাম্মদের শত্রুদের সাথে যোগ দিয়ে মোহাম্মদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করলে তা কিন্তু কোরান , হাদিস এসবে বেশ কয়েক বার এ কথা উল্লেখ থাকত , সবিস্তারে উল্লেখ করত কোরান তাফসিরকাররা। কিন্তু কোথাও তা লেখা নেই। কারন কি ? কারন হচ্ছে বনু কুরাইযা আসলেই সেধরনের কিছু করে নি। আর তাই তাদের বিরুদ্ধে এটুকুই শুধু বলতে হয়েছে- অবশেষে কা’বের উপর হুয়াই এর যাদু ক্রিয়াশীল হলো। যা বলা বাহুল্য একটা ভুয়া অভিযোগ যা পরিস্কার বোঝা যায় ঘটনার কনটেক্সট বিবেচনা করলে। মোহাম্মদ কুরাইশদের বিরুদ্ধে জয়ী হয়ে ঘরে ফিরে না আসার আগেই মদিনার প্রায় ভিতরে বসবাসকারী একটা ক্ষুদ্র ইহুদী গোষ্ঠী বনু কুরা্ইযা মোহাম্মদের সাথে সন্ধি চুক্তি ভঙ্গ করবে? এটা কোন পাগলে বিশ্বাস করবে ? অথচ মোহাম্মদ তখন এতটাই বেপরোয়া যে সে ধরনের অভিযোগ করতেও তার বাধছে না , কারন ক্ষমতার ভারসাম্য তখন সম্পূর্ণ তার দিকে হেলে পড়েছে আর তাই তিনি যা বলবেন সেটাই সত্য। এই হলো মোহাম্মদের আসল চরিত্র। এটা দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের সময় জার্মানীর অকস্মাৎ রাশিয়া আক্রমনের ঘটনার মত। অথচ তখন রাশিয়া ও জার্মানীর মধ্যে শান্তি চুক্তি বহাল ছিল।

প্রকৃত ব্যপার হলো- মোহাম্মদের নবুয়ত্ব অস্বীকারকারী ইহুদিরা ( বনু কুরাইযা) মদিনার পাশেই চুক্তিবদ্ধ অবস্থায় ছিল যাদেরকে মোহাম্মদ মনে প্রানে ঘৃণা করতেন কিন্তু প্রাথমিক পর্যায়ে তাদের সাথে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান করা ছাড়া কোন উপায়ও ছিল না । এভাবে শান্তি চুক্তি করে মোহাম্মদ শক্তি সঞ্চয়ের সুযোগ পান একই সাথে বহি: শত্রু যেমন কুরাইশদের বিরুদ্ধে সম্ভাব্য যুদ্ধের সময় যাতে ইহুদিরা কুরাইশদেরকে সাহায্য না করে তার নিশ্চয়তা বিধান করেন। এটা ছিল মোহাম্মদের অত্যন্ত বুদ্ধি দীপ্ত রণ কৌশল যার তারিফ করতেই হবে। যাহোক, কুরাইশদের আক্রমনকে সফলভাবে মোকাবেলা করার পর মোহাম্মদ চিন্তা করলেন এখন ইহুদিদের সাথে আর কোন সন্ধিচুক্তির দরকার নেই, দরকার নেই তাদেরকে মদিনার পাশে রাখার। তাই তার দরকার ছিল একটা অজুহাতের যার মাধ্যমে তিনি মদিনার পাশের ইহুদিদেরকে আক্রমন করে হয় হত্যা, না হয় উৎখাত করতে পারেন। এর ফলশ্রুতিতেই মূলত: মোহাম্মদ জিব্রাইলের বানীর আমদানি ঘটান।একটু গভীরভাবে চিন্তা করলেই তা সহজেই বোঝা যায়। তার দলবলকে বোঝাতে হয় যে জিব্রাইল এসে বলছে কুরাইযা গোষ্ঠি কে আক্রমন করতে যদিও তাদের সাথে একটা সন্ধি চুক্তি আছে। অন্যথায় তার দলবল সমালোচনা করতে পারত যে যেহেতু তাদের সাথে একটা সন্ধি চুক্তি আছে তাই তাদেরকে বিনা কারনে আক্রমন করে হত্যা করা নৈতিক নয়। তাদের সামনে বিষয়টিকে নৈতিক করার জন্যই মোহাম্মদ জিব্রাইলের আমদানি করেন সাথে সাথেই। উক্ত তফসিরে কৌশলে মোহাম্মদকে এ গণহত্যার দায় থেকে রক্ষা করার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু ভাল করে বিচার করলে দেখা যায় মোহাম্মদই আসলে গণহত্যার রায় দিয়েছেন ও তার নির্দেশেই এ গণহত্যা সংঘটিত হয়েছে। সা’দ ইবনে মুয়াজ ফয়সালার দায়িত্ব পায়।এ সা’দ এর গোষ্ঠীর সাথে কুরাইযা গোষ্ঠীর মিত্রতা ছিল। উক্ত তাফসির থেকে বোঝা যাচ্ছে এক পর্যায়ে সা’দ মোহাম্মদের দলে যোগ দেয়। মোহাম্মদের দল কর্তৃক অবরুদ্ধ হওয়ার পর কুরাইযারা তাদের দীর্ঘদিনের বন্ধু আউস গোত্রের সর্দার সা’দ কে ফয়সালাকারী হিসাবে মেনে নেয়। কিন্তু তারা বুঝতে পারে নি যে , ইসলাম গ্রহণের পর সা’দ আর স্বাভাবিক মানুষ নেই, পরিণত হয়েছে পেশাদার খুনী ও উন্মাদে। ইহজগতে অন্যের সম্পদ লুট করে উপভোগ ও মরার পরে বেহেস্তে হুর পরীদের নিয়ে ফুর্তির যে লোভ মোহাম্মদ দেখিয়েছেন তাতে সা’দ পরিণত হয়েছে নির্মম নিষ্ঠুর এক ভয়ংকর উন্মত্ত রক্তপিপাসু খুনীতে। এর পরেও সা’দ যাতে ভুলবশত: কোন রকম দয়া না দেখায় সে জন্য মোহাম্মদ তাকে এক জমকালো অভ্যর্থনা দেন। বলাবাহুল্য, সা’দ মোহাম্মদের মনের খবর জানত আর জানত ইহুদিদেরকে কি পরিমান তিনি ঘৃণা করেন, কারন এই ইহুদিরা কোনমতেই মোহাম্মদকে নবী হিসাবে স্বীকার করতে রাজী ছিল না যা ছিল মোহাম্মদের জন্য এক বিরাট কৌশলগত ও নৈতিক পরাজয়। ঠিক সেকারনেই তার পরিকল্পনা ছিল যে কোন ভাবেই হোক ইহুদিদেরকে নিধন করা অথবা আরব ভূমি থেকে উৎখাত করে দেয়া যা তিনি অত:পর করে গেছেন অত্যন্ত কঠিন ও প্রবল ভাবেই। স্বয়ং আল্লাহর রসুল মোহাম্মদের কাছ থেকে এ ধরনের জমকালো অভ্যর্থনা পাওয়ার সা’দের প্রধান দায়িত্ব হয়ে যায় মোহাম্মদকে খুশী করা। আর তারই ফলশ্রুতিতে সে গণহত্যার রায় প্রদান করে আর সাথে সাথেই মোহাম্মদ তার প্রশংসা করে বলেন এটাই নাকি আল্লাহর ইচ্ছা ও রায়। ইসলাম মানুষকে কি পরিমান উন্মত্ত, উদ্ভ্রান্ত ,উন্মাদ ও ভয়ংকর নৃশংস খুনীতে পরিনত করতে পারে এটা ছিল তার এক উজ্জ্বল নমূনা। কারন এই সা’দ ছিল কুরাইযাদের দীর্ঘ দিনের বন্ধু , অথচ সেই সা’দই এখন তার বন্ধুদেরকে গণহত্যায় জল্লাদের ভূমিকায় অবতীর্ণ, অথচ তাদের সাথে সা’দের কোন দ্বন্দ্ব সংঘাত কিছুই হয় নি, ঘটেনি বিশ্বাসঘাতকতার কোন ঘটনা, শুধুমাত্র আদর্শিক কারনে সা’দ পরিনত হয়ে গেছে তার বন্ধুদেরকে হত্যায় জল্লাদে। ঠিক হুবহু একই ঘটনা আমরা দেখি বাংলাদেশের স্বাধীনতার যুদ্ধের সময়। যে সব মানুষ তখন খুন বা গণহত্যার শিকার হয়েছিল, সেসব ঘটনার পিছনে বহুক্ষেত্রেই বন্ধুবান্ধব বা পরিচিত জনই ছিল আসল উদ্যোক্তা। উক্ত ঘটনা প্রমান করে মোহাম্মদ কি ধরনের ঠান্ডা মাথার খুনী ছিলেন। মদিনাতে মোহাম্মদ নিজেকে এভাবেই একজন ভয়ংকর, নির্মম ও উন্মাদ ঠান্ডা মাথার খুনীতে পরিনত হন যার একমাত্র লক্ষ্য ছিল তাকে অবিশ্বাসকারী মানুষ, দল বা গোষ্ঠিকে নির্মমভাবে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দেয়া ও অত:পর তাদের ধন সম্পদ ও নারী গুলোকে গণিমতের মাল হিসাবে ভাগাভাগি করে উপভোগ করা। আর এ ধরনের ভয়ংকর, নির্মম, নিষ্ঠুর কাজ করার আদেশ দিচ্ছে কে ? তার আল্লাহ । চিন্তা করা যায় পরম করুনাময় সৃষ্টিকর্তা কখনও এমন নিষ্ঠুর ও ভয়ংকর হতে পারে ?

অথচ এই মোহাম্মদ যখন মক্কাতে ছিলেন তখন তার মুখ থেকে যে কোরানের বানী নির্গত হয় তা ছিল এরকম-

আপনি বলে দিন, আমি আমার নিজের কল্যাণ সাধনের এবং অকল্যাণ সাধনের মালিক নই, কিন্তু যা আল্লাহ চান। আর আমি যদি গায়বের কথা জেনে নিতে পারতাম, তাহলে বহু মঙ্গল অর্জন করে নিতে পারতাম, ফলে আমার কোন অমঙ্গল কখনও হতে পারত না। আমি তো শুধুমাত্র একজন ভীতি প্রদর্শক ও সুসংবাদদাতা ঈমানদারদের জন্য।সূরা আরাফ, ৭:১৮৮ ( মক্কায় অবতীর্ণ)

উনি শুধুমাত্র একজন ভীতি প্রদর্শক ও সুসংবাদদাতা ছাড়া আর কিছুই নন।

আর সম্ভবতঃ ঐসব আহকাম যা ওহীর মাধ্যমে তোমার নিকট পাঠানো হয়, তার কিছু অংশ বর্জন করবে? এবং এতে মন ছোট করে বসবে? তাদের এ কথায় যে, তাঁর উপর কোন ধন-ভান্ডার কেন অবতীর্ণ হয়নি? অথবা তাঁর সাথে কোন ফেরেশতা আসেনি কেন? তুমিতো শুধু সতর্ককারী মাত্র; আর সব কিছুরই দায়িত্বভার তো আল্লাহই নিয়েছেন। সূরা হুদ, ১১:১২ (মক্কায় অবতীর্ণ)

তিনি শুধুমাত্র একজন সতর্ককারী , বাকি দায়িত্ব সব আল্লাহর ।

তারা বলে, তার পালনকর্তার পক্ষ থেকে তার প্রতি কিছু নিদর্শন অবতীর্ণ হল না কেন? বলুন, নিদর্শন তো আল্লাহর ইচ্ছাধীন। আমি তো একজন সুস্পষ্ট সতর্ককারী মাত্র। সূরা আল আনকাবুত, ২০:৫০ ( মক্কায় অবতীর্ণ)

তাকে চ্যলেঞ্জ করা হয়েছে কোন মোজেজা দেখাবার জন্য, কিন্তু মোহাম্মদ বললেন ওটা আল্লাহর ইচ্ছাধীন আর তিনি শুধুমাত্র একজন সতর্ককারী, আর কিছু নন।

বলুনঃ হে লোক সকল! আমি তো তোমাদের জন্যে স্পষ্ট ভাষায় সতর্ককারী।সূরা হাজ্জ, ২২: ৪৯

সতর্ক করা ছাড়া আর কোন কাজ নাই তার।

বলুন, আমি তো একজন সতর্ককারী মাত্র এবং এক পরাক্রমশালী আল্লাহ ব্যতীত কোন উপাস্য নেই।সুরা-ছোয়াদ ৩৮:৬৫

মোহাম্মদ শুধুই মাত্র একজন সতর্ককারী।

বলুন, এর জ্ঞান আল্লাহ তা’আলার কাছেই আছে। আমি তো কেবল প্রকাশ্য সতর্ককারী।সুরা আল মুলক, ৬৭:২৬

মোহাম্মদ শুধুই মাত্র সতর্ককারী।

মক্কাতে থাকার সময় মোহাম্মদ ছিলেন শুধুমাত্র একজন সতর্ককারী, মদিনাতে এসে হয়ে পড়লেন নিরীহ জনগোষ্ঠীর ওপর আতর্কিতে আক্রমন করে তাদের ধন সম্পদ ও নারীদেরকে জোর করে দখল করে গণিমতের মাল হিসেবে ভাগাভাগি করে নেয়া ও পুরুষদেরকে ঠান্ডা মাথায় নির্মমভাবে গণহত্যাকারী এক ভয়ংকর উন্মাদ স্বৈরাচারি একনায়ক নেতা যার কোন তুলনা সারা দুনিয়াতে তার আগে ছিল না আর ভবিষ্যতেও হবে বলে মনে হয় না। আর এটাই হলো তার কোরানের সকল আয়াতের কনটেক্সট। এখন এই কনটেক্সটে বিচার করলে ইসলাম কি আর শান্তির ধর্ম থাকে ? তা যদি না থাকে তাহলে মুমিন বান্দারা ও ইসলামি পন্ডিতরা কিভাবে সারাক্ষন চিৎকার চেচামেচি করে প্রচার করে যে ইসলাম শান্তির ধর্ম ?

আমাদের বক্তব্য পরিস্কার। ইসলাম এর স্বরূপ প্রকৃতপক্ষে যেরকম, সেরকমভাবেই তার প্রচারকরা প্রচার করুক, কেন তারা সারাক্ষন মিথ্যা প্রচারনা করে সত্যকে মিথ্যা আর মিথ্যাকে সত্য বলে প্রচার ও প্রতিষ্ঠিত করতে চায় ? সত্য কথা বলতে এত ভয় কিসের ?

উপরে ইবনে কাথিরের যে উদ্ধৃতি দেয়া আছে তার অনুবাদক:

ড: মুজিবুর রহমান
প্রাক্তন অধ্যাপক ও সভাপতি
আরবি ও ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

নিচে তার সম্পূর্ন অনুবাদের লিংক দেয়া আছে

বাংলা কোরান
বাংলা কোরান
বুখারী, মুসলিম, আবু দাউদ ও মালিক মুয়াত্তার হাদিস
শুধুমাত্র বুখারী শরিফ
ইবনে কাথিরের বাংলা তাফসীর

মোহাম্মদ ও ইসলাম, পর্ব-১৬
মোহাম্মদ ও ইসলাম, পর্ব-১৫
মোহাম্মদ ও ইসলাম, পর্ব-১৪
মোহাম্মদ ও ইসলাম, পর্ব-১৩
মোহাম্মদ ও ইসলাম , পর্ব-১২
মোহাম্মদ ও ইসলাম, পর্ব-১১
মোহাম্মদ ও ইসলাম, পর্ব-10
মোহাম্মদ ও ইসলাম, পর্ব-9
মোহাম্মদ ও ইসলাম, পর্ব-8
মোহাম্মদ ও ইসলাম, পর্ব-7
মোহাম্মদ ও ইসলাম, পর্ব-6
মোহাম্মদ ও ইসলাম, পর্ব-5
মোহাম্মদ ও ইসলাম, পর্ব-4
মোহাম্মদ ও ইসলাম, পর্ব-3
মোহাম্মদ ও ইসলাম, পর্ব-2
মোহাম্মদ ও ইসলাম, পর্ব-1