কোরান হাদিস নিয়ে যখন কোন বিতর্ক করা হয় প্রায়ই ইসলামিষ্টরা কতকগুলো প্রশ্ন উত্থাপন করে যে গুলো নিম্নরূপ:

(১) কোরানের আয়াত বিচ্ছিন্ন ভাবে পড়লে আয়াতের সঠিক অর্থ বোঝা যাবে না।
(২) আয়াতের অর্থ বুঝতে গেলে আগে পিছের আয়াতগুলো পড়তে হবে।
(৩) আয়াতের পটভূমিকা বা শানে নুযুল জানতে হবে। অর্থাৎ কোন ঘটনার প্রেক্ষিতে কোন আয়াত নাজিল হয়েছিল তা জানতে হবে। না হলে আয়াতের সঠিক অর্থ বোঝা যাবে না।
(৪) পুরোপুরি সঠিক অর্থ জানতে আরবী বুঝে কোরান পড়তে হবে।

ভাল কথা। আসলেই কোরানের কোন আয়াতের অর্থ বুঝতে সে আয়াতকে বিচ্ছিন্ন ভাবে বিবেচনা করা ঠিক না। উক্ত আয়াতের আগ পিছের আয়াতগুলো জানা দরকার। এছাড়া শানে নুযুল বা পটভূমিকা অর্থাৎ কোন প্রেক্ষিতে উক্ত আয়াত নাজিল হয়েছে তা জানতে হবে। এতকিছু করার পরেও যদি দেখা যায় যে কোন সূরার কোন আয়াতের অর্থকে কোনভাবেই পজিটিভ করা যাচ্ছে না তখন শেষ অস্ত্র যা প্রয়োগ করে ইসলামিস্টরা তা হলো কোরানকে বুঝতে হলে আরবী জানতে হবে। অথচ তারা বুঝতে পারে না যে তাদের শেষ অস্ত্রটি তাদের ইসলামকে সংকুচিত করে শুধুমাত্র আরবী ভাষী মানুষের জন্যই কার্যকর ধর্ম হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করে। বস্তুত: বিষয়টি কিন্তু তাই। মোহাম্মদ মূলত: মক্কা মদিনার আশপাশের জনগোষ্ঠীকে কেন্দ্র করে তার ধর্ম প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করেন। উদ্দেশ্য- এদেরকে এক পতাকাতলে এনে একটা আরবী রাজ্যের পত্তন ঘটানো। মদিনাতে মোহাম্মদ যখন তার আরবী রাজ্য প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হলেন তখন তার তার উচ্চাকাংখা বেড়ে গেল, তার নজর পড়ল আশে পাশের সাম্রাজ্য যেমন পারস্য বা রোম। এছাড়া অবশ্য কোন উপায়ও ছিল না। সেই মক্কা মদিনাতে আজকের মত তখন তেলের খনি ছিল না যা বিক্রি করে বিলাস বহুল জীবন যাপন করা যেত। সম্পদের অপ্রতুলতার কারনে মক্কা মদিনার মানুষের জীবন ছিল অনেকটা সেই প্রাগতৈহাসিক আমলের মানুষের মত। মানুষের জীবিকা মূলত নির্ভর করত পশুপালন, খেজুর উৎপাদন এসব। যা একটা আদিম সমাজের চিত্র। তাই মোহাম্মদের ইসলামকে প্রথম থেকেই অন্যের ধন সম্পদ লুঠ-পাটের ওপর নির্ভর করতে হয়েছে। মদিনায় হিজরত করার পর , সর্বপ্রথম মোহাম্মদ মদিনায় গমনকারী মক্কাবাসীদেরকে নিয়ে একটা লাঠিয়াল বা দস্যুদল ( এ ছাড়া অন্য কোন নাম দেয়া যায় না) গঠন করেন, যাদের কাজ ছিল মদিনার পাশ দিয়ে চলে যাওয়া মক্কার বানিজ্য কাফেলা আক্রমন করে তাদেরকে খুন করে তাদের মালামাল লুঠ-পাট করা ও গণিমতের মাল হিসাবে ভাগ বন্টন করে নেয়া। মদিনায় গমনকারী মোহাম্মদের দলবলের বেঁচে থাকার জন্য একটা পেশা দরকার। গরীব মদিনাবাসীদের সামর্থ্য ছিল না সে দলকে বসিয়ে বসিয়ে খাওয়ানো। তারপরেও মক্কার বানিজ্য কাফেলার ওপর আক্রমনকে মদিনাবাসীরা কিন্তু ভাল চোখে দেখে নি প্রথমে। কারন এ ধরনের চোরা গোপ্তা আক্রমন, খুন, ডাকাতি তাদের আদর্শের পরিপন্থি ছিল। তখন মোহাম্মদ এর স্বপক্ষে যুক্তি দেখাতে গিয়ে বলেন-মক্কাবাসীরা তাদেরকে মক্কা থেকে বিতাড়িত করেছে আর তারা তাদের ধন সম্পদ কিছুই সাথে আনতে পারে নি যা মক্কাবাসীরা দখল করেছে। আর তাই তাদের অধিকার আছে মক্কার বানিজ্য কাফেলা আক্রমন করে তাদের ধন সম্পদ লুঠ-পাট করা। অথচ বাস্তব তথ্য হলো-মক্কা থেকে কেউ তাদেরকে বিতাড়িত করে নি। তারা নিজেরাই মক্কার সমাজে টিকতে না পেরে মদিনা বা অন্যত্র হিজরত করে চলে গেছে। মোহাম্মদের ইসলাম ধর্ম গ্রহনকারী মানুষের সাথে কোরাইশরা মেলা মেশা বন্দ করে দেয়, আর এ ধরনের অধিকার তাদের আছে কারন যারা তাদের ধর্ম ত্যাগ করবে তাদের অধিকার আছে ধর্ম ত্যাগকারীদের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করার। এর ফলে ধর্ম ত্যাগীরা যদি সে সমাজে টিকতে না পারে , এটা সম্পর্ক ছিন্নকারীর দোষ হতে পারে না।

সেকারনেই দেখা যায় ইসলাম একটা ভিত্তির ওপর দাড়িয়ে যাওয়ার পর পর এর মূল উৎপাদন ব্যবস্থা হয়ে দাড়ায় গণিমতের মাল তথা অন্যের ধন-সম্পদ লুট-পাট ও দখল এবং বিলি বন্টনের ওপর। অর্থাৎ ইসলামী অর্থনীতির মূল ভিত্তি হলো- অন্যের সম্পদ লুঠ-পাট ও ভাগ বন্টন করা।

মোহাম্মদের সময়ে পারস্য ও পতনশীল রোম সাম্রাজ্যের জৌলুসের খবর চারিদিকে রূপকথার গল্পের মত প্রচারিত ছিল। মোহাম্মদ সেসব খবর ভালমতোই জানতেন ও তার কিছু কিছু নিদর্শন তিনি কৈশোরেই দেখেছিলেন বানিজ্য উপলক্ষ্যে সিরিয়াতে গমন করে। সিরিয়া সে সময়ে রোম সাম্রাজ্যের অধীন ছিল আর গোটা আরব উপদ্বীপের লোকজন তাদের দরকারী জিনিস পত্র ক্রয় করার জন্য সেখানে গমন করত। সুতরাং একেবারে শৈশবেই মোহাম্মদের মনে আরব বাসীদের নিয়ে এ ধরনের একটা জৌলুস পূর্ণ রাজ্য গঠনের স্বপ্ন গড়ে ওঠে। এসব নিয়ে তিনি চিন্তাভাবনা করতে থাকেন। দীর্ঘ সময় নেন সিদ্ধান্ত নিতে। অবশেষে ৪০ বছর বয়েসে তিনি তার রাজনৈতিক দর্শন- ইসলামকে বাস্তবায়নের পথে অগ্রসর হন। কিন্তু তাঁর নিজ গোত্রীয় লোকজন তথা কুরাইশরা মোহাম্মদের মত চাল চুলোহীন হত দরিদ্র, স্ত্রীর ওপর নির্ভরশীল মর্যাদাহীন একটা এতিম মানুষের নেতৃত্ব মানতে অস্বীকার করে। আবু জেহেল, আবু লাহাব, আবু সুফিয়ান এরা ছিল সেই কুরাইশ গোষ্ঠীর সে সময়ের সবচেয়ে মর্যাদাশালী সম্ভ্রান্ত নেতা। এরা একেবারে শুরু থেকেই উপলব্ধি করতে পারে মোহাম্মদের মনের গোপন কথা। তারা বুঝতে পারে ইসলাম আসলে মোহাম্মদের রাজনৈতিক উচ্চাকাংখার একটা ধান্ধা ছাড়া আর কিছুই নয় ও এর মাধ্যমে মোহাম্মদ মক্কার শীর্ষ নেতা হতে চান। তাই তারা কখনই মোহাম্মদকে পাত্তা দেয় নি। একই সাথে এদের মর্যাদা, আভিজাত্য ও উগ্র জাতীয়তাবোধের কারনে মোহাম্মদের মত চাল চুলোহীন একজন রাস্তার মানুষকে তারা প্রতিপক্ষ হিসাবে কখনই স্বীকার করেনি। যে কারনে কোরানেই দেখা যায় যে মোহাম্মদকে তারা উন্মাদ, পাগল, বিকারগ্রস্থ এসব বলে উপহাস করছে। ঐ সব উগ্র আরব কোরাইশ নেতারা মোহাম্মদের উগ্র জাতিয়তাবাদী ফর্মূলা গ্রহন করতে রাজী ছিল কিন্তু তাকে নেতা মানতে রাজী ছিল না। আবার তারা দুর্বল প্রতিপক্ষকে কাপুরুষের মত হত্যা বা নিশ্চিহ্ন করতেও রাজী ছিল না। এটা ছিল তাদের একটা বিশেষ বৈশিষ্ট্য। এছাড়া মোহাম্মদ ছিল তাদের নিজেদেরই গোষ্ঠীর সদস্য ও বিশিষ্ট সম্ভ্রান্ত গোষ্ঠী নেতা মুত্তালিবের নাতি এবং আবু তালিবের ভাতিজা। আবু তালিব দীর্ঘ দিন ধরে মোহাম্মদকে আশ্রয় প্রশ্রয় দিয়ে এসেছে। তার কারনেই মূলত: কুরাইশ নেতারা মোহাম্মদকে তেমন কিছু বলত না , শুধুমাত্র তাকে পাগল, উন্মাদ, বিকারগ্রস্থ এসব নানাভাবে উপহাস করে ক্ষান্ত থাকত।

মোহাম্মদকে নানা রকম অত্যাচার নির্যাতন করত এমন কি বহুবার তাকে হত্যা করে ফেলার জন্য কুরাইশরা চেষ্টা করেছে বলে যে বহুল প্রচলিত কাহিনী গুলো আমরা শুনে থাকি, তার বস্তুত কোন নির্ভরযোগ্য সূত্র নেই। অন্তত: কোরান হাদিসে এ ধরনের কোন কাহিনী দেখা যায় না। বলা হয় তাকে নির্যাতন করত, কিন্তু কি ধরনের নির্যাতন করত এটা কোথাও পরিস্কার করে বলা নেই। গোটা হাদিস গুলো তন্ন তন্ন করে খুজেও মোহাম্মদকে নির্যাতনের কোন কাহিনী পাওয়া যায় না, পাওয়া যায় না কোরানেও। শুধুমাত্র হাদিসে একটা মাত্র কাহিনী আছে যাতে বলা হয়েছে- একবার মোহাম্মদ কাবা ঘরে বসে সিজদা করছিলেন তখন তার ঘাড়ের ওপর এক লোক উটের নাড়ি ভুড়ি ফেলেছিল। মোহাম্মদকে অত্যাচার নির্যাতনের যে প্রামানিক তথ্য আছে তা এ পর্যন্তই।

গত ১৪০০ বছর ধরে যে কথাগুলো স্বাড়ম্বরে প্রচার করে আসা হচ্ছে তা হলো নিম্নরূপ:

(১) কোরান গোটা মানবজাতির জন্য সর্বকালের জন্য প্রযোজ্য। অর্থাৎ কোরানের আদর্শ বা বিধি বিধান সর্ব কালের জন্য প্রযোজ্য।
(২) কোরান একটা সম্পূর্ন কিতাব। এতে কোন অসম্পূর্নতা নেই।
(৩) কোরান গত ১৪০০ বছর ধরে বিশুদ্ধ ও অবিকৃত অবস্থায় আছে।

কোরান গোটা মানবজাতির জন্য সর্বকালের জন্য যদি প্রযোজ্য হয় তাহলে এর বিধি বিধান গুলোকে মোটেও শুধুমাত্র মোহাম্মদের আমলের ঘটনা দ্বারা ব্যখ্যা করাটা যথাযথ নয়। তবে যদি নিতান্তই সেই সময়ের প্রেক্ষিতে কোন কোন আয়াত নাজিল হয়ে থাকে , তাহলে কোরান সর্বকালের জন্য আদর্শ হলে উক্ত আয়াতের বিধান সর্বকালের জন্য প্রযোজ্য হবে। যদি দেখা যায় উক্ত বিধান সর্বকালের জন্য আদর্শ নয় বা প্রযোজ্য নয় তাহলে কোরান সর্বকালের জন্য প্রযোজ্য হয় কেমনে? একটা উদাহরন দেয়া যায়- কোরান বলছে দাসীদের/যুদ্ধের পর বন্দী নারীদের সাথে বিবাহ বহির্ভুত সেক্স করা যাবে, তার মানে এখনও উক্ত প্রথা সমানভাবে কার্যকরী ও প্রযোজ্য কিন্তু বর্তমানে এটাকে অমানবিক বলে গণ্য করা হয়। ইসলামিষ্টরা বলছে এখন যেহেতু দাসপ্রথা নেই , তাই এটা এখন আর প্রযোজ্য নয়। কিন্তু খেয়াল করতে হবে দাসপ্রথা উচ্ছেদের কোন বিধান মোহাম্মদ বা তার আল্লাহ করে যায় নি। মোহাম্মদের বা তার পরবর্তী খলিফাদের বা মুসলিম বাদশাদের সময়ে মুসলমানরা অমুসলিমদের সাথে যুদ্ধ করে কোন অঞ্চল দখল করলে সেখানকার মানুষগুলোকে বন্দী করে দাস দাসি বানাত। যেহেতু এ ধরনের বিধান পরবর্তী কোন আয়াত দ্বারা রহিত হয় নি, তাই বর্তমানেও ইচ্ছা করলে মুসলমানরা শক্তিশালী হয়ে অমুসলিমদের আক্রমন ও পরাজিত করে তাদেরকে দাস দাসী বানাতে পারবে, আর পারবে দাসীদের সাথে বিবাহ বহির্ভুত সেক্স করতে। কোরান বলছে একজন পুরুষ একসাথে ৪টা বিয়ে করতে পারবে যা বর্তমান কালে একটা আদিম ও চরম অমর্যাদাকর বিধান হিসাবে গণ্য। অথচ কোরানের এ বিধানকেই আবার আধুনিক কালে নানা কসরত করে প্রমানের চেষ্টা করছে কিছু ইসলামি পন্ডিতরা যে আসলে আল্লাহ নাকি বলেছে একটামাত্র বিয়ে করতে। কোরান বলছে- ইহুদি খৃষ্টানদের সাথে সর্বদাই যুদ্ধ করে যেতে হবে যতক্ষন পর্যন্ত না তারা ইসলাম গ্রহন করে বা জিজিয়া কর প্রদান না করে। যা বলা বাহুল্য বর্তমানে মানব সমাজে চুড়ান্ত রকম ভাবে অশান্তি সৃষ্টি কারী বিধান। অথচ এখন প্রচারের চেষ্টা করছে যে এটা নাকি সেই তৎকালের সাময়িক বিধান, অথচ এ বিধান রহিত করনের কোন আয়াত কিন্তু কোরানে নাই। বিষয়টা দাড়াচ্ছে যে , ইসলাম দাবি করছে তার বিধি বিধান সব ঐশ্বরিক ও সকল সময়ের জন্য আদর্শ যার কোন পরিবর্তন নেই। তাহলে প্রশ্ন দাড়ায়-সেই বিধি বিধানকে কেন কাফির মুশরিক কর্তৃক তৈরী করা বিধি বিধানের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ন করতে হবে ? ইসলামী পন্ডিতরা কেন এত কসরত করছে ঐশ্বরিক বিধানকে কাফিরদের বিধানের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ করতে ? এটা করে কি তারা তাদের আল্লাহ , কোরান ও মোহাম্মদকে খাট করছে না ?

কোরান যদি সম্পূর্ন কিতাব হয় তাহলে কোরান পড়ে বুঝতে অন্য কোন কিতাব দরকার নেই। যেমন কোরান বলছে-

তবে কি আমি আল্লাহ ব্যতীত অন্য কোন বিচারক অনুসন্ধান করব, অথচ তিনিই তোমাদের প্রতি বিস্তারিত গ্রন্থ অবতীর্ন করেছেন? সূরা আল আন আম-৬:১১৪
আমি আপনার প্রতি গ্রন্থ নাযিল করেছি যেটি এমন যে তা প্রত্যেক বস্তুর সুস্পষ্ট বর্ণনা, হেদায়েত, রহমত এবং মুসলমানদের জন্যে সুসংবাদ। সূরা নাহল, ১৬:৮৯

অথচ যারা এটা দাবী করে তারাই বলে প্রতিটি আয়াত নাজিল হয়েছিল কোন না কোন প্রেক্ষিতে। আর প্রেক্ষিত ছাড়া আয়াতের অর্থ বোঝা যায় না। তো সেই প্রেক্ষিতটা যে কি তা কিন্তু কোরানে বিস্তারিত নাই, অধিকাংশ ক্ষেত্রে তা বোঝাও যায় না। তাহলে কোরানের অর্থ বাস্তবিক অর্থেই বোঝা যাবে কিভাবে ? এ যদি হয় কোরানের বাস্তব পরিস্থিতি তাহলে কোরান একটা সম্পূর্ন কিতাব হয় কেমনে?কোরান কে পরিপূর্নভাবে বুঝতে গেলে দরকার পড়ে হাদিস , সেই সময়কার ইতিহাস ও মোহাম্মদের জীবনী। এগুলো ছাড়া যদি কোন আয়াত বা আয়াত সমূহ ব্যখ্যা করার চেষ্টা করা হয় তখন ইসলামি পন্ডিতরাই বলে থাকে যে কোন আয়াত বা আয়াত সমূহের অর্থ জানতে তার প্রেক্ষাপট বিবেচনা করতে হবে, কিন্তু প্রেক্ষাপট তো কোরানে নেই, তাহলে তার অর্থ বোঝা কিভাবে সম্ভব? এ যদি হয় কোরানের অবস্থা তাহলে তা সম্পূর্ণ কিতাব হয় কিভাবে ? উক্ত দুটি আয়াতেও বলছে কোরান একটা বিস্তারিত গ্রন্থ যার মধ্যে আছে সব কিছু সুস্পষ্ট বর্ণনা। কিন্তু বাস্তবে তো তার দেখা মেলে না। তবে ব্যতিক্রম হলো – মোহাম্মদ কাকে বিয়ে করবে, পূত্রবধুকে বিয়ে করবে কি না, কার সাথে সেক্স করবে এসব বিষয়ে বলাবাহুল্য সুস্পষ্ট ও বিস্তারিত বর্ণনা আছে। যেমন-

এবং নারীদের মধ্যে তাদের ছাড়া সকল সধবা স্ত্রীলোক তোমাদের জন্যে নিষিদ্ধ; তোমাদের দক্ষিণ হস্ত যাদের মালিক হয়ে যায়-এটা তোমাদের জন্য আল্লাহর হুকুম। এদেরকে ছাড়া তোমাদের জন্যে সব নারী হালাল করা হয়েছে, শর্ত এই যে, তোমরা তাদেরকে স্বীয় অর্থের বিনিময়ে তলব করবে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করার জন্য-ব্যভিচারের জন্য নয়। অনন্তর তাদের মধ্যে যাকে তোমরা ভোগ করবে, তাকে তার নির্ধারিত হক দান কর। তোমাদের কোন গোনাহ হবে না যদি নির্ধারণের পর তোমরা পরস্পরে সম্মত হও। নিশ্চয় আল্লাহ সুবিজ্ঞ, রহস্যবিদ। সুরা নিসা, ৪:২৪

এখানে বলা হচ্ছে অন্য সকল সধবা নারীর সাথে সেক্স করা অবৈধ তবে যে সব নারীদেরকে যুদ্ধের সময় বন্দী করা হবে তাদের সাথে সেক্স করা যাবে তাই বলছে- তোমাদের দক্ষিণ হস্ত যাদের মালিক হয়ে যায়-এটা তোমাদের জন্য আল্লাহর হুকুম । শুধু তাই নয় সাময়িক বিয়ে বা মুতা বিয়েও যে করা যাবে তার প্রমানও আছে উক্ত আয়াতে। যেমন বলছে- এদেরকে ছাড়া তোমাদের জন্যে সব নারী হালাল করা হয়েছে, শর্ত এই যে, তোমরা তাদেরকে স্বীয় অর্থের বিনিময়ে তলব করবে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করার জন্য-ব্যভিচারের জন্য নয়। অনন্তর তাদের মধ্যে যাকে তোমরা ভোগ করবে, তাকে তার নির্ধারিত হক দান কর। – এখানে বলছে স্বীয় অর্থের বিনিময়ে তলব করতে ও যাদেরকে ভোগ করা হবে তাদেরকে তাদের হক দিয়ে দিতে হবে। আবার আদিখ্যেতা করে বলছে এটা ব্যভিচারের জন্য নয়। আজব কথা- অর্থের বিনিময়ে দুই একদিনের জন্য বিয়ে করা কি কোন বিয়ে ? এটা তো হলো বেশ্যা বৃত্তি। কোরান কিন্তু বেশ্যাবৃত্তিকেই বৈধ করেছে। অথচ প্রচার করা হয়- ইসলামে নাকি বেশ্যাবৃত্তি অবৈধ। উক্ত আয়াত মোতাবেক সে সময়ে মুসলমানরা এরকম সাময়িক বিয়ে করত যা বর্তমানে ইরানে এখনও চালু আছে। যেমন নিচের হাদিস-

সালামা ইবনে আল আকবা ও জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ বর্ণিত: আল্লাহর নবী আমাদের কাছে আসলেন ও সাময়িক বিয়ের অনুমতি প্রদান করলেন। সহি মুসলিম, বই-৮ , হাদিস-৩২৪৭

ইবনে উরাইজ বর্ণিত: আতি বর্ণিত যে জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ উমরা পালনের জন্য আসল এবং আমরা কিছু লোক তার কাছে গেলাম ও বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। তখন তিনি বললেন- আমরা নবীর আমলে সাময়িক বিয়ে করে আনন্দ করতাম ও এটা আবু বকর ও ওমরের আমল পর্যন্ত চালু ছিল। সহি মুসলিম, বই -৮, হাদিস- ৩২৪৮

তার মানে দেখা যাচ্ছে, খোদ মোহাম্মদ এ বিয়ে নামের বেশ্যাবৃত্তি চালু করে যান আল্লাহর নির্দেশে ৪:২৪ আয়াত মোতাবেক। আর পরবর্তীতে এ বিধান রহিত করনের কোন আয়াতও নাজিল হয় নি। তবে ওমরের আমলে ওমর এটা বন্দ করে দেয়। যা দেখা যায় নিচের হাদিসে-

জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ বর্ণিত: সামান্য কিছু খাদ্য বা অন্য কিছুর বিনিময়ে আমরা নবীর আমলে সাময়িক বিয়ে করতাম, এটা আবু বকরের আমলেও আমরা এটা করতাম তবে ওমর এটা নিষেধ করে দেন। সহি মুসলিম, বই ৮,হাদিস-৩২৪৯

উক্ত হাদিসে দেখা যায়, ওমরের আমলে ওমর এটা বন্দ করে দেয়। এটা কিভাবে সম্ভব ? আল্লাহর বিধান যা নাকি তার রসুল নিজে বাস্তবায়ন করে গেলেন সেটা ওমর বাতিল করার কে ? ওমর কি আল্লাহ ও তার রসুলের চেয়ে বেশী ক্ষমতাধর? সুতরাং ওমর এটা বন্দ করে দিলেও এটা বাতিল হয়ে যায় নি। মুসলমানরা ইচ্ছা করলে এখনও মহা সমারোহে এটা পালন করতে পারে, পালন করতে পারে কেয়ামত অবধি। তবে প্রেক্ষিত বিচার করলে বোঝা যায় ওমর এটা বন্দ করে দিয়েছিল কারন তার আমলে অনেক অঞ্চল মুসলমানদের করায়ত্বে আসে হাজার হাজার নারী বন্দী হয় যাদেরকে বিনা পয়সাতেই ধর্ষণ করা যেত, ফলে টাকা পয়সা বা অন্য কিছু দিয়ে সাময়িক বিয়ে করার প্রয়োজন ফুরিয়ে যায়। তাই এটা মনে করার কোন কারন নেই যে ওমর অতিশয় নীতিবান হয়ে এটা বন্দ করেছিল। সুতরাং যারা বেশ্যাবৃত্তি ইসলাম বন্দ করেছে বলেছে চিৎকার করে তাদের এ দাবীর কোন ভিত্তি নেই।

হে নবী! আপনার জন্য আপনার স্ত্রীগণকে হালাল করেছি, যাদেরকে আপনি মোহরানা প্রদান করেন। আর দাসীদেরকে হালাল করেছি, যাদেরকে আল্লাহ আপনার করায়ত্ব করে দেন এবং বিবাহের জন্য বৈধ করেছি আপনার চাচাতো ভগ্নি, ফুফাতো ভগ্নি, মামাতো ভগ্নি, খালাতো ভগ্নিকে যারা আপনার সাথে হিজরত করেছে। কোন মুমিন নারী যদি নিজেকে নবীর কাছে সমর্পন করে, নবী তাকে বিবাহ করতে চাইলে সেও হালাল। এটা বিশেষ করে আপনারই জন্য-অন্য মুমিনদের জন্য নয়। আপনার অসুবিধা দূরীকরণের উদ্দেশে। মুমিনগণের স্ত্রী ও দাসীদের ব্যাপারে যা নির্ধারিত করেছি আমার জানা আছে। আল্লাহ ক্ষমাশীল, দয়ালু। কোরান, আল আহ যাব-৩৩:৫০

উক্ত আয়াতেও দেখা যায় নবী যেমন ইচ্ছা খুশী বিয়ে করতে পারবে তার সবিস্তার বর্ণনা। সুতরাং গোটা কোরান পড়লে দেখা যায় শুধুমাত্র মোহাম্মদের ব্যক্তিগত খায়েশ চরিতার্থ করার ব্যপারে কোরান সব সময় সুনির্দিষ্ট ও বিস্তারিত বর্ণিত। এ থেকে যে কেউ মনে করতে পারে যে কোরান শুধুমাত্র মোহাম্মদের খায়েশ ও ব্যক্তিগত চাহিদা পূরণের জন্যই নাজিল হয়েছিল আর বলা বাহুল্য সেটা নাজিল করেছিল মোহাম্মদ নিজেই, কোন তথাকথিত আল্লাহ নয়। আর তার প্রমান আছে খোদ কোরানেই, যেমন –

নিশ্চয়ই এই কোরআন একজন সম্মানিত রসূলের বানী। সূরা হাক্কা, ৬৯:৪০
إِنَّهُ لَقَوْلُ رَسُولٍ كَرِيمٍ ৬৯:৪০
নিশ্চয় কোরআন সম্মানিত রসূলের বাণী। সূরা তাকবির, ৮১:১৯
إِنَّهُ لَقَوْلُ رَسُولٍ كَرِيمٍ ৮১:১৯

এবার আসা যাক কোরানের অবিকৃততা বিষয়ে। যারা এ বিষয়টিকে কোরানের অভ্রান্ততার উজ্জ্বল নমূনা হিসাবে তুলে ধরে তারা এমনভাবে বিষয়টিকে উপস্থাপন করে যেন আল্লাহ একটা সুন্দর বাধাই করা কোরান জিব্রাইলের মাধ্যমে মোহাম্মদের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছিল আর তারই হুবহু কপি আমরা বর্তমানে পাই। তারা কোনভাবেই বিবৃত করতে চায় না আসলে কোরান কিভাবে সংকলন করা হয়েছিল। তারা ভুলেও উল্লেখ করে না যে -এর কাছ থেকে ওর কাছ থেকে শুনে, খেজুর পাতা, কাঠ, হাড় এসবের ওপর লিখিত বিচ্ছন্ন আয়াতগুলোকে সংগ্রহ করে জোড়াতালি দিয়ে প্রথমে কোরানকে সংকলন করা হয়েছিল যাতে বহু আয়াত সংকলন থেকে বাদ পড়ে গেছিল, অনেকগুলোকে নিজেদের মত করে লেখা হয়েছিল। কোরান কিভাবে সংকলন করা হয়েছিল তার বিস্তারিত বিবরন পাওয়া যাবে – মোহাম্মদ ইসলাম- পর্ব- ৫ পর্ব-৬ এ পাওয়া যাবে। অথচ তোতা পাখির মত সেই একটাই বুলি আউড়ে যায়- কোরান গত ১৪০০ বছর ধরে অবিকৃত। এ প্রসঙ্গে সূরা আহযাবের ইবনে কাথিরের তাফসিরে দেখা যাক-

মুসনাদে আহমাদে বর্ণিত আছে যে- হযরত উবাই ইবনে কাব হযরত যির কে জিজ্ঞেস করেন, সূরা আহযাবে কতটি আয়াত গননা করা হয় ? উত্তরে তিনি বলেন- তেহাত্তরটি। তখন হযরত উবাই ইবনে কাব বলেন- না, না, আমি তো দেখেছি যে এ সূরার আকার প্রায় সূরা বাকারার সমান ছিল। এই সূরার মধ্যে এ আয়াতটিও ছিল: বুড়ো ও বুড়ি যদি ব্যভিচারে লিপ্ত হয়ে পড়ে তবে অবশ্যই তাদেরকে প্রস্তরাঘাতে হত্যা করে ফেল। এটা হলো আল্লাহর পক্ষ থেকে শাস্তি এবং আল্লাহ মহাপরাক্রমশালী ও বিজ্ঞানময়। (Musnad Ahmad, Hadith 21245) এর দ্বারা বুঝা যায় আল্লাহর নির্দেশে কতকগুলো আয়াত রহিত হয়ে গেছে। এসব ব্যপারে আল্লাহই সর্বাধিক জ্ঞানী। (১৫শ খন্ড, পৃষ্ঠা -৭৩৩, নীচে ইবনে কাথিরের বাংলা তাফসিরের লিংক আছে)

তাহলে দেখা গেল সূরা আহযাবের বহু আয়াত কোরানে সংকলন করা হয় নি। সূরা বাকারার মোট আয়াত সংখ্যা-২৮৬, তার অর্থ সূরা আহযাবের আয়াত সংখ্যাও প্রায় ২৮৬ বা তার আশ পাশে ছিল। কিন্তু বাস্তবে আছে মাত্র ৭৩ টি, যার সহজ অর্থ ২০০ এর বেশী আয়াত কোরানে সংকলন করা হয় নি। কিন্তু দু:খজনক বিষয় হলো কিছু কিছু লোক বর্তমানে আবার হাদিস বিশ্বাস করে না। তারা হাদিস বিশ্বাস করে না , ইবনে কাথিরের তাফসির বিশ্বাস করে না। তারা প্রচার করছে- বুখারী, মুসলিম, ইবনে মাজা, আবু দাউদ এরা নাকি সবাই ইসলামের দুশমন আর এরা হাদিস সংকলন করে গেছে ইসলামের সর্বনাশ করার জন্য( এ বিষয়ে বিস্তারিত লেখা ভবিষ্যতে আশা করছি)। কারন সহজেই বোধগম্য। হাদিসে এমন কিছু বিষয় আছে যা কোরানের সাথে সাংঘর্ষিক ও নবীর চরিত্রকে ভিন্নভাবে উপস্থাপন করে। কিন্তু কথা হলো হাদিস ছাড়া কোরানকে কিভাবে ব্যখ্যা করা যাবে, কিভাবে কোরান বোঝাই বা যাবে ?

আয়াত বাতিল করে তা কোরানে না ঢোকানোর বিষয়টি অন্যন্য হাদিস দ্বারাও সমর্থিত। যেমন- ব্যভিচারের শাস্তি যে পাথর ছুড়ে মারা এটা মুসলিম হাদিসেও পাওয়া যায়,

আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস বলেছেন যে ওমর ইবনে খাত্তাব বললেন- আল্লাহ সত্য সহকারে নবীর কাছে কোরান প্রেরন করেছিলেন যার মধ্যে পাথর ছুড়ে মারার শাস্তির কথা লেখা ছিল। আমরা সে কোরান তেলাওয়াত করতাম। আল্লাহর নবী নিজেই ব্যভিচারের শাস্তি স্বরূপ পাথর ছুড়ে মারার শাস্তি কার্যকর করেছিলেন আর তার মৃত্যুর পর আমরাও সেটা কার্যকর করেছি। আমার আশংকা হয় সময়ের সাথে সাথে লোকজন বলা বলি করবে- আমরা তো কোরানে ব্যভিচারের জন্য পাথর ছুড়ে মারার শাস্তির আয়াত দেখছি না। সহি মুসলিম, বই-১৭, হাদিস- ৪১৯৪

বর্তমান কোরানে ব্যভিচারের শাস্তি পাথর ছুড়ে মারার পরিবর্তে আশি দোররা মারার বিধান আছে। তার অর্থ আবু বকর হতে ওসমান পর্যন্ত যে কোরান সংকলন হয় তা থেকে উক্ত আয়াত বাদ দেয়া হয়েছে।

এভাবে আরও আয়াত বাদ দেয়ার ঘটনা আছে। যেমন-

আনাস বিন মালিক বর্নিত- ত্রিশ দিন ধরে আল্লাহর নবী তাদেরকে অভিশাপ দিলেন যারা বির মাউনায় সত্তর জন মুসলমানকে হত্যা করেছিল। এ জন্য তিনি হত্যকারী গোত্র রাল, ধাকবান ও উসাইয়া যারা আল্লাহ ও তার রসুলকে মানতে অস্বীকার করেছিল তাদের ধ্বংস কামনা করেছিলেন। আর যারা নিহত হয়েছিল তাদের উদ্দেশ্যে একটা আয়াত নাজিল হয়েছিল যা পরে বাতিল করা হয় তা ছিল এরকম- “ আমাদের লোকদেরকে খবর পৌছে দাও যে আমরা আমাদের প্রভূর সাথে মিলিত হয়েছি, তিনি আমাদেরকে নিয়ে প্রীত আর আমরা তার সাথে প্রীত”। সহি বুখারী, ভলুম-৪, বই-৫২, হাদিস-৬৯

হুবহু একই হাদিস বর্ণিত আছে সহি বুখারী, ভলুম-৪, হাদিস নং-২৯৯ তেও।

বলা বাহু্ল্য উক্ত আয়াত কিন্তু বর্তমান কোরানে নেই।
এ বিষয়ে খুবই কৌতুহলোদ্দীপক একটা হাদিস আছে , যেমন-

ইবনে আব্বাস বর্নিত- ওমর বললেন, “ আমাদের সর্বশ্রেষ্ট কোরান তেলাওয়াতকারী হলেন উবাই ও সর্ব শ্রেষ্ট বিচারক হলেন আলী এবং এ সত্ত্বেও আমরা উবাই এর কিছু বক্তব্য বাদ দিয়েছি তার কারন উবাই বলেন, “ আল্লাহর নবীর কাছ থেকে আমি যা শ্রবন করেছি তার কোন অংশই আমি বাদ দেব না যদিও আল্লাহ বলেছেন: যেসব আয়াত আমরা রহিত করি বা যেসব আয়াত সমূহ ভুলিয়ে দেই কিন্তু তার পরিবর্তে আমরা তাদের চাইতে শ্রেয়তর বা সমতূল্য আয়াত নাজিল করি ( কোরান, বাকারা-২:১০৬)” সহি বুখারী, ভলুম-৬,বই-৬০, হাদিস-৮

উক্ত হাদিস সমূহ থেকে বোঝা যায়-খোদ মোহাম্মদ নিজেই বহু আয়াত তার জীবদ্দশায় বাতিল করে দিয়ে তা মুখস্ত করতে নিষেধ করেছেন। যদি নিষেধ না করে থাকেন তাহলে মোহাম্মদের মৃত্যূর পর তার সাগরেদরা যে কোরান সংকলন করেছে তা থেকে তাদের ইচ্ছামত আয়াত বাদ দিয়ে সংকলন করেছে। আর উক্ত বুখারী, বই -৬০, হাদিস-৮ থেকে বোঝা যাচ্ছে যে উবাই নিজে নিজে একটা কোরান সংকলন করেছিল বা নিদেনপক্ষে বহু সূরা ও হাদিস ব্যক্তিগত ভাবে লিখে রেখেছিল যার মধ্যে বর্তমান কোরানে নেই এমন বহু আয়াত ছিল আর সেসব অবশ্যই মোহাম্মদ নাজিল করেছিলেন। এখন প্রশ্ন হলো- এভাবে বহু আয়াত যে কোরানে লিপিবদ্ধ করা হয় নি, এটার জন্য দায়ী কে , মোহাম্মদ নাকি তার সাগরেদরা ? বলা বাহুল্য উক্ত হাদিসটি বলছে – এ কাজটা করেছে মোহাম্মদের সাগরেদরা। কারন উক্ত হাদিস কিন্তু মোহাম্মদের কথিত হাদিস নয়, এটা ওমরের বক্তব্য কেন্দ্রিক হাদিস। অর্থাৎ মোহাম্মদ মারা যাওয়ার পর, যখন আবু বকর বা ওসমান কোরানকে সংকলন করতে উদ্যত হলো তখন ওমর বা মোহাম্মদের অন্যান্য প্রভাবশালী সাহাবীরা তাদের প্রভাব খাটিয়ে বা একত্রে জোট বেধে কোন কোন আয়াত কোরানে রাখা যাবে আর কোন কোন আয়াত বাদ দিতে হবে তা নিজেরাই ঠিক করে অত:পর তা কোরানের মধ্যে লিপিবদ্ধ করে। তার চেয়ে মজার বিষয় হলো- কোরানের মধ্যেই এমন অনেক আয়াত আছে যেগুলোর কার্যকারীতা পরবর্তীতে নাজিল হওয়া আয়াত দ্বারা বাতিল হয়ে গেছে।এখন বাতিলকারী আয়াত(নাসিক) ও তাদের দ্বারা বাতিল হয়ে যাওয়া আয়াত (মানসুক) একই সাথে যদি কোরানে থাকতে পারে, তাহলে অন্য বাতিল আয়াত গুলো কেন কোরানে থাকল না বা সংকলিত হলো না ? একটু গভীরভাবে চিন্তা করলে এর উত্তর বের করা যায়।

উক্ত বাতিল হয়ে যাওয়া আয়াতের পরিবর্তে নতুন কোন উন্নততর আয়াত নাজিল হয় নি। শুধু বাতিল হয়ে গেছে অপ্রয়োজনীয়, অযৌক্তিক বা অপ্রাসঙ্গিক বিধায়। যেহেতু শুধু বাতিল হয়ে গেছে, পরিবর্তে কোন উন্নতর আয়াত নাজিল হয় নি তাই সেগুলোকে কোরান থেকে বাদ দেয়া হয়েছে। একাজটা দক্ষতা ও সূক্ষ্মভাবে করার জন্যই আবু বকর বা ওসমান তারা কেউই মোহাম্মদ কর্তৃক সত্যায়িত কোন কোরান বিশেষজ্ঞকে কোরান সংকলনের দায়িত্ব দেয় নি। মোহাম্মদ কর্তৃক সত্যায়িত কোরান বিশেষজ্ঞদের নাম পাওয়া যায় নিচের হাদিসে-

মাসরুক বর্ণিত- আমরা আব্দুল্লাহ বিন আমর এর নিকট গমন করতাম ও কথা বার্তা বলতাম। একদা ইবনে নুমাইর তার নিকট আব্দুল্লাহ বিন মাসুদের নাম উল্লেখ করল। তখন তিনি(আমর)বললেন-তোমরা এমন একজন ব্যাক্তির নাম বললে যাকে আমি অন্য যে কোন মানুষের চেয়ে বেশী ভালবাসি। আমি আল্লাহর রসুলকে বলতে শুনেছি- চারজন ব্যাক্তির কাছ থেকে কোরান শিক্ষা কর, অত:পর তিনি ইবনে উম আবদ্( আব্দুল্লাহ মাসুদ) এর নাম থেকে শুরু করে মুয়াদ বিন জাবাল, উবাই বিন কাব ও শেষে আবু হুদায়ফিয়ার নাম উল্লেখ করলেন। সহি মুসলিম, বই-৩১, হাদিস-৬০২৪

কোরান সংকলনের জন্য আবু বকর বা ওসমান দায়িত্ব দেয় সাবিত ইবনে তাবিতকে। উক্ত চারজনের একজনকেও এ দায়িত্বটা দেয়া হয় নি যদিও উক্ত চারজন আবু বকরের আমলে বেঁচে ছিল, এমন কি ওসমানের আমলেও উক্ত চার জনের দুজন বেঁচে ছিল, কিন্তু কেন ? কারন ওমর কথিত উক্ত বুখারী, বই -৬০, হাদিস-৮ হাদিস থেকে পরিস্কার বোঝা যাচ্ছে যে , ওমর বা তাদের মত প্রভাবশালী লোকদের সাথে উক্ত চার জনের মতের মিল ছিল না। এখানে দেখা যাচ্ছে যে কোরান সংকলনের ক্ষেত্রে ওমরের ভূমিকা সর্বাধিক কারন এই ওমরই সর্ব প্রথম আবু বকরকে কোরান সংকলনের জন্য চাপ দেয়। বলা বাহুল্য, আবু বকর বা ওসমান কেউই কিন্তু কোরান সংকলন করতে রাজি ছিল না কারন তারা বিশ্বাস করত , খোদ মোহাম্মদ তার জীবদ্দশায় কোরান সংকলন করেন নি কারন কোরানেই বলা হয়েছে –

আমি স্বয়ং এ উপদেশ গ্রন্থ অবতারণ করেছি এবং আমি নিজেই এর সংরক্ষক। সূরা-আল হিজর, ১৫:০৯ মক্কায় অবতীর্ণ।

আবু বকর ও ওসমান দুজনই আল্লাহর আদেশ লংঘন করতে ভীত ছিল। তারা মনে করত যেখানে আল্লাহ নিজেই কোরান সংরক্ষন করবে বলে ঘোষণা দিয়েছে সেখানে সেই কাজটা তারা করলে তা হবে মহাপাপ। অথচ ওমর মোটেই তা মনে করত না। আর সে কারনেই ওমরই বার বার চাপ প্রয়োগ করে কোরান সংকলন করতে বাধ্য করে। আবার সেই একই ওমর বুখারী, বই -৬০, হাদিস-৮ এ বলছে- আমরা উবাই এর অনেক বক্তব্য (কোরানের বানী) বাদ দিয়েছি ।

খেয়াল করতে হবে, কোরান সংকলনের দায়িত্ব নিচ্ছে আবু বকর ও ওসমান অথচ কোরানে কি সংকলন করা হবে না হবে , তা নির্ধারন করছে ওমর। আর আবু বকর বা ওসমানের অমন বুকের পাটা নেই যে তারা ওমরের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে। আর বলাই বাহুল্য মোহাম্মদ কর্তৃক সত্যায়িত চারজন যে কোরান সংকলনের দায়িত্ব পায় নি তারও কারন এই ওমর। ওমরই চায় নি তারা কোরান সংকলন করুক, কেননা তা হলে উক্ত চারজনের সাথে মতের অমিল হবে আর এ হলে নিজেদের মনের মত করে কোরান সংকলন করা সম্ভব হবে না।

এখন প্রশ্ন হলো- যে আয়াত গুলো বাতিল হয়ে গেছে সেগুলোকে কেন কোরান থেকে বাদ দেয়া হলো ? তাছাড়া এত তাড়াতাড়ি আল্লাহর বানী বাতিল হয় কিভাবে ? আল্লাহর বানী হবে শাশ্বত, চিরন্তন যা সর্বকালের জন্য প্রযোজ্য হবে। অথচ দেখা যাচ্ছে কোরানের আল্লাহ আজকে একটা বানী দিচ্ছে, দুদিন পর সেটা বাতিল করে দিচ্ছে। অর্থাৎ আল্লাহর বানীর প্রকৃতি সম্পূর্নই মানুষের বানীর মত, যেমন অস্থিরমতি মানুষ আজ একটা বলে তো কালকে অন্যটা বলে। কোরানের আল্লাহর এহেন অস্থিরমতি স্বভাব দৃষ্টে এরকম সিদ্ধান্তে আসা যেতেই পারে যে কোরান আসলে কোন সবজান্তা আল্লাহর কাছ থেকে আসে নি, এসেছে কোন মানুষ থেকে।

এবারে কোরান থেকে কেন কিছু আয়াত সম্পূর্ন বাদ দেয়া হলো সংকলনের সময় তা ব্যখ্যা করা যাক। আমাদের হাতে তেমন কোন দলিল নেই আসলে কোন কোন আয়াত সম্পূর্ন বাতিল করে কোরান থেকে বাদ দিয়ে দেয়া হয়েছে। শুধুমাত্র কিছু নিদর্শন আছে হাদিসে। সহি মুসলিম, হাদিস নং-৪১৯৪ থেকে দেখা যায় ব্যভিচারের শাস্তি পাথর ছুড়ে হত্যা যা মোহাম্মদ নিজ জীবনে বাস্তবায়নও করেছেন।খেয়াল করতে হবে এ একই শাস্তি আছে তৌরাত কিতাবেও মুসার বিধানে। যেমন-

কোন পুরুষ লোক যদি পরস্ত্রীর সাথে মিলিত অবস্থায় ধরা পড়ে তবে পরস্ত্রীর সাথে যে ধরা পড়বে তাকে ও সেই স্ত্রীকে দুজনকেই প্রানদন্ডে দন্ডিত হতে হবে। এভাবে তুমি ইস্রায়েলের মধ্য থেকে অপকর্ম উচ্ছেদ করবে। যদি কেউ কোন পুরুষের বাগদত্তা কোন কুমারীকে শহরের মধ্যে পেয়ে তার সঙ্গে মিলিত হয় তবে তোমরা সেই দুজনকে বের করে নগরদ্বারে এনে পাথর ছুড়ে মেরে ফেলবে। কেননা শহরের মধ্যে থাকলেও সে সাহায্যের জন্য চিৎকার করেনি। দ্বিতীয় বিবরণ, অধ্যায়-২২, বাক্য-২২-২৪

এখন প্রশ্ন হলো হুবহু একই শাস্তির বিধান মোহাম্মদ কেন চালু করেছিলেন? উত্তর সোজা। মোহাম্মদ তো দাবী করছেন তিনি ইব্রাহীম , মূসা, ইসা নবীর পরবর্তী শেষ নবী। সুতরাং শুধুমাত্র ইহুদিদেরকে নিজ দলে আনার জন্যেই মোহাম্মদ মূসা নবীর বিধানকে অনুসরণ করা শুরু করেন। ইহুদিদেরকে নিজের দলে টানতে পারলে খৃষ্টানদেরকেও দলে টানা সহজ হবে কারন খৃস্টান ধর্মের ভিত ইহুদি ধর্মে তথা তৌরাত কিতাবে নিহিত। যে কারনে দেখা যায়, কোরানের বিধি বিধানের একটা বড় অংশই তৌরাত কিতাব থেকে ধার করা।

আহলে কিতাবের মানুষজন তথা ইহুদি খৃষ্টানদের মধ্যে ইহুদিরা ছিল কট্টর মোহাম্মদ বিরোধী এবং তারাই মূলত: মোহাম্মদকে নবী হিসাবে কোনভাবেই মেনে নিতে পারেনি। তার বড় কারন হলো তাদের তৌরাত কিতাবে ভবিষ্যতে যে একজন মহাপুরুষের আগমনের কথা বলা ছিল তা আসবে ইব্রাহীম পূত্র ইসহাকের পূত্র ইয়াকুব তথা ইসরাইলের বংশধর থেকে যাদেরকে ইসরাইলি বলা হতো। অথচ মোহাম্মদ সে বংশধারা থেকে আসেনি পরন্তু মোহাম্মদ দাবী করছেন তিনি আসছেন ইব্রাহীম পূত্র ইসমাইলের বংশধারা থেকে। কিন্তু মক্কাতে যে সত্যি সত্যি ইব্রাহীম তার স্ত্রী হাজেরা সহ ইসমাইলকে নির্বাসন দিয়ে গিয়েছিল তার কোন ঐতিহাসিক বা তৌরাতীয় প্রমান নেই। এটা ছিল সম্পূর্নতই মোহাম্মদের একটা নতুন মনগড়া বানান কল্পকাহিনী। ইহুদীরাও সেটা খুব ভালমতো ধরতে পেরেছিল। একই সাথে মোহাম্মদের দরকার ছিল নিজেকে নবী হিসাবে প্রমান ও প্রতিষ্ঠিত করতে তৌরাত কিতাবের ভবিষ্যদ্বানী কৃত মহাপুরুষ যে তিনি তা প্রমান করা। তা কোনভাবেই প্রমান করতে না পেরেই মোহাম্মদ মূলত মূসা নবীর বিধান গুলোকে অনুসরণ ও বাস্তবায়ন করার কৌশল অবলম্বন করেন যাতে করে ইহুদীদেরকে নিজের দলে ভেড়ানো যায়। তৌরাত কিতাবে সেই কথিত ভবিষ্যদ্বানীটি একটু দেখা যাক-

তোমার পরমেশ্বর প্রভু তোমার জন্য তোমার ভাইদের মধ্য থেকে আমারই মত একজন নবীর উদ্ভব ঘটাবেন, তারই কথায় তোমরা কান দেবে। ———তখন প্রভু আমাকে বললেন, ওরা ঠিক কথাই বলেছে। আমি ওদের জন্য তোমার ভাইদের মধ্য থেকে তোমার মত একজন নবীর উদ্ভব ঘটাব, ও তার মুখে আমার বানী রেখে দেব, আমি তাকে যা কিছু আজ্ঞা করব তা সে বলবে। দ্বিতীয় বিবরনী: অধ্যায়- ১৮, বাক্য- ১৫-১৮

ইসলামী পন্ডিতরা কিন্তু তারস্বরে প্রচার করে চলেছে তৌরাতের উক্ত ভবিষ্যদ্বানী করা হয়েছিল মোহাম্মদ সম্পর্কে। বিষয়টি কি সত্যি তাই ? মোটেও না। একটু গভীর ভাবে চিন্তা করলেই তা বোঝা যাবে। উক্ত বানীতে বলছে- প্রভু বলছে,তোমার ভাইদের মধ্য থেকে তোমার মত একজন নবীর উদ্ভব ঘটাব। এই ভাই গুলো কারা ? ইসলামী মতে সেই ভাই হলো ইসমাইল কারন ইসমাইল হলো ইব্রাহীমের দাসী হাজেরার পূত্র। ইসলামী পন্ডিতরা দাবী করে ইব্রাহীমের পূত্র ইসমাইল থেকেই নবী মোহাম্মদ আগমন করেছে। কিন্তু আসল বিষয় হলো ইসমাইলের বংশধারাকে ইসরাইলী বলা হয় না। এছাড়া বাইবেলের কোথাও বলা নাই ইব্রাহীম তার দাসী হাজেরাকে তার সন্তান ইসমাইল সহ মক্কাতেই নির্বাসন দিয়েছিল। সেই প্যালেস্টাইন থেকে সোজা পথেও মক্কার দুরত্ব ছিল মরুভূমির ভিতর দিয়ে কম পক্ষে ১২০০-১৩০০ কি.মি.। একটা দুধের বাচ্চাকে নিয়ে হাজেরা এতদুর পথ মরুভূমির ওপর দিয়ে পাড়ি দিবে এটা আষাড়ে গল্পের চেয়েও আজগুবি। ইব্রাহীম ও ইসমাইল নিয়ে নানা অসঙ্গতির বিবরন পাওয়া যাবে এখানে- কে কোরবানী হয়েছিল , ইসমাইল নাকি ইসহাক? । ভৌগলিক প্রেক্ষাপট বিবেচনা করলে হাজেরা সহ ইসমাইলকে মক্কাতে নির্বাসন দেয়া এক কাল্পনিক কাহিনী ছাড়া আর কিছু নয়। অথচ মোহাম্মদ তার নবুয়ত্ব প্রমান করার জন্য এক আজগুবি কিচ্ছা আমদানী করেন যার সাথে তৌরাতের কোন মিল নেই এবং এ ধরনের কাহিনীর কোন সূত্র বা ইঙ্গিত তৌরাত বা গসপেলে নেই। যাহোক, মূলত: উক্ত ভাইরা ছিল ইব্রাহীমের পূত্র ইসহাক , তার পূত্র জ্যাকব যার অন্য নাম ইসরাইল তার বংশধরেরা। এ বংশধরদের নাম ইসরাইলি হয় মূলত তাদের আদি পিতা ইসরাইলের নাম করনে। জ্যকব বা ইসরাইলের ছিল ১২ টা পূত্র যাদের নাম তৌরাতে পাওয়া যায় আর তারা হলো- রুবেন, সিমিওন, লেভি, জুডা, গাদ, আশের, ড্যান, নপ্তালি, জোসেফ ,বেঞ্জামিন, মন:শি ও ইফ্রাইম(http://catholic-resources.org/Bible/History-Abraham.htm) বার পূত্র থেকে যে বংশধারা তৈরী হয় তাদেরকেই বলা হয় ইসরাইলি বা ইহুদি। এদের বংশধারাকেই মূসা মিশর থেকে বের করে নিয়ে প্যলেস্টাইনে নিয়ে আসে। ইসমাইলের বংশধারাকে নয়। মূসা নবী আগমনও করেছিল এ ইসরাইলি বংশধারাতেই। মুসা নবীর কাছে তার সদাপ্রভু ঈশ্বর এ বংশধারাতেই একজন তার মত মহামানবের আগমন করাবেন বলেই ভবিষ্যদ্বানী করেছিলেন। মক্কায় অবস্থিত কোন গোত্রে নয়। এখন মোহাম্মদ নিজেকে নবী দাবী করছেন তৌরাতের সেই ভবিষ্যদ্বানী অনুযায়ী, তাই মোহাম্মদকে উক্ত বংশ ধারার হতে হবে। কোন ভাবেই সেটাকে ঐতিহাসিক ভাবে প্রতিষ্ঠিত করতে না পেরে , গল্প ফাঁদেন যে ইসমাইল সহ তার মা হাজেরাকে যে ইব্রাহীম নির্বাসন দিয়েছিল তা দিয়েছিল মক্কাতে তা সে কাহিনী শুনতে যতই আজগুবি মনে হোক না কেন। এখানে মোহাম্মদ যে স্ববিরোধীতাটা করছেন তা হলো তিনি তৌরাতের উক্ত ভবিষ্যদ্বানীটা গ্রহন করছেন কিন্তু তৌরাতের অন্য ঘটনা অর্থাৎ হাজেরা ও ইসমাইলকে যে মক্কায় নয় প্যলেস্টাইনের আশে পাশে নির্বাশন দিয়েছিল সেটা গ্রহন করছেন না। তিনি এটাও গ্রহন করছেন না যে তৌরাতে ইব্রাহীম ইসমাইলকে নয় ইসহাককে আল্লাহর নামে কোরবানী দিতে নিয়ে গেছিলেন। যদি যুক্তির খাতিরে ধরেও নেই যে হাজেরা ও ইসমাইলকে মক্কাতেই নির্বাসন দেয়া হয়েছিল তাহলেও কিন্তু তৌরাত বর্ণিত ভবিষ্যদ্বানী অনুযায়ী মোহাম্মদ যে সেই নবী তা প্রমানিত হয় না। কারন তৌরাতের সদাপ্রভু ঈশ্বর ইব্রাহীমকে নয় মূসাকে বলছেন যে তার ভাইদের মধ্য থেকে অর্থাৎ ইসরাইলীদের মধ্য হতে একজন নবীর আগমন ঘটবে। সেই ইব্রাহীমের পর থেকে হাজার বছর চলে গেছে, এ দীর্ঘ সমযের মধ্যে ইসমাইলের বংশধররা বহুদুরে সরে গেছে।তাছাড়া ইব্রাহীমের বংশধারার সবাই ইসরাইলী নয়। শুধুমাত্র তার দৌহিত্র জ্যকবের থেকে উৎপন্ন বংশধারাকেই ইসরাইলি বলা হয় যার বর্ণনা পূর্বেই দেয়া হয়েছে। ইব্রাহীমের পূত্র ইসহাকের দুই ছেলে জ্যকব ( ইসরাইল) ও ইসাউ, কিন্তু ইসাউ এর থেকে উৎপন্ন বংশধারাও ইসরাইলি বংশধারার মধ্যে পড়ে না, তাদেরকে বলা হয় এডোমাইট। সুতরাং কোন ভাবেই কিন্তু মোহাম্মদ কে সেই ভবিষ্যদ্বানীর নবী প্রমান করা যায় না। প্রাথমিক দিকে মোহাম্মদ এতটা বুঝতে পারে নি। ইহুদীরা বার বার যখন তাকে উক্ত বংশধারা অনুযায়ী চ্যলেঞ্জ করতে থাকে, তখন তার টনক নড়ে আর তখন থেকেই তিনি প্রচার শুরু করেন যে তৌরাত ও ইঞ্জিল কিতাব ইহুদি ও খৃষ্টানরা বিকৃত করে ফেলেছে।

মোহাম্মদ আরও একটা সমস্যা করে ফেলেছেন। তা হলো – যীশু খৃষ্টকে নবী হিসাবে স্বীকার করা। খৃষ্টানরা বিশ্বাস করে তৌরাতের উক্ত দ্বিতীয় বিবরনী: অধ্যায়- ১৮, বাক্য- ১৫-১৮ অনুযায়ী যে মহাপুরুষের আগমন করার কথা তা হলো যীশু খৃষ্ট যাকে খৃষ্টানরা আবার ঈশ্বর বলেও বিশ্বাস করে। এখন মুসলমানরা যদি যীশু খৃষ্টকে শুধুমাত্র একজন নবী হিসাবেও স্বীকার করে , তাহলে অবশ্যই সে ব্যক্তি হবে এই যীশু খৃষ্ট কারন এ ব্যক্তি উক্ত ইসরাইলি বংশধারা থেকে আগমন করেছেন যা তৌরাত সমর্থন করে, আর তৌরাতের এ ভবিষ্যদ্বানীকে কোরান তথা ইসলামও সমর্থন করে। তাহলে একই সাথে তারা মোহাম্মদকে কিভাবে উক্ত ভবিষ্যদ্বানীকৃত নবী দাবি করে ? উক্ত ভবিষ্যদ্বানীতে তো মাত্র একজন নবীর কথা বলা হয়েছে , দুই জন নয়। তাহলে ? সুতরাং যীশু খৃষ্টকে একজন নবী হিসাবে স্বীকার করাটা ইসলামের জন্য বুমেরাং হয়েছে যা মোহাম্মদ নিজে বুঝতে পারেন নি। আর তাই এখন মোহাম্মদকে নবী প্রমান করতে গিয়েই মূলত: তৌরাত ও ইঞ্জিল কিতাব বিকৃত হয়ে গেছে এটা দাবী করা ছাড়া তাদের আর করণীয় কিছুই নেই।

মোহাম্মদকে নবী বানাতে গিয়ে মুসলিমরা কি পরিমান গন্ডগোল ও গোজামিল সৃষ্টি করেছে তার বর্ণনা পাওয়া যাবে গসপেলের নিচের বর্ণনায়-

তথাপি আমি সত্যই বলিতেছি আমার যাওয়া তোমাদের পক্ষে ভাল কারন আমি না গেলে সেই সহায় তোমাদের নিকট আসিবে না, কিন্তু আমি যদি যাই তাহলে আমি তোমাদের নিকট তাহাকে পাঠাইয়া দিব। যোহন, অধ্যায়-১৬, বাক্য-৭
তিনি, সত্যের আত্মা, যখন আসিবেন, তখন পথ দেখাইয়া তোমাদেরকে সমস্ত সত্যে লইয়া যাইবেন, কারন তিনি আপনা হইতে কিছু বলিবেন না, কিন্তু যাহা শুনেন তাহাই বলিবেন এবং আগামি ঘটনাও তোমাদিগকে জানাইবেন। তিনি আমাকে মহিমাহ্ণিত করিবেন, কেননা যাহা আমার তাহাই লইয়া তোমাদিগকে জানাইবেন। পিতার যাহা যাহা আছে সকলই আমার; এই জন্য বলিলাম, যাহা আমার তিনি তাহাই লইয়া থাকেন ও তোমাদিগকে জানাইবেন। যোহন, অধ্যায়-১৬, বাক্য-১৩-১৫

উপরোক্ত যোহন ১৬:৭ বাক্যে বলছে যীশু চলে যাওয়ার পর তিনি একজন কে পাঠাইয়া দিবেন। সুতরাং মনে হতে পারে সেই লোক হলো মোহাম্মদ। কিন্তু এখানে প্রশ্ন হলো- যীশু এমন কি ক্ষমতাধর যে তিনি একজন নবী পাঠানোর ক্ষমতা রাখেন? একজন নবী পাঠানোর ক্ষমতা রাখেন শুধুমাত্র একজন স্রষ্টা বা ঈশ্বর বা আল্লাহ, কোন নবী নয়। অথচ এখানে যীশু পরিস্কার বলছেন তিনি একজন কে পাঠিয়ে দেবেন। তার মানে এখানে যীশু নিজেকে ঈশ্বর বলেই পরোক্ষে প্রকাশ করছেন। ১৬: ১৪ বাক্যে বলছে পিতার যাহা যাহা আছে সকলই আমার। তার মানে পিতার যে ক্ষমতা যীশুরও সেই ক্ষমতা। এখন ঈশ্বর যেহেতু দুইজন হতে পারে না , তাহলে সেই পিতা ও যীশু একই ব্যক্তিত্ব, অর্থাৎ যীশুই স্বয়ং ঈশ্বর। খেয়াল করতে হবে গসপেলে যীশুকে কিভাবে চিত্রিত করা হয়েছে। ইসলামি মতেও, কোরানে যীশু একজন অসাধারণ নবী, কারন আল্লাহ তাকে জীবিত অবস্থায় বেহেস্তে তুলে নিয়ে গেছেন যা অন্য কোন নবীর ক্ষেত্রে ঘটে নি, মৃত্যুকে জয় করার এ ঘটনাই যীশুকে অন্য সব নবীর চেয়ে ভিন্ন মর্যাদায় অভিষিক্ত করেছে যদিও অত:পর কোরান যীশুকে খুব হালকাভাবে উপস্থাপন করেছে। বিষয়টা খোদ মোহাম্মদের মৃত্যুর চাইতে কত বেশী মর্যাদাকর সেটা বুঝতে গেলে জানতে হবে মোহাম্মদ কিভাবে মারা গেলেন, সেটা জানতে হবে। গোজামিলটা আসলে এখানে নয়। গোজামিলটা হলো তৌরাতের কিতাবের সেই নবী বা মহাপুরুষ যদি যীশু খৃষ্ট হয় তাহলে একই সাথে তৌরাত ও গসপেল কিতাবের ভবিষ্যদ্বানীকৃত নবী মোহাম্মদ হয় কিভাবে ? তৌরাত ও গসপেল পড়লে পরিস্কার বোঝা যায় দুটো কিতাবের ভবিষ্যদ্বানী দুজনের সম্পর্কে বলা হচ্ছে, একজন নয়। ইসলামি মতে তৌরাত কিতাবের ভবিষ্যদ্বানীকৃত নবী যদি যীশু না হয় তাহলে যীশুও তো একজন মহান মর্যাদাশীল নবী, তার সম্পর্কে ভবিষ্যদ্বানী কোথায় ? গসপেলে যেখানে যীশুকে ঈশ্বরের সাথে তুলনা করা হচ্ছে, সে বিষয়টাকে ইসলাম গ্রহন করছে না, সেটাকে বলছে বিকৃত মনগড়া, অথচ একই কিতাবে একটা বানোয়াট ভবিষ্যদ্বানী করা হয়েছে সেটাকে ধরা হচ্ছে মোহাম্মদের সম্পর্কে, কি অদ্ভুদ স্ববিরোধী যুক্তি! বিকৃত ও আজগুবি কিতাব থেকে নেয়া যে কোন তথ্যই তো আজগু্বি ও বানান হবে , তাই নয় কি ? ইসলামকে সত্য ও মোহাম্মদকে নবী বানাতে গিয়ে ইসলামি পন্ডিতরা সত্যি সত্যি এখন উন্মাদের মত আচরন করছে আর ভাবছে তাদের এর পাগলামী কেউ বুঝতে পারছে না। পাগল মনে করে সে ছাড়া বাকি সবাই পাগল।

গসপেলে যীশু খৃষ্ট বলছে- আমি চলে যা্ওয়ার পর আর একজন নবী পাঠাব- এ বিষয়টাকে ইসলাম গ্রহণ করছে কিন্তু যীশু খৃষ্ট কিভাবে একজন নবীকে পাঠাবার ক্ষমতা রাখে সে বিষয়ে মানুষকে অন্ধকারে রাখে, বুঝতে দেয় না ও মিথ্যাচার করে। এছাড়াও গসপেলে সর্বদা তাকে যীশু খৃষ্ট বলা হচ্ছে, অথচ কোরানে বলা হচ্ছে ইসা নবী। এটা যেন মামাবাড়ির আবদার। যেমন আপনার নাম হলো আবুল , কোন একজন এসে বলল না আপনার নাম হলো কাবুল, অমনি আপনি কাবুল হয়ে যাবেন ? খৃষ্টান ধর্মের যীশু খৃষ্টকে এভাবে নিজেদের মনগড়া নাম দিয়ে মোহাম্মদ যে কান্ডটি করেছেন, তা হলো-

১. খৃষ্টান ধর্মে অযাচিত হস্তক্ষেপ করে এ ধর্মটাকে অসম্মান করেছেন
২. যীশু খৃষ্টকে ঈশা নবী নাম দিয়ে একজন মহান নবীর নাম বিকৃত করে মর্যাদাহানি করেছেন।

অন্য ধর্মকে এভাবে যথেচ্ছ অপমান ও অমর্যাদা করে নিজে কোন খারাপ কাজ করেছেন এ বোধটা মোহাম্মদের মধ্যে জন্ম তো নেয়নি , বরং নিজের ইসলাম ধর্মকে কেউ বিশ্বাস না করলে বা অপমান করলে তাকে হত্যা করার বিধান জারি করে চরম স্ববিরোধীতার জন্ম দিয়েছেন, যেমন ০৯:০৫ ও ০৯:২৯ আয়াতদ্বয়।

এভাবে যীশুর নাম পাল্টে দিয়ে মোহাম্মদ ইসলামেরও ভিত নড়িয়ে দিয়ে গেছেন প্রকারান্তরে। কারন এখন খৃষ্টানরা যদি অস্বীকার করে যে তাদের ঈশা বলে কেউ কোন দিন ছিল না. তাহলে মুসলমানদের প্রমান করার কোন উপায় নেই যে ঈশাই হলো যীশু খৃষ্ট। সে ক্ষেত্রে ঈশা নবীর গল্প কাহিনী স্রেফ রূপ কথার গল্পে পরিনত হতে বাধ্য যা কোরানকে ধূলায় ধুসরিত করে দেয়। মুসলিম পন্ডিতদের মাথা এতটাই মোটা যে এ সামান্য লজিক বোঝার ক্ষমতা তাদের নেই।

যাহোক , যেখানে তাদের কথিত ঈশা নবীর মহান বিদায় ( জীবন্ত বেহেস্তে গমন) ঘটেছিল পৃথিবী থেকে ইসলামি মতে,. সেখানে কিরকম অপমানকর ও যন্ত্রনাদায়ক মৃত্যু মোহাম্মদ বরণ করেছিলেন তা জানা যায় কিছু হাদিসে। যেমন-

আনাস বিন মালিক বর্ণিত- এক ইহুদি নারী রান্না করা ভেড়ার মাংস বিষ মাখিয়ে মোহাম্মদকে দিল যা থেকে মোহাম্মদ কিছুটা খেলেন। পরে নারীটিকে মোহাম্মদের নিকট আনা হলো, তার সাহাবীরা জিজ্ঞেস করল- তাকে কি হত্যা করব? তিনি বললেন- না। অত:পর আমি নবীর মুখে বিষক্রিয়া লক্ষ্য করতে থাকলাম। সহি বুখারী, বই -৪৭, হাদিস-৭৮৬

আয়শা বর্ণিত- যখন নবী কঠিন পীড়ায় আক্রান্ত হলেন, তার অবস্থা শোচনীয় হয়ে উঠল তখন তিনি অন্য স্ত্রীদের কাছ থেকে আমার কাছে থাকার অনুমতি প্রার্থনা করলেন যাতে আমি তাকে সেবা করতে পারি ও সবাই তাকে অনুমতি দিল। তিনি দুইজন লোকের সাহায্যে ঘর থেকে বের হলেন তখন তার পা দুটো মাটিতে ছেচড়াচ্ছিল। তিনি আল আব্বাস ও অন্য একজন মানুষের ঘাড়ে ভর রেখে চলছিলেন। উবাইদ উল্লাহ বলল আমি আব্বাসকে জিজ্ঞেস করলাম যার কথা আয়শা বলেছিলেন – তুমি কি জান অন্য জন কে ছিল ? আব্বাস বলল- সে ছিল আলি ইবনে তালিব। সহি বুখারী, বই- ১১, হাদিস-৬৩৪

উক্ত হাদিস থেকে জানা যাচ্ছে যে মোহাম্মদ বিষ মাখা মাংস খেয়ে ক্রমশ: অসুস্থ হয়ে পড়ছিল, যার ফলে তার অবস্থা এতই খারাপ হয়ে যায় যে তাকে টেনে হিচড়ে নিয়ে আয়শার ঘরে তুলতে হয়। অবশেষে কঠিন যন্ত্রনা ভোগ করে মোহাম্মদকে মৃত্যূ বরন করতে হয়। এটাই ছিল দুনিয়ার সর্বশ্রেষ্ট মানুষ আল্লাহর তথাকথিত রসুল মোহাম্মদের জীবনাবসানের করুন পরিনতি। যা নিচের হাদিস থেকেও জানা যাবে –

Narrated Ibn Abbas: ‘Umar bin Al-Khattab used to let Ibn Abbas sit beside him, so ‘AbdurRahman bin ‘Auf said to ‘Umar, “We have sons similar to him.” ‘Umar replied, “(I respect him) because of his status that you know.” ‘Umar then asked Ibn ‘Abbas about the meaning of this Holy Verse:– “When comes the help of Allah and the conquest of Mecca . . .” (110.1)
Ibn ‘Abbas replied, “That indicated the death of Allah’s Apostle which Allah informed him of.” ‘Umar said, “I do not understand of it except what you understand.”
Narrated ‘Aisha: The Prophet in his ailment in which he died, used to say, “O ‘Aisha! I still feel the pain caused by the food I ate at Khaibar, and at this time, I feel as if my aorta is being cut from that poison.”
Sahih Bukhari 5:59:713

Narrated Urwa: ‘Aisha said, “Allah’s Apostle in his fatal illness, used to ask, ‘Where will I be tomorrow? Where will I be tomorrow?”, seeking ‘Aisha’s turn. His wives allowed him to stay wherever he wished. So he stayed at ‘Aisha’s house till he expired while he was with her.” ‘Aisha added, “The Prophet expired on the day of my turn in my house and he was taken unto Allah while his head was against my chest and his saliva mixed with my saliva.” ‘Aisha added, “Abdur-Rahman bin Abu Bakr came in, carrying a Siwak he was cleaning his teeth with. Allah’s Apostle looked at it and I said to him, ‘O ‘AbdurRahman! Give me this Siwak.’ So he gave it to me and I cut it, chewed it (it’s end) and gave it to Allah’s Apostle who cleaned his teeth with it while he was resting against my chest.”
Sahih Bukhari 5:59:731

Narrated ‘Aisha: The Prophet expired in my house and on the day of my turn, leaning against my chest. One of us (i.e. the Prophet’s wives ) used to recite a prayer asking Allah to protect him from all evils when he became sick. So I started asking Allah to protect him from all evils (by reciting a prayer ). He raised his head towards the sky and said, “With the highest companions, with the highest companions.” ‘Abdur-Rahman bin Abu Bakr passed carrying a fresh leaf-stalk of a date-palm and the Prophet looked at it and I thought that the Prophet was in need of it (for cleaning his teeth ). So I took it (from ‘Abdur Rahman) and chewed its head and shook it and gave it to the Prophet who cleaned his teeth with it, in the best way he had ever cleaned his teeth, and then he gave it to me, and suddenly his hand dropped down or it fell from his hand (i.e. he expired). So Allah made my saliva mix with his saliva on his last day on earth and his first day in the Hereafter.
Sahih Bukhari 5:59:732

Anas reported that a Jewess came to Allah’s Messenger (may peace be upon him) with poisoned mutton and he took of that what had been brought to him (Allah’s Messenger). (When the effect of this poison were felt by him) he called for her and asked her about that, whereupon she said: I had determined to kill you. Thereupon he said: Allah will never give you the power to do it. He (the narrator) said that they (the Companion’s of the Holy Prophet) said: Should we not kill her? Thereupon he said: No. He (Anas) said: I felt (the affects of this poison) on the uvula of Allah’s Messenger.
Sahih Muslim 26:5430
Narrated AbuSalamah: Muhammad ibn Amr said on the authority of AbuSalamah, and he did not mention the name of AbuHurayrah: The Apostle of Allah (peace be upon him) used to accept presents but not alms (sadaqah).
This version adds: So a Jewess presented him at Khaybar with a roasted sheep which she had poisoned. The Apostle of Allah (peace be upon him) ate of it and the people also ate.
He then said: Take away your hands (from the food), for it has informed me that it is poisoned. Bishr ibn al-Bara’ ibn Ma’rur al-Ansari died.
So he (the Prophet) sent for the Jewess (and said to her): What motivated you to do the work you have done?
She said: If you were a prophet, it would not harm you; but if you were a king, I should rid the people of you. The Apostle of Allah (peace be upon him) then ordered regarding her and she was killed. He then said about the pain of which he died: I continued to feel pain from the morsel which I had eaten at Khaybar. This is the time when it has cut off my aorta.
Abu Dawud 39:4498

উপরিউক্ত হাদিসগুলো প্রমান করে কি অসম্মানজনকভাবে কঠিন যন্ত্রনা ভোগ করে মোহাম্মদকে মারা যেতে হয়। বড় অপমানকর মৃত্যূ ছিল এটা দুনিয়ার শ্রেষ্ট নবী মোহাম্মদের যা অধিকাংশ বান্দারাই জানেন না। শুধু এই একটি বিষয় প্রমান করে যে বস্তুত: যীশু খৃষ্ট ছিলেন মোহাম্মদের চেয়ে অনেক অনেক বেশী সম্মান ও মর্যাদার অধিকারী- খোদ কোরানের মতেই যা বোঝার ক্ষমতা আল্লাহ আবার মুসলমানদেরকে দেয় নি। আফশোস!!!

যারা প্রচার করে তৌরাত ও ইঞ্জিল কিতাব বিকৃত হয়ে গেছে তাদের মধ্যে একজনও সম্ভবত: উক্ত কিতাব সমূহ জীবনে একবার স্পর্শ করেও দেখে নাই। না দেখে না পড়ে , তোতা পাখির মত মোহাম্মদের আমল থেকে একই কথা বলে আসছে বিগত ১৪০০ বছর। বলা বাহুল্য এটা একটা বিশাল মিথ্যা, আর এভাবেই এক মহা মিথ্যার ওপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে ইসলাম নামক এক ভয়াবহ দানব যে দানব ১.৫ বিলিয়নের এক বিশাল জনসংখ্যাকে গ্রাস করতে উদ্যত।

বাংলা কোরান
বাংলা কোরান
বুখারী, মুসলিম, আবু দাউদ ও মালিক মুয়াত্তার হাদিস
শুধুমাত্র বুখারী শরিফ
ইবনে কাথিরের বাংলা তাফসীর
মোহাম্মদ ও ইসলাম, পর্ব-১5
মোহাম্মদ ও ইসলাম, পর্ব-১৪
মোহাম্মদ ও ইসলাম, পর্ব-১৩
মোহাম্মদ ও ইসলাম , পর্ব-১২
মোহাম্মদ ও ইসলাম, পর্ব-১১
মোহাম্মদ ও ইসলাম, পর্ব-10
মোহাম্মদ ও ইসলাম, পর্ব-9
মোহাম্মদ ও ইসলাম, পর্ব-8
মোহাম্মদ ও ইসলাম, পর্ব-7
মোহাম্মদ ও ইসলাম, পর্ব-6
মোহাম্মদ ও ইসলাম, পর্ব-5
মোহাম্মদ ও ইসলাম, পর্ব-4
মোহাম্মদ ও ইসলাম, পর্ব-3
মোহাম্মদ ও ইসলাম, পর্ব-2
মোহাম্মদ ও ইসলাম, পর্ব-1