[উৎসর্গঃ ছোটবেলার অংকের শিক্ষক, নিহার রঞ্জন স্যারকে- শাষন আর ভালবাসার অসাধারন এক সমন্বয়ে স্কুলের দিনগুলোতে আমাদেরকে হাতে ধরে গড়ে তুলেছিলেন যিনি]

মোটা ভ্রু, পুরু গোঁফ
যায়না কো দেখা চোখ;
এলোমেলো, পাকা-কাঁচা
দাঁড়িগুলো খোঁচা খোঁচা।
অতি ভারী চশমা,
রাখা নাকে সমস্যা;
সামনেতে ঝুঁকলে,
রাখতেন আগলে।
চশমার ওপরে
ফাঁকা দিয়ে নজরে
দেখতেন চারদিক,
ইতি-উতি সবদিক।
ডান হাতে ধরা বেত
পালাবে যে ভূত-প্রেত;
ছাত্র তো নষ্যি-
পিটিয়ে মুনিষ্যি
বানাতেন কতকাল
তুলে পিঠের ছাল।
বাম হাতে ডাষ্টার,
ভয়ানক মাষ্টার;
ঠকাঠক মাথাতে
সাথে দুই হাঁটুতে,
বাকি থাকে দু’কনুই
গোঁড়ালীও ছুঁই ছুঁই;
যেথা যেথা হাড়গোড়,
কষে ধরে পিঠমোড়
ডাষ্টারের বাড়িতে
পিটিয়ে যে মাটিতে
দিতেন যে শোয়ায়ে
সাথে নাম ভুলিয়ে।
যোগ-বিয়োগ, ঐকিক
গুন-ভাগ, পরিমাপিক
ভুল হলে অংকে
সবাই আতংকে
কাটাতো মুহুর্ত
গুঁটিসুঁটি সব যত;
সঁপাসঁপ বেত দিয়ে
ছাল তুলে পিটিয়ে
হতেননা ক্ষ্যান্ত,
সাথে অবিশ্রান্ত
ঠকাঠক ডাষ্টার
মারতেন মাষ্টার।
তারপর তিনি নিজে
উঠতেন চোখে ভিজে;
পেটানোর দুঃখেতে
ছাত্রদের সমুখেতে
আকুল হতেন তিনি
ঝরিয়ে চোখের পানি।
এমনটা ভালবাসা
পাওয়া আজ দূরাশা;
স্নেহের এমন দাবী
হারিয়ে গেছেই সবি।
স্মৃতিগুলো তবু আছে
বেঁচে যে মনের মাঝে;
শ্রদ্ধার আসনে
মনের সিংহাসনে
বসা তিনি উঁচু মাথা;
ঘুরে-ফিরে তার কথা
মনে পড়ে বার বার
নিহার রঞ্জন স্যার।।