আমি নগ্নপায়ে অগণিত মাইল হেঁটেছি
ধূলি ধূসরিত মেঠোপথে,
কখনো শুকনো পাতার উপরে
মর্মর শব্দ তুলে,
কখনো ফসলের মাঠের পাশ দিয়ে,
কখনো শ্রাবণের থৈ থৈ জলে-
কিংবা কাদায় পা ডুবিয়ে।
কখনো উপকূল ঘেঁষে
সমুদ্রের লোনাজলে ভেজা মাটিতে,
কখনো পৌষের ভোরের
শিশিরভেজা ঘাসের উপর দিয়ে,
কখনো গোধূলির ধূলিতে,
কখনো বা শুভ্র শিউলি বিছান পথে।

রাখাল বালকের সাথে সাথে
আমিও ছুটেছি ছাগলছানার পিছু পিছু,
সুতো ছিঁড়ে যাওয়া ঘুড়ির নাগাল পেতে
আমি উড়েছি মেঘের দেশে দেশে।
তামাম বুনোফুলের গন্ধ নিতে
আমিও ছুটেছি ভ্রমরের সাথে সাথে
এফুল হতে ওফুলে।
ফুলের রেণুর সাথে বাতাসে উড়ে গেছি অজানায়।

ঝড়ের দিনে তীব্র ঝড়ের সাথে দৌড়েছি;
খুঁজেছি বাবুইপাখির বাসা।
ঘোর বরষায় অথৈ বিলের ধারে
পোষা হাঁসের বাচ্চার জন্য কুড়িয়েছি শামুক।
সাঁতরে গিয়ে মাঝপুকুর থেকে
তুলেছি শাপলা।
ডুব দিয়ে পুকুরের তলদেশ হতে
কুড়িয়ে এনেছি ঝিনুক।

আমার চরণে জড়িয়ে থাকতো
নববর্ষার জল, রাঙাধূলি,
স্নিগ্ধ শিশির, ফসলের সোনালি খড়কুটো,
শিউলির গন্ধ, মাটির সুঘ্রাণ।

আজ সেই সকল সোনালি স্পর্শ,
সুধাময় স্মৃতি ,অনুভূতি, সুগন্ধ,
সকল মধুর উৎপাত,
নিঃশব্দে ক’রে যায় চরণপাত;
ক্ষণে ক্ষণে কেবল মনের গহীনে।