:: নিউইয়র্ক (প্রথমার্ধ) :: নিউইয়র্ক (দ্বিতীয়ার্ধ) :: পোর্টল্যান্ড (ওরিগন) :: সিলিকন ভ্যালি (ক্যালিফোর্নিয়া) :: ওয়াশিংটন ডিসি :: ডেট্রয়েট (মিশিগান) :: রিচ্‌মন্ড (ভার্জিনিয়া) ::

কলাম্বাসের নতুন পৃথিবী আবিষ্কারের পর কয়েক শতক পার হয়ে গেলেও ইউরোপিয়ান, বিশেষ করে স্প্যানিশরা ব্যস্ত থেকেছে মূলত আমেরিকার পূর্ব উপকূল নিয়ে। এদিকে, পশ্চিম উপকূলে যে ক্যালিফোর্নিয়ার বিস্তীর্ণ উপকূল পড়ে আছে, সে-দিকে বিশেষ নজর দেবার সুযোগই হয়নি। তাই বহুদিন পর ১৭৭৭ সালে বর্তমান মেক্সিকো ও ক্যালিফোর্নিয়ায় নিযুক্ত তৎকালীন স্প্যানিশ গভর্নর “ফেলিপ ডি নিভে” প্রথম চিন্তা করেন পশ্চিম উপকূলে একটি শহর গড়ে তোলার। তার সেই চিন্তার ধারাবাহিকতায় এবং অত্যাবশ্যকীয়ভাবে স্থানীয় নেটিভ ইন্ডিয়ানদের অত্যাচার ও উচ্ছেদ করার মধ্য দিয়ে ১৭৮১ সালের সেপ্টেম্বার মাসে গোড়াপত্তন হয় নতুন এক শহরের। ফেলিপ ডি নিভে”র সেই শহরের নাম লস এঞ্জেলেস। অনেকে ডাক নামে ডেকে থাকেন দ্যা সিটি অব অ্যাঞ্জেলস্‌। ১৮২১ সালে মেক্সিকো যখন স্প্যানিশদের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভ করে, তখন লস এঞ্জেলেস শহরও অন্তর্ভূক্ত হয় স্বাধীন মেক্সিকোতে। কিন্তু, মহাজনের বাড়ির পাশে, দরিদ্র প্রতিবেশির ঘরে রূপসী বউ থাকবে, সেটা মহাজনের সইবে কেন। অতএব, মহাজনীয় সংস্কৃতির সভ্যতন্ত্রীয় ধারা অনুযায়ী ১৮৪৮ সালের ২রা ফেব্রুয়ারি লস এঞ্জেলেস চলে আসে আমেরিকার দখলে।

        ছবিঃ আমেরিকার মানচিত্রে ক্যালিফোর্নিয়া এবং উপরে ডানে লস অ্যাঞ্জেলেস (লাল অংশগুলো)

লস এঞ্জেলেস- আমেরিকার দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর। প্রথম নিউ ইয়র্ক আর তৃতীয় শিকাগো। স্টেইট হিসেবে ক্যালিফোর্নিয়া প্রায় তিনটা বাংলাদেশের সমান। তাই এটিকে ব্যবস্থাপনার সুবিধার্থে নর্দার্ন এবং সাউদার্ন ক্যালিফোর্নিয়া নামে দুই ভাগে ভাগ করা হয়ে থাকে। নর্দার্ন ক্যালিফোর্নিয়ার নাম করা শহর স্যান ফ্র্যান্সিসকো। অন্যদিকে, লস এঞ্জেলেস ছাড়াও সাউদার্ন ক্যালিফোর্নিয়ায় আছে স্যান ডিয়েগো। তবে পুরো স্টেইটে সবচেয়ে বড় আর নামী শহর লস এঞ্জেলেস। তাই, দৃষ্টিনন্দন স্টেইট ক্যালিফোর্নিয়ার সবচেয়ে বড় শহর হিসেবে লস অ্যাঞ্জেলেস কিছুটা বিশেষ অবস্থান নিয়েই আছে। তার উপর এখানে আছে বিশ্ববিখ্যাত হলিউড, আছে ডিজনিল্যান্ড, আছে অস্কার আয়োজনকারী কোডাক থিয়েটার, আছে ইউনিভার্সাল স্টুডিওসহ নামকরা আর সব স্টুডিও। সবার উপরে আছে মন মাতানো প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আর অনন্য প্রশান্ত মহাসাগর। এখানকার ডিজনিল্যান্ড-ই বিশ্বের একমাত্র ডিজনিল্যান্ড যেটি ডিজনিল্যান্ডের প্রতিষ্ঠাতা ওয়াল্ট ডিজ্‌নির সরাসরি তত্ত্বাবধানে নির্মিত হয়েছে।

লস এঞ্জেলেস-কে বলা হয়ে থাকে বিশ্বের সৃজনশীল রাজধানী। এখানকার অধিবাসীদের প্রতি ছয়জনের একজন কোনো না কোনো সৃষ্টিশীল প্রতিষ্ঠানে কর্মরত। ইউনিভার্সিটি অব সাউদার্ন ক্যালিফোর্নিয়ার দেয়া তথ্য অনুযায়ী, গোটা মানব সভ্যতার ইতিহাসে পৃথিবীর আর কোনো শহরে একসাথে এত বেশি শিল্পী-লেখক-নির্মাতা বসবাস করেনি। তবে, সাথে সাথে অন্য আরেকটা ব্যাপার তারা বলতে ভুলে গেছে। আমেরিকার ইতিহাসে অন্য আর কোনো শহরে একসাথে এত বেশি ট্র্যাফিক জ্যাম সৃষ্টি হয়নি। যাত্রাবাড়ি কিংবা কাচপুর ব্রিজের জ্যামের মত না হলেও, ট্র্যাফিক জ্যামের জন্য গোটা আমেরিকায় কুখ্যাত এই শহর।

এত এত দর্শনীয় জিনিস এই শহরে। কোনটা রেখে কোনটা দেখার মত অবস্থা। তবে সবকিছুকে ফেলে রেখে সবার আগে ছুটে গেছি সানসেট বুলাভার্ড দেখতে। এটি লস এঞ্জেলেস শহর থেকে হলিউড যাবার রাস্তা। ১৯১১ সালে এই সানসেট বুলাভার্ডে ছোট্ট একটি স্টুডিও নির্মানের মধ্য দিয়ে শুরু হয় হলিউড ম্যুভির যাত্রা। তারপর থেকে হলিউড নামটিকে বিশ্বের দরবারে নতুন করে পরিচয় করিয়ে দেবার প্রয়োজন হয়নি আর। কালক্রমে চলচ্চিত্র নির্মাতা, অভিনেতা-অভিনেত্রী, কলা-কুশলী সবাই এসে ভীড় করেছে এখানে। সে-রকমই এক হলিউড অভিনেত্রী নরমা ডেসমন্ড এর কল্পিত কাহিনী নিয়ে ১৯৫০ সালে নির্মিত হয়েছে সানসেট বুলাভার্ড নামক ম্যুভিটি। এটি আমেরিকার সর্বকালের সেরা চলচ্চিত্রগুলোর মধ্যে একটি। নরমার ভুমিকায় গ্লোরিয়া সোয়ানসন এর অসামান্য অভিনয়ে নির্মিত এই চলচ্চিত্রটিই সানসেট বুলাভার্ড-এর প্রতি আমার আকর্ষণের অন্যতম কারণ।

সানসেট বুলাভার্ড-এ ড্রাইভ করতে করতে যখন ছুটে চলছি তখনই হঠাৎ আমাদের সাথে থাকা সাফি চোখমুখে ঝিলিক এনে বলে উঠলো, জেনিফার অ্যানিস্টোন। মনে মনে বলি, আরে বুঝলাম, এটা না হয় সানসেট বুলাভার্ড, তাই বলে রাস্তাঘাটে সেলিব্রিটি পাওয়া যাবে না-কি! অবিশ্বাসের দৃষ্টিতে তাকাতেই সাফি ক্রিকেটার আশরাফুলের মত কনফিডেন্স নিয়ে আরো জোরে বলে উঠে সিরিয়াসলি, জেনিফার অ্যানিস্টোন। তার আত্মবিশ্বাসের তীব্রতা দেখে আমি আর অনিক গাড়ী থেকে বের হয়ে এগিয়ে গেলাম। ধন্যবাদ ট্রাফিক সিগন্যাল। সাফির জেনিফার অ্যানিস্টোন সেটাতে আটকা পড়েছে। কাছে গেলাম! দেখলাম!! জেনিফার অ্যানিস্টোনতো দূরে থাক, তার চেহারার ধারে-কাছের কেউও না। তবে এটা ঠিক যে, সুন্দরী প্রতিযোগিতা হলে এই মেয়ে যদি দশে আট পায়, জেনিফার অ্যানিস্টোন পাবে দশে সাত। গাড়িতে ফিরে গিয়ে সাফিকে বললাম, তাড়াতাড়ি বিয়ে কর, না হলে সব মেয়েকে দেখলেই জেনিফার অ্যানিস্টোন মনে হবে। বলেই টের পেলাম, আমরা দুই বিবাহিতই গাড়ী থেকে বের হয়ে জেনিফার অ্যানিস্টোন দেখতে গেছি, সাফি কিন্তু গাড়ীতেই বসে ছিলো।

        ছবিঃ সানসেট বুলাভার্ড ১

        ছবিঃ সানসেট বুলাভার্ড ২

এরপর বিশ্বখ্যাত হলিউড সাইন দেখবার পালা। ১৯২৩ সালে তৈরী করা এই সাইনটির নির্মানকালীণ নাম ছিলো HOLLYWOODLAND। হলিউডে অবস্থিত মাউন্ট লি এর উপর এই সাইনটি তৈরী করা হয়েছিলো সেখানকার এক হাউজিং কোম্পানির বিজ্ঞাপণ হিসেবে। পরবর্তীতে সেটি হাউজিং কোম্পানির বিজ্ঞাপণ থেকে হয়ে গেলো গোটা হলিউড তথা চলচ্চিত্র জগতের বিজ্ঞাপণ। সে-সময়কার ১৩টি বর্ণের প্রতিটিই ছিলো ৩০ ফুট চওড়া আর ৫০ ফুট উচ্চতা সম্পন্ন। পরবর্তীতে ১৯৪৯ সালে নাম পরিবর্তন করে শুধু HOLLYWOOD করা হয়। বর্তমানে এর প্রতিটি বর্ণ ৪৫ ফুট উচ্চতা সম্পন্ন অর্থাৎ প্রায় ছয়তলা উঁচু দালানের সমান এবং পুরো সাইনটি ৩৫০ ফুট প্রস্থ বিশিষ্ট অর্থাৎ এরকম আট-নয়টা সাইন জোড়া লাগালে এক কিলোমিটার হয়ে যাবে।

        ছবিঃ হলিউড ১

        ছবিঃ হলিউড ২

        ছবিঃ হলিউড ৩

আমাদের অন্য দুই সফরসঙ্গী ফাহিমা এবং অনিক-ফাহিমার তিনি বছরের ছেলে ফারিস। ফাহিমা ফারিস-কে সাথে নিয়ে ডিজনিল্যান্ডএ আছে। ও কিছুক্ষণ পরপর ফোন করে জানান দিচ্ছে, বিশাল লাইন, ব্যাপক রোদ, এটা খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না, সেটা খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না, টিকিট প্রিন্ট হচ্ছে না, ইত্যাদি ইত্যাদি। কিন্তু, সেটা কোনো সমস্যা না, সমস্যা হলো যখন সে জিজ্ঞেস করে বসছে, তোমরা কি করছো? একটা মানুষ যন্ত্রণা আর বিড়ম্বনার মধ্যে সময় পার করছে, এরকম একজন মানুষকে কেমন করে বলা সম্ভব যে, আমরা সে-সময় হলিউড সাইনের নীচে বসে বসে হাওয়া খাচ্ছি।

                    ছবিঃ হলিউড ৪

                    ছবিঃ হলিউড ৫

হলিউড সাইন দেখে বেভারলি হিলস্‌-এর পথ ধরে চললাম। বেভারলি হিলস্‌ এর রাস্তায় ড্রাইভ করার সময়ই বুঝতে পারা যায় সেখানে সৌখিন মানুষদের বসবাস। অপূর্ব সুন্দর বাড়ীঘর। আসপাশের সবকিছু যেন শিল্পীর তুলিতে আঁকা। আর দুনিয়াতে যত আধুনিক মডেলের গাড়ি আছে তার সবটাই মনে হয় দেখতে পাওয়া যায় এখানকার রাস্তায়। অনেক হলিউড তারকার বসবাস দামী এই এলাকায়। অজানা এক বাড়ির সামনে গাড়ী ঘুরাতেই মনে হলো এরশাদের মত কেউ একজন সানগ্লাস পরে গাড়ী চালিয়ে বাসা থেকে বের হয়ে গেলো। সাফি অত্যন্ত কোমল কণ্ঠে বললো, এই যে মাইকেল ডগলাস। তার গলার সুর শুনে মনে হলো, সে প্রতিদিন সকাল-বিকাল দুই বেলা করে মাইকেল ডগলাসকে দেখে। অনিক বলে, হ্যাঁ, মাইকেল ডগলাস। আমি ভাবলাম, আমি যদি এই ঐতিহাসিক মুহূর্তে চুপ করে থাকি, তার মানেটা দাঁড়াবে ওরা দুজন মাইকেল ডগলাসকে দেখে বাড়ী ফিরবে আর আমি ফিরব এরশাদকে দেখে। নিরুপায় হয়ে মান বাঁচাতে গিয়ে আমিও সাথে সাথে বলে উঠলাম, আরে তাইতো! মাইকেল ডগলাস!! তিনজন তিনজনের মুখের দিকে তাকিয়ে নিশ্চিত হয়ে গেলাম এ মাইকেল ডগলাস ছাড়া আর কেউ হবারই নয়।

          ছবিঃ বেভারলি হিলস্‌ ১

          ছবিঃ বেভারলি হিলস্‌ ২

          ছবিঃ বেভারলি হিলস্‌ ৩

          ছবিঃ বেভারলি হিলস্‌ ৪

          ছবিঃ বেভারলি হিলস্‌ ৫

এদিকে রাতের খাবারের জন্য যেতে হবে আদনানের বাসায়। আমি, অনিক, ফাহিমা আর আদনান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে একসাথে পড়েছি। দুপুরে ফোন করে আদনান জিজ্ঞেস করে, কি খেতে চাস? ভাত, খিচুড়ি না পোলাও? এই মরার দেশে সবকিছু পাওয়া গেলেও সহজে সাদা ভাত পাওয়া যায় না। তাছাড়া রান্নার ঝামেলাও কম হবে। তাই ওকে বলি, প্লেইন রাইস, সাদা ভাত। ও বলে, আরে ধুর্‌! কি সাদা ভাত খাবি। খিচুড়ী না-হয় পোলাউ খা। ওর আগ্রহ দেখে আমি বলি, আচ্ছা, ঠিক আছে, পোলাউ। ও বলে, আরে ধ্যাত্‌! পোলাউ কি খাবি, খিচুড়ী খা। আমি বলি, ওকে! তাই হোক। কিন্তু, ব্যাপারটা দাঁড়ালো, তার দেয়া অপশানের মধ্যে যতই আমি প্রথম এবং দ্বিতীয়তা পছন্দ করি না কেন, ঘুরে ফিরে সে গিয়ে তিন নাম্বারটাতেই ঠেকলো। তাহলে, অপশান দেয়ার মানেটা কি! মানেটা বুঝা গেলো ওর বাসায় যাওয়ার পর। আদনানের বউ জানালো, শহরে অতিথি আসলে আদনানের না-কি ঈদের আনন্দ। কারণ, অতিথিদের নাম করে সে তার পছন্দের সব খাবার-দাবার রান্না করার পাঁয়তারা করে। তবে, তা-সে যেমন করেই হোক না কেন, সে-খাবারের কথা মনে থাকবে অনেক দিন। খুবই সুস্বাদু আর মনোহর সেই সুখাদ্য। পরের দিন দুপুরে অবশ্য যাওয়া হয়েছিলো লস অ্যাঞ্জেলেসে অবস্থিত বাংলাদেশী রেস্টুরেন্ট আলাদিন-এ। সেখানে না গেলে কোথায় আর পাওয়া যেত কই মাছের ঝোল, লাউ-চিংড়ীর তরকারি, সরিষা ইলিশ, নেহারী আর দিনাজপুরের লিচু!

কোনো শহরে গেলে, সে-জায়গা সম্পর্কে ধারণা পাবার, সেখানকার বুদ্ধিভিত্তিক অবস্থান সম্পর্কে ধারণা পাবার মোটামুটি একটা মাধ্যম হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ঘুরে দেখা। সমস্ত ক্যালিফোর্নিয়া জুড়ে নামীদামি সব বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাহার। অন্যদিকে, আধুনিক ফ্যাশন চর্চা কিংবা তারুণ্যের সবুজ রূপ সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায় বেইলি রোড থেকে। সব শহরে একটা করে বেইলি রোড থাকে, খুঁজে বের করতে হয় শুধু। যেমন, শিকাগোতে টেইলর স্ট্রিট, রিচ্‌মন্ডে ক্যারি স্ট্রিট। লস এঞ্জেলেসও তার ব্যতিক্রম নয়। সর্বোপরি, দৈহিক গঠনশৈলীর ব্যাপারে শহরবাসী কতটুকু যত্নবান আর সচেতন সেই ধারণা পাওয়া যায় সেখানকার বিচ্‌গুলোতে গেলে। ক্যাম্পাসগুলোর মধ্যে দেখার সুযোগ হলো ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া, লস এঞ্জেলেস। সুন্দর ক্যাম্পাস। ভবনগুলো গম্ভীর আর অভিজাত। ওদিকে, বেইলি রোড কোটায় সানসেট বুলাভার্ড সমস্ত আমেরিকায় অন্যতম হবার দাবি রাখে। এরা ফ্যাশনের নিপুণ কারিগর। কি ছেলে কি মেয়ে, সৌন্দর্য যে এক অনন্য শিল্প সেটা এই রাস্তায় গেলেই টের পাওয়া যায়। অন্যদিকে, লস এঞ্জেলেসে অনেকগুলো বিচ্‌ আছে। স্যান্টা মনিকা কিংবা লং বিচ্‌ এদের মধ্যে অন্যতম। তবে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম অন্য কোনো বিচ্‌-এ যাবার। সে-হিসেবে আমাদের যাওয়া হলো হান্টিংটন বিচ্‌-এ। বরাবরের মতন অর্থাৎ আমেরিকার অন্যসব বিচ্‌গুলোর মতই পরিচ্ছন্ন আর মনোরম। যত দূরে চোখ যায় দেখতে পাওয়া যায়, দিগন্তজুড়ে দৌড়ে বেড়াচ্ছে সুবিশাল প্রশান্ত মহাসাগরের সুনীল জলরাশি।

          ছবিঃ ক্যাম্পাস, ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া, লস এঞ্জেলেস

          ছবিঃ ক্যাম্পাস, ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া, লস এঞ্জেলেস

          ছবিঃ হান্টিংটন বিচ্‌-১

          ছবিঃ হান্টিংটন বিচ্‌-২

          ছবিঃ হান্টিংটন বিচ্‌-৩

এই শহরের ডাক নাম সিটি অব এঞ্জেলস্‌। আসল নাম লস অ্যাঞ্জেলেস। স্প্যানিস অ্যাঞ্জেলেস শব্দটির ইংরেজী রূপই হচ্ছে অ্যাঞ্জেল্‌স। তবে, নামকরণটা খুব একটা সার্থক হয়েছে বলে মনে হচ্ছে না। স্প্যানিশ লস বাক্যাংশটি পুংলিংগ এবং বহুবচন (একবচন এল) বুঝাতে ব্যবহার হয়ে থাকে, যেমনটা লাস ভেগাস শহরের লাস ব্যবহার হয়ে থাকে স্ত্রীলিংগ এবং বহুবচন (একবচন লা) বুঝাতে। সে-হিসেবে লস অ্যঞ্জেলেস এর অ্যঞ্জেলেস বলতে কি ধরণের অ্যাঞ্জেলস্‌ বুঝানো হবে সেটা বিবেচনার দাবী রাখে। কিন্তু, হান্টিংটন বিচ্‌-এ এসে মনে হলো, এই শহরের নামের উৎস যাই হোক-না কেন, শাব্দিক আর সঠিক অর্থ যাই হোক না কেন, বাংলায় এই শহরের একমাত্র নাম হওয়া উচিৎ পরীর নগরী, দ্যা সিটি অব অ্যাঞ্জেলস্‌।

মইনুল রাজু (ওয়েবসাইট)
[email protected]