আমাদের সময়ের একদল নায়ক
কবিতা
আদনান আদনান


মেয়েটিকে দেখার সাথে সাথেই আমার তাকে ধর্ষণ করতে ইচ্ছে করে। প্রথমে, একটু কেঁপে উঠি। তারপর, আর কেঁপে উঠিনা। সুখবোধ হতে থাকে। বুঝতে পারি ইচ্ছেটি দুর্বল নয়, বরং প্রবল। তাকে ভালোবাসতে ইচ্ছে করেনা। তাকে আদর করতে ইচ্ছে করেনা। তাকে জড়িয়ে ধরে চুমু দিতে ইচ্ছে করেনা। তাকে ধর্ষণ করতে ইচ্ছে করে। তার একটি শরীরকে আমার সহস্র শরীর দিয়ে যেমন ইচ্ছে তেমন দলতে ইচ্ছে করে। আমার ভিতরের ধর্ষকটি আমাকে গ্রাস করে। আমি রুপান্তরিত হই। বিস্মিতও হই কিছুটা। যে কোনো সুন্দরকে জোরপূর্বক নষ্ট করাকেই আমি ধর্ষণ বলে মনে করি। আমার খুব ইচ্ছে করে মেয়েটিকে জোরপূর্বক নষ্ট করতে।


আমি আমার আত্মজীবনী লিখছি। যা কিছু সম্ভব গোপন করার পর, সব ভুল, ব্যর্থতা, ও নষ্টামিকে সুন্দর করে তোলার শেষ প্রচেষ্টাই আত্মজীবনী। এ-ও আমারই সংজ্ঞা। কোনো কিছুই হয় সাদা না হয় কালো নয়। তাই আমি সবকিছুর অর্থ খুঁজে বের করছি। সবকিছুর ভিতরেই সুন্দরকে অনুভব করছি। আমি ক্রমশই হয়ে উঠছি। নিজেকে পরিশুদ্ধ করে তুলছি। নিজের সঙ্গে নিজেই পরিচিত হচ্ছি। প্রতিটি বাক্যেই খুঁজে পাচ্ছি নিজেকে। এই আত্মজীবনীর বাইরে আমি কেউ নই। আমার আত্মজীবনীই সৃষ্টি করছে আমাকে । আমার নতুন আমি কখনো ছিলাম না, কিন্তু থাকবো। আত্মজীবনীহীন আমি অস্তিত্বহীন। আমি নই, শুধু আমার আত্মজীবনীই সত্য। আমার আত্মজীবনী বিয়োগ আমি, আমি।


অন্য কোনো কিছু নয়, আমি একজন একনায়ক হতে চাই। কি লাভ অন্য কিছু হয়ে? একজন একনায়কের চেয়ে স্বাধীন আর কে আছে? কে কবে কোথায় যাপন করেছে তার চেয়ে উন্নত জীবন? একনায়কের, সবকিছুর উপরে নিজের ইচ্ছের প্রদীপ জ্বালানোর বাতিক আছে। আমি প্রায়ই ভাবি, মানুষ কিভাবে বেঁচে থাকতে পারে একনায়ক না হয়ে। আমার মতো সবার ভিতরেই কি আছে একজন একনায়ক? কি নেই একজন একনায়কের? নারী আছে। টাকা আছে। ক্ষমতা আছে। যাকে ইচ্ছে তাকে খুন করার সাহস আছে। ইচ্ছে মতো যেকোনো নারীর ভিতরে প্রবেশের অধিকার আছে। লাম্পট্যকে কবিতা বলার বিদ্যা আছে। কোটি কোটি মানুষের সামনে দাঁড়িয়ে ফালতু কথা বলার মতো রসবোধ আছে।

চলবে – – –