দেশে এত কিছু থাকতে প্রস্রাব পায়খানার বিরূদ্ধে কেন লাগলো কালের কন্ঠ? প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান কী ভাবে কোন পজিশনে শৌচকার্য সম্পন্ন করেন তা যখন কালের কন্ঠের প্রধানতম মাথাব্যাথা হয়ে দাঁড়ায় এবং তা যখন পত্রিকার প্রথম পৃষ্ঠায় ফলাও করে রিপোর্ট করা হয় তখন বুঝাই যায় এই পত্রিকা শৌচকার্যে প্রচন্ডভাবে পারদর্শী। শৌচকার্য স্বাভাবিক;তবে এই স্বাভাবিক ব্যাপারটি কালের কন্ঠের কাছে অসাধারণ পবিত্র ও গুরুত্বপূর্ণ একটি অনুষ্ঠান বলেই মনে হচ্ছে।পত্রিকা প্রকাশের ইতিহাসে বিশ্বে এ রকম রিপোর্টিং এর কোন নজির আছে বলে আমার জানা নেই।তবে বিশ্বের আর কোথাও না থাকুক –বাংগালীর শৌচানুভূতি যে বেশ প্রখর আর এটা নিয়ে যে দারুন রাজনীতি করা যায় তা কালের কন্ঠ বেশ জোরালোভাবে প্রতিষ্ঠা করেছে।কেন বিশ্বের সবচেয়ে অভিনব রিপোর্টিং এর স্রষ্টা হতে গেল কালের কন্ঠ?কী উদ্দেশ্য কাজ করছে এর পেছনে? আর কালের কন্ঠের প্রকাশ্য শত্রু প্রথম আলো ও এর সম্পাদক মতিউর রহমানেরই বা সমস্যা কী?এরা কার প্রতিনিধিত্ব করে এ দেশে?

মতিউর রহমান বেশ কয়েক বছর আগে বায়তুল মোকাররমে গিয়ে নাকে খতনা দিয়ে এসেছেন।না দিলে টিকে থাকতেন না-কেননা তাতে দেশের লোকের ধর্মানুভূতিতে প্রচন্ড ক্ষত সৃষ্টি হত।এবং যেহেতু এ ক্ষত নিরাময়ের জন্য আজো কোন ঔষধ তৈরী করতে পারেনি চিকিৎসাবিজ্ঞানীরা;তাই পরলোক বিশেষজ্ঞরা এর দ্বায়িত্ব নিলেন এবং তাদের কারো কারো দেয়া ফর্মূলাতে মতিউর রহমান নাকে খতনা দিয়ে এলেন। তার আগ পর্যন্ত -গোটা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে -এ পত্রিকা ও তার সম্পাদকের ভূমিকা দেখলে যে কারো মনে হতে পারে যে ঐ বছরগুলোতে বাংলাদেশ চালিত হয়েছে একটি পত্রিকা দ্বারা যার নাম প্রথম আলো।এ প্রথম আলোর বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় যে অভিযোগ তা হচ্ছে ভারত-দ্বাসত্ব। অর্থ্যাৎ এ দেশে বেশ দারুনভাবেই জেঁকে বসেছিল প্রথম আলো।শুধু ভুল করে ফেলল বসুন্ধরা গ্রুপের কুকাজের কথা প্রকাশ করে-বেশ কয়েক বছর আগে।বসুন্ধরা তারই প্রতিদান দিচ্ছে এবার।

কিন্তু যে ব্যাপারটি আমার শংকার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে তা হচ্ছে নিখাদ ধর্মীয় সুড়সুড়ানি কাজে লাগিয়ে বসুন্ধরা গ্রুপ যে ফায়দা লুটার চেষ্টা করছে তা দেশকে ধীরে ধীরে আরো অন্ধকারের দিকে নিয়ে যাবে। প্রথম আলোর একটি বিজ্ঞাপনে মাথা নিচু করে চলে যাওয়া ছেলেটির সাথে সেজদার প্রতীক মিলিয়ে কালের কন্ঠ দাবি করছে যে প্রথম আলো ধর্মকে অবমাননা করেছে।সেই সাথে মতিউর রহমানের সাথে জুড়ে দিয়েছে নাস্তিক কমুনিস্টের তকমা।অর্থ্যাৎ দেশে আবারো মুক্ত বুদ্ধির চর্চা ব্যাহত করার একটি দারুণ অপপ্রয়াস চলছে। মতিউর রহমানকে ধর্মীয় অবমাননার স্ক্যান্ডালে জড়িয়ে কালের কন্ঠ আবারো নগ্নভাবে প্রকাশ করল যে এ দেশের ধনীক শ্রেণী কোনদিনই চায়না লোকজন বিজ্ঞানমনস্ক হোক।তাতে করে তারা ফায়দা লুটতে পারবে অনেক বেশী।প্রথম আলোও তা চায় না। এখন এই দুই কুকুরের লড়াইয়ের মাঝে পড়ে সবচেয়ে বেশি ভুগতে হবে আমাদের-যারা এ দেশে বিজ্ঞানের পক্ষে কথা বলার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

খুব তাড়াতাড়ি এ পোস্টটি লিখেছি।অনেক কিছুই বলতে পারি নি।আমি ব্যাক্তিগতভাবে খুব শংকায় আছি।এ দেশের মানুষ যে হারে ধর্মাক্রান্ত তাতে করে যারা মুক্তবুদ্ধির চর্চা করে যাচ্ছে সারা দেশ জুড়ে তাদের উপর আবার নতুন করে প্রচন্ড নির্যাতন নেমে আসতে পারে।