আমার মানসপটে অতি যত্নে আঁকা আছে
একজন যুবা-পুরুষের ছবি।
সে যুবকটি সুপুরুষ, সুদর্শন, দীর্ঘ গড়ন।
যেন সোনায় মোড়ানো দেবতা।

তার গভীর, উজ্জ্বল, আয়ত দুটি চক্ষু হতে
কহিনূরের জ্যোতি বিচ্ছুরিত হয়।
ইচ্ছে করে সেই গভীর চক্ষে ডুবে যাই।
সেই মায়াময় চাহনী
প্রগাঢ় বিপুল মমতায়
সমগ্র পৃথিবী গ্রাস ক’রে নেয়।

তার ধনুকের মত ভুরু,
বাঁশির মত উন্নত নাসিকা,
গন্ধরাজের পাপড়ির মত
লাবণ্যময় গৌর মুখমণ্ডল।
ওষ্ঠ-অধর দুখানি শিউলির পাপড়ির মত
স্নিগ্ধ হাসি মাখানো।
সেই মৃদু হাসিতে
হৃদয় ছিঁড়ে যায়।

তার অতি শৌখিন ঢেউ খেলানো কৃষ্ণ কুন্তলরাশি
নেমে এসেছে ঘাড় অবদি।
সেই কুন্তলবিন্যাসে রয়েছে অপূর্ব শিল্পকর্ম।

পৃথিবীর পথে পথে আমি ঘুরেছি অনেক।
দেখেছি লাখো লাখো মানুষের মুখ।
এত স্নিগ্ধতা, এত লাবণ্য, এত প্রশান্তি
দেখিনি তো কভু আর কারো মুখে।
সেই যুবকটি যেন
সৌন্দর্য, শুভ্রতা আর শুচিতার প্রতিমূর্তি।

আমার মানসপটে অতি যত্নে আঁকা আছে
একজন যুবাপুরুষের ছবি।
অতি সুদর্শন সেই যুবকটি
বিশ্বকবি রবিঠাকুর, আমার কবি।