আমাকে যে ওরা দান করে দিয়েছিলো,
মাথা হেঁট করা লজ্জায় গো, আমার মা।

যুদ্ধ-শিশুটিও হতে পারিনি তখন,
তোমার অজান্তে ছিল দানপত্র তৈরি
ভারমুক্তির তাচ্ছিল্যে মা গো, আমার মা।

দেহ-মন রক্তলাল, অন্ধ তুমি কেঁদে,
এই বাংলায়, ছিলে বা আছো বহুকাল,
তুমি পরিত্যক্ত, এবং, আমিও মা গো, মা।

মাতৃভাষা পারিনি শিখতে দূরদেশে,
বলিদানের বিশ্ব-শিশু আমি, মা তুমি,
ওহো মা গো আমার। অদেখা আচেনা মা।

মা-তেরেসার যত্নে গড়া কোন অঙ্গন,
অনাথ কোন আশ্রম, দত্তক প্রত্যাশী
বুকে টেনে নিয়েছিলো, অজানা মানুষ,
আমাদের ইতি সেই থেকে আজ্‌তক।

অস্পৃশ্য, ধর্ষিতা, খবর রাখেনি কেউ
অচেনা চির দুঃখিনী ওরে আমার মা,
তবু এ মাটির স্পর্শে, এতদিন পরে
তোমাকে ছুঁয়ে গেলাম মা, আরেকবার,
খুঁজে পাই বা না পাই। ওগো, আমার মা।

[মা’কে খুঁজতে কোহিনূর নামের একজন যুদ্ধশিশু এসেছিলো বাংলাদেশে ২০১২ সালে, মাদার তেরেসার তত্ত্বাবধায়ন ছেড়ে যাবার প্রায় চল্লিশ বছর পর। মা’কে না পেয়ে ফিরে চলে গেল মেয়েটা। ৭১’এর খুনি ধর্ষক যুদ্ধাপরাধীদের নির্যাতনে আজো কেঁদে মরে সেই সব ত্যাগী দুখিনী মায়েরা, যারা অবহেলায়, অনাহারে উৎকণ্ঠায়, মৃতপ্রায় অথবা মৃত। অভিযোগ জানাবার শক্তিও নেই, দেশ কিংবা ইতিহাসও তাঁদের কথা বলতে গিয়ে ক্লান্ত। সেই মা ও যুদ্ধশিশু ও নির্যাতনের শিকার সব মানুষের জন্য লেখাটি উৎসর্গকৃত ]

Kohinoor was perhaps born to one of those unfortunate mothers who had no option but to leave their children out in the street to save their honour. Thus, she was found in a street of Dhaka after the war of independence and was sent to Mother Teresa’s Orphanage from where she was adopted and taken away to Europe by a caring and affectionate Norwegian family.

The Daily Star, March 2012, March, Vol 6, Issue 3
Ref: https://archive.thedailystar.net/forum/2012/March/land.htm