অধ্যাপক কবীর চৌধুরী (ছবির কৃতজ্ঞতা -উইকিপেডিয়া)

অধ্যাপক কবীর চৌধুরী আজ আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন। একজন সত্যিকার অসাম্প্রদায়িক চেতনা সম্পন্ন উদার এবং মুক্তমনা মানুষ ছিলেন তিনি। ১৯২৩ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি ব্রাক্ষণবাড়িয়ায় জন্মগ্রহণ করা  এ বর্নাঢ্য শিক্ষাবিদের অনুবাদ ও মৌলিক রচনা  অজস্র। তাঁর প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা দুই শতাধিক। অনেক  বিদেশী কবিতা, গল্প, উপন্যাস ও নাটক অনুবাদের পাশাপাশি বাংলাদেশের  অনেক লেখকদের লেখাই ইংরেজিতে অনুবাদ করে তিনি বাংলাদেশের সাহিত্যকে বিশ্ব সাহিত্যাঙ্গনে নিয়ে গেছেন। সাহিত্য জগতের বাইরেও ছিলো তাঁর নানামুখী বিচরণ। তিনি ১৯৬৯ থেকে ১৯৭২ সাল পর্যন্ত বাংলা একাডেমীর প্রধান হিসেবে পরিচালক পদে দায়িত্ব পালন করেন। বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষা, ক্রীড়া ও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সচিব হিসেবে ১৯৭৩-৭৪ সালে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে অধ্যাপনায় যোগ দেন এবং বিভাগীয় সভাপতি হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন। দেশের সর্বশেষ জাতীয় শিক্ষানীতি প্রণয়ন কমিটির সভাপতিও ছিলেন তিনি। তিনি সারা জীবনই ছিলেন মুক্তিযুদ্ধের  চেতনা বাস্তবায়নের এক অগ্রণী সৈনিক;  তিনি শহীদ জননী জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি গঠনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন।  তাঁকে তাঁর জীবনের সার্বিক অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে ১৯৯৮ সালে ‘জাতীয় অধ্যাপক’ হিসেবে সম্মানিত করা হয়েছিলো। এর বাইরে সাহিত্য, সংস্কৃতি এবং সামাজিক ব্যাপারে তাঁর প্রগতিশীল, সৃজনশীল ও মননশীল ভূমিকার জন্য একুশে পদক, স্বাধীনতা দিবস পদক, বাংলা একাডেমী পুরস্কারসহ বহু সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন।

নিজে মুক্তমনা মানুষ ছিলেন, এবং মুক্তমনাদের কাজের প্রতিও তাঁর আগ্রহ ছিলো তাঁর। ইন্টারনেটে কিংবা ব্লগে তাঁর বিচরণ চোখে না পড়লেও আমাদের মুক্তান্বেষা পত্রিকাটি প্রকাশের পর সেটি পড়ে ‘পাঠকের প্রতিক্রিয়া’ হিসেবে তিনি যা লিখেছিলেন, তা হুবহু মুক্তমনার লেখক এবং পাঠকদের জন্য তুলে দিচ্ছি  –

পরবর্তীতে তিনি  কেবল ‘মুক্তান্বেষার পাঠক’ হিসেবেই থাকেননি, আমাদের কাজে আগ্রহী হয়ে স্বামী বিবেকানন্দ নিয়ে একটি লেখা মুক্তান্বেষা পত্রিকার জন্য পাঠিয়েছিলেন, যা ছাপা হয়েছিলো মুক্তান্বেষার ২য় বর্ষ, ২য় সংখ্যায়

তাঁর মৃত্যু আমাদের জন্য নিঃসন্দেহে অপূরণীয় ক্ষতি। কবীর চৌধুরী চিরদিন বেঁচে থাকবেন আমাদের জন্য অফুরন্ত প্রেরণার উৎস হয়ে।