স্তব্ধ রাত্রি, তারকার আকাশ তলে যান্ত্রিক পৃথিবীর শহুরে গুহার ছাদে প্রাণের পরপর সংকট। আমাদের দেশে নেই চাঁদের বুড়ি, চরকার ঘটঘট শব্দ, কেবল বিদ্রুপের মতো নাগরিক আবাস গড়ে এক অন্ধ-বধির জীবনের নির্মান। এমন উন্মত্ত অস্থির মানসে ওঠে বিতর্কের ঝর-
“ এই জীবন কি তুমি চেয়েছিলে?”
“ না”
“ তবে কে দিলো এমন অযাচিত জীবন?”
“ জনক-জননী, ঈশ্বর, শয়তান এদের কেউ হয়তো”
“ জনক-জননী! তুমিতো তাঁদের সুখান্বেষার ভুল”
“ তবে কি ঈশ্বর?”
“ ঈশ্বর কীকরে জীবন দেবে, নিজেইতো অশরীরি এক বিভ্রান্তির রূপকার।”
“ তবে ঐ শয়তান?”
“ না, না, শয়তান জীবন দেবতা হলে কেনো এমন সুখের ফাগুন আর বেদনার নীল!”
“ তাহলে কে, কে সেই নিষ্ঠুর ক্রিড়ানক, এমন বিকলাঙ্গ পৃথিবীতে দিয়েছে আমাকে জীবন?”
“ আমি তা জানি না।”
“ জানো না! জানো তুমি, বলো আমাকে”
“ আমি জানিনা”
“ যদি নাই জানো তবে প্রশ্ন করছো কেনো? কে তুমি?”
“ আমি, হা-হা-হা, আমিই তোমার বিক্ষত-অস্থির জীবন; ক্ষীণ আমার আলো, তার উপর অদ্ভূত কাঠামোতে বন্দি।
দেহের ভার আর সইতে পারি না! জানতে চাই কোন সে আহাম্মক এমন জান্তব দেহে আটকে রেখেছে আমাকে?”
“ যেতে চাও তবে চলে যাও না কেনো?”
“ হ্যা, চলেইতো যাবো। প্রিয়া আসলেই চলে যেতে পারতাম। কিন্তু সে এখনো আসছে না আর ভয়ঙ্কর একনায়কটাও মুক্তি দেয় না। হায়! কী দুর্ভাগ্য, প্রকৃতির পদতলে আমাদের অস্তিত্ব।”

বিতর্ক ফুরায় পাখির ঘুম ভাঙার অস্থির চিৎকারে। অরোরার প্রেমের অগুন বুকে জ্বেলে সূর্য জেগে ওঠে। ব্যাস্ততম পৃথিবীতে প্রাণীর ঢল নামে। নির্বুদ্ধ কোলাহলে চাপা পরে বোধের স্বচ্ছ উচ্চারণ।