স্কুল-কলেজে জীববিজ্ঞান পড়েছি কেবল পাস করার জন্য। চোখ-মুখ বন্ধ করে গোগ্রাসে মুখস্থ করেছি আর পরীক্ষার হলে উগড়ে দিয়ে এসেছি। উচ্চ মাধ্যমিকেতো জীববিজ্ঞান নেয়ারই ইচ্ছে ছিলো না, নিয়েছিলাম কেবল ডাক্তারি পড়ার পথটা খোলা রাখতে। জীববিজ্ঞানের সুখস্মৃতি বলতে কেবল পরীক্ষার খাতায় আঁকা ছবিগুলো। দেখে শান্তি পেতাম। মনে হতো, বাহ্‌, এই খাতাটা দেখার মতো! ব্যস, এই হলো আমার জীববিজ্ঞান পাঠ।

ইদানিং বায়োইনফরমেটিক্‌স্‌ নিয়ে কিছু পড়াশুনা করছি। শুরু থেকেই মনের মধ্যে ভয় – বায়োলজিতো (জীববিজ্ঞান) পারি না, কতখানি এগুতে পারবো? তবে আনন্দের কথা – একটা ভাল বই পেয়েছি – Introduction to Bioinformatics Algorithms । লেখকঃ Jones ও Pevzner। তারা আমাকে অভয় দিয়েছেন। কম্পিউটারওয়ালাদের নাকি খুব বেশি বায়োলজি জানতে হয় না; যেটুকু জানতে হয় সেটুকু নাকি ১০ পাতাতেই লিখে ফেলা যেতে পারে! তবে ভাগ্য ভালো, লেখকরা ১০ পাতায় কাঠখোট্টা করে লিখেননি। অনেকটা গল্পের মতো করে লিখেছেন। যা লিখেছেন তা যে আগে জানা ছিলো না এমন নয়, তবে এমনভাবে মনে গেঁথে যায়নি আগে। জীন কোথায় থাকে তা বলেই তারা থামেননি, সাথে বলেছেন কিভাবে মানুষ ধারণা করলো যে জীন কোথায় থাকতে পারে; কেবল জীন সিকোয়েন্সের আবিষ্কারের তথ্যটুকু দেননি, বরং এই তথ্যগুলো কিভাবে বিজ্ঞানীরা বের করলেন সেই গল্পগুলোও বলেছেন। মুগ্ধ হয়ে গেলাম পড়ে। এতটাই মুগ্ধ যে, তেমন করে বাংলায় গল্প বলার দুঃসাহস জাগলো।

রবার্ট হুক
ছবিঃ রবার্ট হুক

জীবনের রহস্য লুকিয়ে আছে যে কোষের মাঝে, সেই কোষ কিন্তু আবিষ্কৃত হয়েছে বহুদিন আগে – প্রায় সাড়ে তিনশো বছর আগে, ১৬৬৫ সালে। রবার্ট হুক অনুবীক্ষণ যন্ত্রে প্রথম দেখলেন যে, জীবদেহ কোষ নামের ছোট ছোট ভাগে বিভক্ত। পরবর্তীতে স্লেইডেন আর সোয়ান বললেন, জগতে বিচিত্র যত জীব আছে সবারই দেহ গঠিত হয়েছে কোষ দিয়ে। কেমন আশ্চর্য লাগে না? সকল জীব একই ধরনের জিনিস দিয়ে তৈরি! গাছপালা, মানুষ, পশুপাখি, আরশোলা, ছত্রাক, ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া সবই তৈরি কোষ দিয়ে। এটাই জীববিজ্ঞানে বিখ্যাত ‘কোষ তত্ত্ব’ নামে পরিচিত। মজার কথা কি জানেন, এই কোষতত্ত্বের আগে কিন্তু লোকজন জীববিদ্যাকে বিজ্ঞানই মনে করতো না! পরে আস্তে আস্তে অবস্থা এমন দাঁড়ায় যে, কোষ নিয়ে গবেষণাই হয়ে ওঠে জীবনের গবেষণা।

কোষ
ছবিঃ কোষ

সব জীবের কোষ কিন্ত একরকম না, হাজার রকমের বৈচিত্র্য। তবে যত বৈচিত্র্যই থাকুক না কেন, তারা প্রত্যেকে একটা নির্দিষ্ট চক্র মেনে চলে- জন্ম, খাওয়া, বংশ-বৃদ্ধি ও মৃত্যু। তাদের জীবনচক্র অবিশ্বাস্য রকমের নিয়ম মেনে চলে। একটা উদাহরণ দেই – বংশবৃদ্ধির জন্য যা যা জিনিসপত্র প্রয়োজন তার সবকিছু যোগাড় করে তারপরেই কেবল প্রতিটা কোষ বংশবৃদ্ধির দিকে মনোযোগ দেয়। এ নিয়মের ব্যত্যয় ঘটলে দুনিয়াতে তোলপাড় লেগে যেত। কিন্তু কোষের মধ্যে কী এমন আছে যা তার সব কাজের মধ্যে সমন্বয় সাধন করে? কী এমন আছে যা কোষের মস্তিষ্কের মতো কাজ করে? আসলে এসব কাজের সবই নিয়ন্ত্রিত হয় জটিল জৈব-রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে। এদেরকে বলে ‘পাথওয়ে’।

কোষকে অনুবীক্ষন যন্ত্র ছাড়া দেখা না গেলে কি হবে, তাদের কাজে এত জটিলতা থাকলে কি হবে, তাদের সকলের গঠন ও কাজের প্রক্রিয়ার মূল সূত্র কিন্তু একই ধরনের। জগতের সকল জীবেই তিন ধরনের অণু আছে –ডি.এন.এ., আর.এন.এ., ও প্রোটিন। কোষ কিভাবে কাজ করবে সেটার বিস্তারিত বিবরণ থাকে ডি.এন.এ. তে। আর.এন.এ. সেই বিস্তারিত তথ্য থেকে প্রয়োজনমতো কিছু তথ্য কোষের বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে যায় যেগুলো প্রোটিন তৈরির ছাঁচ হিসেবে কাজ করে। প্রোটিন এনজাইম গঠন করে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জৈবরাসায়নিক প্রক্রিয়ায় অংশ নেয়, এক কোষ থেকে অন্য কোষে তথ্য আদান-প্রদান করে, দেহের বিভিন্ন অংশ গঠন করে। এভাবেই চলে কোষের কাজ।

কোষের কথা অনেক বলেছি, এখন বরং ঐসব ডি.এন.এ., আর.এন.এ., ও প্রোটিন কিভাবে আবিষ্কার হলো সেই গল্পে যাই।

কোষকে ভালভাবে বিভাজন করে বিজ্ঞানীরা তার নিউক্লিয়াসের ভিতর একসময় সুতার মতো ক্রোমোজোম আবিষ্কার করলো। আবিষ্কারের পর তারা অবাক হয়ে লক্ষ করল যে, একেকটা জীবের একেক সংখ্যক ক্রোমোজোম আছে। তারা ধারণা করলো, হয়তো এর মধ্যেই প্রজাতিভিত্তিক বৈশিষ্ট্যগুলোর ভান্ডার আছে।

গ্রেগর জোহান মেন্ডেল মটরশুটি
ছবিঃ গ্রেগর জোহান মেন্ডেল ও মটরশুটি গাছ

একজন ধর্মযাজকের কথা বলি। নাম গ্রেগর জোহান মেন্ডেল। তিনি ১৮৫৬ থেকে ১৮৫৭ সালের মধ্যে প্রায় ২৯,০০০ মটরশুটি গাছ চাষ করেন। এসব গাছের উপর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তত্ত্ব দিলেন যে, প্রজাতির বংশানুক্রমিক বৈশিষ্ট্যের জন্য ‘জীন’ দায়ী। প্রতিটা বৈশিষ্ট্যের জন্য এই জিনের ২টা অংশ থাকে। একটা আসে মায়ের কাছ থেকে, একটা বাবার কাছ থেকে। এর মধ্যে যে অংশটা প্রকট হয়, সেটাই দেখা যায়, বাকিটা লুকায়িত থাকে। মেন্ডেল জীন নিয়ে এত কথা বললেও, সেই জীন আসলে কি, কোথায় থাকে, কিভাবে কাজ করে কিছুই বলতে পারেননি। 

এই জীন কোথায় আছে তা বের হয়েছে আরো প্রায় ৫০ বছর পরে। মরগ্যান নামের এক বিজ্ঞানী ছিলেন। থাকতেন নিউইয়র্কে। ব্যস্ত শহর। ওখানেতো আর বিশাল জায়গা নেই যে উনি মেন্ডেলের মতো বাগান করবেন। পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য উনি বেছে নিলেন ফলের উপর বসা মাছিদের। শহুরে সংস্কৃতি বলে কথা। তবে এই মাছিদের ভাল গুণ হলো – তাদের জীবন ক্ষণস্থায়ী এবং প্রজননক্ষমতা ব্যাপক, যে কারণে অল্প সময়ের মধ্যে বেশি সংখ্যক প্রজন্ম পর্যবেক্ষণ করা যায়।

মরগ্যান ফলের মাছি
ছবিঃ মরগ্যান ও ফলের মাছি

তো, এই পর্যবেক্ষণের এক পর্যায়ে মরগ্যান একটা মাছির চোখের রঙে ভিন্নতা দেখতে পেলেন। সাধারণত ঐসব মাছিদের চোখের রঙ হয় লাল, এর মধ্যে একটার রঙ দেখতে পেলেন সাদা। এই সাদা-চোখওয়ালা মাছিটাই যে এত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠবে কে জানতো। মরগ্যান খুব সতর্কভাবে এই সাদা-চোখওয়ালা মাছিটার সাথে সাধারণ মাছির ক্রসওভার ঘটালেন, সহজভাবে বললে তাদের মধ্যে প্রজনন ঘটালেন। ফলাফল ছিলো আশ্চর্যজনক, পরবর্তী প্রজন্মগুলোতে সাদা-চোখওয়ালা মাছি খুব একটা বেশি দেখা যায় না, যাও দেখা যায় তাও কেবল পুরুষ মাছির মধ্যে। ততদিনে জানা হয়ে গেছে যে, এক ধরনের ক্রোমোজোম (সেক্স ক্রোমোজোম) আছে যা ঐসব মাছির লিঙ্গ নির্ধারণ করে। আর, সাদা রঙ যেহেতু কেবল পুরুষ মাছির মধ্যেই দেখা যায়, তাই মরগ্যান চিন্তা করলেন যে, চোখের রঙ নির্ধারণের জন্য যে জীন আছে তা নিশ্চয়ই সেই লিঙ্গ নির্ধারণকারী ক্রোমোজোমের মধ্যে আছে। এভাবেই বুঝা গেলো যে, জীন আছে আসলে ক্রোমোজোমের ভিতরে।
মরগ্যান কিন্তু তখনও জানতেন না জীন তৈরি হয়েছে কি দিয়ে। তবে ফলের মাছিকে কেন্দ্র করে গবেষণা চালিয়ে গেছেন তিনি তার ছাত্রদের সাথে নিয়ে। মাছি পর্যবেক্ষণের সময় মরগ্যান দেখলেন, কিছু কিছু মাছির গায়ের রঙ অন্যদের চেয়ে ভিন্ন, ধূসর না হয়ে তাদের রঙ হয়েছে কালো। আশ্চর্যের সাথে খেয়াল করলেন, ঐসব মাছির পাখার গঠনও ভিন্ন। ইংরেজিতে সেই ভিন্ন গঠনের পাখাকে বলে ‘vestigial wings’। (আমি vestigial wings এর ভাল অনুবাদ করতে পারলাম না বলে এমনই রেখে দিলাম।) উনি দেখলেন এরকম কিছু কিছু বৈশিষ্ট্য বেশির ভাগ সময় একই সাথে পাওয়া যায়, আলাদা-আলাদা ভাবে প্রায় দেখাই যায় না। এ ঘটনাকে মরগ্যান ক্রোমোজোমের একটা মডেলের মাধ্যমে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করলেন। মা ও বাবা প্রত্যেকের কাছ থেকে একটা করে দুইটা সুতার মতো ক্রোমোজোম থেকে যখন নতুন সন্তান তৈরি হয়, তখন কোন এক জায়গায় ক্রোমোজোম দুইটা ভেঙ্গে যায়। এরপর মায়ের এক অংশ আর বাবার আরেক অংশ নিয়ে নতুন সন্তান তৈরি হয়। নিচের ছবিটার মতো।

ক্রস-ওভার
ছবিঃ ক্রস-ওভার

উপরের ছবিতে সাদা সুতাকে যদি মায়ের ক্রোমোজোম ধরি, আর কালোটাকে বাবার, তাহলে ছবিটা থেকে নিশ্চয় বুঝতে পারছেন যে, মাঝামাঝি একটা জায়গায় ক্রোমোজোম দু’টো ভেংগে গিয়ে, এরপর সাদাটার এক অংশ কালোটার অন্য অংশের সাথে জোড়া লেগে সাদা-কালো দুইটা সুতা তৈরি হয়েছে। অন্যভাবে বললে, মায়ের ক্রোমোজোমের কিছু অংশ আর বাবার ক্রোমোজোমের কিছু অংশ মিলে সন্তানের ক্রোমোজোম তৈরি হয়েছে। একেই বলে ক্রস-ওভার। ক্রস-ওভারের কারণেই সন্তান কিছু বৈশিষ্ট্য পায় মায়ের, আর কিছু বাবার।
কি ভাবছেন? এই ক্রস-ওভারের সাথে মরগ্যানের পর্যবেক্ষণের দুইটা বৈশিষ্ট্য বেশির ভাগ সময় একই সাথে থাকার সম্পর্ক কোথায়? দাঁড়ান দেখাচ্ছি। মরগ্যান বলছেন, জীনগুলো ক্রোমোজোমের সুতার দৈর্ঘ্য বরাবর একটা নির্দিষ্ট জায়গায় থাকে। দুইটা জিন যদি কাছাকাছি অবস্থানে থাকে, তাহলে তাদের একসাথে থাকার সম্ভাবনা বাড়ে। দুইটা জিন কাছাকাছি থাকলে ক্রোমোজোমটা হয় দুইটারই ডানে অথবা দুইটারই বামে ভাঙ্গে, মাঝে তো জায়গা কম (কাছাকাছি তো), তাই মাঝে ভাঙ্গে কম। আর মাঝে কম ভাঙ্গে বলে দুইটা বৈশিষ্ট্য আলাদাও হয় কম। দুইটাকেই তাই বেশিরভাগ সময় একসাথে দেখা যায়। আর এরকম সম্পর্কযুক্ত জিনকে বলে লিঙ্কড জিন। মরগ্যান এও বলেন যে, দুইটা জীন যত বেশি সম্পর্কযুক্ত, তত বেশি কাছাকাছি থাকে তারা।
এই যে মরগ্যান বললেন, সম্পর্কযুক্ত জিনগুলো বাস্তবে ক্রোমোজোমের মধ্যে কাছাকাছি অবস্থান করে, তার এই কথা যদি সত্য হয়, তাহলে বাস্তবে সম্পর্কযুক্ত জীনগুলো যদি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হয়, তাহলে নিশ্চয় বের করা যাবে কোন্‌ জীন অন্য কোন্‌ জীনের কাছে থাকে। ধরা যাক, ক, খ এর কাছে; আবার খ, গ এর কাছে; গ, ঘ এর কাছে। তাহলে ক, খ, গ, ঘ কে তাদের মধ্যকার দূরত্ব অনুসারে সাজালে একটা সিকোয়েন্স (ক-খ-গ-ঘ) পাওয়া যায় না? এভাবে, সম্পর্কযুক্ত জীনগুলো ক্রোমোজোমের দৈর্ঘ্য বরাবর পাশাপাশি বসালে নিশ্চয়ই জীনের একটা সিকোয়েন্স পাওয়া যাবে! এই চিন্তা মাথায় রেখে মরগ্যানের এক ছাত্র আলফ্রেড স্টুর্টভান্ট (বাংলা অনুবাদে ভুল হতে পারে, ইংরেজিতে Alfred Sturtevant) ১ম জেনেটিক ম্যাপ তৈরি করেছিলেন। কোন্‌ জীন কোন্‌টার কাছে সেটা কিভাবে বের করেছিলেন তা পরের উদাহরণটা দেখলেই বুঝা যাবে পরিষ্কারভাবে।
স্টুর্টভান্ট তিনটা জিন নিয়ে পরীক্ষা চালিয়েছেন – cn (যা চোখের রঙ নির্ধারণ করে, মাছির ক্ষেত্রে লাল নাকি সাদা), b (যা দেহের রঙ নির্ধারণ করে, মাছির ক্ষেত্রে ধূসর নাকি কালো), vg (যা ডানার ধরণ নির্ধারণ করে, মাছির ক্ষেত্রে স্বাভাবিক নাকি ভেস্টিজাল)। একটা স্বাভাবিক (ধূসর দেহ+স্বাভাবিক ডানা) মাছির সাথে (ধরি বাবা) কালো দেহ ও ভেস্টিজাল ডানাবিশিষ্ট মাছির (ধরি মা) প্রজনন ঘটালেন। দেখলেন, মাত্র ১৭% সন্তানদের মধ্যে এই দুই বৈশিষ্ট্যের মিশ্রণ পাওয়া গেছে। ৮৩% সন্তানই হয় বাবার উভয় বৈশিষ্ট্য (ধূসর দেহ+স্বাভাবিক ডানা) অথবা মায়ের উভয় বৈশিষ্ট্য (কালো দেহ+ভেস্টিজাল ডানা) পেয়েছে। তার মানে গায়ের রঙ আর ডানার ধরণ নির্ধারণকারী জীনগুলো, b ও vg, কাছাকাছি আছে। আবার স্বাভাবিক মাছি (ধূসর দেহ+লাল চোখ) এর সাথে (কালো দেহ+সাদা চোখ) বিশিষ্ট মাছির প্রজনন ঘটিয়ে দেখলেন, মাত্র ৯% (আগের দুইটার চেয়েও কম) সন্তানের ক্ষেত্রে দুই বৈশিষ্ট্যের মিশ্রণ পাওয়া গেছে। তার মানে দেহের রঙ আর চোখের রং নির্ধারণকারী জীনগুলোও, b ও cn, কাছাকাছি। এবং b আর cn এর মধ্যকার দূরত্ব b আর vg এর মধ্যকার দূরত্বের চেয়ে কম। এরপর cn আর vg নিয়ে পরীক্ষা করে দেখলেন, মাত্র ৮% ক্ষেত্রে বৈশিষ্ট্য আলাদা হয়, অর্থাৎ, cn আর vg আরো বেশি কাছে। তিনটা বৈশিষ্ট্য একসাথে করে, স্কেল অনুসারে সাজালে দেখা যায়, cn এর এক পাশে b (৯%), অন্যপাশে vg (৮%) থাকবে। তাহলে b আর vg এর মধ্যে দূরত্ব হবে ১৭% এর সমানুপাতিক।

সম্পর্কযুক্ত জীনের তুলনামূলক অবস্থান
ছবিঃ সম্পর্কযুক্ত জীনের তুলনামূলক অবস্থান

এভাবেই বাকি বৈশিষ্ট্যগুলো পর্যবেক্ষণ করে পুরো জেনেটিক ম্যাপ তৈরি করা যাবে, এভাবে ভাবলেই কেমন যেন রহস্য সমাধানের গন্ধ পাওয়া যায়, তাই না?

(আগামী পর্বে শেষ করার ইচ্ছা আছে, যদি লিখার সময়, সুযোগ ও ইচ্ছার মধ্যে সমন্বয় ঘটে।)