একটি দিন নয়
দুটি দিন নয়
দীর্ঘ একটি মাস
কেন এ নিষ্ঠুর-উপবাস?

এই অনাহার
এই তৃষ্ণার হাহাকার
দেখে কে করে অনন্দ
কে করে উল্লাস,
কার বয়ে যায় উচ্ছ্বাস?

গ্রীষ্মের দাবানলে শুকিয়ে যায় জলাশয়
পুড়ে চৌচির মাঠ-ঘাট,
লূ-হাওয়ায় তপ্ত হয় শ্বাস।
জলের তীব্র তৃষায়
আকণ্ঠ শুকিয়ে যায়।
মানুষের এ হেন কষ্ট দেখে
কে ফেলে শান্তির নিশ্বাস?

এ উপবাস কোন মহাঅপরাধের শাস্তি!
ক্ষুধায়-তৃষায় কাতর মানুষের
যন্ত্রণা দেখে কোন পাষাণ পায়
তার পাষণ্ড-হৃদয়ে স্বস্তি?

কেন এ কষ্ট ভোগ ক্ষুধার-তৃষায়
কীসের লোভে
কোন পুরষ্কারের আশায়?
পুরষ্কার যদি থেকেও থাকে
তবে তা পাবার আগে
কেন এ নিষ্ঠুর শাস্তি, বিনা অপরাধে?

সূর্যোদয়ের আগ থেকে সূর্যাস্তের পর পর্যন্ত
মনে হয় একটি দিন অফুরন্ত,
এ দীর্ঘ দিনমান
অধীর প্রতীক্ষা উপবাসীদের,
কবে হবে দিবসের অবসান।

খুদার জ্বালায় ম্রিয়মান মুখ
ক্ষীণ কণ্ঠস্বর
তৃষিত বক্ষখানি করে ধরফর।
এ কোন্‌ নিঠুরতার ধরন
কেন শুধু শুধু নিজেকে নিজে পীড়ন?
কেন এ না খেয়ে মরা
উপবাস থেকে কাকে খুশী করা?

একবিন্দু জলও নয়
একটি অন্নের ক্ষুদ্র কণাও নয়
কিছুই পারিবেনা করিতে পান
কিছুই পারিবেনা করিতে ভক্ষণ!
মানুষের এ কষ্ট দেখে
পিশাচের হাসি হাসে কোন নির্দয়-জন?

সত্যিই যদি থেকে থাকে
অদৃশ্য কোন মহাশক্তি
তবে কেন সে পারেনা দিতে
হাভাতের মুখে অন্ন
কেন সে মহাশক্তি এত সামান্য?
কেন সে সবকিছুতেই সর্বদা নির্বিকার?
তাকে ধিক্কার
যে বধিরশক্তি পায়না শুনিতে
ক্ষুধার্ত মানুষের চিৎকার।
কেন সে ব্যর্থ স্বৈরাচারী শাসকের প্রতি
বৃথা এত ভক্তি?

যে পারেনা করিতে
জগতের সমস্ত বিশৃঙ্খলার অবসান
ক্ষুধিত-তৃষিত মানুষের যন্ত্রণা দেখে
জুড়ায় যার নিষ্ঠুর-প্রাণ,
সে তো হৃদয়হীন
সে নিজেও হীন
কীসের সে সর্বশক্তিমান?
কোথায় তার শক্তির প্রমাণ?