লিখেছেনঃ হৃদয়াকাশ
আফ্রিকার একটি প্রায় ১০০% মুসলিম দেশ সোমালিয়া। জনসংখ্যা ১ কোটি ২০ লাখের মতো। দেশটির পুরো জনগোষ্ঠিই এখন এক ভয়াবহ দুর্ভিক্ষের সম্মুখীন। সেখানে প্রতিমিনিটে প্রায় ৬ জন করে শিশু মারা যাচ্ছে। এাণ কেন্দ্রগুলোতে আসার সময় লোকজন তাদের শিশু সন্তানদের পথে ফেলে দিয়ে আসছে। এক ত্রাণকর্মীর মতে, যারা ত্রাণ শিবিরে আসতে পেরেছে তারা ভাগ্যবান; কারণ, দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতি এত ভয়াবহ যে অন্যদের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা ক্ষীণ। হাজার হাজার লোক পালিয়ে যাচ্ছে পাশের দেশগুলোতে একটু খাদ্য ও আশ্রয়ের আশায়।

এর মধ্যেও ইসলামিরা জঙ্গীরা থেমে নেই। আল্লা সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য তারা জানপ্রাণ। তাদের নিয়ন্ত্রিত এলাকায় তারা বেশ আগেই নারী পুরুষের করমর্দন, একসঙ্গে উঠাবসা, চলাফেরা, গল্প করা নিষিদ্ধ করে দিয়েছে; পাথর ছুঁড়ে হত্যা তো চলছেই- সম্প্রতি খ্রিষ্টানদের ত্রিত্ববাদের সঙ্গে মিল থাকায় তারা সেখানকার জনপ্রিয় খাবার সমুচাকে নিষিদ্ধ করেছে। একে ব্যাঙ্গ করে ধর্মকারীতে প্রশ্ন তোলা হয়েছে এর পর সেখানে তারা জ্যামিতির ত্রিভুজকে নিষিদ্ধ করে কিনা কে জানে। অবশ্য আর একটি ত্রিভুজ রয়েছে, হুমায়ূন আজাদের ভাষায় যেটা বিশুদ্ধ ত্রিভুজ; মেয়েদের যোনী। এই ত্রিভুজকে অবশ্য নিষিদ্ধ করার সম্ভাবনা সোমালিয়ার ইসলামী জঙ্গীদের নেই। কারণ, এই বিশুদ্ধ ত্রিভুজ ইসলামের নবী হযরত মুহম্মদের বরাবরই প্রিয় ছিলো, আর তার উন্মাদ সোমলিয়ান জঙ্গীদেরও খুব প্রিয় হবে তাতে কোনো সন্দেহ নেই।

অবশ্য এই বিশুদ্ধ ত্রিভুজ জাতি ধর্ম নির্বিশেষে সকল পুরুষের কাছেই খুবই আদরের জিনিস; কিন্তু ইসলামের নবীর কাছে এর কদর আলাদা। বিয়ের আগে ব্যাপারটা ভিন্ন হলেও বিয়ের পরে ম্যাক্সিমাম পুরুষই একটা বিশুদ্ধ ত্রিভুজে সন্তুষ্ট থাকে বা একটাতেই জীবন পার করে দেয়। অনেক মহাপুরুষই আবার এই বিশুদ্ধ ত্রিভুজের ধারে কাছেও ঘেঁষে না; যেমন- যীশু এবং হিন্দুদের প্রায় সব সাধু সন্ত। অনেকে আবার বিশুদ্ধ ত্রিভুজ গ্রহণ করেও মানব কল্যাণে তা ত্যাগ করে চলে গেছেন; যেমন- গৌতম বুদ্ধ, চৈতন্যদেব প্রমুখ। কিন্তু হযরত মুহম্মদের ক্ষেত্রে এই বিশুদ্ধ ত্রিভুজের ব্যাপারটা একেবারে অন্যরকম। প্রথম স্ত্রী খাদিজার চাকর কাম স্বামী হওয়ায়, তার খেয়ে প‘রে খাদিজার বিশুদ্ধ ত্রিভুজ ছাড়া অন্য কোনো ত্রিভুজের দিকে তাকানোর সাহস সেই সময় হযরতের হয় নি। কারণ এরকম হলে- হযরতের ভয় ছিলো- তার মায়ের মতোন, মায়ের বয়সী স্ত্রী তাকে বাড়ি থেকে বের করে দেবে এবং তার পর চতুর্থ স্বামী হিসেবে অন্য কাউকে নিয়ে নেবে। তখন খাদিজার জন্য এটা কোনো ব্যাপারই ছিলো না, কারণ তার প্রচুর সম্পত্তির লোভে যে কেউ, যুবক থেকে বৃদ্ধ, তাকে বিয়ে করার জন্য সব সময় প্রস্তুত ছিলো। শুধু তার আহ্বানের অপেক্ষা। তা না হলে এরকম একটি অসম বিয়েকে মুহম্মদই বা হাসি মুখে মেনে নিলো কেনো ? তার কি যৌবনের স্বাদ আহ্লাদ ছিলো না ? দুই বার বিবাহিতা, দুই মেয়ের মা, ৪০ বছর বয়সী, ওরকম একটি ঢিলা খালে সাঁতার কাটতে চায় কোন যুবক ? মুহম্মদ এইসব কারণেই খাদিজাকে বিয়ে করেছিলো । জাস্ট তার ধন সম্পত্তির লোভে, অন্য কোনো কারণে নয়। যা হোক চতুর মুহম্মদ জানতো, খাল ঢিলা হোক আর যা ই হোক খাদিজার মৃত্যুর আগ পর্যন্ত অন্য কোনো ত্রিভুজ নিয়ে বিশুদ্ধ চিন্তা ভাবনা তার একেবারেই করা চলবে না। তাহলে বউয়ের বাড়িতে বসে বসে খাওয়া আর হেরা গুহায় গিয়ে বসে থেকে উল্টা পাল্টা চিন্তা করা তার লাঠে উঠবে।

বলছিলাম সোমালিয়ার কথা। সোমালিয়ার সুন্নি মুসলিমদের এই দুর্দিনে আল্লা কোথায়, কী করছে ? এই মুসলমানদের দুঃখ কষ্টে আল্লার কি একটুও কিছু যায় আসে না ? তারা যে না খেয়ে মরছে, তাতে কি আল্লার একটুও দরদ লাগছে না ? এরা আত্মঘাতী বোমা হামলায় আত্মঘাতী হয়ে মরছে না। আত্মঘাতী হয়ে মরায় একধরণের সুখ আছে। পরকালে বেহেশত আর হুর গেলমান পাবার সুখ। কিন্তু দুর্ভিক্ষে যারা মরছে তাদের তো সেই সুখ নেই। দুর্ভিক্ষ মানে ভিক্ষার অভাব; মানে কোথাও কোনো খাবার নেই; চারেদিকে হাহাকার। এভাবে মৃত্যু যে বড় কষ্টের। দিনের পর দিন না খেয়ে থেকে থেকে, অপুষ্টিতে ভুগে ভুগে, হাড় জিড়জিড়ে কঙ্কালসার হয়ে, চলৎশক্তি রহিত হয়ে আস্তে আস্তে মারা যাওয়া। এ মৃত্যু জঙ্গীদের বোমা গুলি খেয়ে মরার মতো অল্পক্ষণের কষ্টের মৃত্যু নয়। এ মৃত্যু দীর্ঘ কষ্টের মৃত্যু। আল্লা এ কষ্টের মৃত্যু মুসলমানদের কেনো দিচ্ছে ? তারা কি মুহম্মদের মহাউন্মাদ নয় ? আর মহাউন্মাদ কি আল্লার প্রেরিত রসূল নয় ? আল্লা তো মুসলমানদের জন্য পরকালের সুখের গ্যারান্টি দিয়ে দিয়েছে। তাহলে ইহকালে মুসলমানদের সুখে রাখতে তার সমস্যা কোথায় ? মুসলমান ছাড়া পৃথিবীর তাবৎ জাতি মোটামুটি সুখে শান্তিতে বাস করছে। তাদের যেটুকু অশান্তি তারও কারণ মুসলিম নামের এই অদ্ভুত চিন্তা ধারার কতিপয় কিছু অমানুষ। তো, আল্লার মনোনীত ধর্ম ইসলামের অনুসারী না হয়েও অন্যরা কিভাবে পৃথিবীতে এত ভালো জীবন যাপন করছে? যেখানে ইসলামিক কান্ট্রি মানেই ক্ষুধা, দারিদ্র, হানাহানি আর আত্মঘাতি বোমা।

পৃথিবীর ইতিহাসে কখনও কোথাও শুনি নি যে খ্রিষ্টান, ইহুদি বা বৌদ্ধদের দেশে কখনও দুর্ভিক্ষ হয়েছে। হিন্দু অধ্যুষিত ভারতের উড়িষ্যা ও বিহারে ১৯৭১/৭২ সালে একবার কিছুটা দুর্ভিক্ষ হয়েছিলো। তারও কারণ বাংলাদেশের মুসলমান। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় প্রায় ১ কোটি বাঙ্গালি ইন্ডিয়ায় গিয়ে আশ্রয় নেয়; আর তাদের থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করতে গিয়েই ঐ এলাকা মুখোমুখি হয় খাদ্য সংকটের। তারপরও এটা তেমন একটা ভয়াবহ ছিলো না। কিছুদিনের মধ্যেই অন্যান্য এলাকা থেকে খাদ্য সামগ্রী এনে ভারত সরকার পরিস্থিতি সামাল দেয়।

এর আগে ১৭৭৬ সালে বাংলায় একটা দুর্ভিক্ষ হয়েছিলো। যার মূল কারণ ছিলো ইংরেজদের শোষণ। কিন্তু আমার সেটা বিবেচ্য বিষয় নয়। আমার বিবেচ্য বিষয় সংখ্যাগুরু এ মুসলিম অঞ্চলে আল্লা দুর্ভিক্ষ হতে দিলো কেনো ? এরপর বাংলায় দুভিক্ষ হয় ১৯৪২ সালে। এখানেও প্রশ্ন একটাই। আল্লা কাদের পক্ষে, মুসলমানদের পক্ষে না অমুসলমানদের পক্ষে ? উত্তরাঞ্চলের মঙ্গা বাদ দিলে বাংলা তথা বাংলাদেশে শেষ দুর্ভিক্ষ হয় ১৯৭৪ সালে। বঙ্গবন্ধুর পরিস্থিতি সামাল দিতে না পারা, আমেরিকা বঙ্গবন্ধু সরকারকে সহযোগিতা না করাসহ অন্যান্য কারণ যা ই থাকুক ঘটনার মূল ভিকটিম তো মুসলমানরাই। আল্লা এটা কেনো হতে দিচ্ছে ? সকল ক্ষমতা তো তারই হাতে। তার ইশারা ছাড়া তো গাছের একটা পাতাও নড়ে না। তাহলে কি তারই ইশারায় সোমালিয়ার এই ১ কোটি ২০ লাখ মুলমান না খেয়ে ধুকে ধুকে মরছে ? এরপরও হয়তো সোমালিয়ার ক্ষুধার্ত মুসলমানরা মৃত্যুর পূর্বে, কথা বলার তো শক্তি নেই, মুখে বিড় বিড় করে বলছে, ‘লা ইলাহা ইল্লাহা মুহম্মদের রাসূলুল্লাহ।’ ভাবখানা এমন, এই দুনিয়ায় তো কোনো সুখ পেলাম না পরকালে যদি একটু সুখ পাই।

সত্যিই বড় অদ্ভুত জাতি এই মুসলমান। এরা চিন্তা করতে করে শিখবে ? কবে এরা বুঝবে, আল্লা বলে কেউ নাই। আর থাকলেও তার করার কিছু নাই। আল্লার যদি কিছু করার থাকতো তাহলে মুসলিম বিশ্ব আজ ক্ষুধা-দারিদ্র-পীড়িত আর গুলি-বোমায় রক্তকবলিত দোযখ নয়, বেহেশতে পরিণত হতো। কারণ, মুসলমানরাই আল্লার পেছনে সময় ব্যয় করে বেশি। আল্লার যদি কিছু দেওয়ার ক্ষমতা থাকতো তো তাদেরই দিতো।

ধরে নিলাম, মুসলমান ছাড়া পৃথিবীর সমস্ত মানুষ আল্লাই সৃষ্টি করেছেন। কিন্তু কোরানের ভাষ্যমতে খ্রিষ্টান, হিন্দু, বৌদ্ধসহ অন্যরা তো আল্লার অবাধ্য সৃষ্টি। তো তাদের আল্লা এত ভালো রাখছে কেনো ? আল্লার সমস্ত রোষ মুসলমানদের উপর কেনো ? মুসলমানরা আল্লার সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য দৈনিক পাঁচবার তার তোষামোদ করে। এক হাজার মাসে বছর আছে ৮৩ টা এবং ৮৩ বছরে ৮৩ টা ‘শব ই কদর’ এর রাত থাকলেও আল্লা বলেছেন, ’ শবে কদর সহস্র্র মাস অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ’ কেনো এই আজগুবি কথা ? মুসলমানরা সেই প্রশ্ন না তুলে প্রতিবছরই সারারাত জেগে তোষামোদ আর কান্নাকাটি ক‘রে পরদিন কাজের ক্ষতি ক‘রে ঘুমায়। চোখের পানি আল্লার খুব পছন্দ, তাই শবে কদরের একরাতের চোখের পানিতে আল্লার মন ভরে না। এজন্য আল্লা মুসলমানদের কান্নাকাটির জন্য আর একটি রাত রেখেছে শব ই বরাত নামে। আল্লার সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য সেই রাতেও মুসলমানরা বিশুদ্ধ ত্রিভুজ অঙ্কণ বাদ দিয়ে তার তোষামোদ করে। জাকাতের নামে নিম্নমানের কাপড় চোপড় ফকির মিসকিনদের দেয়। গরীবদের দুঃখ কষ্ট বোঝার জন্য একমাস যাবৎ সারা রাত খেয়ে, সারা দিন না খেয়ে থাকে। আল্লার রক্ত পছন্দ বলে প্রতি বছর কুরবানীর নামে লক্ষ লক্ষ পশুর রক্তে পৃথিবীর মাটি ভিজিয়ে দেয়। আল্লা বলেছেন, রক্ত প্রবাহেই নাকি মুসলমানদের কল্যান। সেই জন্যই বোধ হয় মুসলমানরা রক্ত ঝরায় পশুর, সেই সঙ্গে মাঝে মাঝে মানুষেরও। সমর্থ মুসলমানেরা জীবনে একবার হজের নামে মরুভূমি থেকে আলহজ ডিগ্রি কিনে আনতে গিয়ে প্রতিবছর দেশের কোটি কোটি টাকা অপচয় করে। কাজ কাম বাদ দিয়ে সারা বছর চিল্লা দিয়ে বেড়ায়। পারলে যাকে তাকে ধরে মুসলমান বানানোর চেষ্টা করে আর ইসলামের দাওয়াত দিয়ে বেড়ায়। দাওয়াত কবুল না করলে আত্মঘাতী বোমায় কাফের মেরে নিজেদের বেহেশতে গিয়ে হুরের সঙ্গে ছহবত নিশ্চিত করে। এত কিছু করেও কেনো মুসলমানরা আল্লাকে সন্তুষ্ট করতে পারছে না ? কেনো যতসব প্রব্লেম মুসলিম দেশে ? খাদ্য নাই, বস্ত্র নাই, চিকিৎসা নাই। শুধু নাই নাই আর নাই। এত নাই এর মধ্যেও মুসলমানদের কি একবারও মনে হয় না যে, আল্লা নাই ?

এখনও পৃথিবীর ম্যাক্সিমাম দেশের ম্যাক্সিমাম লোক ধার্মিক; তারা কোনো না কোনো ধর্ম বিশ্বাস করে। কিন্তু যারা রাষ্ট্র পরিচালনা করে অর্থাৎ নীতিনির্ধারক বা মাথা এবং যারা রাষ্ট্রের মগজ; যেমন- কবি, সাহিত্যিক, শিল্পি, বুদ্ধিজীবী, বিজ্ঞানী তাদের অধিকাংশই নাস্তিক। এই নাস্তিকদের সংখ্যা যে দেশে যত বেশি সেই দেশের উন্নতিও তত বেশি। নাস্তিকরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চেষ্টা করে, আর আস্তিকরা আল্লার দোহাই দিয়ে দেশকে পেছনে ধরে রাখে। এর ফলেই উন্নতি বাধাগ্রস্ত হয়। ধার্মিকদের ভয়ে অনেক সময় নাস্তিকরা তাদের বিশ্বাসটাকে পর্যন্ত প্রকাশ করতে পারে না। কারণ, চেয়ার আর মাথা যাবার ভয় সবারই আছে। সবাই তো আর হুমায়ূন আজাদ বা তসলিমা নাসরিন নয়। প্রত্যেকেই এক অলিক আল্লা আর তার দোযখের ভয়ে সন্ত্রস্ত।

মুসলিম দেশে দুর্দশার পরিমান বেশি; কারণ, মুসলিম দেশগুলোতে নাস্তিকতার কোনো স্থান নেই। তাই সেসব দেশ উন্নতি করতে পারে না। জন্মসূত্রে একজন লোক ধার্মিক হতে পারে, হয়ও; কিন্তু জন্মসূত্রে কেউ নাস্তিক হয় না। নাস্তিক হতে হলে তাকে প্রচুর পড়াশুনা করে জ্ঞানার্জন করতে হয়। এই জ্ঞান তখন সে দেশ ও জাতির উন্নতিতে কাজে লাগাতে পারে। তাছাড়া একজন নাস্তিক কখনও কোনো দেশ, জাতি ও রাষ্ট্র ও মানবতার জন্য হুমকি নয়, যতটা হুমকি বা ভয়ংকর একজন ধার্মিক। এরা ধর্মের নামে অবলীলায় মানুষ খুন করতে পারে, ধর্ষণ করতে পারে। ব্যক্তি বা রাজনৈতিক স্বার্থে দাঙ্গা লাগিয়ে হাজার হাজার মানুষ মেরে ফেলতে পারে। হাজার হাজার কোটি টাকার সম্পদ টুইন টাওয়ার ধ্বংস করতে পারে; এমন কি নিজেকে শেষ করে দিয়ে হলেও। কী ভয়ানক ব্যাপার ! কোনো কিছুই এসব ধার্মিকদের কাছে অসম্ভব নয়। কিন্তু একজন নাস্তিকের কাছে এসব একেবারে অসম্ভব। মানবতার বিরুদ্ধে যায় এমন কিছু করা তার পক্ষে সম্ভব নয়।

ধার্মিকদের কাছে সবকিছুই সম্ভব বলে অবলীলায় এরা দেশের ভেতরে যুদ্ধ লাগাতে পারে, দেশকে গৃহযুদ্ধের দিকে ঠেলে দিতে পারে। এতে দেশের কোটি কোটি লোক না খেয়ে মরুক তাতে তাদের কিছু আসে যায় না। আসে যায় না তাদের আল্লারও। এই পরিস্থিতিই চলছে সোমালিয়ায়। একদিকে দেশের লক্ষ লক্ষ লোক না খেয়ে মরছে, অন্যদিকে জঙ্গী গোষ্ঠি আল শাবাব তাদের নিয়ন্ত্রিত এলাকায় ইসলামি শরিয়া আইন চালু করতে ব্যস্ত। লোকজন যে না খেতে পেয়ে দেশ ছাড়ছে এটা তাদের কোনো মাথা ব্যথার কারণ না। মাথা ব্যথা জাতিসংঘের লোকজনের। তারা সেখানে ত্রাণ নিয়ে যাচ্ছে আর সেখানকার বিদ্রোহী গ্রুপগুলো ট্রাকে হামলা করে সেগুলো লুট করে নিয়ে যাচ্ছে। এরপরও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে জাতিসংঘের লোকজন, যাদের সবাই প্রায় অমুসলিম, সোমালিয়ার লোকজনকে বাঁচানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তারপরও ইসলামী বিধান মতে এসব লোকজন কখনও বেহেশতে যাবে না। কারণ, তারা মুসলমান নয়। বেহেশতে যাবে তারাই যারা লোকজনকে না খেয়ে মারছে আর নিজেরা মরছে। কারণ, তারা নবীর উম্মত এবং নবী তাদের কাছে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ, একজন উম্মত রেখেও তিনি বেহেশতে প্রবেশ করবেন না।

শেষে এসে মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদ্মা নদীর মাঝি উপন্যাসের একটি লাইন মনে পড়ে গেলো: ’ঈশ্বর থাকেন ভদ্রপল্লীতে, উহাকে এখানে খুঁজিয়া পাওয়া যাইবে না।’ আমারও এখন তাই মনে হচ্ছে সোমালিয়ার দুঃখ দুর্দশাপীড়িত মানুষগুলোর মাঝে ঈশ্বর বা আল্লা এখন আর নেই। যেখানে তোষামোদ সেখানে আল্লা থাকে, যেহেতু সোমালিয়ানরা এখন খাবারের চিন্তায় ব্যাকুল তাই তাদের এখন আল্লাকে তোষামোদ করার সময় নাই, তাই আল্লাও সেখানে নাই। এখন আল্লা আছে ধনীদের শহর, নগর , গ্রাম আর ঝকমকে মসজিদে । আমি ঢাকায় থাকি। যেখানে ব্যঙের ছাতার চেয়েও মসজিদের সংখ্যা বেশি। এখানে এখনও খুব স্বাভাবিকভাবে মসজিদে আজান দেয়া হচ্ছে, লোকজন দামী পাজামা পাঞ্জাবী প‘রে মসজিদে আসছে। সেই আল্লাকেই, যে আল্লা গরীব দুঃখীদের পাশে থাকে না, তাকে তোষামোদ করে চলে যাচ্ছে। অন্যদিকে সোমালিয়ায় যে লক্ষ লক্ষ মুসলমান না খেয়ে মরছে তাতে তাদের কোনো বিকার নেই। না সাধারণ পাবলিকের, না সরকারের।