লিখেছেনঃ নূরুল হক

প্রথম অধ্যায়, দ্বিতীয় অধ্যায়

পৃথিবীর সিংহভাগ মানুষ ভাববাদকে না বুঝে গ্রহণ করে। এখানে শিক্ষিত অথবা অশিক্ষিতের প্রশ্ন আসে না। এর মুল কারন হচেছ পারিবারিক ভাবে চাপিয়ে দেওয়া ভাববাদের রীতি-নীতি। একজন শিশু দেখে দেখে শিখে। মাতা পিতার চাল-চলন, আচার-আচরণ সর্বতোভাবে না হলেও অনেক ক্ষেত্রে অনুকরণে তাহা আয়ত্ত্বের মধ্যে চলে যায়। এখান থেকে ফিরে তাকানোর সুযোগ খুব কম পাওয়া যায়। মাথার উপর মহা-অস্ত্র তাক করা আছে(দোজখ)। এই মহা অস্ত্র যে, কাগুজে বাঘ তাহা কল্পনা করতে পারে না। কল্পনায় নিতেও ভয় পায়। যারা কাগুজে বাঘকে ভয় পায় তারা না বুঝে ভয় পায়। নির্ভিক মানুষ ছাড়া ভাববাদের বেড়া জাল ছিন্ন করে সত্য প্রকাশ অতি দুরহ।

আমি মনে করি যে, পৃথিবীতে বেঁচে থাকার সাধ সকল মানুষের আছে। এখানে আস্তিক নাস্তিক প্রশ্ন কেন? সত্য প্রকাশে এত অন্তরায় কিসে ? ভাব বাদীরা গুরু মন্ত্রে দীক্ষিত। গুরুরা যাহা বলে গেছেন তাহাই শিরোধার্য, বিচার বিশ্লেষণ করেনা। মুসলিম সমাজে এর প্রবণতা বেশী। নড়লেই মরবে, মাথার উপড় খড়গ লটকানো। সর্ব ক্ষেত্রে সামাজিক ও নৈতিক অবক্ষয়ের চিত্র এত বেশী কেন ? আসল কথা সত্য প্রকাশে থলের বিড়াল বেড়িয়ে পড়ার ভয়? মানুষ সামাজিক জীব।সমাজ বদ্ধ হয়ে বসবাস করে। আর সমাজ বদ্ধ মানুষের সুষ্টভাবে বসবাসের প্রধান অন্তরায় এই ভাববাদ। ভাববাদের কারণে সমাজে আজ এত খুন খারাবি, হানাহানি, মানুষের কল্যাণ আজ বাধগ্রস্থ। তাই বিশ্ব কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভাষায় বলতে হয় ভাবাবাদগুলি পৃথিবী হতে মুছে দিতে পারলে অকালে লক্ষ লক্ষ মানুষকে প্রান দিতে হতো না। বিজ্ঞানের আলো দিয়ে পৃথিবী ভরে যেত। সমস্যার বেড়া জালে পৃথিবীর উন্নয়ন বাধাগ্রস্থ। ভাব বাদের কারণে মানুষ চলার-বলার স্বাধীনতা হতে বঞ্চিত। মানুষ বঞ্চিত হচ্ছে, মানুষে-মানুষে মহা-মিলনের আনন্দ হতে।

ভাববাদী সমাজ তাদের আসল চরিত্রকে আড়াল করে নিলর্জভাবে তাদের প্রচারিত মতবাদই ঈশ্বর প্রেরিত বলে দাবী করেন। তারা আরো দাবী করেন সহিষ্ণুতা, মানবতা ও ন্যায় বিচারের। কিন্তু ইতিহাসে আমরা দেখতে পাই তাঁদের নিষ্ঠুর বর্বরতা। নারী-শিশু নির্যাতন, শোষন-বঞ্চনা ও সর্বপরী হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে ধন সম্পদ লুন্ঠন করে নিরীহ হতভাগ্য নারীদের উপর অমানবিক ভাবে যৌন নির্যাতন করা। আর এই প্রবনতা ইসলামে বেশী লক্ষ্য করা যায়, যা ইতিহাস প্রমান দেয়। তারা মানবতা বিরোধী বর্বর কার্যকলাপ ন্যায় সংঙ্গত বলে চালিয়ে যান। ভাব বাদীদের নির্মন বলি ক্রসেড যুদ্ধে হাজার হাজার মুসলিম্ ও খৃষ্টান এবং ম্লেচ্ছ নির্ধন করা হয় গুজরাটে। কি নির্মম ভাববাদীদের কর্মকান্ড। এসমস্ত মানবতা বিরোধী কর্মকান্ডের উদ্দেশ্যে হচ্ছে তদীয় ভাব বাদের প্রধান্য বিস্তার।

মহা-প্রতারণার মুল বিষয়ে ফেরার আগে সম্মানিত পাঠক সমাজের নিকট আমার আরো কয়েকটি ব্যাক্তিগত মতামত পেশ করতে চাই। যেমন, চোরকে সাধু বলা যায় না তেমনি ভালকে মন্দ বলা যায় না। ধর্ম হচ্ছে ভাল, মন্দই হচ্ছে অধর্ম। ভাববাদীরা যাহা ধর্ম হিসাবে চালিয়ে যাচ্ছেন আমি তাহা ভাববাদ হিসাবে মনে করি, কারন হচ্ছে চোর যেমন সাধু নয়, তেমনি মন্দ তেমনি ধর্ম নয়। যেখানে মন্দ বা খারাপ বিদ্যামান তাহা কিভাবে ধর্ম হিসাবে গ্রহন করা যায় ?

মহা-প্রতারণার এই অধ্যায়ে এখন আলোচনা করবো মুহাম্মদের নবুয়ত লাভ, হিযরত এবং ক্ষমতায় অধিষ্টিত হওয়া নিয়ে।

১। নবুয়ত লাভের বর্ননায় পাওয়া যায় যে, মুহাম্মদ একাধিক্রমে ৪০ দিন হেরা পর্বতের গুহায় ধ্যান-মগ্ন ছিলেন। ৪০ রজনিতে জিব্রাইল ফেরেস্তা আল্লাহর বাণী নিয়ে তার নিকট উপস্থিত হন এবং সেই বাণী ওহি হিসাবে নাজিল করেন। এভাবেই তিনি পয়গম্বর হিসাবে আর্বিভূত হন।

নবুয়ত প্রাপ্তীর পর তিনি গৃহে ফিরে বিবি খাদিজাকে বিষয়টি অবহিত করেন আর শুরু করেন তাঁর ইসলাম প্রচার। ইসলাম প্রচার ও প্রসারের কলা কৌশল সকলের জানা। মুষ্টিমেয় কয়েক জন ঘনিষ্ট ব্যাক্তি ছাড়া মক্কা নগরীর আপামর জন-সাধারন, জ্ঞানী গুনী কবি সাহিত্যক তাঁর প্রচারিত ইসলামি মতবাদ কে সঠিক হিসাবে গ্রহন করেননি। মুহাম্মদও নাছোড় বান্দা, তিনি তাঁর মতবাদকে কয়েক বছর যাবত প্রচার করতে থাকেন, ফলশ্রুতিতে মক্কা বাসীদের সাথে তাঁর সংঘাত বেধে যায় এবং তাঁর প্রাণনাশের আশংকা দেখা দেয়। সুচুতুর মুহাম্মদ বুঝতে পারলেন যে, তাঁর আর এক মুহুর্ত মক্কা নগরীতে অবস্থান নিরাপদ নয়। তিনি কালক্ষেপন না করে রাতের অন্ধকারে বিশ্বস্ত আবু বক্করকে সংগে নিয়ে মদীনা নগরীর উদ্দেশ্যে পাড়ি জমান। এখানে বলা প্রয়োজন যে, পূর্বে ব্যবসা বাণিজ্যের কারনে মদীনা নগরীর বেশ কিছু প্রভাবশালী ব্যাক্তির সহিত মুহাম্মদের সখ্যতা ছিল। তারা মুহাম্মদকে আশ্রয় দেন। এদিকে মুহাম্মদের মদীনায় গমন ও আশ্রয় গ্রহন করা মক্কাবাসী কোরাইশগন জানতে পারেন। মদীনাবাসীদের আশংকা হয় যে কোন মুহুর্তে মক্কাবাসীরা মদীনা আক্রমন করতে পারে। মুহাম্মদকে সুরক্ষা দেওয়া ও মক্কাবাসীদের আক্রমন প্রতিহত করনের জন্য মদীনা বাসীগন প্রস্তুতি গ্রহন করতে থাকে। মুহাম্মদের কয়েক বছরের প্রচারনায় মক্কাতে যে কয়েক ব্যক্তি ইসলামে দীক্ষিত হন তাঁরাও প্রান ভয়ে মদীনাতে আশ্রয় গ্রহন করেন, তাঁরাও মদীনা বাসীদের সহিত যোগ দিয়ে মুহাম্মদের সুরক্ষা বাহীনিকে কিছুটা হলেও শক্তিশালী করেন। এই নব গঠিত বাহিনীকে উজ্জীবিত করনের নিমিত্তে মুহাম্মদ বিভিন্ন ধরনের ছলাকলার আশ্রয় গ্রহন করেন। যেমন মদীনা বাসীকে আনছার বা সয়হায়তাদান কারী হিসাবে সম্মানীত করেন। যারা ইসলাম রক্ষায় এগিয়ে আসবেন তাঁদেরকে আল্লাহ তায়ালা বিনিময় স্বরুপ বেহেস্ত দান করবেন। যারা ইসলামের জন্য যুদ্ধ করবেন তারা মরলে শহীদ এবং বাঁচলে গাজী। দুইটির পুরষ্কারই বেহেস্ত প্রাপ্তী যা আল্লাহর প্রেরিত বানী বলে চালিয়ে দেন। মুহাম্মদের সুরক্ষা বাহিনীর প্রস্তুতি কালে হঠাৎ করে তাদের সামনে একটা সুখবর আসে। সু-খবরটি এইরুপ ঃ- একদল মক্কীয় বনিক আবিসনিয়া হতে অনেক মালামাল নিয়ে মদীনা অতিক্রম করছে, মুহাম্মদ এই খবর পেয়ে তার বাহীনি দ্বারা বনিকদের গতিরোধ করেন এবং তাদেরকে ইসলাম গ্রহনের তাগিদ দেন বনিকদল তার প্রস্তাবে রাজি না হলে তার গঠিত বাহিনী দ্বারা বনিকদের মালামাল সমূহ লুন্ঠন করেন। ঐ সমস্ত মালামাল বিধর্মীর তথা গনিমতের মালামাল হিসাবে জায়েজ বা হালাল বলে অনুসারীগনকে আশ্বস্ত করেন লুন্ঠিত দ্রব্য সমূহ ভাগাভাগিতেও তিনি বিশেষ কৌশল গ্রহন করেন। যাহা ইউক মক্কীয় বনিক গনের বিপুল মালামাল ইসলামের চাকা সচল করে। আনছার ও মুজাহিদ বাহিনী উজ্জিবীত হতে থাকে মুহাম্মদের কৌশলে। শুরু হয় মুহাম্মদের নিত্য নতুন কলা-কৌশল। আর পিছ পা হন নাই। এর পরে আসে ওহুদের যুদ্ধ। ওহুদের যুদ্ধে ৩৬০ জন যোদ্ধাকে নিয়ে শক্র পক্ষের সহস্রাধিক যোদ্ধকে পরাজিত করে তাদের বিপুল পরিমান রসদ এবং যুদ্ধাস্ত্র দখলে নেন। দখলকৃত যুদ্ধাস্ত্র ও রসদ সমুহ ইসলামকে সুদৃঢ় করে। বলা যায় এই ওহুদের যুদ্ধেই ইসলাম পুর্নতা পায়। এই হলো মুহাম্মদের নবুয়ত প্রাপ্তি। হিযরত এবং ইসলামের গোড়া পত্তনের সার সংক্ষেপ।

এখন আলোচনায় আসি ১। নবুয়ত প্রাপ্তিঃ- ইসলামী মতে দেখা যায় হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) একাধিক ক্রমে ৪০ দিবস হেরা পর্বতের গুহায় একান্ত নির্জনে ধ্যান মগ্ন ছিলেন। তৎপর ৪০ দিনের রজনীতে আল্লাহর প্রেরীত দূত জিব্রাইল ফেরেস্তা আল্লাহর বানী মুহাম্মদের নিকট পৌছে দেন। আর তিনি পয়গম্বর হিসাবে স্বীকৃতি পান।
একজন মানুষের পক্ষে ৪০ দিনের পানাহার না করে বিভাবে জীবিত থাকতে পারে। ৪০দিন একটা মানুষের খোজ খবর কেউ করল না। যাহা বোধগম্য নহে।

২। হিযরতঃ- মুহাম্মদ হিযরত করলেন। অর্থাৎ মক্কা হতে মদীনায়, কিন্তু কেন? বলা হয় মক্কাতে তার প্রান নাশের আশংকা ছিল। যে কোন মুহুর্ত্বে তার প্রান-বধ হতে পারে, তাই তিনি আল্লাহর আদেশে মদীনায় হিযরত করেন। ইসলামী মতে বলা হয় আল্লাহ সর্বশক্তিমান। তবে মক্কায় তার প্রিয় নবীকে সুরক্ষা করতে পারলেন না কেন? এখানে সর্বশক্তিমানের ভুমিকা কোথায়? কেন মুহাম্মদকে রাতের অন্ধকারে, একান্ত গোপনে এবং বিশ্বস্ত অনুসারীকে সংগে নিয়ে মদীনায় পালিয়ে যেতে হলো। আর বিশ্বস্ত একজন অনুসারীকে সংগে নিলো তবে কি আল্লাহর উপর তার বিশ্বাসের ঘাটতি ছিল ?
ইসলামী মতে বলা হয় আল্লাহ সর্বশক্তিমান ও সব সময় সর্বক্ষেত্রে বিরাজমান। আল্লাহ যদি সর্বক্ষেত্রে বিরাজমান থাকেন তবে জিব্রাইল মারফৎ ওহি পাঠান কেন? অন্যের মাফরৎ যখন কোন কিছু তৃতীয় পক্ষের নিকট পাঠানো হয় তখন কি সেখানে ১ম পক্ষের উপস্থিতি থাকার কথা ? এখানে সর্বক্ষেত্রে বিরাজমান থাকার যুক্তিকতা কোথায়?
আলোচিত বিষয়ে কি মনে হয় না যে, কিভাবে মানুষকে প্রতারনা ফাঁদে ফেলা হয়েছে। কিভাবে বোকা বানানো হয়েছে। বোকার ফসল তো এভাবেই পোকা খায়, নয় কি?

আল কোরআনে সুরা ইউনুছের ৫নং আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন যে, দেখ আমি কিভাবে সুর্যকে তেজদীপ্ত ও চন্দ্র কে জ্যোর্তিময় রুপে সৃষ্টি করেছি।
বর্তমান সময়টা একান্ত ভাবে বিজ্ঞানের। বিজ্ঞান এখন সৃষ্টির রহস্য উদঘাটন করেছে। সুর্য্য তেজদীপ্ত তাহা বিজ্ঞান কেন,যে কোন পাগল্ও স্বীকার করে। কিন্তু চন্দ্রের আলো আছে এমন কথা কি পাগলের নয়। সুর্যের তেজ আছে, চন্দ্রের নিজস্ব কোন আলো নেই। সুর্যের আলোয় আলোকিত দেখায় চন্দ্রকে। চন্দ্র জ্যের্তিময় কথাটি ডাহা মিথ্যা। লক্ষ্য করুন আল্লাহ প্রেরিত বাণীর দশা। স্রষ্টা যদি থেকে থাকে, তবে তার প্রেরিত বাণীতে ইহা কিসের আলামত? হ্যাঁ আলামতটি হচ্ছে দুর থেকে দেখে দেখে বানানো গল্পের। আর এভাবেই নিজের বানানো কথাগুলিকে স্রষ্টা প্রেরিত রুপে চালানো হয়েছে যা তৎকালিন মানুষের দুর্বোধ্য ছিল। যাহা হইক, এই ডাহা মিথ্যা তথ্যটি বর্তমান বিজ্ঞানের যুগের মানুষ কিভাবে গ্রহন করে তাহা ভেবে পাইনা। ধমান্ধতায় মানুষ নিমজ্জিত। সত্যকে সত্য বলার সাহসী মানুষের একান্ত অভাব। প্রতারনার ফাঁদে মানুষ আজ বন্ধি। মানুষকে ভাববাদের বন্ধি দশা হতে মুক্ত করতে বহুল প্রচার প্রচারনার দরকার, যাতে করে মানুষ সত্যের সন্ধান পায়।

আল কোরআন যে মানুষের সৃষ্টি তাহাতে কোন সন্দেহ নেই। আল কোরআনের বিভিন্ন সুরা তাহা প্রমান করে, আর এই জন্যই আমি আল কোরআনের বিভিন্ন ভাষ্যসহ বাস্তবতা পাঠক সমাজের কাছে মহা প্রতারনার অংশ হিসাবে পর্যায়ক্রমে আলোচনা করবো।

সুরা আল কাহাফ আয়াত (৮৩) (হে নবী) এরা তোমার কাছে যুলকারনায়ন সম্পর্কে জানতে চায়, তুমি তোদের বলো (হ্যাঁ) আমি আল্লাহর কেতাব থেকে তাঁর বিবরন তোমাদের কাছে এক্ষনি পড়ে শোনাচ্ছি। সুরা আল কাহাফ আয়াত (৮৪) (আল্লাহ তায়ালা বলছেন) আমি যমীনের বুকে তাকে (বিপুল রাজনৈতিক) ক্ষমতা দান করেছিলাম। এবং আমি তাকে (এর জন্য প্রয়োজনীয়) সব উপায় উপকরন ও দান করেছিলাম।

সুরা আল কাহাফ (৮৫) (একবার) সে সফরে বেরুবার প্রস্তুতি গ্রহন করতে লাগলো।

সূরা আল কাহাফ আয়াত (৮৬) (চলেতে চলতে) এমনি ভাবে সে সূর্য্যের অস্ত গমনের জায়গা গিয়ে পৌছাল। সেখানে গিয়ে সূর্য্যেকে (সাগরের) কালো পানিতে ডুবতে দেখলো তার পাশে সে এক ক্ষুদ্র জাতিকে (বাস করতে) দেখলো, আমি বললাম হে যুলকার নায়ন (এরা তোমার অধিনস্থ) তুমি ইচ্ছা করলে (তাদের ) শাস্তি দিতে পার অথবা তাদের সাথে সৎ ভাবেও গ্রহন করতে পার।

ইসলামী ভাববাদীরা কোরান কে আল্লাহর প্রেরিত বানী হিসাবে শ্রেষ্ঠ মর্যাদা দান করেন। তাঁরা উল্লেখিত আয়াত তিনটি আক্ষরিক ভাবে অনুধাবন করছেন কি ?
আল কোরানে উল্লেখিত আয়াত তিনটির ৮৩ নং আয়াতে আল্লাহ তায়ালা নবীকে বললো তুমি তাদেরকে যুলকার নায়ন সম্পর্কে আল্লাহর কেতাব হতে জানাও। উক্ত সুরায় ৮৪ নং আয়াতে দেখাগেল জুলকার নায়ন কে রাজ নৈতিক ক্ষমতা সহ যাবতীয় উপকরন দান করেন। উক্ত সুরার ৮৫ নং আয়াতে সফরের প্রস্তুতি লক্ষ্য করা গেল।

আর ৮৬ নং আয়াতে দেখা যায় সফররত অবস্থায় চলতে চলতে সে সূর্য্যের অস্তগমনের জায়গায় গিয়ে পৌছল। জুলকার নায়ন সেখানে গিয়ে সূর্য্যেকে সমুদ্রের কালো পানিতে ডুবতে দেখালো। সেখানে যুলকার নায়ন একটি জাতিকে বাস করতে দেখালো। ঐ জাতিটিকে যুলকার নায়নের অধিনস্থ্য করে দিল। জাতিটির পুরস্কার ও শাস্তির ক্ষমতা যুলকার নায়ন কে প্রদান করা হলো। যুলকার নায়ন চলতে চলতে সূর্য্যরে অস্তগমনের স্থানে গেল। এই কথাটি বর্তমান বিজ্ঞানের যুগের মানুষ মেনে নিতে পারে ? যারা মেনে নেয় তাদেরকে কি বলা যেতে পারে? মুর্খ না অন্য কিছূ ? সূর্য্য তো কোথাও অস্ত যায় না, শুধু অঞ্চল ভিত্তিক উহা দৃষ্টি গোচর হয়। পৃথিবী আহ্নিক গতির ফলে সুর্য আড়ালে পড়ে মাত্র। যুলকার নায়ন সূর্য্য অস্ত গমনের স্থানে গিয়ে দেখেন সূর্য্য সমুদ্রের কালো পানিতে ডুবছে। এই কথাটি সেই বলতে পারে যার সূর্য্যের আয়তন সম্পর্কে সামান্যতম ধারনা নেই। দুর থেকে সুর্য্যকে গোলাকার থালার মত দেখে ভেবেছিল সূর্য একটি সীমিত আকারের বস্তু। তাই এ ধরণের বোকা মার্কা কথা বলা সম্ভব। সমুদ্র সৈকত গিয়ে ঐরূপ দৃশ্য অবলোকন করা যায়। যুলকার নায়ন সুর্য্যকে সমুদ্রের কালো পানিতে অস্ত যেতে দেখলেন কথাটি অবাস্তব নয় কি?

যুলকার নায়ন সুর্য অস্ত গমনের স্থানে একটি ছোট্ট জাতির সন্ধান পেল। সুর্য অস্ত গমনের স্থানে যাওয়া এবং সেখানে মানুষের বসবাসের কথাটি একে বারেই অবাস্তব নয়? তথায় কি অন্য কোন গ্রহের সন্ধান পাওয়া গেল? যারা সূর্যের তাপমাত্রা সম্পর্কে জানে না শুধু তারাই এই কথা গুলি মেনে নিতে পারে। যারা মানুষকে ধোকা দিতে পারে, তাদের দ্বারাই এই সমস্ত কল্পকাহিনী তৈরী হতে পারে। এখানে অনুমেয় যে, মোহাম্মদ তার রচিত কাহিনী গুলো ঐশ্বরিক বানী হিসাবে দাবী করেন, যা তৎকালিন আরব সামাজের সচেতন মানুষ, কবি সাহিত্যিক, বুদ্ধি জীবি ও সমাজ সচেতন মানুষ মেনে নিতে পারেননি। যে সকল কবি সাহিত্যিক ও সচেতন মানুষ মুহাম্মদের কল্প কাহিনী গুলো মেনে নেননি, তাদেরকে মোশরেক/ নাফরমান হিসাবে আখ্যায়িত করে গুপ্ত ঘাতক নিযুক্ত করে তাদেরকে হত্যা করা হয়। আর আল কোরান ঐ সমস্ত হত্যাকান্ডের বৈধতা দেয়। (আল কোরআন দেখুন)।

সুরা আল কাহাফ এর আয়াতে দেখা যায় সূর্য সমুদ্রের কালো পানিতে ডুবছে। এখানে প্রশ্ন হয়, যে গ্রন্থ সমুদ্রের পানিতে সূর্যকে ডুবায় সেই গ্রন্থ কে কিভাবে ঐশ্বরিক বানী হিসাবে মেনে নেওয়া যায় আর যদি উক্ত বিষয়টি শুধু গল্প হিসাবে ধরে নেওয়া যায়, তাহলে বলতে হয়, সে আল্লাহ অবাস্তব কল্প কাহিনী মানুষকে শুনায়, তার আল্লাহ নামের বাস্তবতা কোথায়, অবাস্তব আল্লাহ অবাস্তব ভিত্তিহীন কল্প কাহিনী নয় কি? (চলবে)

(কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ-বাংলার মহান দার্শনীক আরজ আলী মাতব্বর, যাহার গ্রন্থ সমুহ পাঠ করে ধারনা প্রাপ্ত হই এবং আল কোরানের বাংলা অনুবাদক হাফেজ মনির উদ্দিন আহাম্মদ)।