কেন তুমি জীবনভর
অন্যের খাঁচায় অবরুদ্ধ,
কেন তোমার নেই কোন অধিকার
নিজের মতো ক’রে বাঁচার?
কেন তুমি তালাবদ্ধ
শুধু গৃহকোণে?
কেন তুমি প্রথায় প্রথায় আপাদমস্তক বিদ্ধ,
তোমার প্রতি শত অবিচারেও
কেন তুমি নীরব-নিস্তব্ধ?
কেন তুমি ক্ষুদ্র হয়ে থাক নিজের মনে?
নিজের অধিকারের তরে কেন তুমি করনা যুদ্ধ?
কেন তোমার নিজের জীবনখানি
অপরের কাছে গচ্ছা রাখ,
কেন তুমি অন্যের সম্পত্তি হয়ে বাঁচ?
কেন তুমি অন্যের নির্দেশে
আপনাকে অন্ধকার-আড়ালে ঢাক?
কেন তুমি আজন্ম একটি বৃত্তে আবদ্ধ
কেন তোমার জীবন অন্যে করেছে জব্দ?
কেন তুমি সকল আঘাত নাও শরীর পেতে,
কেন তুমি সকল অপমান নাও হৃৎপিণ্ড পেতে?
কেন তুমি কষ্ট পেলে অশ্রুজলে ভাস
কেন তুমি নিঃশেষ হও কেঁদে কেঁদে?
তুমি সয়ে যাবে আর কত আঘাত
এবার কেন তুমি করনা প্রতিবাদ
এবার কেন তুমি করনা প্রতিঘাত?
আমার ও এই প্রশ্ন নারীকে নয় কবিকে ৷
@শুভ্র,
একই প্রশ্ন আমারও , আমার নিজের প্রতি এবং সকল চিরবন্দিনী নারীর প্রতি।
আমি একজন উচ্চশিক্ষিত ডক্টরধারী নারীকে খুবই কাছ থেকে জানি ও চিনি যে ছোটকাল থেকেই একটি সেক্যুলার পরিবেশের মধ্যে বড় হয়েছে। নিরশ্বর,বস্তুবাদীদর্শন,নারীবাদ ও মার্ক্সবাদী মতবাদে জ্ঞাত ছিল। নিজের বিবাহিত জীবনের বেলায় সারাজীবন সুভোনিষ্ট এক কমিউনিষ্ট পুরুষতন্ত্রের অসভ্য নামধারী স্বামীর যাতাতলে একযুগ পিষ্ট হয়েছে।
সে চক্র থেকে বহু মাসুল দিয়ে অন্যের সাহায্যে বের হয়ে ইউরোপে সেটেল হয়েছে। বিদেশে কয়েক বছর থাকার এতোকিছুর পরে এখন আবার সব তন্ত্র-মন্ত্র ভূলে গিয়ে একেবারে অজানা-অচেনা এক তথাকথিত বাংগালী ধর্মবিশ্বাসী দুই বিবাহিত এক আদমের বাহুডরে আবদ্ধ হয়েছে।
এই যদি হয় আমাদের দেশের তথাকথিত উচ্চশিক্ষিত অবলা নারীর ভূশন তাহলে আমার আপনার কাছে প্রশ্ন কোন নারীরা সব তন্ত্র সহ পুরুষতন্ত্রের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ বা প্রতিঘাত করবে………
:-X
@মাহবুব সাঈদ মামুন,
সাধারণত ধারণা করা হয় যে ,অস্বাবলম্বী ও অপেক্ষাকৃত কম শিক্ষিত নারীরাই পুরুষের হাতে নির্যাতিত হয়ে থাকে ।কিন্তু রুমানার ঘটনা দেখে মনে হচ্ছে সর্ব স্তরের নারীরাই নির্যাতিত হচ্ছে।
যা বলেছেন আপনি কি এর থেকে বাইরে?
@অর্থি,
কন্যা সন্তান হিসাবে, নারী হিসাবে আমাকে বিভিন্ন সময় লিঙ্গ বৈষম্যের শিকার হতে হয়েছে।তাই বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি লিঙ্গ বৈষম্য কতটুকু ভয়াবহ। আমি অনেক মাকে দেখেছি, ভাল খাবারটা বেশি পরিমানে পুত্রের মুখে তুলে দিতে। পুত্র ভাল ভাল খেয়ে, আদরে গদগদ হয়ে বাইরে খেলতে যায়। কন্যাকে বাইরে যেতে দেয়া হয়না,খেলতে দেয়া হয়না এবং অপেক্ষাকৃত কম সুস্বাদু খাবারটি তাকে কম পরিমানে দেয়া হয়। বলাই বাহুল্য যে,কন্যাটিই সংসারের সব কাজ ক’রে থাকে। মাই যাখানে পুত্র-কন্যার মাঝে পার্থক্য করেন সেখানে আর কী বলব, কার কথা বলব?
শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে নারীরা যে চরম অবিচারের শিকার আমি তার বাইরে নই। যেই এর বিরুদ্ধে মুখ খুলেছে তাকেই মানুষ খারাপ বিষেশণে বিষেশিত করেছে।পরিবর্তন আনতে চাইলে লোকের কথায় পিছপা হলে চলবেনা।
এই লাইনটা একটু কেমন কেমন না!হৃৎপিন্ড পেতে অপমান কীভাবে নেয়!
যাই হোক,ভালো লেগেছে।তবে সারাদেশে বছরের প্রতিটি সময় নারীরা এই রকম নির্্যাতনের শিকার হয়।সবসময় এ বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলার লোক দরকার।অথচ কোন ঘটনা না ঘটলে আমরা এ বিষয়ে প্রায় নিশ্চুপ থাকি।মুক্তমনা কী এ বিষয়ে কোন উদ্যোগ নেবে কি-না;কী রকম উদ্যোগ ঠিক বলতে পারছি না-মডারেটররা কী কিছু ভাবছেন এ বিষয়ে?
@ইমরান মাহমুদ ডালিম,
এখানে’ হৃৎপিণ্ড’ মানে মন।পংক্তিটির অর্থ দাঁড়ায় কেন তুমি সকল অপমান মনে মনে সহ্য ক’রে যাও
রুমানার মর্মান্তিক ঘটনার উপরে লীনা রহমান তো একটি পোস্ট দিয়েছেন।সেখানে আলোচনা হচ্ছে। মুক্তমনার পক্ষ থেকে আর কোন পদক্ষেপ নেয়া হবে কিনা জানিনা।