লিখেছেন : হৃদয়াকাশ

কোরান যে আল্লার মুখের কথা নয়, এটা যে হযরত মুহম্মদের চিন্তা চেতনার ফসল -এরকম কথা বলা হলেই ইসলামিস্টরা কল্লা কাটার জন্য তেড়ে আসে। এতে অবশ্য তাদের কোনো দোষ নেই; কারণ, হযরত মুহম্মদ তো নিজেই তাদের এ শিক্ষা দিয়ে গেছেন। নবী জীবিত থাকতেই কোরানের বাণী চ্যালেঞ্জকারী ও সন্দেহবাদীদের যাকে যেভাবে পেয়েছেন সেভাবেই হত্যা করিয়েছেন। এ বিষয়ে পরে আলাদা একটা পোস্ট লেখার ইচ্ছা আছে।

আসল কথায় আসি, কোরান যে আল্লার বাণী নয় একথা কোরানের ব্যাকরণগত ভুল দিয়েই প্রমাণ করা যায়। যেমন- কোরানের প্রথম বাণী, যা মুসলমানরা – আল্লা যে জ্ঞান অর্জনের জন্য মুসলমানদের কত তাগিদ দিয়েছেন তা বোঝানোর জন্য – বহুলভাবে প্রচার করে থাকে, “পড় তোমার প্রভুর নামে, যিনি তোমাকে সৃষ্টি করেছেন।” এই বাণীটির দিকে একটু ভালো করে তাকালেই বোঝা যায় এই কথাটা নবীর। অথচ কোরান আল্লার বাণী, সেখানে নবীর কথা থাকতে পারে না। আল্লা যদি নিজে এই কথাটা বলতো তাহলে বাক্যটা হয়তো এমন হতে পারতো ,“ পড় তোমরা আমার নামে, কারণ আমি তোমদের সৃষ্টি করেছি।” অথবা, “পড় তোমার সৃষ্টি কর্তার নামে”- এমন হলেও চলতো। অথচ বলা হয়েছে, “পড় তোমার প্রভুর নামে, যিনি তোমাকে সৃষ্টি করেছেন।” এই বাক্যের যিনি শব্দটিই সকল সংশয়ের মূল। যিনি মানেই এখানে তৃতীয় একজনের উপস্থিতি এবং এই ব্যক্তি মুহম্মদ।

কোরান যে আল্লার বাণী নয় এটা অবুঝ মুসলিমদের মাথায় ঢোকানোর জন্য আজকে কিছু বাস্তব ঘটনার কথা লিখবো। এরপরেও যদি তাদের মাথায় এটা না ঢোকে তাহলে জ্ঞানাজর্নের জন্য সুদূর চীন দেশে গিয়েও লাভ নেই। কারণ জ্ঞানাজর্ন করতে হলে মাথায় মগজ থাকতে হয়। মগজ ছাড়া মসজিদ, মন্দির, গির্জায় যাওয়া চলে; কিন্তু জ্ঞানাজর্নের জন্য কোথাও যাওয়া বৃথা।

প্রথম ঘটনা। আল- বারা হতে বণির্ত, একবার নবী; ওহী পেয়ে উপস্থিত সাহাবীদের জানালেন, “যেসব মুসলমান বাড়িতে বসে থাকে এবং যারা আল্লাহর কারণে যুদ্ধ করে, তাদের মযার্দা সমান নয়।” তারপর বললেন, জায়েদ(নবীর পালক পুত্র)কে ডাকো, কালির দোয়াত এবং হাড়ের টুকরো লাগবে লেখার জন্য। কবিতার ভাষায় লেখা শুরু হলো, ‘মযার্দা সমান নয় যেসব মুসলিম বসে থাকে…।’ বিস্তারিত ওহী শুনে সেখানে উপস্থিত এক অন্ধ মুসলমান আমর বিন উম্মে মাকতুম বললো, হুজুর আমি তো অন্ধ, আমার জন্য কী নিদের্শ ? নবী দেখলো বিপদ, তাই তো – যারা শারীরিকভাবে অক্ষম তারা কী করবে ? যে ওহী দেওয়া হলো তা তো সব মুসলমানদের জন্য। সঙ্গে সঙ্গে নবী ধ্যান মগ্ন হলেন এবং নাজিল হওয়া ওহীটাকে একটু পরিবতর্ন করে বললেন, “মুসলিমদের মধ্যে যারা অক্ষম নয় অথচ ঘরে বসে থাকে এবং যারা আল্লাহর কারণে যুদ্ধ করে, তাদের মযার্দা সমান নয়।” (সুরা ৪, নিসা, আয়াত ৯৫)। দেখা যাচ্ছে প্যাঁচে পড়লে আল্লাও ওহী পরিবর্তন করে। অথচ কোরানের ১০ নং সূরা ইউনূস এর ৬৪ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে, “আল্লাহর বাণীর কোনো পরিবতর্ন নেই।” একই রকম বলা হয়েছে ১৮ নং সূরা কাহাফ এর ২৭ নম্বর আয়াতে, “ তাঁর বাণী পরিবতর্ন করার কেউ নেই।” এই একই কথা আবার ৬ নং সূরা আনআমের দুই জায়গায় বলা হয়েছে। আয়াত ৩৪ এ বলা হয়েছে ,“ আল্লাহর বাণী কেহ পরিবতর্ন করতে পারবে না” এবং ১১৬ আয়াতে বলা হয়েছে, “সত্য ও ন্যায়ের ক্ষেত্রে তোমার প্রতিপালকের বাণী সম্পূর্ণ ও তাঁর কথা পরিবর্তন করার কেউ নেই।” এই সব দেখে আমার মনে হচ্ছে আল্লার স্মরণশক্তি খুব দুর্বল। কখন কী বলছেন তা তার মনে থাকছে না। তাই একই কথা বারবার চলে আসছে । এই যদি হয় অবস্থা তাহলে এই মহাবিশ্বকে সুশৃঙ্খলভাবে চালানো তার পক্ষে সম্ভব কিভাবে ? এখানে আমরা খেয়াল করতে পারি আল্লার এই বাণীটা কিন্তু পরিবর্তন করে ফেলেছে একজন মুসলমান, যে কিনা অন্ধ।

উপরোক্ত ঘটনা জেনে যারা অবাক হয়েছেন তাদের জন্য আরও বিস্ময় অপক্ষো করছে নিচের ঘটনায়। তৃতীয় খলিফা হযরত উসমানের বৈমাত্রেয় ভাই আব্দুল্লাহ বিন সাদ বিন আবি সারাহ এক সময় মুহম্মদের খুব প্রিয়পাত্র ছিলেন এবং কোরান লেখায় দীর্ঘদিন মুহম্মদের সেক্রেটারি হিসেবে কাজ করেছেন। এই লিখতে লিখতেই এক সময় সাদের সন্দেহ হয় আল্লার ওহী বলে মুহম্মদ যা বলে তা ঠিক আল্লার বাণী নয়, এগুলো মুহম্মদের বানানো কথাবার্তা। ‘আছরারুত তানজিল ওয়া আছরারুত তা’য়ীল’ গ্রন্থে হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আল বাদাওয়ী এই ঘটনাটি বর্ননা করেছেন এভাবে, একদিন মুহম্মদ ওহী প্রাপ্ত হয়ে ২৩ নং সূরার ১২ থেকে ১৪ আয়াতের “এবং সত্যসত্যই আমি মানব মন্ডলীকে কদর্মের সার দ্বারা সৃষ্টি করিয়াছি……………তৎপর তাহাকে আমি অন্যসৃষ্টিরূপে সৃষ্টি কারিয়াছি” এই অংশটি বলার পর লিখতে লিখতে সাদ বলে উঠেন, ‘আল্লাহ গৌরবান্বিত অত্যুত্তম সৃষ্টিকর্তা’। শুনে নবী বললেন, ‘লাগিয়ে দাও এই বাক্যটিও’, লাগানো হলো; চমকে উঠলেন সাদ। সন্দেহটি গাঢ় হলো। পরে আরেকবার যখন এক আয়াতের শেষে মুহম্মদ বললেন, “এবং আল্লাহ পরাক্রমশালী ও বিজ্ঞ”- এই বাক্যটি সংশোধন করে সাদ লিখতে বললেন, ‘এবং আল্লাহ সব জানেন ও বিজ্ঞ’। মুহম্মদ অমত করলেন না, লিখতে বললেন। এই ঘটনার পর সাদের আর কোনো সন্দেহ থাকে না যে কোরান আল্লার বাণী নয়, এটা মুহম্মদেরই বানানো । তারপর সাদ প্রকাশ্যে ইসলাম ধর্ম ত্যাগ করে কোরায়েশদেরে পক্ষ অবলম্বন করে প্রচার করতে থাকে তার আয়াত সংশোধনের কাহিনি।

এই সাদকে উদ্দেশ্য করেই নাকি ৬ নং সূরা আনআমের ৯৩ নং আয়াতে বলা হয়েছে, “এবং এই গ্রন্থ, ইহাকে আমি কল্যাণজনকরূপে ও ইহার পূর্বে যাহা ছিল তাহার সপ্রমানকারীরূপে অবতারণ করিয়াছি, এবং ইহা দ্বারা তুমি মক্কাবাসী ও তাহার চতুষ্পার্শ্ববর্তী লোকদিগকে ভয় প্রদর্শন করিবে।” এই সময় মুহম্মদের তেমন ক্ষমতা ছিলো না বলে কোরানের আয়াত দিয়ে তিনি শুধু ভয় দেখাবার চেষ্টা করেন। কিন্তু যখন পরবর্তীতে মক্কা দখল করে ফেলেন তখন আর তার ভয় দেখাবার প্রয়োজন ছিলো না। পুরোনো শত্রুদের শায়েস্তা করার জন্য তিনি একটি হিট লিস্ট তৈরী করেন। যার অধিকাংশই ছিলো সেই সময়ের খ্যাতিমান কবি এবং ইসলামের বিরোধিতাকারীরা। এই হিট লিস্টে ছিলেন সাদও। এটা জানার পর হযরত উসমান তার ভাইকে লুকিয়ে রাখেন এবং একদিন সাদ সহ নবীর কাছে গিয়ে হাতে পায়ে ধরে প্রাণভিক্ষা আদায় করেন। মুহম্মদের দুই মেয়ের স্বামী-এছাড়া নিজেরও ডানহাত উসমানের অনুরোধ মুহম্মদ ফেলতে পারলেন না। ক্ষমা করে দিলেন। সাদসহ উসমান চলে যাওয়ার পর মুহম্মদ তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা নিয়োজিত ঘাতককে বললেন, “উসমান যখন প্রাণভিক্ষা চাইছিল তাঁর ভাইয়ের, তখন আমি নীরব রইলাম, তুমি কেন তৎক্ষণাৎ আব্দুল্লাহ বিন সাদের গর্দান কেটে ফেললে না?” ঘাতক জবাব দিল, ‘হে আল্লাহর রসুল, বুঝতে পারিনি, আপনি আমাকে সামান্য একটা ইশারা দিলেই আমি সাদের ধড় থেকে মস্তক নামিয়ে ফেলতাম।’ মুহম্মদ পুনরায় বললেন, “নবী ইশারা দিয়ে কাউকে হত্যা করে না।” এর মানে হচ্ছে যখন তিনি কাউকে সরিয়ে দেওয়ার প্রয়োজন বোধ করেন তখন সরাসরিই নির্দেশ দেন। বাস্তবে তিনি তা দিয়েছেনও। এই আলোচনা হবে পরবর্তী কোনো পোস্টে।

পরে সাদ যখন বুঝতে পেরেছিলেন যে, মুহম্মদের ইসলামী রাষ্ট্রে মুসলমান না হয়ে বেঁচেবর্তে থাকা কষ্টকর এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তা অসম্ভব তখন তিনি ক্ষমতার বলয়ে থাকার জন্য ভাই খলিফা উসমানের শাসনামলে ইসলাম গ্রহন করেন এবং মিশরের গভর্ণর হিসেবে নিযুক্ত হন, যদিও শাসক হিসেবে তিনি খুব দক্ষতার পরিচয় দিতে পারেন নি; স্বজনপ্রীতি করলে যা হয় আর কি।

উপরোক্ত কাহিনিতে এখনও যাদের সন্দেহ আছে, তারা একবার ইতিহাস ঘেঁটে দেখতে পারেন মুহম্মদ কেনো তৃতীয় খলিফা হযরত উসমানের বৈমাত্রেয় ভাই আব্দুল্লাহ বিন সাদ বিন আবি সারাহ কে হত্যা করতে চেয়েছিলেন ? এই ইতিহাস কোরান তেলোয়াতকারী কোনো মুসলিম ইতিহাসবিদের লেখা বইয়ে পাওয়া যাবে না। কারণ এই সব ঘটনা নবীর বিরুদ্ধে যায় বলে আসল সত্য জানতে পারলেও তারা পরকালে হুর গেলমান হারানোর ভয়ে লিখবেন না। এই সব ঘটনা জানতে হলে পড়তে হবে The History of Al-Tabari, vol 8, translated by Michael Fishbein, Page 179| The Spirit of Islam, page 295|২৯৫। হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আল বাদাওয়ীর তাফসির ‘আছরারুত তানজিল ও আছরারুত তা’য়ীল’ । Twenty Three Years: A Study of the Prophetic Career of Mohammad, page 98| ইবনে সাদের ÔKitab Al-Tabaqat Al-KabirÕ (Vol 2, page 174)|

এখন কথা হচ্ছে, কোরান যদি আল্লার বাণীই হয়ে থাকে তাহলে হযরত মুহম্মদের মুখ দিয়ে তা একবার বের হবার পর আবার তা পরিবতর্ন হচ্ছে কিভাবে ? আল্লা নাকি এই কোরানকে আবার অনেক আগেই লাওহে মাহফুজ নামক কোনো এক স্থানে লিখে রেখেছিলেন। পরে তা দোস্ত হযরত মুহম্মদের মাধ্যমে ডাউনলোড করিয়েছেন। অনেক আগে থেকেই লিখা থাকলে তা আবার ভুলভাবে অবতীর্ণ হয় কিভাবে ?

যা হোক এ ব্যাপারে এখনও যাদের সন্দেহ আছে তাদের জন্য আরো কয়েকটি ঘটনার উল্লেখ করছি। এই ঘটনা ইসলামের আরেক খলিফা হযরত ওমরের। তিনি বলেছেন, ‘আমার নেতা-প্রভু আমার সঙ্গে তিনটি বিষয়ে একমত হয়েছেন। প্রথমত আমি বললাম, ‘হে আল্লার নবী, আব্রাহামের স্থানকেই ( কাবা) আমাদের প্রার্থনার ঘর রূপে নিতে চাই।’ পরে সূরা বাকারার ১২৫ নং আয়াতে নাজিল হয়, “এবং তোমরা এব্রাহিমের স্থানকে উপাসনা ভূমি কর।” উল্লেখ্য এই ঘটনার পূর্বে মুসলমানরা বায়তুল মুকাদ্দাসকে কিবলা করে নামাজ পড়তো। দ্বিতীয় ঘটনায় আলী বলেন, আমি বললাম, “হে আল্লাহর নবী, আপনি আপনার স্ত্রীদেরকে আদেশ দিন, তারা যেন সাধারণ মানুষ থেকে পর্দা মেনে চলে, কারণ যেকোনো সময় তাঁদেরকে খারাপ-ভালো কোনো কিছু কেউ বলে ফেলতে পারে।” পরবর্তীতে সূরা নূর এর ২৪ নং আয়াতের মাধ্যমে নবীপত্নীদের প্রতি পর্দা মেনে চলার আয়াত নাজিল হয়। ঘটনাটি এরকম : একরাতে হয়রত ওমর নবীর বাড়ি পাহারা দিচ্ছেন। বাড়ি না বলে একে হেরেম বলাই ভালো। কারণ যে বাড়িতে ১০/১২ জন স্ত্রী এবং বেশ কয়েকজন ভোগ্য হালাল দাসী থাকে তাকে হেরেম ছাড়া আর কী ই বা বলা যায়। যা হোক, রাতের অন্ধকারে এক জায়গায় ঘুপটি মেরে বসে আছেন হযরত ওমর। এমন সময় নবীর দ্বিতীয় পত্নী বৃদ্ধা সওদা প্রকৃতির ডাকে সারা দেওয়ার জন্য যেই না স্বল্প বসনে বাইরে গিয়ে এক জায়গায় কাপড় তুলে বসেছেন, অমনি ওমর বলে উঠে, বসার আর জায়গা পেলি না। এই ঘটনার পরেই নাকি ওমর নবী পত্নীদিগের রাত বিরাতে বাড়ির বাহির হওয়ার ব্যাপারে নবীকে সাবধান করেন এবং তার পরিপ্রেক্ষিতেই উপযুর্ক্ত আয়াতটি নাজিল হয়।

তৃতীয় ঘটনাটি বেশ উপভোগ্য। প্রায় ডজন খানেক স্ত্রীকে সম অধিকার দিতে গিয়ে নবীকে পালা করে প্রত্যেক স্ত্রীর ঘরে এক রাত করে কাটাতে হয়। যে দিনের ঘটনা সেদিনের পালা ছিলো ওমরের মেয়ে হাফসার । এর কিছুদিন আগেই মিশরের অমুসলিম শাসক নবীকে খুশি করার জন্য দুজন সুন্দরী ক্রীতদাসীকে উপহার হিসেবে পাঠিয়েছিলেন নবীর কাছে। নবী যাতে মিশর আক্রমন না করেন সেজন্য। গনিমতে মাল এবং ক্রীতদাসীদের ভোগ করার সার্টিফিকেট (ওহী ) তিনি আগেই আল্লার কাছে থেকে নিয়ে রেখেছিলেন। সেখানে সমস্যা ছিলো না। সমস্যা ছিলো ঘর নিয়ে। কারণ নবীর হেরেমে অতগুলো ঘর ছিলো না। দুজন সুন্দরী দাসীর একজনকে অন্য এক সাহাবীকে দিয়ে তিনি নিজের জন্য রেখেছিলেন মারিয়া কিবতিয়া নামক মিশরিয়ান সুন্দরীকে। নিজের বাড়িতে জায়গা না থাকায় সেই সুন্দরীকে আবার রেখেছেন অন্য এক সাহাবীর বাড়ি। মন কি আর মানে ? দিন যায় রাত যায়, কিন্তু কিবতিয়াকে আর ভোগ করতে পারেন না। শেষে নবী এক ফন্দি আঁটলেন, মা দেখা করতে বলেছে বলে হাফসাকে বাপের বাড়ি পাঠিয়ে দিলেন। হাফসা চলে গেলে সেই ঘরে এনে তুললেন মারিয়াকে। এই ঘটনা হাতে নাতে ধরে ফেলেন আয়েশা। অন্যদিকে হাফসা বাপের বাড়িতে গিয়ে বুঝতে পারে নবী তাকে মিথ্যে বলেছে। পরদিন তিনি ফিরে এলে আয়েশা সব ঘটনা বলে দেন হাফসাকে। পুরো কাহিনি ফাঁস হয়ে যাওয়ায় হাফসাতো মহা ক্ষ্যাপা, সেই সাথে আয়েশা সহ অন্যরাও। শেষে নবী ভুল টুল স্বীকার করেও পত্নীদের মান ভাঙাতে পারেন না। অবশেষে নবী প্রায় একমাস সেক্স স্ট্রাইক করলেন। কোনো স্ত্রীর ঘরেই যান না। পরিশেষে এই ঘটনা সামাল দিতে এগিয়ে আসেন হযরত ওমর। তিনি নবী পত্নীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘তিনি যদি তোমাদেরকে তালাক দিয়ে দেন, তবে আল্লাহতালা নবীকে তোমাদের থেকে অনেক ভালো স্ত্রী দেবেন।’ আলী বলেন পরবর্তীতে ঠিক এই রকম বক্তব্য নিয়েই ৬৬ নং সূরা তাহরিম এর ৫ নং আয়াত নাজিল হয়।

ক্ষমতা এবং ধর্মান্ধতা মানুষকে কোথায় নিয়ে যায়! নবীর এই স্ত্রীদের মধ্যে নিজেরও যে একটি যুবতী মেয়ে আছে, যাকে নিয়েই এই মূল ঘটনা, ওমর নবীর পক্ষ হয়ে নবীর স্ত্রীদের হুমকি দেওয়ার সময় সে কথা মাথায় আনলেন না। তিনি আরও তাদেরকে তালাক দেওয়ার জন্য নবীকে উৎসাহিত করলেন! এই ঘটনা জানার জন্য পড়তে হবে সহি বোখারি শরিফ, ভলিউম ১, বুক ৮, নম্বর ৩৯৫।

উপরের এই আলোচনা থেকে আমরা কী দেখতে পাচ্ছি, কোরানের আয়াতগুলো অবস্থার প্যাঁচে পড়ে বা অন্যের ইচ্ছার মূল্য দিতে গিয়ে যেমন পরিবর্তিত হচ্ছে, তেমনি ঘটনার সাপেক্ষেও নাজিল হচ্ছে। এটা কী প্রমাণ করে, এগুলো আল্লার বাণী না স্বঘোষিত শেষ নবী হযরত মুহম্মদ এর ?

কৃতজ্ঞতা স্বীকার, মুক্তমনা ব্লগার (১) আবুল কাশেম এবং (২) আকাশ মালিক।