(১)

এক অদ্ভুত দেশ ভারত। প্রতি বছর ভারতে গিয়ে দেখি নতুন নতুন বিজ্ঞান প্রযুক্তি সংস্থা যেমন খুলছে-পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মন্দির। এই মোড়ে মা শীতলার গরম মাথা ঠান্ডা করতে কোমরে জলের ঘটি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে মহিলাদের দল- আর রাস্তার অন্য মোড়ে শনির কুদৃষ্টি আটকাতে ঢং ঢং ঘন্টা। কুড়ি
বছর আগে এসব কিছু ছিল না। এটা হয়েছে ভারতের সর্বত্রই-পশ্চিম বঙ্গে কমিনিউস্ট শাসিত বাম সরকার থাকা সত্ত্বেও প্রগতিশীলতার কিছুই চোখে পড়বে না সাধারন মানুষের মধ্যে। ওরা একই সাথে শনির মন্দিরেও গিয়ে থাকে- আবার সিপিএমের সদস্যও। আরো অদ্ভুত দৃশ্য মহিলাদের মধ্যে। একই সাথে তারা ডিসকোথেকে পিঠ খুলে শীলা -কি জওয়ানী ছোঁয়ার চেষ্টা করছে আর তার পরের দিন উপোস করে ব্রত উদযাপন।

ভাবার চেষ্টা করা যেতে পারে সমাজ বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে এমন আচরনের কারন কি?

আমি তিন বছর আগে, মানুষের ধর্মাচারন কেন সামাজিক উপযোগিতা নির্ভর তার ওপর একটা লেখা লিখেছিলাম। বর্তমান প্রবন্ধটি বুঝতে গেলে, আগের লেখাটি পড়ে নিলে সুবিধা হবে। স্যোশাল ইউটিলিটির তত্ত্বের মূল বক্তব্য মানুষের ব্যাবহারগুলি এক অদৃশ্য “সামাজিক” বাজার দ্বারা নিয়ন্ত্রিত এবং সেই বাজারের পণ্য হিসাবে সে নিজের দাম বাড়ানোর চেষ্টা করবে সামাজিক গ্রহণযোগ্যতা বাড়িয়ে ।

সামাজিক গ্রহণযোগ্যতা বাড়ানোর ব্যাপারটা সমাজ বিজ্ঞানের গুরুত্বপূর্ন বিষয়। কারন মানুষের সামাজিক ব্যাবহারগুলির মূলে এই স্যোশাল ইউটিলিটির তত্ত্ব। প্রথমেই সেই সব মেয়েদের বা আরো প্রিসাইজলি সেই সব বৌদের কথাতে আসি যারা একই সাথে ডিসকোথেক আর ব্রত নিয়ে ব্যাস্ত। সামাজিক কারনেই সব বৌদের দুটো সার্কল থাকে-একটা সমবয়সীদের সার্কল-অন্যটা শাশুড়ি বা মা, মাসীদের সার্কল। তারা দুটো সার্কলেই জনপ্রিয় হওয়ার চেষ্টা করে। ব্যাবসায়ীদের মধ্যেও আমরা একই জিনিস দেখব। সমাজে গ্রহণযোগ্য হওয়ার দায় তাদের মধ্যে অনেক বেশী। কারন ব্যাবসার মূল ভিত্তিই গ্রহনযোগ্যতা।

আজ থেকে দুশো বছর আগে, যেখানে প্রযুক্তির উন্নতি হয় নি এবং যৌথ উৎপাদন ব্যাবস্থাতেই সমাজ চলেছে-সামাজিক গ্রহনযোগ্যতার মধ্যে কোন পরস্পর বিরোধি দ্বন্দ ছিল না-কারন সমাজের বিবর্তন হয়েছে খুব ধীর গতিতে। শিল্প বিপ্লবের ফলে উৎপাদন ব্যাবস্থা সামাজিক শক্তির কেন্দ্রগুলি থেকে মুক্ত হতে থাকে এবং ভেঙে পরে যৌথ পরিবার ব্যাবস্থা। ফলে সামাজিক ভাবে গ্রহণযোগ্য না হয়েও বেঁচে থাকার পথ পরিস্কার হয়। নারীবাদ থেকে বস্তুবাদি সমাজতান্ত্রিক ধারনা বা যা কিছুকে আমরা প্রগতিশীল চিন্তা বলে মনে করি, তার ভিত্তিপ্রস্তর এই সমাজ নিরেপেক্ষ উৎপাদন ব্যাবস্থা, যা উন্নত প্রযুক্তির দান।

উদাহরন দিচ্ছিঃ
তামিলনাডু বা বাংলাদেশে সব পরিবারেই ধর্মের খুব প্রাবল্য। আজ থেকে দুশো বছর বাদে যদি সেখানে কোন তরুণের মধ্যে ঈশ্বরে অবিশ্বাস জন্মাত-তার হাল কি হত?

তার পারিবারিক ব্যাবসা বা জমি থেকেই তার ভরনপোষন হত বলে, তার পরিবারের ধার্মিক আচরনকে সে মেনে নিতে বাধ্য হত। সেটাই সামাজিক বাধ্যবাধকতা। কিন্ত আজকের দিনে ছেলেটা ভাল পড়াশোনা করে সফটোওয়ার ইঞ্জিনিয়ার হয়ে সে পৃথিবীর যেকোন উন্নত শহরে নিজের মতন থাকতে পারে। এটি মেয়েদের জন্যে আরো অধিক সত্য। দুশ বছর আগে নারীবাদিই হও আর ঘাসীবাদিই হও পরিবার জোর করেই বিয়ে দিয়ে দিত। আজকের মেয়েটি কিন্ত পড়াশোনা করে নিজের পথ খুঁজে নিতে পারে। এবং সে যে এটা পারে- এর মূলে কোন নারীবাদি আন্দোলন নেই-আছে উৎপাদন ব্যাবস্থার বৈপ্লবিক পরিবর্তন যার কারনে সে স্বাধীন ভাবে চাকরী করতে পারে এবং তার সব কিছু চাহিদাই পেশাদারি ভাবে সমাজ মেটাতে সক্ষম। উন্নত প্রযুক্তি নির্ভর উৎপাদন ব্যাবস্থা এই সমাজ নিরেপেক্ষ জীবনকে বাস্তবায়িত করেছে।

এতগুলো কথা লিখতে হল এটা বোঝানোর জন্যে আমাদের সামাজিক ব্যাবহারগুলি উৎপাদন ব্যাবস্থার সাথে আষ্টে পৃষ্টে জড়িয়ে আছে। ধর্মও একটি সামাজিক ব্যাবহার যা উৎপাদন ব্যাবস্থা বহির্ভূত কিছু নয়। উৎপাদন ব্যাবস্থা যত সমাজ নিরেপেক্ষ হবে, কোন ধর্মীয় ক্লাবে যোগ দেওয়ার চাপ কমবে!

(২)
ধর্মীয় সম্প্রদায়কে আমি ধর্মীয় ক্লাব বলি। বাঙালী হিন্দুদের অনেক ধর্মীয় ক্লাব আছে- রামকৃষ্ণ মিশন, মতুয়া, ইস্কন, বাবা লোকনাথ, বাবা অনুকুল ঠাকুর ইত্যাদি। মুসলমানদের ও অজস্ত্র ক্লাব আছে-তবলিগী, জামাত ( জামাতের মধ্যেও অনেক ভাগ) , আতাহারি, আগাখান -শেষ নাই। খ্রীষ্ঠান চার্চের সংখ্যাও অজস্র।

এবার আমরা যে প্রশ্নটা করব -একটা লোক এই সব ক্লাবের মেম্বার হতে চাইছে কেন? এর পেছনে সামাজিক গ্রহণযোগ্যতার ভূমিকা কি? যারা আগাখানের শিষ্যদের সাথে মেলামেশা করেছেন-দেখবেন তাদের মধ্যে একটা প্রচ্ছন্ন “গর্ব” আছে যে তারা “উৎকৃষ্ট” ইসলামিক ক্লাবের মেম্বার।
বাঙালী হিন্দুদের মধ্যে রামকৃষ্ণ মিশনের “ভক্তদের” মধ্যেও দেখবেন নাক উঁচু ভাব
আছে। এই সব ক্লাবগুলির ক্ষেত্রে অধিকাংশ সময় আমাদের সমাজে এই ক্লাবগুলির গ্রহণযোগ্যতা একটি বড় ভূমিকা পালন করে। যেমন রামকৃষ্ণ মিশনের ভক্তদের মধ্যে উচ্চশ্রেনীর বাঙালী বেশী নজরে আসবে যেখানে বাবা লোকনাথের শিষ্য আমজনতা। এগুলো খুব বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়-যেখন রাষ্ট্রশক্তি কোন একটা গোষ্টিকে বেশী নিরাপত্তা এবং অন্য একটি গোষ্টিকে উৎপাত করা শুরু করে। সেক্ষেত্রে নিরাপত্তার জন্যে জনগন গোষ্টি বদল করে-বা নিরাপদ গোষ্টির মেম্বারশিপ নিয়ে নিতে বাধ্য হয়।

দুটো উদাহরন দেওয়া যাক। প্রথমেই পশ্চিম বঙ্গে সিপিএমের মেম্বারশিপ নিয়ে একটু আলোচনা করি। সিপিএমের মধ্যগগনে রাম শ্যাম যদুমধু -সবাই সিপিএমের মেম্বার ছিল। সিপিএম [ বা গ্রামের ভাষায় ছিপিএম] না করলে রেশন থেকে শুরু করে কোন সরকারি সাহায্য পাওয়া যেত না। জায়গা জমি সব কিছুই লোপাট হয়ে যেতে পারত। ফলে মনসাসেবক থেকে শিবসেবক, জামাত থেকে
ওয়াহাবি মুসলিম সবাই এই কমিনিউস্ট ক্লাবের সদস্য হয়। আবার এবার সিপিএম ভোটে গোহারা হারলে তাদের অনেকেই তৃণমূল ক্লাবে চলে যাবে। বা অনেকেই সময় বুঝে চলেও গেছে।

বাংলাদেশ বা পাকিস্তানে হিন্দুদের সংখ্যালোপের পেছনেও একই ব্যাপার কাজ করেছে। ইসলামিক রাষ্ট্রগুলিতে ইসলাম ছাড়া কোন ধর্মের নিরাপত্তা সুরক্ষিত নয়া। ফলে ধর্মীয় সংখ্যালঘু গোষ্টিগুলি-যা হিন্দুই হোক বা আহমেদিয়াই হোক বা বাহাই হোক-আস্তে আস্তে দুর্বল হয়েছে।

অন্যদিকে ইউরোপের প্রায় প্রতিটি দেশে, জাপান, অস্ট্রেলিয়া এবং আমেরিকাতেও ধর্মীয় সম্প্রদায় ক্রমাগত হ্রাস পেয়েছে। সম্প্রতি এরিজনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রিচার্ড উইগনারের প্রকাশিত একটি গবেষনাপত্রে- উনি দেখিয়েছেন কি করে উন্নত বিশ্বে ধর্ম বা ধর্মাচারন বা এই সব ধর্মীয় ক্লাবগুলির সদস্য হওয়ার প্রবণতা হ্রাস পাচ্ছে। এবং তাদের নন লিনিয়ার মডেল দেখাচ্ছে -উন্নত বিশ্বে ধর্ম এই শতাব্দিতেই লুপ্তপ্রায় হবে।

এক্ষেত্রে আসলে উলটো ব্যাপার ঘটেছে। এখানকার উন্নত উৎপাদন ব্যাবস্থার বস্তুবাদি সুবিধা নিতে গেলে ধর্মীয় ক্লাবের মেম্বার হওয়াটা কোন কাজে আসে না-ধনতন্ত্রে প্রতিভা এবং অভিজ্ঞতাই শেষ কথা। ধর্মীয় আচরন বরং উন্নত বিশ্বে উন্নতির অন্তরায়। যেমন নাস্তিক বলে, আমেরিকান বা বৃহত্তর বাণিজ্যিক গোষ্টির কাছে আমি অনেক বেশী গ্রহণযোগ্য [ অবশ্য আমি সে জন্যে নাস্তিক না-ঈশ্বরের বিশ্বাস করার কোন কারন খুঁজে পায় নি কোনদিনই!] যেটা হিন্দু হলে অসুবিধা হত। অধিকাংশ আমেরিকান ধরে নেয় হিন্দু মানে তৃণভোজি-তাদের সাথে রেস্টুরেন্টে যাওয়া বিড়াম্বনা। এগুলো সামাজিক গ্রহণযোগ্যতার পরিপন্থী। সেটাও আসল কারন না । আসলে ধর্মে বিশ্বাস নেই বলে, সব সিদ্ধান্ত নিতে, নিজের বুদ্ধির ওপর ভরসা রাখতে আমি বাধ্য। ঈশ্বরের ওপর ত কিছু ছাড়তে পারি না-ভাগ্যের হাতেও না। ফলে চোখ কান অনেক খোলা রেখেই যেকোন জিনিস বোঝার চেষ্টা করাটাই আমাদের একমাত্র অস্ত্র। এই যুক্তিবাদি মন ধনতান্ত্রিক ব্যাবস্থার উৎপাদন কাঠামোতে অনেক সুবিধা দেয়। আমেরিকাতে যত সিইও দের সাথে আমার পরিচয় হয়েছে-সবাই নাস্তিক। একজন সিইওর আসল দাম, তার সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতাতে। খুব স্বাভাবিক ভাবেই তাকে যুক্তিবাদি হতে হবে। এই ভাবেই যুক্তিবাদি লোকেরা উন্নত বিশ্বের উৎপাদন কাঠামোতে শীর্ষস্থানে আছে এবং বাকিরাও যেহেতু সেই ক্লাবের মেম্বার হতে চাইবে -খুব স্বাভাবিক ভাবেই উন্নত বিশ্বে আস্তে আস্তে লোকেরা ধর্মের পা মারাতে চাইছে না । উইগনারের বর্তমান গবেষণা সেটারই দিকেই নির্দেশ দিচ্ছে।

[৩]
এবার উইগনারের গবেষণাপত্রটি বোঝার চেষ্টা করি।

ধর্মহীন

পাশের এই লেখচিত্রটিতে ফিনল্যান্ড, সুইজারল্যান্ড, ভিয়েনা এবং নেদারল্যান্ড-এই চারটি দেশে গত ১৫০ বছরে ধর্মের প্রাবল্য কিভাবে কমেছে, তার লেখচিত্র আছে। তাদের মডেল এবং পরীক্ষামূলক তথ্য যেখানে মিলে যাচ্ছে। এবং এই দেশগুলিতে এখন ধর্মহীন লোকেরাই সংখ্যাগুরু।
সুতরাং ধর্ম নির্ভর সমাজ ও রাষ্ট্র থেকে ধর্মহীন সত্যিকারের ধর্মনিরেপেক্ষ সমাজে বিবর্তনের জন্যে উইগনারের মডেলটি বোঝা দরকার।

উনি রাষ্ট্রের জনগোষ্ঠীকে দুই ভাগে ভাগ করেছেন। যারা ধর্মালম্বী বনাম যারা ধর্মহীন। ধরা যাক এরা দুটো ক্লাব-আমাদের মোহনবাগান বনাম ইস্টবেঙ্গলের । বা ওর থেকে ভাল উদাহরন সিপিএম এবং তৃণমুল। ২০০৯ সালে তৃনমূল কেন্দ্রীয় সরকারে ক্ষমতা দখলের পর আমরা দেখেছি দলে দলে অনেকেই সিপিএম ক্লাব ছেড়ে তৃণমুল ক্লাবে যোগ দিয়েছে।

উইগনার ও বলছেন “লোকে ধর্মালম্বীদের ক্লাব ছেড়ে, ধর্মহীনদের ক্লাবে এবং উলটোটাও সব সময় হচ্ছে। এর কারন অনেক কিছুই হতে পারে- তার মধ্যে সামাজিক নিরাপত্তা, নিজের মূল্যায়ন বাড়ানো ইত্যাদি কাজ করে। কোন ধর্মপ্রান হিন্দু বা মুসলিমকে কাজে নিতে যেকোন কোম্পানী দুবার ভাববে-কারন অভিজ্ঞতা থেকে তারা জানে এদের মধ্যে যুক্তিবাদি মন কম, বিশ্লেষন ক্ষমতা কম। ফলে চাকরী পাওয়ার জন্যেই একজন মুসলিম যেমন তার ইসলিময়ৎ কমাতে বাধ্য হবে-ঠিক তেমনি একজন হিন্দু তার হিন্দুয়ানী কমাবে। সেটা করেই তারা তাদের “সামাজিক মূল্য” বাড়াবে। এই সামাজিক মূল্য বাড়াবার তাগিদেই উন্নত উৎপাদন ব্যাবস্থায় আস্তে আস্তে জনগোষ্টি ধর্মহীন হওয়ার দিকে ঝুঁকবে।

আরেকটা উলটো উদাহরণ হাতের সামনেই আছে। জিয়উল হকের আগে পাকিস্থানে ইসলামের এত প্রাবল্য ছিল না । রাষ্ট্র থেকে ইসলাম পন্থীদের অনেক সুবিধা দেওয়া শুরু হল ১৯৭৮ সাল থেকে। সেকুলারিস্টদের খুন করা শুরু তখন থেকেই, যা বেনজির ভুট্টো থেকে পাঞ্জাবের গর্ভনর সালমন তসীরের মৃত্যুতে অব্যাহত। ফলে পাকিস্তানে অমুসলীম গোষ্ঠী আরো ছোট হচ্ছে এবং তার ফল কি হাতে নাতেই দেখা যাচ্ছে।

আবার এটাও আমরা দেখছি ভারতে ইসলামিস্ট এবং হিন্দুইস্ট বা ধর্মধারীরা বহাল হালেই থাকে। এর কারন ভারতের প্রতিটি রাজনৈতিক দল ও নেতারা ধর্মগুরু এবং ধার্মিক সম্প্রদায়ের নিকট সম্পূর্ন আত্মসমর্পণ করেছে। বাংলাদেশের দিকে তাকালে দেখা যাবে বি এন পির আমলে রাষ্ট্রীয় মদতে ইসলামপন্থীদের অনেক সুবিধা দেওয়া হত-ফলে বাংলাদেশের ধর্ম নিরেপেক্ষ জনগোষ্টির জন্যে সেটা বাজে সময় ছিল। আবার এখন আওয়ামী লীগ যেহেতু বস্তুবাদি উন্নতির দিকে বা উন্নত উৎপাদন ব্যাবস্থার দিকে বাংলাদেশকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে, খুব স্বাভাবিক ভাবেই ধর্মহী গোষ্টি ভুক্ত হওয়া বাংলাদেশ আস্তে আস্তে “লাভজনক” হচ্ছে।

সুতরাং মোদ্দা কথা হচ্ছে উন্নত উৎপাদন ব্যাবস্থায় বুদ্ধিমান এবং যুক্তিবাদি লোকেদের বাজারদর “ধর্ম প্রাণ” লোকেদের চেয়ে বেশী। সুতরাং রাষ্ট্র এবং রাজনীতি যদি ধর্ম প্রাণ ব্যাক্তিদের প্রতি পক্ষপাতিত্ব না করে-বিবর্তনের
স্বাভাবিক নিয়মেই ধর্ম আর আগামী শতাব্দির মধ্যেই নিশ্চিহ্ন হবে। কারন বাজারদর বাড়াতে সবাই ধর্মহীন গোষ্ঠিতেই সামিল হবে।

অবশ্য ধর্ম এবং আধ্যাত্মিক দর্শন বা আত্মদর্শন এক না । ধর্ম নিশ্চিহ্ন হলেও আধ্যাত্মিক দর্শনের কিছু চিন্তা থেকেই যাবে।

ধর্মহীন -২
[ পাশের চিত্রটি উইগনারের পেপার থেকে নেওয়া। এখানে দেখা যাচ্ছে প্রায় ৮০ টি গোষ্টীর মধ্যে ধর্ম থেকে ধর্মহীনতায় বিবর্তন এক মডেল অনুসরণ করে। ]