কঃ বিশ্বকাপ ক্রিকেট নিয়ে বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে, পত্র পত্রিকায় প্রাক্তন ক্রিকেট খেলোয়াড়, ক্রিকেট বোদ্ধা, ক্রিকেট দর্শক, ক্রিকেটপ্রেমী,মডেল, অভিনেতা ধুমসে আলোচনা করছেন। সে তুলনায় এ মুহুর্তে গণমাধ্যমগুলোতে নারী ক্রিকেট দলের সদস্যদের উপস্থিতি নেই বললেই চলে, যদিও ২০১০ সালে এশিয়া গেমসেও প্রমিলা ক্রিকেটাররা রূপা নিয়ে দেশে ফিরেছে। আমার প্রশ্ন, নারী ক্রিকেটারদের প্রতি এ উদাসীনতা কেন?
বাস্তবিক, ক্রিকেট নিয়ে নারীদের আলোচনাকে বাংলাদেশের বেশিরভাগ লোক মনে করে অনধিকার চর্চা। শুধু ক্রিকেট খেলা কেন। যে কোন খেলাই বিশেষ করে বাইরের খেলা মানেই ছেলেদের— পুরুষদের খেলা।
পত্রিকায় প্রকাশ, বাংলাদেশে বিশ্বকাপ ক্রিকেটের টিকেট বিক্রিতে মেয়েদের একটা কোটা ছিল যা বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি পরে বন্ধ করে দিয়েছিলেন। কারণ, টিকেটের জন্য লাইনে দাঁড়ানো কোন এক মেয়েকে প্রশ্ন করাতে সে নাকি বলেছে যে, সে ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার খেলা অথবা জার্মানী ও আর্জেন্টিনার খেলা দেখার জন্য টিকেট চান। মেয়েটির এ ভাষ্য শুনে বাংলাদেশের সকল নারীদের জন্য টিকেট কেনার কোটা বন্ধ।
আমার ধারণা মেয়েটি হয়তো বা ভাই বা প্রেমিকের জন্য টিকেট নিতে এসেছিল। অথবা নিজেই ক্রিকেটীয় জ্বরে আক্রান্ত হয়ে আগ পাছ না ভেবে খেলা দেখার অতি আগ্রহে টিকেট কেনার লাইনে দাঁড়িয়েছিল।একটি মেয়ের এহেন উত্তরে কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত পালটে গেল। আর কালোবাজারে যে সব টিকেট বিক্রি হয়েছিল তা কী সব ক্রিকেট বোদ্ধারা ক্রিকেট জ্ঞানের পরীক্ষা দিয়ে ২শ’ টাকার টিকেট কিনে পরে ১০/২০ হাজার টাকায় বেচেছিল?
গত ১৪ মার্চ কিশোরগঞ্জে গেছি অফিসের কাজে। সিভিল সার্জন অফিসে তারই রুমে টিভিতে এক ভদ্রলোক (পরিচয় উহ্য থাক) বাংলাদেশ ও নেদারল্যান্ডের খেলা দেখছেন অফিস সময়ে। সিভিল সার্জন তখন জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে এক সভায়।
তার এক নারী সহকর্মীকে বললেন, আপনি এখানে কেন? আপনি মানে মহিলারা তো আর খেলা বুঝে না। বিশেষ করে ক্রিকেট খেলা।
আমি কথা না বলে পারিনি। বললাম, কীভাবে বুঝলেন যে মহিলারা ক্রিকেট খেলা বুঝে না? (অফিস সময়ে অফিসে বসে ক্রিকেট খেলার প্রসঙ্গটি কৌশলগত কারণেই তুললাম না।) উনি হাসির ছলে আমাকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিলেন। আমিও গ্রহণ করে প্রশ্নোত্তর চালালাম।
পরে বললেন, এই তো আপনার মত দুয়েক পার্সেন্ট মহিলারা বুঝে।
আমি উনাকে অফিসের বাইরে গিয়ে কিছু পুরুষকে ক্রিকেট বিষয়ে কিছু প্রশ্ন করে সাধারণভাবে পুরুষদের ক্রিকেট খেলা নিয়ে জ্ঞান পরীক্ষা করে পরে নারীদের সম্বন্ধে ঢালাও মন্তব্য করতে বললাম।
কাজেই ক্রিকেট নিয়ে একজন নারী হয়ে লিখতে বসা অনেকের মতে স্পর্ধা বলে পরিগণিত হবে জেনে শুনেই আজকের লেখা।
নারীরা খেলাধুলায় পিছিয়ে রয়েছে বলেই জাতিসংঘের নারীর প্রতি সকল প্রকার বিলোপ সনদে ( CEDAW) পরিচ্ছেদ – ৩ এর অনুচ্ছেদ- ১০ উল্লেখ আছেঃ
‘শিক্ষা ক্ষেত্রে নারী ও পুরুষের সমান অধিকার নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে, বিশেষ করে পুরুষ ও নারীর সমতার ভিত্তিতে যেসব বিষয় নিশ্চিত করার লক্ষ্যে রাষ্ট্রপক্ষসমূহ নারীর প্রতি বৈষম্য দূরীকরণের জন্য সকল উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে, সেগুলো হচ্ছে-
…………………………………………………………………………………………………..
চ) খেলাধূলা ও শারীরিক শিক্ষায় সক্রিয়ভাবে অংশ গ্রহণের জন্য একই সুযোগ প্রদান;’
কিন্তু এর অর্থ এই নয় যে নারীরা বিশেষ কিছু খেলা বুঝেই না।
আমার পর্যবেক্ষণের পরিপ্রেক্ষিতে মন্তব্য হচ্ছে যদিও ‘খেলাধূলা ও শারীরিক শিক্ষায় সক্রিয়ভাবে অংশ গ্রহণের জন্য একই সুযোগ প্রদান;’ উল্লেখিত জাতিসংঘের নারীর প্রতি সকল প্রকার বিলোপ সনদে বাংলাদেশ সরকার স্বাক্ষর করেছে, তবুও কেন নারী ক্রিকেটাররা বিশ্বকাপ ক্রিকেটের মত খেলায় আলোচক হিসেবে গুরুত্ব পায় না।
খঃ ক্রিকেট নিয়ে সংখ্যালঘু শব্দটি দেখে অনেকে নিশ্চয়ই আমাকে সাম্প্রদায়িক ভাবছেন! ভাবতেই পারেন। ক্রিকেটের জাতীয় দল ঘোষণা নিয়ে বাংলাদেশে অনেক গল্প, কাহিনী, নাটক,অভিনয় হয়েছে। মাশরাফিকে ও অলক কাপালীকে জাতীয় দলে না রাখা নিয়ে বিভিন্ন অনুভূতি আমরা গণমাধ্যমগুলোতে দেখেছি ও পড়েছি। মাশরাফিকে নিয়ে বেশী। খেলোয়ারের গুরুত্ব, তার দক্ষতা ও যোগ্যতা বুঝেই খবরের শিরোনাম ও অনুভূতির মাত্রার প্রকাশ। তবে অলক কাপালীকে দলে না রাখা নিয়ে গণমাধ্যমগুলোতে অপ্রকাশিত কিছু অনুভূতির আমি প্রত্যক্ষ সাক্ষী। আমার এক পরিচিতজনের মন্তব্য – হিন্দু বলে অলককে দলে রাখা হয়নি।
আরেকজন, ভালই হয়েছে, আল্লাহ করে তো সব মুসলমান প্লেয়ার। আর অলক তো জাতীয় দলের বিদ্রোহী প্লেয়ার।
আমি দুটো মন্তব্যেরই কট্টর বিরুদ্ধে। কিছু বলতেই চাচ্ছিলাম না। মনটা বিষিয়ে উঠেছিল মন্তব্য দুটো শুনে। তবুও বললাম, জাতীয় দলে খেলার মত পারফরমেন্স অলক দেখাতে পারেনি বলেই নেওয়া হয়নি। আর জাতীয় দলের বিদ্রোহী প্লেয়ার শাহরিয়ার নাফিজকে কিন্তু দলে নেওয়া হয়েছে। কাজেই আপনার দুজনেই কিন্তু সাম্প্রদায়িকতার দোষে দুষ্ট।
ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার খেলার দিন আমার এক প্রাক্তন সহকর্মীর ফোন। আপনি কোথায়?
আমি ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে কবি শামীম আজাদ সম্পাদিত ‘অগ্নি ও জলঃ রুপান্তরের গল্প ‘ বইটির প্রকাশনা উৎসবে গিয়েছি জেনে বলে, আজ তো ভারতের খেলা। আপনার তো কোথাও যাওয়ার কথা নয়।
খোঁচাটা হজম করে বললাম, বাংলাদেশ ছাড়া আর কারও খেলা দেখতে কাজের অগ্রাধিকার করি। আমার সময় বরাদ্ধে ভারতের খেলা আজ অগ্রাধিকার পায়নি। পরে উল্লেখ করলাম, অনেককে দেখছি মার্চ মাসেও পাকিস্তানীদের ক্রিকেট নিয়ে মেতে থাকে। আমার কিন্তু তা হজম করতে কষ্ট হয়।
তবে বলিনি যে আরও কষ্ট হয় বাংলাদেশ ভারতের খেলায় আমাকে ভারতের সমর্থক ভেবে কথা বললে।
গঃ বাংলাদেশে বিশ্বকাপ ক্রিকেটের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মমতাজের গান গাওয়া নিয়ে অনেক ব্যঙ্গ, কটূ মন্তব্য শুনলাম। প্রথমত, তাকে কেন ডাকা হল! দ্বিতয়ত তার গান পছন্দ নিয়ে। মমতাজের গানের সময় আমি দেখেছি খেলোয়াড় আশরাফুলকে আনন্দে ঠোঁট মেলাতে। আমার মতে মমতাজ হয়ত সংসদ সদস্য বলেই গান গাওয়ার ডাক পেয়েছেন, তবে মমতাজ কিন্তু বাংলাদেশে একটা জনগোষ্ঠীর কাছে খুবই জনপ্রিয় শিল্পী। তার রাজনৈতিক পরিচয় পাল্টেছে, কিন্তু তার গান গ্রামে গঞ্জের হাটে, ঘাটে, মাঠে বাজে। কাজেই সে ও আমাদের একটা গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক পরিচয়ের প্রতিনিধিত্ব করে, আমি পছন্দ করি বা না করি।
ঘঃ ক্রিকেট নিয়ে আমরা অনেক দূর এগিয়েছি। এগিয়েছি মানে কিন্তু আমাদের আসন সবার উপরে নয়। খেলাধুলায় কারও আসন পাকাপোক্তও নয়। তাহলে তো আর খেলা হত না। যার যার আসনের বিপরীতে পুরস্কার পেয়ে যেত। আর যারা খেলছে তারা আমাদেরই ছেলে, আমাদেরই ভাই। তাদের জয়ে যেহেতু আমরা জয়ী হই। খুশী হই। আনন্দে আপ্লুত হই। তাদের পরাজয়ে দুঃখিত হওয়াই স্বাভাবিক। একটু আধটু ক্ষুব্ধও হতে পারি, তবে তা মাত্রাতিরিক্ত অবশ্যই নয়। তাদের পরাজয়ে তো সত্যিকার ক্রিকেটপ্রেমী হলে খেলোয়াড়দের পাশে থাকার কথা। প্রেরণা দেওয়ার কথা। তাদের ব্যথায় ব্যথিত হওয়ার কথা। কিন্তু ৫৮ রানে ওয়েষ্ট ইন্ডিজের সাথে সব উইকেট খুইয়ে ম্যাচটি হারার পর আমাদের ধৈর্যের রান তো ছিল শূন্য। আমাদেরকে এ শূন্যতা কাটিয়ে উঠতে হবে।
শহরে বড় হওয়ায় যতটুকু দেখেছি যে মেয়েরা হঠাৎ করেই খেলা বন্ধ করে দিল। যদিও ওদের পরিবার থেকে কখনো খেলা বন্ধ করার জন্য কোন রকম বকা বা বাধা দিতে দেখি নাই।অন্যান্য দেশেও নারী খেলোয়াড়দের সংখ্যা তুলনামুলক ভাবে কম মানে মোট খেলোয়াড় সংখ্যার ৫০% হয় না।এসব দেখে মনে হয় প্রাকৃতিক ভাবেই নারীরা খেলাধুলা বিমুখ।যদিও এমন ধারনা কোন যুক্তি মোতাবেক না শুধুমাত্রই ধারনা।
অলক কাপালী সাম্প্রদায়িকতার শিকার বিষয়টা সত্যিই হাস্যকর তাই না?
@অসামাজিক,
হাস্যকর তো বটেই, আমি পর্যবেক্ষণ করি যে সাথে তুলনা করা হয় পাকিস্তানের জাতীয় দলে স্পিনার দীনেশ কারেনিয়ার অবস্থানের দোলাচল অবস্থা। তখন আবার এর সত্যতাকে উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
আরেকটা গোষ্ঠী ( হিন্দু মুসলিম উভয়েই) ভারতীয় দলে পাঠান ও খানদের অবস্থানও ভুলে না।
@গীতা দি,
সত্যিই আমাদের চারপাশের শিক্ষিত/অশিক্ষিত/উচ্চবিত্ত/মধ্যবিত্ত/নিম্নবিত্ত/বিত্তহীন — সবধরণের মানুষের সাম্প্রদায়িক ধ্যান-ধারণা খুবই বিস্ময়কর। … (W)
@বিপ্লব রহমান,
একমত। এ নিয়ে পর্যাপ্ত গবেষণা হওয়া প্রয়োজন।
আপনার আওয়াজ ভালই লাগে। মাঝে মাঝে আওয়াজ দিয়েন।
@অসামাজিক,
তা ঠিকই বলেছেন, মেয়েদের হঠাৎ করেই খেলা বন্ধ করে দিতে হয়, কারন ওরা ভাল করেই জানে যে খেলা বন্ধ করে না দিলে পরিবার থেকে তাদের উপর খুব অচিরেই খড়গ হস্ত নেমে আসবে। তাই কোন রকম বকা বা বাধা পাওয়ার আগেই সুবোধ বালিকার মতো খেলা ধুলার ইস্তফা দিয়ে দেয়। নিজেদের ইচ্ছার বিসর্জন দিয়ে এইভাবেই তারা পরিবারের সুনাম অক্ষুন্ন রাখে।
@ গীতাদি,
দেখুন আপনার মনে মেয়েদের খেলাধুলা নিয়ে যেই প্রশ্ন জেগেছে এই হুবহু একই প্রশ্ন শতকোটিবার আমার এই ২২ বছরের পুরানো মনেও জেগেছে! মেয়েরা কেন খেলেনা, খেলা নিয়ে তাদের কেন আগ্রহ নাই অথবা মেয়েদের ক্রিকেট টুর্নামেন্ত নিয়ে কারো কোন আগ্রহ নেই কেন – এসব বিষয় নিয়ে আমিও বহু ভেবেছি… কিন্তু কোন কুলকিনারা পাইনি। ঘুরে ফিরে সেই একই কথা- পুরুষতন্ত্র! আজ আপনার এই লেখা দেখে মনে হচ্ছে যে, না! আমার মত একই ধরনের চিন্তা করে এরকম মানুষ আমি ছাড়াও আরো আছে, শুধু আমিই না!
খেলাধুলা ব্যাপারটা যে মেয়েরা করতে পারে এই concept-টাই বাংলাদেশের ( সর্বপরি উপমহাদেশের ) সমাজে নাই! খেলাধুলা পুরুষের একচ্ছত্র জায়গা। এই আঙ্গিনায় মেয়েদের প্রবেশ কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। এই চিন্তাধারাই এই সমাজের প্রতিটি মানুষের মধ্যে আবর্তিত হচ্ছে। আর বলেই বা কি হবে। গীতাদির এই লেখা কয়জন বাঙ্গালীকে মেয়েদের খেলাধুলার প্রতি উজ্জীবিত করবে ? কিংবা করবে কিনা? জানা কথা করবে না। কারণ বাঙ্গালী জাতির রক্ত-মাংস, হাঁড়-মজ্জার ভিতর পুরুষতন্ত্র ঘাপটি মেরে বসে আছে। আমার মনে হয় দুনিয়ার বুকে যে সমস্ত জাতি নারীর প্রতি বৈষম্য প্রদর্শন করতে শীর্ষস্থানীয়, তাদের মধ্যে বাঙ্গালী জাতি অন্যতম। আসলেই কি তাই নয়? দেশের বাইরে বের হলেই নিজের দেশের নারীদের চালচিত্রের সাথে বাইরের দেশের নারীদের চালচিত্রের আকাশ-পাতাল তফাত ফুটে উঠে। এই তফাত এতটাই প্রকট যে এটাকে ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। আমাদের এখানে মেয়েদের নিয়ে কারো চিন্তা নাই। নারী অধিকার নিয়ে কথা বলাকে সবাই বিদ্রুপের দৃষ্টিতে দেখে। সবাই টিটকেরি মারে। আমাকে হাজারবার শুনতে হয় যে আমি ছেলে হয়ে মেয়েদের নিয়ে কেন এত ভাবি। ভাবখানা এমন যে একজন পুরূষ যদি নারী অধিকার এর পক্ষে কথা বলে তাহলে তার “পৌরুষ” বলে কিছু থাকে না।
আজ যারা নারীদের খেলাধুলা নিয়ে মায়াকান্না কাঁদছে, কালই তারা প্রমিলা ক্রিকেট,প্রমিলা ফুটবলের কথা ভুলে গিয়ে সাকিব-মাশরাফিদের নিয়ে গবেষনায় মত্ত হবে। কালই সবাই আবার পুরূষদের ক্রিকেট নিয়ে আড্ডায় মত্ত হবে। এবারে ৮ মার্চ বিশ্ব নারী দিবসে এনটিভির রাত ১১.৩০ এ ক্রিকেট বিষয়ক একটি টক শোতে হাজির করার হয়েছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডে মহিলা উইং এর সভাপতিকে এবং সাবেক ক্রিকেটার খালেদ মাসুদ পাইলটকে। আমার অবাক লাগে, সারা বছর কোন খবর নাই, এনটিভি কতৃপক্ষের মহিলা ক্রিকেট নিয়ে ঘাটাঘাটি করার আগ্রহ হলো শুধু এই নারী দিবসে এসে! বাংলাদেশে আসলে মেয়েদের খেলাধুলার খবর কয়জন রাখে সন্দেহ। এশিয়ান গেমসে বাংলাদেশের প্রমীলা ক্রিকেট দল রুপা জয় করেছে। সেই খবর কয়জন রেখেছে? বাংলাদেশে যে মহিলা ক্রিকেট দল আছে সেটাই এই দেশের ৯৯% শতাংশ মানুষ জানেনা! বললাম তো বাঙ্গালী জাতি কোনদিন নারীকে সমান অধিকার দিতে পারবে না। কারণ বিষয়টি তাদের স্বভাবজাত প্রকৃতির সাথে সংগতিপূর্ণ নয়। অলিম্পিক গেমসে দেখবেন, পাশ্চাত্যের মেয়েদের জয়জয়কার। আমাদের এই উপমহাদেশ কিংবা মুসলিম অধ্যুষিত কোন দেশের মেয়েদের সেখানে কয়জন চোখে পরবে? ইউরোপের মেয়েদের খেলাধুলায় এগিয়ে থাকার কারণটা আর কিছুই না, আর সেটা হলো সেখানে মেয়েদের খেলাধুলার চর্চা হয়, উৎসাহ দেয়া হয়, সেখানে ১৫-১৬ বছর বয়স হলে মেয়েদের বলা হয় না যে – তুমি বড় হয়ে গিয়েছ এখন আর মাঠ-ঘাটে গিয়ে খেলোনা। সেখানে মেয়েদের খেলাধুলা নিয়ে কোন সামাজিক প্রতিবন্ধকতা নেই।
আমি, আপনি, অভিজিৎ রায়, বিপ্লব পাল, আকাশ মালিক, অনন্ত, তানবিরা তালুকদার প্রমুখ দশ বছর ধরে চেষ্টা করেও বাংলাদেশে মুক্তমনার কাংখিত লক্ষে পৌছতে পারি নাই। কোথায় মুক্তচিন্তা? কোথায় নারীর সমান অধিকার? চারদিকে তো ঘুরেফিরে সেই ধর্মের জয়জয়কার! ঘুরেফিরে সেই পুরূষতন্ত্রই ফিরে আসছে। শুধু আমরা কয়জন অবসর সময়ে কম্পিউটার মনিটরের সামনে বসে মুক্তমনার চর্চা করছি!
মেয়েদের খেলাধুলা নিয়ে কথা হচ্ছিল। মেয়েরা তো নিজেরাই খেলতে চায়না। তাদের নিজেদেরই তো খেলার কোন উৎসাহ নাই। গীতাদি, আপনি নিজে একজন নারী হয়ে মেয়েদের খেলাধুলার নিয়ে উৎসাহী। আপনি ব্যাতিক্রম। কিন্তু আপনি কয়জন মেয়েকে হাজির করতে পারবেন যারা ফুটবল, ক্রিকেট নিয়ে মেতে থাকতে উৎসাহী? এই প্রজন্মের মেয়েদেরই বলুননা , এসো মাঠে , বিশ্বকাপের মৌসুম ব্যাট-বল নিয়ে ক্রিকেট খেলি। দেখেন কয়জন মেয়ে আপনার ডাকে সাড়া দেয়। ১০০ জন ছেলে মধ্যে যদি ৫০ জন ছেলে খেলাধুলা করে তাহলে ১০০ জন মেয়ের মধ্যে ৫ জন মেয়েকেও খুজে পাওয়া যাবেনা যারা খেলাধুলা করে অথবা খেলাধুলা নিয়ে উৎসাহী। এটাই নির্মম বাস্তবতা এই সমাজের। এমনকি আমি ছেলে হয়ে যদি কোন মেয়েকে খেলার জন্য মাঠে নামতে বলি সেই আমাকে টিটকেরি মারবে। এর কারণও ঘুরেফিরে সেই একই কথা। মেয়েদেরকে ছোটবেলা থেকে খেলাধুলা করার জন্য বাবা-বা সামান্যতম উৎসাহ দেয়নি। ভাইটিকে বাবা-মা ব্যাট-বল তুলে দিয়েছে, বোনটিকে ব্যাট-বল তুলে দেয় নি, তাকে দিয়েছে পুতুল। ফলে মেয়েটির খেলাধুলায় উৎসাহ হারিয়েছে। আর আমাদের দেশের মাঠঘাটের পরিবেশ পরিস্থিতি মেয়েদের খেলাধুলা করার একেবারেই অনুকূলে নয়।
ধর্মের পাশাপাশি সংস্কৃতিও নারীকে অবরোধবাসীনি করেছে। আমাদের দেশে মেয়েদের খেলাধুলা করার ক্ষেত্রে অন্যতম বাঁধা হলো তাদের পোশাক। পাশ্চাত্যে এই সমস্যা নেই। শাড়ী, সালোয়ার কামিজ, বোরখা পরে কোনদিন ক্রিকেট ফুটবল খেলা যায় না। এটা সবাই জানে এবং বোঝে। কিন্তু কেউ মুখ ফুটে সত্যটা প্রকাশ করে না। যেই মেয়ে ছেলেদের মতো প্যান্ট, টি শার্ট, শর্টস পরতে অভ্যস্ত নয়, সে কি করে মাঠে গিয়ে খেলবে? এই প্রশ্নের জবাব কে দিবে? আমাদের এখানে তো মেয়েদের dress up নিয়ে খোলাখুলি কথা বলার কোন উপায়ই নাই যে সমস্যার গোড়ায় হাত দিব। মেয়েদের খেলাধুলার কথা বলা হচ্ছে। তারা কি পরে খেলবে সেটা কি কেউ ভেবে দেখেছে? আমাদের এখানে উঠতি বয়দের একটি মেয়ের পোশাক পরার ক্ষেত্রে একটু উনিশ-বিশ হলেই চারদিকে রি রি পরে যায়, পাড়া-মহল্লায় আলোচনার ঝড় বয়ে যায়। তাহলে একটি মেয়ে ছোটবেলা থেকে শর্টস পরে খেলাধুলায় অভ্যস্ত হবে কিভাবে? এই ক্ষেত্রে বাঙ্গালী সংস্কৃতির ধারক ও বাহকেরা কি বলবেন? পাশ্চাত্য পোশাক-বিদ্বেষীরাই বা কি জবাব দিবেন? ?
@তুহিন তালুকদার,
এক্ষেত্রে পাশ্চাত্য বিশ্ব কি অনুকরণীয় নয়? কারণ সেখানে আর যাই হোক, মেয়েরা একটু বড় হলেই তাদের ঘরে আটকে রাখার কিংবা তাদের খেলাধুলা বন্ধ করে দেয়ার সংস্কৃতি অন্তত নেই
@তৃতীয় নয়ন,
ধন্যবাদ সহমত পোষণ করার জন্য।
একমত। (Y)
এ নিয়ে টিভি চ্যানেলগুলোর সাথে নারীপক্ষ থেকে কথা বলেছি। ঐ এক কথা– ৮ মার্চ তো অনুষ্ঠান করেছি। “বিশেষ একটি দিনে নারীকে খেলা নিয়ে কথা বলার অধিকার দিয়েছে!!!!!” :-X
একদম ঠিক কথা। এমন সঠিক যার বাইরে কোনো যুক্তি তর্ক খাটেনা। এমন অবহেলার পেছনে পুরুষ শাসিত সমাজ দায়ী, এমন অবহেলার পেছনে ধর্মীয় গোড়ামীও দায়ী। যে যতই বলুক না কেন? ছোট বেলা থেকেই দেখেছি মেয়েদের খেলাধুলা মানেই-এক্কা-দোক্কা, গোল্লাছুট, বা এই জাতীয় কিছু।
গীতা’দির লেখটায় অসম্ভব এক আবেদন আছে, আছে সু-তীক্ষ্ণ অভিমান, আছে তিব্র প্রতিবাদ। যার সাথে আমি ১০০ ভাগ সহমত (Y)
@আফরোজা আলম,
না, গোল্লাছুট না, গোল্লাছুট খেলতে মাঠে ছুটতে হয়। মেয়েদের খেলা মানে লুডু, পুতুল,এক্কা-দোক্কা,ফুলনা দোলনা।
আর এখনও পিকনিকে গেলে মহিলাদের জন্য মিউজিক্যাল চেয়ার মানে চেয়ার নিয়ে সাথে সঙ্গীতের তালে তালে পাড়াপাড়ি । নারীদের নাচায়। বালিশ দিয়ে সতীনের পুত খেলা। (নারীরা সতীনের পুতকে দেখতে পারে না তাও আবার প্রমান করে খেলা দিয়ে)।
মটরশুটি ছুলানো — কে কতটি ছুলাতে পারে।মানে ঘরকন্নার মহড়া। চোখ বেঁধে হাড়িভাঙ্গা। আমি গতবার আমাদের অফিসের পিকনিকে বলেছি–হাড়ি তো পুরুষরা ভাঙ্গে, নারীরা না। আবারও চোখ বেঁধে মানে অজ্ঞনতাবশত ঘর ভাঙ্গে। আমার প্রতিবাদে পুরুষদের দিয়ে হাড়ি ভাঙ্গা খেলিয়েছি।
@গীতা দাস, (Y) (F)
মেয়েদের ক্রীড়ামুখী করার সহজ উপায় আছে।
আমাদের সমাজটাই এমন-একটা মেয়ের বিয়ে কিভাবে হবে, তার ওপর নির্ভর করে, তার বাবা মা তাকে কি দিয়ে কি করাবে।
যেহেতু এই সমাজে বিবাহ এখনো সম্মন্ধ করে-[ বা অন্যভাবে হলেও ক্ষতি নেই] -পুরুষদের উচিত বিবাহের ক্ষেত্রে সেই সব নারীদের প্রধান্য দেওয়া যারা ক্রীড়াবিদ ছিল বা আছে। এটি পুরুষদের জন্যে ভাল-কারন সাধারন যারা খেলাধূলার সাথে যুক্ত, তারা স্বাস্থ্য সচেতন হয়। সঙ্গী বা সঙ্গিনী খোঁজার ব্যাপারে প্রথম প্রাধান্য ফিজিক্যাল ফিটনেসের ওপর দেওয়া উচিত ( দুই পক্ষেরই)। সমস্যা হচ্ছে বিয়ের বাজারে যতদিন সাদা চামড়ার “গৃহদাসীদের ” ডিমান্ড থাকবে, মেয়েদের খেলাধূলা দূরঅস্ত। বিয়ের বাজারে স্পোর্টস উম্যানদের ডিমান্ড বাড়লে তবেই এটা সম্ভব। তবে ছেলেদেরই খেলার জায়গা নেই-তো মেয়েরা খেলবে কি ভাবে!
@বিপ্লব পাল,
নারীরা ক্রীড়ামুখী হবে বিয়ের বাজারে কনে হওয়ার জন্য? :-s
@গীতা দাস,
আর কোন বাস্তব উপায় নেই। ছেলে বা মেয়ে্রা যা কিছু করে-তার প্রায় অনেকটাই বিয়ে বা পাশ্চাত্যে হলে যৌন জীবনকে কেন্দ্র করে-এগুলো অস্বীকার করে তাত্বিক নারীবাদ বা যেকোন বাদই ব্লগের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে।
@বিপ্লব পাল,
পুরুষদের ক্রীড়ামুখী হওয়ার পেছনে কিন্তু তার দাম্পত্য জীবনের ফিটনেসের বিষয়টি সরাসরি আসে না। পুরুষ খেলোয়াড় হয় খেলাটাকে উপভোগ করে বলে। সাথে আসে যশ। অর্থ।
আর নারীরা কি লেখাপড়া শিখবে বিদ্ধান পুরুষের গৃহিণী হওয়ার জন্য? আর ক্রীড়ামুখী হবে বলবান পুরুষের শয্যাসঙ্গিনী হওয়ার জন্য?
বিপ্লব বাবু, ভেবে অন্ত পাচ্ছি না। তাত্ত্বিক নারীবাদ মনে হয় ব্লগের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে।
( যদিও আমি তাত্ত্বিক নারীবাদী নই বা হওয়ার মত যোগ্যতা নেই)
@গীতা দাস,
খুব ভুল ধারনা। আমেরিকাতে হাই স্কুলে ছেলেদের খেলার পেছনে মেয়েদের মধ্যে জনপ্রিয় হওয়া চেষ্টাই বেশী কাজ করে। নেট খুজলে অনেক সামাজিক গবেষণাও পাবেন। আর অনেক ছেলেই বয়সকাল এলে জিমে যাওয়া শুরু করে পেশী বানাতে।
খেলা সবাই উপভোগ করে। কিন্ত যেকোন খেলাতে উৎকর্ষতা অর্জন করতে অনেক কষ্ট করতে হয়। সেক্ষেত্রেও যৌনতা ড্রাইভার হিসাবে কাজ করে।
তবে সব থেকে বড় ব্যাপার হল নিয়মিত খেলেধূলা করাটা যৌনতার জন্যে সহায়ক। যেকোন ডিপ্রেশন রোগের বিরুদ্ধেও সহায়ক। অর্থাৎ যেসব মেয়েরা খেলাধূলা করে তাদের যৌন আবেদন বা ক্ষমতা দুটোই বেশী-এগুলো পরীক্ষিত সত্য ছেলে এবং মেয়েদের জন্যে। সঙ্গী সঙ্গীনি নির্বাচনের সময় আমাদের ছেলে মেয়েরা এগুলো মাথায় রাখলে, এদেশের ছেলে মেয়েরাও খেলা বা শরীরচর্চা অনেক সিরিয়াসলি নেবে।
আর ইন্টেলেকটুয়াল এক্টিভিটি মানে এই ব্লগ লেখা?
গবেষকরা জানাচ্ছে, তা জীবনের যৌন আবেদনকে কমিয়ে দিতে পারে। এতেব ব্লগারকূল সাবধান হও- বেশী ইন্টেলেকচুয়াল এক্টিভিটি যৌন জীবনের জন্যে ভাল না-বরং খেলাধূলা করা উচিত! :-Y
http://english.pravda.ru/society/sex/09-03-2007/88155-sex_sports-0/
@বিপ্লব পাল,
আপনার লেখা থেকে অনেক কিছু শিখলাম, তবে সব মানতে এবং আস্থা রাখতে পারছি না।
ধন্যবাদ লিংকসহ মতামতের জন্য
@গীতা দাস,
একটা ভাল ঘটনা মনে পড়ল।
আমার এক জুনিয়ার ছেলে চিন্তায় ছিল-তার বাবা তিনটে মেয়ে দেখে দিয়েছে। এখন নির্বাচন করতে হবে। আমার কাছে এল-কি করা যায়। আমি বল্লাম সহজ উপায় আছে-কে খেলাধুলা করে বা শারীরিক দিয়ে বেশী ফিট? তাকেই বিয়ে করা উচিত।
ও বললো বুঝবো কি করে? এটাত বিদেশ না, যে বিয়ের আগে মেয়েটাকে নিয়ে শোয়া যায়?
আমি বল্লাম-অত ভাবার কিছু নেই। শ্রেফ পাত্রীকে নিয়ে নদীর ধারে বা পার্কে হাঁটতে যা। ঘন্টাখানেক ধরে দু মাইল হেঁটে নে। তাহলেই ফিজিক্যাল ফিটনেস বুঝবি। আইডিয়াটা ক্রেজি হতে পারে-কিন্ত পরে কাজে আসবে।
ওত ঘাবরে গেল। মেয়েটা দেখতে কি রকম বা মন টন -বিদ্যাবুদ্ধি না বুঝে আমি কেন শারীরিক সক্ষমতা নিয়ে টানাটানি করছি। ভাবল ইয়ার্কি মারছি। এসব ভেবে সে এমন একজনকে নির্বাচন করল-যেখানে সে মেয়েটির ফয়ামিলি, বিদ্যাবুদ্ধিকে গুরুত্ব দিল। তবে সেই মেয়েটি ছিল বেশ মোটা। এখন আমাকে বলে, তোমার কথা শুনলেই ভাল হত। মেয়েটির শারীরিক অসুসস্থতার জন্যে তাদের দাম্পত্যজীবন স্বাভাবিক না। আবার মেয়েটি শরীরচর্চাতে উৎসাহীও না!
@বিপ্লব পাল, আবার দেখা গেল আপনার কথা শুনে ফিজিক্যাল ফিটনেস সম্পন্ন একজন মাথা মোটা মেয়েকে বিয়ে করে সেই ছেলের দাম্পত্যজীবন দুর্বিষহ হয়ে ছেড়ে দে মা কেঁদে বাচি অবস্থা হয়ে দাড়াল। দাম্পত্যজীবনের সুস্থতা বিশ্লেষন অতি সরলিকরন হয়ে গেল না কি? :-s
@ব্রাইট স্মাইল্, :hahahee: :hahahee: :hahahee:
গীতাদি,এরা বড্ড ক্ষমতাশালী, শক্তিশালী ও প্রভাবশালী হলেও কালের গর্তে এরা হচ্ছে মাটির নীচের কিলবিল করা কীট।আজ যেমন আমরা এদের স্বমন্ধে জানি বলে এখন আর আমরা এদেরকে মস্ত পালোয়ান বা বীর মনে করি না তেমনি…………তবে আপনি কি বুঝাতে চেয়েছেন তা বুঝতে সক্ষম হয়েছি মনে হয়।
ভালো থাকুন।
@মাহবুব সাঈদ মামুন,
এই না হলে সমমনা!
তুমিও সুস্থ্য থাক ।
ক্রীড়ার ব্যাপারে নারীদের সাথে বৈষম্যমূলক আচরণে সবাই এতটা অভ্যস্ত হয়ে আছে যে, এই প্রসঙ্গ তুললে অনেকে বুঝতেই পারে না আসলে কী দাবি করা হচ্ছে। শৈশবে আমার বয়সী পাড়ার অনেক মেয়েদের সাথেই আমরা ছেলেরা খেলতাম। কৈশোরে যাওয়ার আগেই মেয়েদের মাঠে এসে খেলা বন্ধ হয়ে যায়। প্রথমে তাদের খেলার মাঠে না দেখে অবাক হতাম। কখনো ডেকে আনতে যেতাম। একসময় বোধহয় অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছি, তাই আর ডাকতে যেতাম না। মেয়েদের জোর করে খেলা থেকে বিচ্ছিন্ন করে রাখা হয়, তারপর তাদের ক্রীড়ার ব্যাপারে আগ্রহকে অনধিকার চর্চা হিসেবে দেখা হয়। মেয়েরা তাহলে ভাল ক্রীড়াবিদ, সমালোচক হবে কিভাবে? সরাসরি খেলার সাথে যুক্ত না থেকে কেউ ক্রীড়াবিদ, ক্রীড়া-সমালোচক হতে পারে না। এরপরও যে আমাদের দেশের মেয়েরা কিভাবে এশিয়ান গেমসে এতটা ভালো করেছে তা আমার কাছে এক বিস্ময়!
খেলার ব্যাপারেও মানুষ ধর্মকে যুক্ত না করে পারে না। কোন দেশকে সাপোর্ট করবে তা তার ধর্ম দিয়ে নির্ধারিত হয়। তখন তাদের জিজ্ঞেস করতে ইচ্ছে হয়, আপনি কি ক্রীড়াচর্চা করছেন, নাকি ধর্মচর্চা করছেন? অলক কাপালি’র সাথে কি হয়েছে আমি জানি না তবে ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলোয়ার নির্বাচনে সাম্প্রদায়িকতার ঘটনা আছে। আমার এক বন্ধু(ধর্মীয় বিশ্বাসে হিন্দু) বিভাগীয় পর্যায়ের ক্রিকেট খেলে। গত সরকারের আমলে, বিভাগীয় ক্রিকেটে সে এবং তার দুই হিন্দু সতীর্থ নির্বাচিত হয় নি। অথচ তারা সবাই এর আগে নিয়মিতই খেলত এবং কেউ তখন down form-এ ছিল না। নির্বাচক সরাসরিই বলেছিলেন, “এখানে হিন্দু খেলোয়ার কে কে আছ এক পাশে দাঁড়াও।” এবং তারা নির্বাচিত হয় নি।
ক্রিকেটে দলীয়করণও প্রচুর হয়। এসব নিয়ে লিখতে গেলে মন্তব্য আরও দীর্ঘায়িত হয়ে যাবে। আপনার লেখাটি পড়ে শৈশব থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত অনেক কিছু মিলিয়ে দেখার সুযোগ পেলাম। ধন্যবাদ আপনাকে।
@তুহিন তালুকদার,
কারণ প্রথম শ্রেনীর বইয়েই ছিল আমেনা পুতুল খেলে আর আলম বল খেলে। কাজেই মেয়েদের জন্য ঘরেরে খেলা এবং পুতুল দিয়ে সন্তান পালার ইন্টার্নী শুরু। সামাজীকীকরণের প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে শুরু মেয়েদের যাপিত জীবন। ।
ধন্যবাদ পড়া এবং মন্তব্যের জন্য।
:lotpot: :lotpot: :lotpot:
কী সাঙ্ঘাতিক সাংস্কৃতিক অবক্ষয় আমাদের জাতির জীবনে নেমে এসেছে তা এই উক্তির মাধ্যমে ফুটে উঠেছে।সাংস্কৃতিক ও জ্ঞানের দৈন্যতা এখন ঘরে ঘরে,পাড়ায় পাড়ায়,গ্রামে-গঞ্জে,শহরে-বন্দরে,স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে, অফিস-আদালতে,সচিবালয়ে,মন্ত্রি-এম পির মন্ত্রনালয়ে,সামরিক মন্ত্রনালয়ে সর্বপরি একটা দেশের সব মানুষের সব অধিকারের কথা বলার যে স্থান যার নাম পার্লামেন্ট বা সংসদ ভবনেও।
একটা দেশের বা রাষ্ট্রের যত গুলো স্তর বা শাখা আছে প্রতিটি স্তরে যখন মানুষের সব কিছুর নির্ধারন হয় ধর্ম নামক একটি মৃত শব্দ দ্বারা কে হিন্দু বা কে মুসলমান অথবা অন্যান্য ধর্ম দ্বারা তখন সে দেশের মানুষ নামের জীবের “মানুষের” মানবতাবাদী গুনাবলী অর্জন করতে যে একটি সাংস্কৃতিক বিপ্লব দরকার তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।তা নাহলে আমরা আরো গহীন জংগলের হিংস্র বাঘ-ভাল্লুলে পরিনত হবো।
গীতাদি,
আরেকবার ধন্যবাদ আমাদের বিবেকের উপর একটি সেল বোমা মারার জন্য।(F)
@মাহবুব সাঈদ মামুন,
মামুন, এ মৃত শব্দটি বড্ড ক্ষমতাশালী, শক্তিশালী ও প্রভাবশালী।
গীতাদি,
১.নারীবাদ মানে যদি হয় নারীরা কোটা দাবী করবে তাহলে সেই নারীবাদের সম্পূর্ণ বিপরীতে আমার অবস্থান। আমি চাই বাংলাদেশে যারা বেঁচে থাকার নুন্যতম অধিকার পায় না তারা সেই অধিকারটুকু পাক, সেটা নারী হতে পারে, সেটা পুরুষও হতে পারে। অধিকারহীনতার বেলায় নারী পুরুষ আলাদাভাবে কেন দেখব আমরা? নারীদের সমান অধিকার দেয়ার নামে যদি আমরা নারীদের কোটা সিস্টেমকে সমর্থন করি, তাহলে আমরা কখন বুঝব যে কোটা সিস্টেমের আর দরকার নেই? মানে ঠিক কোন পরিস্থিতিতে আমরা বুঝতে পারব নারীরা পুরুষের সমান অধিকার(?) পাচ্ছে?
২.
এখানে কিন্তু কোথাও কোটার কথা বলা নেই। 🙂
একজন সাধারন বাঙ্গালীর পক্ষে এর থেকে বেশি কিছু চিন্তা করে বলা সম্ভব নয়। ব্যাপারটা এমন, সাপোর্টার মানে দু দলের, হয় ভারত নয়ত পাকিস্তান। যদি হিন্দু হয় তাহলে তো কথাই নেই, সরাসরি ভারত, যেন দুনিয়াতে খেলার আর কোন দেশ নেই।
৪. মমতাজের গান নিয়ে আমার একেবারেই সমস্যা নেই। আমার সমস্যা ওই পেট মোটা রুনা লায়লাকে নিয়ে। ওই মহিলা যেভাবে দুশ কেজির শরীরটা দুলিয়ে নোংরা, দুর্গন্ধযুক্ত উর্দু ভাষায় গান করছিলেন তাতে করে তাকে যতটুকু না বাংলাদেশি লেগেছে তার চেয়ে বেশী পাকিস্তানী লেগেছে। বাংলাদেশের প্রতি চরম অবমাননা এটা।
৫. আমরা ক্রিকেটে সত্যি এগিয়েছি। বিশ্বাকাপের যে খেলায় আমরা পাকিস্তানকে হারিয়েছিলাম, সেই বাংলাদেশ আর আজকের বাংলাদেশের মধ্যে অনেক তফাত। ওয়েষ্টিন্ডিজের সাথে আমাদের ৫৮ রানের চমৎকার খেলার পরে কিছু মানুষের ঐ সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের বিরোধীতা একজন সুস্থমানুষ হিসেবে সবারই করা উচিত। গেইল ঐ ঘটনার পর সাথে সাথে টুইটারে লিখেছিল, ” বাংলাদেশ আমাদের উপরে হামলা চালিয়েছে”। দুঃখজনক একটি ঘটনা। মন্দের ভালো কিছু সুস্থ, ভদ্র ছেলে ওয়েষ্ট ইন্ডিজের বিদায়কালে সমবেদনার প্লাকার্ড হাতে দারিয়েছিল।
@সাইফুল ইসলাম,
আপনার উদ্ধৃতি দেওয়া এর আগের লাইনটা হলঃ
সমতার ভিত্তিতে যেসব বিষয় নিশ্চিত করার লক্ষ্যে রাষ্ট্রপক্ষসমূহ নারীর প্রতি বৈষম্য দূরীকরণের জন্য সকল উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
সকল উপযুক্ত ব্যবস্থাকে ব্যাখ্যা করলেই কোটার কথা আসে।
পরে গেইল আমাদের ফুলেল ব্যবহার পেয়ে কিন্তু আর তা বিশ্ববাসীকে জানায়নি।
@গীতা দি,
আমার কাছে কিন্তু তা মনে হয় না। আচ্ছা আমি একটা উদাহরন দেই। ঠিক এই ব্যাপারটা নিয়েই টিভিতে একটা প্রোগ্রাম দেখেছিলাম। সেখানে কিছু উকিল আলোচনায় এসেছিল। একজন বলল, একজন নারীর থেকে ভালো রেজাল্ট থাকা সত্বেও শুধুমাত্র কোটার কারনে সে উকিল হেসেবে না যেন জজ হিসেবে নিয়োগ পায়নি(অনেক দিন আগের দেখা আমি সঠিক মনে করতে পারছিও না)। এখন যদি তাদের “উপযুক্ত ব্যবস্থা” দেয়ার জন্য এরকম কোটা দেয়া হয় তাহলে আমি জানি না তাতে বাংলাদেশের উপকারটা কী হচ্ছে।
বাংলাদেশে সুবিধা বঞ্চিত দুজন নারী ও পুরুষকে যদি আপনার কাছে পাঠানো হয় তাহলে আপনি কী করবেন( যদি আপনার ক্ষমতা থাকে)? শুধু মহিলাকেই সাহায্য করবেন? যেহেতু তার “উপযুক্ত ব্যবস্থা” পাওয়ার অধিকার আছে? আর পুরুষটাকে শুধু পুরুষ বলেই বঞ্চিত করবেন?
কোটা জিনিসটা নিজেই বৈষম্যের সৃষ্টি করে। আমি নিজের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র, আমি জানি কোটার মাহাত্ব। আমার থেকে কম নম্বর পেয়ে শুধু মুক্তিযোদ্ধার ছেলে বলে একজন আমার থেকে ভালো সাব্জেক্ট পেয়েছিল। এখন আমি কী আমার বাবাকে যেয়ে বলব যে সে কেন মুক্তিযুদ্ধ করেনি? একজন মুক্তিযোদ্ধাকে যদি সরকার সাহায্য করতে যায় তাহলে তাকে আর্থিকভাবে সাহায্য করাটাই যুক্তিযুক্ত। কোনভাবেই কম যোগ্যতার মানুষকে তার থেকে যোগ্যতর মানুষের চেয়ে বেশী সুবিধা দিয়ে নয়।
আমরা যদি আন্দোলনই করি তাহলে সমান অধিকারের জন্যেই করব, কোন অযৌক্তিক কোটার জন্য নয়।
@সাইফুল ইসলাম,
কোটা নিয়ে আপনার ব্যাখ্যা ও উদাহরণ নিয়ে একমত নই। মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য কোটা আর নারীদের জন্য কোটার প্রেক্ষাপট এক নয়। তাহলে বাংলাদেশে জাতিগত সংখ্যালঘুদের উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের হার এখন যা আছে এর চেয়ে বহুভাগ কমে যাবে।
Positive discrimination ছাড়া নারী তার ভাঙ্গা পা নিয়ে পুরুষদের সাথে সমতালে যেতে পারবে না। এটা শুধু সমতার প্রশ্ন নয় ন্যায্যতার প্রশ্ন।
@গীতা দি,
মুক্তিযোদ্ধা কোটা আর নারীদের জন্য কোটার প্রেক্ষাপট অবশ্যই এক নয়, তবে এই দুই কোটার কাজ কিন্তু একই। মুক্তিযোদ্ধা কোটায় একজন মুক্তিযুদ্ধের সন্তান, তারও সন্তান মানে মুক্তিযোদ্ধার নাতী পর্যন্ত বিশেষ সুবিধা পাবে আর অন্য জায়গায় নারী শুধু মাত্র নারী বলেই বিশেষ সুবিধা পাবে, এতে তার যোগ্যতা থাকুক আর নাই থাকুক। তাই নয় কী?
আপনি আমার মুক্তিযোদ্ধা কোটার উদাহরনটা দেখলেন কিন্তু নারীদের কোটা দেয়ার জন্য যে একজন যোগ্য উকিল তার পাওনা থেকে বঞ্চিত হলেন সেই উদাহরনটা এড়িয়ে গেলেন।
এই কথাটাই আমি আমার প্রথম রিপ্লাইতে বলেছিলাম। নারী ঠিক কোন অবস্থায় গেলে আপনারা মানে নারীবাদীরা বলবেন নারী এখন সমান অধিকার পাচ্ছে? আপনি যদি আমেরিকায় দেখেন সেখানেও দেখেবেন এখনও অনেক নারী শুধুমাত্র নারী হওয়ার জন্য পুরুষের দ্বারা বঞ্চিত হচ্ছে। এগুলো পেপার পত্রিকাতেই পাওয়া যায়। তাহলে সেখানেও কী আমরা নারীদের কোটার কথা বলব নাকি সমান অধিকারের কথা বলব? মানে আমি জানতে চাচ্ছি একটা দেশের কী পরিস্থিতি দেখলে আমরা বুঝতে পারব সেখানে নারী এবং পুরুষ সমান অধিকার পাচ্ছে?
@সাইফুল ইসলাম,
না, তা নয়। আপনার উকিল নিয়ে উদাহরণে এর উত্তর রয়েছে। নারীটিকে জজ হওয়ার আগে আগে উকিল হতে হয়েছে। যে কোন নারীকে নারী হওয়ার কারণেই জজ বানিয়ে দেয়নি।
@গীতা দি,
আমি জানি না ঐ নারী জজকে উকিল হবার সময়ও কোটার সুবিধা দেয়া হয়েছে নাকি? যুক্তি কিন্তু বলে দেয়া হয়েছে, যদি নাও দেয়া হয় তারপরেও জজ হবার সময় একজন যোগ্য পুরুষ সদস্যকে পাশে সরিয়ে রেখে নারী সদস্যটিকে অযোগ্য হওয়া সত্বেও তাকেই শুধুমাত্র নারী হবার জন্য জজ করা হয়েছে। তাই নয় কি?
এই উদাহরনটা বাদ দেই যেহেতু এই ঘটনার দর্শক শুধু আমিই ছিলাম। শুধু হাইপোথেটিকাল একটা উদাহরন আমরা ধরি। আমি আগে একজন সুবিধা বঞ্চিত নারী ও একজন সুবিধা বঞ্চিত পুরুষের কথা বলেছিলাম। তার উত্তর আপনি দেন নি।
নারীকে যদি তার যোগ্যতা অনুসারেই সুবিধা দিতে আপনারা নারীবাদীরা দাবী করে থাকেন তাহলে আবার কোটার কথা আসছে কেন? আর যদি কোটা রাখতে চান তাহলে আপনাকে মানতেই হবে যে নারী তার যোগ্যতা না থাকা সত্বেও তাকে সুবিধা দেয়ার পক্ষাপাতি আপনারা। আমি বুঝি না সমান অধিকার চাইতে আপনাদের সমস্যাটা কোথায়? বাংলাদেশে নারীরা অবশ্যই অবহেলিত। তবে তা অর্থনৈতিক কারনে। এই কোটা দাবী করে কখনোই সমান অধিকার আদায় করা যাবে না। একজন কর্নেলের স্ত্রী বাংলাদেশে শুধু পুরুষ না একজন পুরুষ মন্ত্রীর থেকেও বেশী ক্ষমতা রাখে। এই প্রেক্ষাপটে যদি আমি একটা পুরুষ অধিকার সংস্থা খুলে পুরুষদের জন্য কোটার কথা বলি তাহলে তা যৌক্তিক হবে? আমাদের দরকার সমান অধিকার। কোনভাবেই কোটা দিয়ে সমান অধিকার আদায় করা যাবে না। তাতে করে করুনা কেউ কেউ করবে, কিন্তু সমান অধিকার, সে অনেক দূর।
@সাইফুল ইসলাম,
এ কোটা পদ্ধতি নিয়ে মুক্ত-মনায় অনেক তর্ক যুক্তি বিতর্ক হয়েছে।স্বীকৃত একটা বিষয় নিয়ে এবং একই বিষয় নিয়ে আবারও আলোচনা চালানো — টানাটানি আমার কাছে একঘেঁয়েমি লাগছে। আমি ইস্তফা দিলাম।
@সাইফুল ইসলাম,
দেখুন, কোটা দিয়ে সমান অধিকার আদায় করা হচ্ছে এই ধারনাটা ভুল। সমাজে যে ন্যায্য অধিকার থেকে মেয়েদেরকে হরহামেষা বঞ্চিত করা হচ্ছে, কোটা দিয়ে সেটাকে কিছুটা ব্যালেন্স করা হচ্ছে। অর্থাৎ ফোর্স করে বঞ্চিত মেয়ে সমাজের কিছু অংশকে সুবিধা দিয়ে তাদেরকে বঞ্চনার হাত থেকে কিছুটা হলেও রক্ষা করার প্রয়াস চালানো হয়, যাতে বঞ্চিত লোকজন হতাশায় নিমজ্জিত না হয়ে পড়ে। কারন এর কোন আশু নিরাময়ের সম্ভাবনা দেশের বা সমাজের হাতে আপাতত নেই।
উপরোক্ত ব্যাপারটিতে আপনি যেমন ন্যায্যভাবেই সোচ্চার হচ্ছেন, ঠিক একই ভাবে যখন অযোগ্য হওয়া সত্বেও শুধুমাত্র পুরুষ হবার কারনে একজন যোগ্য মেয়েকে সরিয়ে রেখে পুরুষটিকে জজ বানানো হয় এবং শেষোক্ত ঘটনা যখন অহরহ ঘটে তখন এর প্রতিকার আপনি কি করে করবেন? শুধুমাত্র মুখে বা মনে মনে বিরোধিতা করলেতো আর সমস্যার সমাধান হয়না, সমাজকে রাতারাতি পরিবর্তন করার সাধ্যও কারো নেই। তাই আপাতত কোটা পদ্ধতিতে মেয়েদের সুবিধা দিয়ে সমাজে মেয়েদের অংশগ্রহনটা কিছুটা হলেও নিশ্চিত করা যায় বলে আমার ধারনা।
@ব্রাইট স্মাইল্,
একমত। (Y)
@গীতা দাস,
খুব ভাল বলেছেন। আপনার সংগে সম্পূর্ণ একমত। (Y)
আপনি যেটাকে positive discrimination বলেছেন, সেটাকে আমেরিকাতে বলা হয় affirmative action এবং এর যৌক্তিকতা হিসাবে দেখানো হয় “levelling the playing field.” কোন জনগুষ্ঠী (যেমন নারী কিংবা সংখ্যালঘু) যদি ঐতিহাসিক অন্যায় অবিচারের কারনে পিছিয়ে থাকে, তখন তাকে হাত ধরে টেনে সবার সমপর্যায়ে আনাটা সাম্য এবং ন্যায়নীতিতে বিশ্বাসী যেকোন সভ্য দেশের শুধু দায়িত্ব নয়, কর্তব্য। আমাদের মনে রাখতে হবে সামাজিক ন্যায়বিচার কোন স্মৃতিশক্তিরহিত (memoryless) প্রক্রিয়া নয়।
@মোঃ হারুন উজ জামান,
ধন্যবাদ চমৎকারভাবে affirmative action এর বিষয়টি উপস্থাপনের জন্য।
অসঙ্গতিগুলো দেখতে দেখতে আমরা অভ্যস্ত হয়ে যাই। আর মানুষ অভ্যস্ত চিন্তার দাস। সেখানে খোঁচা দিলে পরে হয়তো গন্ডারের মত তিনদিন পর কাতুকেতু মনে করে একটুখানি নড়েচড়ে বসা। তারপর?
বিভক্তি আগেও ছিল, কিন্তু ব্রিটিশরা দেশ শাসন করার জন্য এই বিভক্তিকে গ্রহণ করেছিল কার্যকর মহৌষধ হিসাবে।
সেই ঔষধের কার্যকারিতা এখনো ফুরায়নি। বরং বেড়েছে। সেই বাড়-বাড়ন্তের চালচিত্র ফুটে ওঠেছে আপনার লেখায়।
লেখকের এই চেষ্টা সফল হোক, শেকড়টাকে সনাক্তকরণের পথচলায়।
@স্বপন মাঝি,
কাব্যিক মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
(Y)
শূণ্যতা আমাদের সর্বব্যাপী, তবে সবচেয়ে বড় শূণ্যতা আমদের মনে। মানুষের জন্য ভালবাসার শূণ্যতা। আমরা মানুষের চেয়ে বেশি ভালবাসি ধর্মকে, ধর্মের চেয়ে বেশি সম্প্রদায়কে – আর ভালবাসি দলকে, তবে দলের চেয়ে বেশি জয়ী হতে পারাকে।
গীতা দাসকে অনেক ধন্যবাদ ভাবনাউদ্রেককারী এই লেখাটার জন্য।
@ইরতিশাদ,
ধন্যবাদ আপনাকেও পড়ার জন্য।
এ সুযোগে বলে রাখি, গত ১১ মার্চ বেঙ্গলে আমি লুনা শিরীনের ” বাসুনকে মা ” বইয়ের প্রকাশনা উৎসবে ছিলাম।বইটি কিনলাম। ফ্ল্যআপে আপনার কথাগুলো ভাল লেগেছে।
আমি আর একটা অনুভূতির সাক্ষী। বিমল তরফদার সার্ক দেশ সমূহের দ্রুততম মানব হয়েছিল নব্বইএর প্রথম দশকে। সে আমার গ্রামের ছেলে। কর্তৃপক্ষ ও্কে তিন নম্বরে রেখেছিল। কিন্তু প্রথম দুজন সরে দাঁড়িয়েছিল বিমলের জন্য। কারণ ওরা জানত সে ওদের চেয়ে ভাল। বিমল ওদের বিশ্বাসের মূল্য দিতে পেরেছিল।
এসব সংখ্যা লঘুদের নিয়ে হতে পারে আবার সংখ্যাগরিষ্ট নিজেদের মধ্যেও হয়। মোটের উপর এ গুলো কষ্ট দেয়। দেশপ্রেম থাকলে এগুলো হত না। যে ছেলে দুটো বিমলের জন্য সরে দাঁড়ালো তারা দেশকে আগে দেখেছিল – বিমল হিন্দু কি মুসলমান দেখেনি।
ক্রিকেটে ভারতের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের জয়ে অনেক বাংলাদেশীদের যত উচ্ছ্বাস দেখেছি পাকিস্তানীরা এর চেয়ে বেশী উচ্ছ্বসিত হয় কিনা আমার জানা নেই।
@নৃপেন্দ্র সরকার,
দাদা, Finally বিমল তরফদার কিন্তু দেশপ্রেমের সংজ্ঞায় উৎড়াতে পারেনি।
ইউ এস এ খেলতে গিয়ে হারিয়ে গেছে মানে থেকে গেছে।
@গীতা দাস,
আপনি ঠিক বলেছেন।
আমি কিন্তু অন্য ছেলে দুটোর দেশ প্রেমের কথা বলেছি।
দেখুন আমার মন্তব্য –>
@গীতা দাস,
আমাকে কেউ বলেছিল বিমল তরফদার মারা গেছেন। উনি মারা যাননি তাহলে! জেনে ভাল লাগল।
@মনজুর মুরশেদ,
বর্তমানে বিমল তরফদার জীবিত না মৃত তা আমি জানি না। তবে যখন সে ইউ এস এ খেলতে গিয়ে হারিয়ে গিয়েছিল তখন জানতাম।
(ক) খুব সত্যি কথা! আর কোনো উলটা-পালটা ব্যবহারতো নয়ই!
হাতের কাছে বইটা নেই নাহলে হুবহু কোট করতে পারতাম, যাইহোক প্রমথ চৌধুরীর “সাহিত্যে খেলা” নামে একটা প্রবন্ধ আছে আমাদের বইতে, সেখানে উনি বলেছেন খেলা একমাত্র এবং শুধুমাত্র উদ্দেশ্য হলো, মানুষকে আনন্দ দান করা।
কথাটার সাথে আমি মনে করিনা কারো বিতর্ক থাকতে পারে কারন এ আমরা সবাই জানি সাকিব-মাশরাফিরা কাপ জিতে সেটা বিক্রি করে ক্রিকেট বোর্ডকে তথা সরকারকে কোটি কোটি টাকা উপার্জন করে দেয়না। হয়ত ইদানিং আইপিএল,আইসিএল এর মত ইভেন্টে রাষ্ট্রের খানিক উপার্জন হচ্ছে কিন্তু আমি বলতে চাচ্ছি খেলার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে মানুষকে বিনোদন দান করা।
সাহিত্যের বহু উদ্দেশ্য আছে (যেমন আমারমত অশিক্ষিতকে শিক্ষিত করা 😛 ) জানি কিন্তু একটা বড় উদ্দেশ্য বিনোদন দান করা। অন্তত পক্ষে এভাবে বলা যায় অন্য উদ্দেশ্যগুলো সফল করতে গিয়ে সাহিত্য আমাদেরকে বিনোদনও দিয়ে থাকে।
এত কী প্যাচাল পারতেসি তাইতো? 😛 আমার কথা এখানেই, দেখুন যখন শরৎ এর দেবদাস পড়ে টানা তিনদিন উদাস হয়ে বসে থাকি কিংবা গোর্কির মা পড়তে বসে কাঁদি তখন কিন্তু লেখককে ধরে মাইর দিতে চাইনা আমরা কারন আমরা জানি এটাই ENTERTAINMENT! বিরহের বানে ভাসিয়েই বিনোদনের জল খাওয়ানো হচ্ছে।
কিন্তু আমি বুঝি না মানুষ কেন খেলার বেলায় এটাকে যুদ্ধ মনে করে? সব জায়গাতেই আমরা পরিস্কার পড়ে এসেছি খেলা আর কিছুই না একটা বিনোদনের মাধ্যম মাত্র। একদিন হাসাবে, আরেকদিন কাঁদাবে এই না হলো বিনোদনের ধর্ম!
(খ)এখানে আমার কিছু কথা আছে। প্রথমেই বলে নেই আমি পাকিস্তান সমর্থন করি না :))
আবার বলি বিনোদনতো বিনোদনই!! এখানে রাজনীতি আর ইতিহাস কিভাবে আসে? কামরান আকমলতো আর স্ট্যাম্প নিয়ে বাংলাদেশে যুদ্ধ করতে আসেনি। পাকিস্তান দেশটার সাথে আমাদের একটা কালো অধ্যায় থাকার কারনেই আমার পাকিস্তানি বন্ধু থাকতে পারবে না? পাকিস্তানের ক্রিকেট টিমকে সমর্থন করতে পারবো না?
@টেকি সাফি,
আপনি পারলেও আমি যে পারি না।
@টেকি সাফি, খেলার মধ্যে বিনোদনের পাশাপাশি রাজনীতিও কিন্তু আছে। সত্য বলতে কী, বাংলাদেশের ক্রিকেট দল আহামরি কোন খেলা দেখায় না, তবুও বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচে কিন্তু আমরা সবাই বাংলাদেশকেই সমর্থন করব। কোন ক্রিকেট-খেলুড়ে দেশ তাদের নিজেদের দল ফেলে অন্য কোন উন্নততর দলকে সমর্থন করবে না।
একজন পাকিস্তানীর সাথে বন্ধুত্ব তখনই সম্ভব হবে যখন সে আমাদের ইতিহাসকে স্বীকার করবে। যে পাকি বিশ্বাস করে ভারতীয় সেনারা পাক বাহিনীর উর্দি পড়ে বাংলাদেশে গণধর্ষণ করে গিয়েছে তার সাথে বাংগালী কেন, কোন বিবেকবান মানুষেরই বন্ধুত্ব থাকা সম্ভব না।
@পৃথিবী,
একমত। (Y)
সমকালীন বিষয় নিয়ে লেখাটা ভাল লাগল!
নেদারল্যান্ড আর আশরাফুল বানান টা ঠিক করে নেন।
ধন্যবাদ!
@লাইজু নাহার,
আপনার উল্লেখিত বানান দুটো ঠিক করে দিয়েছি । ল্যান্ড যে কখন ম্যান্ড হয়েছিল। যাহোক, মনোযোগের সাথে পড়ার জন্য ধন্যবাদ।