আবুল কাশেম
ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০১১
২য় পর্বের পর।
জেনে রাখা ভাল নারীরা হচ্ছে পশু এবং ক্রীতদাসীর পর্যায়
যাক, মোল্লা নন্দ কবি ছেড়ে আবার ইসলামে নারীর প্রচণ্ড মর্যাদার দিকে তাকানো যাক।
সহিহ্ মুসলিম, বই ২৬, হাদিস ৫৫২৩:
আবদুল্লা বিন ওমর বর্ণনা করছেন:আল্লাহর নবী (দঃ) বলেছেন, দুর্ভাগ্য যদি কিছুতে থাকে, তবে তা হল বাড়ি, ঘোড়া আর নারী’’।
শাব্বাশ!
ইসলামী বিশ্বকোষ (ডিকশনারি অব ইসলাম) থেকে পৃষ্ঠা ৬৭৮-৬৭৯:
সমগ্র মানব জাতির জন্য নারীর চেয়ে ক্ষতিকর আর কিছুই আমি রেখে যাচ্ছি না। দুনিয়া এবং নারী থেকে দূরে থাকবে। কারণ নারীর কারণেই ইসরাইলের পুত্ররা প্রথম পাপ করেছিল।
শাব্বাশ!
সহিহ্ মুসলিম, বই ৩৬ হাদিস ৬৬০৩:
উসামা বিন যায়েদ বলেছেন: আল্লাহ’র নবী (দঃ) বলেছেন, আমার পরে পুরুষের জন্য নারীর কারণে ক্ষতির চেয়ে বেশী ক্ষতিকর আর কিছুর সম্ভাবনা আমি রেখে যাচ্ছি না।
শাব্বাশ!
বটে! তারপর? আজকাল মেয়েরা মন দিয়ে পড়াশুনা করে অফিসগুলোতে বড় বড় বস হচ্ছে। তাহলে সে সব অফিসে আমরা কি চাকরী করব না? দেখুন ইমাম শাফির বক্তব্য, স্বয়ং পয়গম্বর কি বলেছেন।
শাফী শরিয়া (রিলায়েন্স অফ দি ট্রাভেলার বা উমদাত আল সালিক), পৃষ্ঠা ৬৭২, নম্বর পি-২৮-১:
নবী (দঃ)বলেছেন: পুরুষরা ধ্বংস হয়ে গেছে যখনি তারা মেয়েদের অনুগত হয়েছে।
মারহাবা, মারহাবা!
ইসলামে আরও একটা অতি চমৎকার খেল আছে, পারিবারিক ব্যাপারে। সেটা হল, স্ত্রী যদি কিছু উপার্জন করে, তাতে তার একচ্ছত্র অধিকার। সে উপার্জন সে নিজের পরিবারে খরচ করতেও পারে, না-ও পারে, স্বামীর অধিকার নেই তার ওপরে। হ্যাঁ হ্যাঁ নিশ্চয়ই, স্ত্রীর খুবই একটা অধিকার এটা, তাই না? কিন্তু গোপন ব্যাপারটা হল, নিজের পরিবারে বাচ্চা কাচ্চার ওপর খরচ না করে সে স্ত্রী, সে মা সেই পয়সা খরচটা করবে কোথায়? অবশ্যই তার উপার্জন তার পরিবারেই খরচ হবে। তবে কিনা, এই ‘অধিকার’ দিয়ে তাকে কানে কানে বলে দেয়া হল, এ পরিবারে কিন্তু তোমার দায়িত্ব ঐ পর্যন্তই, স্বামীর সমান নয়। কাজেই তোমার অধিকারও ঐ পর্যন্তই, স্বামীর সমান নয়।
যেমন অন্য একটা হাদিসে আছে, হাট-বাজার করে এলে থলিটা পুত্রের হাতে না দিয়ে কন্যার হাতে তুলে দেবে, নবীর (দঃ) আদেশ। বড়ই মধুর আদেশ, একেবারে বেহেশ্তি আদর মেশানো। কিন্তু এতে করে কানে কানে সেই কন্যাকে বলে দেয়া হল, এবার আলু-পটলগুলো নিয়ে সটান রান্নাঘরে গিয়ে ঢোক।
সোনালী শৈশবের কথা মনে আছে, যখন আমরা আমাদের বাবা-মায়ের স্নেহে যত্নে আমরা ভাইবোনেরা বড় হচ্ছিলাম? পরিবারের শান্তি-সংহতি নির্ভরই করে পারস্পরিক সম্মানের ও বিশ্বাসের ওপর। কি হত যদি আমাদের বাবা আর মা পরস্পরকে সম্মান না করতেন? বিশ্বাস না করতেন? ইসলাম বড়ই বড় গলায় চীৎকার করে, পারিবারিক মূল্যবোধের সে খুবই যত্ন নেয়। অবশ্যই, অবশ্যই, যত্নটা সে বড়ই নেয়। কিন্তু কিভাবে?
খুলে দেখা যাক খোদ সহিহ্ মুসলিম হাদিস থেকে, বই ৮ হাদিস ৩৪৭১:
আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেছেন, নবী (দঃ) বলেছেন, বিবি হাওয়া না হলে স্ত্রীরা তাদের স্বামীদের প্রতি কখনো অবিশ্বাসের কাজ করত না। অর্থাৎ স্ত্রীরা তাদের স্বামীদের প্রতি অবিশ্বাসের কাজ করে থাকে।
চমৎকার সম্মানের কথা।
বিশ্বাস করুন নারীরা হচ্ছে ক্ষতিকর, শয়তান, এবং বক্র
এভাবেই ইসলাম চিরকালের জন্য মুসলমান মেয়েদের কপাল ফাটিয়ে দিয়েছে। শত পড়াশুনা করলেও, পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ পণ্ডিত হলেও, সহস্র আরাধনা করলেও, সারা জীবন চেষ্টা করলেও মেয়েদের উপায় নেই এ কঠিন লক্ষ্মণ রেখা পার হবার, পুরুষের সমান হবার। এবং তা শুধুমাত্র, শুধুমাত্র, এবং শুধুমাত্র মেয়ে হবার কারণেই। সাধারণত: সাধারণ লোকেরা তাদের স্ত্রীদের ওপর অত্যাচার করেনা, সেটা তারা ভালো মানুষ বলেই। কিন্তু প্রতি পদে ইসলামের হুকুম মেনে চললে কুরুক্ষেত্রে কুরুক্ষেত্রে দুনিয়া অচল হয়ে যেত, মেয়েদের আর্তনাদ-হাহাকারে সমাজ অচল হয়ে যেত।
ইসলামী বিশ্বকোষ থেকেই দেখা যাক এবারে। সংসার সুখের হবার জন্য স্বামীদের কানে ফিস ফিস করে কিছু তোগলকি উপদেশ দেয়া আছে সেখানে। সে অমূল্য উপদেশগুলো মেনে চললে সুখ তো দুরের কথা, বিভিন্ন রকম হুড় হাঙ্গামায় সংসার শিকেয় উঠতে বাধ্য।
এবারে শুনুন ইসলামী বিশ্বকোষ তার ৬৭৫ পৃষ্ঠায় স্বামীদের কি বলছে:
১। কষ্মিন কালেও স্ত্রীকে বেশী পিরীত দেখাবে না হে, তা হলেই সে কিন্তু লাই পেয়ে মাথায় উঠে সর্বদিকে বিশৃঙ্খল করে দেবে। চিত্ত যদি অতি প্রেমে গদগদ হয়ে ওঠেই, তবে অন্তত: স্ত্রীর কাছে সেটা চেপে রেখো বাপু!
২। বিষয়-সম্পত্তির পরিমাণ তো স্ত্রীকে বলবেই না, অন্যান্য গোপন কথাও লুকিয়ে রেখো সযত্নে। তা না হলেই কিন্তু সে তার দুর্বুদ্ধির কারণে সর্বনাশ করে দেবে সবকিছু।
৩। ও হ্যাঁ, তাকে কখনো কোন বাদ্য-বাজনা করতে দেবে না, আর যেতে দেবে না বাইরেও। পুরুষদের কথা বার্তা তো কিছুতেই শুনতে দেবে না।
হ্যাঁ, এই হল ইসলামে পতিদেবতা, একেবারে পাতি-দেবতা। আগেই দেখিয়েছি স্বামীকে কোরান অনুমতি দিয়েছে ‘বেত্তমিজ’ স্ত্রীকে প্রহার করার। কিন্তু এই শক্তিমান পতিদেবতা নিজেই যদি ব্রক্ষ্মাস্ত্র হাতে হয়ে ওঠেন একেবারে ‘পরশুরামের কঠোর কুঠার’ বা ক্ষ্যাপা দুর্বাসা, তবে বেচারই স্ত্রী কি করবেন?
উপদেশ আছে সুরা নিসাতে, আয়াত ১২৮ (৪:১২৮):
যদি কোন নারী স্বীয় স্বামীর পক্ষ থেকে অসদাচরণ কিংবা উপেক্ষার আশংকা করে, তবে পরস্পরের কোন মীমাংসা করে নিলে তাদের উভয়ের কোন গুনাহ নাই।
মীমাংসা উত্তম।
ঐ সুরার ৩৪ নম্বর আয়াতে স্বামীকে কিন্তু মীমাংসার চেয়ে বৌকে ধরে বেদম পিট্টি দেয়াটাকেই আরও উত্তম করে দেয়া আছে।
হাদিসে আছে আরও বিস্তারিত।
সহিহ্ বোখারি, ভল্যুম ৭, হাদিস ১৩৪:
সুরা নিসা আয়াত ১২৮ (৪:১২৮) পড়ে অয়েশা বর্ণনা করেছেন: এতে সেই স্ত্রীর কথা বলা হচ্ছে যার স্বামী তাকে রাখতে চায় না, তাকে তালাক দিয়ে অন্য মেয়েকে বিয়ে করতে চায়। সে বলে – অন্য মেয়েকে বিয়ে করো, কিন্তু আমাকে তালাক দিয়ো না, আমার ওপরে খরচও করতে হবে না, আমার সাথে শুতেও হবেনা।
এটাই নাকি হল সেই ‘পরস্পরের মীমাংসা উত্তম’। চমৎকার মীমাংসা-ই বটে।
আপনি কি জানেন না পুরুষদের জন্যে বহুগামিতা সম্পূর্ণ ঐশ্বরিক?
ইসলামে চার বিয়ের কথা সবাই জানে। এটা একটা মারাত্মক নারী-বিরোধী প্রথা।
সুরা নিসা আয়াত নম্বর তিন (৪:৩) বলছে:
আর যদি তোমরা ভয় কর যে, এতিম মেয়েদের হক্ আদায় করতে পারবে না, তবে সেসব মেয়েদের মধ্য থেকে যাদের ভালো লাগে তাদের বিয়ে করে নাও দুই, তিন, কিংবা চারটি পর্যন্ত।
বিরাট ফাঁকি লুকিয়ে আছে এর ভেতর। মুসলমান পুরুষের জন্য ‘সর্বোচ্চ চার স্ত্রী’ কথাটা কিন্তু ঘোর মিথ্যে। গোপন সত্যটা হল, একসাথে এক সময়ে সর্বোচ্চ চার স্ত্রী। তারপরে যে কোন স্ত্রীকে বা চারজনকেই এক মুহূর্তে একসাথে তালাক দিয়ে আবার চার মেয়েকে বিয়ে করতে কোনই অসুবিধে নেই। নবীর (দঃ) নাতি ইমাম হাসান এটা করেছেনও। তাঁর স্ত্রীর সংখ্যা ছিল আশী থেকে তিন’শ, বিভিন্ন বই অনুযায়ী। সাধারণ মুসলমানেরা এটা করেন না সেটা অন্য কথা। কারণ সব ধর্মের সাধারণ মানুষেরাই ভাল মানুষ। আশ্চর্য কথা হল: যখন এই আয়াত নাজিল হল, তখন অনেক লোকের চারের বেশি স্ত্রী ছিল। আল্লার নির্দেশ এসে গেছে সর্বোচ্চ চার, এদিকে ঘরে আছে চারের বেশী। কি করা যায় এখন! নবী (দঃ) কে জিজ্ঞেস করাতে তিনি বললেন পছন্দসই চার জন রেখে বাকী বৌগুলোকে তালাক দিয়ে দিতে। ব্যস। ইসলামী বিয়ে-আইনের প্রথম বলি হল সেই নাম না জানা কাব্যে উপেক্ষিতাদের দল, যাদের কোনই অপরাধ ছিলনা। অথচ তারা এক নিমেষে ঘর হারাল, স্বামী হারাল, আশ্রয় হারাল, সন্তান হারাল।
দেড় হাজার বছর পার হয়ে গেছে, সেই নিরপরাধ হতভাগিনীদের নিঃশব্দ আর্তনাদের জবাব আজও পাওয়া যায়নি। আজও হয়তো সেই ধু ধু মরুভূমির বালুতে কান পাতলে অস্ফুটে শোনা যাবে তাদের চাপা দীর্ঘশ্বাস, ভালো করে খুঁজলে আজও হয়তো বালুতে দেখা যাবে শুকিয়ে যাওয়া ক’ফেটা অশ্রুবিন্দু। আর্ত হাহাকারে তারা শোনাতে চাইবে না বলা সেই করুণ কাহিনী। অথচ কি সহজেই না সমস্যাটার সমাধান হতে পারত!
কেন, সুরা নিসার ২৩ নম্বর আয়াতেই (৪:২৩) দুই বোনের এক স্বামীর সাথে বিয়ে হওয়া বাতিল করা হয়নি? বলা হয়েছে যেন দুই আপন বোন একই লোককে বিয়ে না করে। এবং পরক্ষণেই বলা হয়েছে:- ‘কিন্তু যা অতীত হয়ে গেছে’’। অর্থাৎ এ পর্যন্ত যাদের সেরকম বিয়ে হয়েছে, তারা সতীন হয়ে থাকতে পারবে, কিন্তু এর পর থেকে আর ও রকম বিয়ে চলবে না।
না, চারের বেশী বৌদের বেলায় তা বলা হয় নি, করা হয় নি। তালাক হয়ে গেছে তারা, কেউ জানেনা নীরবে নিঃশব্দে কতটা কেঁদেছে বিচারের বাণী। হায়রে মানবতার ধর্ম, সাম্যের ধর্ম!
এর পরেও আছে। পারিবারিক মূল্যবোধের ওপর প্রচণ্ড বক্তৃতার পরে স্বামীর অবাধ অফুরন্ত যৌবনের ব্যবস্থা আছে। শুধু একই কুয়োর বাঁধা পানিতে সারাজীবন নাইতে কি ভালো লাগে কারো? পুরুষের খাসলতটাই যে তা নয়। মেয়েমানুষের শরীর যে তার চাই-ই চাই। সে জন্য সে স্বর্গ, মর্ত্য,-পাতাল মন্থন করবে, হাজারটা আইন বানাবে,হাজারটা আইন ভাঙ্গবে, দরকার হলে ধর্মগ্রন্থের ওপরে পা রেখে দাঁড়াবে। আর তার অনেকটাই সে করবে আল্লার নামেই। হিন্দু ধর্মেরও একই অবস্থা ছিল। ইসলামে আল্লার বিধানে মুসলমানদের উত্তপ্ত বিছানার জন্য আছে অফুরন্ত ক্রীতদাসীর ব্যবস্থা, এ বইয়ের ‘ক্রীতদাস’ অধ্যায়ে দেখুন। শুধু তা-ই নয়, সেই সাথে আরও আছে অগণিত যুদ্ধ-বন্দিনীর ব্যবস্থা। একের পর এক যুদ্ধ জয় করে পরাজিতদের শত-লক্ষ নারীদের নিয়ে তারা কি নৃশংস অপকর্ম করেছে, ভাবলে গা শিউরে ওঠে। সেই সব লক্ষ হতভাগিনীর মর্মান্তিক অভিশাপে চির-কলঙ্কিত হয়ে আছে ইসলামের ইতিহাস। অস্বীকার করতে পারবেন কোন মওলানা?
এর পরেও আমাদের শুনতে হয় ইসলাম মানবতার ধর্ম। পরিহাস আর বলে কাকে।
কখনো ভেবেছেন, মওলানারা চিরকাল জন্ম-নিয়ন্ত্রণের বিরোধী কেন? একেই তো আমাদের গরীব দেশ, মানুষে মানুষে সয়লাব। আফ্রিকার মুসলমান দেশগুলোর অবস্থা তো আরও খারাপ। অন্ন-বস্ত্র-স্বাস্থ্য-বাসস্থান-চিকিৎসা, সবকিছুরই এত টানাটানি। সম্পদের তুলনায় মানুষের সংখ্যা এত বেশী যে কিছুদিন পরে মানুষে মানুষ খাবে। কিন্তু তবু, জন্মনিয়ন্ত্রণ শব্দটা শুনলেই মওলানাদের মাথা খারাপ হয়ে যায়। আল্লাই না কি মানুষকে খাওয়াবেন। অথচ আমরা ইতিহাসে দেখেছি, ভয়াবহ দুর্ভিক্ষে কোটি কোটি লোক স্রেফ না খেয়ে মরে গেছে। সোমালিয়া, ইথিওপিয়ার দিকে তাকিয়ে দেখুন। আমাদের বাংলার বেয়াল্লিশ তেতাল্লিশের ভয়াবহ দুর্ভিক্ষের কথা মনে নেই? আর সেই ছিয়াত্তরের মন্বন্তর? পর পর আট বছর বৃষ্টি হয়নি বাংলায়; বাংলা-বিহার উড়িষ্যার মোট তিন কোটি লোকের এক তৃতীয়াংশ, এক কোটি লোক মরে গিয়েছিল খেতে না পেয়ে।
অতি সম্প্রতি চারদিক দেখে শুনে যদিও তাঁরা এ ব্যাপারে তর্জন-গর্জন করাটা বাধ্য হয়েই বাদ দিয়েছেন, কিন্তু চিরটা কাল এটা ছিল তাঁদের একটা কৌশল। কিসের কৌশল? আমরা যারা পশ্চিম দেশগুলোতে থাকি, তারা এটা ভালই জানি। এসব দেশের সরকার গুলোর দয়া দাক্ষিণ্যে ব্যাঙ্গের ছাতার মত গড়ে উঠেছে হাজার হাজার ‘ছুটির দিনের ইসলামী স্কুল আর মাদ্রাসা’। সেগুলোতে বাচ্চাগুলোর মাথায় এই আসল মতলবটা একটু একটু করে ঢুকিয়ে দেয়া হয়। বিশ্বাস হচ্ছে না? পড়ে দেখুন যে কোন জায়গার খবরের কাগজগুলো, টরন্টো স্টার-এর ২রা ডিসেম্বর, ২০০১ এর সংখ্যা। এই মতলবটা হল দুনিয়া জুড়ে শারিয়া আইন প্রতিষ্ঠা করা। তা করতে হলে দুনিয়া জুড়ে অন্য সবাইকে সমূলে উচ্ছেদ করে ইসলামী সরকার প্রতিষ্ঠা করা ছাড়া উপায় নেই।
কিভাবে সেটা সম্ভব?
হাতে প্রচুর অ্যাটম বোমা থাকলে কাজটা সহজ হত। কিন্তু সেটা যখন ‘শত্রুর’ হাতেই বেশী, তখন ভোটাভুটি-ই হল একমাত্র পথ। আর, ভোট মানেই হল জনসংখ্যা। মিলছে এবার হিসেবটা? আসলে এটাই হল জামাত-এ ইসলামী ধরনের রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান গুলোর একমাত্র উদ্দেশ্য। বুকে হাত দিয়ে বলুক কোন মওলানা আমার কথাটা ভুল।
বিবাহের জন্যে বেছে নিন সর্বোৎকৃষ্ট মাল—ইসলামী নিয়ম অনুযায়ী
জনসংখ্যার চাপে মানুষ মরে যাক না খেয়ে, তবু শারিয়া প্রতিষ্ঠা করতেই হবে। তাই জন্মনিয়ন্ত্রণ বে-ইসলামী, তাই জনসংখ্যা বাড়াতেই হবে। কথাটা কি আমার? মোটেই নয়, কথাটা সহিহ্ হাদিসের।
দেখুন।
সুনান আবু দাউদ, বই ১১ হাদিস ২০৪৫:
মাকিল ইবনে ইয়াসার বর্ণনা করেছেন, এক ব্যক্তি নবীকে (দঃ) বলল “একটা উচ্চ বংশের সুন্দরী মেয়ে আছে, কিন্তু সে বন্ধ্যা। আমি কি তাকে বিয়ে করতে পারি?” নবী (দঃ) বললেন,”না”। সে তাঁর কাছে আবার এল। নবী (দঃ) আবার তাকে নিষেধ করলেন। সে তৃতীয়বার তাঁর কাছে এলে নবী (দঃ) বললেন:”সেই মেয়েদের বিয়ে কর যারা প্রেমময়ী এবং উৎপাদনশীল। কারণ আমি তোমাদের দিয়ে সংখ্যায় অন্যদের পরাস্ত করব”।
এটাই হল আসল ব্যাপার। সবাই মিলে-মিশে শান্তিতে থাকার কথাটা ইসলামের শুধু মুখ-মিষ্টি বুলি, আসলে যত দিক দিয়ে সম্ভব অন্যদের “পরাস্ত” করাটাই দুনিয়াভর বহু মওলানাদের মাথায় সর্বদাই নড়াচড়া করছে।
আরও দেখুন।
এহিয়া উলুম আল দীন, ভলুম ১, পৃষ্ঠা ২২৮:
নবী (দঃ)বলেছেন, উর্বর এবং বাধ্য মেয়েদের বিয়ে কর। যদি সে অবিবাহিতা হয় এবং অন্যান্য অবস্থা জানা না থাকে, তবে তার স্বাস্থ্য এবং যৌবন খেয়াল করবে যাতে সে উর্বর হয়।
ইসলামে ‘নারী’ কথাটার মানে কি? উপরের হাদিসগুলো থেকে এটা পরিষ্কার যে তারা হচ্ছে বাচ্চা বানানোর যন্ত্র বা মাল মাত্র। সম্মান, অধিকার, মর্যাদা সমস্ত কিছুই ওই একটা না-বলা কথায় বন্দী।
এটাই স্পষ্ট হয়েছে ইমাম গাজ্জালীর বইতে, এহিয়া উলুম আল দীন, প্রথম খণ্ড, পৃষ্ঠা ২২৬- ২২৮-এ। দেখুন, কাকে বিয়ে করতে হবে সে ব্যাপারে কি রকম উদ্ভট পরামর্শ দেয়া আছে:
তাকে অসুন্দরী হলে চলবে না, হতে হবে সুন্দরী। তার স্বভাবটাও হতে হবে সুন্দর। এবং আরও:- নবী বলেছেন: সর্বশ্রেষ্ঠ স্ত্রী হল সে, যার দিকে তাকালে স্বামী তৃপ্ত হয়, স্বামীর যে বাধ্য, এবং স্বামীর অবর্তমানে যে নিজের এবং তার সম্পদ রক্ষা করে। যে সব মেয়েদের বিয়ে করা যাবে না তারা হল, বিবাহিতা, ধর্মত্যাগিনী, নাস্তিক, নারীবাদী, স্বাধীনচেতা, অগ্নিপূজক, মূর্তিপূজক, অশ্লীল যৌনাচারে অভিযুক্ত তা সে প্রমাণিত হোক বা না-ই হোক, এবং এ ছাড়া কোরানে যাদের নিষেধ করা হয়েছে আত্মীয়তার কারণে।
আরও শুনবেন?
ওই একই পৃষ্ঠায়:
নবী বলেছেন, সর্বশ্রেষ্ঠ নারী হল সে-ই, যার চেহারা সুন্দর আর বিয়েতে স্ত্রীধন কম। অর্থাৎ যে কিনা দামে সস্তা।
আরও শুনুন:
নবী বলেছেন, সর্বশ্রেষ্ঠ স্ত্রী হল সে, যার দিকে তাকালে স্বামী তৃপ্ত হয়, স্বামীর যে বাধ্য, এবং স্বামীর অবর্তমানে যে নিজের এবং তার সম্পদ রক্ষা করে।
বটেই তো, বটেই তো! সুন্দর মুখের তো জয় সর্বকালে সর্বত্র, এমনকি ইসলামেও। আশ্চর্য হই এই ভেবে যে মওলানা ইমামেরা কি একবারও ভেবে দেখেননি যে সুন্দরী মেয়েদের নিয়ে এভাবে কথা বললে অসুন্দরীদের অপমান করা হয়? অসুন্দর কিংবা কম সুন্দর মেয়েদের বানালো কে? চেহারার সৌন্দর্য কি এতই গুরুত্বপূর্ণ?
অসুন্দরী হওয়া কি ইসলামে পাপ? এসব কথা ধর্মের বইতে কেন সেটাও প্রশ্ন। তার চেয়ে বড় প্রশ্ন হল: দুনিয়ার সব পুরুষ কি উত্তমকুমার আর দেবানন্দ? তাহলে অসুন্দর পুরুষদের কি হবে?
সেটাও বলেছেন ইমাম গাজ্জালী, একই বইতে, পৃষ্ঠা ২৩৫:
আমি তাকে (এক মেয়েকে) জিজ্ঞাসা করলাম, এমন একটা লোককে (অসুন্দর লোককে) তুমি বিয়ে করলে কেন? সে বলল: ‘চুপ কর,বাজে কথা বোল না! স্রস্টার কাছে সে হয়ত সর্বশ্রেষ্ঠ, তাই তার জন্য আমি হয়ত স্রষ্টার পুরস্কার। আর আমি হয়ত স্রষ্টার কাছে, সর্বনিকৃষ্ট, তাই সে আমার জন্য স্রষ্টার শাস্তি’।
দেখুন, মেয়েদের কি রকম মাথা খাওয়া হয়েছে? এরই নাম ইসলামী ইমান! এখনও অনেক মেয়ে আছেন যাঁরা ইসলামে মেয়েদের অত্যাচারের সাংঘাতিক সমর্থক। ওটাই নাকি তাঁদের জন্য ভালো।
আশ্চর্য! আরও শুনবেন?
ঐ বই, ভলুম ১ পৃষ্ঠা ২২৯:
জাবের যখন এক পূর্ব-বিবাহিতাকে বিয়ে করল, তখন নবী (দঃ) বললেন: “কোন কুমারীকে বিয়ে করলে আরও ভালো হত কারণ তাহলে তোমরা পরস্পরের সাথে আরও উপভোগ করতে পারতে”।
ওটাই কথা, উপভোগ-ই হল ইসলামে নারীর সর্বপ্রধান পরিচয়। বিদ্যাসাগর মশাই এত যে চেষ্টা-চরিত্র করে বিধবা-বিয়ের আইন চালু করলেন, বিধবা হতভাগিনীগুলো তাদের ছিনিয়ে নেয়া মানবাধিকার ফিরে পেল, এই ইসলামী কথা শুনলে তিনি কি ভির্মিই খাবেন না?
চলবে (৪র্থ পর্বে)।
মুক্তমনা ব্লগের নাম শুনেছিলাম।আজ বেড়াতে এলাম।মনে আমার জিজ্ঞআসা ছিল,মুক্তমনা জিনিসটা আসলে কি জিনিস,মুক্তমনা নামে আসলেই পৃথিবীতে কিছু আছে কিনা।যার মন মুক্ত তিনি সব মত,সব পথ আর সব ধরনের মানুষের মতামত যুক্তি দিয়ে বিচার করেন।পক্ষ আর লোক নয়,যুক্তি আর বক্তব্যের সারবত্তাই যার কাছে মুল জিনিস..তিনিই হতে পারেন মুক্তমনা।তেমন কোন মানুষ কি আছে পৃথিবীতে?
আমরা প্রত্যেকেই কোন না কোন মতের অনুসারি।আমরা বিবাচনা করিও সে আলোকে।এই যে যিনি ধার্মইক তিনি ধর্মের কোন নেতিবাচক দিক দেখবেননা।আবার যিনি নাস্তিক তার কাছে ধর্মের কোন ভাল দিক থাকতেই পারেনা।যদি থেকেও থাকে,স্বঈকার করার মত সৎসাহস তিনি দেখাবেননা।তবে মুক্তমনাটা আসলে কে?
মুক্তমনা ব্লগে এসে দেখলাম সবগুলো লিখার ধরন ধারন একই রকম।নাস্তিকতা,বিবর্তনবাদ,ধর্মবিদ্বেষ..সবই এর সমর্থনে।ভিন্ন মতের কিছু চোখে পড়লোনা।হয়তো মডারেশন হয়।হয়তো ব্লগটিই এমন..এই সব মতের সাথে ভিন্ন মত পোষনকারীদের স্থান নেই এখানে।তবে প্রশ্ন হল নামের সাথে মুক্তমনা কেন?মুক্তমনা বলতে আসলে কি বোঝায়?
@সামছুর রহমান,
অথিতি, আমাদের বাড়িতে আপনাকে স্বগতম। এখানে বিজ্ঞান, সাহিত্য, ধর্ম, রাজনীতি সবই আছে, কিছুটা দিন ঘুরে ফিরে বাড়িটা ভাল করে দেখুন। এটা আপনার আমার সকলের মত প্রকাশের উপযুক্ত স্থান।
@সামছুর রহমান,
ভিন্ন মতের কিছু লেখা এখানে না দেখার কারন যারা ভিন্ন মত প্রদান করেন তাদের লেখায় যুক্তির চেয়ে অন্ধ বিশ্বাস ও আবেগের কথা বেশী থাকে। এ সাইট সে বিষয়টাকে সমর্থন করে না। আপনি বিভিন্ন বিষয়ের ওপর লেখা মন্তব্য পাল্টা মন্তব্য পড়ে দেখতে পারেন। দেখবেন যারা মুক্তমনা বিরোধী তাদের লেখায় ন্যুনতম কোন যুক্তি নেই। ধর্মবিদ্বেষ কাকে বলছেন বুঝলাম না। মিথ্যা কে টেনে বের করে দিনের আলোতে আনাকে যদি ধর্মবিদ্বেষ মনে করেন তাহলে ভিন্ন কথা। পরিশেষে, যে ধর্ম সমালোচনা সহ্য করতে পারে না সে ধর্ম দুনিয়াতে টিকে থাকতে পারে না।
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায়।
আমি আরো ভয় পাই যেখানে মুখ খুলে কিছু বলা যায় না। কারা যে কি। কার মনে কি আছে বোঝা একদম দুঃসাধ্য। ক’দিন পর পরেই পত্রিকায় উঠছে দোররা মারার মত ঘটনা। পেপারে লেখা লেখি কদিন চলে। আবার যেই তিমির সেই তিমিরেই চলতে থাকে।
অধিকাংশ উচ্চশিক্ষিত কট্টর মৌলবাদি। এদের সংখ্যা এতো বেশি যে গুনে শেষ হবে না। আরো একটা উল্যেখযোগ্য বিষয় হচ্ছে। বিদেশ থেকে মৌলবাদী বাঙ্গালিরা প্রচুর টাকা পাঠাচ্ছে। এখানে ব্যাঙ্গের ছাতার মত মাদ্রাসা গড়ে উঠছে। জনগন ভাবে আহা ধর্ম চর্চা হচ্ছে। আসলে সেখানে রীতিমত
অস্ত্র বা বোমা বানানোর প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। এতে চমকানোর কিছু নেই। রোজ পত্রিকায় চোখ পড়লেই এমন খবর পাচ্ছি। বেশি কষ্ট করে খবর সংগ্রহ করতে হয়না।
আজও প্রথম আলোতে দেখলাম এক বালিকা গন ধর্ষনের শিকার হয়েছে। সে আত্মহত্যা করেছে।
রোজ -রোজ এই সমস্ত ঘটনা ঘটছে। হায় বালিকা ধর্ষণের শিকার হয়েছে তাই আত্মহত্যা করলো নাকী
ভবিষ্যতে দোররা মারার ভয়ে আত্মহত্যা করলো কে জানে।
অধিকাংশ মেয়েদের বৃত্ত পুরুষদের চোখে প্রিয় হয়ে ওঠা নিয়ে এতটা দগ্ধ (অবসেসড)-অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তারা ধর্মের লিঙ্গ বৈষম্যমূলক অবিচার দেখেও দেখে না।
এর মূল কারন অশিক্ষা না। সব থেকে বড় কারন, অধিকাংশ মেয়ে মনে করে পুরুষের চোখে প্রিয় হতে গেলে-বিদ্রোহী হওয়ার চেয়ে বিরহিণী হওয়া শ্রেয়। অধিকাংশ পুরুষ ফেমিনিস্ট মেয়েদের পছন্দ করে না-এটাও ঘটনা। ফলে সামাজিক প্রথাগুলোকে মেনে নিয়ে পুরুষপ্রিয় হওয়ার একটা প্রবণতা হিন্দু মুসলিম সব ধরনের মেয়েদের মধ্যেই আমি দেখতে পাচ্ছি। শুধু মোল্লাদের দোষ দিয়ে লাভ নেই।
পুরুষকে আকর্ষন করার দুর্বার বিবর্তনীয় ইচ্ছার লম্বা হাত এর পেছনে অনেকটাই দায়ী। তাই মেয়েদের দুর্গতির জন্যে মেয়েরা নিজেরাই সব থেকে বেশী অপরাধী।
( আমার এই তত্ত্বের পেছনে কোন গবেষণা নেই। নিজের পর্যবেক্ষণ থেকেই লিখলাম। সহমত বা ভিন্নমত হওয়া নিজের ইচ্ছা।)
@বিপ্লব পাল,
আপনার বক্তব্যের সাথে আমি সহমত। (Y)
বিস্তারিত বলার প্রয়োজন দেখছিনা।
@বিপ্লব পাল,
আপনার পর্যবেক্ষণের ফলাফলের সাথে একমত নই। আপনি বলেছেন-
এরা পাঁখা গজানো পিপিলীকা, আগুনে পুড়ে মরার বাসনার জিন তাদের ভিতরে! এই তো কথা?
‘পুরুষকে আকর্ষন করার দুর্বার বিবর্তনীয় ইচ্ছার লম্বা হাত’ এটা মুহাম্মদের হাদিস না সত্যিই জীববিজ্ঞান?
নাউজুবিল্লাহ! সত্যিই তো মুহাম্মদ দেখেছিলেন- ‘দোজখের বেশীর ভাগ বাসিন্দাই নারী’?
@বিপ্লব পাল,
যেহেতু আপনি নিজের মত জানিয়েছেন তাই তেমন কিছু লিখার নাই।
মনে হচ্ছে নবীজির কথাই সত্যি। উনিও বলেছিলেন মেয়েদের খারাপ অবস্থা তাদেরই জন্যেই। অর্থাৎ তাদের দুর্গতির জন্য তারা নিজেরাই দায়ী। এ ব্যাপারে একটা হাদিস ও আছে।
যেহেতু আপনি মোটামুটি ঐ হাদিসের কথাটাই বলেছেন–তাই হাদিসের উদ্ধৃতি দেবার প্রয়োজন মনে করছি না।
@আবুল কাশেম,
নবীজিকে এত আন্ডার এস্টিমেট করেন কেন বলুন ত? ইতিহাসে উনার প্রভাব অস্বীকার করা যায় কি? সুতরাং ইতিহাসের পরিপেক্ষিতে উনি যে নতুন সামাজিক শক্তি আনলেন, সেই ধারাটাও বু্ঝতে হবে। তবেই বো্ঝা যাবে ঐ ধরনের সামাজিক শক্তি এখন সন্ত্রাসবাদি বা শোষক শ্রেনী তৈরী করবে। উনার সাফল্য গুলো না বুঝলে ইসলাম বর্তমানে ব্যার্থ কেন, তার বিশ্লেষন কোনদিনই করতে পারবেন না।
@বিপ্লব পাল,
না নবীজিকে আমরা আন্ডার এস্টিমেট করছি না। তাই করলে এই রচনা লিখার দরকার ছিল না।
হাঁ, আপনার সাথে এক মত। কিন্তু উনার শক্তি যে দুষ্কর্মের শক্তি। আমরা যে তার বিরুদ্ধেই সং`গ্রাম করছি।
আপনি অন্য এক জায়গায় মন্তব্য করেছিলেনঃ
আপনার কথা সম্পূর্ণ সত্যি। মোল্লারা কোরান, সুন্না, এবং নবীজিকে মেনে চলেছে শতকরা একশত ভাগ। আমরা মোল্লাদের দোষ দিচ্ছিনা। আ্মরা দোষ দিচ্ছি ইসলামকে।
আজ এন টিভির সংবাদে দেখলাম দেশের বিখ্যাত(কুখ্যাত?) মোল্লারা সবাই সম্মেলন করে হুমকি দিয়েছে যে ফতোয়া নিষিদ্ধ করা হলে দেশে আগুন জ্বলবে। দোররা মারা বন্ধ করলে নাকি দেশে অপরাধ বেড়ে যাবে।তাই জনসমক্ষে একটি মেয়েকে চাবুক মেরে হত্যা করে পৃথিবীতে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য ইসলাম এহেন শান্তিপূর্ণ শাস্তির ব্যবস্থা করেছে।ভালবাসার অপরাধে একটি জলজ্যান্ত মেয়েকে প্রকাশ্যে পিটিয়ে হত্যা করার জঘন্য প্রথা নিষিদ্ধ করলে দেশে আগুন জ্বলবে! এ বিষয়ে কিছু লেখা যায় কি?
@তামান্না ঝুমু,
যারা এই সব বলেছে তাদের ১০১ দোররা মেরে শাস্তি দেয়া হোক।
@আফরোজা আলম,
এ পৃথিবীকে বাসযোগ্য করার জন্য তাদেরকে অন্য কোন গ্রহ নক্ষত্রে হিযরত করানো তাৎক্ষণিক ভাবে একান্ত প্রয়োজন ।
@তামান্না ঝুমু,
সেকী মোটেই না :-O
সেখানকার পবিত্র যায়গাও নরক গুলজার করে দেবে। ওদের ধ্বংস করে দেয়া উচিত। এদের বিরুদ্ধে সবার সচেতন থাকা উচিত। যেমন ট্রাকের পেছনে লেখা থাকে দেখেননি?
১০০ হাত দূরে থাকুন
ঠিক তেমনই। এইরা সর্প থেকে ভয়ংকর।
@আফরোজা আলম, আপনি যত দূরে যাবেন, এরা তত কাছে আসবেই। তখন কী করবেন? 🙂
@তামান্না ঝুমু,
দুঃখের বিষয় হচ্ছে যখন আমি এই মুক্তমনার এক পস্টে লিখলাম যে বাংলাদেশ এখনও মৌলবাদীদের দাপট তখন বলা হল, আমি বাংলাদেশকে মৌলবাদী বলে ঠিক বলিনি। এখন নাকি বাংলদেশের নতুন প্রজন্ম মৌলবাদীদের থেকে অনেক দূরে। সবাই নাকি যুক্তি, বিজ্ঞান এবং বিবর্তন নিয়ে প্রচুর আলোচনা করছে। কিন্তু আপনার এই মন্তব্যে কি দেখছি? মৌলবাদীদের এই দাপটের বিরুদ্ধে কেউ কোন টুঁ শব্দটি করছে না।
এই সব মৌলবাদীরা ক্ষমতায় আসলে আমাদের নারীদের কি অবস্থা হবে?
@আবুল কাশেম,
বর্তমান তরুণ প্রজন্মের কেউ কেউ আছে যুক্তিবাদী,বিজ্ঞানমনষ্ক ।কিন্তু বিজ্ঞানের অনেক মেধাবী ছাত্র-ছাত্রী আছে কট্টর মৌলবাদী।তারা বিজ্ঞান পড়ে এবং দেশ-বিদেশের সর্বোচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হয়েও বিজ্ঞান ও মানবতার বিপক্ষে দৃঢ় অবস্থানে অবস্থিত।চট্টগ্রাম কলেজ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ সহ দেশের আরো অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিবিরের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। দেশের অত্যন্ত মেধাবী ছেলে মেয়েরাই সেখানে শিক্ষারত আছে। প্রতি বছর মহা সমারহে এবং সরকারের একনিষ্ঠ পৃষ্ঠপোষকতায় অনুষ্ঠিত হয় বিশ্ব ইজতেমা। সারা দেশ থেকে প্রতি বছর হাজার হাজার তরুণ ,তাদের চুল টুপিতে ঢেকে ; লাবন্যময় মুখশ্রী খানি দাড়িতে ঢেকে চলে যাচ্ছে তাবলিগে।আমার পরিচিত অনেকেই আছে যারা
অত্যন্ত উচ্চশিক্ষিত,যাদের কেউ কেউ গৃহত্যাগী তাবলিগী, কেউ কেউ
শিবিরের নেতা।তাদের দেখে অপেক্ষাকৃত কম মেধাবী ও কম শিক্ষিত
মানুষের অনুপ্রাণীত হওয়া ও তাদের পদাঙ্ক অনুসরণ করা অযৌক্তিক নয়।
@তামান্না ঝুমু,
যখন সরকারী পৃষ্ঠপোষকতায়, এমনকি তথাকথিত ধর্মনিরপেক্ষ দল বলে চালিতদের দ্বারা, মৌলবাদীদের লালন পালন করা হচ্ছে, তখন বাংলাদেশকে আমরা কি বলতে পারি? আমি বিদেশের সংবাদে জানছি বাংলাদেশ মৌলবাদীদের এবং ইসলামী সন্ত্রাশিদের এক বিশাল কারখানা। এই সম্পর্কে অনেক প্রবন্ধ আছে—সহজেই যেটা মনে পড়ে গেল সেটা হচ্ছে Bangladesh–a Cocoon of Terror.
আপনি সহজেই যে এই সমস্যাটাকে ধরতে পেরেছেন–সেজন্য আপনাকে প্রশংসা জানাচ্ছি। যতদিন আমাদের সরকার এই ইসলামী মৌলবাদীদের পৃষ্ঠপোষকতা করবে তত দিন আমাদের নারীদের কোন মুক্তি হবে না। তারা দিনে দিনে আরও দৃঢ়ভাবে ইসলামীর বেড়াজালে আটকা পড়ে যাবে।
আরও একটা ব্যাপার। বাংলাদেশে ত এখনও শারীয়া আইন চলছে। বিশ্বাস না হলে দেখুন মুসলিম ল, পারিবারিক আইন…ইত্যাদি। আপনি আমার রচনায় যেই সব শারিয়া আইনের উদ্ধৃতি পাবেন দেখবেন বাংলাদেশেও অনেক ক্ষেত্রে সেই সব আইন আছে। শুধু তফাৎ হচ্ছে বাংলাদেশের বেশীরভাগ জনগণ তা অবহিত নয়–বা জানলেও মনে করে এই সব আইন কোনদিন কার্য্যকরী করা হয় না।
সত্যিই হাসব না কাঁদবা বুঝতে পারি না। আমাদের দেশের লোকেরা সত্যিই বোকার স্বর্গে বাস করে–আর আমরা বিশ্বকে দেখায় এক ধর্ম নিরপেক্ষ, ইসলামী মোডারেট দেশ হিসেবে। দেশে নাকি তেমন মৌলবাদী নেই।
কি অবাক ব্যাপার!
@আবুল কাশেমঃ তাহলে দেখা যাচ্ছে রাষ্ট্র ব্যবস্থা থেকে ধর্মকে পুরোপুরি পৃথক করা ছাড়া উপায় নাই। কিন্তু করবে কে! :-X
বিষয়টি জানতাম। আর ভাবতাম সত্যিই তো ইসলাম নারীর অর্থনৈতিক অধিকার ভালোমতই দিয়েছে। কিন্তু এর অন্তরালে কত খেলা যে রয়েছে আপনার লেখাটি না পড়লে অতটা পরিস্কার হতো না।
আপনাকে ধন্যবাদ সুন্দরভাবে বুঝিয়ে দেবার জন্য। চতুর্থ পর্ব পড়ার অপেক্ষায় রইলাম।
@মাহফুজ,
ব্যাপারটা যে বুঝতে পেরেছেন তার জন্যে ধন্যবাদ।
আমার নিজের পরিবারেই আমি প্রমাণ দেখছি। সন্তানের জন্য মা কী না করতে পারে—পারে ত নিজের সর্বস্ব দিয়ে দিতে –এমন কি নিজের জীবন–আর টাকা পয়সা ত কোন ছার!
ধর্ম যত দিন বেঁচে থাকবে ততোদিন নারী পুরুষে আকাশ পাতাল পার্থক্য সহ অন্যান্য সব ধর্মীয় বর্বরতাগুলো সহিসালামতে ,বহাল তবিয়তে চলতে থাকবে ইনশাল্লাহ্।
(Y)
এই ব্যাপারগুলো অধিকাংশ মেয়েদের মাথায় ঢোকেনা। খুব খারাপ লাগে তখন। কখনো কখনো তারা রাগান্বিত হয় নিজেদের প্রপ্তি সবরকম বৈষম্য দেখে, তবু শেষ পর্যন্ত মেনে নেয় এই চিন্তায়
“আমাকেই ছাড় দিতে হবে, কারণ আমি মেয়ে।”
তাদের এই মানসিক দাসত্ব ও আত্মনিগ্রহের মনোভাব কিভাবে জন্মালো জানতে ইচ্ছে করে।
এ ব্যাপারে নিশ্চিত হয়ে কিছু ধারণা দেয়া যেত যদি ইসলাম আসার আগে আরবের সমাজের, সংস্কৃতির, বিশেষত মেয়েদের অবস্থা কেমন ছিল তা জানা বেশি জরুরি মনে হচ্ছে। এমন কিছু বইয়ের নাম দিতে পারেন যখন ইসলামপূর্ব আরবের ইতিহাস সম্পর্কে নিরপেক্ষ ও গ্রহনযোগ্য বর্ণনা আছে?
@লীনা রহমান,
আমি দু’টি বই দেখতে বলব—
Hitti, Philip K. History of the Arabs, revised 10th edition. First published in 1937, PALGRAVE MACMILLAN, Houndmills, Basingstoke RG21 6X5, UK, 2002.
Ibn Ishaq, Muhammad b. Yasr. Sirat Rasul Allah. Translated in English by A. Guillaume. First published by Oxford University Press, London in 1955. Fifteenth reprint by Oxford University Press, Karachi, Pakistan, 2001.
এই বইগুলো পড়লে পরিষ্কার বুঝা যাবে যে প্রাগ-ইসলামী যুগে আরবের মেয়েদের চলাফেরা, পোষাক-আশাক, ব্যবসা-বানিজ্য, চাকুরী এবং যৌনতার ব্যাপারে অনেক স্বাধীনতা ছিল। এমনকি মেয়েরা চাইলে একের অধিক স্বামী গ্রহণ করতে পারত। প্রাচীন আরবের সমাজ ছিল মাতৃতান্ত্রিক—অর্থাৎ শিশুদের পরিচয় হত মায়ের দ্বারা। তাই এক মেয়ের জন্যে বহু পুরুষগামী হওয়া খুব স্বভাবিক ছিল। এই মাত্রিতান্তৃকতার প্রভাব এখনও দেখা যায় ইহুদিদের মাঝে। মাতা ইহুদি হলে সন্তান ইহুদি হবে—এটাই হচ্ছে নিয়ম।
প্রাক ইসলামী আরবে বেশ কয়েক সম্রাজ্ঞী শাসন করে গেছে। এই সব তথ্য বিশ্বাস করতে আজকে অনেকের অসুবিধা হবে–কারণ ইসলাম এসে আরবের নারীদের সকল স্বাধীনতা, মর্যাদা এবং সম্মান লুটে নিয়া তাদেরকে দাসী বানিয়ে রেখেছে।
@আবুল কাশেম, হিট্টির বইটার বাংলা অনুবাদ কিনলাম গতকাল। এখনো পড়া হয়নি। শিবনারায়ণ চক্রবর্তীর “রঁনেসাস সম্পর্কিত প্রস্তাবনা” নামে একটি ছোট পুস্তিকা পড়িয়েছিল বিশ্বসাহিত্যকেন্দ্রে, ওখানে এই বইয়ের রেফারেন্স ছিল। আর পরেরটা খোজ করব। দেখি পাই কিনা। ধন্যবাদ
@লীনা রহমান,
হাঁ, বাংলা অনুবাদে চলবে।
অনুবাদের শীরোনাম কি ‘আরব জাতির ইতিহাস’?
@আবুল কাশেম, নাম “আরব জাতির ইতিকথা”
অনুবাদঃ প্রিন্সিপাল ইব্রাহিম খা। ওটা সম্ভবত সমহক্ষিপ্ত অনুবাদ তাই আমি পরীক্ষার পর ইংরেজীটা খুজে দেখব।
@লীনা রহমান,
আপনার উচিৎ হবে মুল বইটি (ইংরাজি) পড়া।
যেহেতু বাংলা অনুবাদক ইব্রাহিম খাঁ এবং সংক্ষিপ্ত তাই আমার সন্দেহ হচ্ছে যে অপ্রীতিকর অংশ গুলো বাদ থাকবে।
ামি যততূকু জানি অধ্যাপক হিত্তির এই বইটা পাকিস্তানে নিষিদ্ধ হয়ে আছে অনেক দিন যাবৎ। হয়ত অন্য মুসলিম দেশগুলোতেও নিষিদ্ধ থাকতে পারে। বাংলাদেশে নিষিদ্ধ কি না আমি জানিনা।
কোন ভারতীয় যদি এই বইটা বাংলায় অনুবাদ করে থাকেন–তবে আমার মনে হয় সেই অনুবাদ অনেক বিশ্বাসযোগ্য হবে। সম্ভব হলে আপনি এই বইটার মূল ইংরাজি টা ভারতে কিন`তে পারবেন।
১ম পর্বে আলী দস্তির ‘২৩ বছর’ (Twenty three years – By Ali Dashti) বইটির প্রসঙ্গ এসেছিল। অনলাইনে ঐ বইটি ফ্রি পাওয়া যাবে এই ঠিকানায়ঃ
http://ali-dashti-23-years.tripod.com/
@লীনা রহমান,
আরে লীনা, তুমি এই সব কি কইলা যদি মাইয়ারা বুজতো তাইলে সেই যে তুমি লিখসিলা না
দজ্জাল
এই গুলি কারা বিক্রি করছিল খেয়াল করেছ?
@আফরোজা আলম, এদেশের বেশির ভাগ সাধারণ মানুষই ধর্মের খুব একটা ধার ধারেনা, খালি পৈত্রিক ধর্মের আন্ডারে নিজের পরিচয় দিতে পারলেই স্বস্তি পায়। ওদের দাজ্জাল বিক্রির পেছনে টাকা আর তাদের বেকারত্ব মূখ্য ফ্যাক্টর। ওরা বেশির ভাগই ছাত্র ছাত্রী (তাও খুব ভাল প্রতিষ্ঠানের নয়), বেকার বা স্বল্প আয়ের লোক যারা একটু বাড়তি আয়ের জন্য বইমেলার সিজনে কাজটা করে। আর দাজ্জালের প্রতি জুজুর ভয়টা বা এটা প্রচারের দায়িত্ববোধটা এখানে খুবই গৌণ।
(Y)
আপনার কথা কিছুটা সত্যি। তবে আমরা যদি ইসলাম নিয়ে নাড়াচাড়া না করি এবং তাদের চক্ষে আংগুল দিয়ে না দেখায় তবে আবস্থা আরও খারাব হবে।
এটাই আমার ধারণা।
@আবুল কাশেম, হ্যাঁ, একদিন আমাদেরই পূর্বপুরুষেরা তাদের হাতে-পায়ে বেড়ি বেঁধে দিয়েছিল। এখন তা ভাঙার দায় আমাদের উপরই বর্তায় বেশী।
কিন্তু নিজে কিছুটা চেষ্টা দেখেছি- ঐ বাঁধ ভাঙতে গিয়ে পুরুষদের ধৈর্য্যের বাঁধটাই আগে ভেঙে যায়। এদিকটাও খেয়াল রাখতে হবে।
@শ্রাবণ আকাশ,
হামদুলিল্লাহ। সমস্যাটা বুঝতে পেরেছেন। তা নারী বিদ্রোহ কাবে নাগাদ আশা করা যায় বলেন তো। :))
@কাজী রহমান, নিচে তামান্না ঝুমুর #৫ মন্তব্যটা দেখেন। তিনি অনেকটা সুন্দর করে বলে দিয়েছেন।
নারী বিদ্রোহে মনে হচ্ছে নারীর চেয়ে পুরুষেরই ভূমিকা প্রধান হতে হবে। আর প্রাথমিক ধকলটাও পুরুষদের উপর দিয়েই যাবে। প্রশ্ন হচ্ছে এটা তারা মেনে নেয়ার জন্য কতটা প্রস্তুত। ধরুন আমি বিয়ে করলাম। স্ত্রীকে পুরো স্বাধীনতা দিয়ে বাইরে ছেড়ে দিয়ে বললাম- চরে খাও।
এখানে পুরো রিস্কটা কিন্তু আমার। সে তার শিক্ষা-দীক্ষা, বুদ্ধি-বিবেচনা দিয়ে বাহিরটাকে জয় করে ঠিকই ঘরে ফিরে আসতে পারে। আবার বাহিরের পিচ্ছিল পথে হোঁচট খেয়ে নিজের গায়ে কাঁদা মেখে সব খোয়াটেও পারে।
যদি ২য় টা হয় তবে কিন্তু সে বুঝবে না যে সে কি হারালো। (শিক্ষা-দীক্ষা, বুদ্ধি-বিবেচনার অভাব?) এখন কথা হলো- আমি কি এটা মেনে নিতে পারবো? (গৃহদাহের কথা মনে পড়ছে। মুভিটা না, উপন্যাসটা।)
আমার মনে হয় পুরুষ এই জিনিসটা মেনে নিতে পারে নি বলেই ঐ রিস্ক আর নিতে চায় নি। তাই সমাজ-ব্যবস্থা দিন দিন যতই পুরুষতান্ত্রিক হয়েছে, তারা নানা ফন্দি-ফিকির করে মেয়েদেরকে বন্দী করে রাখার পথটাকে শ্রেয় মনে করেছে।
আবার যে সমাজে নারীর পুরো স্বাধীনতা আছে, সেখানে দেখলে কিন্তু দেখা যায় পরস্পরের উপর পূর্ণ বিশ্বাস শ্রদ্ধা ভালোবাসা দিয়েই সম্পর্কগুলো স্থাপিত। ভাঙে যে না, তা নয়। খুঁজলে পুরুষেরও দোষ থাকে। কিন্তু আমাদের সমাজে পুরুষ সবসময় ধোঁয়া তুলসীপাতা হয়ে থাকে বলে পুরো চাপটা মেয়েদের উপর গিয়ে পড়ে। সেটাই বেশী হাইলাইট হয়।
@শ্রাবণ আকাশ,
তার মানে ধর্ম পটল না তোলা পর্যন্ত এমনিই চলতে থাকবে? তাহলে এখন যারা, নারী পুরুষ নির্বিশেষে কোন ধর্ম মানে না তাদের বেলা কি হবে? :-s
@কাজী রহমান,
ধর্ম পটল তুলবে- এরকম ভাবাটা কিন্তু এক ধরনের বিলাসিতা ছাড়া আর কিছুই নয়। বাস্তবতা কিন্তু আসলেই ভিন্ন। আর যদি তুলেও তবে সেটা কবে নাগাদ- কেউ জানি না।
নারী পুরুষ নির্বিশেষে কোন ধর্ম না মানলে সেটা কোথায়? এক ফ্যামিলিতে এক জন না মানলে তো হলো না। দুইজনেই যদি না মানে তাহলে একটা ব্যাপার বটে। কিন্তু তারপরও সমাজে মিশতে গেলে এটা সবাইকে বলে বেড়ালে কিন্তু ঝামেলা বেশীই। তাই ধর্ম মানিনা- ভিতরে ভিতরে হয়তো ঠিক আছে, তবু বাইরে বের হলে ঐ পূজা-নামায-রোজার সরাসরি বিরোধিতা করতে গেলে সমাজচ্যুত হওয়ার সম্ভাবনাই বেশী। বিশেষ করে আমাদের সমাজে।
তাই মজার ব্যাপার হলো- এক ধরনের সুবিধাবাদী হিসাবেই ঐ সমাজে বেঁচে থাকতে হচ্ছে।
আবার বাইরের সমাজে যেখানে এসব ব্যাপারে কেউ মাথায় ঘামায় না- সেখানে ব্যাপারটা সোজা।
আমি বলতে চাইছি যে ব্যাপারটা সবার আগে নিজেদের উপর প্রয়োগ করতে হবে। ঐ যে স্বামী-স্ত্রীর যে ব্যাপারটা বললাম। পুরুষ কেউ যদি নিজেকে মুক্তমনা বলে মনে করে তাহলে ঐ রিস্ক নিতেই হবে। আবার নারীদেরও শিক্ষা-দীক্ষার ব্যাপারটা দেখতে হবে। আর প্রতিটা সম্পর্কেই কিছু অলিখিত চুক্তি থাকে- সেটাও সবার মাথায় রাখতে হবে।
সো ধর্ম মানি আর নাই মানি, এর প্রভাব সমাজে কিছু না কিছু থাকবেই। পুরোটা এড়িয়ে যাবো বলে মনে করলে সেটা হবে অবাস্তব। তবে আমাদের জ্ঞান-বুদ্ধিতে ধর্মের যেটা খারাপ দিক সেটা এড়িয়ে যেতে না পারলে জ্ঞান-বুদ্ধির সার্থকতাও থাকে না।
@শ্রাবণ আকাশ,
আমি যা বলেছি তা ঐ যে পাঁচ নম্বর মন্তব্য দেখে, যা দেখতে বললেন। তবে হ্যাঁ, বাস্তবতা অর্থাৎ বাস্তবে মুক্ত হওয়া অতি জটিল ব্যাপার কোন সন্দেহ নেই। আমিও আপনার মতই বলতে চাই, প্রথমে নিজেকে, তারপর খুব কাছের মানুষদের এবং তারপর অন্যদের মুক্ত চিন্তার পথে যেতে উৎসাহিত করতে হবে। লক্ষ্য ঠিক থাকলেই হোল, পদ্ধতি কি হবে তা প্রয়োগকারীদেরই নির্ণয় করে নিতে হবে।
@শ্রাবণ আকাশ,
এই কথাগুলো একজন পুরুষের ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা যায়। আর সে ক্ষেত্রে পুরুষের স্বাধীনভাবে ‘চরে খাওয়ার’ জন্য পুরো রিস্কটা কিন্তু স্ত্রীকেই নিতে হচ্ছে। পুরুষ মানুষটিও পিচ্ছিল পথে হোঁচট খেয়ে সব হারাতে পারে। কথা হলো এই ধরনের বক্তব্য আমাদের সমাজে সর্বদাই একজন মেয়ে মানুষের ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা হয়, উল্টোটা যে হতে পারে তা আমরা চিন্তাই করতে পারিনা, কারন সমাজে পুরুষ মানুষ সবসময়ই আলোচনার উর্ধে, যেন সমস্ত সমস্যার মুলে মেয়ে মানুষ।
তা হলে মেয়ে মানুষের ক্ষেত্রে বলতে হয় যে মেয়েরা ‘এই জিনিসটা’ মেনে নিতে বাধ্য বলে ‘ঐ রিস্ক’ নিতে তাদের কোন অসুবিধা হওয়ার কথা নয়, অথবা বলা যায় মেয়েরা চাক বা না চাক ‘ঐ রিস্ক’ নিতে তারা বাধ্য।
আসলে সমাজে মেয়েদেরকে যদি সেপারেট এন্টিটি হিসাবে গন্য করা হতো তাহলে এইসব ফেক্টরগুলোর কোন অস্তিত্বই থাকতোনা।
@ব্রাইট স্মাইল্, কী আর বলব! তবে দেখুন এই বাধ্যবাধকতা কিন্তু উন্নত বিশ্বে দেখা যায় না। সেখানে মেয়েরাও পুরুষদের বুকে লাথি মেরে সম্পত্তি পুরো অর্ধেক বগলদাবা করে “হ্যাভ এ নাইস ডে” বলে দিতে পারে।
আবার অনেক সময় ছেলেরা-মেয়েরা উভয়েই ব্যাপারটা “একটা ভুল” হিসাবে ধরে মেনে নিয়ে আবার নতুন করে একই সাথে পথ চলে। ক্ষমা করলে হারিয়ে যাওয়া মানুষটি অনেকগুণ বেশী হয়ে ফিরে আসে।
আবারো “গৃহদাহ”র কথা মনে পড়ছে। শরৎচন্দ্র হয়তো তখনকার সমাজের কথা ভেবে এটা দেখাতে পারেন নি কিন্তু প্রায় অর্ধ শতাব্দী পরে যখন এটা নিয়ে মুভি হয়েছে তখন পরিচালক ব্যাপারটা মেনে অন্য ভাবে শেষ করেছেন। আর তারও প্রায় ৫০ বছর পরে এসে আমরা যদি আবার ১০০ বছর আগে ফিরে যাই তাহলে নিজেদের আধুনিক হিসাবে দাবী করার কোনো অধিকারই আমাদের থাকতে পারে না।
তাই মনে হয় দায়টা পুরুষদের উপরই বেশী। অভ্যাস ছিল না কিন্তু সামনে আগাতে হলে ভালো অভ্যাস তিতা লাগলেও তৈরী করে নেয়া জরুরী। হয়তো এক জেনারেশনে হবে না- কিন্তু এক এক করে হবে বলে বিশ্বাস।
@শ্রাবণ আকাশ,
পুরুষদের ধৈর্য্যের বাঁধ ভাঙ্গলে নারীদের কি অবস্থা হবে বুঝতেই পারছেন। ইসলাম নারীদের সমস্ত শক্তি, ক্ষমতা, দাপট ও সম্মান কে হরণ করে নিয়েছে। তাই তারা এতই দুর্বল যে হাত টুকু উঠাবার শক্তি নাই। তাই পুরুষদের এগিয়ে আসতে হবে আমাদের নারীদের এই ইসলামী দসত্ব থেকে মুক্তি দেবার জন্যে।
এছাড়া আমি আর কোন বিকল্প দেখি না। তাই পুরুষের ধৈর্য্যের বাঁধ ভাঙ্গা মানেই নারীদের বিপর্যয় ডেকে আনা।
১ম টা পড়া হয়ছিল। ২য় টা বাদ পড়ে গিয়েছিল। সেটা শেষ করে এখন এটা শেষ করলাম।
অন্য সময় হলে হয়তো নোটগুলো তুলে রাখতাম ছাগুদের বিভিন্ন পোস্ট চুলকানীরূপে প্রেরণ করার জন্য। কিন্তু আজ কেন জানিনা- মনটা চুপসে রইল আগাগোড়া।
এত সহজ সরল ভাষায় বর্ণনা করা আছে- তারপরও যারা “ইসলাম নারীকে দিয়েছে সর্বোচ্চ আসন” জাতীয় বুলি ছাড়ে- তারা কী আসলে কোন ধাতুতে গড়া- সেটাই ভাবছিলাম। আর মেয়েরাও যে কেন এসব দেখেও দেখে না!
আসলে আমরা যতই এসব নিয়ে হইচই করি না কেন- মেয়েরা নিজেদের থেকে যদি জাগতে না শেখে- কেউ তাদের শেখাতে পারবে বলে মনে হয় না।
@শ্রাবণ আকাশ, কিছু মেয়ে আসলেই দেখে না, আর কিছু মেয়ে দেখলেও চুপ থাকে জানোয়ারটার( ইসলাম) ভয়ে,কারন জানোয়ার তা যে ভীষণ হিংস্র।