গ্রান্ড ডিজাইন বইটির প্রথম পাতায়, হকিং দর্শন শাস্ত্রকে মৃত ঘোষনা করে, লেখা শুরু করেছেন। কারন হিসাবে উনি বলেছেন দার্শনিকরা বিজ্ঞানের নব আবিস্কার এবং তত্ত্বের সাথে আর পাল্লা দিতে পারছেন না। পরে বিশ্ববিখ্যাত কিছু দার্শনিক গালাগাল দেওয়া শুরু করলে, উনি বোধ হয় একটি বিবৃতি দেন উনাকে ভুল ব্যাখ্যা করা হয়েছে। উনি বলতে চেয়েছিলেন, দর্শন শাস্ত্রে বিজ্ঞানের আরো ব্যাপক প্রয়োগ হওয়া উচিত। যদিও কোথায় উনি এটা বলেছেন, সেটা গুগল করে পেলাম না।
যাই হোক কেও দর্শন শাস্ত্রকে মৃত ঘোষনা করলে, দর্শনের ইতিহাস নিয়ে অবগত যে কেও হেঁসে ফেলবেন। কারন দর্শনকে মৃত ঘোষনা করার ইতিহাস ৩০০০ বছরের পুরানো এবং ধারাবাহিক। তাই দর্শন শাস্ত্রের অধ্যাপক পল থ্যাগাড, হকিং এর উক্তি শুনে প্রথমেই মন্তব্য করেন ঃ
But those who ignore philosophy are condemned to repeat it. And those who disparage philosophy are usually slaves of some defunct philosopher.
দর্শনকে মৃত ঘোষনা করার ইতিহাস এত দীর্ঘ ( যা গ্রীকদের আমল থেকে শুরু হয়েছে) -যে “দর্শন মৃত” সেটাও দর্শনের একটি বিশেষ শাখা হওয়ার যোগ্যতা রাখে বলে বিট্রান্ড রাশেল মন্তব্য করেছিলেন। “দর্শন মৃত” র ইতিহাস নিয়ে লেখার ইচ্ছা আমার নেই -যারা “দর্শনকে মেরে ফেলার” এই তিন হাজার বছরের দীর্ঘ ইতিহাস নিয়ে জানতে চান-এই লেখাটা পড়তে পারেন।
http://www.earlham.edu/~peters/writing/endphilo.htm
আমরা স্টিফেন হকিং এর কথায় ফিরে আসি। তিনি পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ তাত্ত্বিক বিজ্ঞানী সন্দেহ নেই। কিন্ত দর্শন নিয়ে তিনি যে কটি কথা বলেছেন, সেগুলি ঠিক কি এবং তাই নিয়ে দর্শন শাস্ত্রের লোকেরা কি ভাবে এটাও জানা দরকার। জানা দরকার, ঠিক ৩০০ বছর আগে বিখ্যাত দার্শনিক ইম্যানুয়েল কান্টের ভুলেরই তিনি পুনরাবৃত্তি করেছেন।
হকিং এর দর্শন নিয়ে বক্তব্যের বিরুদ্ধে অনেক প্রতিষ্ঠিত দার্শনিক প্রবন্ধ লিখেছেন-আমি এর মধ্যে থেকে সব থেকে ভাল যেটি মনে হয়েছে-সেটির ওপর ভিত্তি করেই লেখাটি লিখছি। তাই তার রেফারেন্সও আগে দিয়ে রাখিঃ
http://www.psychologytoday.com/blog/hot-thought/201011/is-philosophy-dead
এবার বিচার শুরু করা যাক। প্রথমে অধ্যাপক পল থ্যাগাডের (http://en.wikipedia.org/wiki/Paul_Thagard)
সমালোচনাটির ভাবানুবাদ করি। বঙ্গানুবাদ করলে দর্শনের অনেক টার্মের জন্যে অনেকেই বুঝবে না। তারপরে নিজের বিশ্লেষনে আসব।
******************
স্টিফেন হকিং এবং লিওনার্ড ম্লোডিনোর বাস্তবতা নিয়ে অনুকল্পগুলি নিম্নরূপঃ
.
ক) ” বাস্তবতা” তত্ত্ব নিরেপেক্ষ হতে পারে না
খ) একটি মডেলকে “বাস্তবতার” ভাল মডেল বলা যাবে
যদি তা
১) সুন্দর হয়
২) যদি এম্পিরিক্যাল ফিটিং প্যারামিটার কম থাকে
৩) পরীক্ষালদ্ধ সব রেজাল্টের সাথে মিলে যায়
৪) পরীক্ষাগারের রেজাক্ট ভবিষ্যতবানী করতে পারে বা টেস্টেবিলিটির ক্রাইটেরিয়া মানে
গ) একটি ভাল মডেল একটি নিজস্ব “নিরেপেক্ষ” বাস্তবতা
ক) মানা যায় যদি আমরা মেনে নেই-তত্ত্বর ভিত্তি ধারনা।
খ) বিজ্ঞানের দর্শন-নতুন কিছুর বলার নেই।
গ) এই অনুকল্পটি আপত্তিকর। কারন মডেল যে বাস্তবতাকে ধরে, তা সর্বদা আংশিক এবং আপেক্ষিক। তবে এটাকেও আমরা জ্ঞান এবং বাস্তবতার জন্যে একটি দার্শনিক অনুকল্প হিসাবে ধরতে পারি।
এরপর হকিং তার এই দার্শনিক অনুকল্পটিকে বৈজ্ঞানিক উপসংহার হিসাবে চালিয়ে দিলেন। ( ভুলের শুরু এখান থেকেই) ।
তার সিদ্ধান্ত গুলি আদৌ বৈজ্ঞানিক না দার্শনিক?
হকিং এর বক্তব্যগুলি বিশ্লেষন করা যাকঃ
D. “The universe does not have just a single existence or history, but rather every possible version of the universe exists simultaneously.”
( এই মহাবিশ্বের কোন একক অস্তিত্ব নেই-বা একক ইতিহাস নেই। অসংখ্য মহাবিশ্ব একসাথে আছে।)
E. “The universe itself has no single history, nor even an independent existence.”
( এই মহাবিশ্বের কোন স্বতন্ত্র অস্তিত্ব নেই- নেই কোন একক ইতিহাস)
F. “We now have a candidate for the ultimate theory of everything, if indeed one exists, called M-theory.”
( এম তত্ত্ব থিওরী এভ্রিথিং এর যোগ্য দাবীদার)
G. “M-theory predicts that a great many universes were created out of nothing”
( এম তত্ত্ব শুন্য থেকে বহুবিশ্বের উৎপত্তির ভবিষ্যতবাণী দেয়)
H. “The universe, according to quantum physics, has no single past, or history.”
( কোয়ান্টাম পদার্থবিদ্যা অনুযায়ী মহাবিশ্বের কোন একক অতীত বা ইতিহাস নেই)
I. “The universe doesn’t have just a single history, but every possible history, each with its own probability.”
( মহাবিশ্বের প্রতিটি ইতিহাসেরই কিছু না কিছু সম্ভাবনা আছে।)
হকিং এর দাবী- যেহেতু কোয়ান্টাম মেকানিক্সের প্রচুর প্রমান পাওয়া গেছে, সেহেতু উপোরক্ত উপসংহারগুলি সত্য।
কিন্ত এখানে একটা ভুল হল। হকিং এর দাবীগুলি কোয়ান্টাম মেকানিক্সের একটি বিশেষ ব্যাখ্যা মেনে-এবং মনে রাখতে কোয়ান্টাম বলবিদ্যার অসংখ্য ব্যাখ্যা আছে। কোয়ান্টাম মেকানিক্সের অন্য ব্যাখ্যা ধরে এগোলে বহুবিশ্ব নিয়ে সিদ্ধান্তগুলি আলাদা হবে। এবং এম তত্ত্ব টেস্টেবেলিটি মানে না। অর্থাৎ সেটিকে ভাল মডেল আমরা বলতে পারি না ( (খ) এর ৪ দেখুন-ভাল মডেল হতে গেলে কি হতে হয়)। সুতরাং মহাবিশ্ব নিয়ে হকিংসের সিদ্ধান্তগুলি যত না বৈজ্ঞানিক, তার থেকে অনেক বেশী “দার্শনিক”।
তাহলে আমাদের প্রথমেই বুঝতে হবে বিজ্ঞান এবং দর্শনের সীমারেখা এবং সম্পর্ক কি ভাবে নির্নীত হবে।
এই ব্যাপারে দর্শনের দুটি ভাগ।
একটি হচ্ছে ন্যাচারালিস্টিক দর্শন। এরিস্টটল, লকে, মিলস, হিউম, ডিউ, কুইন থেকে সব বিজ্ঞানের দার্শনিক এই পর্যায় ভুক্ত। এখানে মূল বক্তব্য হচ্ছে-প্রকৃতি, জ্ঞান, বাস্তবতা, নৈতিকতা এবং ব্যাখ্যার ভিত্তি হবে বিজ্ঞানের তত্ত্ব এবং পর্যবেক্ষন। অর্থাৎ হকিংস যা দাবী করেছেন, তা নতুন কিছু না-সেটি ন্যাচারিলিস্টিক দর্শনের মধ্যে পরে। কিন্ত এখানে দর্শনের সাথে বিজ্ঞানের পার্থক্য হচ্ছে বিজ্ঞানের সীমানা “কি হচ্ছে” এবং “কেন হচ্ছে” তার মধ্যে বাঁধা। দর্শন তার বাইরে গিয়েও কি হওয়া উচিত সেই প্রশ্ন করে। যেমন ” জীবনের উদ্দেশ্য কি”,
“ঈশ্বর থাকা উচি্ত না অনুচিত” -ইত্যাদি প্রশ্নের উৎপত্তি দর্শন থেকে। কিন্ত এর উত্তর বিজ্ঞান দিয়ে দিতে হবে। এটা হচ্ছে ন্যাচারালিস্টদের বক্তব্য।
এন্টি-ন্যাচারালিস্টরা এই বক্তব্য মানেন না। তাদের বক্তব্য দর্শন এবং বিজ্ঞান এক না, কারন দর্শনে জ্ঞানের ভিত্তি হতে পারে অনেক কিছু, যা বিজ্ঞানের সীমানাতে পড়ে না-
শুধু যুক্তি ( যেমন ভারতীয় দর্শনের একটি উপপাদ্যঃ মহাবিশ্ব অনন্ত কিন্ত মানুষ সীমাবদ্ধ-সুতরাং অনন্ত মহাবিশ্বকে সম্পূর্ন ভাবে কোনদিন জানা সম্ভব না)
ভাষা এবং যুক্তি ( দেরিদার ডিকনস্ট্রাকশন একটি উদাহরন। যেমন “দর্শন মৃত” শুধু এই দুই শব্দের অসংখ্য মানে হতে পারে। )
অভিজ্ঞতা বাইরেও যে সত্য আছে সেখানে চর্চা করা ( যেমন সব ধর্মীয় দর্শন এই ক্যাটেগরীতে পড়ে। অর্থাৎ ঈশ্বর কি, তার স্বরূপ কি, ঈশ্বর আছেন না নেই-…)
প্রয়োজন ( বা প্রয়োজন এবং যুক্তি) -যেমন ধরুন ঐশ্বরীয় দর্শনের প্রয়োজনীয়তা আছে না নেই? আত্মহত্যার প্রয়োজন আছে না নেই? জীবনের কোন অর্থ আছে না নেই?
অথবা শুধু ধারনা-বহুবিশ্ব বা মাল্টিভার্স বা প্যারালাল ইউনিভার্স এর ভাল উদাহরন। এগুলোর খুব দুর্বল মডেল-দার্শনিক চিন্তা বেশী। সুতরাং এগুলোকে বিজ্ঞান বলা যাবে না-বিজ্ঞানের ডিমার্কেশন অনুযায়ী। কিন্ত টেস্টেবিলিটির ফলে যখন আস্তে আস্তে এগুলি ভাল মডেল হতে থাকবে, ধারনাগুলি দর্শন থেকে বিজ্ঞানের সীমানাতে ঢুকে যাবে।
হকিং বাস্তবতার স্বতন্ত্র অস্তিত্ব নেই ত বলে দিলেন-কিন্ত কোন “জ্ঞানের” ভিত্তিতে বললেন? সেই জ্ঞান বৈজ্ঞানিক না দার্শনিক? আমরা দেখলাম সেই জ্ঞান অনেক বেশী দার্শনিক, যত না বৈজ্ঞানিক।
হকিং এর “মডেল” নির্ভর বাস্তবতা দর্শন শাস্ত্রে ৩০০ বছরের পুরানো। বাস্তবতা যে “মন” নির্ভর-এই ধারনা প্রথম আনেন ইম্যানুয়েল কান্ট। হকিং তার জেলি ফিসের যে উদাহরন দিয়েছেন বাস্তবতা কে বোঝাতে-যে বাস্তবতা অভিজ্ঞতা নির্ভর-সেটি প্রথম বলে যান ইম্যানুয়েল কান্ট। প্রায় ৩০০ বছর আগে।
কিন্ত আমরা বিজ্ঞান থেকে কি জানি? মানুষের মনের উদ্ভব অতিনবীন ঘটনা। এই মহাবিশ্বের অস্তিত্ব মানুষের জন্মের অনেক আগে থেকেই ছিল। মডেল টা এম থিওরী না এন থিওরী, তার ওপর নির্ভর করে এই মহাবিশ্বগুলি চলছে না। তত্ত্ব উন্নত হতেই থাকবে, বদলাবে, বাতিল হবে। সুতরাং এই মহাবিশ্বের একটি স্বাধীন অস্তিত্ব অবশ্যই আছে। সেই জন্যে দর্শন শাস্ত্রে বাস্তবতার অনেক ভাগ আছে । কান্টিয়ান বাস্তবতা বা হকিং যে বাস্তবতার কথা বলেছেন, সেটাকে বলে ফেনোমেনোলজিক্যাল বাস্তবতা। এর বাইরেও দর্শন শাস্ত্রে আরো ৩০ রকমের বাস্তবতা আছে। এবং বাস্তবতার সাথে মন এবং মহাবিশ্বের জটিল সম্পর্কের সমস্যাটি বিজ্ঞানের সীমানাতে পড়ে না।
মার্ক টুইন মারা গেছেন বলে একবার মিথ্যে রটেছিল। উনি সেটা শুনে বলেছিলেন, আমার মৃত্যুসংবাদটি বড় বেশী রকমের অতিরঞ্জন।
*****************************************************
প্রবন্ধটি লেখার আমার কোন দরকার ছিল না। বাস্তবতা বা রিয়ালিজম নিয়ে সামান্য জ্ঞান থাকলে বা একটু ওয়াকি ঘাঁটলেই বোঝা যেত হকিং এর দর্শন নিয়ে পড়াশোনা মারাত্মক রকমের কম এবং তিনি চাকা পুনরাবিস্কার করেছেন মাত্র। আমি সেটা মুক্তমনাতে লিখতেই, বিশিষ্ট কিছু সববোদ্ধার দল গালাগাল দেওয়া শুরু করল। আরেকজন বিশিষ্ট বিজ্ঞান লেখক দাবী করলেন দর্শনের আলোচনাতে নাকি আজকাল বিজ্ঞানীদেরই ডাকা হয়! অবশ্য ভারতে যেকোন লোকের কাছে তার গুরুদেব হচ্ছে সব থেকে বড় দার্শনিক। অনেক হিন্দু বাঙালি বিশ্বাস করে বিবেকানন্দ বা রামকৃষ্ণর মতন দার্শনিক আর কোনদিন জন্মায় নি। আবার অনেকের কাছে রবীন্দ্রনাথের মতন বড় দার্শনিক জন্মায় নি। আরেক বিশিষ্ট বোদ্ধা, দর্শন এবং ধর্মকে এক করে বোঝাতে চাইল বিজ্ঞান যেভাবে ধর্মের শেষ ঘোষনা করেছে, সেই ভাবে দর্শনের শেষ ঘোষনা করবে!
যাইহোক এস্ট্রলজার এবং এস্ট্রনমার যেমন এক না -তেমন ধর্মীয় গুরুদেব বা বিজ্ঞানী বা রবীন্দ্রনাথ -এদের সাথে প্রথাগত শিক্ষিত দার্শনিকদের পার্থক্যটা ততটাই।
আসলে সমস্যা হয়েছে এই, আমাদের দেশে একদম শেষের বেঞ্চের অগা-মগা ছেলেরা দর্শন, ইতিহাস এই সব পড়তে যায়। আমাদের ধারনা জন্মেছে দর্শন হচ্ছে একদম সোজা ব্যাপার-কারন লাস্ট বেঞ্চাররা পড়ে এবং পাশ ও করে! বাস্তব হচ্ছে আমি যত বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করেছি, তার মধ্যে সর্বাধিক কঠিন এবং গভীর হচ্ছে দর্শন। এটি এমন একটি বিষয় যা পড়ে বোঝা যায় না-প্রশ্ন এবং দন্দ্ব তৈরী করে বুঝতে হয়। এবং তারপরেও অধিকাংশ প্রশ্ন এবং দন্দ্ব অমীমাংসিত থাকে। এবং সেটাই দর্শনের আসল শক্তি।
যেখানে গণিতের শেষ সেখানে যুক্তিবিদ্যা, যেখানে বিজ্ঞানের শেষ সেখানে দর্শন ।
@ধ্রুব
মেশিন লার্নিং মডেল নিয়ে এখানে লেখ। সমাজ বা জৈব বিজ্ঞানে যেসব স্টাটিস্টিক্যাল মডেল নির্ভর তত্ত্ব বা গবেষনা হয়েছে অধিকাংশই ফালতু-১০/২০ বছর বাদে বাতিল হচ্ছে। বিবর্তন মনোবিজ্ঞান ও এমন একট ক্ষেত্রে যেখানে মেশিন লার্নিং মডেল দরকার-কিন্ত গবেষকরা স্টাটিস্টিক্যাল মডেলিং করছে। ফলে অধিকাংশ কাজই ফালতু কাজে পরিণত।
@রূপম (ধ্রুব),
শুরুটা ছিলো এরকম , “It is impossible to know exactly how much pain someone else is feeling. Nevertheless, judgments about the experiences of others who are suffering happen routinely.” বোল্ড অংশটুকু লক্ষনীয়।
যতক্ষন পর্যন্ত আগামীকাল একটা সেমানটিক প্রশ্নের উত্তর আমি কি দেব তা আজকে একটা AI মডেল যদি নির্ভূলভাবে প্রেডিক্ট করতে না পারে , তবে বলতে হবে যে মানবীয় মডেল বানানোর মত পর্যায় থেকে AI এখন আলোক বর্ষ দূরে। আমি ব্যক্তিগতভাবে AI সম্পর্কিত বিতর্ক এড়িয়ে চলি যেমন এড়িয়ে চলি আরও কিছু বিষয়। মানুষের বুদ্ধি এবং আবেগ সম্পর্কে এ পর্যন্ত যে স্বল্প তথ্য জানা গেছে সেই ডেইটা দিয়ে যে মডেলই বানাননা না কেন তা বাস্তবের ত্রিসীমানা দিয়ে যাবে না। AI যে সময়টায় নতুন মডেল বানাচ্ছে , সেই একই সময় জীনোমে ক্রোমোজমের নতুন নতুন ফাংশন আবিষ্কৃত হচ্ছে যার প্রতিফলন AI মডেলগুলোয় দেখা যাচ্ছে না।
আমি টমটম জিপিএস ব্যবহার করি যা খুবই সঠিক। এটা ব্যবহার করতে পারেন আইফোনের বদলে। আরও সঠিক চাইলে মিলিটারী গ্রেডের জিপিএস নিতে পারেন , দাম যদিও একটু বেশী। ল্যাবে যেহেতু কাজ করেন রিস্ক ম্যানেজমেন্ট নিয়ে কিছু সময় নিশ্চয়ই ব্যয় করতে হয়। এই রিস্ক ম্যানেজমেন্ট মেথডোলজীর একটু গভীরে গেলেই অনেক প্রশ্নের উত্তর পাবেন। এটা খুবই সাইন্টিফিক।ধন্যবাদ।
@সংশপ্তক,
আশা করি পেপারটা পড়েছেন। এখানে এটাই বোঝাতে চাচ্ছে যে এক্স এবং ওয়াই পেশেন্টের একই পেইন লেভেল একজন আলাদা মানুষ যদি কারেক্টলি ডিটেক্ট করতে পারে, তারপরেও তাদের দুজনকে ভিন্ন ট্রিটমেন্ট সাজেস্ট করবে তাদের পেইন অনসেটের ভিন্নতার উপর নিজস্ব জাজমেন্ট আরোপ করে। আমার আলোচনার বিষয় কিন্তু এই পেপারের আলোচনায় পেইন লেভেল ডিটেক্টের বিষয়ের পরেই ডাইভার্জ করে যাচ্ছে। পেশেন্টের ব্যাপারে হিউম্যান রিস্পন্ডেন্ট এর জাজমেন্ট কোনভাবেই আমার আলোচনার সাথে সম্পর্কিত না।
AI নিয়ে অনেক ক্রিটিসিজম সম্ভব। কিন্তু সেটা আরেকটু সুসংহতভাবে করা দরকার।
জিপিএস ইনহেরেন্টলি ইনেকুরেট, সেটা নিশ্চয়ই আমি আমার উদাহরণে মিন করি নি। আমি বোঝাতে চেয়েছি, জিপিএস যদি একুরেট না হয়ে খুবই এপ্রক্সিমেট লেভেলের উত্তর প্রদান করে, সেটাও কাজেই লাগানো যায়।
AI, মেশিন লার্নিং, এগুলো কাজই করে এপ্রক্সিমেশান করে। ফলে জিনোমের নতুনতম আবিষ্কারটা এতে ততক্ষনাত যুক্ত না হলেও একটি ইনেকুরেট জিপিএস এর মত এটি একটি কাজের এপ্রক্সিমেট করতে পারে। অনেক মেডিকেল ডায়াগনসিসে যেমন মেশিন লার্নিং এলগরিদম ব্যবহার হচ্ছে। সেখানে মেশিন লার্নিং এলগরিদম একটা এপ্রক্সিমেট সাজেশন দেয়। আপনি, আমি, ডাক্তার, সবাই জানি যে সেই সাজেশন, সেই রেজাল্ট একটা এপ্রক্সিমেট রেজাল্ট। এবং ঠিক ওই সময় কিন্তু জেনোম গবেষণায় আরেকটা আবিষ্কার হয়ে যায় যেটা ওই একই ডায়াগনসিসকে আরো একুরেট্লি এসিস্ট করতে পারত। তাই বলে কি ডায়াগনসিসে আজকে মেশিন লার্নিং এলগরিদম ব্যবহার করা বন্ধ করে দেবেন? আরো মজার ব্যাপার হচ্ছে, জিনোম সিকয়েন্সিংয়ের পরে যে প্রথম সারির স্টেপ, জিন ফাইন্ডিং, সেটার জন্যে কিন্তু সাপোর্ট ভেক্টর মেশিনের মত কাটিং এজ মেশিন লার্নিং এলগরিদমই ব্যবহৃত হচ্ছে। মেশিন লার্নিং (ML) বা AI কে আপনি বয়লোজি গবেষণার অল্টারনেটিভ হিসেবে দেখছেন। সাইন্টিফিক কমিউনিটিতে ML বা AI কে “বাস্তবের ত্রিসীমানা”য় না যাওয়া দুর্বল বিকল্প হিসেবে দেখা হয় না। টুল হিসেবে দেখা হয়, যেটা বায়োলজির গবেষনাকেই বরং সাহায্য করে এবং করছে।
আর এই সকল এলগরিদমেরই একুরেসি মেজার করা যায়। একুরেসি কিভাবে মেজার করতে হয়, তার বিজ্ঞান অত্যন্ত সমৃদ্ধ। সেরকম বিজ্ঞানের উপস্থিতিতে “বাস্তবের ত্রিসীমানা দিয়ে যাবে না” কথাটা বড় বেশি স্থুল। সাইন্টিফিক কমিউনিটিতে বরং চিন্তা করা হয়, একটা মেশিন লার্নিং এলগরিদম র্যান্ডম গেসের চেয়ে বেটার প্রেডিক্ট করতে পারে কিনা, কত পার্সেন্ট একুরেসি, কতটা কনফিডেন্স ইন্টার্ভালে।
আংশিক তথ্যের উপর ভিত্তি করে কিভাবে র্যান্ডম গেসের চেয়ে ফার বেটার একুরেসি পাওয়া যায়, এ ব্যাপারেও থিউরি অতি সমৃদ্ধ। POMDP বা Computational learning theory লিটারেচার, দেখতে পারেন। এমনকি পরিসংখ্যানেও, যেমন রিগ্রেশন এনালাইসিসে খুব সাধারণ উদাহরণ দিয়ে ব্যাখ্যা করা যায় স্বল্প তথ্য দিয়েও কিভাবে কাজের প্রেডিকশান দেয়া যায়।
একটা এপ্রক্সিমেট রেজাল্ট মানব জীবনে সরাসরি প্রয়োগ একটা নাইটমেয়ার, সেটা আমি অস্বীকার করে আলোচনা শুরু করি নি। ইন ফ্যাক্ট এর আগে উপরে মন্তব্যের পর মন্তব্যে আমি আর্গু করে আসলাম যে এ ধরনের মোটামুটি প্রেডিক্ট করতে পারে টাইপ জিনিস মানব জীবনে সরাসরি প্রয়োগের হ্যাজার্ড মারাত্মক। তারপরেও আলোচনার খাতিরে আমি কল্পনা করছিলাম মডেলটা তার প্রেডিকশান সাজেস্ট করবে এবং সেটা গ্রহণ বর্জন ইউজারের নিজের উপর। সেটাও যে খুব রিস্ক ফ্রি হলো, তাও দাবী করছি না। কিন্তু এটাকে জ্যোতিষ শাস্ত্রের সাথে তুলনা করা মানে পুরো মেশিন লার্নিং গবেষণার অবদানকে অস্বীকার করা।
“ব্যক্তিগতভাবে AI সম্পর্কিত বিতর্ক এড়িয়ে চলি”, না এড়িয়ে AI কে ক্রিটিসাইজ করার জন্যে সেটা সম্পর্কে আরো লিটারেচার রিডিং বা ডিসকোর্সে এনগেজ হওয়াটাই বেশি সাইন্টিফিক চর্চা না? 🙂
আমি AI এর ক্রিটিসিজম নিয়ে একটা লেখা দেবার চিন্তা অনেকদিন ধরে করছি। আপনি যদি এড়িয়ে চলেন, তাহলে আলোচনা করব কার সাথে। 🙁
@রূপম (ধ্রুব),
Null hypothesis বুঝিয়েছি। এছাড়াও মূল থিউরীটাকেও সবার আগে ছাকনি দিয়ে বেড় করতে হবে যাকে কোর থিউরী হিসেবে উল্লেখ করেছি। আপেক্ষিকতা তত্ত্ব কিংবা থার্মো- ডাইনামিকস যেমন পদার্থবিদ্যার অন্যতম কোর থিউরী, জীব বিজ্ঞানে যেমন বিবর্তনবাদ। যে শাখায় গবেষনা , সেই শাখায় এরকম শক্ত কোর থিউরী থাকতে হবে যার উপর পুরো বিষয়টা দাড়িয়ে।
@রূপম (ধ্রুব),
মানুষ নিয়ে কথা বলা মাত্র ঢুকে পড়ছি টুরিং জটিলতার মধ্যে, বিশেষত অপটিমাল সমাধানের উপর যেসব শর্তারোপ করেছি আমরা তার প্রেক্ষিতে। এই ডোমেইনে নন-ট্রিভিয়াল কোন সমস্যার অপটিমাল সমাধান কি আদৌ সম্ভব? আপনি মেশিল লার্নিং-এর লোক, কাজেই অবশ্যই জানেন কি সব পর্বতসম তাত্বিক ও প্রায়োগিক সমস্যার মধ্যে জড়িয়ে পড়ব আমরা।
এক অর্থে এখানেই শেষ করে দিতে পারি। বলতে পারি:
১) অপটিমাইজেন ফাংশন টা কি এটা জানবার দরকার নেই। এটা পরিষ্কার, যে ফাংশনটি ট্রিভিয়াল কিছু নয়। অতএব,
২) বৈজ্ঞানিক ভাবে সন্তোষজনক সমাধান খুঁজে (অন্তত এ মুহুর্তে) লাভ নেই। নৈতিকতা ও মানব কল্যানের ক্ষেত্রে অনিশ্চয়তা, অনুমান, gut feeling, এমনকি নৈতিক রক্ষণশীলতাকে নিয়েই আমাদের চলতে হবে।
কিন্তু তারপরও চেষ্টা করি। আপনি লক্ষ্য করবেন, আমার বক্তব্য হবে কিছুটা স্যাম হারিসিয়।
প্রথম কথা হল, ফাংশনটা ঠিক কি তা না জানলেও কিসের ফাংশন, সেটা আমার মতে পরিষ্কার। প্রতিটি ব্যক্তির (আপাতত মানুষে সীমাবদ্ধ থাকছি) চাওয়া-পাওয়া, বা মস্তিষ্কের স্টেইটের ফাংশন। ফাংশন মানে কোন সরল লিনিয়ার ফাংশন নয়। ফাংশন টা কি সেটাতে পরে আসছি, কিন্তু মৌলিক ব্যাপার হচ্ছে ব্যক্তি। অতএব,
মানছি, এবং সেই আর্বিট্রারি মেজার হচ্ছে ব্যক্তি। তবে সেটা কিন্তু সর্বক্ষেত্রেই ঠিক — আলাদা ভাবে নৈতিকতার সমস্যা নয়। কোন একটা Assumption ছাড়া এক পাও এগোনো সম্ভব না — প্রাকৃতিক বিজ্ঞানেও নয়।
নিজের ব্যাপারেও মানুষ দ্বিধান্বিত হতে পারে। কিন্তু সে যাই হোক, এটা ঠিকই যে প্রত্যেকেই বহু গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে দুটি option এর মধ্যে কোনটি তার নিজের জন্য ভাল, সেটি নির্ণয় করতে পারে। সামাজিক ভাবেও অনেক ক্ষেত্রে তুলনা সম্ভব। তাহলে কি পাচ্ছি? সব ক্ষেত্রে তুলনা সম্ভব নয়, কিছু ক্ষেত্রে সম্ভব — পেয়ে যাচ্ছি একটি partial order। Partial order এর প্রেক্ষিতে অপটিমাইজেশন necessarily সম্ভব নয়, কিন্তু state space এর মধ্যে চলে ফিরে improvement কিন্তু সম্ভব। এটাই হতে পারে নৈতিকতার বৈজ্ঞানিক ভিত্তি।
[একটু হাত সাফাই করেছি। স্পষ্টতই partial order এও কুলাবে না, state space এ কন্ট্রাডিকশনও থাকবে।]
“অধিকার” বিষয়ে কিছু মন্তব্য প্রথমে। আমি মানবাধিকার, এমনকি unalienable মানবাধিকারে প্রচণ্ড ভাবে বিশ্বাসী, কিন্তু যে তাত্বিক পর্যায়ে আছি আমরা সেই পর্যায়ে নয়। সেই পর্যায়ে “অধিকার” একটা construct, অর্থাৎ আমরা যে সমাধানে আপাতত আস্থা রাখছি (একে বলা যাক “উদারপন্থী গণতন্ত্র”) তারই একটি অংশ। কাজেই অন্য একটি সম্ভাব্য সমাধানকে যাচাই করার জন্য অধিকার নিয়ে আসাটা ঘোড়ার আগে গাড়ি জুড়বার মত।
framework টা বদলে নিচ্ছি। জিনিসটা এরকম। প্রত্যেক মানুষের কাছে আছে তার নিজস্ব ফাংশন। এই ফাংশন অনতিস্পষ্ট (অন্যের কাছে তো বটেই, তার নিজের কাছেও), সময়-নির্ভর ও অত্যন্ত জটিল। এই ফাংশনের একটি অংশকে বলা যেতে পারে “রাজনীতি ফাংশন” বা “মিথস্ক্রিয়া ফাংশন”। এই রাজনীতি ফাংশনই হচ্ছে সেই বস্তু যা বিভিন্ন ব্যক্তির ফাংশন গুলিকে জুড়ে দেয় — অর্থাৎ আপনি ওয়েইটেড লিনিয়ার ফাংশন দিয়ে যাকে মডেল করবার চেষ্টা করছিলেন। এটা যদি মেনে নিই, তবে নৈতিকতার সমস্যাকে এভাবে মডেল করা যেতে পারে: অতীত অভিজ্ঞতা ও ব্যক্তিগত subjectivity-র প্রেক্ষিতে যেকোন বিশেষ মুহূর্তে এই ফাংশন গুলির একটি আবছা, কন্ট্রাডিকশনময় partial order আমাদের হতে আছে। এর ভিত্তিতে ভবিষ্যতের ব্যাপারে আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এই জটিল তথ্যের যে অংশগুলি বৈজ্ঞানিক পরিচ্ছন্নতার পর্যায়ে পৌঁচেছে, সেখানে বিজ্ঞান ব্যবহার্য, নচেৎ নয়।
আরো বড় কথা হচ্ছে, সমাধানটি সর্বকালীন নয়। সমাধানটি নিজেও পরবর্তী সমাধানের input –সব সমাধানই আপাত সমাধান। আপনার প্রথম উদাহরণটি দিয়ে এটি বোঝা যাক। ধরা যাক হঠাৎ উন্মাদ রোগ গ্রস্থ হয়ে আমরা এমন একটি ফাংশনকে বেছে নিলাম যাতে দুজনের সুখের বিনিময়ে বাকি সবার সুখ বিসর্জন দিতে হচ্ছে। পরে এ ব্যাপারটি উপলব্ধি করে ওই দুজনকে প্যাদানি দেয়ার জন্য এই যে আমরা বাঁশ হাতে নিয়ে ছুটব — কি হচ্ছে এখানে? — ওই যাকে “রাজনীতি ফাংশন” বলছি তার আগে না জানা বা ভুলে যাওয়া একটা অংশ revealed হচ্ছে। কাজেই তখন সেটা অপটিমাইজেশনের criteria-র মধ্যে চলে আসবে দ্বিতীয় রাউন্ডের সমাধান বের করার সময়।
আপনি পর্যবেক্ষণ নির্ভরতার কথা যেটা বলেছেন, মনে হচ্ছে আমার মতামত তার কাছাকাছি।
@রৌরব,
বাহ! ভালো ব্যাখ্যা করেছেন।
বোঝা যাচ্ছে আপনি মত দিচ্ছেন যে মন্দের ভালো কিছু একটা সলিউশন দিতে হয়ত পারবে, যেটা “অনিশ্চয়তা, অনুমান, gut feeling, নৈতিক রক্ষণশীলতা”র সামনে একটা অপেক্ষাকৃত উত্কৃষ্ট পছন্দ হতে পারে।
আংশিক ভুল/সঠিক Assumption জিনিস মানুষের ক্ষেত্রে সরাসরি ব্যবহারে বিপদও আছে বৈকি। তবে আমাদের চারপাশে অবশ্য ইতোমধ্যে বিজ্ঞানের অনেককিছুই চলে এসেছে যেটার সঠিকতা নিয়ে আমরা যথেষ্ট নিশ্চিত নই। কিন্তু ব্যবহার করছি।
স্যাম হারিস যেমনটা বলেছেন, একজন নারীর মুখে এসিড ছুঁড়ে মারা যে ঠিক নয়, এটা বের করার জন্যে রকেট সাইন্সের প্রয়োজন পড়ে না। তেমনি, সকল মানুষের unalienable মানবাধিকার থাকা উচিত (অনেকটা আমার কন্সট্রেইন্ড অপ্টিমাইজেশানের মত) দেখানোর জন্যেও রকেট সাইন্সের প্রয়োজন নেই। এমন কি সাইন্সেরই আদৌ কোনো প্রয়োজন আছে কিনা এইসব ব্যাপারে, সেটা নিয়ে আমি সন্দিহান।
“একজন নারীর মুখে এসিড ছুঁড়ে মারা উচিত না” এই অনুকল্পটাকে বৈজ্ঞানিক যাচাইযোগ্যতার মধ্যে নিয়ে যাওয়া মানে, এই বক্তব্যের মিথ্যাকরণের (falsify) সুযোগ রাখা। মানে বিজ্ঞান বলতে পারে উপরের অনুকল্পটি মিথ্যা, এমন সুযোগ রেখেই এগুতে হবে বিজ্ঞানে। সেটা করার প্রয়োজন কেন হবে? কাকে বোঝানোর জন্যে আমরা এই বৈজ্ঞানিক যাচাইয়ের মধ্যে দিয়ে যেতে চাইব?
কিংবা “সকল মানুষের কিছু unalienable অধিকার থাকা উচিত” বা “জর্জ বুশকে দাস বানানো অনুচিত” এগুলোর প্রত্যেকটিকেই বৈজ্ঞানিক যাচাইযোগ্যতার মধ্যে ফেলা মানে উল্টোটা হবার সম্ভাবনাকে খোলা রাখার। এখন আমরা সেটা কাকে কনভিন্স করার জন্যে করব?
নিজেদের (মুক্তমনা)? আমার মনে হয় আমরা অধিকাংশ এসব ব্যাপারে নি:শর্ত। এমনকি বিজ্ঞানের সাথে সিদ্ধান্তে কনট্রাডিকশান থাকলেও। আবার যদি বিশ্বাস স্থাপন করি যে বিজ্ঞান আমাদের এই সিদ্ধান্তের সাথে কনট্রাডিক্ট করতেই পারে না, সেটা হবে অন্ধ-বিশ্বাসীর বিশ্বাস। ফলে আমরা যেকোনভাবেই এ ব্যাপারে বিজ্ঞান-সংশ্লিষ্টতাহীনভাবে মুক্তমনা। (এটা একধরনের জীবিত মুক্তমনা দর্শন, বন্যাপা) 🙂
এমনও নয় যে একদল বিজ্ঞানমনস্ক তালেবান পৃথিবীতে মানুষের অধিকার লংঘন করে বেড়াচ্ছে, এবং বিজ্ঞান দিয়ে মানুষের অধিকার থাকা উচিত দেখালেই কেবল তারা থামবে।
তাহলে কখন দরকার হবে বিজ্ঞান দিয়ে এসব বিষয়ের মীমাংসার? যেসব বিষয়ে আমরা একমত হব না, কিন্তু দুইটা অপশনের যেকোনটা গ্রহণ করলেও কোনো unalienable অধিকার লংঘিত হবে না, সেসব ক্ষেত্রে একটা গ্রহণযোগ্য সমাধান দেয়া যায় বিজ্ঞান ব্যবহার করে। তখন আমরা অন্তত বলতে পারব যে, এই এই assumption যদি true হয়, তখন একটি বিশেষ ক্রাইটেরিয়ায় অমুকটা করাটা হচ্ছে তমুকটার চেয়ে উত্তম।
আর সবচেয়ে বেশি দরকার পড়বে যখন মেশিনকে সম্পূর্ণ অটোনমি এবং গুরু দায়িত্ব উভয়ই দেয়া হবে। এ ব্যাপারে মোরাল মেশিন বইটা পড়া যায়। আমরা নিজেরা আমাদের ভুল ঠিকের গাণিতিক ফাংশনটা জানি না, মেশিনকে কিভাবে “আমাদের” ভুল ঠিকটা শিখাবো?
@রূপম (ধ্রুব),
আমি তাত্ত্বিক পর্যায়েও মানবাধিকার ছাড়া চিন্তা করতে ব্যর্থ 😥
@রূপম (ধ্রুব),
বিশ্বাস করুন, আপনি কেন একথা বলছেন সেটা বুঝতে পারছি।
“সম্ভাবনাকে খোলা রাখা”-র ব্যাপারে যে অস্বস্তি আপনি প্রকাশ করছেন সেটা আমারও আছে, কিন্তু আমি চেষ্টা করি সেটাকে অগ্রাহ্য করার। কারণ, এই অস্বস্তিটি আসছে একটা রাজনৈতিক সমস্যার প্রেক্ষিতে, এটা “সত্যের সমস্যা” নয়। রাজনৈতিক সমস্যাটিকে আমি বলতে চাই কোয়ান্টাইজেশনের সমস্যা, এর উৎস দুটি: এক. রাজনৈতিক ডিসকোর্সে যে কথ্য ভাষা আমরা ব্যবহার করি তার মুূদগর সুলভ বিসদৃশতা, দুই. একটা পর্যায়ের পর কোয়ান্টিটেটিভ তথ্য বোঝবার ব্যাপারে মানুষের অপারগতা।
উদাহরণ দিই। ধরুন আমি বললাম হিটলারের ইহুদি নিধন যজ্ঞ “সঠিক” (যে অর্থেই হোক) হওয়ার একটা সম্ভাবনা আছে, সম্ভাবনাটা এক ব্যাজিলিয়ন ভাগের একভাগ। যে শুনছে, তার হয়ত মনে হবে “রৌরব লোকটা আধা নাৎসী”, অথচ আমার ওই বক্তব্যের সাথে “হিটলারের ইহুদি নিধন যজ্ঞ সঠিক হওয়ার কোন সম্ভাবনাই নেই” এ মতামতের কোন ফাংশনাল পার্থক্য নেই।
মানবাধিকারের ব্যাপারেও আমার অবস্থানটা সেরকম। কথ্য রাজনৈতিক ভাষায় unalienable rights, natural rights এসব পরিভাষায় গভীর ভাবে বিশ্বাস করি, কিন্তু তার পেছনে একটি তাত্বিক ও কোয়ান্টিটেটিভ চেতনা ধরে রাখতেও চাই।
আমি আপনার সাথে “ফাংশনালি” একমত। আমি হয়ত কথাটা এভাবে বলব: নৈতিকতা ও মানবকল্যানের ক্ষেত্রে যে ধরণের দুর্দমনীয় complexity-র মুখোমুখি আমরা, তাতে অর্বাচীন “বৈজ্ঞানিকতা” বা অপটিমাইজেশনের স্থান নেই। আমাদের হাতে যে তথ্য আছে তাতে মানবাধিকারের ধারণাই শ্রেষ্ঠ, এবং এর শ্রেষ্ঠতা অত্যন্ত robust।
@রৌরব,
বাহ! বিজ্ঞানবিরোধিতার-ছায়া-ধারণ-অপবাদ মোবারক হো!
@রৌরব,
অবজেক্টিভ ফাংশন বার করা সম্ভব না। কারন তা নির্ভর করে জীবনের উদ্দেশ্যর ওপর। যদি জীবনের উদ্দেশ্য রিপ্রোডাক্টিভ ফিটনেস হয় এবং সবাই সেটা মানে, তাহলে অবজেক্টিভ ফাংশন সম্ভব। কিন্ত সবাই জীবনের উদ্দেশ্য কি-এটাকে স্বাধীন ভাবে ভাবলে, কোন সোশ্যাল অবজেক্টিভ ফাংশন সম্ভব না।
@বিপ্লব পাল,
আমি এখন পর্যন্ত অনেকটা এরকমই মনে করি। অভিজিৎ ভাইয়ের নৈতিকতার উদ্ভব লেখাগুলোতে বারবার সেই কথাটাই বলেছি। একই চিন্তা আবার উদ্ভুত হলো দেখা যাচ্ছে। :rotfl:
এটা নিয়ে তর্কের অবসান না হলে খুব সন্দেহ হয় ব্যাপারটা ঈশ্বরের অস্তিত্বের মতই অবৈজ্ঞানিক বিষয় কিনা। যেটা বিজ্ঞান মীমাংসা করে ফেলে, সেটা মীমাংসিত, কিন্তু যেটা বিজ্ঞানের আলোচনার বাইরে, সেটা নিয়ে তর্কের অবসান হয় না। এই ফ্যাকাল্টিতে বিজ্ঞানের আনয়ন আদৌ সম্ভব কিনা, এই স্কেপটিক মনোভাব দেখানোর কারণে একটু আগে বিজ্ঞান বনাম ধর্মের ভিডিও দর্শিত হয়েছি। 😥
প্রবাবলি শুড থিংক মোর এবাউট পলিটিক্যাল কারেক্টনেস।
@বিপ্লব পাল,
হাউ এবাউট পারসনালাইজড অবজেক্টিভ ফাংশন? এটা কমপিউট করার জন্যে মানুষের ব্রেইনের সিগনালগুলোকে ইনপুট হিসেবে নেয়া হবে। ডোপামিন, সেরোটোনিন এগুলো উল্লেখযোগ্য ভুমিকা রাখবে। ফলে প্রতিটা মানুষের আলাদা আলাদা জীবনের উদ্দেশ্য বা অন্যভাবে বললে অপটিমাল সুখবর্ধনকে সে প্রেডিক্ট করবে এডাপ্টিভভাবে।
এটা করা সম্ভব ধরে নেয়ার পরেও যে একটা সোশাল বা কম্বাইন্ড ফাংশন তৈরী করা প্রায় অসম্ভব কাজ, সেটা উপরে একটা মন্তব্যে বলেছিলাম। সেটার উত্তরেই রৌরব ব্যাখ্যা দিলেন যে অন্তত একটা হাত সাফাইমূলক, চলে-টাইপ সোশাল ফাংশন আর তার একটা সলিউশন দেয়া হয়ত সম্ভব। সেটাও এডাপ্টিভ হবে তেমনটা ইঙ্গিত দিলেন। কিন্তু সহজেই বোঝা যায় যে সেখানে সকলের সুখ একতরফাভাবে বর্ধন একটা অলীক-কল্পনা, রিসোর্স সীমিত বলে। কিন্তু মন্দের ভালো কিছু একটা তো দেয়া যাবে?
এটা কিন্তু স্যাম হ্যারিসের “বিজ্ঞান দ্বারা ঠিক করে দেয়া নৈতিকতা” থেকে ভিন্ন। কারণ নৈতিকতাবোধটা এখানে মানুষের মস্তিষ্কেই উদ্ভব হচ্ছে। আর সোশাল অপটিমাইজেশন যেহেতু মস্তিষ্কে কেবল রিডিং নিচ্ছে, সিগনাল ইন্টারফেয়ার করছে না (আইডিয়ালি), কি করা উচিত, কি করা উচিত না, সেটা সে ঠিক করে দিচ্ছে না, বরং কেবল বলে দিচ্ছে মানুষের মস্তিষ্কে উদ্ভুত নৈতিকতাটাকে পালনের অপটিমাল উপায়। ফলে এটাকে বলা যায় বিজ্ঞান দিয়ে আমাদের সম্মিলিত সুখবর্ধন।
তাই এই অপটিমাইজেশন ব্যক্তি নিরপেক্ষভাবে বলতে পারবে না ২৪ সপ্তাহে গর্ভপাত করা উচিত কি উচিত না। বরং এই গর্ভপাত প্রসঙ্গে সংশ্লিষ্টদের যে নৈতিকতাবোধ সেটাকে আমলে নিয়ে একটা প্রেডিকশান দিবে যে গর্ভপাতটা করলে সংশ্লিষ্টদের ভবিষ্যতে সর্বোচ্চ সুখবর্ধন হবে নাকি না করলে হবে। ফলে স্যাম হ্যারিসের কল্পিত সমাধানের ধারে কাছে দিয়েও এটা যায় নি, বরং সম্পূর্ণ ভিন্ন এই সমাধান। কমপ্লিট হেডোনিস্ট সমাধান। তবে তালেবানরা যদি এই হেডোনিস্ট সমাধানটাও তাদের সমাজে গ্রহণে রাজি হয় এবং নারীদের মস্তিষ্কের সিগনালকেও সোশাল ফাংশানে ইনপুট হিসেবে দিতে রাজি হয়, তাহলে আল্লা চাহে তো তাদের সমাজে আর অনাচার থাকবে না। বলুন আমিন।
@রূপম (ধ্রুব),
সেটাও সময়ের সাথে সাথে পালটায়। যে যুবক সমাজ পরিবর্তনের জন্যে বিপ্লব চেয়েছিল-তার ছেলে পুলে হলে, তারা যখন বড় হচ্ছে সে তখন সন্তান যেন থাকে দুধেভাতে দর্শনে ঢুকে যায়। এই জন্যে উপনিষদ বলে “সম সরতি অতি”- যা সর্বদা সরে সরে যায় তাই হচ্ছে সংসার। এখানে নিত্য কিছুই নেই।
অবজেক্টিভ ফাংশন এর থেকে এখানে মেশিন লার্নিং মডেলই অনেক ভাল কাজ করবে।
আর স্যাম হ্যারিসকে নিয়ে অত মাতামাতি যারা করছে, তারা কি জানে স্যাম হারিস ও প্রাচ্য আধ্যাত্মিকতাকে প্রমোট করেন?
@বিপ্লব পাল,
হ্যাঁ, এজন্যেই বলেছিলাম “অপটিমাল সুখবর্ধনকে সে প্রেডিক্ট করবে এডাপ্টিভভাবে।” গোলটা পাঁকিয়েছে অবজেক্টিভ ফাংশন শব্দটা। ফর্মালি জিনিসটা স্ট্যাটিক বা স্টেশনারি এন্ভারনমেন্ট assume করে। তবে এডাপ্টিভ মেশিন লার্নিং মডেলেও কিন্তু প্রেডিকশানের কোয়ালিটি নির্দেশ করার জন্যে একটা ক্রাইটেরিয়া লাগে। মেশিন লার্নিং কমিউনিটিতে গবেষকরা এসেছে নানান ফিল্ড থেকে – অপারেশনস রিসার্চ, কন্ট্রোল ইঞ্জিনিয়ারিং, ডিসিশন থিউরি, ইত্যাদি। ফলে একেকজন প্রেডিকশানের কোয়ালিটি নির্দেশক এই ক্রাইটেরিয়া ফাংশানকে একেক নামে ডাকে। আমার উপরের আলোচনায় অবজেক্টিভ ফাংশন আর অপ্টিমাইজেশান-এর জায়গায় ওই বিভিন্ন নামধারী “ক্রাইটেরিয়া ফাংশান” আর “মেশিন লার্নিং মডেল” কল্পনা করা যায়। 🙂
@রূপম (ধ্রুব),
মেশিন লার্নিং মডেলে পারসনাল অবজেক্টিভ ফাংশন সম্ভব এপ্রায়রি হাইপোথিসিসের মাধ্যমে যে মোটামুটি ভাবে আমরা
রিপ্রোডাক্টিভ ফিটনেস [ উন্নত চিকিৎসা, খাদ্য, উৎপাদন এর মধ্যেই পড়বে]
ইনোভেশন
বস্তবাদি সুবিধা
সমানাধিকার এবং বস্তুবাদি সাম্য ( স্টেবিলিটির জন্যে এড হক কনসট্রেন্ড )
এগুলোকে অপটিমাইজ করতে পারি। এমন একটা সমাজের চিত্র আমি আমার কল্প বিজ্ঞান গল্পে দিয়েছিলামঃ
http://banglaupanyas.blogspot.com/2009/12/blog-post.html
যেখান সামাজিক এবং রাজনৈতিক সিদ্ধান্তগুলো কম্পুটার নিচ্ছে-কিন্ত তাকেও ভোট দিয়ে পাশ করিয়ে নিতে হচ্ছে প্রতিটা সিদ্ধান্ত।
http://banglaupanyas.blogspot.com/2009/12/blog-post.html
@বিপ্লব পাল,
এগুলোর পাশাপাশি একটা কঠিন ক্যান্ডিডেট হচ্ছে ডোপামিন বর্ধন। বা মানুষের সুখবোধের সমতুল্য অন্য কোনো মস্তিষ্ক সিগনাল যদি থাকে। যেটা বর্ধন করলে অপটিমাইজেশানের সাজেশনের সাথে ব্যক্তির দ্বিমত বলতে গেলে থাকবেই না, কারণ সে স্বকীয়ভাবে যা চাইবার কথা, অপটিমাইজেশানটা তাকে সেটাই সাজেস্ট করবে।
ভাবলাম আমি গল্পটা লিখব, দেখি আপনিই লিখে বসে আছেন। আপনার গল্পটা পড়তে হবে। 🙂
@রূপম (ধ্রুব),
সেটাই। পরিষ্কার করে দিই: আমি সর্বোচ্চ গাণিতিক জেনারাইলেজনে “ফাংশন” শব্দটা ব্যবহার করছি। টুরিং মেশিনও “ফাংশন”, অতএব এর কোন মডেলিং সীমাবদ্ধতা নেই।
@বিপ্লব পাল,
আমার আগেই সন্দেহ হইছিল। 😛
@রূপম (ধ্রুব),
শুধু তাই নয়, এক সাক্ষাৎকারে দেখলাম উনি জন্মান্তরবাদের ব্যাপারে দ্বিধান্বিত, অর্থাৎ এটা হতেও পারে এমন মনে করেন।
@রৌরব,
এটা প্রেডিকশানের বাইরে দিয়ে গেল। দীর্ঘশ্বাস!
আপনাকে ডিলেমার লিংক দিয়েছি যে পেয়েছেন?
@রূপম (ধ্রুব),
হ্যাঁ। ভালই 🙂
@রৌরব,
আমি কষ্টকাল্পনিকে কোনো কমেন্ট করতে পারছি না!
@রূপম (ধ্রুব),
একটা জিনিষ আমি জানতে বিশেষ আগ্রহী। সেটা হলো , যে ‘core theory’-র উপর ভিত্তি করে আপনি বিষয়টার উপর আলোকপাত করছেন , সেই ‘core theory’ টা কি ? ধন্যবাদ।
@সংশপ্তক,
আরেকটু খোলাসা করুন। কোন core theory? কিভাবে সুখবর্ধনকে সে প্রেডিক্ট করা হবে বলে ভাবছি সেটা জানতে চাইছেন?
@রূপম (ধ্রুব),
আমি জানতে চাইছি ঐ নির্দিষ্ট ‘সুখের core theory’ যার উপর ভিত্তি করে সুখবর্ধনের ভেক্টর প্রেডিকশন করা হবে। অর্থাৎ, যে core theory- তে সূখকে ভেরিফাইবল এনটিটি হিসেবে দেখানো হয়েছ। আমি theory টার উপর একটু চোখ বুলাতে চাই। রেফারেন্স দিলে আমি নিজেই সংগ্রহ করে নিতে পারবো। ধন্যবাদ।
@সংশপ্তক,
এখনো খুব পরিষ্কার হয় নি প্রশ্নটা। তবে দেখুন আমার এই উত্তরটা মনোপুত হয় কিনা।
সুখকে গাণিতিক এনটিটি ধরে (assumption) নিয়ে সেটাকে বর্ধনের গবেষণা করা হয় reinforcement learning এ। এই বইয়ের প্রথম চ্যাপ্টারটা পড়তে পারেন, যদিও ফোকাস মূলত অর্টিফিশাল এজেন্টের প্রতি।
এখানে সুখের সমতুল্য গাণিতিক ভাল্যু (এই গবেষণায় reward নামে পরিচিত) যদি অ্যাভেইলেবল থাকে, সেটা বর্ধন করার থিউরি এটা। কিন্তু মানুষের মস্তিষ্কের কোন সিগনালটা সুখের সমতুল্য, এটা নিয়ে কনক্লুসিভ কিছু অবশ্যই এখনো পাওয়া যায় নি। নিউরোসাইন্সে গবেষণা চলছে। একই আর্টিকেলের এই পরিচ্ছেদে দেখতে পারেন, কিছুটা বলা আছে নিউরোসাইন্সের ডিসকভারি আর তার সাথে reinforcement learning এর লিংকের ব্যাপারে। এটা একটা ওপেন প্রবলেম বলেই জানি। আমার আলোচনায় সুখের সমতুল্য ব্রেইন সিগনালটি পাওয়া গেছে ধরে নিয়ে এগিয়েছি।
@রূপম (ধ্রুব),
মানুষের মস্তিষ্কের কোন সিগনালটা সুখের সমতুল্য, এটা নিয়ে কনক্লুসিভ কিছু অবশ্যই এখনো পাওয়া যায় নি – এটা আমি জানি। এটাও নিশ্চয়ই জানেন যে ব্যাথা নির্ণয় করার কোন কনক্লুসিভ উপায় এখন পর্যন্ত বের হয়নি। কেউ ব্যথা পাচ্ছে কি না তা ঐ ব্যক্তির ভাষ্য বিশ্বাস করা ছাড়া অন্যভাবে ভেরিফাই করার উপায় নেই। অর্থাৎ , সুখানুভূতি এবং ব্যথা আনডিটেক্টেবল। টাইম/স্পেস প্যারামিটারে কোন আনডিটেক্টেবল এবং আনভেরিফাইবল জিনিষ নিয়ে ভাবতে গেলে প্রথমেই যে প্রশ্নটা সামনে আসবে তা হলো , এটা আসলে কি ? একজন ভাগ্য গনকের বৃশ্চিক বা ধনু রাশিচক্রেরও গানিতিক মডেল থাকতে পারে কিন্তু তা কি কোন অর্থ বহন করে ?
আপনি মানুষ বা প্রাণী নিয়ে যখন কোন গাণিতিক মডেল বানাবেন তা অবশ্যই টাইম/স্পেস প্যারামিটারে ভেরিফাইবল হতে হবে কেননা টাইম/স্পেসে মানুষের ফিজিকাল এনটিটি আছে যা ভেরিফাই করা যায়।
@সংশপ্তক,
“সুখানুভূতি এবং ব্যথা আনডিটেক্টেবল” নাকি নট ইয়েট ডিটেক্টেবল, কোনটা মিন করলেন? মনে হচ্ছে প্রথমটা, কারণ আপনি বলছেন “কেউ ব্যথা পাচ্ছে কি না তা ঐ ব্যক্তির ভাষ্য বিশ্বাস করা ছাড়া অন্যভাবে ভেরিফাই করার উপায় নেই।” এই স্টেটমেন্টটা অনেক স্ট্রং। এর জন্যে রেফারেন্স দিন। পেইন ডিটেক্ট করার সিম্পটোমেটিক উপায় থাকবে না কেন ভাবা হচ্ছে? নার্ভের সিগনাল ট্র্যাক করেও এটা পাওয়া অসম্ভব এমনটা ভাবার কারণ দেখছি না আপাতত।
@রূপম (ধ্রুব),
রেফারেন্স নিচে দেয়া হলো :
Accurate Pain Detection Is Not Enough: Contextual an Attributional Style as Biasing Factors in Patient Evaluations and Treatment Choice।
Journal of Applied Biobehavioral Research, 2002, 7, 2, pp. 114-132.
@সংশপ্তক,
চোখ বুলালাম। পেপারটার জন্যে অনেক ধন্যবাদ। গবেষণার একেকটা ক্ষেত্র উদ্ধারের জন্যে রেফার করা পেপার অনেক মূল্যবান।
আপনি কি পেপারটা দেখেছেন? এখন একজন শিক্ষার্থী হিসেবে কিছু প্রশ্ন এবং মন্তব্য করছি।
পেপারটা প্রথম লাইনে “It is impossible to know exactly how much pain someone else is feeling” বলে শুরু করলেও পরে বলছে যে এই স্টাডিতে ফেশিয়াল এক্সপ্রেশন দেখে পেইন লেভেল একুরেট্লি ডিটেক্ট করা গিয়েছিল – “patients’ pain levels and emotional distress were accurately detected in the current study”। কিন্তু আলোচ্য সমস্যা হচ্ছে হিউম্যান রিস্পন্ডেন্টরা পেশেন্টদের কন্টেক্স্ট (যেমন অনসেটটা কন্ট্রোলেবল ছিল না আনকন্ট্রোলেবল ছিল, পেশেন্ট নিজে রিস্পন্সিবল ছিল নাকি ছিল না, এগুলো) বিবেচনায় নিয়ে একই পেইন লেভেলের কিন্তু দুইটি ভিন্ন কনটেক্স-এর পেশেন্টের জন্যে ভিন্ন ট্রিটমেন্ট সাজেস্ট করছে। “Thus, accurate detection of pain does not guarantee unbiased reactions toward the pain patient.”
এখন আলোচনার খাতিরে ধরে নিলাম প্রথম লাইনটি জেনারেলি কারেক্ট। মানে “how much pain” সেটা “exactly” বের করা সম্ভব না। এখন প্রশ্ন চলে আসে, সেটা এপ্রক্সিমেট করা সম্ভব কিনা?
ধরুন একটা মেশিন-লার্নিং-পেইন মডেল বিভিন্ন বাহ্যিক সিম্পটম আর নার্ভ সিগনাল দেখে পেশেন্টের একটা পেইন লেভেল প্রেডিক্ট করলো। এটা মেশিন লার্নিং এলগরিদম ব্যবহার করে এভিডেন্টলি পসিবল, এখানে প্রশ্ন কেবল সেই প্রেডিকশানের একুরেসি কেমন। একুরেসি মেজার করার জন্যে এক্সাক্ট পেইন জানা প্রয়োজন। আপনার বক্তব্য – “ব্যক্তির ভাষ্য বিশ্বাস করা ছাড়া অন্যভাবে ভেরিফাই করার উপায় নেই” এর উপর ভিত্তি করে ধরে নিতে পারি, পেশেন্টের মৌখিক ভাষ্যই পেইনের এক্সাক্ট ভ্যালু। ফলে সাবজেক্টের থেকে মৌখিকভাবে “exact” পেইন লেভেলটা জেনে নিলেই প্রেডিক্শানটার একুরেসি/এরর লেভেল মেজর করা সম্ভব হয়ে গেল।
এখন মডেলটা কাজের হতে হলে এই প্রেডিকশানের একুরেসি র্যান্ডম গেসের চেয়ে বেশি হতে হবে। এখন, পেশেন্ট নিজে যদি র্যান্ডমলি তার পেইন লেভেল নির্দেশ না করে থাকে, তাহলে র্যান্ডম গেসের চেয়ে বেশি একুরেসিতে তার পেইন লেভেল লার্নেবল। ফলে পেইন মডেলটা কাজের হবার যথেষ্ট সম্ভাবনা থাকলো।
এরকম এপ্রক্সিমেট মেজারের উপর ভিত্তি করে কিন্তু বিজ্ঞান অহরহ কাজ করে। যেমন আমার আইফোনের জিপিএসটা কখনো আমার একুরেট অবস্থান দিতে পারে না। একটা এপ্রক্সিমেট অবস্থান দেয়। মাঝে মাঝে সেটা ভ্যাস্টলি ইনকারেক্ট হয় (বাই হান্ড্রেড্স অব মিটার্স)। কিন্তু জিপিএস মডেলটা কিন্তু ধরে নেয় যে তার নির্ণীত অবস্থানটা কারেক্টই। আর সেটার উপর নির্ভর করেই আমাকে সাজেশন দেয়। সেই সাজেশন অধিকাংশ সময় মোটা দাগে আমার কাজেও দেয়।
এভাবে আমার বর্ণিত পারসনালাইজড ফাংশানটা ধরুন প্লেজার লেভেলকে এপ্রক্সিমেটলি মেজার করতে পারে, যেটার একুরেসি র্যান্ডম গেসের চেয়ে বেশি। আর সেই মেজারকে reinforcement learning এলগরিদমে ইনপুট করে প্রেডিক্শান সাজেস্ট করা যেতে পারে। ইউজারের তখন ইচ্ছা সেই সাজেশন সে গ্রহণ করবে কি করবে না। এটা কি এখনো একজন ভাগ্য গনকের বৃশ্চিক বা ধনু রাশিচক্রেরও গানিতিক মডেল-এর মত শোনাচ্ছে?
@সংশপ্তক,
টাইম/স্পেস প্যারামিটারে সুখানুভূতি এবং ব্যথা ডিটেক্টেবল ধরে নিয়েই আলোচনাটা করেছি। ফলে বুঝতে পারছি না যে
এই কথাটা ঠিক কোন জিনিসটাকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন।
@রূপম (ধ্রুব),
জিরো হাইপোথিসিস নিয়ম অনুসারে এটা ধরা যায় না।
ঐসব থিউরীকে বুঝিয়েছি যেগুলো জিরো হাইপোথিসিসের নিয়ম মানে না।
@সংশপ্তক,
কথাগুলো বেশ ইন্টারেস্টিং শোনাচ্ছে। তবে পুরোপুরি বুঝতে পারি নি। জিরো হাইপোথিসিস বলতে কি বুঝিয়েছেন? নাল হাইপোথিসিস? যেটা এখনো অপ্রমাণিত, সেটা ধরে নিয়ে এগুনো যায় না, এমন কিছু?
বেশ কিছুদিন পর মুক্তমনায় ঢুকে দেখি এই পোস্টটা বেশ জমে উঠেছে। আমি ব্যক্তিগতভাবে দর্শনের ক খও জানি না, তবে এখানে প্রানবন্ত বিতর্ক বেশ উপভোগ করলাম। যতোই দিন যাচ্ছে আর নতুন নতুন বিষয় সম্পর্কে জানতে পারছি- ততোই মনে হচ্ছে আসলে কিছুই জানি না। :-/ 🙁
আমার তো মনে হয় বিপ্লব পাল স্টিফেন হকিং এর কথাই বুঝতে পারেন নাই। বুঝতে পারলে ার তার এতো কষ্ট করে এই বিসাল আর্টিকেল লিখার কষ্ট করতে হইত না।
দর্শনের যে মার্কামারা প্রশ্নগুলা ছিল- বিগ ব্যাং এর আগে কি আছিল, শুন্য থেকেইকা ক্যামনে মহাবিশ্ব হইতে পারে, মহাবিশ্বের বা প্রাণ সৃশটির পেছনে কোন ডিজাইন আছে কিনা, আছে নাকি কোন আল্লা খোদার কেরামতি – এইগুলা সব প্রশ্নেরই ভাল জবাব দিতে পারতেছে বিজ্ঞান।। এই মুক্তমনাতেই তো কত লেখা এই কয়দিনে পড়লাম – দর্শনের এই প্রশ্নগুলার পদার্থবিজ্ঞানীদের দেয়া উত্তর। তারপরেও বিপ্লব পাল এই দর্শন নামের এই মরা লাশেরে ত্যাজা করার জন্য এত উৎসাহী ক্যান? উনার আচরণ এইখানে ইসলামি মোল্লাদের মতন। কোরানের ভুল দেখাইলেও, বা অচল হইয়া গেছে কইলেও ওইটারে আধুনিক গ্রন্থ বানাইতে যেমন মোল্লারা মোচর দিয়া উঠে, বিপ্লব পালও মরা দর্শনরে তরতাজা করনের জন্য তাবিজ কবজ আর মন্ত্র জপ্তাছে। এতে কি আর দর্শন ত্যাজা হইব?
সোভিয়েত ইউনিয়ন ভাইংগা যাওয়েনের পরেই কমিউনিজমের মৃত্যু ঘটছে যদি কেউ বলে – সেইটা কি ভুল হইব নাকি? এখন বাংলাদেশের সিপিবি আর বাসদ করা কিংবা বিপ্লব দাদার দেশে পশ্চিমবংএর জ্যোতি বসুর মরা পার্টিরে দেখায় যদি কেউ কয় – কমিউনিজম বহাল তবিয়তে বাইচ্চা আছে – এইটা শুনতে যেমন লাগে, তেমন লাগে বিপ্লবের মুখে দর্শন মরে নাই শুনতে।
স্টিফেন হকিং এর মত বিজ্ঞানীর ভুল ধরতাছে কোনখানকার কোন হরিদাস পাল – এর চেয়ে বড় তামাসা আর কি হইতে পারে।
@মৃত দার্শনিক,
appeal to authority আর যেখানেই মানাক মুক্তমনায় মানায় না।
@রৌরব,
আপনি কোথায় ডুব মারছিলেন ভাই। 🙂
গণতন্ত্র কি সাইন্টিফিক কিনা আপনাক জিগ্গেস করব ভাবতেছিলাম 😕
@রূপম (ধ্রুব),
ইয়ে ছুটির সিজন তো, আঙুরের রস নিয়ে একটু ব্যস্ত ট্যস্ত ছিলাম। আজ আবার বছরের শেষ দিন, ভীষণ অনিয়ম 😛 ।
প্রশ্নটা ভাঙুন একটু 🙂 । প্রশ্নটা কি এই: গণতন্ত্র মানব সুখ বর্ধনের সর্বোৎকৃষ্ট পদ্ধতি, এই দাবি বৈজ্ঞানিক ভাবে প্রমাণিত কিনা?
@রৌরব,
এই রকমই কিছু একটা। সম্পূরক প্রশ্ন হলো মানুষ তার সুখ বর্ধনের জন্যে বৈজ্ঞানিকভাবে বের করা অপটিমাল সমাধানটা গ্রহণ করতে না চাইলে করণীয় কি?
আপনি উপরে স্যাম হ্যারিস নিয়ে যে মন্তব্য করেছেন, পুরোটা আসে নি।
@রূপম (ধ্রুব),
তাহলে তো ওইটা হইলই না অপটিমাল! মানুষ তো স্টেটিক কোন সিস্টেম না, কাজেই সাধারণ অপটিমাইজেশন করলে চলবেই না। কেউ যদি দাবি করে সে বৈজ্ঞানিকভাবে অপটিমাল সমাধানটা বের করেছে, তাকে দেখাতে হবে:
১) এই সমাধান মানুষের ডাইনামিক চরিত্রের প্রেক্ষিতে robust। উদাহরণ স্বরূপ, সমাধানটা শোনার পর যেসব ঘাড় তেড়া লোক সমাধানটা এমনিতেই মানতে চাইবে না, তাদেরকে consideration এ নেয়ার পরও সমাধানটি শ্রেষ্ঠতর। এরকরম ডাইনামিক ব্যবহারের আরো উদাহরণ সম্ভব, তাদের সবকটিকে সমাধানটির handle করতে হবে।
২) যদি মানুষ মানতে না চায়, তার মানে জোর করে মানাতে হবে — সমাধানের অংশ হিসাবে, ওটাকে আলাদা করে দেখা চলবে না। তাহলে ওই জবরদস্তির মূল্য (শুধু আপাত মূল্য নয়, ভবিষ্যৎ মূল্য, যেমন ধরুন এই জবরদস্তির ফলে মানুষের মধ্যে স্বাধীনতাবোধের ক্ষতি হল, ভবিষ্যৎ কোন সংকটে এটা একটা খারাপ প্রভাব ফেলল) এই সব কিছু ধরবার পরেও দেখাতে হবে যে আলোচ্য সমাধান অপটিমাল।
আমার পক্ষে এধরণের কোন সমাধান কল্পনা করাই সম্ভব না। কিন্তু সত্যিই এরকম কিছু যদি পাওয়া যায়, আমার তো মনে হয় by definition সেটাকে গ্রহণ করা যেতে পারে।
গণতন্ত্র বৈজ্ঞানিক ভাবে প্রমাণিত বলে বলা যাচ্ছে না। controlled experiment কই? আপাতত এটা সম্ভব না আর কি।
@রৌরব,
বৈজ্ঞানিক ভাবে সমাজে ঠিক কি হওয়া উচিত, জনগনের ওপর চাপিয়ে, দুই রাষ্ট্রনেতা সমাধিক প্রসিদ্ধি লাভ করেছেন।
প্রথম জন হিটলার-দ্বিতীয় জন স্টালিন।
আপনি কার দিকে?
“কি হওয়া উচিত” এই প্রশ্নের উত্তর কখনোই বৈজ্ঞানিক হতে পারে না। কারন জীবনের উদ্দেশ্য কি, এটা বিজ্ঞান দিয়ে আমরা ভাবতে পারি-কিন্ত উত্তর আলাদা হবে। এটা হতেই পারে সমাজের কেও কেও গ্রামে গিয়ে সরল জীবন জাপন করতে চাইছে। কেও কেও নাগরিক জীবন পচ্ছন্দ করে। কারুর দরকার পানশালা। কারুর দরকার আশ্রম। কেও সন্তানহীন থাকতে পছন্দ করে- কেও অনেক সন্তান চাইছে। ভুল হচ্ছে মনে করা-এই সমস্যার সমাধান বৈজ্ঞানিক ভাবে সম্ভব। আর সেটা মনে করে নিজের জীবনাদর্শ অন্যের ঘারে চাপানো। যা হিটলার এবং স্টালিন করে প্রভূত খ্যাতিলাভ করেছেন।
সন্তান নেওয়ার ক্ষেত্রেও রাষ্ট্র জোর করতে পারে। যেমন চীন এক সন্তান চালু করেছিল। দরকার ছিল। তবে সেটা জোর না করে, পুরস্কারের মাধ্যমে দেওয়া উচিত। রাশিয়া যেমন চার সন্তানের মা কে একটা আস্ত বাড়ি উপহার দেয়।
সুতরাং কোন কিছু বৈজ্ঞানিক বা রাষ্ট্রএর জন্যে ঠিক মনে হলেও খুব বাধ্য না হলে সেটা আইন দিয়ে না করে, পুরস্কারের মাধ্যমে করা উচিত।
@বিপ্লব পাল,
না না, আমি ধ্রুব-র প্রশ্নটাকে পরিষ্কার করার চেষ্টা করেছিলাম। আমি জবরদস্তি করতে বলিনি। বলেছি, কোন সমাধান যদি বৈজ্ঞানিক অপটিমালিটির দাবিদার হয়, তবে সে বলতে পারবে না:
এই সমাধান অপটিমাল, তবে একে implement করার জন্য যা যা করতে হবে তার জন্য আমি দায়ি নই। বরং সমাধানটিকে হতে হবে holistic, একে সমাজে প্রতিষ্ঠার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা সহ বর্তমান ও ভবিষ্যৎ যাবতীয় ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া আওতার মধ্যে নেয়ার পরও তার অপটিমালিটি বজায় থাকতে হবে।
এটা মানস-পরীক্ষণ, আমার মন্তব্যে বলেছি কোন বাস্তব সমাধান এই criteria-র এক নিযুতাংশও পূরণ করেনা, কাজেই স্টালিন-হিটলার হোক বা যেই হোক, কারো সমাধানই জোর করে প্রচলনের পক্ষপাতী আমি নই। বরং উল্টো, আমি বেশ কিছুটা libertarian ঘেঁষা।
কমিউনিজম ও ফ্যাসিজম বৈজ্ঞানিক নয়, আপাত বৈজ্ঞানিক। বিজ্ঞানের ভাষা তারা ব্যবহার করে, তার rigor নয়। করার মধ্যে যেটা করেছে, ধর্মসুলভ বিশ্বাসের সাথে মিলিয়েছে বৈজ্ঞানিক নিশ্চিতি।
@রৌরব,
এই থ্রেডে উপরের মন্তব্যগুলো পড়ে এখানেই উত্তর করছি।
একটু সিরিয়াস আলাপ করা যাক। বোঝা যাচ্ছে বিজ্ঞানের এই অপটিমাল সমাধানকে রোবাস্ট, ডাইনামিক ও হলিস্টিক হতে হবে। ক্লাসিকাল অপ্টিমাইজেশান মেথডগুলো স্ট্যাটিক এনভারনমেন্ট কল্পনা করে। ডাইনামিক প্রোগ্রামিংকে একটা উপায় হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে কিংবা এরকম আরো কিছু উপায় জানা থাকলে জানান।
অপ্টিমাইজেশানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে বিষয়টা এখানে বাদ রয়ে গেল: অবজেক্টিভ ফাংশন। মানে যে জিনিসটা আপনি অপ্টিমাইজ করছেন, তার গাণিতিক ফাংশন রূপ। এটা বিজ্ঞানের দর্শনের মত গুরুত্বপূর্ণ বলে আমার মনে হয়, কারণ এটাই একমাত্র মেজার যা সলিউশনের কোয়ালিটি নির্দেশ করবে। সেই অবজেক্টিভ ফাংশনের ডিফাইন্ড অপ্টিমা থাকতে হবে, অপ্টিমাইজেশান মেথডের সেই অপ্টিমা খুঁজে পাওয়া গ্যারান্টিড হতে হবে। যতদূর বুঝি, নো অবজেক্টিভ ফাংশন, নো সাইন্টিফিক অপ্টিমাইজেশান।
এখন, অবজেক্টিভ ফাংশনটাকে সাইন্টিফিকালি বের করা একটা ওপেন প্রবলেম। যেমন ধরুন যেটা নিয়ে আলোচনা করছি, মানুষের সুখ বর্ধন। এটার সমতুল্য গাণিতিক অবজেক্টিভ ফাংশনটা কি হবে? একজন ব্যক্তির জন্যে ধরা যাক এই অবজেক্টিভ ফাংশনটা বের করা সম্ভব। যেমনটা বিপ্লব ভাই নির্দেশ করলেন, ধরা যাক আমি গ্রামে গেলে সুখী থাকব, আমার অপ্টিমাটা থাকবে যখন আমার অবস্থান গ্রামে (অনেক মোটা দাগের কল্পনাই করা যাক, স্যাম হ্যারিসের হালকার উপর ঝাপসা ‘বৈজ্ঞানিক’ আলোচনা দেখার পর মোটা দাগে কল্পনার সাহস বেড়ে গেছে 🙂 )।
এখন যদি একজন ব্যক্তির বদলে পৃথিবীর সকল মানুষের সুখ বর্ধনকে কনসিডার করতে হয়, তাহলে সেটার সমতুল্য অবজেক্টিভ ফাংশন লাগবে। এখন সেই অবজেক্টিভ ফাংশানটা কেমন হবে? সকল মানুষের সুখের সামেশান? ওয়েইটেড সাম?
এখানে সমস্যাটা বলি, ধরি প্লেইন সামেশান নিলাম। এখানে সকল মানুষ যেহেতু প্রতি নিয়ত ইন্টারেক্ট করে, সবার সুখ একতরফাভাবে একইসাথে বাড়ানো সমস্যা। মানে একজনেরটা বাড়ালে আর দশজনের সুখ কমে যাবার সম্ভাবনা থাকে।
এ অবস্থায় এটাও সম্ভব যে একটা অপটিমাল সলিউশন হচ্ছে গুটি কয়েক মানুষের প্রায় অসীম সুখ বর্ধনের বিনিময়ে পৃথিবীর বাকি মানুষগুলোকে শূন্য সুখ প্রদান করা।
এটা একটা এক্সট্রিম কেইস। কিন্তু এখান থেকে সহজেই উপলব্ধি করা যাচ্ছে যে এমন সমাধান আসতে পারে, যেখানে একটা বা দুটা মানুষকে শূন্য সুখ প্রদান করলে পৃথিবীর বাকি সব মানুষ সুখে থাকবে। এখন সেই মানুষটাকে বলি দেবার অধিকার আমাদের কিভাবে তৈরী হয়? এই ভাবনা এর আগেও অনেকে করেছেন, লেখকের নাম মনে পড়ছে না। গাণিতিকভাবেই যে এই সমস্যা উপস্থিত, এটা এখন দেখা যাচ্ছে।
এখন নিশ্চিতভাবে কন্সট্রেইন্ড অপ্টিমাইজেশানের কথা আসবে, মানে প্রতিটা মানুষের সুখের উপর একটা কন্সট্রেইন্ট আরোপ করা যে প্রতিটা মানুষ অন্তত X পরিমাণ সুখ পাওয়ার জন্যে এন্টাইটেল্ড। এখন এই X এর মান কে নির্ধারণ করবে? আমার কাছে কেউ যদি আমার এই X এর মান কত জানতে চায়, আমি সর্বোচ্চ যে সুখ পেতে পারতাম তার এক চুল কম সুখ পেতে রাজি থাকব না। এখন কিন্তু গাণিতিকভাবেই সম্ভব দেখানো যে X একটা নির্দিষ্ট মান a এর চেয়ে বড় হলে মানে X>a for some a, অবজেক্টিভ ফাংশনটার কোনো সলিউশন থাকবে না। আর X এর মান কমালে মানুষ মানতে চাইবে না।
অবজেক্টিভ ফাংশানের এই সমস্যাগুলো কিন্তু সকল অপ্টিমাইজেশানে বিদ্যমান। কিন্তু মানুষ যুতসই একটা অবজেক্টিভ ফাংশান ব্যবহার করেই ন্যাচারাল সাইন্সে এগিয়ে যায় কারণ, সেই সমাধান অন্তত কিছু একটা কাজে দেয়।
কিন্তু সমাজের বেলায় নিজের সুখের বিনিময়ে (X<a) সমাজের কিছু একটা কাজে দেবার জন্যে সমাধানের ভার বিজ্ঞানের উপর ছেড়ে দেবার কথা চিন্তা করা কঠিন।
অবজেক্টিভ ফাংশন নিয়ে আপনার কোনো ভাবনা থাকলে জানান। আমি যতদূর বুঝি, দুটি ক্যান্ডিডেট অবজেক্টিভ ফাংশান বৈজ্ঞানিকভাবে তুলনা করা যায় না, কারণ তুলনার জন্যে লাগে মেজার। আর মেজরের জন্যে লাগবে আরেকটা অবজেক্টিভ ফাংশন। একটা লুপ তৈরী হয়। ফলে এই লুপের গোড়ায় একটা অবজেক্টিভ ফাংশন থাকবেই যেটা আর বৈজ্ঞানিকভাবে যাচাইকৃত হওয়া সম্ভব নয়, আর্বিট্রারি হতেই হবে তাকে।
পদার্থবিজ্ঞানের ক্ষেত্রে বিজ্ঞান নৈর্ব্যক্তিকভাবে দেখতে পায় কারণ ওখানে সবকিছু জড়। এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রে (কসমোলজি) আমরা প্রকৃতির সূত্র উদঘাটনে ব্যস্ত থাকি, যেখানে পর্যবেক্ষকের দ্বারা পর্যবেক্ষণকে পরিবর্তিত করে ফেলার সম্ভাবনা নিয়ে চিন্তিত থাকতে হয় না। কিন্তু যে বিজ্ঞানে মানুষের ক্রিয়া জড়িত থাকে, সেখানে অবধারিতভাবে ব্যক্তিক ব্যাপার ঢুকে পড়ে। যেমন প্রকৃতির সূত্র E=mc^2 এর সাথে আমাদের ক্রিয়ার কোনো সম্পর্ক নেই। কিন্তু এটা ব্যবহার করে যখন আমরা নিউক্লিয়ার বোমা তৈরী করি, তখন সেই বিজ্ঞানে সংস্কৃতি চলে আসে। মানুষের ব্যক্তিক কম্পোনেন্ট ঢুকে পড়ে। ‘নিউক্লিয়ার বোমা বানানো ঠিক নাকি ঠিক না’, ‘চাঁদে যাওয়া ঠিক নাকি ঠিক না’, এসব প্রশ্ন কিন্তু সমান্তরাল মহাবিশ্ব আছে কি নেই, মহাবিশ্ব কি সম্প্রসারিত হচ্ছে কি হচ্ছে না, এমন প্রশ্নের চেয়ে গুণগতভাবে আলাদা। পরেরটা পর্যবেক্ষক নিরপেক্ষ প্রশ্ন। আগেরটাতে পর্যবেক্ষক নিজে প্রশ্নের ভেতরে ঢুকে পড়ছে (কারণ ঠিক বেঠিকের ধারণা মানুষের অর্থাৎ পর্যবেক্ষকের মনের বাইরে বিশ্বজগতের আর কোথাও বিরাজ করে না) এবং সত্যকে প্রভাবিত করছে। ফলে এই ঠিক কি ঠিক না প্রশ্নের উত্তর পর্যবেক্ষক সাপেক্ষে ভিন্ন হবার সম্ভাবনা থেকে যায়। বিজ্ঞানের যে পর্যবেক্ষক নিরপেক্ষতা, সেটা সে হারায়।
ফলে আমার মতে, ঠিক বেঠিকের প্রশ্নের উত্তরে আমরা বিজ্ঞানের ব্যবহার করতে পারি, কিন্তু প্রশ্নটা নিজে বৈজ্ঞানিক না।
@রূপম (ধ্রুব),
নিচে উত্তর।
@রৌরব, @রৌরব, ক্ল্যাসিকাল ওয়েলফেয়ার অর্থনীতির মতে গনতান্ত্রিক মুক্তবাজার সমাজ অ্যাবসোলিউট অপটিমাম না হলেও প্যারেটো অপটিমাম কারন প্রত্যেকেরই নিজের সুখের জন্যে চেষ্টা করার স্বাধীনতা রয়েছে। কিন্তু পরবর্তীতে সোসাল চয়েস থিয়োরী এসে গ্যান্জাম পাকিয়ে দিলো কারন অনেক সমস্যাবহুল (?) ব্যাক্তি আছে সমাজে যারা কেবল নিজেরা কেমন করে থাকবে সেটা নিয়ে চিন্তিত নয়, অন্যেরা কেমন থাকবে সেটার চিন্তায়ও ব্যাকুল। এই পরিস্থিতিতে কোনো অপটিমাম খুজে পাওয়া দুষ্কর।
আপনি ঠিকই বলেছেন যে মানুষের ডাইনামিক চরিত্রের প্রেক্ষিতে কোনো ডিফিনিট অপটিমাম পাওয়া প্রায় অসম্ভব। আমরা যখনই সমাজ-অর্থনীতি র মতো কমপ্লেক্স সিস্টেম বোঝার পথে অনেকদূর এগিয়ে যাই, সিস্টেমটি তখনই আবার পাল্টে আরো জটিলতর হয়ে যায় কারন আমরা এই সিস্টেমেরই অংশ এবং আমরা আমাদের বোঝা অনু্যায়ী রিআ্যাক্ট করি।
@সফিক,
:yes:
মুক্তবাজার অর্থনীতির মধ্যে এই জটিলতার প্রতি একটা humility-র ভাব রয়েছে যার কারণে বহু মারাত্মক সমস্যা সত্বেও আপাতত এটার কোন বিকল্প দেখা যাচ্ছে না। বস্তুত স্বাধীনতার ধারণাটিকেই আমার মনে হয় জটিলতার প্রতি শ্রদ্ধার একটি প্রকাশ বলে, এবং স্বাধীনতার ধারণা এই কারণেই মূল্যবান।
@সফিক,
এটা খুব ভালো আলোচনা হয়েছে! :yes:
@রূপম (ধ্রুব),
পদার্থবিজ্ঞানের সূত্র(LOP)–>বিবর্তন—> মানুষ। তাই যদি হয় তাহলে মানুষ কি করবে না করবে তা বিবর্তনের (বা LOP) এর মধ্যেই প্রচ্ছন্ন বা নিহিত আছে। মানুষ এক নিমিত্ত মাত্র। বৈজ্ঞানিকভাবে বের করা অপটিমাল সমাধানটা মানুষ মানবে কি না মানবে বা না মানলে কি হবে তা বিবর্তনই নির্ধারণ করবে। এবং করছেও। বিবর্তনীয় মনোবিদ্যা নিয়ে মুক্ত-মনায় এই যে এন্তার লেখা লেখি হল তার কোন ইম্প্যাক্ট ই হল না দেখছি 🙂
@অপার্থিব,
২০১০ সালে এটা অন্তত বলা যায় মানুষের ব্যাবহার এবং চিন্তার ক্ষেত্রে ডি এন এ কোডের ভূমিকার থেকে সামাজিক প্রভাব অনেক অনেক বেশী। সুতরাং মানুষের ব্যাবহার নির্মানের ক্ষেত্রে জেনেটিক কোডের ভূমিকা আংশিক এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে মার্জিনাল ও।
@অপার্থিব,
সেক্ষেত্রে বৈজ্ঞানিকভাবে অপটিমাল সমাধান বের করারও তো দরকার নেই। বৈজ্ঞানিকভাবে অপটিমাল সমাধান বের না করলে কি হবে, মানুষ কি তার সামষ্টিক আচরণেই একটি অপটিমাল সমাধানের ছায়া বের করতে পারবে কি পারবে না, সেটা বিবর্তনই ঠিক করে দেবে। এখানে আমাদের করার কি আছে?
বিবর্তনীয় মনোবিদ্যা নিয়ে মুক্ত-মনায় এন্তার লেখালেখির ফল যেটা হয়েছে, আমরা বুঝতে শিখেছি, বিবর্তনই সব ঠিক করে দিবে। আমরা নিমিত্ত মাত্র।
বাহ! সো ওহাই ওয়ারি এবাউট এনি থিং। চিয়ার্স!
@রূপম (ধ্রুব),
ওহাই -> হোয়াই
@রূপম (ধ্রুব),
“আমাদের”? মানে মানুষ নামক বিবর্তনের উৎপাদের? সেটাই তো বিবর্তনের (LOP) নির্ধারণ করবে। যেটা নির্ধারণ করবে সেটাকে “আমাদের” বলে “আমরা” চালাব।
হোয়াই? কারণ ওয়ারি করাটাও একটা বিবর্তনীয় প্রবৃত্তি।
@অপার্থিব,
সাইন্স মানেই ডিটারমিনিজম?
@রূপম (ধ্রুব),
আর অন্য মন্তব্য থেকে উদ্ধৃতিঃ
ডিটারমিনিজম শব্দটা পরিহার্য্য। কারণ এটার কোন সঠিক বা “সর্বসম্মত” সংজ্ঞা নেই, এটা সনাতন (মৃত 🙂 ?) দার্শনিকদের কয়েন করা শব্দ। এটার যে যার খুশিমত মানে করে নেয় তর্কের সুবিধার জন্য। এমন কিছু কি জানা আছে যা বিজ্ঞানের নিয়ম মেনে চলেনা? থাকলে উদাহরণ কই? অলৌকিকের সংজ্ঞাই তো সেটা। বিজ্ঞানের নিয়ম মেনে চলেনা এরকম কিছুতে বিশ্বাস করা শেষ পর্যন্ত অলৌকিকে বিশ্বাসই দাঁড়ায়। সমাজ, পরিবেশ, সংস্কৃতি এগুলি অলৌকিক কিছু নয়, বিজ্ঞানের নিয়ম বহির্ভূত নয়।
@রূপম (ধ্রুব),
“আমাদের” অর্থাৎ মানুষ নামক বিবর্তনের উৎপাদের? সেটাই তো বিবর্তন(LOP) নির্ধারণ করবে। যেটা নির্ধারণ করবে সেটাকে “আমরা” “আমাদের” কাজ বলে চালিয়ে দেব।
হোয়াই? কারণ ওয়ারি করাটাও একটা বিবর্তনীয় প্রবৃত্তি।
@রৌরব,
appeal to authority এখানে প্রযোজ্য নয়। appeal to authority হেত্বাভাসের অর্থ হল : “অমুকে খুব বড় একজন (এটা/ওটা) কাজেই তাঁর কথা ভুল হতে পারে না।” এটা বলা। কিন্তু যেটা মৃত দার্শনিক বলছেন (কটাক্ষ করে) সেটা হল কোন সাধারণ (অপেশাদার/অবিশেষজ্ঞ) মানুষ যদি কোন বড় একজন ‘ক” এর উক্তিকে ভুল বলে রায় দেয় তাহলে সেটা তারই ভুল। এটা ঠিক appeal to authority না হলেও একেবার ১০০ ভাগ যৌক্তিক নয় ঠিকই। কিন্তু কোন একজন বড় বিশেষজ্ঞের তত্বকে ভুল ঘোষণা করার মত একটা Extraordinary claim করলে তাকে অবশ্যই Extraordinary যুক্তি বা প্রমাণ দিতে হবে। আর সেটা স্বাভাবিক ভাবেই কোন নামকরা সাময়িকীতেই প্রকাশিত হতে হবে। কাজেই মৃত দার্শনিক এর কথা১০০ ভাগ যৌক্তিক না হলেও বাস্তবসম্মত ।
@অপার্থিব,
(১) সমালোচনাটি ” ন্যাচারিলিজমের” অধ্যাপক থেগাডের লেখা থেকে নেওয়া
(২) “ন্যাচারালিজমের” এক্ষেত্রে থেগাড একজন আন্তর্জাতিক ভাবে খ্যাতি সম্পন্ন দার্শনিক।
http://en.wikipedia.org/wiki/Paul_Thagard
সুতরাং এক্ষেত্রে যে বিষয়ে তর্ক হচ্ছে, তাতে থেগাডই বিশেষজ্ঞ বরং হকিং ই অনধিকার চর্চা করেছেন।
@বিপ্লব পাল,
কঠিন! এরকম দুধারী করাত চালিয়ে দিলেন :lotpot:
@বিপ্লব পাল,
আমার বক্তব্যটা জীন বনাম পরিবেশ নিয়ে ছিল না। সেটা ভিন্ন প্রসংগ। মানুষ বনাম বিজ্ঞান এর প্রশ্নের ব্যাপারে ছিল। জীন বলুন,সমাজ বলু্ন আর মানুষই বলুন, সবই চূড়ান্ত বিচারে বিবর্তনের ফসল। কাজেই বিজ্ঞানের দ্বারা লব্ধ ফল (নৈতিকতার ব্যাপারে) মানুষ অনুসরণ করবে কিনা (যেটা প্রসংগ ছিল) সেটার উত্তরে বলতে হয় বিবর্তনই তা নির্ধারণ করবে।
@অপার্থিব,
আপনি এই কমেন্টা লিখলেন বিবর্তনের কারণে?
বিজ্ঞান নিয়ে দুইটা ভিউ আছে। একটা হচ্ছে, প্রকৃতি বিজ্ঞানের সূত্রে চলে। আরেকটা হচ্ছে, মানুষ বিজ্ঞান আবিষ্কার করেছে প্রকৃতির রেগুলারিটি সূত্রবদ্ধ করার জন্যে (এ নিয়ে লীনা রহমান কিছু বলেছেন)। দুটা কিন্তু এক নয়। বিজ্ঞানের দর্শন প্রথম ভিউটার ব্যাপারে ভয়ানক ক্রিটিক্যাল। আপনি যদি বলেন অমুকটা বিবর্তন দ্বারা হয়েছে, তমুকটা বিবর্তন দ্বারা হয়েছে, স্টেটমেন্টটার ফলসিফায়াবিলিটি থাকে না। এটা কোনো বৈজ্ঞানিক স্টেটমেন্টও আর থাকে না। বৈজ্ঞানিক স্টেটমেন্টকে আরো প্রিসাইস হতে হয়।
আপনি বিজ্ঞানের যে ভিউ ধরে ডিটারমিনিজমের দিকে এগুচ্ছেন, সে ভিউটি খুব মজবুত নয়। এ নিয়ে আমার লেখাটি পড়তে পারেন। সেখান থেকে উদ্ধৃত করছি:
সাধারণ অর্থে আমরা বলি, আমরা বিবর্তনজাত। কিন্তু সেখান থেকে যখন ডিটারমিনিজমে যাবেন, তখন আপনি বিজ্ঞানের কোন ভিউটি নিচ্ছেন, সে ব্যাপারে সতর্কতা আবশ্যক।
@রূপম (ধ্রুব), :yes:
@রূপম (ধ্রুব),
অধিকাংশ সিস্টেম ক্যাওটিক বলে কোন গণিতিক মডেলে ফেলে “প্রেডিক্ট” করতে সমস্যা হয়। তার মানে পারা যাবে না তা না নয়। ধরা যাক
“মানুষের” একটা গণিতিক মডেল বানানো হল জন্মের সময়-
কিন্ত সেই মডেল কাজ করবে না । কেন? কারন মানুষের সেই মডেলটি প্রতিমুহুর্তে আপডেট করতে হবে-মেশিন লার্নিং মডেলের মতন। কারন প্রতিদিন সেই মডেলটি শিখছে।
কিন্ত এই ভাবে মানুষের কিছুটা হলেও মেশিন লার্নিং মডেল সম্ভব হবে। যা দিয়ে তার রোগভোগ এবং ব্যাবহার কিছুটা প্রেডিক্ট করা যাবে।
কিন্ত কাওটিক সিস্টেমের সম্পূর্ন মডেল সম্ভব না।
@বিপ্লব পাল,
বেশ ভালো লাগলো এই মন্তব্যটা।
:yes:
একটু সংযম ধরে না রাখতে পারা জাস্টফান :):
কিন্তু মানুষ তখন দেখবেন মেশিন লার্নিং মডেলটাও করতলগত করে বলবে: মানুষের সকল কর্ম আসলে ওই মেশিন লার্নিংয়ের মডেল দ্বারাই নির্ধারিত হয়। মানুষ এখানে কেবল নিমিত্ত মাত্র। 😛
কেউ দয়া করে মাইন্ড করবেন না। কারণ এ ধরনের ভিউ নিয়ে মজা করলেও, আমি নিজে এই সমস্যায় পড়েছিলাম। ঘটনাটা বলি। আমার গবেষণা ক্ষেত্রে একটা মেশিন লার্নিং এলগরিদম আছে, যার নাম actor critic method। এটা এক ধরনের এপ্রক্সিমেট ডাইনামিক প্রোগ্রামিক এলগরিদম ক্লাস। এখানে আর্টিফিশাল এজেন্টের বিভিন্ন সম্ভাব্য একশানের প্রবাবিলিটি এস্টিমেট করা হয়, অপটিমাল বিহেভিয়ার অর্জনের জন্য। কিন্তু প্রতি মুহূর্তে এজেন্ট একশান বাছাই করবে কেবল একটা। ফলে একশান বাছাই করার জন্যে রুলেট হুইল ব্যবহার করা হয়, মানে রান্ডম নাম্বার জেনারেশন এখানে জড়িত।
আমি আমার গবেষণা গুরুকে একদিন বললাম: actor critic method আমার একদম পছন্দ নয়। এখানে কয়েন টসিঙ (রান্ডম নাম্বার জেনারেশন) জড়িত। আমার মনে হয় না আমাদের মস্তিষ্কের কোনো জায়গায় একটা কয়েন টস করা হয়।
তিনি তখন বললেন, তুমি রিয়েলিটি বুঝতে চাইছ, তাই তো? ভুলে গেলে, বিজ্ঞানীর কাজ কিন্তু রিয়েলিটি বোঝা নয়। পর্যবেক্ষণের পূর্বাভাস করা তার কাজ। পর্যবেক্ষণের পূর্বাভাসে actor critic method কার্যকর কি না, সেটাই আমাদের দেখার বিষয়।
@রূপম (ধ্রুব),
প্রোগ্রামিক -> প্রোগ্রামিং
@রূপম (ধ্রুব),
মেশিং লার্নিং মডেল গুলো দিয়ে ভবিষয়তে অনেক সমাজ এবং জৈব বিজ্ঞানের মডেল গড়া সম্ভব হবে যা এখনো হয় নি। বিবর্বন মনোবিজ্ঞানের প্রায় সব মডেলই ফালতু-কারন ওগুলো স্টাটিস্টিক্যাল ডেটারমিনিস্টিক মডেল। অথচ প্রতিটা মানুষের আসল মডেল হওয়া উচিত এডাপ্টিভ-এবং পরিবেশ থেকে শিক্ষার ব্যাপারটা সেখানে প্রতিনিয়ত্ আসে। শেষমেশে মানুষের ব্যাবহারে পরিবেশই সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ন হয়। এই ধরনের মডেল মেশিং লার্নিং ছারা সম্ভব না। যা জেনেটিক এবং পরিবেশ একসাথে ব্যাখ্যা করবে।
@অপার্থিব,
সাথে এটা অস্বীকার করার উপায় নেই, আপনার ভিউটি মারাত্মক ইন্টারেস্টিং। বিশেষ করে আমাদের বলে চালায়ে দেব লজিকটা :lotpot:
@অপার্থিব,
বিবর্তনকে যদি একটা প্রিন্সিপল হিসাবে দেখা যায়-তাহলে
এটা ঠিকই যে সংস্কৃতি থেকে মানুষ-যোগ্যতম ইউনিট টিকে থাকত। কিন্ত
এই কৃত্রিম প্রজননের যুগে, বিবর্তনের প্রিন্সিপলটি কাজ করবে বলে আপনার মনে হয়? আমার ত মনে হয়-অনেক ধরনের সম্ভাবনা-আমরা দেখতে পাচ্ছে। তার একটি হল কৃত্রিম প্রজননের জন্যে বিবর্তন সম্পূর্ন অকেজো হওয়া।
@বিপ্লব পাল,
বিবর্তনের প্রিন্সিপল এর মূল লক্ষ্য যেটি “বংশাণু সংরক্ষণ” সেটা কিন্তু কৃত্রিম প্রজননের দ্বারা বাতিল হয়ে যাচ্ছে না। কৃত্রিম প্রজননের দ্বারা তো মানুষ সৃষ্টিই হচ্ছে, ধ্বংস তো হচ্ছে না। আর আমার মূল বক্তব্য ছিল মানুষের সৃষ্টি বিজ্ঞানের নিয়মেই, অলৌকিক ভাবে নয়। তাই মানুষের সব কর্ম কান্ডই বিজ্ঞানের নিয়মেই হবে, কৃত্রিম প্রজনন ও তার ব্যতিক্রম নয়।
@অপার্থিব,
একমত না। বিবর্তনের অবজেক্টিভ বংশানু সংরক্ষণ এবং প্রকৃতিতে টিকে থাকার জন্যে উন্নতি করন। কিন্ত পদ্ধতির মধ্যে মিঊটেশন এবং সিলেকশন কাজ করে। মিঊটেশন এবং সিলেকশন না থাকলে বিবর্তন নেই। কারন ওইগুলির জন্যেই সংস্কৃতির সংশ্লেষন হয়।
@মৃত দার্শনিক,
থেগাড উনার প্রবন্ধে দেখিয়েছেন,
(১) বিজ্ঞান দিয়ে যাবতীয় প্রশ্নের উত্তর দেওয়া দর্শন শাস্ত্রএ ন্যাচারিজম বলে যা, দর্শনের অন্যতম বৃহত্তম শাখা–গত আড়াই হাজার বছর ধরে।
তাহলে হকিং নতুন কি বললেন ?
(২) উনি এটাও দেখিয়েছেন তার উত্তর কিছুটা বিজ্ঞান এবং অধিকাংশটাই দর্শন ( নন টেস্টেবল ম্যাথেমাটিক্যাল মডেল) -সুতরাং বিজ্ঞানের জন্যেই দর্শনের প্রয়োগ লাগে-যখন যথেষ্ট রেজাল্ট হাতে থাকে না। সুতরাং দর্শনের ব্যাবহার হতেই থাকবে বিজ্ঞানের প্রয়োজনে।
একটা নতুন ফেক নাম নামিয়ে, অন্ধের হস্তি দর্শন করে নববর্ষের শুরুতে বেনামে গালাগাল করে লাভ কি? যদি নিজের কথার ওপর অতই বিশ্বাস থাকে, নিজের নামে তর্ক করুন? সেখানে ভয় পাচ্ছেন কেন? মানে আপনি নিজেও জানেন, আপনি যা লিখছেন বা বলবেন তা ঠিক না-বেইজ্জ্বত হওয়ার ভয় আছে। তাই লুকিয়ে ছদ্মনামে গালাগাল দিচ্ছেন।
নিজের নামে গালাগাল দিলে আমার আপত্তি নেই। কিন্ত ছদ্মনামে একবার অসীম আরেকবার মৃত দার্শনিক ইত্যাদি নাম বার করে আলোচনা করতে দেওয়ার রাশানাল মডারেটর সাহেবই জানেন। এই ব্লগে আমাকে গালাগাল দেওয়ার জন্যে এতগুলো অবতার নামানোর দরকার নেই। যদি সত্যই কিছু বুঝে থাকেন এবং আত্মবিশ্বাস থাকে সামনা সামনি বলুন। নিজের জ্ঞানের প্রতি আত্মবিশাস নেই, সেত ছদ্মনামের ব্যাবহার থেকেই বোঝা যাচ্ছে।
@বিপ্লব পাল, ঘটানাগুলো আমিও বুঝে পেল্লাম, যেখানে আমার মন্তব্য অকারণে প্রকাশ পায় না সেখানে গালাগালের ফেক নামের আইডিগুলোর রসময় বাণী খুব যত্ন সহকারে স্থান পায় – যেকারণে বিজ্ঞানের নতুন মৌলবাদের উত্তান বলে আখ্যা করতে ইচ্ছে হচ্ছে । স্টিফেন হকিং বলবেন “দর্শন মৃত” আর সবাই দর্শনকে মৃত বলা শুরু করে দিলো । আরে ভাই আগেতো দর্শন কি বুঝতে-জানতে হবে নাকি । দর্শনতো নিজের মাঝে খুঁজবেন নাকী ? এতেতো লোকসানের কিছু নেই । বিজ্ঞান সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করতে হলে গবেষণাগারের প্রয়োজন পড়ে -আর দর্শনের জন্য নিজের মানসিকতা যথেষ্ট । নিজেকে জানার-বুঝার মাঝে দর্শন লুকায়িত; সেজন্য দর্শনকে অস্বীকার করা মানে নিজেকে অস্বীকার করা -যার মানে দ্বারা সবকিছুকে অস্বীকার করা । আর এই অস্বীকার করার মাঝে ও এক দর্শন লুকায়িত (খুব খেয়াল কইরা কিন্তু ) ।
@বিপ্লব পাল,
আমি ভেবেছিলাম এই পোষ্টে আর মন্তব্য করব না।আপনার উপরের মন্তব্যের কারণে বাধ্য হচ্ছি।
আমাকে আর মৃত দার্শনকিকে একই ব্যক্তি মনে করার কারণ কি??আমাদের ব্যক্তব্য আপনার বিপক্ষে গেছে তাই? আর এধরণের ভিত্তিহীন অভিযোগের মাধ্যমে আপনি কি প্রমাণ করতে চান?
আমি কখন আপনাকে গালাগাল করলাম??
আর নামে বা বেনামে যাই হোক গালাগাল করা কখনই কাম্য নয়।
আপনিই বরং আপনার পোষ্টের শেষে অনেককে ব্যঙ্গ করেছেন।
যারা পোষ্টে মন্তব্য করেছেন, সেগুলো পড়লেই বুঝতে পারবেন আসলে কার বেইজ্জতি হয়েছে।
আমি এই পোষ্টে আর কোন মন্তব্য করব না। :no:
I have never found such a poor writings in any where about philosophy of science. It is totally inconsistent and devoid of any cognition.
SIDDHARTHA SHANKAR
@siddhartha,
Understood-you are upset. But you don’t need to spray spamming for that-instead you need to explain inconsistency or logical fallacy as claimed by you. Unless you do that, your comments are totally useless or productive-and can be ignored as street barking.
@বিপ্লব পাল, DEAR PAUL
The very subject Philosophy is not so easy to grasp as it is thought to be. Its importance does not depend on its avowal or rejection by anybody. You commented , many AGA_BOGA students do study this subject but actually it is over simplified comment. The reality is different in most of the cases. Besides this you could fail to defend this subject .
@siddhartha এবং বিপ্লব পাল
আপনারা দয়া করে বাংলায় মন্তব্য করেন। ইংরেজিতে বা রোমান হরফে বাংলায় মন্তব্য মুক্ত-মনার নীতিমালা বিরোধী।
I have never found such a poor writings in any where about philosophy of science. This is unfortunate.
দর্শন তথা ফিলোসফি শব্দের আক্ষরিক অর্থ হচ্ছে “প্রজ্ঞার প্রতি ভালোবাসা”। আর প্রজ্ঞা বলতে আমি বুঝি “জ্ঞান অর্জন এবং সেই জ্ঞানকে সবচেয়ে গঠনমূলক ভাবে ব্যবহারের ক্ষমতা”। তাই মনে হয় দর্শনকে মৃত বলার অর্থ মানবতাকে মৃত বলা।
@শিক্ষানবিস, দর্শনেকে কিন্তু হকিং মৃত বলেননি , ”দর্শন শাস্ত্র” মৃত বলেছেন।
আর দর্শনের আক্ষরিক অর্থ যাই হোক না কেন, বাস্তবে
কি ব্যবহৃত হয়??
দর্শন শব্দটি বিভিন্ন অর্থে ব্যবহৃত হয়, যেমন কোন বিষয় সম্পর্কে কোন ব্যক্তির ধ্যান-ধারণা, চিন্তাভাবনও ঐ বিষয় সম্পর্কে তার দর্শন।
@শিক্ষানবিস,
Phil=Love
Philosophy is therefore Love for Knowledge
জ্ঞানের জগতের অনেকটাই অভিজ্ঞতাবাদ। কিন্ত অভিজ্ঞতাবাদের সবটাই বিজ্ঞান না-অনেকটাই বিজ্ঞান না। অভিজ্ঞতা সূত্র এবং তত্ত্বের জন্ম দিলে-মানে যে অভিজ্ঞতা রিপিট করে-সেখান থেকে ইনডাকশনের মাধ্যমে বৈজ্ঞানক সূত্রের জন্ম হয়।
@বিপ্লব পাল,
আমার মনে হয় বিজ্ঞানকে অভিজ্ঞতা ছাড়া সংগায়িত করা যায় না, অভিজ্ঞতা না হলে সূত্রের জন্ম হয় না, হয় না তত্ত্বের প্রকাশ, তাই বিজ্ঞান অবশ্যই যা কিছু অভিজ্ঞতা লব্ধ তাই ব্যাখ্যা করতে পারে, অভিজ্ঞতার বাইরের কিছু বিজ্ঞান স্পর্শ করতে পারে না, এর এই অপারগতা পূরণ করে মনে হয় দর্শন। তাই দর্শন ছাড়া মানুষ বিকলাংগ। কারণ, অভিজ্ঞতার বাইরে যেতে পারি বলেই আমরা এত উন্নত, এত মহৎ, আমাদের চিন্তা এত শক্তিশালী, সবকিছুকে নিয়ন্ত্রণ করার প্রজ্ঞা লাভ করি। তাই দর্শন না থাকলে আমরা মানুষ না। অন্য কিছু হতে পারি। কারণ, বিজ্ঞানের বিচরণ ক্ষেত্র সীমাবদ্ধ।
@মুহাইমীন,
না।
[১] অভিজ্ঞতার বাইরে যেতে হবে, তার কোন মানেই নেই।
[২] বিজ্ঞান অভিজ্ঞতাবাদের অংশ। কিন্ত অভিজ্ঞতাবাদ মানেই বিজ্ঞান না।
[৩] সব অভিজ্ঞতা বিজ্ঞানের অংশ না।
[৪] বিজ্ঞানের অংশ হতে গেলে সেই অভিজ্ঞতার মধ্যে স্ট্রাকচার থাকতে হবে
ক) রিপিটিবিলিটি ( একই অবস্থানে
খ) ইনডাক্টিবিলিটি
@বিপ্লব পাল, আমি স্ট্রাকচার জিনিষটা বুঝতে পারতেছি না, বুঝিয়ে বলেন তো।
@মুহাইমীন,
বাংলায় বলেন বুঝি নাই।(আপনার এই অভ্যাসটা ভাল না, সব শব্দ বাংলায় বলবেন যাতে আমাদের মত মূর্খরা বুঝতে পারে)
@মুহাইমীন,
একটা উদাহরন দিচ্ছি। তুমি জীবনে দেখলে
শর্ষে ইলিশ খেলে পেটে আমাশা হচ্ছে। প্রথমে নিজের ক্ষেত্রে দেখলে, তারপরে দেখলে বন্ধুর ও তাই হচ্ছে। এটা অভিজ্ঞতা-তাই যদি এখন সূত্র বানাও
” শর্ষে ইলিশ খেলে পেটে আমাশা হয়”
এটা বৈজ্ঞানিক সূত্রের অন্তর্ভুক্ত কিভাবে হবে?
এটাকে বৈজ্ঞানিক সূত্রভুক্ত করতে, একই ইলিশ মাছ ( এক জায়গা থেকে ধরা), একই তেলে ভেজে, একই শর্ষেতে সারা বছর ধরে ১০০০ লোককে খাওয়াতে হবে। খাওয়ানোর আগে প্রতিটা লোকের পেট ভালো থাকা দরকার।
এবার যদি দেখা গেল, অধিকাংশ লোকের পেট খারাপ হচ্ছে, তাহলে সম্ভাবনা হচ্ছে
ইলিশ, জল, তেল বা শর্ষে বা এদের কম্বিনেশনের জন্যে এমন হয়। তারপর এলিমিনেট করতে হবে। দেখতে হবে শুধু বর্ষার সময় এমন হচ্ছে কি না।
অর্থাৎ প্রথমেই পরীক্ষাটা বারবার একই কন্ডিশনে করে দেখতে হবে রেজাল্ট এক আসছে কি না।
তারপরে সেটা যদি হয়, তাহলে দেখতে হবে আর কোন পরীক্ষার রেজাল্ট আমরা সেই সুত্র দিয়ে ভবিষয়ত বানী করতে পারছি কি না। অভিজ্ঞতার রেজাল্ট এই দুটো ক্রাইটেরিয়া মানলে তবেই সেই অভিজ্ঞতা বৈজ্ঞানিক জ্ঞান হিসাবে স্বীকৃত হবে। তার আগে এগুলো সাধারন অভিজ্ঞতা হিসাবেই চলবে।
@মুহাইমীন,
স্ট্রাকচার জিনিসটা দর্শনে সব থেকে গুরুত্বপূর্ন জিনিস।
স্ট্রাকচার মানে অনেক কিছু। ধরুন জ্ঞান অনেক রকমের হয়-এবার সেই জ্ঞানকে বিশ্লেষন করবেন কিভাবে?
তাহলে সেই জ্ঞানের শ্রেনীবিভাগ [ট্যাক্সোনমি ] দরকার। দরকার, সম্পর্ক নির্নয়। এগুলি সবই এপিস্টেমলজির অংশ
http://en.wikipedia.org/wiki/Epistemology
যার একটি বিশেষ মুভমেন্ট স্টাকচারালিজম -যারা সমাজ, সংস্কৃতি, ভাষার মধ্যে ডেফিনিটিভ প্যাটার্ন খোজে।
http://en.wikipedia.org/wiki/Structuralism
ভাসা-ভাসা জ্ঞান নিয়ে দুনিয়ার তাবত বিষয়ে (ডাংগুলি থেকে শুরু করে কোয়ান্টাম থিয়োরি) বিশেষজ্ঞ হওয়ার মেকি ভাব দেখানো যায় বড় জোর। অথচ এই প্রবণতাই কারো কারো মধ্যে প্রবল।
@রা নাহি দেয় রাধা,
নিজেকে আড়ালে রেখে অন্যের দোষ ধরার প্রবণতাও কারো কারো মধ্যে প্রবল। সামনে এসে যুক্তি দেখাতে এরা হয় অপারগ। অন্যের জ্ঞান দেখে শুধু হিংসাই করতে পারে। গুপ্তধনের সন্ধান পাচ্ছেন না বলে কি এমন মন্তব্য করলেন?
@রা নাহি দেয় রাধা, আসলে দার্শনিকগণ নিজেদের সব বিষয়ই জ্ঞানী মনে করেন। কিন্তু কোন বিষয়ই তাদের পূর্ণাঙ্গ জ্ঞান থাকে না। সেকারণেই তারা তাদের জ্ঞান দিয়ে নতুন কিছু উদ্ভাবন করতে পারেন না। তবে কোন বিষয়ে “অল্প জ্ঞান ভয়ংকরী” তা দার্শনিকগণ বুঝেন কিনা সেটও চিন্তার বিষয়।
@অসীম সময়,
আপনার দর্শন জ্ঞানে আমি পুলকিত!
আচ্ছা সুনীল গাঙ্গুলীকে গিয়ে যদি আপনি বলেন, তোমার কোন উদ্ভাবন করার ক্ষমতা নাই!
উদ্ভাবন লোকে করে নিজের ক্ষেত্রে। বিজ্ঞানী আবিস্কার করে প্রকৃতির মধ্যে লুকিয়ে থাকা রহস্য। প্রযুক্তি বিদ কিন্তু প্রকৃতির রহস্য উদ্ভাবন করে না- তারা করে, নতুন যন্ত্র তৈরী করে। সাহিত্যিক উন্মোচন করে নর নারীর অজানা সম্পর্ক। ঠিক তেমনই দার্শনিকদের কাজ জ্ঞান এবং চিন্তার মধ্যে নতুন স্ট্রাকচার খোঁজা-নতুন সম্পর্ক আবিস্কার। সেটাই তাদের উদ্ভাবন। এগুলো বুঝতে আপনাকে এখনো অনেক দৌড়াতে হবে। এই ভাবে এখানে ওখানে ব্লগে মন্তব্য করে হবে না।
@বিপ্লব পাল,
বিজ্ঞানীরা শুধু প্রকৃতির মধ্যে লুকিয়ে থাকা রহস্য আবিস্কার করেন এটা আপনি কোথায় পেলেন!! বিজ্ঞানীর আবিষ্কার, বিভিন্ন তত্ত্ব কাজে লাগিয়ে নতুন প্রযুক্তি উদ্ভবন,এবং অনেক ক্ষেত্রে বিভিন্ন যন্ত্রের নতুন মৌলিক ডিজই্নও করে থাকেন। Applied Science নামে যে কোন কিছু আছে তা বোধহয় ভুলে গেছেন।
প্রযুক্তিবিদগণ যদিও বিজ্ঞানী নন, তবে বর্তমানে তাদের কার্যপরিধি শুধু নতুন যন্ত্র তৈরীর মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়।
এটাকে আমি আবিষ্কার বা উদ্ভাবন ,এর কোনটাই বলে মনে করি না। অন্যের আবিষ্কৃত জিনিস নিয়ে নিজের কিছু চিন্তা-ভাবনা বা বিচার বিশ্লেষণ যদি প্রকৃত অর্থে উদ্ভাবন হয়, তাহলে দার্শনিকদের উদ্ভাবনগুলো আমাদের জীবনে কি কাজে লাগছে যদি একটু বুঝিয়ে বলেন।
কবিরা শব্দের খেলা খেলে। তেমনি একজন চিত্রকর খেলেন রং নিয়ে।একজন দাবা খেলোয়াড় প্রতিনিয়ত নতুন নতুন দাবার চাল চিন্তা করেন। সুরকার নতুন নতুন সুর তৈরী করেন।এভাবে দেখলে তো সবারই উদ্ভাবন ক্ষমতা আছে। কিন্তু তাদের উদ্ভাবনে জ্ঞানের জিনিস কতটুকু আছে?
আপনি নিশ্চয় একমত হবেন যে গল্প কবিতায় লেখকের দর্শন এবং কল্পনা ফুটে উঠে, বানানো জিনিস যার কোন বাস্তব অস্তিত্ব নই, তাতে কোন বিশেষ জ্ঞানও নেই।
তাদেরকে আমি আর্টিস্ট বলেই মনে করি। তাদের এধরণের উদ্ভাবনী ক্ষমতাকে শৈল্পিক বলা যায়। কিন্তু আমি যেধরণের উদ্ভাবনের কথা বুঝাতে চেয়েছি তা আর্টিস্টদের নিশ্চয় আর্টিস্টদের উদ্ভাবনী ক্ষমতা নয়।আপনি আমার ব্যক্তব্যকে ভুলভাবে ব্যাখ্যা করেছেন।
@অসীম সময়,
না না তুমি ঠিক বলেছ। রবীন্দ্রনাথ, হোমার, কালিদাস, নজরুল এরা সব কল্পনার জগতে রচনা করেছেন। মানুষের জ্ঞান ভান্ডার সমৃদ্ধ করেন নি।
বাপরে বাপ আমি কার সাথে তর্ক করছিলাম :rotfl: ।
তোমার জয় হৌক ভাই। আরেকটা উপদেশ দিই। জ্ঞান কাকে বলে একটু জেনে নাও। বিজ্ঞান এবং জ্ঞানের মধ্যে পার্থক্যটা জেনে নাও।
http://en.wikipedia.org/wiki/Knowledge
আমার একটি বঙ্গানুবাদ আছেঃ জ্ঞান, বিজ্ঞান এবং ধর্মীয় জ্ঞানের মধ্যে পার্থক্য নিয়ে।
http://sites.google.com/site/biplabpal2000/gganbiggan.pdf
:yes: :yes: :yes:
আমার কাছে দর্শন হল কোন কিছুর আবছার উপর ঝাপসা ধারণা। যেখানে বিজ্ঞান সুর্নিদিষ্ট সংজ্ঞা প্রদান করে।
তবে ব্যক্তিগত দর্শন আলাদা জিনিস।আসলে ব্যক্তিগত দর্শন প্রকৃত অর্থে কোন দর্শনই নয়।এর জন্য অন্যকোন উপযুক্ত শব্দ না থাকায় ‘দর্শন’ শব্দটিই আমরা ব্যবহার করি। তবে অবশ্যই আলাদা অর্থে। আর সে
বিপ্লব পালের কাছে যদি দর্শন সবচেয়ে কঠিন মনে হয় তবে তার মেধা নিয়ে আমার যথেষ্ট সন্দেহ আছে।একজন সাধারন অশিক্ষিত লোককেও চেষ্টা করলে দর্শনের সবচেয়ে কঠিন বিষয়গুলো বোঝানো সম্ভব বলে আমি মনে করি। যেখানে বিজ্ঞ দার্শনিকগণ বিজ্ঞানের অতি সাধারণ বিষয়গুলোও বুঝতে হিমসিম খান।
যাই হোক , হকিং এর সাথে আমি একমত যে দর্শন প্রায় মৃত। যার যত কম জ্ঞান সে দর্শন নিয়ে তত বেশি লাফালাফি করে।
@অসীম সময়,
আপনিত আমার লেখার শেষ দুই ছত্রের ওপর সীল মোহর ফেলে দিলেন!
কারা যেন বলছিল ওই শেষ দুই ছত্র লেখার দরকার ছিল না?
অনেক ধন্যবাদ।
দুটো উদাহরণ দেবেন প্লিজ?
আমার ব্যাক্তিগত অভিজ্ঞতা অন্যরকম। দর্শন “শাস্ত্র” চিন্তাকে স্ট্রাকচারড করতে শেখায়। তাতে যে কোন বিষয় আরো গভীরে বুঝতে সুবিধা হয়।
@বিপ্লব পাল,
আপনি আমার কাছে উদাহরণ চেয়েছেন।আপনি নিজেই এ বিষয়ে পরীক্ষা করতে পারেন। আপনি দর্শনের কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপককে বিজ্ঞানের কোন বিষয় যেমন রিলেটিভিটি বা কোয়ান্টাম মেকানিক্স বুঝানোর চেষ্টা করুন। বিষয়গুলো বোধহয় অনেক কঠিন হয়ে গেল তাইনা, আচ্ছা আপনি বরং প্রথমে সাধারণ বৈদ্যুতিক বিভব নিয়ে আলোচনা করুন। আলোচনা শেষে তাকে এ বিষয়ে প্রশ্ন করুন। আশা করি আপনি আমার ব্যক্তব্যের সত্যতা পাবেন।
আমি আপনাকে উদাহরণ না দিয়ে কেন নিজই বিষয়টি পরীক্ষা করতে বললাম নিশ্চয় আপনার মনে এ প্রশ্ন জাগছে।আসলে এখানেই দর্শনের সাথে বিজ্ঞানের পার্থক্য। বিজ্ঞান যুক্তি এবং প্রমাণের উপর প্রতিষ্টিত। যেখানে দর্শন কিছু ধারণা , কল্পনা,এবং ব্যক্তিগত চিন্তার উপর প্রতিষ্টিত।
একটা বিষয় লক্ষ করুন, হকিং দর্শন শাস্ত্রকে মৃত বলেছেন, দর্শনকে নয়।
আপনি বলেছেন,
সেটা ঠিক, তবে তা একটা নির্দিষ্ট লেভেল পর্যন্ত।আপনি কি মনে করেন যেসব বিজ্ঞানী দর্শন বিষয়ে তেমন পড়াশুনা করেননি তাদের চিন্তভাবনা এলোমেলো??
চিন্তাভাবনা স্ট্রাকচারড করার জন্য দর্শন শাস্ত্র পড়া আবশ্যক নয়। আসলে বিজ্ঞানের মাঝেও দর্শন নিহিত । বিজ্ঞানীরা হয়ত জানেন না তাদের চিন্তার ধাপগুলোকে দর্শন শাস্ত্রে কি নামে অভিহিত করা হয়, তারা নিজের অজন্তেই দর্শন শাস্ত্র না পড়েও ধাপে ধাপে চিন্তা করতে পারেন।এটা অনেকটা সাইকেল কিভাবে চলে তার কার্যপদ্ধতি না জেনেই সাইকেল চালাতে পারার মত ব্যাপার। আর এ কারণই দর্শন শাস্ত্র মৃত হতে চলেছে।
সব শেষে পরীক্ষাটি করে দেখার অনুরোধ রইলো। কি ফলাফল পান তা জানার ইচ্ছা থাকলো।
@অসীম সময়,
তাহলে বলতেই হচ্ছে আপনার ধারনা ১০১% ভুল। দর্শনের অনেক অধ্যাপকই আমার বন্ধু। তারা পদার্থবিদ্যার দর্শনের দিকটা, বিজ্ঞানীদের থেকে ভাল বোঝে। যার জন্যে এই প্রবন্ধেই দেখুন ডঃ থেগাড কি ভাবে হকিং এর ভুল ধরেছেন।
আরো একটা ব্যাপার- কোয়ান্টাম মেকানিক্সের রিয়ালিটিকে কেন্দ্র করে- দর্শনের একটি শাখা আছে। তার নাম- ক্রিটিক্যাল রিয়ালিজম।
যার একটি শাখা সায়েন্টিফিক রিয়ালিজম
আপনি একটু পড়ুন। তারপরে বুঝবেন দার্শনিকদের কতটা কোয়ান্টাম মেকানিক্স বুঝতে হয়।
আপনাদের জন্যেই আমাকে শেষ দুই ছত্র লিখতে হয়েছিল। বিজ্ঞানের দর্শন শুধু মাত্র একধরনের স্ট্রাকচারড চিন্তা। তাও কজন বিজ্ঞানী সেটা বোঝে আমার জানা আছে- কারন সেটা জানলে, কোরানিক বা বৈদিক বিজ্ঞানীর ছড়াছড়ি হত না। দর্শনে এই ধরনের হাজার রকমের স্ট্রাকচারড চিন্তা পাবেন।
@বিপ্লব পাল,
দার্শনিকরা যদি কোয়ান্টাম মেকানিক্স বুঝে থাকেন তাহলে তারা নিশ্চয় কিভাবে তা বাস্তবে প্রয়োগ করা হয় তাও নিশ্চয় বুঝেন ।এখন পর্যন্ত আপনার প্রিয় দার্শনিকগণ কোয়ান্টাম মেকানিক্সের প্রয়োগ সম্পর্কে নিশ্চয় নতুন কোন ধারণা দিয়েছেন। তাদের চিন্তাভাবনা যখন এত স্ট্রাকচারড যে পদার্থ বিজ্ঞানের দিকটা তারা বিজ্ঞানীদের চেয়েও ভাল বুঝেন!!! তাহলে তো বিজ্ঞানীদের বাদ দিয়ে তাদেরকেই সব গবেষণার দ্বায়িত্ব দিয়ে দেওয়া যায়।
একটা কথা আপনাকে বলি,আপনি ততক্ষণ কোন বিষয় পুরোপুরি বুঝেননি যতক্ষণ পর্যন্ত তা কিভাবে প্রয়োগ হচ্ছে তা আপনি বুঝেননি,আর কিভাবে বাস্তবে সেটা প্রয়োগ হচ্ছে বুঝতে পারলে আপনিও তা প্রয়োগ করতে পারবেন, অন্তত অন্যকোন ক্ষেত্রে কিভাবে প্রয়োগ করা যায় সে সম্পর্কে ভাল ধারণা থাকবে। কোন জিনিস পড়া আর বুঝার মাঝে বিস্তর তফাত।
মুর্খ দার্শনিকের চাইতে কোরানিক বা বৈদিক বিজ্ঞানী আমার কাছে অনেক ভাল। অন্তত তাদের শ্রমের সুফল আমরা পাই।
আমার মতে হকিং কোন ভুল করেননি।
ডঃ থেগাড ভুলভাবে হকিং এর ব্যক্তকে ব্যাখ্যা করেছেন। নিসন্দেহে হকিং ব্যক্তব্য অনেকটাই দার্শনিক( যাকে আমি আবছার উপর ঝাপসা ধারণা বলি)। তার মডেলটি যদিও ভাল নয়, তবে তার মডেলকে কখনই দার্শনিক মডেল বলা যায় না। বর্তমানে তাত্ত্বিক পদার্থ বিজ্ঞান যেখানে প্বহুবিশ্ব বা মাল্টিভার্স বা প্যারালাল ইউনিভার্স, স্ট্রিং থওরী ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা করা হয় সেখানে মূলত গণিতের ব্যাপক প্রয়োগ করা হয়। অনেকেই এসব থিওরীকে তাই “some imagination of mathematics” বলে থাকেন। হকিং এর মডেলের ভি্ত্তি দর্শন নয়, বিজ্ঞান। ডঃ থেগাড তাত্ত্বিক পদার্থ বিজ্ঞানের গাণিতিক বিষয়গুলো বুঝেন না বলেই মুর্খের মত ভুল ধরতে গেছেন।এম তত্ত্বের মত অনেক তত্ত্বেই টেস্টিবেলিটি নাই, কিন্তু সেগুলো তো আর দর্শন নয়, কারণ সেখানে রয়েছে গণিতের ব্যবহার।
তাই হকিং এর মডেলকে আমি দর্শনিক মডেল বলতে রাজি নই।
হাজার রকমের চিন্তা থাকতে পারে, তবে চিন্তাগুলো ব্যবহার করে সুফল পাওয়াই আসল কথা।আজইরা চিন্তার কোন দাম নাই। পাগলের মাথাতেও আজাইরা সব চিন্তা আসে। সে চিন্তা স্ট্রাকচারড নাকি আনস্ট্রাকচারড তাতে কোন যাই আসে না। 😀
@অসীম সময়,
দার্শনিকরা কোয়ান্টাম মেকানিক্স শেখেন মূলত “বাস্তবতা” বা রিলালিজমের ওপর নতুন স্ট্রাকচার তৈরী করতে। যেখানে সেটা প্রয়োগ করার কথা, তারা করেন-সেই ক্ষেত্রটা দর্শনের চর্চায়। এমন একটা পেপার পড়ার জন্যে দিলাম। পড়লেই বুঝতে পারতেন, দার্শনিকরা কোয়ান্টাম মেকানিক্স কিভাবে কাজে লাগায়। সেটা না করে আবার ভুল ভাল বকছেন। আপনি যদি দার্শনিকদের পেপার না পড়ে, আবল তাবল বকা চালিয়ে যান, এঁড়ে তর্ক করার লাভ দেখছি না। রে ভাস্কর, কুন থেকে অনেকেই কোয়ান্টাম মেকানিক্স নিয়ে কাজ করেছেন। আগে যে পেপারটা দিলাম সেটা পড়ুন, তারপর এই সব বাজে বকা চালিয়ে যাবেন।
থেগাড বিজ্ঞানের দর্শনের একজন অগ্রণী পন্ডিত। আর গনিত দর্শনের শাখা-কারন গনিত একটি ভাষা-যা বিজ্ঞানের ভাষা।
মনে রাখতে হবে হকিং নিজের লেখায় বলেছেন, একটি তত্ত্ব ভাল তত্ত্ব হবে, যার টেস্টেবিলিটি আছে। এবং তার লেখা অনুযায়ী সেই তত্ত্বটি বাস্তবতার একটি রূপ হবে যদি টেস্টেবিলিটি থাকে। তাহলে হকিং এর নিজের বক্তব্য অনুযায়ী এম তত্ত্ব দিয়ে বাস্তবতার ব্যাখ্যা বিজ্ঞানের ডোমেনে পড়ে না।
প্রবন্ধটা আপনি পড়েন নি এবং বোঝেন ও নি। থেগাড হকিং এর স্ববিরোধিতাই তুলে ধরেছেন।
আর থেগাডের মতন বিজ্ঞানের দার্শনিক বিজ্ঞানের মডেল বোঝে না -এমন হাস্যকর উক্তি নাই বা করলেন। আপনি ত তার লেখা বোঝার ও ক্ষমতা রাখেন না দেখছি।
আপনার বিরুদ্ধে কঠোর বাক্য প্রয়োগ করতাম না। কিন্ত আপনার এই ফেক নামটি হঠাৎ আমার প্রবন্ধের জন্যে উদয় হল। এটা কোন স্পর্ষকাতর বিষয় না। নিজের নামেই বিতর্ক চালাতে পারতেন। আমি আরেকটু সদয় ভাবে উত্তর দিতাম। এটা পরিস্কার যে স্বনামে তর্ক চালালে বেইজ্জতির সম্ভাবনার দায় আপনি নিতে চান না।
সে যাইহোক। আগে আমি যে পেপারটা পড়তে দিলাম-পড়ুন। আগে বুঝুন কিভাবে দার্শনিকরা কোয়ান্টাম মেকানিক্স কাজে লাগায়। ওরকম অনেক পেপার আছে এবং কোয়ান্টাম মেকানিক্স দর্শনে খুব ভাল প্রয়োগ হয়। আরেকটা জিনিস জানবেন, বিজ্ঞানের দর্শন নিয়ে যারা কাজ করে, তারা গণিতেও উচ্চমার্গের পন্ডিত হয়ে থাকেন। থেগাড সহ আরো ডজন খানেক নাম আমি এই তালিকাতে দিতে পারি। দর্শন নিয়ে নিজের বালখিল্য জ্ঞান নিয়ে আর বেশী উলটো পালটা না বকে গেলেই খুশি হব।
ধরা যাক আপনার কথা ঠিক। যে তত্ত্বগুলো মহাবিশ্ব কিভাবে চলবে তা বলে দেয় না। তাহলে কিন্ত হকিং ভুল হয়ে যাচ্ছে। কারন তার মতে “বাস্তবতা” হচ্ছে তত্ত্ব বা মডেল নির্ভর। তার বাইরে আর কোন বাস্তবতা নেই!
আপনি যেটা ভুল করেছেন, সেটা হল হকিং এর তত্ত্ব নির্ভর বাস্তবতার বিপরীতে এই বক্তব্য রাখা হয়েছে। সুতরাং রাগটা আপনার হকিং এর ওপর ঝাড়া উচিত।
আর এটা ভাবানুবাদ। আমি বঙ্গানুবাদ বলে দাবী করি নি। এই লেখাতে অনেক কিছুই আছে যা থেগাডের প্রবন্ধে নেই-আবার থেগাডে প্রবন্ধে আছে এমন অনেক কিছুই আমি বাদ দিয়েছি। আর বাক্যকে সংক্ষিপ্ত করার চেস্টা করেছি।
@বিপ্লব পাল,
আমি তত্ত্বের প্রকৃতি নিয়ে নিজের অভিমত জানিয়েছি।আমি যা বুঝি তা হল,তত্ত্ব দিয়ে মহাবিশ্ব বা কোন কিছুই কিভাবে চলে তা “ব্যাখ্যা করার চেষ্টা” করা হয়,আর এই তত্ত্ব বা মডেল যেহেতু পর্যবেক্ষণনির্ভর এবং অবশ্যই প্রমাননির্ভর হয়ে থাকে তাই এই তত্ত্ব দিয়ে কোন বাস্তবতা প্রেডিক্ট করা যেতে পারে অর্থাৎ বলা যেতে পারে কোন একটা ব্যাপার, যেমন ধরুন- মহাবিশ্ব “কিভাবে চলবে”। কিন্তু এই বলার মূল ভিত্তি কিন্তু পূর্বের সেই প্রমাণগুলো পাওয়া যার বলে ধারণাটি তত্ত্ব হসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে।
পর্যবেক্ষণ ও প্রমাণ ছাড়া তো কোন তত্ত্বই গৃহীত হয়না।কিন্তু তত্ত্বনির্ভর বাস্তবতা বলতে not necessarily এটা বোঝাবে যে যেকোন ধারণায়(যা বাস্তবসম্মত, পর্যবেক্ষণ ও প্রমাণলব্ধ নয়) যা বলা হবে তাই বাস্তব হবে বা হতে হবে।
যেমনঃ আমি যদি বলি “সূর্য পৃথিবীর চারদিকে ঘুরবে” এটা তো কোন তত্ত্ব হবেনা কারণ এটা বাস্তবসম্মত, পর্যবেক্ষণ ও প্রমাণলব্ধ কোন ধারণা নয়। তাই ‘তত্ত্বনির্ভর বাস্তবতা ছাড়া আর কোন বাস্তবতা নেই’ এটা পদার্থবিজ্ঞানের কনটেক্সটে সত্যি হতে পারে যখন তত্ত্বকে পর্যবেক্ষন ও প্রমানলব্ধ কোন ধারণা বলে সংজ্ঞায়িত করা হবে।
কোন বক্তব্য?কার বক্তব্য?
হকিং কোন ক্ষাত্রে বা কোন কনটেক্সটে তত্ত্বনির্ভর বাস্তবতার কথা বলেছে তা আমি তার বই না পড়ে তো বুঝতে পারবনা, তাই তার উপর না বুঝে রাগ ঝাড়ারও প্রশ্নই ওঠেনা।
@লীনা রহমান,
ঠিক তাই। কিন্ত আমি কেন লিখেছি, সেটা না বুঝে রাগটা আমার ওপর ঝেড়ে দিলেন। :laugh:
কৃষ্ণ করলে লীলা
মানুষ করলে বিলা :lotpot:
আপনি লেখাটা কি দয়া করে পড়বেন ম্যাডাম? 😥
লেখাটার প্রথমেই বলা আছে ভাল তত্ত্ব কি-যেটা আপনি লিখলেন।যা পরীক্ষালদ্ধ ভাবে সত্য।
কিন্ত এম তত্ত্ব বা কোয়ান্টাম মেকানিক্সের ব্যাখ্যা ত পরীক্ষালদ্ধ সত্য না-অথচ, সেও সব আধা দার্শনিক, আধা বৈজ্ঞানিক তত্ত্বের ভিত্তিতে তিনি মহাবিশ্বের বাস্তবতা ব্যাখ্যা করলেন। অর্থাৎ নিজেই নিজের বক্তব্যের স্ববিরোধিতা করেছেন। সেটাই প্রবন্ধে দেখানো হয়েছে।
@বিপ্লব পাল,
আমি রাগ ঝাড়লাম কই?আমার তো রাগই উঠেনি! :-/
আমি শুধু আমার মতামত জানিয়েছি।
লেখা আমি ঠিকই পড়েছি, কিন্তু কি জানি হয়ত ভুল বুঝেছি।:-?
আমি শুধু প্রবন্ধে আপনার একটা কথা বলার স্টাইলের ক্ষেত্রে আমার মত দিয়েছি।যাহোক পরীক্ষা চলছে তাই আর কোন কথা বাড়াবনা।কিজানি হয়ত কিছু বুঝিনা বলেই কথা বাড়াতে পারবনা :-/ 😕
@লীনা রহমান,
আপনি কি নিজেই কথাটা বুঝে বলেছেন, নাকি আন্দাজে চালিয়ে দিলেন?
একবার বলছেন, যদি ধারণাগুলো বাস্তবসম্মত না হয় তাহলে তা বাস্তব হবে না, বা তাকে বাস্তব বলা যাবে না। :-/ তার মানে কী?
আগেই যদি জেনেই যান যে কোনটা বাস্তবসম্মত তাহলে বাস্তব কি অবাস্তব এই তর্কে আসার মানে কী?
@মুহাইমীন, “বাস্তবসম্মত” কথাটা লেখা ভুল হয়েছে আমার। এই কথাটা মুছে দিতে ভুলে গিয়াছিলাম মন্তব্য করার আগে।
সবমিলিয়ে লেখাটা খুবই অগোছালো লাগল।আমি এখনো গ্রান্ড ডিজাইন পড়িনি। তাই এখনই মন্তব্য করতে পারছিনা হকিং কোন অর্থে দর্শনকে মৃত বলেছেন। যাই হোক আমি ব্যক্তিগভাবে দর্শনের প্রয়োজনীয়তা স্বীকার করি, তবে দর্শনের সঠিক সংজ্ঞা এখনো আমার কাছে পরিষ্কার নয়।তবে এই লেখা পড়ে দর্শন সম্পর্কে কোন যুক্তিযুক্ত সংজ্ঞা পাইনি।
এখানে অনুবাদ হতে পারত, “যদি প্রকৃতই “এভ্রিথিং তত্ব” বলে কিছু থেকে থাকে তাহলে এম তত্ব হতে পারে এর যোগ্য দাবীদার।”
অনুবাদটা কি ঠিক হল? অনুবাদটি হয়ত হতে পারত “মহাবিশ্বের কোন একক ইতিহাস নেই, কিন্তু প্রতিটি সম্ভাব্য ইতিহাসের রয়েছে তার নিজস্ব সম্ভাবনা।”
😕
আমার ত মনে হয়না এটা কখনো বলা হয় যে তত্ব মেনে মহাবিশ্ব চলে, আমার যতদূর মনে হয় তত্ত্বগুলো মহাবিশ্ব কিভাবে চলে তা ব্যাখ্যা করে, মহাবিশ্ব কিভাবে চলবে তা বলে দেয় না। এখানে এম থিওরির নাম নিয়ে কেমন যেন হাস্যকর আক্রোশ প্রকাশিত হল।
আর লেখার শেষ অংশ নিয়ে আর কি বলব, কিছু অসংলগ্ন কথাবার্তা।
আমার দর্শন সম্পর্কে পড়াশোনা কম তাই দর্শন নিয়ে কথা বলছিনা, শুধু আপনার লেখা নিয়ে মতামত জানিয়ে গেলাম।আর দর্শন নিয়ে কিছু বলারও নেই মনে হয় এই লেখার প্রেক্ষিতে কারণ এ লেখায় গভীরভাবে দর্শন সংশ্লিষ্ট যুক্তিসংগত কোন আলোচনা পাইনি বলেই মনে হয়েছে আমার।
আজ পাইছি, সেদিন আমার কিছু ইংরেজী ভার্স থাকার কারণে আমার মন্তব্যটি প্রকাশ করা হয়নি -আজ দেখি ইংরেজী লাইনের সরাসরি । বিপ্লব পালের বুঝাতে একটু ঝামেলা আছে সেদিন মন্তব্য করতে গিয়ে বুঝতে পেরেছি । আমি দার্শনিক না হই, কিন্তু কম-বেশি হলে ও দর্শন নিয়ে পড়েছি । বিপ্লব পাল বৌদ্ধের দর্শন বলতেও জেন দর্শনকে বুঝে থাকেন, যা বুদ্ধের আসল শিক্ষাগুলোতে খুঁজে পাওয়া যায় না । এনিওয়ে, মুক্তমনা হওয়ার জন্য এক বড় মন দরকার । সেজন্য ব্যক্তি আক্রমণ গুলোকে এড়িয়ে চলা উচিত । একে অন্যের সবযুক্তিগুলো মিলবে এমনটা কথা নেই -তা আলোচনার মধ্যে দিয়ে একে অপরের সম্মান দেখিয়ে যুক্তিখন্ডন করা উচিত । যা কিছু দেখা কিংবা উপলব্দি করা যায় তাই দর্শন । মনের চিন্তা-চেতনাগুলোকে দেখা যায় কিন্তু উপলব্দি করা যায় । আর দর্শন না হলে কিন্তু আজকের বিজ্ঞান এতদূর এগিয়ে আসতে পারতো না । আবার একটা কথা খেয়াল রাখা উচিত যে, যতদিন মানুষের অস্তিত্ব থাকবে ততদিন পর্যন্ত দর্শনকে মৃত বলা যাবে না । দর্শন নেই মানে মানব সভ্যতার বিনাশ (খুব খেয়াল কইরা) । বিশ্লেষনে যেতে ইচ্ছে করছে না -কারণ – জানতে পারছি না আজকে ও আমার মন্তব্যটি প্রকাশ করা হবে কিনা ? ভালো থাকবেন সবাই ।
@শুভাচার,
আমি উলটো মত পোষন করি। বৌদ্ধ ধর্মের বাকী আর কোন শাখাতেই বুদ্ধের আসল শিক্ষা টিকে নেই। একমাত্র জেন বৌদ্ধ ধর্মেই আছে-কারন জেন কোন ” কি করিতে হইবে, বা কি করা উচিত” টাইপের বাইবেল না।
বৌদ্ধদের বাকীশাখাতে ঈশ্বর জাঁকিয়ে বসে আছে-কি দুরাবস্থা। আগে আপনি লিখুন কেন, আপনি মনে করেন জেন বৌদ্ধ ধর্ম বুদ্ধের শিক্ষাগুলি ধারন করে না। আমি তারপর লিখছি।
@বিপ্লব পাল,
“পিলোসফি” হচ্ছে “জ্ঞানে প্রতি ভালোবাসা” যা অনেকক্ষেত্রে অনুশীলনের উপর আগ্রহশীল নয়; অন্যদিকে বুদ্ধের শিক্ষাগুলো অনুশীলন এবং উপলব্ধির ব্যাপারে বেশি গুরুত্ব আরোপ করে থাকে । অতএব, বুদ্ধিজমকে সম্পূর্ণভাবে তথাকথিত পশ্চিমা বিশ্বের পিলোসফির সাথে গলিয়ে ফেলা যায় না, কারণ বুদ্ধিজম কখনো শুধুশুধু “জ্ঞান এবং ভালোবাসার পিছনে লালসাভুক্ত হয়ে পাওয়ার অভিপ্রায়ে বন্ধনে আবদ্ধ থাকে না” http://www.accesstoinsight.org/lib/authors/narada/nutshell.html । এটি হতে পারে এক জীবনা দর্শন । দর্শনের ব্যাপারে আলোচনা করতে ভাষানুবাদগুলো বারবার বাঁধার সৃষ্টি করে । বুদ্ধ আলাগাদ্দুপাম সূত্রে বলেছিলেন, “আমি সবসময় শিক্ষা দিয়েছি শুধু দূঃখ এবং দূঃখ থেকে মুক্তি উপায় সম্পর্কে” http://www.accesstoinsight.org/tipitaka/mn/mn.022.than.html । বুদ্ধ সবসময় দুধরণের চরমতাকে বারবার বর্জন করেছিলেন, যেগুলো হচ্ছে “আস্তিক্যবাদ (এক্সিট) এবং নাস্তিক্যবাদ (নন-এক্সিট)” । এই দুই তাত্বিক মতবাদকে তিনি চরম বলে বিবেচিত করেছেন । তাই এই দুই চরম মতবাদকে বর্জন করে তিনি মধ্যপন্থা নীতি অবলম্বল করেছিলেন । আবার সবকিছু সৃষ্টি এবং বিনাশ সম্পর্কে ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ‘পদিত্যসম্মুৎপাত নীতি’ শিক্ষা দিয়েছিলেন -যা কিছু সৃষ্টি কিংবা বিলয় হচ্ছে সবকিছু হচ্ছে “কারণ এবং অবস্থাসাপেক্ষে” http://www.accesstoinsight.org/tipitaka/sn/sn12/sn12.015.than.html । তাই তিনি আবার তিনলক্ষণযুক্ত এক নীতির শিক্ষা দিয়েছিলেন -সেগুলো হচ্ছে ১. অনিত্যবাদ (জগতের সংষ্কারকৃত সবকিছু পরিবর্তনশীল), ২. দূঃখময় (জগতের সংষ্কারকৃত সবকিছু দূঃখময় -পীড়াদায়ক) এবং ৩. অনাত্ম (আত্মাহীন -যাকিছু আমরা আত্মা হিসেবে বিশ্বাস করি বাস্তবিকপক্ষে কোন আত্মা নেই যেহেতু সবকিছু কারণ এবং অবস্থাসাপেক্ষে পরিবর্তনশীল এবং দূঃখযুক্ত) http://www.accesstoinsight.org/tipitaka/an/an03/an03.134.than.html । বুদ্ধ দর্শনের মূল পটভুমি হচ্ছে চতুরার্যসত্য – ১. দূঃখ (সবকিছু দূঃখময়), ২. দূঃখ সমুদয় (দূঃখের কারণ), ৩. দূঃখ নিরোধ (দূঃখের চিরতরে বিনাশ) এবং ৪. দূঃখ নিরোধগামিনী পাদিপাত (দূঃখকে বিনাশে উপায় আছে) । পুনরায় “দূঃখ নিরোধের উপায়কে” সঠিকভাবে নির্দেশনা দিতে গিয়ে আট প্রকার আর্য উপায়ের কথা শিক্ষা দিয়েছিলনে যাকে আর্যঅষ্টাঙ্গিকমার্গ বলা হয়ে থাকে – ১. সম্যক দৃষ্টি, ২. সম্যক চিন্তা, ৩. সম্যক বাচ্য, ৪. সম্যক কর্ম, ৫. সম্যক জীবনধারণ, ৬. সম্যক চেষ্টা, ৭. সম্যক একাগ্রতা এবং ৮. সম্যক সমাধি (ভাবনা অথবা মানসিক অনুশীলন) । এই আটপ্রকায় উপায়কে তিনি আবার তিনভাগে ভাগ করে দিয়েছেন অনুশীলনের সুধিদার্থে; সেগুলো হচ্ছে – ক. শীল (সম্যক বাচ্য, সম্যক কর্ম এবং সম্যক জীবনধারণ), খ. সমাধি (সম্যক চেষ্টা, সম্যক একাগ্রতা এবং সম্যক সমাধি ) এবং গ. প্রজ্ঞা (সম্যক দৃষ্টি এবং সম্যক চিন্তা) http://www.accesstoinsight.org/tipitaka/mn/mn.009.ntbb.html ।
–“জেন” হচ্ছে জাপানি শব্দ যেটিকে মুলত চাইনিস “চান” থেকে ভাষান্তরিত করা হয়েছে -আর চান এসেছে সাংষ্কৃতিক “ধ্যান” থেকে, পালি -সমাধি । এটি মূলত মহাযানের এক অংশবিশেষ স্কুল; এর উদ্ভাবন সম্পর্কে সঠিক সময় নিরুপন করা যায়নি, যদিও অনেক স্কলার ইন্ডিয়ার প্রিন্স বৌদ্ধ সন্যাসী “বোধিধর্মকে” প্রথম এই স্কুলের প্রচারক বলে মেনে নিয়েছেন । আবার কেউ কেউ দাবী করে থাকেন স্বয়ং তথাগত গৌতম বুদ্ধ এর প্রচারক; বলা হয়ে থাকে যে বৌদ্ধ যখন তাঁহারই অগ্র শিষ্য মহাকাশ্যপের সাথে পরনের চীবরগুলো অদলবদল করেন ঠিক তখনই এই “জেন” বুদ্ধিস্ট স্কুলটির উদ্ভব ঘটে, কারণ “জেন” সংষ্কৃতিতে শাসনকর্তা নির্বাচন করা হয়ে থাকে, যা কিন্তু বুদ্ধের আসল শিক্ষা থেকে বিচ্যুতি ঘটেছিল কেননা বৌদ্ধ কোনসময় শাসনকর্তার পক্ষপাতি ছিলেন না -মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি বলেছিলেন “ধর্ম এবং বিনয়ই” হবে তোমাকে শাসনকর্তা এবং পদপ্রদর্শক, কেউ কারোকে মুক্তি করাতে পারে না; নিজে নিজের পদপ্রদর্শক হয়ে সত্যকে অনুসন্ধান করতে হবে । ‘জেন’ বুদ্ধিস্ট স্কুলে প্রাইমারি উৎস বলতে “লন্কাবাতর সূত্রকে” ধরা হয়ে থাকে যেখানে মূলত বুদ্ধের এক নির্যাস সম্পর্কে বিস্তর আলোচনা করা হয়েছে অর্থাৎ প্রতিটি মানুষের ভিতরে এক স্বত্বা লুকিয়ে আছে যাহাকে তথাগতগর্ব বলা হয় । অর্থাৎ আত্মাসদৃশ এক “চেতনার গুদাম” রয়েছে যেটিকে “আলায়াবিজ্ঞান” বলা হয় -যা সবধরণের চেতনাকে ধরে রাখে এবং এরই ভিতর বুদ্ধের গুনটি লুক্কায়িত; যা কিন্তু বুদ্ধের মূল শিক্ষাগুলো থেকে সরে যায় -কারন বুদ্ধের প্রাথমিক শিক্ষাগুলোতে এসেন্জ/নির্যাস বলতে কিছু ছিল না -সবকিছুর উৎপত্তি হচ্ছে কারণ এবং অবস্থাসাপেক্ষে । আবার অনেকক্ষেত্রে ‘জেনকে” -নো-মাইন্ড কিংবা নো-থিংকিং হিসেবে ব্যাখ্যা করা হয়ে থাকে । ‘জেন’ স্কুলের যদিও “বোধিধর্ম” উদ্ভাবক ছিলেন কিন্তু সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন ষষ্ট শাসনকর্তা”হুইনেং” । ‘জেন” অনুসারিরামূলত ভাবনা/ধ্যান/সমাধিকে বেশিমাত্রায় প্রাধান্য দিয়ে থাকেন; যেটি বুদ্ধের আর্যঅষ্টাঙ্গিক মার্গের তিনভাগের একভাগে পড়ে (সম্যক চেষ্টা, সম্যক একাগ্রতা এবং সম্যক সমাধি) যা প্রজ্ঞার আগে অর্থাৎ প্রজ্ঞাকে উপলব্ধি করার জন্য সমাধি দ্বারা যেতে হবে অর্থাৎ সমাধি হচ্ছে বেনাপোল সদৃশ (কলকাতা থেকে যশোর যাওয়ার রাস্তা)। কিন্তু “জেনরা” এই ধ্যান/সমাধিকে চুরান্ত বলে দাবী করে বসেন তাই তারা তৎক্ষনাত “আলোকিত হওয়ার” দাবী করে থাকেন । ভারতের “ওশো” ও কিন্তু একসময় জেন অনুসরণ করে নিজেকে বুদ্ধ বলে দাবী করেছিলেন -এমন অনেক ব্যক্তি আছেন যেনারা জেন অনুসরণ করতে গিয়ে নিজেদের বুদ্ধ দাবী করে বসেন । জেনের নির্দিষ্ট কোন নাগর্জুন কিংবা বাসুবন্ধুর মতো দর্শন নেই -তাই জেনকে ব্যাখ্যা করা হয় কোন কথা না বলে অর্থাৎ “লেটিং গো -দেয়ার ইজ নো-মাইন্ড এট অল” । পর্ববতীকালে এর বিবর্তন ঘটে আর নানা শাখায় ভাগ হয়ে যায় । পশ্চিমাবিশ্বে জেনের জনপ্রিয়তা লাভ করার কারণ হচ্ছে “D.T. SUZUKI” যিনি ছিলেন একজন জাপানিস স্কলার; আমেরিকাতে বসবাসকালে তিনি জেন সম্পর্কে অনেক বই লেখেন এবং এডিট করতে থাকেন । তাই পরবর্তীকালে দেখা যায় জেনের ভিতর চতুরার্য সত্যকে সংযোজন করা হয়েছে । আবার অনেক পশ্চিমা জনগোষ্ঠী জেন সম্পর্কে জানার পর বৌদ্ধ ধর্মের আসল দর্শনকে বুঝতে ব্যর্থ হন ।
বুদ্ধের মৃত্যুর পর ২২টির ও বেশি শাখায় বিভক্ত হতে থাকে, যার কারণে সম্মেলন করা হয়েছিল বারবার বুদ্ধের আসল শিক্ষাগুলোকে সংরক্ষণ করার জন্য; এর মধ্যে তৃতীয় সম্মেলন যেটি সম্রাট অশোকের সময়ে করা হয় তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রাখে । সম্রাট আশোকের সময়ে কিন্তু বুদ্ধের শিক্ষাগুলো বহিবিশ্বে ছড়িয়ে যায়; মূল ত্রিপিঠকটি সম্রাট অশোকের ছেলে মাহিন্দ যে ছিল এক বৌদ্ধ সন্ন্যাসী শ্রীলংকাতে নিয়ে আছে । তখনকার সময় হতে ত্রিপিটকটি শ্রীলংকা সংরক্ষণ করা হয় -তাই এই অনুসারীরা থেরবাদী অর্থাৎ অর্থোডক্স হিসেবে দাবী করে থাকেন । অন্য শাখাগুলো যেমন মহাযানের মাধ্যমিকা, ইয়োগাচারা, পিউরল্যান্ড, বজ্রয়ানা এবং আরো অনেক শাখাকে বুদ্ধকে গডের সমতুল্য বলে মনে পোষন করতে থাকেন -এর কারণ ছিল সামাজিক এবং সংষ্কৃতির বেড়াজাল । চাইনিসরা স্বভাবগতভাবে যাগ-যজ্ঞের বিশ্বাসী অন্যদিকে ভারতের গতানুগতিক সমাজ ব্যবস্থার জনমানুষ । বজ্রযানেও অনেক যাগ-যজ্ঞের রীতিনীতি বিদ্যমান, যেসব থেরবাদী শাখাতে বিরুদ্ধ করা হয়ে থাকে । বুদ্ধের আসল দর্শন জানতে হলে থেরবাদীনদের ত্রিপিটককে ভালোভাবে জানতে হবে । নাগার্জুনের শূন্যতাবাদ অনেকক্ষেত্রে জটিল হলেও অনাত্মা দার্শনিক মতবাদ বহন করে থাকে ।
বিঃদ্রঃ আমি জেনের কোন রেফারেন্স দিলাম না কারণ আপনার জন্য জানার সহজ হবে । আর লাগলে বলবেন আশা করি । ধন্যবাদ আপনাকে । জেন প্রতিপালন করতে পারলে খারাপ না কারণ সমাধি/জেন ব্যতীত প্রজ্ঞা উপলব্ধি করা যায় না কিন্তু যখন এটিতে বুদ্ধের আসল দর্শন বলা হবে তখনই সমস্যা । । জেন হচ্ছে আসল দর্শনকে উপলব্ধি করার এক পথসদৃশ । প্রজ্ঞা হচ্ছে জেনের উর্ধ্বে । থেরবাদে কোন ঈশরসদৃশ কেউ নেই । আর পারলে “What the Buddha Taught- by Walpola Rahula” বইটি পড়তে চেষ্টা করুন । ভালো থাকবেন ।
“Happy New Year 2011 ” to all of readers !!!
@বিপ্লব পাল, http://shubachar.amarblog.com//posts/123961/
ঘুরে আসুন ।
@নয়নমুনি,
আপনি অভিযোগ করেছেন আপনার লেখাটি মুক্তমনাতে ছাপানো হয় নি। কেন মুক্তমনা আপনার মন্তব্য ছাপালো না, আমি জানি না। আমি মুক্তমনার মডারেটর না। আশা করি আপনি যখন অভিযোগ করেছেন, মডারেটর তার উত্তর দেবেন।
আপনার এই ব্লগের উত্তর দেওয়ার খুব ইচ্ছা আছে। বৌদ্ধ ধর্ম বলতে আমি কি বুঝেছি, সেটা কোন ব্লগে পরিস্কার করে লিখব। সাথে সাথে জেন দর্শন ও ব্যাখ্যা করা দরকার। মুক্তমনার অধিকাংশ সদস্যের দর্শন নিয়ে প্রাথমিক ধারনাটুকুও নেই। সেই জন্যে এখানে দর্শনের আরো চর্চা হলে ভাল হত।
মৌলবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে তলোয়ারের ধার হচ্ছে দর্শন, আর ধাতু হচ্ছে বিজ্ঞান। বিজ্ঞান যুক্তিতে মজবুত করে, আর দর্শন তাকে ধারালো করে তোলে। সুতরাং যারা মৌলবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে চাইছে-তাদের শুধু বিজ্ঞান পড়লে হবে না, দর্শন ও পড়তে হবে। ইসলাম এবং হিন্দু ধর্মের সমৃদ্ধ দর্শন আছে-বৌদ্ধ ধর্মের ও আছে। বর্তমান যুগে সেসবের প্রয়োজন নেই এটা ঠিক-ন্যাচারালিস্টিক দর্শনেই সব সমস্যার সমাধান করা যায়। কিন্ত সেটা প্রমান করতেও অনেক ভাল দর্শন জানতে হবে।
@বিপ্লব পাল, আপনাকে ধন্যবাদ । আমি ও আপনার সাথে একমত বিজ্ঞান আজ এ পর্যন্ত আসতে ব্যর্থ হত যদি না দর্শনের ভিতর মুক্তবুদ্ধির চর্চা না হত । দর্শন যে প্রতিটি সেকেন্ডে জীবন চলার পথে নিবিরভাবে জড়িত আমাদের দর্শনের সত্যিকার জ্ঞান না থাকার কারণে বুঝে উঠতে পারি না । যারা (নাস্তিকরা) দর্শনকে অস্বীকার করে তারাতো মৌলবাদদের চেয়ে কোন অংশে কম নয় – মৌলবাদীরা যেভাবে ঈশ্বরের বিশ্বাসকে আগলিয়ে থেকে বৈজ্ঞানিক সব আবিষ্কারগুলোকে নিজেদের সো-কলড পবিত্র গ্রন্থে খুঁজেন নতুবা অস্বীকার করে বসেন । দর্শনের নূন্যতম জ্ঞান না থাকলে কিন্তু কোনভাবে মৌলবাদদের সাথে পেরে উঠা সম্ভব হবে না -আর মুক্তচিন্তাতো দর্শন থেকে শুরু -আদৌ দর্শনে বহাল । আমাদের বুদ্ধের মতো অনেকক্ষেত্র মধ্যেপন্থানীতি অনুসরণ করা প্রয়োজন, কেননা সবসময় যদি এক ভুলের জন্য সবকিছু ভুলে ভুলে অস্বীকার করি তাহলে জীবনে অনেক কিছু জানা হবে না । মহৎ মহৎ মুক্তমনাদের বেশিরভাগই কিন্তু দার্শনিক -তা ভুলে গেলে চলবে না । ভালো থাকবেন ।
বিঃদ্রঃ মন্তব্য প্রকাশ করা না হলে অনুগ্রহ করে কারণটি জানাবেন । বাংলা ব্লগের কিন্তু আজকাল কমটি নেই, তবুও মুক্তমনাকে ভালো লাগে বলে যখন দর্শন নিয়ে আলোচনা করতে দেখেছি লেখার চেষ্টা করেছি । আমি ঈশ্বরের অস্তীত্বের বিশ্বাস করি না -কিন্তু দর্শনের মাঝে ও মানবতা যে বিদ্যমান তা অস্বীকার করি না ।
@শুভাচার,
এখানে দর্শন বলতে কী বুঝায় তা বিষদভাবে ব্যাখ্যা না করলে আমরা সাধারণ মানুষ বুঝবো কীভাবে দ্বন্দটা কোথায়?
মুক্তমনা আপনার মন্তব্য প্রকাশ না’ও করতে পারে এমন সন্দেহ কেন হলো?
রবিঠাকুরের নীচের গানটা সর্বদাই শুনি কিন্তু বুঝিনা এর মর্মকথা। তিনি কি একই সাথে দর্শন ও বিজ্ঞানে বিশ্বাস করতেন?
আজ নববর্ষের প্রথম দিন, খুশির দিন, আনন্দের দিন, ছুটির দিন, তাই বিজ্ঞানের আসরে বসেও এই গানটি শুনার আগ্রহ বোধ করছি। আশা করি লেখক মাইন্ড করবেন না, বিজ্ঞানীরাও (আইন্সটাইন না কি) সংস্কৃতপ্রেমী ছিলেন বলে শুনেছি। গানটা শুনতে শুনতে বিজ্ঞান ও দর্শনের দুই স্পষ্ট ধারা নিয়ে নির্দিষ্ট কোন লেখা খুঁজে বের করতে হবে।
আমার হিয়ার মাঝে লুকিয়ে ছিলে দেখতে আমি পাই নি।
তোমায় দেখতে আমি পাই নি।
বাহির-পানে চোখ মেলেছি, আমার হৃদয়-পানে চাই নি।।
আমার সকল ভালোবাসায় সকল আঘাত সকল আশায়
তুমি ছিলে আমার কাছে, তোমার কাছে যাই নি।।
তুমি মোর আনন্দ হয়ে ছিলে আমার খেলায়–
আনন্দে তাই ভুলেছিলেম, কেটেছে দিন হেলায়।
গোপন রহি গভীর প্রাণে আমার দু:খসুখের গানে
সুর দিয়েছ তুমি, আমি তোমার গান তো গাই নি।।
httpv://www.youtube.com/watch?v=L7d2x4nC4Hc&feature=fvw
@আকাশ মালিক,
আমার কয়েকটি মন্তব্য আগেও প্রকাশ করা হয়নি । এইবার ও, আপনার উপরে জনাব বিপ্লব পাল নয়নমুনিকে উদ্দেশ্য করে যে কথাটি বলেছেন তা খেয়াল করে পড়তে পারেন, আর নয়নমুনির উপরে শুভাচারের মন্তব্য বেশি দেরি হলো না প্রকাশ করা হয়েছে ।
এনিওয়ে, দর্শনের আসল অর্থ বুঝতে নিজেকে আগে প্রস্তুত করা প্রয়োজন -একজন বললো আর আমি শুনলাম, শুনে বুঝলাম কি না বুঝলাম যে বললো তার উপর ভার দিয়ে দিলাম -অবশেষে শুনার পরমূহূর্তে কি বলা হয়েছে সব ভুলে গেলাম -তাতে দর্শন কি উল্টা মারলাম । পিএইচডি’র সংক্ষিপ্তরুপ আমাদের নিশ্চয় জানা আছে । দর্শন হচ্ছে নিজের শরীর এবং মনকে শুধুমাত্র চর্ম চক্ষু দিয়ে না দেখে প্রজ্ঞার চক্ষু দিয়ে দেখা; তবে দর্শন দুভাবে হতে পারে -১. বাহ্যিকভাবে এবং ২. অনতঃগতভাবে । তাই, প্রজ্ঞার অপর নামকে দর্শন বলা যেতে পারে।
গানটির সারমর্ম – আমরা সচরাচর সবকিছু বাহ্যিক দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে দেখে আনন্দ কিংবা দূঃখ পাই । এক মুহূর্তের জন্য ও নিজের ভিতরে কি আছে চেয়ে দেখি না । আমরা নিজেরা কত নিষ্ঠুর -কত হিংস্র -কত বর্বর এবং অমানবিক বুঝে না উঠে বাইরের জগতে দৃষ্টি দিই । কত বই লেখি -কত কবিতা -কিংবা গান সবকিছু অন্যর মাঝে খুঁজে -চিনি না আমি কে -কি আমার পরিচয় । এত আঘাত -এত ভালোবাসার ছোঁয়া পাওয়া স্বত্ত্বেও একবারের জন্য হলেও দর্শন করি না নিজের মাংসপৃণ্ডের ভিতর কি যেনো লুকিয়ে আছে -বুঝে উঠি না।
আত্মপ্রচেষ্টা-আত্মসিদ্ধী-আত্মলাভী-আত্মসমালোচনা; সবকিছুর মাঝে আত্ম লুকিয়ে আছে -সে কে? আমরা কি কখনো ভেবে দেখেছি -আমি কে, কি আমার পরিচয়, আমার ভালো-খারাপ দুটিই একসাথে লাগে কেন? আমরা সহজে বলে বসি মানবিক অনুভূতির কারণে এসব ঘটে -কিন্তু জানি না এর মাঝে এক গভীর দর্শন লুকিয়ে আছে । তাই -দর্শনকে বুঝে উঠা সবচেয়ে কঠিন -এর গভীরতা আরও গভীর । দূঃখ হচ্ছে শুধু একটি শব্দ -কিন্তু একটু গম্ভীরভাবে “দূঃখ” করে আওয়াজ করুণ এবং ভাবুন এই “দূঃখ” কি -কেন ‘দূঃখ হয়” দূঃখের মুল উৎপত্তি কোথা থেকে -এগুলো ভাবতে জানলে আপনি দর্শনকে জানতে শিখবেন । আপনি কিন্তু অনেক গবেষণা করেছেন; তারপর ও বলছেন দর্শন বুঝেন না -কি মনে করে জনাব ?।
@আকাশ মালিক, দর্শন (philosophy) জ্ঞানের অন্যতম প্রাচীন একটি শাখা। ফিলোসফি শব্দটির প্রথম ব্যবহার করেছিলেন গ্রিক চিন্তাবিদ ও গণিতজ্ঞ পিথাগোরাস। খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ অব্দের দিকে শব্দটি প্রথম ব্যবহৃত হয়। পিথাগোরাস নিজেকে প্রাজ্ঞ ভাবতেন না, বরং প্রজ্ঞার অনুরাগী ভাবতেন। তিনিই ফিলোসফি শব্দটি ব্যবহার করেন love of wisdom তথা প্রজ্ঞার প্রতি অনুরাগ অর্থে। দর্শনের সংজ্ঞা হিসেবে এই বিষয়টিকেই গ্রহণ করা যায়। আরও নির্দিষ্টভাবে বলতে গেলে দর্শন প্রজ্ঞার এমন একটি ধারা যা, মানুষের কিভাবে জীবন নির্বাহ করা উচিত (নীতিবিদ্যা); কোন ধরণের বস্তুর অস্তিত্ব রয়েছে এবং তাদের প্রকৃতি কি (অধিবিদ্যা); প্রকৃত জ্ঞান বলতে কোন জিনিসটিকে বোঝায় এবং কারণ প্রদর্শনের সঠিক নীতিগুলো কি কি (যুক্তিবিদ্যা); এই বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করে।
দর্শন শব্দটি ইংরেজি philosophy শব্দ থেকে এসেছে। ফিলোসফি শব্দটি এসেছে প্রাচীন গ্রিক ভাষা থেকে। গ্রিক ভাষায় φιλοσοφία (philosophía) শব্দটি দুটি শব্দ থেকে উৎপত্তি লাভ করেছে। শব্দ দুটি হল: φίλος (ফিলোস: বন্ধু, ভালোবাসার পাত্র) এবং σοφία (সোফিয়া: প্রজ্ঞা)। এ থেকে স্পষ্টতই বোঝা যায়, দর্শনের সাথে মূল সম্পর্ক হচ্ছে প্রজ্ঞার, আরও নির্দিষ্টভাবে বলতে গেলে, প্রজ্ঞার প্রতি ভালোবাসার। জ্ঞান এবং প্রজ্ঞা এক জিনিস নয়। ঘটনা ও তথ্য সম্পর্কে স্পষ্ট ও নির্ভুল ধারণা থেকে জ্ঞান লাভ করা যায়, কিন্তু দার্শনিক (যিনি দর্শন চর্চা করেন তাকেই দার্শনিক বলা হয়) কেবল তথ্যগত জ্ঞানের উপর নির্ভর করেন না। দর্শনের প্রধান কাম্য বিষয় প্রজ্ঞা। প্রজ্ঞার অনুসন্ধান ও চর্চার মাধ্যমেই দর্শন বিকাশ লাভ করে। পিথাগোরাস সারা জীবন প্রজ্ঞার সাধনা করেছেন, কখনও জ্ঞানের গরিমা অনুভব করেননি। এজন্য তিনি দার্শনিক হিসেবে বিদগ্ধ। দর্শনের জন্য যে প্রজ্ঞা কাম্য তার মধ্যে রয়েছে, অন্তর্দৃষ্টি, দৃষ্টিভঙ্গির অভ্রান্ততা, বিচারের ভারসাম্য ও বিশ্লেষণের সামঞ্জস্য।
http://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%A6%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%B6%E0%A6%A8#cite_ref-0
বিজ্ঞান বা দর্শণ এত বুঝিনা, তবে পড়তে খুব ভাল লাগে। আমার তো মনে হয়, চিন্তাই হল দর্শণ আর সেটার বাস্তব রুপ বিজ্ঞান।
দেখুন একজন দার্শনিকের দৃষ্টি আপনার থেকে তীক্ষ্ণ-কারন চিন্তা এবং ভাষার মধ্যে স্ট্রাকচার প্রদান করা তাদের কাজ। মেরী মিজলির সাথে ডকিন্সের বিতর্ক চলে দীর্ঘ দুই দশক এবং এই নিয়ে পক্ষে বিপক্ষে অনেক যুক্তির আদান প্রদান হয়েছে। তার বক্তব্য সমর্থন না করলেও তাতে মেরিট নেই তা ঠিক না। এখানে ডকিন্স বনাম মেরীর বিতর্কের একটা ইতিহাস পাওয়া যাবেঃ
******************************
In volume 53 (1978) of Philosophy, the journal of the Royal Institute of Philosophy, J. L. Mackie published an article entitled The Law of the Jungle: Moral Alternatives and Principles of Evolution, praising Richard Dawkins’ book The Selfish Gene, and discussing how its ideas might be applied to moral philosophy.[12]
Midgley responded in volume 54 (1979) with “Gene-Juggling,” an article arguing that The Selfish Gene was about psychological egoism, rather than evolution.[13] The paper criticized Dawkins’ concepts, but was judged by its targets to be intemperate and personal in tone, and as having misunderstood Dawkins’ ideas. However, Midgley has disputed this view, pointing out that while Dawkins purports to be talking about genes – that is chemical arrangements , he nonetheless slides over to saying that ‘we are born selfish’ (The Selfish Gene, p3). As Midgley points out, there is a major difference between ‘us’ and ‘our genes’.
She wrote that she had previously “not attended to Dawkins, thinking it unnecessary to “break a butterfly upon a wheel. But Mr Mackie’s article is not the only indication I have lately met of serious attention being paid to his fantasies.”[13] In a rejoinder in 1981, Dawkins retorted that the comment was “hard to match, in reputable journals, for its patronising condescension toward a fellow academic”.[14] He wrote that she “raises the art of misunderstanding to dizzy heights. My central point had no connection with what she alleges. I am not even very directly interested in man, or at least not in his emotional nature. My book is about the evolution of life, not the ethics of one particular, rather aberrant, species”.[14]
In volume 58, “Selfish Genes and Social Darwinism,” (1983), Midgley replied again, saying: “Apology is due, not only for the delay but for the impatient tone of my article. One should not lose one’s temper, and doing so always makes for confused argument…[but] My basic objections remain.”[15]
The bad feeling between Dawkins and Midgley caused by this affair apparently remains. In a note to page 55 in the 2nd edition of The Selfish Gene (1989), Dawkins refers to Midgley’s “highly intemperate and vicious paper.” Midgley, meanwhile, has continued to criticize Dawkins’ ideas. In her books Evolution as a Religion: Strange Hopes and Stranger Fears (2002) and The Myths We Live By (2003), she writes about what she sees as his confused use of language — the sleight of hand involved in using terms such as “selfish” in different ways without alerting the reader to the change in meaning — and some of what she regards as his rhetoric (“genes exert ultimate power over behaviour”), which she argues is more akin to religion than science. She wrote in a letter to The Guardian in 2005:
[There is] widespread discontent with the neo-Darwinist — or Dawkinsist — orthodoxy that claims something which Darwin himself denied, namely that natural selection is the sole and exclusive cause of evolution, making the world therefore, in some important sense, entirely random. This is itself a strange faith which ought not to be taken for granted as part of science.[16]
In an interview with The Independent in September 2007, she argued that Dawkins’ views on evolution are ideologically driven: “The ideology Dawkins is selling is the worship of competition. It is projecting a Thatcherite take on economics on to evolution. It’s not an impartial scientific view; it’s a political drama.”[17] In April 2009, Midgley reiterated her critical interpretation of The Selfish Gene as part of a series of articles on Hobbes in The Guardian.[18]
In her 2010 book The Solitary Self: Darwin and the Selfish Gene she argues that ‘simple one-sided accounts of human motives, such as the “selfish gene” tendency in recent neo-Darwinian thought, may be illuminating but are always unrealistic'[19]
@বিপ্লবদা,
আপনার সব লেখাই খুব ভাল লাগে। দর্শন সমন্ধে কিছু জানিনা বলে আপনার এই লেখাটা কঠিন মনে হচ্ছে। দর্শন মরা-জেতা যাইহোক, দর্শনের উপর হালকা টাইপের কোন লেখা কি আছে আপনার অথবা মুক্তমনার জন্য নতুন করে আধুনিক তথ্য সমৃদ্ধ কোন লেখা কি দেয়া যায়?
@হেলাল,
দর্শনের বিষয় নিয়ে হালকা টাইপের দু’টো সংজ্ঞা দিলাম… :laugh:
what is matter? …… never mind!
what is mind? ……. doesn’t matter!
কথাগুলো কোন্ দার্শনিকের মনে নাই, অবশ্যই আমার নয়।
@ইরতিশাদ, Ammi toh jantam eta homer simpson er dialogue 😀
@পৃথিবী,
Simpson সাহেবের তো তাহলে দর্শন সম্পর্কে গভীর জ্ঞান আছে বলতে হবে।
দার্শনিক সিম্পসনের আরেকটা অমর বাণী…।
“There’s so much I don’t know about astrophysics! I wish I read that book by that wheelchair guy.”
বিপ্লব, আপনার ভাষার ব্যবহার সত্যই আপত্তিকর। কারও নাম উল্লেখ না করে ‘বিশিষ্ট বিজ্ঞান লেখক’ বলা খুবই নিন্দনীয়। তর্ক-বিতর্কে অংশগ্রহনকারী সবারই উ্দ্দ্যেশ্য থাকে নিজের পক্ষে কনভার্ট করার দিকে। আমি এখন পর্যন্ত কোন সিরিয়াস তার্কিককে (রিভার্স অথবা ফলস ফ্ল্যাগ খেলোয়ার ছাড়া) দেখিনি যে তর্কে অংশ নেয় পাঠকদের তার মতবাদ থেকে দূরে ঠেলবার জন্যে। আপনি এধরনের ভাষা ব্যবহার করে অধিকাংশকে আপনার বক্তব্য থেকে বিকর্ষন করছেন।
আমার মনে হচ্ছে আপনার এই লেখার মূল ফোকাসটিতেই একটি গলদ রয়েছে। আমার মনে হয়নি যে বিজ্ঞান আর দর্শনের সম্পর্ক নিয়ে আপনার আর অভিজিৎ এর মধ্যে মৌলিক কোন পার্থক্য রয়েছে।আমার মনে হয় না এখানে কেউ বিশ্বাস করে দর্শন মৃত্যুর মুখে বরং মনে করে আপনারই মতো ‘বিজ্ঞানের বৃদ্ধিতে দর্শনের স্কোপ ছোট হচ্ছে না-তা বাড়ছে’। অভিজিৎ এবং অন্যান্যরা যখন বিজ্ঞানের আলোকে আমাদের বিশ্বাস এবং জীবন্ যাপন নিয়ে আলোচনা করে তখন তা দর্শনেরই চর্চা হয় বিজ্ঞানের নয়। এই ধরনের মুক্তচিন্তা আলোচনার জায়গা তো বিজ্ঞান দর্শনেরই চর্চাকেন্দ্র, পিয়ার রিভিউড এলিমেন্টারি রিসার্চের প্রকাশনা তো নয়।
হকিং তার প্রথম বই ‘ব্রিফ হিস্ট্রি ওফ টাইম’ এও ভিটগেনস্টেইনের রেফারেন্স দিয়ে বলেছিলেন ফিলোসফির পরিধি সংকুচিত, এথিকস ছাড়া তার আর কিছুতে বলার কিছু নেই। আরো লিখেছিলেন মাইন্ড ওফ গড এধরনের কিছু বাক্য, যা ছিল অর্ধেক কনভেনশনাল উইসডম আর অর্ধেক পপুলার সাইন্স প্রকাশনার ইতিহাসে সফলতম প্যাকেজিং এর একটি নমুনা। যারা পাব্লিক কমিউনিকেশন সম্পর্কে কিছুটা পড়েছেন তারা জানেন যেকোনো উপস্থাপনা ননএক্সপার্ট পাঠকের কাছে যাবার কিছুসময় পরই ৯০ শতাংশই উধাও হয়ে যায়, থেকে যায় শুধু কিছু রেসিডুয়াল মেসেজ। লেখার চুম্বক অংশ দিয়ে এই রেসিডুয়াল মেসেজগুলিকে সফল মীম এ পরিনত করতে পারার মধ্যেই পার্থক্য হয় অলটাইম বেস্টসেলার আর অন্যান্যদের মধ্যে।
অনেক বিজ্ঞান লেখক মাঝে মাঝেই দর্শনকে যে একহাত নিয়ে ফেলেন, আমার মনে হয় তার কারন দর্শনের সীমাবদ্ধতা নয় কিছু কিছু দার্শনিকের অর্বাচীনতা। আজকের দুনিয়ায় একজন বিজ্ঞানী একপাতা দর্শন না পড়ে তার ফিল্ডে অন্যতম সেরা অবদানকারী হতে পারেন কিন্তূ ভালোমতো বিজ্ঞান না জেনে দর্শনের অধিকাংশ ক্ষেত্রেই আলোচনা স্রেফ সময়ের অপচয় হয় মাত্র। অনেক খ্যাতনামা দার্শনিক-সমাজবিজ্ঞানী তাদের স যত্নে ঘেরা দেয়া ফিল্ডে বিজ্ঞানের অনুপ্রবেশে ভয় পেয়ে এমন সব লেখা লিখে ফেলেন যে তারা সববিজ্ঞানীদের হাস্যস্পদে পরিনত হন।
আমি ৯০ দশকের শেষের দিকে রিচার্ড ডকিন্সের ‘সেলফিশ জীন’ পড়ে তুমুলভাবে আলোড়িত হয়ে বিবর্তন সম্পর্কিত বই একের পর এক বই পড়ছিলাম তখন দেখেছিলাম স্টিফেন গুল্ড, স্টিভ রোজ প্রমুখ বিজ্ঞানীরা খুব যুক্তিসংগত ভাবেই ডকিন্সের প্রস্তাবনার সীমাবদ্ধতা তুলে ধরছেন। কিন্তু সেই সাথে পড়েছিলাম ডকিন্স সমালোচকদের মধ্যে অন্যতম বিখ্যাত বৃটিশ মরাল ফিলোসফার মেরী মিজলি’র (Mary Midgley) সমালোচনা। যিনি তার একটা বিখ্যাত লেখা শুরুই করেছিলেন এই ভাবে যে Genes cannot be selfish or unselfish, any more than atoms
can be jealous, elephants abstract or biscuits teleological। আমি আশ্চর্য হয়েছিলাম যে ক্লাস টেনের পর বায়োলজি না পড়েও আমি যেখানে ডকিন্সের প্রস্তাবনার মৌলিক দিকগুলো ধরতে পারছি সেখানে এই বিখ্যাত ফিলোসফার, ‘সেলফিশ জীন’ এর কিছুই বুঝতে পারে নি দেখে। পরবর্তীতে বিভিন্ন পত্রিকায় মিজলি’র আর ও বিভিন্ন লেখায় দেখেছিলাম যে এই বিখ্যাত বিজ্ঞান দার্শনিক এর মূল স্ট্র্যাটেজীই হলো strawmen খাড়া করে খ্যাতনামা বিজ্ঞান লেখকদের আক্রমন করা।
আজকের জ্ঞানজগতে খুব ভালকরে কোয়ান্টাম মেকানিক্স আর লেটেস্ট কসমোলজি না জেনে সৃষ্টিতত্ব নিয়ে আলোচনা যেমন অর্থহীন তেমনি অর্থহীন বিবর্তন আর নৃতত্ব না জেনে সমাজবিজ্ঞান, মনস্তত্ব এসব নিয়ে আলোচনা কিংবা নিউরোসাইন্স এর সর্বশেষ ডেভেলপমেন্ট না জেনে বিশ্বাস- ইচ্ছা নিয়ে তর্কবিতর্ক। কিন্তু দেখা যায় বাংলাদেশের কিছু ব্লগার ছাড়াও, অনেক প্রখ্যাত দার্শনিক অথবা সমাজবিজ্ঞানী এমনসব বিষয়ে পিওর দার্শনিক আলোচনা করেন, যে সব বিষয়ে এরই মধ্যে বিজ্ঞান অনেক কিছু বলে ফেলেছে।
@সফিক,
ভাই, শুরু করলেন –
আর শেষ করলেন –
দুইটার মধ্যে গুণগত পার্থক্যটা আরেকবার একটু বুঝিয়ে বলুন ভাই! 😕
@রূপম (ধ্রুব),১। বিপ্লব পাল এখানে প্রতিদিনই লেখা লেখেন এবং অভিজিৎ এর সাথে তার বিজ্ঞান-জীবন দর্শনের খুব বেশী কোনো পার্থক্য রয়েছে বলে মনে হয় না। যদি ‘বিশিষ্ট বিজ্ঞান লেখক’ ইংগিত সম্পর্কে আমার ভুল না হয় তাহলে প্রতিদিনের সহআলোচক কে হঠাৎ এই তীর্যক আক্রমন শুধু বিব্রতকরই নয়, মানসিক সমস্যার লক্ষন।
২। আমার বাংলা ব্লগজগত পদার্পন বেশীদিনের নয়। এর মধ্যে দেখেছি কিছু ব্লগার (মুক্তমনায় নয়) আত্মার অস্তিত্ব, সৃষ্টিতত্ব, কার্য-কারন ইত্যাদি নিয়ে মহোচ্ছাসে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন বিজ্ঞানের সাম্প্রতিক অগ্রগতি নিয়ে কোনো ধারনা ছাড়াই।
@সফিক,
‘
আমি ব্যাঙ্গ্যার্থে “বিশিষ্ট বিজ্ঞান লেখক” এই কথাটি ব্যাবহার করেছি-
আপনার এই ধারনার পেছনে কারন কি? আপনি যুক্তিগুলো এক, দুই, তিন করে লিখুন। আমি সেটা আগে বুঝতে চাইছি।
@বিপ্লব,আপনি যদি “বিশিষ্ট বিজ্ঞান লেখক” অভিজিৎ কে উদ্দেশ্য না করে লেখেন, তাহলে আমার বলার কিছু নেই। কিন্তু যদি অভিজিৎ কে উদ্দেশ্য করে ব্যাঙ্গ্যার্থে লেখেন, তাহলে দুটি কথা আছে। প্রায় প্রতিদিনি যার সাথে আপনার ইন্টারআ্যাকশন হচ্ছে তাকে হঠাৎ ব্যাঙ্গ করার কারন কি? আপনি তার মতকে ব্যাঙ্গ করতে পারেন তবে হঠাৎ ব্যাক্তিভাবে ব্যাঙ্গ করা যে খুবই jarring এটা তো বোঝা উচিত।
@বিপ্লব পাল, ১। বাংলায় অনেক সময়েই ‘একজন বিশিষ্ট — ‘ এই বিশেষণটি ব্যাঙ্গ্যার্থে ব্যবহার করা হয়।
২। আপনার লেখার শেষ অংশটি তীব্র শ্লেষ পূর্ণ, সুতরাং ব্যাঙ্গ্যার্থে ব্যবহারের কথা মনে হতেই পারে।
৩। প্রতিদিন যাকে নাম ধরে সম্বোধন করছেন, তাকে হঠাৎ ‘একজন বিশিষ্ট — ‘ বলা jarring।
@সফিক,
দুটোর মধ্যে গুনগত পার্থক্য দেখান…
ধন্যবাদ।
@সফিক,
হুম। আমিও সমর্থন করি। :lotpot:
ঠিক ই। শুধু একটা মিসিং আছে এই বাক্যে।
সেটা হচ্ছে দর্শন “জ্ঞান”, “চিন্তা”, “ধারনা” , “যুক্তি” “বাক্য”… এই সব কিছুর মধ্যে স্ট্রাকচার দান করে-এবং সেই সব স্ট্রাকচারের মধ্যে সম্পর্ক গুলোও বার করে।
এটা দর্শনে ” স্বাধীন চিন্তার” অস্তিত্ত্বের প্রশ্ন যা নিয়ে বহু কাজ আছে।
http://en.wikipedia.org/wiki/Free_will
@বিপ্লব পাল, যাক এবার সবকিছু দর্শন-ক্লিয়ার হয়ে গেল।
কিছু না জানলেই সেটাকে দর্শন বলে চালিয়ে দিয়ে মহাদার্শনিক বিতর্ক কূতর্কে নিয়োজিত হওয়াটা দর্শন, স্বাধীন ইচ্ছা বলে যে কিছু নেই সেটা না বোঝাটাও একটা দর্শন, আমি যে দর্শনের ‘দ’ ও বুঝি না সেটাই আমার দর্শন।
যাই আজকে, কেমন যেন নিজেকে দার্শনিক দার্শনিক বলে বিভ্রম হচ্ছে :-X ।
@বন্যা আহমেদ,
উপলদ্ধির জগতে তোমার এই উত্তরোন ও একটি জীবন দর্শন :lotpot:
বিষয়টাকে হাল্কা করা যাক। অনেকেই গভীর সব সংজ্ঞা হাজির করছে বই পত্র ঘেটে। কেউ দিচ্ছে উইকিপেডিয়ার লিঙ্ক। কেউ বা বলছে দর্শনের কোন সুস্পষ্ট সংজ্ঞা নেই।
আমার কাছে সবচেয়ে ভাল সংজ্ঞা মনে হয়েছে সোভিয়েতস্কি কৌতুকভ -এ দর্শনের দেওয়া সংজ্ঞাই। দেওয়া যাক এখানে –
দর্শন, মার্কসীয় দর্শন এবং মার্কসীয়-লেলিনীয় দর্শন বলতে কি বোঝায়?
– দর্শনঃ দর্শন হল অন্ধকার ঘরে কালো বেড়াল ধরা।
– মার্কসীয় দর্শনঃ মার্কসীয় দর্শন হল বেড়ালহীন অন্ধকার ঘরে কালো বেড়াল ধরা।
– মার্কসীয়-লেলিনীয় দর্শনঃ আর মার্কসীয়-লেলিনীয় দর্শনের বৈশিষ্ট হল বেড়ালহীন অন্ধকার ঘরে কালো বেড়াল ধরেছি – বলে বেড়াল শিকারীর সার্বক্ষণিক চিৎকার।
🙂
@অভিজিৎ,
:hahahee:
@অভিজিৎ,
এমন কৌতুম বল্লে গায়ে লাগে। আমি কিছুদিন এদের পিছে পিছে ঘুড়েছি।
:rotfl: :rotfl:
ঈশ্বর একটি দার্শনিক অনুকল্প। কিছু কিছু ঈশ্বর বিজ্ঞান দিয়ে বাতিল করা যায়। কিছু কিছু যায় না।
সৃষ্টিকর্তা ঈশ্বরকে বিজ্ঞান দিয়ে বাতিল করা যায়-কিন্ত প্যান্থেওনিক বা স্পিনোজার ঈশ্বর ( যা সুফীদের বা উপনিষদের ঈশ্বরের ধারনা-যে এই সর্বব্যাপী সৃষ্টিই ঈশ্বর) বিজ্ঞান দিয়ে বাতিল করা যায় না।
তাহলে তো ব্যাপারটা আপাতত এই দাঁড়াচ্ছে যে দর্শনের কোন নির্দিষ্ট সংজ্ঞা নেই। সবই দর্শন, আবার কিছু না থাকাটাও দর্শন। দর্শন এমন একটা ব্যাপার যা আছে কি নেই তা নিয়েই দর্শন লেখা যায়, বা দর্শন মৃত বললেও সেটা আরেক দর্শন হয়ে যায়:-/ । যেমন ধরুন, আপনি যেটাকে জীবানাদর্শন বলছেন সেটা আমার কাছে ব্যক্তিগত পছন্দ অপছন্দের ব্যাপার। আপনি যে রাষ্ট্রপ্রদত্ত ব্যক্তিস্বাধীনতার কথা বলেছেন সেটা হয়তো আপনার মস্তিষ্কপ্রসূত (এখন এটাকে দর্শন বলে অভিহিত করতে চাইলে করতেই পারেন), কারণ আধুনিক রাষ্ট্রগুলো এত কিছুতে ( কম বা বেশী) ব্যক্তির জীবনে হস্তক্ষেপ করে যে এখানে ব্যক্তিস্বাধীনতাটা একধরণের ইলিউশান ছাড়া আর কি্ছুই নয়। স্যাম হারিসের বলা রাষ্ট্রিয় মরালিটি আপনি নাইই মানতে চাইতে পারেন, রাষ্ট্র কিন্তু আপনাকে এরকম বহু হ্যারিসের বহু মরালিটি গিলিয়ে যাচ্ছে সারাক্ষণ।
@বন্যা আহমেদ,
তা তো গিলাচ্ছেই। কিন্তু তখন গিলানোর বিরুদ্ধের সংগ্রামের শত্রু আরেকটা বেড়ে যাবে আর কি। আর দেখে মনে হবে আমি বিজ্ঞানের বিরুদ্ধে লড়ছি।
আমার দৈনন্দিন কর্মকাণ্ডে উচিত অনুচিত বের করার ভার বিজ্ঞানের উপর দেবার চিন্তা মানুষ কি করে করলো চিন্তা করে পাই না। মানুষকে একটা সার্বিক নৈতিকতার দাস বানানোর হিংস্রবুদ্ধি শত বিজ্ঞান চর্চা করেও যে মানুষের যাবে না এ ব্যাপারে ধীরে ধীরে নিশ্চিত হচ্ছি। এটাকেই কি সাইন্টিজম বলে বন্যাপা? :-/
আমার ফেইসবুকে ইদানিং দেয়া একটা স্ট্যাটাস শেয়ার করছি:
. . . বা ~বতী।
আচ্ছা বিপ্লব, একটা প্রশ্ন। দর্শনের সংজ্ঞা কী? ‘উচিত’ কি ‘অনুচিত’ বিষয়ে কথা বললেই কী তা দর্শন হয়ে যাবে? আমরা নিত্যদিনের জীবনে কারণে অকারণে দর্শনের কথা বলি, এভাবে চিন্তা করলে তো সবই দর্শন। যেমন ধর, ঈশ্বর থাকা উচিত কি অনুচিত কথাটাই তো অর্থহীন হয়ে যায় যদি বিজ্ঞানের সাহায্যে দেখানো যায় যে ঈশ্বর থাকার পেছনে কোন যৌক্তিক বা বৈজ্ঞানিক কারণ নেই। আগে জীবনের উৎপত্তি এবং বিকাশের পিছনে বিশাল এক দর্শনের প্রয়োজন হত, এখন ড্যানিয়েল ডেনেটের মত দার্শনিকেরা বিবর্তনকে ভিত্তি করে দর্শন লেখে। আবার ধর গর্ভপাত বৈধ হওয়া উচিত কী অনুচিত বা কোন স্টেজ পর্যন্ত বৈধ হতে পারে ধরণের তথাকথিত ‘নৈতিক’ প্রশ্নেরও জবাব পাওয়া যেতে পারে জীবনের সঞ্চার কোন মূহুর্তে হচ্ছে তার বৈজ্ঞানিক সংজ্ঞা দেওয়ার মাধ্যমে। এমনকি মিথ্যা কথা বলা ঠিক কী ঠিক না এটারও গাণিতিক মডেল তৈরি করে দেখানো যায় যে, কতটুকু মিথ্যা বলা সারভাইভালের জন্য জরুরী আর কতটুকু সমষ্টিগত সমাজের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
তুমি এখানে এন্টি-ন্যাচারালিস্টদের যে কয়টা উদাহরণ দিলে তার সবগুলোই এক সময় আমাদের বৌদ্ধিক জগতে দার্শনিকভাবে ডমিনেট করতো, এখন এদের সবার উত্তর দিতে হলেই কোন না কোনভাবে বিজ্ঞান নিয়ে আসতে হবে। আর একথা তো অস্বীকার করার কোন উপায়ই নেই যে দর্শনের যে প্রতাপ প্রতিপত্তি ছিল তা এখন অনেকাংশেই সঙ্কুচিত হয়ে গেছে, জীবের উৎপত্তি বিকাশ, মহাবিশ্বের উৎপত্তি এমনকি ধর্মের মত বিষয়গুলোও ক্রমশঃই দর্শনের ব্যপ্তি ছাড়িয়ে বিজ্ঞানের উপর ভর করছে।
ওহ আরেকটা দার্শনিক কথা না বলে পারছি না ( এবার বুঝলাম দর্শনের ব্যবহার), তুমি যে গালাগালি করলে ‘সববোদ্ধা’ বলে , আমি তো এতদিন ভাবতাম তুমি মুক্তমনার ‘সববোদ্ধা’দের ‘হেড বোদ্ধা’ – তুমি জানো না এমন কিছু নেই, এর লেখায় বলছ কিচ্ছু হয়নি, ওকে বলছো ফালতু, এ বিজ্ঞান বোঝে না ও সমাজ বোঝে না :-/ ।
@বন্যা আহমেদ,
সেটা হয়ত পারে। কিন্তু তারপরেও কিন্তু মানুষ তা মানতে বাধ্য থাকবে না। তার জীবন দর্শন, বা সমাজ দর্শন বা রাজনৈতিক দর্শন তারপরেও বিজ্ঞান নির্দেশিত অপটিমাল আদর্শের চেয়ে আলাদা হতে পারে। যেমন আমার জীবন দর্শন হলো (say) সারভাইভালের চেয়ে ব্যক্তি-স্বাধীনতা আমার কাছে বেশি কাম্য। নিজের ভ্যালুজ নিজে ঠিক করছি নিজের জীবনাদর্শের উপর ভিত্তি করে। এখানে আমার জীবনাচরণের সিদ্ধান্তে বিজ্ঞানের কি করার আছে।
তেমনি রাজনৈতিক দর্শনের কথাও ধরুন। নানান বৈজ্ঞানিক গবেষণায় প্রমাণ করা গেল, মদ খেলে ব্যক্তি সমাজ ও রাষ্ট্রের লাভের চেয়ে ক্ষতিই বেশি। তারপরেও দেশের মানুষ মদ খেতে চায়, আর গণতান্ত্রিক দর্শনে দীক্ষিত রাষ্ট্র মনে করে জনগণের সেবক সে, জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটানোর সবরকম ব্যবস্থা সে করবে। বার চালু করে প্রয়োজনে মানুষের নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যের জন্যে ততোধিক ব্যয় করবে। এই যে গণতান্ত্রিক দর্শন, এটা কি বিজ্ঞান দিল? হয়ত বিজ্ঞান দেখাতে পারে গণতন্ত্রের সুবিধা, হয়ত বিজ্ঞান তার উল্টোটাও দেখাতে পারে। কিন্তু মানুষ গণতন্ত্র পছন্দ করলো। আমি এইসব দর্শনে বিজ্ঞানের অবদান বা সম্পর্ককে অস্বীকার করছি না। কিন্ত কোরের অনেকগুলো কম্পোনেন্টগুলো যে বৈজ্ঞানিক নয়, বরং দার্শনিক, বিজ্ঞানের বাইরে গিয়ে মানুষের বেছে নেয়ার ব্যাপার এখানে জড়িত, এবং এ ব্যাপারে বিজ্ঞানের কিছুই করার নেই, এটা কি খেয়াল করেছেন।
তাছাড়া বিজ্ঞানের দর্শনের কথা কি বলবেন? বিজ্ঞান কি বলতে পারে কোনটা বিজ্ঞান নয়? বিজ্ঞান কি বিজ্ঞানের সংজ্ঞা দিতে পারে?
@রূপম (ধ্রুব),
এ প্রশ্নটি দর্শনের ক্ষেত্রেও করা যায়। দর্শন কি পারে দর্শনের সংজ্ঞা দিতে? যদি পারে বলে মনে করা হয়, তাহলে অযাচিতভাবেই ধরে নেওয়া হচ্ছে দর্শনের স্থান বিজ্ঞানের উপরে, এবং যেটা অনেকটা অলিখিত বিশ্বাসের মতোই দাঁড়াচ্ছে। আর না পারলে সেই খাড়া তোর বড়ি ছাড়া আর কিছু নয়।
আর আপনার গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাগুলো নিয়ে যে উদাহরণ যা দিলেন তাতে একমত। যদিও উচিৎ এবং অনুচিততের সীমারেখাটাও এখন বিজ্ঞান দিতে পারছে বলেই অনেকে মনে করছেন। উদাহরণ দেই। যদিও গণতান্ত্রিক অধিকার বশতঃ আপনি ফাস্ট ফুড তেল চর্বি জাতীয় খাওয়ার অধিকার রাখেন বলে আপনি বলবেন, কিন্তু বিজ্ঞানের গবেষণাতেই বেড়িয়ে আসছে যে ওগুলো স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। আজকে তামাকের বিজ্ঞাপন দেয়ার সময় যে সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরণ লেখা হয় – স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর, তা বৈজ্ঞানিক গবেষণার কারণেই। এমনকি এখানে ওষুধের বিজ্ঞাপনের সময়েও সাইড ইফেক্টগুলো বাধ্যতামূলক বলে বলতে হয়। এগুলো সবই আমরা জানছি বৈজ্ঞানিক গবেষণা থেকেই। আপনি বা আমি যে রক্ষণশীল তালিবানী সমাজ পছন্দ করি না – হয়তো সাদা চোখে মনে হবে – ব্যাপারটি আপনার ব্যক্তিগত পছন্দের। কিন্তু একটু গভীরে গেলে হয়তো দেখবেন এর পেছনে আছে বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ – যেমন সে সমাজে মেয়েরা পিছিয়ে আথেকে, তাদের অধিকার খর্ব করা হয়, ক্যাপিটাল পানিশমেন্ট আছে, সেখানে শিক্ষার হার কম, মুক্তবুদ্ধির চর্চা রহিত আর সার্বিকভাবে সে সমস্ত সমাজ অর্থনৈতিকভাবে বিশ্বে পিছিয়ে। আপনার মনের মধ্যে যে বিশ্লেষণগুলোর মাধ্যমে সিদ্ধান্তের দিকে আপনি এগুচ্ছেন তা মূলতঃ বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণই। আপনি যদি তারপরেও উলটো সিদ্ধান্ত পছন্দ করেন, তবে হয়তো হবে বৈজ্ঞানিক সিদ্ধন্তের বাইরে গিয়ে। দর্শনকে মৃত আমি বলছি না, কিন্তু দর্শনের অনেক সিদ্ধান্তেই এখন ছড়ি ঘুরাতে শুরু করেছে বিজ্ঞান। সেটাই হচ্ছে কথা।
স্যাম হ্যারিস এ বছর একটি চমৎকার বই লিখেছেন – The Moral Landscape: How Science Can Determine Human Values বইটিতে আপনার ধারণাগুলোর কাউন্টার কিছু আর্গুমেন্ট হাজির করা হয়েছে। পড়তে পারেন। স্যাম হারিস মনে করেন মরালিটি সায়েন্সেরই একটি অবিকশিত শাখা (অবশ্য শন ক্যারল সহ অনেকেই যদিও এটিকে ঠিক মনে করেন না)।
আমার মত হচ্ছে দর্শনকে মৃত বলা যদি হকিং এর অভিমত হয়, জীবিত বলাও শেষ পর্যন্ত একটা অভিমতই। আপনি অভিমতের বিরুদ্ধমত দিতে পারেন, দ্বিমত করতে পারেন, কিন্তু ভুল বলতে পারেন না। আনফলসিফায়েবল অভিমতের এর ভুল শুদ্ধ কিছু নেই।
@অভিজিৎ,
দর্শনকে তো আমি বিজ্ঞানের উপরে স্থান দিচ্ছি না। আমি কেবল বলছি, এমন বিষয় আমাদের রয়ে গেছে, যেখানে বিজ্ঞান বিচরণ করে না, কিন্তু দর্শন করে। অবশ্যই আমি দাবী করছি না, এতে করে দর্শন যে আমাদের খুব উন্নত মানের কিছু উপহার দিয়ে দিচ্ছে, বা দর্শন নিজে বিজ্ঞানের মত সংবদ্ধ, নিয়মমাফিক একটি সমাধান। কিন্তু সে যে কেবল জীবিত নয়, অত্যন্ত সক্রিয়ভাবে প্রভাব রাখছে, সেটাই তো বলতে চাইলাম যখন জিগ্গেস করলাম বিজ্ঞান বিজ্ঞানকে সংজ্ঞায়িত করতে পারে কিনা, তাই না?
এখন বিজ্ঞান সুসংজ্ঞায়িত, কিন্তু দর্শন কিন্তু তেমনটা নয়। কিন্তু দর্শনের সংজ্ঞা সে যাই হোক, বিজ্ঞান যে বিজ্ঞানকে নিজেকে সংজ্ঞায়িত করতে পারে না এবং করে না, এতে নিশ্চয়ই কোনো দ্বিমত নেই। তার অর্থ থোর বড়ি খাড়া হলেও আপত্তি নেই। কারণ আমি এখানে যে বিষয়টি বলতে চেয়েছি, সেটার পক্ষে এটি নিশ্চিতভাবেই কাজ করছে।
কোনটা বিজ্ঞান নয়, সেটাও কখনই বিজ্ঞান বলে না। সেগুলোর জন্যে আমরা যাচাইযোগ্যতার কথা আনি, বার্ডেন অফ প্রুফের কথা আনি, অক্কাম্স রেজারের কথা আনি। এগুলোর প্রত্যেকটা বিজ্ঞানের দর্শনের অংশ, বিজ্ঞানের নয়।
@অভিজিৎ,
এখানে এসে আমাদের ধারণা কনভার্জ করছে।
আর
এখানে এসে এর উত্তরণ হলো বলা যায়। 🙂
এই বছর এই নিয়ে তৃতীয় বার স্যাম হ্যারিস দর্শিত হলাম :-X ।
উনি ইজ ঔট প্রবলেমকে মাথার উপর তুলে না রেখে স্কেপটিক হিসেবে ঝাঁকি দিতে বলেছেন, যার সাথে আমি একমত। কিন্তু নিজে ওয়েল বিয়িং ব্যাপারটাকে পরিষ্কার না করে এগিয়ে গেছেন সেটা পরিমাপে। বলছেন, যে বস্তু ওয়েল বিয়িং বর্ধন করে, সেটা মোরাল, আর যা হ্রাস করে, তা ইম্মোরাল। এটা ব্যক্তি-নিরপেক্ষভাবে নির্ধারণ যে সম্ভব না, এটা এখন আমার চলমান গবেষণা। আমার চিন্তা চেতনায় যে বিজ্ঞানের প্রবল প্রভাব, সেটা স্বীকার করে নিয়েই বলছি – স্যাম হ্যারিসের (বা এমন যে কারো) মোরাল সায়েন্স ব্যবহার করে যে তন্ত্র বা রাষ্ট্র আমার কর্মকাণ্ডের কোনটা মোরাল কোনটা ইম্মোরাল বিচার দেয়া শুরু করবে, সে রাষ্ট্র থেকে আমি যোজন যোজন দূরে থাকব।
@রূপম (ধ্রুব),
স্যাম হারিসের বক্তব্য আর রাষ্
@রৌরব,
দুচ্ছাই :-X
স্যাম হারিসের বক্তব্য আমার কাছে মনে হয়েছে অনেকটা এরকম। নৈতিকতার ব্যক্তি-যুগ নির্ভরতা তাকে বিজ্ঞানের আওতার বাইরে নিয়ে ফেলে না, জটিলতর করে মাত্র। ওয়েল বিয়িং এর ব্যাপারে তাঁর বক্তব্য পুরো পরিষ্কার না হলেও মূল ব্যাপারগুলি এরকম মনে হয়েছে: ওয়েল বিয়িং (অতএব) নৈতিকতা মানুষ ও অন্য conscious প্রাণীর মস্তিষ্কের স্টেইটের ফাংশন। মস্তিষ্কের অনুভূতি নিরপেক্ষভাবে এসব ধারণা অবান্তর। অতএব, ওয়েল বিয়িং এ মুহূর্তে যতই পিচ্ছিল ধারণা হোক না কেন:
১) কিছু ক্ষেত্রে কোনটা বেশি ওয়েল বিয়িং দ্যোতক, তথা নৈতিক – এটা বৈজ্ঞানিকভাবে বলা সম্ভব।
২) ধীরে ধীরে আরো জিনিস এর আওতার মধ্যে চলে আসবে।
আমার কাছে এই বক্তব্য in and by itself সমস্যাজনক মনে হয়নি।
@রৌরব,
নিচে সামষ্টিক ওয়েল বিয়িং নিয়ে অনেক কিছু লিখেছি। এখানে একজন ব্যক্তির ওয়েল বিয়িংয়ের ব্যাপারে বিজ্ঞান নির্ধারিত সমাধান নিয়ে আমার সমস্যাগুলো বলি।
“ওয়েল বিয়িং (অতএব) নৈতিকতা মানুষ ও অন্য conscious প্রাণীর মস্তিষ্কের স্টেইটের ফাংশন”। সেটা হয়ত ক্রমান্বয়ে বের করা যায় বিজ্ঞান দ্বারা। এই জায়গাটায় আমি সত্য উদঘাটনের বিজ্ঞান আর প্রয়োগের বিজ্ঞানকে আলাদা করতে চাই। বিজ্ঞান কোনো মুহুর্তে স্থির না, কখনো সে দাবীও করে না, এই মুহূর্তে পর্যবেক্ষণ সিদ্ধ যে প্রকল্প, সেটা অনড় থাকবে। ফলে যেকোনো প্রকল্প ভবিষ্যতে নড়ে যাবার সম্ভাবনা আছে। ফলে মস্তিষ্কের সেই স্টেইটের আলটিমেট ফাংশনটি আমরা উদঘাটন করেছি, এমন কনফিডেন্স আমরা পেতে পারব না। সত্য উদঘাটনের যাত্রায় এটা সমস্যা না।
সমস্যা হচ্ছে, যখন সেই অন্তর্বর্তী বিজ্ঞানকে মানুষের ওয়েল বিয়িংয়ের সমাধানে প্রয়োগ করা হবে। পরিপূর্ণ ফাংশনটি পাওয়া গেছে কিনা যেহেতু নিশ্চিত নই, সেটা ব্যবহার করে আমি যে পরিমাণ সুখ পাচ্ছি, সেটা আমার প্রাপ্য ওয়েল বিয়িং কিনা, সেটা সম্পর্কেও নিশ্চিত হওয়া সম্ভব নয়। হিটলার বা স্তালিনের সময়ে যা বিজ্ঞান, আমাদের সময়ে তা আপাত বিজ্ঞান।
আমার মনে হয়, এরপরেও এই আপাত বিজ্ঞানগুলো আগামীতে আরো আসবে, তবে যেহেতু মানুষের এখন যথেষ্ট শিক্ষা হয়েছে, বুঝতে শিখেছে যে আজকের বিজ্ঞানই শেষ কথা নয়, জোরপূর্বক টার নির্ণীত ওয়েল বিয়িংয়ের সংজ্ঞা গ্রহণে সে বাধ্য করবে না, বরং সেটা উপস্থাপিত হবে একটা চয়েজ হিসেবে। একটা মার্কেটিং পণ্য হিসেবে। তখন অনেকেই সেই বিজ্ঞান দ্বারা নির্ধারিত ওয়েল বিয়িংয়ে পার্টিসিপেট করতে আগ্রহী হবে। অনেকটা আইফোন ৪ বা কাইনেক্ট ক্রেইজের মত। এবং অনেক মানুষ থাকবে যারা সেটাতে আগ্রহী হবে না, বা সতর্কতার সাথে চোখ রাখবে। তারপর আইফোন ৪-এ যেমন হাজারটা বাগ ধরা পড়ল, ওই ওয়েল বিয়িংয়েও নানান বাগ ধরা পড়বে। তারপর আপডেট বের হবে।
সরকার কর্তৃক চাপিয়ে দেয়া সিস্টেমের আকারে এটা এলে সেটা যেমনই হোক, পরে আরেকটা হিটলার বা স্তালিনের বেকুবি হিসেবেই সেটাকে মানুষ মনে রাখবে।
@রূপম (ধ্রুব),
আমার বক্তব্যের কাছাকাছি চমত্কার একটা মন্তব্য এসেছে সচলায়তনে।
@রৌরব,
চাপিয়ে দেবার আরেকটা সমস্যা। আমার ওয়েল বিয়িং আমি নিজে অর্জন করতে চাই, নাকি আমার রাষ্ট্র করে দেবে, এটাও একটা প্রশ্ন। অনেকেই চাইতে পারে যে সরকার এ ব্যবস্থা নিক। কিন্তু অনেকে চাইতে পারে, সরকার তাকে সকল চয়েজ দিয়ে ক্ষান্ত হোক, আর আমার নিজের ওয়েল বিয়িংটা আমাকেই তৈরী করতে দিক। অন্যের ওয়েল বিয়িং তাকে জোর করে খাওয়ানোর সরকার কে?
মানুষের সকল চয়েজ নিশ্চিত করার পর, তার ওয়েল বিয়িংয়ের জন্যে সরকারের আর কি করার থাকতে পারে, সেটা আমি বুঝতে পারছি না। মানে মস্তিষ্কের সেই স্টেইটের ফাংশনটা পুরোপুরি উদঘাটন হয়ে গেলেও কেন সেটা ব্যবহার করে মানুষের ওয়েল বিয়িং অনেকটা জোর করে বাড়িয়ে দিতে হবে সেটা আমি বুঝতে পারছি না। মানুষের চরকাগুলোতে তেল দেয়ার দায়িত্ব ওই ওই মানুষগুলোর উপরেই ছেড়ে দেয়া উচিত (তেলের প্রাপ্র্যতাটা নিশ্চিত করার পরে)।
@অভিজিৎ,
এটা অবশ্যই বাংলা । কিন্তু অনেক চেষ্টা করেও অর্থ উদ্ধার করতে পারি নি।
:-X :-X :-X
@আসরাফ,
থোড় বড়ি খাড়া লিখে তাড়া তাড়া এই বার লিখেছেন খাড়া বড়ি থোড়।
@রূপম (ধ্রুব),
আমি যে ব্যাপারটা বুঝতে পারছি না সেটা হল মানুষ মানলো কী মানলো না সেটার সাথে কোনটা বিজ্ঞান বা কোনটা বিজ্ঞান নয় তার কী সম্পর্ক? হাজারটা দর্শনও তো মানুষ মানে না। আপনি যেভাবে ব্যাখ্যা করলেন তা তে করে তো সবকিছুই দর্শন, আমি সকালে উঠে হোল মিল্ক খাবো না স্কিম মিল্ক খাবো বা কোনটা খাওয়া উচিত হবে সেটাও দর্শন যদিও এই সিদ্ধান্তটা আমি নিচ্ছি বৈজ্ঞানিক তথ্যের উপর ভিত্তি করেই। দর্শনের কী কোন নির্দিষ্ট সংজ্ঞা আছে? আমি কিন্তু আপনার বা বিপ্লবের সাথে তর্ক করার জন্য এটা জিজ্ঞেস করছি না, দর্শনের সংজ্ঞাটা বুঝতে চাচ্ছি।
@বন্যা আহমেদ,
দর্শনের সংজ্ঞার জন্যে উইকিপিডিয়ারটা দিয়ে শুরু করতে পারি।
তবে দর্শন বিজ্ঞানের মত সুসংজ্ঞায়িত না বলেই আমার ধারণা। কিন্তু তাই বলে এটা বুঝতে কিন্তু আমাদের অসুবিধা হয় না যে, পপারিয়ান ধারণাগুলো বিজ্ঞানের `দর্শন’। বা আমি যে সারভাইভাল থেকে ফ্রিডম প্রেফার করি (বিশেষ করে যখন তারা সাংঘর্ষিক), এটা একটা জীবন `দর্শন’। এবং এই মানা না মানাটা অনেকক্ষেত্রে বিজ্ঞান-অসংশ্লিষ্ট দর্শন দ্বারা চালিত হয় ও ভবিষ্যতেও হতে থাকতে পারে। সেখানে দর্শন জীবিত থাকলো। সেই দর্শনকে ধবংশ করার উপায় নেই, তা কাম্যও না।
@বন্যা আহমেদ,
বাই দ্য ওয়ে, আপনার আর বিপ্লব পালের সাইন্টিজম নিয়ে কিছু ইন্টারেস্টিং বিতর্ক পড়েছিলাম বিতর্কটা অনুষ্ঠানের অনেক পরে। আপনাদের দুজনের অবস্থান কি পুরোপুরি ঘুরে গেছে নাকি। :-/
ভুলও বুঝে থাকতে পারি। 😕
@রূপম (ধ্রুব),
এ্য্য্য্য? এইডা কী কন? সাইন্টিজমের সংজ্ঞাই তো জানি না আমি, বিতর্ক আবার করলাম কবে?? আমার স্মৃতিশক্তি প্রায় হকিং এর দর্শনের মতই মৃত, আর বিপ্লব যেরকম আজ দার্শনিকভাবে এক কথা বলে তো আবার কাল আরেক কথা বলে তা তে করে কে কখন ঘুরে যায় সেটা বলা মুশকিল।
ওহ আচ্ছা, ‘দার্শনিকভাবে’ দেখলে আমার অদার্শনিক মস্তিষ্কটা আরেকটা ভুল করে ফেলেছে। আপনাকে উত্তর দিতে গিয়ে ভুল করে থ্রেডে উত্তর না দিয়ে দার্শনিকভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে আলাদা বক্সে ( ৭ নম্বর) উত্তর দিয়ে ফেলেছে। এটাকে কী নিছক ভুল বলে ছেড়ে দেব নাকি এটাও কোন দর্শনের আওতায় পড়বে :-/ ?
ওহ হো দাঁড়ান আরেকটা দার্শনিক প্রশ্ন ছিল, সকাল থেকেই জিজ্ঞেস করবো ভাবছি। আপনার ধ্রুব থেকে রূপম ধ্রুব হয়ে যাওয়ার পিছনে দার্শনিক কারণটা কী ছিল? এটা কি দর্শনের স্বাধীন ইচ্ছা অনুযায়ী ঘটলো? হকিং এর মতে কিন্তু স্বাধীন ইচ্ছা একটা ইলিউশান ছাড়া আর কিছু নয় 🙂 ।
@বন্যা আহমেদ,
আমি ত জানতাম শুধু মৌলবাদিরা সারাজীবন এক দর্শন আঁকড়ে থাকে। তোমার আবার সেই গতি হল কবে থেকে??
@বিপ্লব পাল,
খুবই পছন্দ হৈসে……….
:lotpot:
@আসরাফ,
:lotpot: :lotpot:
@বন্যা আহমেদ,
কট রেড হ্যান্ডেড:
হি হি।
এভাবেই তো চিন্তার উত্তরণ ঘটে!
আমিও হকিং ভাইয়ের সাথে একমত। স্বাধীন ইচ্ছা একটা ইলিউশনই। দাঁড়ান, একটা পাবলিসিটিই করে ফেলি: এটা লিখেছিলাম স্বাধীন ইচ্ছা নিয়ে। মুক্তমনায় দেখি নাম চেইঞ্জ করে ফেলার স্বাধীনতা আছে। স্বাধীনতাটাও একটা ইলিউশন প্রমাণ হবার আগে এটার সদ্ব্যবহার করে ফেললাম। এর সাথে বিপ্লব ভাইয়ের বেনামী লেখকদের গালমন্দ করার কোনো সম্পর্ক নাই।
@রূপম (ধ্রুব),
বন্যার এই ডিগবাজি হাতে নাতে ধরার জন্যে ধন্যবাদ। আমি কিন্ত সেদিন ন্যাচারালিস্টিক দর্শনের জন্যেই লিখেছিলাম-আজও তাই লিখছি।
দেখছ সেদিন ও আমার বক্তব্যের বিরোধিতা করে-আজকে আমার ভাষাতেই কথা বলছে :-X
@রূপম (ধ্রুব), হে হে, আমার মেমরীতে কিন্তু এই লেখাটার কোন স্টোরেজ নেই, এমনকি লেখাটা পড়ার পরেও মনে পড়লো না, দর্শন না বুঝলে মনে হয় এরকমই হয় । আমি যদি আমার নিজের লেখা পড়ে না বুঝি তাহলে কী সেটা আমার লেখা? যেমন ধরুন, জঙ্গলে গাছ ভেঙ্গে পড়লে সেটা যদি কেউ না দেখে তাহলে কি আসলেই গাছটা পড়েছিল? 🙂
এই লেখাটাতে কিন্তু আমি বিজ্ঞানের সীমাবদ্ধতার কথা বলেছি, বলিনি যে বাকিটা সবই দর্শন। আমি তো এখনো বলছি যে বিজ্ঞান না হলেই বাকিটা দর্শন হবে তা আমি মেনে নিতে পারি না, দর্শনের সংজ্ঞা এবং বাউন্ডারিটাই তো বুঝলাম না এখনো । আমি যেমন মনে করিনা বিজ্ঞান সব কিছুর উত্তর দিয়ে দিয়েছে, তেমনিভাবে ”বিজ্ঞানমনষ্কতা’ আর ‘বিজ্ঞানবাদ’ও এক নয় আমার কাছে, আর দর্শন তো কোন ছাড়…
বিপ্লবকে যে সারা জীবন বললাম, এমন এস্পার কী ওস্পার কথা বলা ছাড়, সেটা তো শুনলো না। এখন দেখো কেমন দার্শনিক পালটি খেয়েছে সে 😉 । (ফ্লিপ ফ্লপারের একটা আইকন নাই কেন :-Y )
(এটা মোটেও ২০০৯ এর লেখা না, বহু বছর আগের লেখা। রামগড়ুড়ের ছানাের সার্ভার উলটাপালটা ডেট বসায় দিসে মনে হচ্ছে।)
@বন্যা আহমেদ,
এন্টি ন্যাচারালিস্টদের স্কোপ ছোট হচ্ছে-সেটা নিয়ে সন্দেহ নেই। কিন্ত ন্যাচারালিস্ট দর্শন = বিজ্ঞান না।
এটাকে আমাদের জ্ঞানের সেট দিয়ে বুঝতে হবে।
জ্ঞান অসীম। ইনডিড তোমার বক্তব্য হচ্ছে জ্ঞানের পরিমান “N” -যেখানে বিজ্ঞানের লদ্ধ জ্ঞানকে M ধরলে –
(N-M)–> 0 কারন M বেড়েই চলেছে এবং একদিন এন কে ধরে ফেলবে।
ব্যাপারটা তা না। কারন বিজ্ঞানের প্রতিটি নতুন জ্ঞান আরো অনেক জ্ঞানের জন্ম দিচ্ছে যা বিজ্ঞানের অন্তর্ভুক্ত না। এবং পরবর্ত্তীতে সেই জ্ঞানের মডেলগুলি পর্যবেক্ষনের মাধ্যমে আবার বিজ্ঞানে ঢুকে যাচ্ছে।
অর্থাৎ বিজ্ঞানের পরিধি যত বাড়বে, আমাদের অজ্ঞাত প্রশ্নের পরিমান কমবে না। বাড়বে।
মাল্টিভার্সের উদাহরনটা নিতে পার। মাল্টিভার্সের ধারনা কিছুটা দার্শনিক-কিছুটা বৈজ্ঞানিক। কিন্ত সেই দার্শনিক প্রশ্নগুলির উৎপত্তিও বিজ্ঞান থেকেই-এবং সেই প্রশ্ন গুলো- কি হওয়া উচিত, কি হতে পারে এই সব স্পেকুলেশন থেকে।
অর্থাৎ বিজ্ঞানের বৃদ্ধিতে দর্শনের স্কোপ ছোট হচ্ছে না-তা বাড়ছে। কারন আরো অনেক নতুন প্রশ্নের জন্ম হচ্ছে। এবং জন্ম লগ্নে তার উত্তর দার্শনিক ধারনা দিয়ে দিতে হচ্ছে। আবার সেই ধারনা থেকে মডেলের জন্ম হলে, তা আস্তে আস্তে বিজ্ঞানের ডোমেনে ঢুকে যাচ্ছে।
সুতরাং তোমাকে যেটাকে মাথা থেকে সরাতে হবে-সেটা হচ্ছে বিজ্ঞান দর্শনের স্কোপ ছোট করছে। আসলে উলটোটা। প্রতিটা নতুন আবিস্কার নতুন দার্শনিক প্রশ্নের জন্ম দিচ্ছে এবং সেই প্রশ্ন থেকে আবার নতুন বিজ্ঞানের জন্ম হচ্ছে।
আমি নিজে ন্যাচারালিস্ট। এই নিয়ে আগেও লিখেছি। তাই এন্টি-ন্যাচারালিস্টদের হয়ে লিখছি না। কারন ন্যাচারালিস্টরাই মনে করেন, এন্টি ন্যাচারালিজম দরকার নেই। এবং তা গত হাজার হাজার বছর ধরেই তারা তা মনে করে আসছেন। কিন্ত তাতে দর্শনের মৃত্যু হয় না।
@বন্যা আহমেদ,
বাক স্বাধীনতা থাকা “উচিত”-এবং এটা দার্শনিক প্রশ্ন-যে কাওকে বোদ্ধা বলার স্বাধীনতা আমার থাকা উচিত,- না উচিত না।
কাওকে বোদ্ধা বললে -তার মানসিক আঘাতের পরিমান এবং সমাজের সার্বিক ক্ষতির পরিমান-তাই নিয়ে বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধান হোক। :lotpot:
কিন্ত যেহেতু সেই ধরনের সাইকোলজিক্যাল বা সোশ্যাল গবেষনা করা হয় নি, সেহেতু কাউকে বোদ্ধা বলার স্বাধীনতা থাকা উচিত- না উচিত না-সে ফয়সালা আমাদের “এন্টি-ন্যাচারালিস্ট” দর্শন দিয়েই করতে হবে।
এক্ষেত্রে আমার বক্তব্য হল বাক স্বাধীনতা থাকা উচিত-কারন তা না হলে সমাজে “ক্ষমতার” কেন্দ্রীভবন হয়-যা আরো খারাপ জিনিস।
লেখাটির জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
লেখাটির মধ্যে বানান ভুলগুলো দৃষ্টিকটু লাগেনি, কারণ আমার মনোযোগ ছিল, পোস্টের মূল বক্তব্যের উপর, যা খুবই আকর্ষনীয় মনে হয়েছে।
আপনার অন্যান্য লেখাগুলোও আমার বেশ ভালো লেগেছে।
দর্শনের মৃত্যু ঘোষণা নিয়ে আগেই যা বলার বলেছি তাই সেই বিষয়ে গেলাম না। আমি শুধু আপনার লেখার শেষ অংশ নিয়ে কথা বলবো। আমার মতে খুবই অপ্রয়োজনীয় এবং ব্যক্তি আক্রমনে ভরপুর এই শেষ অংশটুকু। আপনি কেন এই প্রবন্ধ লিখেছেন মুক্তমনার সব পাঠকই জানেন। সেটা এভাবে খুলে বলার কোন প্রয়োজন ছিল না। আমার কেন যেন মনে হচ্ছে এই প্রবন্ধটি অন্য কোন ফোরামের পাঠকের উদ্দেশ্যে লেখা (লেখার শেষ অংশটা পড়ে আরো বেশি মনে হয়েছে)। যদি তাই হয় সেটা এখানে না দিলেও চলতো।
দ্বিতীয়ত এভাবে “বিশিষ্ট বোদ্ধা” বিশেষণে কাউকে ডাকাও শালীন ভাষায় অশালীন বক্তব্য যা গালাগালের সমপর্যায়ে পরে। আপনার যদি কাউকে উল্লেখ করতেই হতো সেই ক্ষেত্রে আপনি সরাসরি নাম উল্লেখ করে, তার বক্তব্য উপস্থাপন করে সেটাকে খন্ডন করতে পারতেন। সেটা না করে যেভাবে আক্রমন করেছেন তা চরম আপত্তিকর। আপনার কাছে হতে সেটা প্রত্যাশা করিনি।
সব সময় যে আমরা একে অপরের সাথে একমত হবো সেটা তো নয়। অভিজিৎ’দা, ফরিদ ভাই উনাদের সাথে অনেক বিষয়ে দ্বিমত হয়েছে, কিন্তু তার জন্য তো আমাকে উনাদেরকে বিশিষ্ট বিজ্ঞানী বা মডারেটর বলে আক্রমন করতে হবে তা তো নয়। আপনার সাথেও কখনো একমত হবে, কখনো দ্বিমত হবে। কিন্তু সহমত হলে ঠিক আছে আর দ্বিমত হলেই আমি কিছু জানি না, সেটা কোন বুদ্ধিমানের কথা নয়।
আপনি আগের মন্তব্যে লিখেছেন দরকার সাধারণ মানুষের ভালোবাসা। কিন্তু এই এপ্র্যোচ নিয়ে কিভাবে মানুষের ভালোবাসা পাবেন আমি জানি না। আপনার কাছে অনুরোধ থাকবে প্রবন্ধের শেষ অংশটুকু প্রত্যাহার করে নিবেন। আমি মনে করি সাধারণ মানুষের ভালোবাসা পেতে হলে আমাকে সাধারণ মানুষের পর্যায়ে নেমে আসতে হবে। নিজেকে সকলের চেয়ে উচু, জ্ঞানী মনে করে কখনই সাধারণ মানুষের ভালবাসা আপনি অর্জন করতে পারবেন না। সেটাই আমার দর্শন। ভাল থাকবেন।
@স্বাধীন,
দ্বিতীয়ত এভাবে “বিশিষ্ট বোদ্ধা” বিশেষণে
>>
কেন, তারা অনেক কিছু বোঝেন বলে “তারাই” মনে করেন ত। আমার ত সেরকমই মনে হয়েছে। তাহলে বিশেষণে ভুল কোথায়?
সকালে ঘুম থেকে গরম পরোটা খেতে খেতে চমত্কার একটা বিষয় নিয়ে পড়লাম। লেখাটার জন্যে ধন্যবাদ। অন্য ওয়েবসাইটের ভাবানুবাদ হলেও, বিষয়টা গুরুত্বপূর্ণ মনে করি, বিশেষ করে যখন “দর্শন মৃত” কথাটা প্রতিষ্ঠার একটা চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ আছে।
হকিং শুনেছিলাম পপারিয়ান দর্শনকে প্রমোট করেন। লজিক্যাল পজিটিভিজমকে রিভাইভ করার জন্যেও নাকি তিনি চেষ্টা করেছেন। আপনার লেখা পড়েও যা বোঝা গেল, হকিং পপারিয়ান ঘরানার বিজ্ঞানের দর্শনেরই লোক। মানে অন্ধের মত কেবল বিজ্ঞানের চর্চাই করেন না, এর পেছনে বিজ্ঞানের যে দর্শন, তা সম্পর্কেও তিনি ওয়াকিবহাল, এবং প্রকল্প যাচাইয়ে পপারের দর্শনকে প্রমাণ মানেন।
তার মানে তিনি বিজ্ঞানের দর্শনকে ব্যবহার ইতোমধ্যেই করে ফেলেছেন। ফলে দর্শন মৃত, এমন কথা আর খাটে না। তাছাড়া কোনটা বিজ্ঞান নয়, সেটা বিজ্ঞান বলতে পারে না। বিজ্ঞানকে বিজ্ঞান নিজে সংজ্ঞায়িত করতে পারে না, কারণ তাহলে সেটা সুসংজ্ঞা হতে পারে না। এসবের জন্যে আপনি যে স্টেটমেন্ট দিবেন, সেটাকেই দর্শন বলে। হয়ত তিনি বলতে চেয়েছেন, বিজ্ঞানের যে টেস্টাবিলিটির দর্শন (ওনার ভালো বৈজ্ঞানিক প্রকল্প সংক্রান্ত অনুকল্পগুলো), সেটা মেনে নেয়ার পর আর কোনো দর্শনের শরণাপন্ন হতে হবে না বিজ্ঞানের। এটা বলেন নি, কারণ এটা শুনতে অতটা শক্তিশালী শোনায় না, দর্শন মৃত কথাটা যেমন শোনায়। তবে বিজ্ঞানের টেস্টাবিলিটির দর্শন ছাড়া আর অন্য দর্শনগুলো মরে গেছে, এই স্টেটমেন্টটাও ভুল। কয়েকটা উদাহরণ লেখাতেই আছে। যেমন উচিত অনুচিত। বিজ্ঞান যদি কোনো মানদণ্ড ধরে নিয়ে অপটিমাল উচিত অনুচিত আচরণ বের করেও দেখায়, তারপরেও মানুষের সেটা না মানার ক্ষমতা আছে, তার স্বাধীন-ইচ্ছার কারণে। ফলে এখানে এই মুহূর্তেতো নয়, আগামীতেও দর্শনের বিতাড়ন কিভাবে সম্ভব বোঝা মুশকিল। তবে বিজ্ঞানের আনয়ন যে অবশ্যম্ভাবী, সেটা মানতে হবে। তারপর, মানুষের আচরণের যে বিজ্ঞান, সেখানেও দর্শনের অবদান ক্রিয়াশীল। মস্তিষ্ক বা মন, এর মোটামুটি কিছুই তো আমরা জানি না। মনোবিজ্ঞানে এ নিয়ে যে দার্শনিক চর্চা, সেটা থেকে অনেক যাচাইযোগ্য প্রকল্প তৈরী হয়েছে, এবং সেটা পরে মস্তিষ্কের ক্রিয়া ব্যাখ্যায়/পূর্বাভাসে ব্যবহৃত হয়েছে। এবং এমনটা প্রতিনিয়ত ঘটছে। ফলে মনোবিজ্ঞানে দার্শনিক চর্চার উপর বিজ্ঞানের নির্ভরতা এখনো জীবিত।
আমার মনে হয়, হকিং এই স্টেটমেন্ট কেবল পদার্থবিজ্ঞানের জন্যেই করেছেন। ফলে এর বাইরে এই উক্তিকে গুরুতরভাবে নেবার কিছু নেই। তবে অভিজিত ভাই ঠিক বলেছেন যে বর্তমানে দর্শনের আলাপে বিজ্ঞানীদের ডাকা হয়। কিন্তু বিজ্ঞানীরা যখন দর্শনের আলাপে যান, তাদেরকে আমি তখন দার্শনিক হিসেবেই দেখি। দর্শনের হন্তারক বিজ্ঞানী হিসেবে নয়।
@রূপম (ধ্রুব),
আরেকটা ব্যাপার মিস করে গেছ ভাই।
সেটা হচ্ছে
(১) হকিং নিজের লেখাতেই লিখছেন ” ভাল মডেল” -টেস্টেবিলিটির ক্রাইটেরিয়াকে মানবে
(২) তবেই সেই মডেল “বাস্তবতা” হবে
(৩) এদিকে কাজের বেলায় তিনি এম তত্ত্ব থেকে মহাবিশ্বর বাস্তবতাকে প্রকাশ করছেন। এম তত্ত্ব টেস্টেবিলিটির মধ্যে পড়ে না।
অর্থাৎ তিনি বলছেন পপারিয়ান [ টেস্টেবল] না হলে কোন তত্ত্ব বাস্তবকে প্রকাশ করে না। এদিকে নিজেই একটি নন-টেস্টেবল মডেল দিয়ে বহুবিশ্বর বাস্তবতা ব্যাখ্যা করছেন।
সুতরাং তিনি নিজেই দর্শনের সাহায্যেই বাস্তবতাকে ব্যাখ্যা করেছেন-বিজ্ঞানের সাহায্যে না।
@বিপ্লব পাল,
হকিং কিন্তু পরখযোগ্যতার (Testability) কথা তোলেননি মডেলের গুণাগুণ যাচাইয়ের ব্যাপারে। তুলেছেন মিথ্যাকরণযোগ্যতার কথা (Falsifiable). দুটো এক জিনিষ নয়। স্ট্রিং তত্ব Testable না হলেও মিথ্যাকরণযোগ্য অবশ্যই, যেটা পপারীয় মানদন্ড। কাজেই তাঁর মন্তব্য consistent ই আছে। consistent না হলে অন্য পদার্থবিজ্ঞানীরাই ঝাঁপিএ পড়তেন হকিং এর উপর।
@অপার্থিব,
আমি একমত না। পপারিয়ান টেস্টেবিলিটি দাবী করে-ফলসিফিকেশন না।
এবার ব্যাপারটা ক্লিয়ার করি।
ফলসিফায়েবিলিটি দু ধরনের-তাত্ত্বিক এবং পরীক্ষা লদ্ধ ( পর্যবেক্ষণ থেকে)
পরীক্ষালদ্ধ ফলসিফায়েবিলিটিকেই টেস্টেবিলিটি বলে। এটা অনেক যায়গাতেই পাওয়া যাবে-এবং ওয়াকি থেকে আবার দিলামঃ
http://en.wikipedia.org/wiki/Falsifiability
এবার ব্যাখ্যা করা প্রয়োজন পপারের তত্ত্বে ফলসিবিলিটি কেন
পরীক্ষালদ্ধ ফলসিবিলিটি বা টেস্টেবিলিটি।
পপার যে সমস্যাটির সমাধান করেছিলেন-সেটির নাম হিউম’স ইনডাকশন। যার মূল বক্তব্য একটি পরীক্ষালদ্ধ সত্য, অন্যকালে বা অন্য স্থানে পরীক্ষা করলে, কিভাবে আমরা জানব সেখানেও কাজ করছে-কারন বৈজ্ঞানিক সত্যের সার্বজনীনতার জন্যে- সেই সত্যকে সব স্থান এবং কালের পরীক্ষাতেই পাশ করতে হবে।
এই সমস্যার সমাধানে পপার ফলসিফায়েবিলিটি ব্যাবহার করেন। এবং যেহেতু হিউমসের সমস্যাটি পরীক্ষালদ্ধ সত্য বা তার থেকে উদ্ভুত তত্ত্ব নিয়ে, উনি বললেন সেই তত্ত্বের বা সত্যের ব্যাতিক্রম কিছু পর্যবেক্ষন চাই।
উনি ফলসিফায়েবিলিটি কথাটি ব্যাবহার করলেও যেহেতু তার সমাধান ছিল পরীক্ষালদ্ধ ফলের ইনডাকশনিজম নিয়ে, পপারিয়ানের ক্ষেত্রে ফলসিফায়েবিলিটি মানেই পরীক্ষা ফলসিফায়েবিলিটি বা টেস্টেবিলিটি।
নামের বানানটা ঠিক করার জন্য ধন্যবাদ।
বিপ্লব,
তোমার লেখার খুব একটা সমালোচনা করি না। এটার করতে বাধ্য হলাম। খুবই নিম্নমানের এবং ছন্নছাড়া লেখা। একে তো ওয়েব থেকে একটি লেখার বাংলা করা, আর তার উপর আর বানানেরও কোন ঠিক ঠিকানা নেই। এভাবে লেখার নামে বানানের খিঁচুড়ি উপহার দিলে হবে?
হকিং এর লেখার সমালোচনা করছ ভাল কথা। কিন্তু আগে বিজ্ঞানীটির নাম তো ঠিক ভাবে জানতে হবে। সারা লেখাতেই কেবল ‘হকিংস’ আর ‘হকিংস’। ম্লোডিনোর নামও ভুল লিখেছ। যাকগে, স্টিফেন হকিংস নয়, হকিং। তুমি বোধ হয় ডকিন্সের সাথে গুলিয়েছ।
গুলিয়েছ তুমি অনেক কিছুতেই, সে না হয় পরে যাওয়া যাবে। 🙂
তার আগে তোমার আক্রমণাত্মক কথার কিঞ্চিৎ নমুনা দিচ্ছি –
‘বিশিষ্ট বিজ্ঞান লেখক’ কি আমি? আমি আমার কোন অভিমত দেইনি (আমি নিজে বিশ্বাস করি দর্শনের কিছুটা হলেও প্রয়োজনীয়তা আছে, যদিও আগের মত এত দীপ্যমান নয় সে)। আমার কথা বাদ দাও, আধুনিক বিজ্ঞানের ট্রেন্ড সম্বন্ধে হকিং এর অভিমত তুলে ধরতেই আমি ওগুলো বলেছিলাম রিভিউএ। আমি বলেছিলাম মহাবিশ্ব এবং এর দর্শন নিয়ে যে কোন আলোচনাতেই পদার্থবিজ্ঞানীদেরই আমন্ত্রণ জানানো হয়, এরিস্টটলের ইতিহাস কপচানো কোন দার্শনিককে কিংবা সনাতন ধর্ম জানা কোন হেড পন্ডিতকে নয়। মানুষও বিজ্ঞানীদের কাছ থেকে নানা রকমের দর্শনের কথা শুনতে চায়, তাদের কথাকেই বেশি গুরুত্ব দেয়। আমি বলেছিলাম, মহাবিশ্বের উৎপত্তি আর পরিণতি নিয়ে একজন দার্শনিকের চেয়ে অনেক শুদ্ধভাবে বক্তব্য রাখতে সক্ষম হবেন একজন হকিং কিংবা ওয়াইনবার্গ। কথাগুলো তো মিথ্যে নয়। বাস্তব প্রতিফলন আমরা পাই জনপ্রিয় বিজ্ঞান লেখকদের পরিসংখ্যানেই। আজকে বিজ্ঞানের দর্শনের উপর লেখা সাম্প্রতিক বই গুলো, যেমন – ‘গড – দ্য ফেইল্ড হাইপোথিসিস’, ‘গড ডিলুশন’, ‘নিউ এথিজম’, ‘মাইণ্ড অব গড’ থেকে শুরু করে ‘গ্র্যান্ড ডিজাইন’ -এর মত বইগুলো লিখছেন ভিক্টর স্টেঙ্গর, রিচার্ড ডকিন্স, পল ডেভিস কিংবা স্টিফেন হকিং-এর মতো বিজ্ঞানীরাই।
আমি তো ‘বিশিষ্ট’ কোন লেখক নই! আক্রমণ করে আমাকে তুমিই বিশিষ্ট করে ফেলছ মনে হচ্ছে 🙂
যা হোক, আমার লেখার উত্তরে তুমি বলেছ,
– এটা কি ভাল উত্তর হল? ভারতে তো সাঁইবাবার ছবি ঝুলিয়েও বিভূতি পাওয়া আর পুজো করা হয়, এর সাথে আমি যা বলেছি, সেটার বিরোধ কোথায়? তুমি কি বিবেকানন্দ আর রামকৃষ্ণর মতন ‘দার্শনিক’কে প্রমোট করতে চাইছ, কেবল ভারতে ‘বিশাল দার্শনিক’ ভাবা হয় বলেই? তোমার বক্তব্য মোটেই পরিস্কার নয়, অগোছালো।
আরো আছে এ ধরনের উদ্ধৃতি –
কাউকে ‘বিশিষ্ট বিজ্ঞান লেখক; কাউকে ‘বিশিষ্ট বোদ্ধা’ বানানোটা কিন্তু ছেলেখেলা – সবাই পারে। তোমার বক্তব্যে যদি যুক্তি থাকে, তাহলে তা এ ধরণের বিশেষণ প্রইয়োগ না করেও দেয়া সম্ভব! সেটাই কাংক্ষিত।
@অভিজিৎ,
আমি কাওকেই প্রমোট করছি না। শুধু বলতে চাইছি রবীন্দ্রনাথ বা বিবেকানন্দকে বাকীরা যে কারনে দার্শনিক বলে মনে করে, ঠিক সেই কারনেই একজন বিজ্ঞানীকেও দার্শনিক বলে মনে করা যায়। আমার যে তাতে বিশেষ আপত্তি আছে তাও না। কোনটা বিজ্ঞান এবং কোনটা দর্শন সেটা আলাদা করা গেলেও-দর্শনের ডিমার্কেশন নেই।
কিন্ত সমস্যা হচ্ছে দর্শন শাস্ত্রের লোকেরা-যারা দর্শন শাস্ত্রের একাডেমিশিয়ান-তারা এদেরকে সিরিয়াসলি নেবেন না-কারন দেখা যাবে এদের দর্শনের সবটাই রিইনভেন্টিং দি হুইল।