দৈনিক কালের কন্ঠ পত্রিকায় একটা দারুন খবর প্রকাশিত হয়েছে ২৮ শে নভেম্বর তারিখে। খবরটা হলো –

খবরের শিরোনাম- কে শয়তান ?

চট্টগ্রামে আট বছরের এক শিশু কন্যাকে ধর্ষণের সময় হাতে নাতে ধরা পড়েছে সরকারী মুসলিম হাই স্কুল মসজিদের সাবেক ইমাম মওলানা মাইনউদ্দিন(৪২)। গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় নগরীর ফিরিঙ্গিবাজার এয়াকুব নগর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এলাকাবাসী তাকে হাতে নাতে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে। এ ব্যপারে কোতয়ালী থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। অভিযুক্ত মওলানা মাইনউদ্দিন ধর্ষণের কথা স্বীকার করে নিয়ে এ কাজের জন্য শয়তান-কে দায়ী করে। ——– প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মাইনউদ্দিন ধর্ষণের কথা স্বীকার করে দাবি করে , শয়তানের প্ররোচনায় সে এ গর্হিত কাজ করেছে।

খবরটি নি:সন্দেহে দারুন মর্মান্তিক, বর্বর ও পাশবিক। একজন মসজিদের ইমাম যার বয়স ৪২ যার ইমামতি করার অভিজ্ঞতা দীর্ঘদিনের তার পক্ষে এ ধরনের পাশবিক অপরাধ ঘটানো ও অত:পর এর দায়ভার শয়তানের ওপর চাপানোর প্রচেষ্টার মধ্য থেকে মুসলিম মানসের একটা বহি:প্রকাশ চমৎকার ভাবে ফুটে উঠেছে। শয়তানের ওপর দোষ চাপানোর আগে আমরা একটু বিষয়টাকে বিশ্লেষণ করি। একজন ইমাম যে চট্টগ্রাম মহানগরীর একটা মোটামুটি বড় মসজিদে ইমামতি করেছে দীর্ঘদিন বলা বাহুল্য প্রতিষ্ঠিত কোন মাদ্রাসা থেকে উচ্চ শিক্ষা গ্রহন করেই অত:পর ইমাম হিসাবে চাকুরী করত। এর অর্থ যে কোন সাধারন মুসলমানের চাইতে ইসলাম সম্পর্কে অনেক বেশী তার জানা শোনা। সে যখন ইমামতি করত , নামাজের আগে প্রতিদিন নামাজিদের প্রতি খুতবা পাঠ করত। সে খুতবায় সে অবিরল ধারায় মানুষকে উপদেশ দিত, বলত- আল্লাহর রাস্তায় চলতে, নামাজ, রোজা, হজ্জ, যাকাত পালন করতে, দৃঢ়ভাবে আল্লাহ ও তার রসুলের প্রতি বিশ্বাস রাখতে বলত, বলত ইসলাম প্রচার ও প্রসারের জন্য জিহাদ করতে, বলত – জীবনে নবী মোহাম্মদের আদর্শ ও তার জীবন পদ্ধতি অনুসরন করতে। বিশেষ করে শুক্রবারের জুম্মার নামাজের সময় তার খুতবা পাঠ হতো অতি দীর্ঘ। এ ধরনের একজন লোক যে ইসলামের সৈনিক হিসাবে নিজেকে বিশ্বাস ও দাবী করে সে কিভাবে এ ধরনের বর্বর ও পাশবিক কাজ করতে পারে ? তার কি দোজখের ভয় ছিল না ? সে কি জানত না তার এ ধরনের গুনাহ এর কাজের জন্য কি শান্তি নির্ধারিত আছে ? এখন আমরা পর্যালোচনা করে দেখি তার এ ধরনের জঘন্য কাজের জন্য শয়তানের ওপর দোষ চাপানোটা যুক্তি যুক্ত কি না।

এ বিষয়ে মহানবী মোহাম্মদ কি ধরনের উদাহরন রেখে গিয়েছে সেটা দেখা যাক। মোহাম্মদ নিজ জীবনে প্রায়ই এ ধরনের কাজকে আল্লার নির্দেশিত কাজ বলে চালিয়ে দিয়েছে। তার একটা হলো তার ৫১ বছর বয়েসে ৬ বছরের আয়শাকে বিয়ে করার মাধ্যমে। হঠাৎ করে মোহাম্মদ স্বপ্নে দেখল- সে বেহেস্তে বেড়াতে গেছে আর তার সামনে ফেরেস্তারা সূক্ষ্ম রেশমী বস্ত্রে আচ্ছাদিতা আয়শাকে তার সামনে হাজির করেছে। এ স্বপ্ন সে কয়েকদিন দেখল বার বার। আর এর অর্থ হলো- আল্লাহ চায় মোহাম্মদ যেন বুড়া কালে প্রায় দুধের শিশু আয়শাকে বিয়ে করে। আবু বকর ততদিনে মোহাম্মদের দাসে পরিনত হয়ে গেছে, তার পরও সে আমতা আমতা করতে লাগল কিন্তু কিছুতেই কিছু হলো না , পরিশেষে বিয়ে দেয়ার মধ্য দিয়ে সবকিছুর সমাপ্তি ঘটল।

সহী বুখারী, ভলুম-০৯, বই- ৮৭, হাদিস নং-১৪০
আয়েশা হতে বর্নিত- আল্লাহর নবী বললেন, তোমাকে বিয়ে করার আগে আমি স্বপ্নে তোমাকে দুই বার দেখেছি।এক ফিরিস্তা সিল্কে মোড়ানো একটা বস্তু এনে আমাকে বলল- এটা খুলুন ও গ্রহন করুন , এটা আপনার জন্য। আমি মনে মনে বললাম- যদি এটা আল্লাহর ইচ্ছা হয় এটা অবশ্যই ঘটবে। তখন আমি সিল্কের আবরন উন্মোচন করলাম ও তোমাকে তার ভিতর দেখলাম। আমি আবার বললাম যদি এটা আল্লাহর ইচ্ছা হয় তাহলে এটা অবশ্যই ঘটবে।

সহী বুখারী, ভলুম-৭, বই- ৬২, হাদিস নং-১৮
উরসা থেকে বর্নিত- নবী আবু বকরকে তার মেয়ে আয়েশাকে বিয়ে করার ইচ্ছের কথা জানালেন। আবু বকর বললেন- আমি তোমার ভাই , এটা কিভাবে সম্ভব? নবী উত্তর দিলেন- আল্লার ধর্ম ও কিতাব মোতাবেক আমি তোমার ভাই, রক্ত সম্পর্কিত ভাই না, তাই আয়শাকে আমি বিয়ে করতে পারি।

সহী বুখারী, ভলুম-৭, বই -৬২, হাদিস নং- ৬৫
আয়েশা হতে বর্নিত- মহানবী তাকে ছয় বছর বয়েসে বিয়ে করেন, নয় বছর বছর বযেসে তাদের বিবাহিত জীবন শুরু হয়। হিসাম জানিয়েছিল- আমি জেনেছি আয়েশা মহানবীর মূত্যুর আগ পর্যন্ত নয় বছর যাবত বিবাহিত জীবন অতিবাহিত করেছিলেন।

অত:পর আয়শা তিন বছর তার বাপের বাড়ীতে থাকল , যখন তার বয়স ৯ বছর তখন সে মোহাম্মদের সাথে স্ত্রী হিসাবে সংসার করতে গেল। তার মানে মোহাম্মদ ৯ বছরের একটা নাবালিকার সাথে সেক্স করা শুরু করল যখন তার বয়স ৫৪ বছর। আলোচ্য ঘটনার ইমাম ৪২ বছর বয়েসে ৮ বছরের একটা শিশুর সাথে সেক্স করেছে। তাই সেদিক দিয়ে খুব বেশী খারাপ কিছু সে করে নি মোহাম্মদের তুলনায় এটা বলা যায়। তবে, মোহাম্মদ যেটা করেছে নানা ছলা কলা আর ভনিতা করে , আলোচ্য ইমাম তার ধার ধারেনি তাই আইন ও সমাজের দৃষ্টিতে সে ধর্ষণকারী হিসাবে গন্য হয়ে গেছে ও এখন বিচারের কাঠ গড়ায়। তবে একথা নি:সন্দেহ যে , মোহাম্মদ সেই ১৪০০ বছর আগে যে কান্ডটি ঘটিয়েছিল ঠিক সেই কান্ড এ সময়ে ঘটালে তাকেও বিচারের কাঠগড়ায় দাড়াতে হতো তা সে আয়শার বাপ যতই তাকে মোহাম্মদের সাথে বিয়ে দিক। এ ক্ষেত্রে মোহাম্মদ, আবু বকর সবাইকেই হাজতে যেতে হতো আর বিচারের সম্মুখীন হতে হতো। ধরে নেয়া যায়, বিচারের পর মোহাম্মদের শাস্তির মাত্রা বেশী হতো কারন সে ছলা কলা করে আবু বকরকে বাধ্য করেছিল তার সাথে আয়শাকে বিয়ে দিতে। মোহাম্মদের শাস্তি হতো যে কয়টা কারনে তা হলো – নাবালিকা শিশুকে বিয়ে করা , বিয়ের জন্য শিশুর পিতা মাতাকে নানা কথায় ফুসলানো তথা প্রতারনা করা ও নাবালিকা সাথে সেক্স করার মত পাশবিক অপরাধ করা যা জামিন অযোগ্য । আবু বকরের শাস্তি হতো লঘু কারন সে স্বেচ্ছায় বিয়েতে রাজী হয় নি , তাকে ফুসলানো হয়েছিল।

পালক পূত্র জায়েদের সুন্দরী ও যৌনাবেনদনময়ী স্ত্রী জয়নাবকে মোহাম্মদের বিয়ে করা ছিল আর একটি উদাহরন। একদা মোহাম্মদ জায়েদের বাড়ীতে হঠাৎ হাজির হয়ে জয়নাবকে অর্ধ উলঙ্গ অবস্থায় দেখল কারন সে তখন কাপড় পাল্টাচ্ছিল। এ ধরনের একটা উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে জয়নাবকে দেখে মোহাম্মদের দেহে ও মনে উত্তেজনা সৃষ্টি হলো। জয়নাবকে একান্তভাবে কাছে পাওয়ার ইচ্ছা জাগল তার। কিন্তু মনের এহেন ভাব কারো কাছে প্রকাশ করা যাচ্ছিল না। কারন বিষয়টি তখনকার সমাজ ব্যবস্থায়ও ভীষণ অসভ্য ও ভব্যতাহীন ছিল। সেই আধা বর্বর যুগেও পুত্র বা কন্যা পালক হিসাবে পালন করা একটা বড়রকম সম্মানের ও মানবিক ব্যপার হিসাবে পরিগনিত ছিল এবং তাদেরকে আপন পূত্র বা কন্যা সন্তান হিসাবেই গন্য করা হতো। যেমন তখন সমাজে জায়েদকে জায়েদ বিন মোহাম্মদ বলে ডাকা হতো, এর অর্থ- মোহাম্মদের পুত্র জায়েদ। তো এ ধরনের প্রায় নিজ পূত্র জায়েদের স্ত্রীকে দেখে কাম তাড়িত হওয়া যেমন অসৌজন্যমূলক কাজ , তাকে বিয়ে করতে চাওয়া তো রীতিমত বর্বর একটা কাজ। তাই মোহাম্মদ কোনক্রমেই কাউকে তার মনের কথা বলতে পারছিল না। কারন এটা কাউকে বলা মানে তার এতদিনকার অর্জিত সম্মান নবুয়ত্ব সব জলাঞ্জলী দেয়ার মত একটা ব্যপার হবে। তখন পরমকরুনাময় আল্লাহ আর তার প্রিয় নবীর এ ধরনের পরকীয়া প্রেমের কষ্ট দেখে স্থির থাকতে পারলেন না। অতি সত্ত্বর তিনি ওহী নাজিল করলেন।

আল্লাহ কোন মানুষের মধ্যে দুটি হৃদয় স্থাপন করেন নি। তোমাদের স্ত্রীগণ যাদের সাথে তোমরা যিহার কর তাদেরকে তোমাদের জননী করেন নি এবং তোমাদের পোষ্যপূত্রদেরকে তোমাদের পূত্র করেন নি। এগুলো তোমাদের মুখের কথা মাত্র । আল্লাহ ন্যায় কথা বলেন ও পথ প্রদর্শন করেন। আল কোরান, ৩৩:০৪

আল্লাহ যাকে অনুগ্রহ করেছেন, আপনিও যাকে অনুগ্রহ করেছেন এবং আপনি যখন তাকে বলেছিলেন তোমার স্ত্রী তোমার কাছেই থাকতে দাও এবং আল্লাহকে ভয় কর। আপনি অন্তরে এমন কিছু গোপন করছিলেন যা আল্লাহ প্রকাশ করে দেবেন আপনি লোকনিন্দার ভয় করছিলেন অথচ আল্লাহকে অধিক ভয় করা উচিত। অত:পর জায়েদ যখন জয়নবের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করল তখন আমি তাকে আপনার সাথে বিবাহের ব্যবস্থা করলাম যাতে মুমিনরা তাদের পোষ্যপুত্রেরা তাদের স্ত্রীদের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করলে তাদেরকে বিবাহ করার ব্যপারে কোন অসুবিধার সম্মুখীন না হয়। আল্লাহর নির্দেশ কার্যে পরিনত হয়েই থাকে। আল কোরান, ৩৩:৩৭

উক্ত আয়াত নাজিলই হয় মোহাম্মদ যাতে জয়নাবকে বিয়ে করতে পারে সে উদ্দেশ্যে। এ আয়াতে অন্য যেসব কথা আছে তা বাহুল্য মাত্র বা আসল উদ্দেশ্যের সাথে সম্পূরক মাত্র। এ আয়াত নাজিলের পর জায়েদ তার স্ত্রীকে তালাক দেয় ও অত:পর মোহাম্মদের জয়নাবকে বিয়ে করতে আর কোন বাধা রইল না। এ আয়াত নাজিলের আগেই প্রকাশ হয়ে পড়েছিল যে মহানবী মোহাম্মদ তার পূত্রবধূ জয়নাবের প্রেমে পড়েছে। আর এ প্রেম যে সে প্রেম নয় একেবারে আল্লাহ নির্দেশিত প্রেম। তার ঘরে তখন জলজ্যন্ত চার চারটি বউ, এত বউ থাকতেও মহানবী তার পূত্রবধু জয়নাবের প্রেমে হাবু ডুবু খেল।যাকে বলে পরকীয়া প্রেম। কি রোমান্টিক প্রেম! আর সে প্রেমের সফল পরিনতি ঘটাতে স্বয়ং আল্লাহকে ওহী পাঠাতে হলো। প্রকারান্তরে আল্লাহ নিজেই এ ধরনের একটা অনৈতিক ও অসামাজিক বিয়ের ঘটকালি করেন।ফলে এ ধরনের একটা অসামাজিক প্রেমের কলংক থেকে মোহাম্মদ শুধু বেঁচেই গেল তাই নয় বরং ইসলামের ইতিহাসে এ এক মহা রোমান্টিক প্রেম কাহিনী হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয়ে আছে। শুধুমাত্র ব্যক্তি মোহাম্মদের অসামাজিক, অভব্য, শিষ্টাচার বহির্ভূত পরকীয়া প্রেম বাস্তবায়ন করতে যেয়ে আল্লাকে যে মহা অন্যায় কাজটি করতে হয়েছে তা হলো- অনাথ ও দরিদ্র শিশুদেরকে নি:সন্তান দম্পতি বা সাধারন দম্পতি কর্তৃক দত্তক হিসাবে নেয়াকে অবৈধ করা হয়েছে বা অনুৎসাহিত করা হয়েছে।অথচ একটা অনাথ দরিদ্র বাচ্চাকে নিজের বাচ্চা হিসাবে পালন করা যে কোন বিচারেই একটা মহান মানবিক কাজ। আর সেটা করা হলো ব্যক্তি মোহাম্মদের অজাচারী প্রেম লীলা বৈধ করার জন্য। বেচারা ইমাম মাইনুদ্দীনের কপাল খারাপ, তার পক্ষে কেউ নেই, তাই আজকে হাজতে বসে বিচারের অপেক্ষা করতে হচ্ছে। অথচ তার পেয়ারা নবী মোহাম্মদ যে কাজ করে ১৪০০ বছর আগে মহা রোমান্টিক প্রেমের জন্ম দিয়েছে, ঠিক সে কাজটা এখন করলে লোকে তাকে ছি ছি করত, সমাজচ্যুত করত, এমনকি হাজতে যাওয়াও বিচিত্র ছিল না।

পরিশেষে, নিজের ভুল কাজ বা অসাধূ কাজের দায় দায়িত্ব শয়তানের ওপর চাপানোর কিচ্ছা। খোদ কোরানেই কিন্তু এর প্রমান আছে। কোরান বলছে নবী রসুলরাও মাঝে মাঝে শয়তানের দ্বারা প্ররোচিত হয়। এটা তাদের জন্য পরীক্ষা স্বরুপ। পরে আল্লাহই আবার তাদেরকে রক্ষা করেন বা তাদের কাজ কর্মকে শুদ্ধ করে দেন। যেমন- বহু চেষ্টা চরিত্র করেও যখন মক্কাতে মোহাম্মদ ইসলাম প্রচার করতে পারছিল না , তখন তার মধ্যে একটা হতাশার জন্ম নিল। অন্যদিকে কুরাইশরা তাকে বার বার তাদের দেব দেবীদেরকে স্বীকার করে নেয়ার জন্য জোরাজুরি করছিল। তখন মোহাম্মদ মনে করল-হালকা ভাবে কোরাইশদের দেব দেবীদেরকে স্বীকার করে নিয়ে সে মক্কাবাসীদের সাথে একটা সমন্বয় সাধন করে তার ইসলাম প্রচার করবে। যেমন নীচের আয়াত-

তোমরা কি ভেবে দেখেছ লাত ও ওজ্জা সম্পর্কে? পূত্র সন্তান কি তোমাদের জন্য আর কন্যা সন্তান আল্লাহর জন্য? এমতাবস্থায় এটা তো হবে খুবই অসংগত বন্টন । এগুলো কতকগুলো নাম বৈ তো নয় যা তোমরা ও তোমাদের পূর্ব পুরুষরা রেখেছ। এর সমর্থনে আল্লাহ কোন দলিল নাজিল করেন নি। তারা অনুমান ও প্রবৃত্তির অনুসরন করে। অথচ তাদের কাছে তাদের পালনকর্তার কাছ থেকে পথ নির্দেশ এসেছে। আল কোরান, ৫৩:১৯-২১

এ আয়াতের মাঝে এমন কিছু ছিল যার মাধ্যমে মোহাম্মদ স্বীকার করে নিয়েছিল তৎকালীন কোরাইশদের কর্তৃক স্বীকৃত দেব দেবীদেরকে। কিন্তু পরবর্তীতে সে লাইনগুলো বাদ দেয়া হয় এ অজুহাতে যে সেসব আয়াত শয়তান কর্তৃক মোহাম্মদের কাছে এসেছিল, জিব্রাইল কর্তৃক নয়। একারনে এ আয়াতকে বলা হয় শয়তানের আয়াত বা স্যটানিক ভার্স্ । আর এ ধরনের মিশ্রন আল্লাহ নিজেই বিশুদ্ধ করে দেন যা বলা হচ্ছে নীচের আয়াতে-

আমি আপনার পূর্বে যে সকল নবী ও রসূল প্রেরন করেছি তারা যখনই কিছু কল্পনা করেছে শয়তান তখনই তাদের কল্পনায় কিছু মিশ্রন করে দিয়েছে। অত:পর আল্লাহ দুর করে দেন যা কিছু শয়তান মিশ্রন করে। এর পর আল্লাহ তার আয়াত সমূহকে সুপ্রতিষ্ঠিত করেন এবং আল্লাহ জ্ঞানময় ও প্রজ্ঞাময়। এ কারনে যে শয়তান যা মিশ্রন করে আল্লাহ তা পরীক্ষা স্বরূপ করেন তাদের জন্য যাদের হৃদয়ে রোগ আছে ও যাদের হৃদয় পাষাণরূপ। গোনাহগাররা দুরবর্তী বিরোধীতায় লিপ্ত আছে। ২২: ৫২-৫৩

তারা তো আপনাকে হটিয়ে দিতে চাচ্ছিল যে বিষয় আমি আপনার প্রতি ওহির মাধ্যমে প্রেরন করেছি তা থেকে আপনাকে পদস্খলন ঘটানোর জন্যে তারা চুড়ান্ত চেষ্টা করেছে যাতে আপনি আমার সাথে কিছুটা মিথ্যা সম্বন্ধযুক্ত করেন। এতে সফল হলে তারা আপনাকে বন্ধু রূপে গ্রহন করে নিত। আমি আপনাকে দৃঢ়পদ না রাখলে আপনি তাদের প্রতি ঝুকেই পড়তেন। আল কোরান , ১৭: ৭৩-৭৪

এখানে পরিস্কারভাবে বোঝা যাচ্ছে যে মোহাম্মদ তার কথা বার্তার মধ্যে উল্টো পাল্টা কিছু থাকলে ও সেসব নিয়ে কোন রকম সমালোচনা উঠলে তাকে খুব তাড়াতাড়ি সংশোধন করে নিত আল্লাহর ওহীর মাধ্যমেই। যেমন শয়তানের আয়াত বা কুরাইশদের দেব দেবীকে স্বীকার করে নেয়ার আয়াত সম্পর্কে মোহাম্মদের সাহাবীরা সমালোচনা শুরু করে দেয়ার পর পরই উক্ত আয়াত নাজিল হয়। মোহাম্মদ খুব তাড়াতাড়ি বুঝতে পারে যে কুরাইশদের দেব দেবীকে স্বীকার করার অর্থ হচ্ছে তার এতদিনকার প্রচারিত ইসলামের অসারতা প্রকাশ করা যা তার সাহাবীরাও তাকে বুঝিয়েছিল। কিছু সাহাবি কুরাইশদের ভয়ে পালিয়ে আবিনিশিয়ায় গেছিল বসবাস করতে। তাদের কানে যখন মোহাম্মদের এ ধরনের আয়াতের কথা পৌছলো তখন তারা তাদের যাবতীয় দু:খ কষ্ট যে খামোখা তা বুঝতে পেরে মক্কায় ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। এর অবশ্যম্ভাবী ফলাফল ছিল ইসলামের অপমৃত্যু। যা মোহাম্মদ ও তার অপরাপর সাহাবীরা বুঝতে পেরেছিল আর তাই তাড়া তাড়ি ঐ আয়াত সমূহকে শয়তানের আয়াত বা শয়তানের কাজ বলে প্রচার চালিয়ে তাকে থামান হলো।

তাই স্বয়ং মোহাম্মদই যেখানে তার উল্টা পাল্টা কাজ কর্ম বা কথা বার্তার জন্য শয়তানের কাজ বলে চালিয়ে দিত সেখানে তার উম্মতরাও যে সে কাজটি করবে তাতে আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই। বরং সেটাই স্বাভাবিক। আর এভাবেই সম্ভব প্রতিটা অপরাধ বা কুকামের শাস্তি থেকে নিজেকে বাচানো। এভাবেই ইসলাম যে কোন অপরাধীর কৃত অপরাধ থেকে তাকে রক্ষা করার নিদান দিয়েছে। কোন একটা অপরাধ করে শুধু বললেই হলো যে সে সেটা শয়তানের প্ররোচনায় করেছে আর অত:পর তওবা করে নিলেই হলো, তাহলে পরম করুনাময় আল্লাহ তার সব গুনাহ মাফ করে দেবেন যেমন তিনি করেছেন সকল নবী ও রসুলের ক্ষেত্রে। এটা আরও যুক্তি যুক্ত একারনে যে – খোদ আল্লাহ প্রেরিত নবী রসুল যেখানে ভুল ত্রুটি করেন সেখানে সাধারন মানুষরাতো আরও বেশী ভুল ত্রুটি করবে। দুনিয়ার সর্বশেষ নবী , সর্বশ্রেষ্ট মানব আল্লাহ যাকে সৃষ্টি করেছেন সম্পূর্ন পারফেক্ট রূপে সেই নবী মোহাম্মদ যদি শয়তানের দ্বারা প্রতারিত হতে পারে তাহলে সাধারন মানুষতো প্রতারিত হবে পদে পদে ,আর তার জন্য মহান করুনাময় আল্লাহ তালা সব সময় প্রস্তুত আছে তাদেরকে মাফ করে দিতে। শুধু স্বীকার করে নিতে হবে যে সে যেটা করেছে সেটা শয়তানের প্ররোচনায় , ব্যস বাকী দায়িত্ব আল্লাহর। ঠিক একারনেই পশ্চিমা দেশের কারাগার সমূহে মাঝে মাঝে দাগী আসামীদের দেখা যায় ইসলাম ধর্ম গ্রহন করতে। আর সেটা করে তারা যেন প্রমান করে যে ইসলাম হলো মূলত: অপরাধীদের জন্য একটা অনুকূল ধর্ম। এত কিছুর পরও যদি আলোচ্য ইমাম মাইনউদ্দিনকে আদালত কোন শাস্তি দেয় তা হবে আল্লাহর সাথে পাল্লা দেয়ার মত ব্যপার। আমি পরম করুনাময় আল্লাহর কাছে দোয়া মাগফেরাত কামনা করি , হে পরোয়ার দেগার , করুনার মহাসাগর , মাইনউদ্দিনকে তুমি রক্ষা কর শয়তানের দ্বারা প্ররোচিত হয়ে কৃত তার অপরাধ থেকে, আর যারা তোমার করা আইন নিজ হাতে তুলে নিয়ে ইমামকে পুলিশের হাতে তুলে দিয়ে তোমার করা আইনকে অপমান করছে তাদের ওপর গজব নাজিল করো, আমীন। বলেন, সুবহান আল্লাহ।

ওহ বলতে ভুলে গেছি, পত্রিকায় মাঝে মাঝে পাশ্চাত্য দেশে গীর্জার পাদ্রী কর্তৃক ধর্ষণ বা সমলিঙ্গের সাথে যৌনতা এ সংক্রান্ত খবর প্রকাশ পায়। যা নিয়ে ওসব দেশে বেশ হৈ চৈ ও হয় মনে হয়। এক্ষেত্রে অভিযুক্তকে কখনো বলতে শোনা যায় না যে সে শয়তানের প্ররোচনায় এ ধরনের কান্ডটি করেছে। ধরা পড়লে স্রেফ নিজের ওপরই দোষটা নিয়ে নেয়। শয়তানের ওপর দায়ভার চাপায় না। তাই মহানবী মোহাম্মদ আসলে বড়ই দয়াল আর বিচক্ষন। সে তার উম্মতদের জন্য শয়তান নামক এক ঢাল রেখে গেছে যাবতীয় অপকর্ম থেকে নিজেকে রক্ষা করতে। এ মহান কাজের জন্য তাই আল্লাহ মোহাম্মদকে বেহেস্তে নসীব করুন, তার ওপর শান্তি বর্ষণ করুন।